পরিত্যাক্ত বিদ্যুৎকেন্দ্র
ঠাকুরগাঁওয়ে পরিত্যক্ত বিদ্যুৎকেন্দ্রের সব চুরির পর ভেঙে নিচ্ছে দেয়ালও
গাছ, বৈদ্যুতিক তার, মাটির নিচের এইচটি ক্যাবল, কাঠের দরজা জানালা, টিন, অফিস ঘর একে একে সব চুরি করে খাওয়া শেষ হয়েছে। এখন ধরেছে নিরাপত্তা দেয়ালে। তারপরও কর্তৃপক্ষের নেই কোনো খবর। একের পর এক সরকারি সম্পত্তি প্রকাশ্যে দিনের বেলাতেই লোপাট হলেও দেখার কেউ নেই।
এমনটি ঘটছে শহর থেকে ৬ কিলোমিটার পশ্চিমে ঠাকুরগাঁও রোড রেল স্টেশনের পাশে বন্ধ ঘোষিত পরিত্যক্ত ডিজেল বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও বেসরকারি আর জেড পাওয়ার লিমিটেডের স্থাপনায়। প্রায় একযুগ আগে খুচরা যন্ত্রাংশের অভাবে এবং জ্বালানি তেল ‘লাইট ডিজেল অয়েল’ সংকটের কারণে বন্ধ হয়ে যায় উত্তরাঞ্চলের সর্বপ্রথম এবং বৃহৎ বিদ্যুৎকেন্দ্র ঠাকুরগাঁও ডিজেল বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি। বন্ধ ঘোষণার পর এর ৭টি জেনারেটর, ২টি ১১/৩৩ কেভি ট্রান্সফরমার, ২টি ১১/৪ কেভি ট্রান্সফরমার, অসংখ্য যন্ত্রপাতি, অব্যবহৃত তেল নিলামের নামে সামান্য দামে হরিলুট হয়ে যায়।
এরপরেই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যাবতীয় স্থাপনা, গাছ এবং ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন মালামাল হস্তান্তর করা হয় ‘নেসকো লিমিটেড’ কর্তৃপক্ষের হাতে। প্রায় একই সময় বন্ধ হয় বেসরকারি মালিকানায় স্থাপিত কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র ‘আর জেড পাওয়ার লিমিটেড’।
আরও পড়ুন: চেরনোবিল পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রে ড্রোন হামলা, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
চুক্তি মোতাবেক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এর জেনারেটর, এইচটি ক্যাবল, সকল ট্রান্সফরমারসহ মূল্যবান মালামাল আর জেড কর্তৃপক্ষ নিয়ে যায়। এর ভূমি এবং সিকিউরিটি ক্যাম্প, ওয়ালসহ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
এরপরই শুরু হয় লুটপাটের রাজত্ব। বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশের ভাসমান বস্তিবাসীদের কেউ কেউ প্রকাশ্য দিবালোকে গাছ কেটে নেওয়া, মাটি খুড়ে এইট টি ক্যাবল তুলে নেওয়া, টিন ও দরজা জানালা ভেঙ্গে নেওয়ার পর অবশিষ্ট স্থাপনার ইট খুলে বিক্রি করা শুরু করে। এগুলো শেষ হওয়ার পর এখন এই চক্রটি নিরাপত্তা দেয়াল ভেঙ্গে নেওয়া শুরু করেছে।
এ ব্যাপারে বাশের বস্তির বাসিন্দা মিন্টু বলেন ‘এই বস্তির সবাই তো আর এ কাজ করে না। মাত্র দু তিনজন মানুষ এসব চুরির সঙ্গে যুক্ত। পিডিবির লোক, পুলিশ কিছু বলে না বলেই এখন তারা দিনের বেলাতেই ইট খুলে বিক্রি করার সাহস দেখাচ্ছে। আমরা ভয়ে কিছু বলতে পারিনা।’
স্থানীয়রা জানান, ‘সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এখানে চলে মাদকের কেনা বেচা আর সেবন। আমরা ভয়ে কিছু বলতে পারিনা।’ অবিলম্বে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জোর দাবি জানান তারা।
আরও পড়ুন: ময়মনসিংহের সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে ২৪.৩ মিলিয়ন ডলার দেবে এডিবি
এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জানান, ‘সেখানে আনসার পাহারাদার থাকার কথা। সবসময় সবকিছু দেখে রাখাও সম্ভব নয়।’
২৯০ দিন আগে