জামায়াত নেতা আজহার
আপিল বিভাগের রায়ে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পেলেন জামায়াত নেতা আজহার
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিল করে সর্ব্বোচ আদালত এ রায় দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৭ মে) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের সাত সদস্যের বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করে।
এ সময় আদালতে জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির, ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, ব্যারিস্টার ইমরান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন।
এর আগে, গত ২২ এপ্রিল আজহারুল ইসলামের করা রিভিউ আবেদন শুনানি ৬ মে পর্যন্ত স্থগিত করেন আপিল বিভাগ।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রংপুর অঞ্চলে গণহত্যা-হত্যা, অপহরণ, ধর্ষণ, আটক, নির্যাতন ও গুরুতর জখম এবং বাড়িঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের মতো ৯টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছিল এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে। অভিযোগপত্রের তথ্য অনুসারে, রংপুর অঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধের সময় ১ হাজার ২৫৬ জনকে হত্যা, ১৭ জনকে অপহরণ এবং ১৩ নারীকে ধর্ষণের দায়ে তাকে ‘দোষী সাব্যস্ত’ করা হয়।
আরও পড়ুন: জামায়াত নেতা আজহারের আপিলের রায় মঙ্গলবার, খালাসের প্রত্যাশা আইনজীবীর
উল্লিখিত ৯টি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটিতে দোষী সাব্যস্ত করে ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর তাকে মৃত্যু দণ্ডাদেশ দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি আপিল করেন আজহারুল ইসলাম। শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর আপিল বিভাগ তার মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে।
২০২০ সালের ১৫ মার্চ আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। এরপর তা পুনর্বিবেচনা চেয়ে ওই বছরের ১৯ জুলাই আপিল বিভাগে আবেদন করেন আজহারুল ইসলাম। এরপর গত ২৬ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ রিভিউ শুনে ফের আপিল শুনানির সিদ্ধান্ত দেয়। এটিই প্রথম মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা, যা রিভিউ পর্যায়ে আসার পর ফের আপিল শুনানির অনুমতি পায়।
একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০১২ সালের ২২ আগস্ট রাজধানীর মগবাজারের বাসা থেকে আজহারুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। তখন থেকেই কারাগারে রয়েছেন এই জামায়াত নেতা।
১৯২ দিন আগে
জামায়াত নেতা আজহারের আপিলের রায় মঙ্গলবার, খালাসের প্রত্যাশা আইনজীবীর
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের আপিলের ওপর মঙ্গলবার রায় ঘোষণা করবেন আপিল বিভাগ। মঙ্গলবারের জন্য প্রকাশিত প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের দৈনন্দিন কার্যতালিকায় মামলাটি এক নম্বর ক্রমিকে রায়ের জন্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
জামায়াতের আইনজীবী শিশির মনির জানান, মঙ্গলবার রায়ের জন্য দিন নির্ধারিত আছে। আমরা প্রত্যাশা করি এ টি এম আজহারুল ইসলাম এই মামলার সব অভিযোগ থেকে বেকসুর খালাস পাবেন এবং রায়ের ভিত্তিতে জেল থেকে বেরিয়ে আসবেন।
এর আগে গত ৮ মে শুনানি শেষে রায়ের জন্য ২৭ মে দিন রেখেছিলেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পক্ষে রয়েছেন প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম। এর আগে গত ৬ মে প্রথম দিনের মতো শুনানি হয়।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রংপুর অঞ্চলে গণহত্যা-হত্যা, অপহরণ, ধর্ষণ, আটক, নির্যাতন ও গুরুতর জখম এবং বাড়িঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের মতো ৯ ধরনের ৬টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছিল এ টি এম আজহারের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: আজহারের মুক্তি দাবি: কারাবরণের ঘোষণা জামায়াত আমিরের
২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায়ে ২ নম্বর, ৩ নম্বর এবং ৪ নম্বর অভিযোগে ফাঁসির দণ্ডাদেশ পান জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আজহারুল ইসলাম। এছাড়া ৫ নম্বর অভিযোগে অপহরণ, নির্যাতন, ধর্ষণসহ বিভিন্ন অমানবিক অপরাধের দায়ে ২৫ বছর ও ৬ নম্বর অভিযোগে নির্যাতনের দায়ে ৫ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলে শুনানির পর ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় ঘোষণা করেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ। আপিল বিভাগের রায়ে ২, ৩, ৪ (সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে) ও ৬ নম্বর অভিযোগের দণ্ড বহাল রাখা হয়। আর ৫ নম্বর অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেওয়া হয়। ওই দিন আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী (প্রয়াত) খন্দকার মাহবুব হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন (প্রয়াত) অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
২০২০ সালের ১৫ মার্চ আপিল বিভাগের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। ওই রায়ের রিভিউ চেয়ে ২০২০ সালের ১৯ জুলাই আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট আবেদন করেছিলেন এ টি এম আজহারুল ইসলাম। ২৩ পৃষ্ঠার পুনর্বিবেচনার এ আবেদনে মোট ১৪টি যুক্তি উপস্থাপন করা হয়। ওই পুনর্বিবেচনার আবেদনের শুনানি শেষে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে এ টি এম আজহারুল ইসলামকে আপিলের অনুমতি দেন। এরপর তিনি আপিল করেন।
আরও পড়ুন: আজহারকে মুক্তি না দিলে নিজেকে গ্রেপ্তারের আর্জি জামায়াত আমিরের
১৯২ দিন আগে