অভিবাসী
অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার ও মানবাধিকার নিশ্চিতে রাষ্ট্রকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে: ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, অভিবাসী কর্মীরা আমাদের সোনার সন্তান। অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার ও মানবাধিকার নিশ্চিতে রাষ্ট্রকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে বৈদেশিক আয়ের ক্ষেত্রে অভিবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স সরাসরি রিজার্ভে যোগ হচ্ছে। প্রবাসী আয়ে অন্যান্য রপ্তানি খাতের মতো ওভার ইনভয়েসিং ও আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের সুযোগ নেই। প্রবাসীরা বঞ্চনা, হয়রানি, অপমান এমনকি অপমৃত্যুরও শিকার হচ্ছেন।
আরও পড়ুন: ইতালীয় উপকূলে অভিবাসী নৌকা বিধ্বস্তে নিহত ৬০
শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) ঢাকার এফডিসিতে রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে অভিবাসী কর্মীদের মানবাধিকার নিশ্চিতকরণ নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এখনো পর্যন্ত অভিবাসী কর্মীদের ন্যায্য অধিকার সুপ্রতিষ্ঠা হয়নি। বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসগুলো কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে পারছে না। নারী শ্রমিকদের প্রতি সহিংসতা ও হয়রানি প্রতিরোধে দূতাবাসগুলোকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।
আরও পড়ুন: অভিবাসী কর্মীদের শ্রমশক্তিতে পুনঃএকত্রীকরণে বাংলাদেশ ও আইএলও’র চুক্তি সই
তিনি আরও বলেন, প্রবাসে কারাগারে আটক বাংলাদেশিদের মুক্তির বিষয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কাজ করছেন। সৌদি আরবে দুইজন অভিবাসী নিহত হওয়ার ঘটনায় বাংলাদেশ দূতাবাস ও মানবাধিকার কমিশনের প্রচেষ্টায় রক্তপণ হিসেবে ৩০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, কাজ হারিয়ে যেসব অভিবাসী শ্রমিক দেশে ফিরেছে তাদের সামাজিক সুরক্ষা ও রি—ইন্টিগ্রেশনের উপর আরও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। কর্মীর প্রেরণকারী রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে স্বচ্ছতা, জবাবদিহির মাধ্যমে নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে হবে।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস পালন
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, পরিবার পরিজন, আত্মীয়—স্বজন, বন্ধুবান্ধব ছেড়ে নানা প্রতিকূলতার মধ্যের আমাদের অভিবাসী কর্মীরা তাদের শ্রমে ঘামে উপার্জিত অর্থ দেশে পাঠিয়ে থাকেন।
তিনি আরও বলেন, যে রেমিট্যান্স যোদ্ধারা চলতি বছর ২৩ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পাঠিয়েছেন, তাদের সামাজিক মর্যাদা ও স্বীকৃতি এখনো আমরা নিশ্চিত করতে পারিনি। সরকারের নীতি কৌশল, প্রবাসী আয়ে প্রণোদনা বৃদ্ধি ও ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ পাঠানো প্রক্রিয়া সহজ করা হলে প্রতি বছর প্রবাসী আয় থেকে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ৩৫ থেকে ৪০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা সম্ভব।
আরও পড়ুন: মানবাধিকার নিয়ে সোচ্চার দেশগুলো অভিবাসী শ্রমিকদের দুর্ভোগ নিয়ে প্রায়ই নীরব থাকে: শাহরিয়ার
হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, আমাদের জিডিপিতে প্রবাসী আয়ের অবদান ৫ দশমিক ২ শতাংশ অথচ নেপালের জিডিপিতে প্রবাসী আয় ২৭ শতাংশ কন্ট্রিবিউট করছে। শোভন কর্মপরিবেশের অভাব, ন্যায্য মজুরি না পাওয়া, অদক্ষতা, অতিরিক্ত অভিবাসন ব্যয় নিরাপদ অভিবাসনের বড় অন্তরায়। বিদেশ থেকে পাসপোর্ট বিহীন আউট পাস নিয়ে বিপুল সংখ্যক কর্মীরা দেশে আসার বিষয়টি উদ্বেগ তৈরি করেছে। কেন এসব কর্মীরা বিনা পাসপোর্টে আউট পাস নিয়ে দেশে ফিরে আসলো তা গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে খতিয়ে দেখা উচিৎ।
