সাড়ে ১৬ হাজার
সাড়ে ১৬ হাজার গায়েবি মামলা প্রত্যাহার হচ্ছে: আইন উপদেষ্টা
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হওয়া ১৬ হাজার ৪২৯টি গায়েবি মামলা প্রত্যাহার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।
উপদেষ্টা বলেন, ‘এরমধ্যে এক হাজার ২১৪টি মামলা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে প্রত্যাহার করা হবে।’
‘১৬ হাজার ৪২৯টি মামলার তালিকা করা হয়েছে। তালিকার পর প্রতিটি মামলার রেকর্ড ঘেঁটে আমাদেরকে দেখতে হয়, এটা জেনুইনলি রাজনৈতিক হয়রানিমূলক গায়েবি মামলা কিনা; নাকি এটা কোনোরকম অনিয়ম বা কারচুপি করে ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যক্তির মামলা ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ঢাবি-সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ অনাকাঙ্ক্ষিত: আইন উপদেষ্টা
‘ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যক্তির হত্যা মামলাতো প্রত্যাহার করতে পারি না। প্রতিটা কেস রেকর্ড দেখে-দেখে নিশ্চিত হতে হচ্ছে। এ প্রক্রিয়ায় ১৬ হাজার ৪২৯টি গায়েবি মামলার মধ্যে এক হাজার ২১৪টি মামলা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে প্রত্যাহার করা হবে। আর এক হাজার ২১৪টি মামলার মধ্যে ৫৩টি মামলা প্রত্যাহার সংক্রান্ত গেজেট আজ-কালকের মধ্যেই প্রকাশ করা হবে,’ বলেন তিনি।
মামলা প্রত্যাহারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা করেছে জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, অনেক ক্ষেত্রে আমরা ওনাদের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করছি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গায়েবি মামলা হচ্ছে আওয়ামী লীগ আমলে নিপীড়নের উদ্দেশ্যে দায়ের করা মামলা।
ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রত্যাহার হচ্ছে সাইবার সিকিউরিটি সংক্রান্ত সব মামলা
বিগত সরকারের আমলে কথা বলা বা লেখালেখির কারণে (স্পিচ অফেন্স) ৩৯৬টি মামলা করা হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘আইন মন্ত্রণালয় পাবলিক পসিকিউটরদের মাধ্যমে এরইমধ্যে ৩৩২টি মামলা প্রত্যাহার করেছে। ৬১টি মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়েছে। এটাও আগামী ৩-৪ কার্যদিবসের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। ফেব্রুয়ারি মাস যখন শেষ হবে, তখন স্পিস অফেন্স সংক্রান্ত আর কোনো মামলা সাইবার সিকিউরিটি আদালতে থাকবে না।’
তিনি বলেন, ‘তবে তিনটি মামলা আমরা প্রত্যাহার করতে পারবো না। কারণ উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সেগুলো স্থগিত রয়েছে।’
পাওয়ার অব এটর্নি বিধিমালা সংশোধন
আসিফ নজরুল বলেন, ‘২০১৫ সালের পাওয়ার অব এটর্নি বিধিমালা নিয়ে প্রবাসীরা প্রচুর অভিযোগ করত। এই বিধিমালা অনুযায়ী কেউ যদি পাওয়ার দিতে চাইতো; তবে তার পাসপোর্ট থাকতে হতো, বাংলাদেশের দূতাবাসে গিয়ে তাকে পাসপোর্ট জমা দিতে হতো। প্রবাসীদের সন্তানরা অনেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট নেন না। তাই তাদের পক্ষ থেকে পাওয়ার অফ এটর্নি হতে গেলে অনেক জটিলতা হতো।’
আরও পড়ুন: সাবেক সিইসি বিচারপতি আব্দুর রউফের মৃত্যুতে আইন উপদেষ্টার শোক
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে কথা বলে আমরা এই বিধিমালার সংশোধন এনেছি। সংশোধন অনুযায়ী প্রবাসী বাংলাদেশিদের যদি বাংলাদেশি পাসপোর্ট না-ও থাকে, তাহলেও তারা তাদের পাওয়ার অব এটর্নি সম্পাদন করতে পারবেন। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্যক্তির পাসপোর্টে নো ভিসা রিকোয়ার স্টিকার থাকলে, কিংবা তার জন্ম সনদ থাকলে কিংবা জাতীয় পরিচয়পত্র থাকলে তিনি বিদেশ থেকে পাওয়ার অব এটর্নি সম্পাদন করতে পারবেন। আমি মনে করি এটি আমাদের প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনেকের ভোগান্তি লাঘবে বিরাট ভূমিকা রাখবে।’
আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে মামলা ও তদন্তের গতি যাতে ধীর না হয় এজন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা।
২৯৬ দিন আগে