দক্ষিণ কোরিয়া
দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী ঢাকা: শাহরিয়ার আলম
দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গঠনের স্বপ্ন বাস্তবায়নে তাৎপর্যপূর্ণভাবে সাহায্য করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
রবিবার(২৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের (আরওকে) জাতীয় প্রতিষ্ঠা দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক, দূতাবাসের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি বাংলাদেশে দক্ষিণ কোরিয়ার সম্প্রদায়কে অভিনন্দন জানান।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী সৌদি আরবের অনেক নামকরা কোম্পানি: রাষ্ট্রদূত
দেশের স্বাধীনতার খুব প্রাথমিক পর্যায়ে ১৯৭২ সালের ১২ মে বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ার স্বীকৃতির জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
শাহরিয়ার আলম ৫০ বছরের গৌরবময় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন এবং আরও গভীর, সবক্ষেত্রে সহযোগিতা তৈরি করে এই বন্ধুত্বকে আরও উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি ভারতে জি-২০ নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের মধ্যে সাম্প্রতিক বৈঠকের উল্লেখ করেন।
প্রতিমন্ত্রী ২০৪১ সালের মধ্যে জ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে প্রধানমন্ত্রীর ভিশন পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগের স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে কোনো টানাপোড়েন নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন
আমদানি করা সেকেন্ড-হ্যান্ড গাড়ির উপর নির্ভরতা কমাতে হবে বাংলাদেশের: দ. কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত
বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক বলেছেন, বাংলাদেশকে রিকন্ডিশন্ড সেকেন্ড-হ্যান্ড গাড়ি আমদানির উপর নির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে আরও মনোযোগ দিতে হবে, যা দূষণ কমাতেও সাহায্য করবে।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্কে ফেয়ার টেকনোলজি-হুন্দাই কারখানা পরিদর্শনকালে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশের উচিত আমদানি করা সেকেন্ড-হ্যান্ড গাড়ির উপর নির্ভরতা কমানো। দেশীয়ভাবে তৈরি গাড়ি পরিবেশের জন্যও ভালো হবে।’
দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, অনেক দেশ ইতোমধ্যে পুরোনো গাড়ি আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে এবং বাংলাদেশও একই ধরনের নীতি গ্রহণ করতে পারে।
ফেয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান রুহুল আলম আল মাহবুব, ফেয়ার টেকনোলজি লিমিটেডের পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুতাসিম দাইয়ান, ডেইলি সান সম্পাদক ও ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশের (ডিকাব) সভাপতি রেজাউল করিম লোটাস এবং ডিকাব সাধারণ সম্পাদক ইমরুল কায়েসসহ আরও অনেকে এসময় উপস্থিত ছিলেন।
প্ল্যান্ট পরিদর্শন শেষে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ যদি উৎপাদনের ক্ষেত্র প্রসারিত করে, তাহলে দেশে মানসম্পন্ন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়তা করবে।
তিনি দেশে আরও বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য উন্নত কর ব্যবস্থার মাধ্যমে বিনিয়োগ পরিবেশের আরও উন্নতির ওপর জোর দেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ কীভাবে উন্নয়নের পরবর্তী ধাপে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে তার একটি অনন্য উদাহরণ এই গাড়ি উৎপাদন কারখানা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠতে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশ হিসেবে স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা করতে সামনের দীর্ঘ যাত্রায় সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতের একসঙ্গে অনেক কাজ করা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন একমাত্র সমাধান: দ. কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত