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্য থেকে অবৈধ অভিবাসীদের ফেরাতে এসওপি হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
মানবাধিকার নিয়ে সোচ্চার দেশগুলো অভিবাসী শ্রমিকদের দুর্ভোগ নিয়ে প্রায়ই নীরব থাকে: শাহরিয়ার
বর্তমান বিশ্বে অভিবাসন সমস্যা ক্রমেই জটিল হচ্ছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, আন্তর্জাতিকভাবে মানবাধিকার ইস্যুতে সোচ্চার বলে দাবি করা দেশগুলো প্রায়ই তাদের নিজেদের ভূখণ্ডে অভিবাসী শ্রমিকদের সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের বিষয়ে 'নীরব থাকে বা অস্বীকার' করে যা, অত্যন্ত দুঃখজনক।
তিনি বলেন, 'বিশ্বজুড়ে আমরা সীমান্তে দেয়াল, জোরপূর্বক প্রত্যাবাসন, সমুদ্রতীর এলাকায় বন্দিশালা, সমুদ্রে ইচ্ছাকৃতভাবে পরিত্যাগ, নির্বিচারে অভিবাসন চর্চা, আন্তঃদেশীয় অপরাধমূলক নেটওয়ার্ক ইত্যাদির অবাস্তব ও অগ্রহণযোগ্য বাস্তবতা দেখেছি।’
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) গ্লোবাল ফোরাম অন মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (জিএফএমডি) জন্য জাতীয় প্রস্তুতিমূলক পরামর্শের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, আইওএম বাংলাদেশের চিফ অব মিশন আবদুস সাত্তার এসোয়েভ, বাংলাদেশে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত মেরি মাসদুপুয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সচিব আহমেদ মুনিরুস সালেহীন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
গ্লোবাল ফোরাম অন মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (জিএফএমডি) ২০২২-২০২৩ সালের সভাপতি হিসেবে কাজ করা ফ্রান্স ২০২৪ সালের ২৩ থেকে ২৫ জানুয়ারি জেনেভায় জিএফএমডির ১৪তম শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করতে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্টের কাছে রাষ্ট্রদূত ইমরানের পরিচয়পত্র পেশ, পোশাক ও ওষুধ শিল্পে সহযোগিতায় দেশটির আগ্রহ প্রকাশ
অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নতুন ট্রেড ইউনিয়নের ঘোষণা
অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে একটি নতুন ট্রেড ইউনিয়ন প্ল্যাটফর্ম গঠন করেছে ছয়টি গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন ও একটি নারী গৃহকর্মী ইউনিয়ন।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় অনুষ্ঠানিকভাবে ট্রেড ইউনিয়ন প্ল্যাটফর্মটি গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এই নতুন ট্রেড ইউনিয়ন প্ল্যাটফর্মের নাম হবে অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য ট্রেড ইউনিয়ন প্ল্যাটফর্ম।
নতুন প্ল্যাটফর্মটি আগামী দুই বছরের জন্য তার কার্যক্রম পরিচালনা করতে ১১ সদস্যের একটি পরিচালনা পরিষদ নির্বাচন করেছে।
নতুন ট্রেড ইউনিয়ন প্লাটফর্মের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বাবুল আক্তার বলেন, ‘আমরা অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকারের কথা বিচ্ছিন্নভাবে বলে আসছিলাম। এখন থেকে আমরা তাদের অধিকারের কথা আরও বেশি বেশি করে বলব।’
প্ল্যাটফর্মের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যরা হলো- বাংলাদেশ মুক্ত গার্মেন্টস শ্রমিক ইউনিয়ন ফেডারেশন, বাংলাদেশ বিপ্লবী গার্মেন্টস ওয়ারকারস ফেডারেশন, সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, একতা গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি ফেডারেশন এবং জাতীয় গার্হস্থ্য নারী শ্রমিক ইউনিয়ন।
আরও পড়ুন: জাপানি ব্যবসায়ীদের শিল্পকারখানা স্থাপনের জন্য জায়গা দেওয়ার প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর
প্ল্যাটফর্মটিতে চারজন সহযোগী প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রয়েছে যাদের ভোট দেওয়ার ক্ষমতা নেই। তারা হচ্ছে- সলিডারিটি সেন্টার বাংলাদেশ, বাংলাদেশ সেন্টার ফর ওয়ার্কার্স সলিডারিটি, আওয়াজ ফাউন্ডেশন এবং বাংলাদেশী অভিবাসী মহিলা শ্রমিক অ্যাসোসিয়েশন।
