সাংবাদিক
‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ঢালাও হত্যা মামলা অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতিশ্রুতির লঙ্ঘন’
সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ঢালাও হত্যা মামলা অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতিশ্রুতির লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছে সম্পাদক পরিষদ।
শনিবার সংগঠনের সভাপতি মাহফুজ আনাম ও সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সিই এক বিবৃতির মাধ্যমে এ মন্তব্য করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: খুনের মামলা থেকে সাংবাদিকদের অব্যাহতি দিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রতি ডিইউজের অনুরোধ
বিবৃতিতে বলা হয়, ঢালাও অভিযোগের ভিত্তিতে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের এখনো অব্যাহত। সম্পাদক পরিষদ দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চায়, এ ধরনের মামলা প্রচলিত আইনের অপব্যবহারের শামিল। একই সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতিশ্রুতিরও লঙ্ঘন। সাংবাদিকরা কোনো অপরাধ করলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে যথাযথ ধারা অনুসরণ করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
সম্পাদক পরিষদ আরও জোর দিয়ে বলে, পেশাদারিত্ব বাদ দিয়ে নীতিবিবর্জিত ও লেজুড়বৃত্তির সাংবাদিকতা বর্জনীয়। যেসব সাংবাদিক বিগত সরকারের নানা নিপীড়নমূলক কর্মকাণ্ডে সাংবাদিকতার নামে সমর্থন দিয়েছেন, প্রেস কাউন্সিলে একটি কমিটি গঠন করে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও অনুসন্ধান হতে পারে। সেখানে দোষী সাব্যস্ত হলে প্রেস কাউন্সিল আইনে তাদের সাজা হতে পারে। তাদের অন্যান্য অপরাধের ক্ষেত্রে প্রেস কাউন্সিলের সুপারিশের ভিত্তিতে প্রচলিত আইনে তাদের বিচার চলতে পারে। বিগত সরকারের সময়ে ডিএসএ বা সিএসএসহ নিবর্তনমূলক বিভিন্ন আইন ও হয়রানিমূলক আটক-গ্রেপ্তারের মাধ্যমে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধের যে প্রয়াস চালানো হয়েছিল, তা বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে অত্যন্ত নিন্দিত ও সমালোচিত হয়েছিল। আর বর্তমানে সাংবাদিকদের নামে এভাবে ক্রমাগত হত্যা মামলা দেওয়ার প্রবণতাও আন্তর্জাতিক অঙ্গণে অন্তর্বর্তী সরকারের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ণ করছে বলে সম্পাদক পরিষদ মনে করে।
যথাযথভাবে যাচাই-বাছাই করে অভিযুক্ত সাংবাদিকদের কোনো সংশ্লিষ্টতা না পাওয়া গেলে এসব মামলা থেকে দ্রুত তাদের অব্যাহতি দেওয়ার আহ্বান জানায় সম্পাদক পরিষদ।
আরও পড়ুন: ২৫ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদ ডিআরইউয়ের
গণমাধ্যমের মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় সংস্কার দাবি সাংবাদিকদের
ক্ষমতাশালী শ্রেণির প্রভাবমুক্ত সাংবাদিকতা নিশ্চিত করতে গণমাধ্যমের মালিকানা ও ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছেন সর্বস্তরের সাংবাদিকরা।
শনিবার (১৭ আগস্ট) বিকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ‘গণমাধ্যম সংস্কার উদ্যোগ’ ব্যানারে আয়োজিত মত বিনিময় সভায় এসব কথা বলেন সর্বস্তরের সাংবাদিকরা।
আরও পড়ুন: গণমাধ্যমকে দেশ-জনগণের স্বার্থে দাঁড়ানোর আহ্বান তথ্য প্রতিমন্ত্রীর
তারা বলেন, করপোরেট মালিকদের স্বার্থরক্ষা ও রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তিমূলক সাংবাদিকতা পেশাদার গণমাধ্যমকর্মীদের অধিকার ক্ষুণ্ন করার পাশাপাশি গণমাধ্যমকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।
এছাড়া এ সংকট কাটাতে গণমাধ্যমের সামষ্টিক চরিত্র পালটে জনবান্ধবমুখী করার দাবিও জানান তারা।
সভা পরিচালনা করেন সাংবাদিক আরিফুল সাজ্জাদ ও আহমেদ ফয়েজ।
বৈঠকে সাংবাদিকরা একটি মুক্ত, স্বাধীন ও শক্তিশালী গণমাধ্যমের জন্য নির্দলীয় প্লাটফর্ম প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একমত পোষণ করেন।
