গাজায় মানবিক সহায়তা
তিন মাস পর গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে সম্মত নেতানিয়াহু
প্রায় তিনমাসের অবরোধ শেষে অবশেষে সীমিত পরিসরে মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল।
স্থানীয় সময় রবিবার (১৮ মে) এই ঘোষণা দেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গাজার খাদ্যসংকট নতুন সামরিক অভিযানের জন্য হুমকি হওয়ার শঙ্কা থেকে নেতানিয়াহুর মন্ত্রিপরিষদ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান তিনি।
গত ২ মার্চ গাজা উপত্যকায় খাদ্যসহ সব ধরনের মানবিক সেবা প্রবেশ বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল। এতে উপত্যকাটি দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। মানবিক সহায়তায় কাজ করা কর্মীরাও নিজেদের অসহায়ত্বের কথা জানিয়েছেন।
এছাড়া বেশ কিছুদিন ধরেই বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা গাজায় দুর্ভিক্ষের সতর্কবার্তা দিয়ে আসছিলেন। এরপরই এই সিদ্ধান্ত নেয় ইসরায়েল।
তবে ঠিক কখন এবং কীভাবে গাজায় সহায়তা প্রবেশ করবে তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট করেনি নেতানিয়াহু প্রশাসন। সহায়তা তত্ত্বাবধানে থাকা ইসরায়েলি সামরিক সংস্থাও এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষ হতেই গাজা, ইয়েমেনে ইসরায়েলের হামলা জোরাদার
এ ছাড়া, সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে ইসরায়েল একটি নতুন ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে। তারা নিশ্চিত করতে চায়, হামাস যোদ্ধাদের কাছে যেন সহায়তা না পৌঁছায়। যদিও সাহায্যকর্মীরা এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে।
এদিকে, গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে নতুন করে হামলা শুরু করার পর থেকে এলাকাটিতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। রবিবারের ভোরের দিকে চালানো ওই বিমান হামলায় অন্তত ১০৩ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগ শিশু।
এ সময় উত্তর গাজার প্রধান হাসপাতালটিতে সরাসরি হামলা চালানোর কারণে সেটি বন্ধ করে দিতে হয়েছে বলে জানিরয়েছেন স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
ইসরায়েলের দাবি, হামাস একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়ে তাদের কাছে জিম্মি থাকা সব বন্দিকে মুক্তি দিক। অন্যদিকে হামাস চাইছে গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী পুরোপুরি প্রত্যাহার, তাদের দাবি স্থায়ী সমাধান।
দুই পক্ষের কেউই নিজের অবস্থান থেকে ছাড় দিতে রাজি নয়; এতে দুর্ভোগ বাড়ছে সাধারণ গাজাবাসীর।
জাবালিয়া এলাকার বাসিন্দা আবু মোহাম্মদ ইয়াসিন বলেন, ‘যখন ইহুদিরা যুদ্ধবিরতি চায়, তখন হামাস তা প্রত্যাখ্যান করে, আর যখন হামাস যুদ্ধবিরতি চায়, তখন ইহুদিরা তা মানে না। তবে উভয় পক্ষই ফিলিস্তিনি জনগণকে নির্মূল করতে সম্মত।’
আরও পড়ুন: গাজায় রাতভর ইসরায়েলি হামলায় সাংবাদিকসহ নিহত ৮২
হতাশা ভরা কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আল্লাহর দোহাই, আমাদের প্রতি দয়া করুন। বারবার এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় পালাতে পালাতে আমরা ক্লান্ত।’
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় প্রায় ৫৩ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। বাস্তুচ্যুত প্রায় ৯০ শতাংশ বাসিন্দা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগ নারী ও শিশু।
২০০ দিন আগে