প্যারিস
প্যারিসে গুলিতে নিহত ৩, সন্দেহভাজন গ্রেপ্তার
মধ্য প্যারিসে বন্দুকধারীর হামলায় তিনজন নিহত ও চারজন আহত হয়েছেন। শুক্রবার এই হামলার ঘটনা ঘটে এবং ৬৯ বছর বয়সী এক সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউটররা। তাৎক্ষণিকভাবে গুলি চালানোর কারণ জানা যায়নি।
প্যারিসের প্রসিকিউটর অফিস হত্যার ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে এবং সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত করতে কাজ করছে।
ফ্রান্সের রাজধানীর গারে দে ল'এস্ট ট্রেন স্টেশনের কাছে দোকান এবং রেস্তোঁরাসহ একটি ব্যস্ত রাস্তা ও ১০তম অ্যারেন্ডিসমেন্টে এলাকাটি ঘিরে রেখেছে পুলিশ। গুলি এমন এক সময়ে চালানো হলো যখন সপ্তাহের শেষে প্যারিস ক্রিসমাস উদযাপনের আগের প্রস্তুতি শেষ করতে ব্যস্ত।
আরও পড়ুন: খাসোগি হত্যায় সন্দেহভাজন সৌদি নাগরিক ফ্রান্সে গ্রেপ্তার
জরুরি কর্মীরা ঘটনাস্থলে থাকাকালীন ওই এলাকা থেকে দূরে থাকার জন্য নাগরিকদের সতর্ক করেছে দেশটির পুলিশ বিভাগ।
প্রসিকিউটর অফিস জানিয়েছে, আহত চারজনের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
সন্ত্রাসবিরোধী প্রসিকিউটররা তদন্তকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন কিন্তু এখন পর্যন্ত সন্ত্রাসীদের বিষয়ে কোনও কিছু জানাননি তারা।
ফ্রান্স ২০১৫-২০১৬ সালে ইসলামিক চরমপন্থীদের মারাত্মক আক্রমণের শিকার হয়েছিল এবং সন্ত্রাস-সম্পর্কিত সহিংসতার জন্য সতর্ক অবস্থায় রয়েছে দেশটি।
আরও পড়ুন: সন্ত্রাসীদের হাতে ফ্রান্সে বাংলাদেশি খুন
বায়ুমান উন্নয়নে চেষ্টা করে যাচ্ছে সরকার: পরিবেশমন্ত্রী
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, স্বল্পস্থায়ী জলবায়ু দূষণকারী হ্রাসের মাধ্যমে বায়ুর গুণমান উন্নত করতে এবং স্বল্প মেয়াদী জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশ আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বল্পস্থায়ী জলবায়ু দূষণকারী হ্রাসের জন্য জাতীয় কর্মপরিকল্পনায় ১১টি অগ্রাধিকারমূলক প্রশমন ব্যবস্থা চিহ্নিত করা হয়েছে-যার মধ্যে পাঁচটি লক্ষ্যমাত্রা প্রধান মিথেন নির্গমন উৎস।’
শুক্রবার (১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় প্যারিসে অনুষ্ঠিত ক্লাইমেট অ্যান্ড ক্লিন এয়ার কোয়ালিশনের মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনের ১০ম বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত হয়ে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, টেকসই উন্নয়ন ও দারিদ্র্য দূরীকরণের প্রেক্ষাপটে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টায় সক্রিয় ভূমিকা রাখছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ উচ্চাভিলাষী প্রশমন লক্ষ্যমাত্রাসহ নিঃশর্ত এবং শর্তসাপেক্ষ উভয় লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধি করে হালনাগাদ জলবায়ু প্রশমণ পরিকল্পনা জমা দিয়েছে।
তিনি বলেন, স্বল্পস্থায়ী জলবায়ু দূষণকারীর সম্ভাব্যতা উপলব্ধি করে আমাদের আপডেট করা জলবায়ু প্রশমণ পরিকল্পনার লক্ষ্যগুলির মধ্যে রয়েছে ২০৩০ সালের মধ্যে গৃহস্থালীর শক্তি নির্গমন ১৮.৫৫ শতাংশ, ইট ভাটা খাতের নির্গমন ৪৬.৫৪ শতাংশ এবং কঠিন পৌর বর্জ্য এবং বর্জ্য জল নির্গমন ৭.৯৩ শতাংশ হ্রাস করা।
বনমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের স্বল্পস্থায়ী জলবায়ু দূষণকারী কমানোর জাতীয় কর্মপরিকল্পনা সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়িত হলে ২০৪০ সাল নাগাদ ১৬ হাজার ৩০০ অকাল মৃত্যু রোধ করবে, কালো কার্বন নিঃসরণ ৭২ শতাংশ এবং মিথেন নিঃসরণ ৩৭ শতাংশ কমানো সম্ভব হবে। জাতীয় এ পরিকল্পনা পূর্ণ বাস্তবায়নের জন্য পর্যাপ্ত প্রযুক্তিগত এবং আর্থিক সহায়তা একটি পূর্বশর্ত।