গ্রুপের চেয়ারম্যান মাহবুব বলেন, তাদের তরুণ মেধাবীদের কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে এবং দেশে আরও বৃত্তিমূলক প্রতিষ্ঠানের উপস্থিতির সঙ্গে মানসম্পন্ন শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে।
তিনি সরকারের কাছ থেকে যে সহায়তা পাচ্ছেন তা স্বীকার করে বলেন, ‘আমরা টাকা চাই না, সরকারের কাছে নীতিগত সহায়তা চাই।’
মাহবুব বলেন, তারা পাঁচ বছরের ওয়ারেন্টিসহ বাংলাদেশে উৎপাদিত হুন্দাই গাড়ির জন্য সবচেয়ে প্রতিযোগিতামূলক মূল্য দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সারা দেশে আমাদের পরিষেবা কেন্দ্রগুলো সম্প্রসারিত করছি।’
এই বছরের জানুয়ারিতে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্কে ফেয়ার টেকনোলজি-হুন্দাই কারখানার উদ্বোধনের কথা স্মরণ করে ডিকাব প্রেসিডেন্ট লোটাস বলেন, কারখানার উদ্বোধন নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের রূপকল্প ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নে একটি সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ।
বর্তমানে প্ল্যান্টে বেশ কয়েকটি মডেল তৈরি করা হচ্ছে। এগুলো হলো- ক্রেটা: ১৪৯৭সিসি ৫ সিটার ও ক্রেটা গ্র্যান্ড: ১৪৯৩সিসি, ৭ সিটার।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্ল্যান্টের বর্তমান উৎপাদন ক্ষমতা প্রতি বছর সাত হাজার।
তারা বলেছে, যদিও কোম্পানিটির ৩৫০ জনেরও বেশি কর্মী রয়েছে। বর্তমানে দেশীয় বাজারের দিকে মনোনিবেশ করছে। তবে ভবিষ্যতে বাংলাদেশে তৈরি গাড়ি রপ্তানির পরিকল্পনা রয়েছে। শোরুমের সংখ্যা বাড়িয়ে ২০টি করা হবে এবং বর্তমান শোরুমের সংখ্যা ছয়টি।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র ও দ. কোরিয়ার বিরুদ্ধে পরমাণু ব্যবহারের হুমকি কিমের
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে দ. কোরিয়ার ‘আরও উদ্যোগ’ চায় বাংলাদেশ
দক্ষিণ কোরিয়ার উন্নয়ন মডেলের প্রশংসা পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির মূলমন্ত্র ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বিদ্বেষ নয়’ পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং বলেছেন দেশটি ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুকসহ সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্কে এই নীতি অনুসরণ করছে।
রবিবার (১৩ আগস্ট) কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘গোপন তথ্য’ কারা ফাঁস করেছে তা শনাক্ত করার চেষ্টা করছি: মোমেন
এসময় মোমেন রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় পার্ক ইয়ং-সিককে আন্তরিক অভিনন্দন জানান।
মোমেন কোরিয়ার উন্নয়ন মডেলের প্রশংসা করেন; যা এক প্রজন্মেরও কম সময়ে কোরিয়াকে একটি উন্নত দেশে রূপান্তরিত করেছে।
এছাড়া এই মডেলটি বাংলাদেশের মতো অনেক দেশের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস বলেও স্বীকার করেছেন মন্ত্রী।
মোমেন সম্প্রতি বাংলাদেশ ও কোরিয়ার মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করেন।
তিনি একটি রপ্তানিমুখী অর্থনীতি গড়ে তুলতে কোরিয়ার সঙ্গে আরও সহযোগিতা কামনা করেন।
মোমেন রাষ্ট্রদূতকে তার বাংলাদেশে থাকাকালীন সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের আগে মার্কিন সরকার পদত্যাগ করবে কি না সফররত কংগ্রেসম্যানদের মোমেনের প্রশ্ন
শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্ব আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করেছে: ভারতীয় ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলকে মোমেন
বিটিএস’র ১০ বছর
দক্ষিণ কোরিয়ান কে-পপ বয় ব্যান্ড বাংতান বয়েজ (বিটিএস) ২০১৩ সালের ১৩ জুন যাত্রা শুরু করে। বিগহিট মিউজিক এর অধীনে টু কুল ফর স্কুল অ্যালবাম নিয়ে পুরো বিশ্বের সামনে আত্মপ্রকাশ করে স্বপ্নবাজ ৭ কিশোর।
তারা হলেন- দলনেতা কিম নামজুন (আরএম) র্যাপার ও ড্যান্সার; কিম সোকজিন (জিন) ভোকাল, ভিজ্যুয়াল ও ড্যান্সার; মিন ইয়ঙ্গি (সুগা) লিড র্যাপার ও ড্যান্সার; জং হোসোক ( জে-হোপ) মেইন ড্যান্সার ও র্যাপার; পার্ক জিমিন (জিমিনি) মেইন ড্যান্সার ও লিড ভোকাল; কিম তেহিয়্যূং (ভি) ভোকাল, ভিজ্যুয়াল ও ড্যান্সার এবং জন জংকুক (জংকুক) মেইন ভোকাল ও লিড ড্যান্সার। তাদের ফ্যান বা ভক্তদের বিটিএস আর্মি বলা হয়ে থাকে।