অনুষ্ঠানে লেখক ও গবেষক আলতাফ পারভেজ বলেন, ‘সাম্প্রতিক রাষ্ট্রীয় গণহত্যায় গণমাধ্যম কোনোভাবেই তার দায় এড়াতে পারে না। সেজন্য এখন আমাদের প্রচণ্ড রকমের আত্মসমালোচনা দরকার।’
সাংবাদিকতায় এখন তিনটি অভ্যুত্থান দরকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রথমত করপোরেট ইন্ডাস্ট্রির বিরুদ্ধে, দ্বিতীয়ত দলীয় সাংবাদিক ইউনিয়ন ও প্রেস ক্লাবের বিরুদ্ধে এবং তৃতীয়ত নিজেদের লোভ ও পক্ষপাতের বিরুদ্ধে আমাদের অভ্যুত্থান দরকার।’
সিনিয়র সাংবাদিক খায়রুজ্জামান কামাল নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘সাংবাদিকতার সবচেয়ে বড় সংকট করপোরেট মালিকানা। এই ব্যবস্থার পরিবর্তন না করতে পারলে গণমাধ্যমকর্মীদের অর্থনৈতিক মুক্তিসহ আমরা যে জনবান্ধব গণমাধ্যম দেখতে চাই, সেটি কঠিন হয়ে পড়বে।’
এছাড়া তিনি দল মতের বাইরে পেশাদার সাংবাদিকদের নিয়ে একটি শক্তিশালী সংগঠন তৈরির ওপর জোর দেন।
আরেক সিনিয়র সাংবাদিক সেলিম সামাদ বলেন, ‘সাংবাদিকরা নিজেদের কর্মক্ষেত্রেই আজ সবচেয়ে বড় পরাধীন। সাংবাদিকদের হুটহাট কেন চাকরি যায় তার বিরুদ্ধে শক্ত কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।’
দ্যা ডেইলি স্টারের সিনিয়র সাংবাদিক বাহরাম বলেন, ‘রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ গণমাধ্যম। সেই গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠায় আমাদের যা করণীয় করতে হবে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সাংবাদিকদের সুরক্ষায় ইউনূসের প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যম সংগঠনগুলোর আহ্বান
তিনি বলেন, ‘অপেশাদার, রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তিমূলক সাংবাদিকতা আস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করতে হবে। এজন্য আমাদের একদফা দাবি গণমাধ্যমে ব্যাপক সংস্কার আনতে হবে।’
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ডের বাংলাদেশ প্রতিনিধি কামরুজ্জামান বাবলু বলেন, ‘আমাদের সিনিয়র সাংবাদিকদের অনেকে এতোটাই ক্ষমতার লোভ ও স্বার্থের কাছে নিজেদের বিকিয়ে দিয়েছে, যে তাদের দিয়ে আর কোনো পরিবর্তন আশা করা যায় না। সাংবাদিকতাকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আকর্ষণীয় পেশা হিসেবে তুলে ধরতে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে হবে।’
মত বিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন, একাত্তর টেলিভিশনের শাহনাজ শারমিন, নিউ এইজের মঈনুল হক, মাই টিভির মাহবুব সৈকত, কালবেলার জুনাইদ শিশির, সাংবাদিক মিজানুর রহমান কবির, নিউজ ২৪ এর হোসাইন শাহদাৎ ও দ্যা বিজনেস পোস্টের আশরাফুল ইসলাম রানা।
অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমের ব্যাপক সংস্কারকল্পে ১৩ দফা দাবি তুলে ধরেন সাংবাদিকরা।
দাবিগুলো হলো-
* ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় নিহত সাংবাদিকদের হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
* ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে ঘিরে আহত-নিহত গণমাধ্যমকর্মী ও আক্রান্ত গণমাধ্যমকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সব বন্ধ গণমাধ্যম অনতিবিলম্বে খুলে দিতে হবে।
* গণমাধ্যমের যেসব মালিক ও নির্বাহীরা গণমাধ্যমকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে তৈরি করেছে, তদন্ত সাপেক্ষ তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
* গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য অভিন্ন ওয়েজবোর্ড প্রণয়ন করতে হবে। অনতিবিলম্বে নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন করতে হবে। যারা অষ্টম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন করেছে বলে রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা নিয়েছে কিন্তু বাস্তবে বাস্তবায়ন করেনি তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে হবে।
* শ্রম আইন অনুযায়ী লভ্যাংশ বণ্টন করতে হবে।
* উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অগণতান্ত্রিক উপায়ে গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের দখলদারিত্বের যে প্রবণতা দেখা যাচ্ছে অনতিবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
