অচলাবস্থা
এনবিআর’র অচলাবস্থায় দিনে ৩ হাজার কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চলমান অচলাবস্থার কারণে দেশের ব্যবসায় দৈনিক প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশের শীর্ষ স্থানীয় ব্যবসায়ী নেতারা। দ্রুত সংকট সমাধানে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপও দাবি করেছেন তারা।
শনিবার (২৮ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রপ্তানিমুখী বিভিন্ন শিল্পখাতের নেতারা জানান, এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কলম বিরতি কর্মসূচি গত ১৪ মে থেকে শুরু হলেও আজ থেকে তা পূর্ণাঙ্গ অচলাবস্থায় রূপ নিয়েছে, যা আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।
সংবাদ সম্মেলনে আইসিসি বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, শিল্প মালিকদের সংগঠন বিএসআইসির সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী (পেয়ারভেজ), বিজিএমইএ’র সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু, বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল, বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ নাসিম মনজুর এবং ডিএসসিসিআই সভাপতি তাসকিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
এনবিআর চেয়ারম্যান অপসারণের বিরোধীতা করে নেতারা বলেন, এনবিআর চেয়ারম্যান অপসারণের দাবিকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট অচলাবস্থা আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান সম্ভব। তবে সরকারি গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা কেউ শ্রমিক ইউনিয়নের মতো আন্দোলনে নামতে পারেন না বলেও মন্তব্য করেন তারা।
ব্যবসায়ী নেতারা বলেছেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাষ্ট্রের প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তারা স্পষ্ট করেছেন, কোনো অবস্থাতেই আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটানো যাবে না।
ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, এনবিআরের কলম বিরতি কর্মসূচির কারণে প্রতিদিন প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার ব্যবসায়িক কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা সংকট নিরসনে সরকারের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়ে বলেন, দেশের অর্থনীতি এবং বৈদেশিক বাণিজ্য সচল রাখতে দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে এই অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে হবে।
তারা বলেন, ‘আমাদের তৈরি পোশাক, চামড়া, জুতা, সিরামিকস, ওষুধ, কৃষিপণ্য এবং প্লাস্টিক খাত এখন শীতকালীন মৌসুমের কার্যাদেশ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে। অথচ কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট ও কাস্টমস হাউজে অচলাবস্থার কারণে সময়মতো রপ্তানি করা সম্ভব হচ্ছে না।
নেতারা জানান, অনেক ক্রেতা কার্যাদেশ বাতিলের হুমকি দিচ্ছেন এবং নতুন কার্যাদেশ দিতেও অনাগ্রহ প্রকাশ করছেন। পরিস্থিতি এভাবে চলতে থাকলে আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়বে এবং প্রতিবেশী দেশের কাছে বাজার হারানোর আশঙ্কা রয়েছে।
ব্যবসায়ী নেতারা এনবিআরের আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সংকট সমাধানের জন্য প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
আলোচনায় অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (বিডা) সম্পৃক্ত করার পরামর্শ দেন তারা।একই সঙ্গে তারা আন্দোলনরত এনবিআর কর্মীদের ভবিষ্যৎ ন্যায্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান, যেন জাতীয় অর্থনীতিতে আর কোনো ধরনের ক্ষতি না হয়।
নেতারা বলেন, বন্দরে পণ্য আটকে থাকায় ডিমারেজ বা জরিমানার পরিমাণ চার গুণ বেড়েছে, যা ব্যবসায়িক খরচকে অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে দিয়েছে।
নেতারা হুঁশিয়ারি দেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজার বাংলাদেশের জন্য অপেক্ষা করবে না। অর্ডার প্রতিবেশী দেশে চলে গেলে জাতীয় অর্থনীতির জন্য তা অপূরণীয় ক্ষতি ডেকে আনবে।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পণ্য ছাড় করতে বিলম্ব হওয়ায় বন্দরে ডিমারেজ বা অতিরিক্ত জরিমানার পরিমাণ চার গুণ বেড়েছে। এতে ব্যবসা পরিচালনার ব্যয় উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ব্যবসায়ীদের দাবি— ১. এনবিআরের আন্দোলনরত কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক করা।২. বিতর্কিত অধ্যাদেশ আলোচনার মাধ্যমে পর্যালোচনা করা— যাতে আন্তর্জাতিক মান ও দেশের বাস্তবতা সমন্বয় হয়।৩. ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সব সরকারি দপ্তরের জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা বাড়ানো।৪. এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সময়সীমাবদ্ধ সংস্কার কর্মসূচি চালু করা।