আত্মপ্রকাশের পর ২০১৪ সালে তারা প্রকাশ করে তাদের প্রথম কোরিয়ান স্টুডিও অ্যালবাম ডার্ক এন্ড ওয়াইল্ড এবং জাপানিজ স্টুডিও অ্যালবাম ওয়েক আপ। তাদের দ্বিতীয় স্টুডিও অ্যালবাম উইংস (২০১৬) ব্যান্ডের প্রথম অ্যালবাম, কোরিয়ায় যেটির ১ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়।
লাভ ইয়োরসেল্ফ: হার আলব্যামটি দিয়ে ২০১৭ সালে পুরো বিশ্বের সংঙ্গীত জগতে আলোড়ন তোলে এই সাত তরুণ। বিটিএস প্রথম কোরিয়ান গ্রুপ হিসেবে ‘মাইক ড্রপ’ গানটির জন্য রেকর্ডিং ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন অব আমেরিকা থেকে সার্টিফিকেট পায় এবং লাভ ইয়োরসেল্ফ: টিয়ার (২০১৮) অ্যালবামটি বিলবোর্ড ২০০ চার্টে প্রথম স্থান দখল করে; আর এরপরের যাত্রা তো এক ইতিহাস।
২০১৭ সাল থেকে টানা পাঁচ বছর বিলবোর্ড মিউজিক অ্যাওয়ার্ডে টপ সোশ্যাল আর্টিস্টের খেতাব অর্জনসহ ২০১৮ সালে টাইম ম্যাগাজিনের ‘নেক্সট জেনারেশন লিডারস’ খেতাব এবং একই বছর ফোর্বস কোরিয়া পাওয়ার সেলিব্রিটির তালিকায় শীর্ষ স্থান অর্জনের মতো অগণিত প্রাপ্তি বিটিএসের খাতায়।
২০২০ ও ২০২১ সালেও দেখা যায় তাদের এই সাফল্যের ধারাবাহিকতা। করোনা মহামারির কঠিন সময়েও ২০২০ সালের আগস্টে বিশ্ববাসীকে বিটিএসের সদস্যরা উপহার দেন তাদের প্রথম ইংরেজি একক গান ‘ডায়নামাইট’; যা দিয়ে প্রথমবারের মতো তারা জায়গা করে নেন বিলবোর্ড হট হান্ড্রেড সিঙ্গেলসের শীর্ষে!
বিটিএস পরপর দুইবার (২০২১/২০২২) সেরা পপ ডুও/গ্রুপ পারফরম্যান্স বিভাগে গ্র্যামি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছে। তারপর নিয়মিতভাবে তাদের অ্যালবাম বের হয়েছে; আর তাদের 'ডিএনএ', 'আইডল', 'বাটার' ও 'লাইফ গোজ অন' বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি ভক্তের হৃদয় মাতিয়েছে।
এছাড়া ২০২১ সালে বিটিএস তৃতীয়বারের মতো জাতিসংঘের বার্ষিক সাধারণ অধিবেশনে বিশ্ব নেতাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছিল। শুধু তাই নয়, ২০২২ সালে হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন ব্যান্ডটির সদস্যরা।
আরও পড়ুন: প্রথম সোলো অ্যালবাম 'ইন্ডিগো' নিয়ে আসছে বিটিএসের আরএম
বিদ্যমান সম্পর্কের পূর্ণ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে ঢাকা-সিউল উচ্চ পর্যায়ের সফর প্রয়োজন: শাহরিয়ার
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পূর্ণ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের সফর বিনিময়ের ওপর জোর দিয়েছেন।
দুই দেশের মধ্যে চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে আনন্দ প্রকাশ করেন প্রতিমন্ত্রী আলম।
বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার বিদায়ী রাষ্ট্রদূত লি জাং-কেউন বুধবার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে তার কার্যালয়ে বিদায়ী বৈঠক করেন।
তারা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, দক্ষ শ্রম, কানেক্টিভিটি, ইন্দো প্যাসিফিক, উচ্চ পর্যায়ের সফর, জনগণের মধ্যে যোগাযোগ ইত্যাদি ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে মতবিনিময় করেন।
রাষ্ট্রদূত লি বাংলাদেশে তার মেয়াদে অর্জিত চারটি বড় মাইলফলক তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন একমাত্র সমাধান: দ. কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত
এগুলো হলো- দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধি (১ দশমিক ৫ বিলিয়ন থেকে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার), ওডিএ (৭০০ মিলিয়ন থেকে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার), ইপিএস কর্মী (প্রতিবছর ১৫০০ থেকে ১০ হাজার পর্যন্ত) এবং এফডিআই (২০২২ সালে ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার)।
তিনি চলমান ঢাকা-সিউল সরাসরি ফ্লাইট এবং বাংলাদেশে দুটি কোরিয়ান জায়ান্ট কোম্পানি- হুন্দাই এবং স্যামসাং-এর অ্যাসেম্বলিং প্ল্যান্টের উদ্বোধনের জন্য সন্তোষ প্রকাশ করেন।
প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশে তার সফল মেয়াদের জন্য রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানান এবং তার ভবিষ্যত দায়িত্বের জন্য তার সাফল্য কামনা করেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে দ. কোরিয়ার ‘আরও উদ্যোগ’ চায় বাংলাদেশ