* গণমাধ্যম কর্মীদের সর্বস্তরের ভয়ভীতি দেখানো বন্ধ করতে হবে। গণমাধ্যম পরিচালনা সংবাদ প্রচার ও প্রকাশ এবং সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃত্ব নির্বাচনে সরকার ও বিশেষ সংস্থার নির্দেশনা, নিয়ন্ত্রণ প্রবণতা চিরতরে বন্ধ করতে হবে।
* গণমাধ্যম পরিচালনার ধরনসহ সার্বিক বিষয়ে সংস্কারের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিশন গঠন করতে হবে।
* গণমাধ্যম ও স্বাধীন মত প্রকাশে বিরোধী নিবর্তনমূলক আইনের সব ধারা বাতিল করতে হবে।
* আইসিটি, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও সাইবার সিকিউরিটি আইনের অধীনে গণমাধ্যমকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
* সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাসহ সব হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
* বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিকদের গুম, নির্যাতন ও হয়রানির সঙ্গে জড়িতদের বিচার করতে হবে।
* সব গণমাধ্যম যেন গণমানুষের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করতে পারে সেই নিশ্চয়তার বিধান করতে হবে।
আরও পড়ুন: ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ, যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়ার সম্ভাবনা: ভারতীয় গণমাধ্যম
সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় নরসিংদীতে মানববন্ধন
নরসিংদীর রায়পুরায় উপজেলায় দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি ও রায়পুরা রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি মনিরুজ্জামান মনিরের ওপর হামলা ও গুলির ঘটনায় মানববন্ধন করেছে জেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা।
বুধবার (১৪ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নরসিংদী প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত থেকে এই হামলার নিন্দা জানান।
আরও পড়ুন: কোটা বাতিলের দাবিতে বাকৃবিতে আবারও মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সাংবাদিকরা হলো সমাজের দর্পন। সকল অন্যায় ও দুর্নীতি তাদের কলমের মাধ্যমে জনগণের সামনে তুলে ধরেন তারা। সম্প্রতি সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে রায়পুরা উপজেলা। সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে কলম ধরলে সাংবাদিকদের ওপর চালানো হয় সন্ত্রাসী হামলা। দেশ রুপান্তরের সাংবাদিক মনিরের ওপর তেমনটাই হয়েছে।
বক্তারা আরও বলেন, এখন থেকে আর কোনো সাংবাদিকদের ওপর হামলা মেনে নেওয়া হবে না। পাশাপাশি মনিরের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় জড়িতদের অবিলম্বে আইনের আওতায় না আনা হলে সুশীল সমাজকে সঙ্গে নিয়ে জেলার সাংবাদিক মহল দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন- নরসিংদী প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম, নরসিংদী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন রাজু, সাংবাদিক হলধর দাস, মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন, মো. ফারুক মিয়া, মনজিল-এ-মিল্লাত, সুমন বর্মণ, তোফায়েল আহমেদ স্বপন, শামীম মিয়াসহ শতাধিক সাংবদিক।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার দুপুরে মনিরুজ্জামান মনির রায়পুরা উপজেলার শ্রীরামপুর বাজার থেকে পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে উপজেলা পরিষদে ফিরছিলেন। এসময় শ্রীরামপুর বাজারের পাশে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা তার ওপর হামলা করে।
আরও পড়ুন: ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে সিলেটে মানববন্ধন
পেনশন স্কিম: বাকৃবিতে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের মানববন্ধন
প্রতিবেদন প্রকাশ করায় সাংবাদিককে ‘গুলি’
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দেশজুড়ে সহিংসতার মাঝে নরসিংদীর সহিংসতার খবর প্রকাশ করায় জেলার রায়পুরায় মনিরুজ্জামান মনির (৪০) নামে এক সাংবাদিককে গুলি করে ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করার অভিযোগ উঠেছে।