প্ল্যাটফর্মটির লক্ষ্য দেশে ও বিদেশে কাজ করা অভিবাসী শ্রমিকরা যেন তাদের অধিকার আদায় করতে পারেন।একই সঙ্গে কোনো পরিস্থিতিতে বৈষম্যের শিকার না হন।
সলিডারিটি সেন্টারের কান্ট্রি প্রোগ্রাম ডিরেক্টর একেএম নাসিম বলেন, 'এটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। কারণ এটি অভিবাসী শ্রমিকদের একটি ট্রেড ইউনিয়ন।’
তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সুশীল সমাজের সংগঠনগুলো মূলত অভিবাসন সমস্যা নিয়ে কাজ করত।’
ট্রেড ইউনিয়নের পরিচালনা পরিষদের গভর্নিং কাউন্সিলের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন চন্দন কুমার দে এবং সদস্য সচিব লিলি গোমেজ।
অনুষ্ঠানে ছিলেন সলিডারিটি সেন্টার বাংলাদেশের ডেপুটি কান্ট্রি প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মনিকা হার্টসেল।
আরও পড়ুন: বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারে সরকারের সহযোগিতা চায় বিটিসিসিআই
রাশিয়ান মুদ্রায় বাণিজ্যের অনুমতিপ্রাপ্তদের তালিকায় বাংলাদেশ: রুশ দূতাবাস
গ্রিসে দাবানলে ১৮ জনের লাশ উদ্ধার
গ্রিসের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে কয়েকদিন ধরে চলমান দাবানলে ১৮ জনের দগ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে দমকলকর্মীরা। ধারণা করা হচ্ছে, তারা অভিবাসী এবং তুরস্কের সীমান্ত অতিক্রম করে দেশটিতে প্রবেশ করেছে।
আলেকজান্দ্রোপলিস শহরের কাছে কয়েকশ’ দমকল কর্মী ঝড়ো বাতাসের মধ্যে দেশজুড়ে বেশ কয়েকটি দাবানলের বিরুদ্ধে লড়াই করার সময় লাশগুলো খুঁজে পান। সোমবার গ্রিসের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে পৃথক দাবানলে ২ জন নিহত ও ২ দমকলকর্মী আহত হয়েছেন।
গরম ও গ্রীষ্মের শুষ্ক আবহাওয়ায় দক্ষিণ ইউরোপের দেশগুলো বিশেষত দাবানল প্রবণ। স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের তেনেরিফে এক সপ্তাহ ধরে আরেকটি বড় ধরনের দাবানল জ্বলছে, যদিও এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মকর্তারা ইউরোপে দাবানলের ক্রমবর্ধমান প্রবণতা এবং তীব্রতার জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন এবং উল্লেখ করেছেন যে ২০১৭ সালের পরে দাবানলের ক্ষয়ক্ষতির জন্য ২০২২ ছিল দ্বিতীয় সবচেয়ে খারাপ বছর।
আরও পড়ুন: হাওয়াইয়ের মাউই দ্বীপে দাবানলে ৫৩ জনের মৃত্যু: গভর্নর
দমকল বিভাগের মুখপাত্র আইওনিস আর্তোপিওস বলেন, দেশটির পুলিশ ডিজাস্টার ভিকটিম আইডেন্টিফিকেশন টিমকে সক্রিয় করে। এরপরই আভান্তাস এলাকায় একটি খুপরির কাছে ১৮ জনের লাশ পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, ‘যেহেতু আশেপাশের এলাকা থেকে কোনো নিখোঁজ ব্যক্তি বা নিখোঁজ বাসিন্দাদের খবর পাওয়া যায়নি, তাই এই সম্ভাবনাটি তদন্ত করা হচ্ছে যে তারা অবৈধভাবে দেশে প্রবেশ করেছিলেন।’
আলেকজান্দ্রোপলিস তুরস্কের সীমান্তের কাছে অবস্থিত। মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া এবং আফ্রিকার দারিদ্র্য ও সংঘাত থেকে পালিয়ে আসা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রবেশের জন্য প্রায়শই এই পথ বেঁছে নেওয়া হয়।
গ্রিসের প্রেসিডেন্ট ক্যাটরিনা সাকেলারোপোলু এক বিবৃতিতে নিহতদের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
দাবানলের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই অন্ধকার বাস্তবতা যেন নতুন স্বাভাবিকতায় পরিণত না হয় তা নিশ্চিত করতে আমাদের জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।’
আরও পড়ুন: মাউই দাবানল: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০১
মাউই দ্বীপে দাবানলে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞে শোক প্রকাশ করে বাইডেনের কাছে প্রধানমন্ত্রীর চিঠি
সৌদি সীমান্তরক্ষীর গুলিতে শতাধিক ইথিওপিয়ান অভিবাসী নিহত: দাবি মানবাধিকার সংগঠনের