১৬০ দিন আগে
এনবিআরের অচলাবস্থা নিরসনে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ চাইলেন আন্দোলনকারীরা
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মধ্যে চলমান অচলাবস্থা নিরসনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বিকালে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই আবেদন জানানো হয়।
ব্রিফিংয়ে, কাউন্সিল ২৭ জুনের মধ্যে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমত খানকে অপসারণের দাবিতে তাদের আল্টিমেটাম পুনর্ব্যক্ত করে। আর যদি তা না হলে তারা ২৮ জুন থেকে সারা দেশে সকল কাস্টমস ও কর অফিসে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করার হুমকি দিয়েছে।
এই আন্দোলনকে বেগবান করার অংশ হিসেবে কাউন্সিল ২৮ জুন ‘এনবিআরের অভিমুখে মার্চ’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এর মাধ্যমে সারা দেশ থেকে আন্দোলনকারীদের জড়ো করা হবে।
পড়ুন: সক্ষমতা বাড়াতে এনবিআরের ডিজিটাল রূপান্তর প্রয়োজন: সেমিনারে বক্তারা
সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে কাউন্সিলের সভাপতি হাসান মুহাম্মদ তারেক রিকাবদার বলেন, ‘এই মুহূর্তে, এনবিআর চেয়ারম্যানকে অবিলম্বে অপসারণ ছাড়া সংস্কারের কোনো বিকল্প নেই।’
কাঠামোগত সংস্কার ও নেতৃত্ব পরিবর্তনের দাবিতে কর্মকর্তাদের চলমান বিক্ষোভ এবং কর্মবিরতির কারণে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে এনবিআর পরিষেবায় মারাত্মক ব্যাঘাত হচ্ছে।
১৬২ দিন আগে
শাটডাউনের তৃতীয় দিনে অচল শেবাচিম ক্যাম্পাস
বরিশালে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে (শেবাচিম) তৃতীয় দিনের মতো চলছে শিক্ষার্থীদের ডাকা কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি। এতে ক্যাম্পাসে অচলাবস্থা বিরাজ করছে।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কর্মসূচির অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা কলেজের সামনে বান্দ রোডে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে।
এর আগে, শিক্ষক সংকট দূরের দাবিতে গত সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচির ঘোষণা দেন শেবাচিম কলেজের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের চলমান এই কর্মসূচিতে বন্ধ রয়েছে কলেজের প্রশাসনিক ও ছাত্র শাখার কার্যক্রম। এছাড়াও কলেজের প্রধান দুটি গেট তালাবদ্ধ রয়েছে এবং গেট দুটিতে ‘শাটডাউন’ লেখা ব্যানার টানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: তিতুমীরের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত
কলেজের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মস্থলে এলেও নিয়মিত কোনো কার্যক্রমই পরিচালনা করতে পারেননি। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রমে অংশ নিতেও দেখা যায়নি। এতে ব্যাহত হচ্ছে কলেজটির স্বাভাবিক কার্যক্রম।
এদিকে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, কলেজে চলমান শিক্ষক সংকট নিরসনে তাদের দাবি মেনে না নেওয়া অবধি আন্দোলন চলমান থাকবে।
তবে কলেজ প্রশাসন বলছে, তারা বিষয়টি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দফতরকে জানিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ না নিলে মেডিকেল কলেজের শূন্যপদে শিক্ষক পদায়ন সম্ভব নয়।
শেবাচিম কলেজের প্রশাসনিক শাখা জানায়, কলেজে শিক্ষকদের ৩৩৪টি পদের মধ্যে ১৪৬টি পদে শিক্ষক রয়েছেন। বাকি ১৮৮টি পদ শূন্য রয়েছে।
বর্তমানে কলেজে প্রয়োজনের তুলনায় শিক্ষক কম থাকায় প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রমে ব্যহত হচ্ছে। কয়েকটি বিভাগে শিক্ষক সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। এতে শিক্ষার্থীরা মানসম্মত ক্লাস ও প্রশিক্ষণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ প্রভাব চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের এই দাবি যৌক্তিক এবং তাদের দাবিগুলো নিয়ে মন্ত্রণালয়ে কথা বলা হয়েছে। দ্রুতই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে বলে নিশ্চিত করেন কলেজের অধ্যক্ষ ফয়জুল বাশার।
২৮৯ দিন আগে