রায়পুরার বিভিন্ন স্থানে মানুষের বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবেদন প্রকাশ করায় মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার শ্রীরামপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: শাহবাগে কোটা আন্দোলনের খবর সংগ্রহের সময় হামলার শিকার সাংবাদিক
মনিরুজ্জামান মনির উপজেলার মেথিকান্দা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি রায়পুরা উপজেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক দেশ রুপান্তরের রায়পুরা প্রতিনিধি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এদিন দুপুর ১২টার দিকে রায়পুরা উপজেলার শ্রীরামপুর বাজারে দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন মনিরুজ্জামান। এসময় অন্তত ১০ জন দুর্বৃত্তের একটি দল তার ওপর হামলা চালায়। হাতুড়ি দিয়ে তারা মনিরুজ্জামানের মাথায় আঘাত এবং হাতে-পায়ে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে গেলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, রায়পুরা থানা পুলিশের কোনো তৎপরতা না থাকায় হামলার পর ওই সাংবাদিককে উদ্ধার ও তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন বাংলাদেশ সোনাবাহিনীর সদস্যরা। এ ঘটনার পর রায়পুরায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে সেনাবাহিনী।
রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক কর্মকর্তা (আরএমও) রঞ্জন কুমার বর্মন বলেন, ‘মনিরের হাতে ও পায়ে গুলি লেগেছে। মাথায় হাতুড়ির আঘাতে গুরুতর জখম রয়েছে। তার উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন বিধায় তাকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।’
আরও পড়ুন: সাংবাদিক হত্যার বিচারের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম
জাবিতে পুলিশের হাতে সাংবাদিক ‘লাঞ্ছিত’
সাংবাদিকদের মিথ্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
দল-মত নির্বিশেষে গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের সব মিথ্যা প্রত্যাখ্যান করে তার প্রতিবাদ করার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
রবিবার (৭ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর সার্কিট হাউজ রোডের তথ্য ভবন মিলনায়তনে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তৃতীয় পর্যায়ের কল্যাণ অনুদান/আর্থিক সহায়তার চেক বিতরণের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: তথ্যের সততা নিশ্চিতের অঙ্গীকার করতে হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আরাফাত বলেন, ‘আমি অনুরোধ জানাব দল-মত নির্বিশেষে গণমাধ্যমের সাংবাদিক বন্ধুরা সব মিথ্যা প্রত্যাখ্যান করে প্রতিবাদ করুন। আপনারা অপপ্রচারের বিপক্ষে সবাই রুখে দাঁড়ান, সত্যের পক্ষে থাকুন।’
এ বিষয়ে প্রতিপ্রন্ত্রী আরও বলেন, এ দেশে মিথ্যা বলারও স্বাধীনতা আছে। যখন-তখন যেভাবে ইচ্ছা সারাক্ষণ মিথ্যা বলারও স্বাধীনতা এ দেশে আছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারের কোনো একটা চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক বা সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করার অধিকার যে কারো আছে। কিন্তু মিথ্যা বলে কেনো বিরোধিতা করতে হবে, জনগণকে বিভ্রান্ত করে কেন বিরোধিতা করতে হবে? এতে মানুষকে ধোকা দেওয়া হচ্ছে। এটা মত প্রকাশের স্বাধীনতা নয়, এটা অপরাধ। অথচ বর্তমান সরকারের বিপক্ষে মত প্রকাশের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বলে বিভিন্ন অপপ্রচার করা হয়।