সিউলে বাংলাদেশ-দক্ষিণ কোরিয়া যৌথ পিপিপি প্লাটফর্ম মিটিং অনুষ্ঠিত
ইডিসিএফ থেকে বাংলাদেশকে ৩ বিলিয়ন ডলার প্রদানে ফ্রেমওয়ার্ক অ্যারেঞ্জমেন্ট সই
বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়া বৃহস্পতিবার অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহযোগিতা তহবিল (ইডিসিএফ) থেকে ২০২৩ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়ের ঋণ সংক্রান্ত একটি নতুন ফ্রেমওয়ার্ক অ্যারেঞ্জমেন্ট সই করেছে।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) বোর্ড অব গভর্নরসের ৫৬তম বার্ষিক সাধারণ সভা উপলক্ষে দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচিওনে সই অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনীতি ও অর্থ বিষয়ক ফার্স্ট ভাইস মিনিস্টার কিসুন বাং এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শরিফা খান নিজ নিজ পক্ষের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন।
উভয় পক্ষের সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের মধ্যে এ উপলক্ষে ঢাকা এমআরটি লাইন ৪-এর জন্য সহযোগিতার সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) এবং সিএনজিচালিত বাস ক্রয় ও রেলওয়ে সিগন্যালিং ব্যবস্থার আধুনিকায়ন সংক্রান্ত দুটি প্রকল্পের জন্য ইডিসিএফ ঋণ চুক্তি (এল/এ) সই হয়েছে।
সই হওয়া অ্যারেঞ্জমেন্টটি দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের পক্ষ থেকে আগামী পাঁচ বছরের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত ছাড়ের ঋণ প্রদানের আইনি ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।
অ্যারেঞ্জমেন্ট অনুসারে, ইডিসিএফ ঋণের পরিশোধের সময়কাল ১৫ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ মোট ৪০ বছর এবং বার্ষিক সুদের হার হবে ০.০১ %থেকে ০.০৫% এর মধ্যে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ও ইইউ দ্বিপক্ষীয় অংশীদারিত্ব আরও গভীর করতে সম্মত
অ্যারেঞ্জমেন্ট অনুসারে, প্রার্থী প্রকল্পগুলো ভবিষ্যতে দুই সরকারের মধ্যে ঘনিষ্ঠ আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে।
নতুন ফ্রেমওয়ার্ক অ্যারেঞ্জমেন্ট সইয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ সারা বিশ্বে দক্ষিণ কোরিয়ার অফিসিয়াল ডেভেলপমেন্ট এইড (ওডিএ) এর দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাপক হয়ে উঠেছে।
সদ্য সই চুক্তির দ্বারা অনুমোদিত পরিমাণ পূর্ববর্তী ইডিসিএফ ফ্রেমওয়ার্ক ব্যবস্থার তুলনায় চারগুণ বেশি; যা ২০২১ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে ৭০০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়।
এ পর্যন্ত কোরিয়ান সরকার ইডিসিএফ-এর মাধ্যমে এক দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মোট পরিমাণ সহ ৩০টি উন্নয়ন প্রকল্পকে সমর্থন করেছে।
কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং দেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ বিবেচনায় যথেষ্ট পরিমাণে সহায়তা বাড়ানোর সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জাং-কুয়েন বলেন, দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকীতে একটি নতুন ইডিসিএফ ফ্রেমওয়ার্ক অ্যারেঞ্জমেন্ট সই করা বিশেষভাবে অর্থবহ।
দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য রেয়াতযোগ্য ঋণের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির সঙ্গে আরও আশা করা যায় যে কোরিয়া বাংলাদেশে মেগা প্রকল্পগুলোকে সমর্থন করতে সক্ষম হবে, এই ধারায় বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখবে।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন যে এই ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সহায়তা বাংলাদেশিদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা যেমন-পরিবহন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার ক্ষেত্রে এবং বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার জনগণের মধ্যে বন্ধুত্ব বৃদ্ধিতে অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে একটি রাজনৈতিক দলকে রেখে অন্য রাজনৈতিক দলকে ‘সমর্থন’ করে না যুক্তরাষ্ট্র: মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর
নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়, মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকব: জাপানি রাষ্ট্রদূত
ভিসা আবেদন প্রক্রিয়ায় কোনো আর্থিক লেনদেনের প্রয়োজন নেই: দ. কোরিয়া দূতাবাস
কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের দূতাবাস বাংলাদেশের সকল ভিসা আবেদনকারীদের উদ্দেশে ফের বলেছে যে ভিসা আবেদন প্রক্রিয়ায় (ভিসা ফি ছাড়া) কোনো আর্থিক লেনদেনের প্রয়োজন নেই।
দূতাবাস বলেছে, ‘আমরা সকল আবেদনকারীদের জন্য একটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া প্রদান করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
বৃহস্পতিবার দূতাবাস এক বার্তায় জানিয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার দূতাবাস বা কোনও কোরিয়ান ব্যক্তি কখনই ভিসা সংক্রান্ত কোনও উদ্দেশ্যে অর্থ চাইবে না।
দূতাবাস জানায়, ‘কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের দূতাবাসের সঙ্গে অধিভুক্ত হওয়ার দাবি করে এবং ভিসা পরিষেবা বা সহায়তার বিনিময়ে আর্থিক লেনদেনের অনুরোধ করে এমন কোনও ব্যক্তি বা সংস্থার বিষয়ে দয়া করে সতর্ক থাকুন।’
দূতাবাস তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শেয়ার করা বার্তায় জানায়, এগুলো প্রকৃত আবেদনকারীদের থেকে সুবিধা নেওয়ার জন্য করা কোনো প্রতারণামূলক স্কিম হতে পারে।
বার্তায় আরও বলা হয়েছে, ‘যদি আপনি কোন সন্দেহজনক কার্যকলাপ বা ব্যক্তিদের সম্মুখীন হন, অনুগ্রহ করে অবিলম্বে কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের দূতাবাসে রিপোর্ট করুন।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক ‘পরবর্তী পর্যায়ে’ নিয়ে যেতে আগ্রাহী কোরিয়া
বাংলাদেশের সাথে সহযোগিতায় বৈচিত্র্য চান দ. কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং
মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শনে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত
বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং-কেউন তার দেশের কোম্পানির নির্মিত মাতারবাড়ি কয়লা চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেছেন।
এসময় তিনি ৭৫ জন কোরিয়ান প্রকৌশলীর কাজ পর্যবেক্ষণ করেন এবং তাদের উৎসাহিত করেন।
পরিচালকরা তাকে প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে ব্রিফ করেন।
তিনি এসময় বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজের ক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়ার ফার্ম পসকো ইএনডসি-এর চ্যালেঞ্জগুলো শোনেন এবং সেগুলোর সমাধান নিয়ে আলোচনা করেন।
সোমবার পরিদর্শনকালে রাষ্ট্রদূত লি বলেন যে দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি বড় অবকাঠামো প্রকল্পে সক্রিয়ভাবে জড়িত রয়েছে। যার মধ্যে ভান্ডালজুরি পানি সরবরাহ প্রকল্পে তাইয়ং ইএন্ডসি-এর সম্পৃক্ততা এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৩নং টার্মিনাল নির্মাণে স্যামসাং সিঅ্যান্ডটি-এর ভূমিকা রয়েছে।
তিনি আরও বলেছেন, এই প্রকল্পগুলো চালু করার সময় কোভিড-১৯ মহামারির প্রাদুর্ভাব সত্ত্বেও, কোরিয়ান কোম্পানিগুলো তাদের সময়ানুবর্তিতা এবং কর্মদক্ষতার জন্য বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ভূঁয়সী প্রশংসা পেয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে বড় অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পে তাদের কার্যক্রম সম্প্রসারণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: মাতারবাড়ী বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম ২০২৬ সালে শুরু হবে: খালিদ মাহমুদ
মঙ্গলবার ঢাকায় দক্ষিণ কোরিয়ার দূতাবাস জানিয়েছে, মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পটি এই অঞ্চলে বিদ্যুত সরবরাহের উন্নতি করবে। এইভাবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং জনগণের কল্যাণে সহায়তা করবে বলেও আশা করা হচ্ছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান পসকো ইএন্ডসি -জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রকল্পের ৯৫ দশমিক ৯ শতাংশ নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।