সৌদি আরবের সীমান্ত রক্ষীরা ইয়েমেন থেকে দেশে প্রবেশের চেষ্টা করা ইথিওপিয়ানদের উপর মর্টার নিক্ষেপ ও মেশিনগান দিয়ে গুলি করেছে বলে দাবি করা হয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এক রিপোর্টে। এতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শতাধিক নিরস্ত্র অভিবাসী নিহত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
সোমবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে সৈন্যদের হামলার প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য এবং অভিবাসীদের প্রবেশের পথে মৃতদেহ ও সমাধিস্থলের ছবি তুলে ধরা হয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাটি বলেছে, নিহতের সংখ্যা 'হাজার হাজার' হতে পারে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনের সঙ্গে সৌদি আরবের দক্ষিণ সীমান্তে অভিবাসন প্রত্যাশীদের উপর সেনাদের গুলি বর্ষণের বিষয়ে জাতিসংঘ এরই মধ্যে সৌদি আরবকে প্রশ্ন করেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সৌদি সরকারের একজন কর্মকর্তা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনটিকে ‘ভিত্তিহীন এবং অনির্ভরযোগ্য সূত্রের উপর ভিত্তি করে করা’ বলে অভিহিত করেছেন। তবে তিনি এই দাবির সমর্থনে কোনো প্রমাণ দেননি। সীমান্তে অভিবাসীদের পাচার করে সপ্তাহে কয়েক হাজার ডলার উপার্জন করছে- ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে তাদের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার ২০২২ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রায় সাড়ে ৭ লাখ ইথিওপিয়ান সৌদি আরবে বাস করছে। যাদের মধ্যে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ মানুষ অনুমোদন ছাড়াই দেশটিতে প্রবেশ করেছে। ইথিওপিয়ার উত্তর টাইগ্রে অঞ্চলে দুই বছরের গৃহযুদ্ধে কয়েক হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
যুব বেকারত্বের সঙ্গে লড়াই করতে থাকা সৌদি আরব, আদ্দিস আবাবার সঙ্গে আলোচনা করে হাজার হাজার ইথিওপিয়ানকে নিজ দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ৩৮ জন ইথিওপিয়ান অভিবাসী এবং তাদের চারজন আত্মীয়ের সঙ্গে কথা বলেছে, যারা ২০২২ সালের মার্চ থেকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করেছিল। তারা বলেছেন, সৌদি সীমান্তরক্ষীরা অভিবাসীদের উপর গুলি করেছে বা অভিবাসন প্রত্যাশী মানুষদের উপর বিস্ফোরক ছুঁড়তে দেখেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রুপটি ২০২১ সালের ১২ মে এবং ২০২৩ সালের ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা ৩৫০টিরও বেশি ভিডিও এবং ফটোগ্রাফ বিশ্লেষণ করেছে এবং অন্যান্য উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছে। এটি ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি এবং ২০২৩ সালের জুলাইয়ের মধ্যে স্যাটেলাইট ধারণ করা কয়েকশ বর্গকিলোমিটার (মাইল) এলাকার চিত্রও পরীক্ষা করেছে।
আরও পড়ুন: সৌদি আরবে মার্কিন কনস্যুলেটে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত ২
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 'শরণার্থী শিবির ও চিকিৎসা কেন্দ্রে মৃত ও আহত অভিবাসীদের দেখা গেছে। এ ছাড়া অভিবাসী শিবিরের কাছেই কবরস্থানগুলো কীভাবে বাড়ছে, সৌদি আরবের সীমান্ত নিরাপত্তা অবকাঠামোর সম্প্রসারণ এবং সীমান্ত পারাপারের জন্য অভিবাসীরা বর্তমানে যেসব পথ ব্যবহার করছে তাও দেখা গেছে।’
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস -এর বিশ্লেষণ করা প্ল্যানেট ল্যাবস পিবিসি থেকে ২৭ এপ্রিলের একটি স্যাটেলাইট ছবি সৌদি সীমান্তে ইয়েমেনের আল-রাকউয়ের কাছে অধিকার সংস্থাগুলোর চিহ্নিত করা একই তাঁবুর কাঠামো দেখায়। সীমান্তের ওপারে সৌদি আরবে দুই স্তরের বেড়া দেখা যায়।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ আল-থাবিতে অভিবাসী শিবির হিসেবে চিহ্নিত করা স্থানকে স্যাটেলাইট থেকে ধারণ করা চিত্রগুলোতেও দেখা যেতে পারে, যা গ্রুপের বর্ণনার সঙ্গে মিলে যায়। যে ক্যাম্পটি মূলত এপ্রিলের শুরুতে ভেঙে ফেলা হয়েছিল।