এ সময় প্রতিমন্ত্রী আর বলেন, বঙ্গবন্ধুর মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য, গণমাধ্যম, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সাংবাদিক সমাজ এবং তাদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাংবাদিক সমাজের পাশে এবং গণমাধ্যমের পাশে সরকারকে দাঁড়াতে হবে। সাংবাদিকদের জন্য তার চিন্তাভাবনা খুবই ইতিবাচক। সে কারণেই কল্যাণ ট্রাস্টের মতো এরকম একটি উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: অপপ্রচারকারীদের বিপক্ষে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের শক্ত অবস্থান নিতে হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকদের কল্যাণে, গণমাধ্যমের কল্যাণে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার উদ্যোগগুলো খুব বেশি শোনা যায় না। এগুলো নিয়ে বড় আকারে রিপোর্টও আসে না। এগুলো দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন জায়গায় বলা দরকার।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত পনেরো বছরে গণমাধ্যমের আকার দ্বিগুণ হয়েছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা গণমাধ্যমবান্ধব বলেই তিনি গণমাধ্যমের বিস্তৃতির শুধু সুযোগ করে দেননি, গণমাধ্যমকে বিস্তৃত হওয়ার জন্য প্রনোদনা দিয়েছেন, পরিবেশ তৈরি করেছেন। গণমাধ্যমে যারা কাজ করছেন তাদের কল্যাণের জন্য কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করেছেন। এ ইতিবাচক বিষয়গুলো আমরা খুব একটা তুলে ধরতে পারছি না।
প্রতিমন্ত্রী আরও যোগ করেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সারাদেশে ৭৮৪ জন সাংবাদিক ও তাদের পরিবারের মাঝে ৬ কোটি ১৫ লাখ ৫০ টাকা কল্যাণ অনুদান দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ পুরো বাংলাদেশে ২৯৩ জন সাংবাদিক ও তাদের পরিবারের মাঝে ২ কোটি ২২ লাখ টাকা অনু্দান দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ্র বাদলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য ও তথ্য অধিদপ্তরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. শাহেনুর মিয়া এবং ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী।
আরও পড়ুন: ভারতের সঙ্গে সমঝোতা নিয়ে অপপ্রচারে লিপ্ত বিএনপি-জামায়াত: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
ঢামেকে সাংবাদিকদের সঙ্গে যাতে কোনো বিবাদ না হয়: পরিচালককে স্বাস্থ্যমন্ত্রী
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেন সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো বিবাদ না হয়, সেই বিষয়ে পরিচালককে ডেকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
রবিবার (৯ জুন) সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে ‘বিএসআরএফ সংলাপ’ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: ২০৩০ সালের মধ্যে কুষ্ঠ নির্মূলে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) এ সংলাপের আয়োজন করে। এসময় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা।
বিএসআরএফের সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হকের সঞ্চালনায় সংলাপে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ফসিহ উদ্দীন মাহতাব।
কর্তপক্ষের অনুমতি ছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার বা বক্তব্য দিতে পারবেন না বলে নোটিশ জারি করেছেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
পরিচালকের এই নোটিশের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি আজকে সকালে পরিচালককে ফোন করেছিলাম, কেন এ রকম একটি ঘটনা হচ্ছে। আমার কাছে কিছু ভূল তথ্য আজ আসছে। পরিচালক আমাকে বললেন, ‘স্যার আপনার সঙ্গে আমি দেখা করব।’ তিনি কিছুক্ষণ আগে আমার কাছে এসেছিলেন।”
তিনি বলেন, 'আমি ওনাকে বলেছি, সাংবাদিকদের তাদের মতো কাজ করতে বলেন। এখানে যেন কোনোরকম বৈষম্য বা কোনোরকম বিবাদ না হয়। এটা আমি উনাকে স্পষ্ট করে বলে দিয়েছি।'
সামন্ত লাল সেন বলেন, 'নিজেকে সামলে নিয়ে কাজ করতে হয়। সেটা আমিও ওনাকে (ঢামেক পরিচালক) বলেছি, এখানে যেন সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো খারাপ আচরণ না করা হয়। এটা আমি সকালে উনাকে ডেকে বলে দিয়েছি।'
আরও পড়ুন: প্রধান লক্ষ্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকের বৈশ্বিক সুনাম ধরে রাখার আহ্বান স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
ডিজিটাল মিডিয়া ফোরাম পুরস্কার পেলেন ১১ সাংবাদিক