মাতারবাড়ি আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লা চালিত পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রকল্পে জাইকার অর্থায়নে সাত বছরের মধ্যে ১২০০ মেগাওয়াট (মেগাওয়াট) বিদ্যুত এবং অনুমোদিত সুবিধা উৎপাদনের ক্ষমতাসহ একটি কয়লা চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ হবে।
জাপানের সুমিতোমো, তোশিবা, এবং আইএইচআই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য একটি কনসোর্টিয়াম হিসেবে সহযোগিতা করছে। পসকো ইএন্ডসি -এর সঙ্গে প্ল্যান্টের প্রধান অংশ নির্মাণের জন্য সাবকন্ট্রাক্ট করা হয়েছে।
এই অঞ্চলের অর্থনীতিকে সাহায্য করার অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে, পসকো ইএন্ডসি প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪ হাজার স্থানীয় কর্মী নিয়োগ করেছে।
করোনা মহামারির কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, কয়লা চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজ ২০২০ সালের মার্চ মাসে শুরু হয়েছিল এবং বিলম্ব ছাড়াই এগিয়ে চলেছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার দূতাবাস জানিয়েছে, সঠিক সময়ে কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য, পসকো ইএন্ডসি প্রকল্প শুরুর পর থেকে দিন-রাত কাজ করেছে।
আশা করা হচ্ছে যে মাতারবাডড়ি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটটি ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে এবং দ্বিতীয় ইউনিটটি একই বছরের জুলাই মাসে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করবে।
আরও পড়ুন: মাতারবাড়ি চ্যানেলে টাগশীপ ডুবি, চীনা নাগরিকের লাশ উদ্ধার
খরচ বেড়েছে মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের
উ.কোরিয়া ফের সমুদ্রের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে: দ. কোরিয়া
দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ং থেকে শনিবার ফের সমুদ্রের দিকে একটি সন্দেহভাজন দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। দ.কোরিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক মহড়ার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দেয়ার একদিন পরেই উ.কোরিয়া এই ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।
সিউলের জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ জানিয়েছেন, এদিন বিকাল ৫টা ২২ মিনিটে পিয়ংইয়ং এর সুনান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা থেকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রটি নিক্ষেপ করা হয়েছিল। তবে অস্ত্রটি কোথায় পড়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে বলা হয়নি।
উ.কোরিয়ার ক্রমবর্ধমান হুমকির বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া হিসেবে দ.কোরিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিলে একাধিক পরিকল্পিত সামরিক মহড়া ঘোষণা করে।
এরপর উ.কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে ‘অভূতপূর্ব’ শক্তিশালী পদক্ষেপের হুমকি দিয়েছে।
উ.কোরিয়া চলতি বছরের ১ জানুয়ারি পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম একটি স্বল্প-পাল্লার অস্ত্রের পরীক্ষা চালায়। এবছর উত্তর কোরিয়া ৭০টিরও বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে অস্ত্র প্রদর্শনে রেকর্ড করেছে। যার মধ্যে মার্কিন মূল ভূখণ্ডে পৌঁছানোর সম্ভাব্য সক্ষমতাসহ আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রও রয়েছে।
উ.কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাগুলো মূলত দ.কোরিয়া বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পারমাণবিক হামলার হুমকি।
আরও পড়ুন: আবারও ব্যালিস্টিক মিসাইল নিক্ষেপ করল উত্তর কোরিয়া
উ.কোরিয়ার নেতা কিম জং উন ২০২৩ সালে তার পরমাণু কর্মকাণ্ড দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন।
তিনি দেশটির পারমাণবিক ওয়ারহেডগুলো ‘উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি’ ও ‘শত্রু’ দ.কোরিয়াকে লক্ষ্য করে যুদ্ধক্ষেত্রের কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যাপক উৎপাদন এবং আরও উন্নত আইসিবিএমগুলো বিকাশের আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি গত সপ্তাহে রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে একটি বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজের সময় এক ডজনেরও বেশি আইসিবিএম প্রদর্শন করেন।