উত্তর-পশ্চিম ইয়েমেনের দুটি এলাকাতেই দেশটির হুথি বিদ্রোহীদের শক্ত ঘাঁটি। জাতিসংঘ বলেছে, হুথি-নিয়ন্ত্রিত অভিবাসন অফিস ‘পরিকল্পিতভাবে অভিবাসীদের সৌদি আরবে সরাসরি পাঠানোর জন্য পাচারকারীদের সহযোগিতা করে’ এবং সপ্তাহে ৫০ হাজার মার্কিন ডলার আয় করে।
২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে হুথিরা ইয়েমেনের রাজধানী সানা দখল করে রেখেছে। সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট হুথিদের রাজধানী থেকে উচ্ছেদ না করে ২০১৫ সালের মার্চ থেকে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। সৌদি নেতৃত্বাধীন বাহিনী এবং হুথিদের মধ্যে লড়াই মূলত বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ রিয়াদ যুদ্ধ শেষ করার উপায় খুঁজছে। এ ছাড়া যুদ্ধের বছরগুলোতে, হুথিরা এই পাহাড়ি অঞ্চলে সৌদি সীমান্ত জুড়ে একাধিক অনুপ্রবেশের দাবি করেছে।
আরও পড়ুন: অবৈধ শ্রমিকদের দেশে ফেরার সুযোগ দিতে সৌদির উপমন্ত্রীকে রাষ্ট্রদূতের অনুরোধ
ইথিওপিয়া থেকে আসা অভিবাসীরা সৌদি আরব ও ইয়েমেনে যুদ্ধের সময় নিজেদের আটক, নির্যাতিত এবং এমনকি হত্যার শিকার হয়েছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে, ইয়েমেন থেকে আসা অভিবাসীদের উপর সৌদি বাহিনী হামলার বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার উদ্বেগ বাড়ছে।
২০২২ সালের ৩ অক্টোবর জাতিসংঘের কাছ থেকে দেশটির কাছে পাঠানো একটি চিঠিতে বলেছে, এর তদন্তকারীরা ‘সৌদি নিরাপত্তা বাহিনী আন্তঃসীমান্ত এলাকায় কামানের গুলি এবং ছোট অস্ত্রের গোলাগুলির অভিযোগ পেয়েছে। এতে ৪৩০ জনের মৃত্যু ও ৬৫০ জন অভিবাসী আহত হয়েছে।’
জাতিসংঘের ওই চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘যদি কোনো অভিবাসী আটক হন তাহলে তাদের প্রায়শই লাইনে দাঁড় করিয়ে এবং পায়ের পাশ দিয়ে গুলি করে নির্যাতনের শিকার হতে হয়। এমনকি বুলেটটি কতদূর যাবে তা দেখার জন্য। এ ছাড়াও তারা হাতে বা পায়ে গুলি করতে পছন্দ করে কি না তাও জিজ্ঞাসা করা হয়।’ ‘এই ধরনের আক্রমণ থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা পালানোর জন্য নির্দিষ্ট সময়ের জন্য 'মৃতের ভান করেন' বলে জানিয়েছেন।’
সৌদি আরব সীমান্তে ‘পরিকল্পিত’ হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করার অভিযোগ ‘স্পষ্টভাবে খণ্ডন’ করে মার্চ মাসে জেনেভায় জাতিসংঘে দেশটির মিশনে একটি চিঠি দিয়েছে। এ ছাড়াও চিঠিতে আরও বলেছে, জাতিসংঘ ‘সীমিত তথ্য’ সরবরাহ করেছে তাই এই ‘অভিযোগগুলো নিশ্চিত বা প্রমাণিত নয়।’
আরও পড়ুন: সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক 'ঠিক দিকেই এগোচ্ছে': ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ইতালিতে সমুদ্রপথে অভিবাসীর সংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি
ইতালিতে চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে সমুদ্রপথে অভিবাসীদের আগমন গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই তথ্য জানিয়েছে।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ইতালির দক্ষিণ উপকূলে ৮৯ হাজার ১৫৮ অভিবাসী পৌঁছেছে বলে নিবন্ধন করা হয়েছে। ২০২২ সালের এই সময় এই সংখ্যা ছিল ৪১ হাজার ৪৩৫ জন। এতে দেখা যায়, অভিবাসীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ১১৫ দশমিক ১৮ শতাংশ।
মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের প্রথম সাত মাসে যেসব দেশ থেকে ইতালিতে শরণার্থীরা এসেছেন তার মধ্যে প্রবেশের প্রধান তিউনিসিয়া। আর ২০২২ সালে একই সময়ে প্রবেশের প্রধান দেশ ছিল লিবিয়া।
আরও পড়ুন: বুলগেরিয়ায় পরিত্যক্ত ট্রাকে ১৮ অভিবাসীর লাশ উদ্ধার