সাংবাদিকতায় অসাধারণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পাঁচ সাংবাদিককে 'ডিজিটাল মিডিয়া এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০২৪' দিয়েছে ডিজিটাল মিডিয়া ফোরাম (ডিএমএফ)।
এছাড়া দেশের গণমাধ্যম, ডিজিটাল ও ব্যবসা খাতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আরও ৬ জনকে ডিএমএফ স্পেশাল এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়।
শনিবার (১ জুন) রাজধানীতে পুরষ্কার বিজয়ী সাংবাদিকদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
বিশিষ্ট সাংবাদিক ও পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, জুরি বোর্ডের সদস্য ইউএনবির বিশেষ প্রতিনিধি আবদুর রহমান জাহাঙ্গীর ও দৈনিক সবুজের বার্তা প্রধান নিশান মোহাম্মদ মোকসেদুর রহমান ওয়ালী পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
পুরস্কারপ্রাপ্ত পাঁচ সাংবাদিক হলেন- বিজনেস ক্যাটাগরিতে বণিক বার্তার ইয়াহিয়া নকিব, আরটিভির বিনোদন বিভাগের এস এম মারজান ইভান, অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য দৈনিক কালবিলের জাফর ইকবাল, সমকালের (আইসিটি) সাব্বিন হাসান ও রাইজিং বিডির ক্রীড়া সাংবাদিক ইয়াসিন হাসান।
আরও পড়ুন: সাংবাদিকদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রবেশের প্রয়োজন নেই, সব তথ্য ওয়েবসাইটে আছে: ওবায়দুল কাদের
বিশ্বে কোথাও সাংবাদিকদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ঢুকতে দেওয়া হয় কি না- প্রশ্ন অর্থমন্ত্রীর
পৃথিবীতে কোথাও সাংবাদিকদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ঢুকতে দেওয়া হয় কি না- সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
তিনি বলেন, ‘গভর্নর তো আলাদা কিছু নয়, গভর্নর সরকারেরই একটা অংশ। এর আগে উনি অর্থসচিব ছিলেন। কিছু পত্রিকায় বলা হয় উনি দায়িত্বজ্ঞানহীন, উনার কোনো আইডিয়া নেই। এমনি এমনিই অর্থসচিব হয়েছেন? এখন তো বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর।’
আরও পড়ুন: আইএমএফ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমালে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই: অর্থমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, ‘পৃথিবীতে কোথাও এভাবে ঢুকতে দেয় না কি? সব খুলে দেয়? ওখানে ওদের লোক আছে, মুখপাত্র আছে। এগুলো আছে তো।’
রবিবার (২৬ মে) সচিবালয়ে আইএমএফের নির্বাহী পরিচালক ড. কৃষ্ণমূর্তি ভি সুব্রামানিয়ানের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এ কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।
তাহলে কি সাংবাদিকরা আর বাংলাদেশ ব্যাংকে ঢুকতে পারবেন না- এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, সেটা তো আমি বলতে পারব না।
অন্য দেশে যেকোনো তথ্য ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়। আমরা তো সেসব দেশের নাগরিক নই, তাহলে সেখানকার রেফারেন্স কেন দেওয়া হয় জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দেননি।
আরও পড়ুন: এডিবির বার্ষিক সভা: এডিবি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে অর্থমন্ত্রীর বৈঠক
ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ছেন প্রধানমন্ত্রী: অর্থমন্ত্রী
সিরাজগঞ্জে সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগে মামলা
সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে সাংবাদিক আবু মুসার ওপর হামলা ও মোবাইল কেড়ে নিয়ে এলোপাতাড়ি মারধরের অভিযোগে থানায় মামলা করা হয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যায় আবু মুসা বাদী হয়ে সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ আলীসহ সাতজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১০-১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ শিকার, ১২ জেলেকে মামলা
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করে বাড়ি ফেরার সময় এই ঘটনা ঘটে।
সাংবাদিক আবু মুসা দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার বেলকুচি উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন।
বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনিছুর রহমান মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বরাত দিয়ে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে সোহাগপুর এএস উচ্চ বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে হওয়া অভিযোগের তদন্তের জন্য রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড থেকে টিম আসে। আবু মুসা ও সবুজ সরকার নামে অপর এক সাংবাদিক সেখানে সংবাদ সংগ্রহে যান। তদন্ত শেষে বাড়ি ফেরার সময় ওই বিদ্যালয়ের গেটে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও পৌর মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজার উপর হামলা চালায়। এসময় তাদের মারধরের ছবি ধারণ করায় আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়ে মুসাকে মারধর করে তার মোবাইল ফোন, দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার পরিচয়পত্র ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
শনিবার রাতে মামলা রেকর্ডের পর আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন ওসি মো. আনিছুর রহমান।
আরও পড়ুন: যশোরে কলেজছাত্র হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড
ছেলে হত্যা মামলায় বাবা-মায়ের যাবজ্জীবন
তথ্যের জন্য সাংবাদিকরা শতবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যেতে পারেন: ডেপুটি গভর্নর
তথ্য সংগ্রহের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন ডেপুটি গভর্নর খুরশীদ আলম।
তিনি বলেন, ‘তথ্যের প্রয়োজন হলে আপনি শতবার ব্যাংকে যেতে পারেন।’
শনিবার(১৮ মে) বিকালে পঞ্চগড় চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সম্মেলন কক্ষে রংপুরে 'গ্রাহক সচেতনতা সপ্তাহ-২০২৪' উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
খুরশীদ আলম বলেন, ‘প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের একজন মুখপাত্র থাকে। আমাদের তিনজন আছে। যে কোনও ধরনের তথ্যের জন্য তাদের সঙ্গে গিয়ে কথা বলুন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনি যদি তাদের দেওয়া তথ্যে সন্তুষ্ট না হন, তবে চারজন ডেপুটি গভর্নরের সঙ্গে আপনি কথা বলতে পারেন। আমরা এর উত্তর দেব।’
অবাধ প্রবেশাধিকার প্রসঙ্গে খুরশীদ আলম প্রশ্ন তোলেন, 'অবাধ প্রবেশ কী?’
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, কোনো বেসরকারি কোম্পানি কি অন্য কোম্পানিকে বিনামূল্যে কিছু দেবে? তিনি আরও উল্লেখ করেন, বিশ্বের এমন কোনো দেশ নেই যেখানে বৈধভাবে প্রত্যাহার করা কোনো ক্ষেত্রে এত বেশি সুবিধার অনুমতি দেয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করলেন দেবপ্রিয়
ডেপুটি গভর্নর বলেন, ‘আপনি যদি একা যেতে চান তবে আপনি করতে পারেন এবং নিযুক্ত কর্মকর্তারা আপনাকে তথ্য সরবরাহ করবেন, যা গোপনীয়তা আইনের অধীনে অনুমোদিত। তবে রাষ্ট্রের গোপনীয়তা সম্পর্কে তথ্য পেতে চাইলে তা দেওয়া হয় না।’
কোনো ধরনের অপপ্রচার করে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
উদীয়মান অর্থনীতির চ্যালেঞ্জের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘ পদক্ষেপে এগিয়ে যাচ্ছি।
ব্যাংকারদের উদ্দেশে ডেপুটি গভর্নর বলেন, অর্থনীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। আর্থিক খাত অর্থনীতির প্রাণ। আপনাকে গ্রাহকদের কাছ থেকে ট্যাক্স আদায় করতে হবে, এবং একই সঙ্গে তারা যাতে হয়রানির শিকার বা অসন্তুষ্ট না হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন অনেক দেশের কাছে রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আর পেছনে ফিরে তাকানোর সময় নেই।’
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক নুরুল আমিন ও রুহুল আমিন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিসেস বিভাগের পরিচালক লিজা ফাহমিদা ও শায়েমা ইসলাম এবং ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিউজ্জামান বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এডিপির সর্বোচ্চ ৩৮৮০৯ কোটি টাকা বরাদ্দ পাচ্ছে এলজিডি