সীমিত সম্পদ থাকা সত্ত্বেও বিপুল সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে কিম তার দেশের সামরিক সক্ষমতা সম্প্রসারণের ধারাবাহিকতার ওপর জোর দিয়ে আসছেন।
অন্যদিকে, ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনায় অচলাবস্থা বজায় রয়েছে।
শুক্রবার উ.কোরিয়া এক বিবৃতিতে এই বছর ওয়াশিংটন ও সিউলকে ২০ রাউন্ডের বেশি সামরিক মহড়ার পরিকল্পনা করার জন্য অভিযুক্ত করেছে। যার মধ্যে বড় আকারের মহড়াও রয়েছে এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বীরা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যাহত করছে’ বলে বর্ণনা করেছে।
দ.কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আইনপ্রণেতা কর্মকর্তারা বলেছিলেন যে সিউল ও ওয়াশিংটন মার্চের মাঝামাঝি সময়ে একটি বার্ষিক কম্পিউটার-সিমুলেটেড সম্মিলিত প্রশিক্ষণের আয়োজন করবে।
দ.কোরিয়ার জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতির উপমন্ত্রী হিও তাই-কেউনের মতে, ১১ দিনের প্রশিক্ষণ উ. কোরিয়ার পারমাণবিক হুমকির পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিভিন্ন অনির্দিষ্ট লক্ষ্য প্রতিফলিত করবে।
হিও বলেন, দুই দেশ মার্চের মাঝামাঝি সময়ে যৌথ মহড়াও পরিচালনা করবে, যা বিগত কয়েক বছরে অনুষ্ঠিত হওয়া মহড়ার তুলনায় বড় হবে।
আরও পড়ুন: উত্তর কোরিয়ার দূরপাল্লার মিসাইল পরীক্ষা
শিগগিরই নতুন ‘কৌশলগত অস্ত্র’ প্রদর্শন করবে উত্তর কোরিয়া: কিম
‘ভুল বোঝাবুঝি’ বাদ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক চায়: মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘ভুল বোঝাবুঝি’ বাদ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে আরও শক্তিশালী সম্পর্ক স্থাপন করতে চায়।
তিনি বলেন, ‘তারা (মার্কিন) বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে। তারা আমাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায়।’
বৃহস্পতিবার মোমেন সিলেটে সাংবাদিকদের বলেন, গতকাল (১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩) ছিল ‘বাংলাদেশের জন্য একটি দারুণ দিন’।
ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার জ্যেষ্ঠ কূটনীতিকদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার কথা উল্লেখ করে মোমেন বলেন, তারা সকলেই বাংলাদেশের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন এবং গভীর সম্পর্কের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক মার্কিন সহকারী সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সেলর ডেরেক শোলের আগমনের আগে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ধারাবাহিক বাংলাদেশ সফরে এসেছেন।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে শক্তিশালী অংশীদারিত্ব রয়েছে: ডেরেক শোলে
মোমেন বলেন, ‘আমাদের খুব ভালো আলোচনা হয়েছে। তারা সম্পর্ক জোরদার করতে এসেছে।’
ডেরেক শোলে বুধবার বলেছেন, ৫১ বছর ধরে গড়ে ওঠা শক্তিশালী অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে ভবিষ্যৎ সম্পর্কের ব্যাপারে ‘আশাবাদী’।
শোলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেনের সঙ্গে তার বৈঠকের পর সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ভবিষ্যতের জন্য আশাবাদী। আমাদের মধ্যে খুব দৃঢ় অংশীদারিত্বের ৫১ বছর পার হয়েছে। আমরা পরবর্তী ৫১ বছর এবং তার পরের সম্পর্কের জন্যও অপেক্ষা করছি। আমাদের উভয়ের অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তবে আমাদের অনেকগুলো সম্ভানাময় ক্ষেত্রও রয়েছে; যেগুলো নিয়ে আমরা আজ কথা বলেছি।’
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সেলর বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে তার সম্পর্ককে ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তার দিক থেকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ করতে দক্ষিণ কোরিয়াকে আহ্বান জানাল প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের সঙ্গে ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে আশাবাদী: মার্কিন কাউন্সেলর চোলেট