মন্ত্রণালয় জানায়, ২০২৩ সালের অনুসন্ধান এবং উদ্ধারের ঘটনা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, আগমনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ বছর জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত সমুদ্রপথে আসা ৬৪ হাজার ৭৬৪ জন অভিবাসী এবং শরণার্থীকে উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে অভীবাসী ও শরণার্থীর সংখ্যা ছিল ৭২ দশমিক ৬৪ শতাংশ। আর এই সংখ্যাটি ২০২২ সালের একই সময়ে ছিল ১৯ হাজার ১৭১ জন। যা ছিল মোট সমুদ্র আগমনের ৪৩ দশমিক ২৭ শতাংশ।
আরও পড়ুন: ইতালীয় উপকূলে অভিবাসী নৌকা বিধ্বস্তে নিহত ৬০
সমুদ্র থেকে উদ্ধারের পর তাদের মধ্যে ৫ দশমিক ৮ শতাংশকে এনজিওর মানবিক জাহাজ সহায়তার মাধ্যমে উদ্ধার করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আশ্রয়ের জন্য আবেদনের সংখ্যাও ৭০ দশমিক ৫৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৭২ হাজার ৪৬০ জনে দাঁড়িয়েছে।
আশ্রয় চাওয়ার পর নেতিবাচক ফলাফলের কারণে প্রায় ২ হাজার ৫৬১ জনকে প্রত্যাবাসন করা হয়েছে। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৮ দশমিক ০৫ শতাংশ বেশি।
আরও পড়ুন: গ্রিসের উপকূলে ডুবে যাওয়া নৌকায় ৩৫০ জন পাকিস্তানি অভিবাসী ছিল: কর্মকর্তারা
গ্রিসের উপকূলে ডুবে যাওয়া নৌকায় ৩৫০ জন পাকিস্তানি অভিবাসী ছিল: কর্মকর্তারা
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ খান বলেছেন, গত সপ্তাহে গ্রিসের উপকূলে ডুবে যাওয়া একটি মাছ ধরার নৌকায় আনুমানিক ৩৫০ জন পাকিস্তানি অভিবাসীদে ছিলেন। এ ঘটনায় এখনও অনেকে নিখোঁজ রয়েছে এবং মধ্য ভূমধ্যসাগরে ঘটা সবচেয়ে মারাত্মক ঘটনাগুলোর মধ্যে একটি এটি।
শুক্রবার দেশটির ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে থাকা সংসদ সদস্যদের রানা সানাউল্লাহ খান জানান, ১৪ জুন নৌকাটি ডুবে যাওয়ার সময় সেটিতে আনুমানিক ৭০০ অভিবাসী ছিলেন। ১২ জন পাকিস্তানিসহ মাত্র ১০৪ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং ৮২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে নৌকাটিতে মোট কতজন যাত্রী ছিল তা নিশ্চিত জানা যায়নি।
খান বলেন, নিখোঁজ পাকিস্তানিদের মধ্যে অনেকের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। ‘এখন পর্যন্ত ২৮১টি পরিবার সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে দাবি করেচে যে ডুবে যাওয়া নৌকাটিতে তাদের ছেলে বা প্রিয়জন থাকতে পারে।’
খানের মন্তব্য দেশটির আইনপ্রণেতাদের হতবাক করেছে এবং তিনি কথা বলার সময় তারা সবাই দুঃখ প্রকাশ করেন।
এই প্রথম দেশটির কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে নৌকাডুবির পর এত বেশি পাকিস্তানি নাগরিক নিখোঁজ হয়েছে।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভারী বর্ষণে নিহত ২৫, আহত ১৪৫
লাশ শনাক্ত করতে কর্মকর্তারা বর্তমানে এমন লোকদের কাছ থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করছেন, যারা দাবি করছেন যে তাদের স্বজন ওই নৌকায় ছিলেন।
মাছ ধরার নৌকায় পাকিস্তানিদের অভিবাসনের ব্যবস্থা করা মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে পাকিস্তানের সরকার। এসব অধিবাসীদের অনেকেই ইউরোপে চাকরি খুঁজছিল। এখনও পর্যন্ত পুলিশ এই মামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে অন্তত ১৭ জন পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করেছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, ভুক্তভোগীরা পাচারকারীদের সমুদ্রযাত্রার জন্য ৫ হাজার থেকে ৮ হাজার মার্কিন ডলার দিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক জলসীমায় ডুবে যাওয়ার আগে অভিবাসীদের বাঁচানোর চেষ্টা না করায় গ্রিস ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে।
যদিও এথেন্সের কর্মকর্তারা বলছেন যে যাত্রীরা কোনো সাহায্য প্রত্যাখ্যান করেছিল এবং ইতালিতে যাওয়ার জন্য জোর দিয়েছিল। কেননা জাহাজটির যাত্রীদের মধ্যে সন্দেহভাজন ৯জন মিশরীয় ব্যক্তিকে গ্রিসে একটি অপরাধমূলক সংগঠনে অংশ নেওয়া, হত্যাকাণ্ড এবং জাহাজ ভাঙার মতো অভিযোগের মুখোমুখি করা হয়েছে।
স্বজন হারানো পাকিস্তানিরা অন্যদেরকে তাদের প্রিয়জনকে অবৈধভাবে বিদেশে না পাঠাতে অনুরোধ করছেন।
এই দুর্ঘটনায় নিহতের আশঙ্কা করা আলী রাজা নামক এক ব্যক্তির ভাই সাওয়ান রাজা বলেছেন, ‘পাকিস্তানে থেকে দুপুর বা রাতের খাবার না খেয়ে থাকাও, চোরাকারবারীদের সাহায্যে বিদেশে যাওয়ার ঝুঁকি নেওয়ার পরিবর্তে অনেক ভালো।’
রাজাসহ অনেক নিখোঁজ অভিবাসী পাকিস্তানের সবচেয়ে জনবহুল পূর্ব পাঞ্জাব প্রদেশ ও কাশ্মীরের প্রত্যন্ত শহরের বাসিন্দা।
পাকিস্তান তার রেকর্ড সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মুদ্রাস্ফীতি ৪৫ শতাংশে পৌঁছেছে এবং অনেক যুবক ভাল চাকরি খোঁজার জন্য ইউরোপে বিপজ্জনক ভ্রমণ করেছে।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে কয়লা খনি নিয়ে দুই উপজাতির মধ্যে সংঘর্ষে নিহত ১৫
পাকিস্তানে যাত্রীবাহী ট্রেনে আগুনে নিহত ৭
বুলগেরিয়ায় পরিত্যক্ত ট্রাকে ১৮ অভিবাসীর লাশ উদ্ধার
বুলগেরিয়ার পুলিশ শুক্রবার একটি পরিত্যক্ত ট্রাকে ১৮ জন অভিবাসীর লাশ উদ্ধার করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, শ্বাসরোধে তাদের মৃত্যু হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী ট্রাকটি প্রায় ৪০ অভিবাসীকে বহন করছিল এবং জীবিতদের জরুরি চিকিৎসার জন্য নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বুলগেরিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী অ্যাসেন মেদঝিদিভ বলেছেন, বেঁচে যাওয়া বেশিরভাগের অবস্থা খুবই খারাপ।
তিনি বলেন, ‘তারা অক্সিজেনের অভাবে ভুগেছে, তাদের জামাকাপড় ভেজা ছিল, প্রচণ্ড ঠাণ্ডা সহ্য করেছে এবং স্পষ্টতই কয়েক দিন ধরে কিছু খায়নি।’
রাজধানী সোফিয়ার কাছে একটি মহাসড়কে ট্রাকটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। চালক সেখানে ছিল না। কিন্তু গোপন প্রকোষ্ঠের কাঠবোঝাই অংশের নিচে পুলিশ তাদের খুঁজে পায়।
তাৎক্ষণিকভাবে কর্তৃপক্ষ অভিবাসীদের জাতীয়তা জানায়নি। তবে বুলগেরিয়ার গণমাধ্যম জানিয়েছে যে তারা সবাই আফগানিস্তান থেকে এসেছে।
আরও পড়ুন: পানামায় বাস দুর্ঘটনায় ৩৯ অভিবাসী নিহত
সিরিয়ার উপকূলে অভিবাসীবাহী নৌকাডুবে ৩৪ জনের মৃত্যু
পানামায় বাস দুর্ঘটনায় ৩৯ অভিবাসী নিহত
পানামার পশ্চিমাঞ্চলে একটি যাত্রীবাহী বাস পাহাড় থেকে ছিটকে পড়লে অন্তত ৩৯ জন অভিবাসী নিহত ও প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন।
বুধবারের এই দুর্ঘটনায় কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিকভাবে জাতীয়তার বিষয়ে কথা বলেননি। তবে অভিবাসীরা কলম্বিয়া থেকে দারিয়েন গ্যাপ অতিক্রম করেছে।
পানামা সরকার সাধারণত দারিয়েন সীমান্ত অতিক্রমকারী অভিবাসীদের পানামার ওপারে কোস্টারিকা সীমান্তের কাছে একটি শিবিরে স্থানান্তরিত করে। অভিবাসীরা বাসের টিকিটের জন্য অর্থ প্রদান করে এবং বাসগুলো কেবল অভিবাসীদের জন্য। যেখানে সাধারণত দু'জন চালক থাকে, পাশাপাশি ন্যাশনাল ইমিগ্রেশন সার্ভিসের কর্মীরাও।
পানামার ন্যাশনাল ইমিগ্রেশন সার্ভিসের পরিচালক সামিরা গোজাইন বলেন যে দেখে মনে হচ্ছে বাসচালক গুয়ালাকার একটি আশ্রয়কেন্দ্রের প্রবেশদ্বার অতিক্রম করেছিলেন এবং যখন তিনি মহাসড়কে ফিরে যাওয়ার জন্য গাড়ি ঘুরানোর চেষ্টা করেন, তখন বাসটি অন্য একটি বাসের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে পাহাড় থেকে ছিটকে পড়ে যায়।
আরও পড়ুন: সিরিয়ার উপকূলে অভিবাসীবাহী নৌকাডুবে ৩৪ জনের মৃত্যু
ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া ছবিতে দেখা গেছে, আশ্রয়কেন্দ্র থেকে মাত্র কয়েকশ’ গজ দূরে বনাঞ্চলের একটি বাঁকে একটি ভাঙা গার্ডরেল (রেলিং) রয়েছে। বাসটি ৬৬ জন অভিবাসীকে নিয়ে লস প্লেনস আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছিল।
অ্যাম্বুলেন্স আহতদের ডেভিডের নিকটতম হাসপাতালে নিয়ে যায়।
প্রেসিডেন্ট লরেন্টিনো কর্টিজো এক টুইটার বার্তায় বলেছেন, ‘এই সংবাদটি পানামা ও এই অঞ্চলের জন্য দুঃখজনক।’
অন্তত এক দশকের মধ্যে পানামাতে অভিবাসীদের নিয়ে এটিই হচ্ছে সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পানামা দিয়ে অভিবাসীদের প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরে যাওয়ার চেষ্টা করার সময় বিপজ্জনক ক্রসিংটি আরও ঝুঁকিপূর্ণ ছিল।
আরও পড়ুন: সীমান্ত টহল: টেক্সাসের রিও গ্র্যান্ডে ৮ অভিবাসীর লাশ উদ্ধার
লাশ হয়ে ফেরা ৭১৪ নারী অভিবাসী শ্রমিকের জন্য ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিট
লাশ হয়ে ফেরা ৭১৪ অভিবাসী নারী শ্রমিকের পরিবারের জন্য পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়েছে। পাশাপাশি অভিবাসী নারী শ্রমিকের মৃত্যুর কারণ তদন্ত, নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিতের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
সোমবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের বেঞ্চে থেকে অনুমতি নিয়ে রিটটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আঞ্জুমান আরা লিমা।
রিট আবেদনের সঙ্গে ‘লাশ হয়ে ফিরলেন ৭১৪ নারী’- শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন যুক্ত করা হয়েছে।
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, তথ্য ও সম্প্রচার সচিব, বিএমইটির মহাপরিচালক ও পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট ১২ জনকে। চলতি সপ্তাহে রিট আবেদনটির ওপর শুনানি হতে পারে।
এই রিটে বিদেশে নারী শ্রমিকের অমানবিক নির্যাতন বন্ধ, তাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং নিরাপদে দেশে ফেরার নিশ্চয়তা চাওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রবাসে মৃত্যুবরণ করা শ্রমিকদের মৃত্যুর কারণ তদন্ত করে যথাযথভাবে জানানোর পাশাপাশি ভুক্তভোগীদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণের নিশ্চয়তা চাওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে মালিক পক্ষের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার নির্দেশনাও এই রিটে চাওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে করা রিট খারিজ
‘লাশ হয়ে ফিরলেন ৭১৪ নারী’- শিরোনামে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী ২০২০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত তিন বছরে ৪০৪ জন নারী শ্রমিকের লাশ দেশে এসেছে। তাদের মধ্যে ২২৭ জনের ক্ষেত্রে ‘স্বাভাবিক মৃত্যু’লেখা ছিল।
আর বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের তথ্য বলছে, ২০১৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সাত বছরে ৭১৪ নারী শ্রমিকের লাশ দেশে এসেছে। তাদের মধ্যে ‘স্বাভাবিক’ মৃত্যুর সনদ লেখা লাশের সংখ্যা ২৬২। আর ২০২০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৩ বছরে ৩১৯ নারী শ্রমিকের লাশ দেশে আসে। যাদের মধ্যে ২২০ জনের ক্ষেত্রে লেখা ছিল ‘স্বাভাবিক মৃত্যু’।
অন্যদিকে ব্র্যাকের গত সাত বছরের পরিসংখ্যান বলছে, এই সময়ে যেসব নারী শ্রমিকের লাশ দেশে এসেছে তাদের মধ্যে ১৩৮ জনের মৃত্যুর কারণ লেখা ছিল ‘স্ট্রোক’; ১১৬ জনের ক্ষেত্রে ‘আত্মহত্যা’; ১০৮ জনের ক্ষেত্রে ‘দুর্ঘটনা’; ১৬ জনের ক্ষেত্রে ‘হত্যা’ এবং এর বাইরে করোনা, ক্যান্সার, অজানা রোগ বা কোনো কারণ উল্লেখ না করেই দেশে নারী শ্রমিকের লাশ পাঠানোর ঘটনা ঘটেছিল।
অভিবাসন নিয়ে কাজ করা রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (রামরু) ২০১৭ সাল থেকে দেশে আসা ৫৪৮ নারী শ্রমিকের মৃত্যুর কারণ ও করণীয় বিষয়ে একটি গবেষণা করেছে।
‘ডেথ অব ফিমেল মাইগ্রেন্ট ওয়ার্কার্স ইন ডেস্টিনেশন কান্ট্রিজ’- শিরোনামের সেই গবেষণায় সনদে থাকা মৃত্যুর কারণ বিশ্লেষণ করা হয়েছে। সে অনুযায়ী, ৬৯ শতাংশ নারী শ্রমিকের ‘স্বাভাবিক’ ও ৩১ শতাংশের ‘অস্বাভাবিক’ মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে বলে দাবি করা হয়।
আরও পড়ুন: দুবাইয়ে ৪৫৯ বাংলাদেশির সম্পদের বিষয়ে অনুসন্ধানের দাবিতে রিট
ফখরুল ও আব্বাসের কারাগারে ডিভিশন চেয়ে হাইকোর্টে রিট