তিনি বলেন, স্বল্পস্থায়ী জলবায়ু দূষণকারী হ্রাস করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ আমরা স্বল্পস্থায়ী জলবায়ু দূষণকারী হ্রাসের উপর ব্যাপক পদক্ষেপের মাধ্যমে বিশ্ব উষ্ণায়নের সম্ভাবনা .৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমাতে পারি।
বৈঠকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরি, ঘানার পরিবেশ, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনমন্ত্রী ড. কোয়াকু আফ্রি, ক্লাইমেট অ্যান্ড ক্লিন এয়ার কোয়ালিশনের অংশীদার মন্ত্রী ও প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
পড়ুন: বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য অংশীদারিত্ব: বিশেষজ্ঞদের অগ্রাধিকারমূলক জলবায়ু পদক্ষেপ বিষয়ক আলোচনা শুক্রবার
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সেন্টমার্টিন থেকে কুকুর পুনর্বাসনের উদ্যোগ, প্রাণিবান্ধব সংগঠনের বাধা
ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক আরও উচ্চতর পর্যায়ে নিয়ে যাব: জয়শঙ্কর
২০২১ সালকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে দুর্দান্ত উল্লেখ করে বাংলাদেশ ও ভারত চলতি বছর দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও উচ্চতর পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সোমবার প্যারিসে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্করের সাথে বৈঠক করেন এবং দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ নিয়ে আলোচনা করেন।
বিশেষ করে তারা জয়েন্ট কনসালটেটিভ কমিশনের (জেসিসি) পরবর্তী বৈঠকের প্রস্তুতি নিয়ে কথা বলেন।
বৈঠকের পর জয়শঙ্কর এক টুইটে বলেন, ‘দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে ২০২১ সালটি ছিল দুর্দান্ত। ২০২২ সালে এটিকে আরও উচ্চতর পর্যায়ে নিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
পড়ুন: চীন শুধু ‘অর্থের ঝুড়ি’ নয় ‘সাশ্রয়ী’ প্রস্তাবও দেয়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জয়শঙ্কর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠককে ‘চমৎকার’ হিসেবে উল্লেখ করেন এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বৈঠকটি করতে পেরে আনন্দ প্রকাশ করেন।
আজ (মঙ্গলবার) অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সহযোগিতা নিয়ে মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিতে ড. মোমেন এখন প্যারিসে রয়েছেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য দেশগুলোর প্রতিনিধি ছাড়াও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রায় ৩০টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বৈঠকে যোগ দেয়ার কথা রয়েছে।
পড়ুন: জলবায়ু অর্থ চুক্তির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে ভূরাজনীতি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশ বিরোধী কর্মকাণ্ড: প্যারিসে পিনাকী ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ
বাংলাদেশ বিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকার অভিযোগ ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে পিনাকী ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে এবং দেশটির পুলিশ সেই অভিযোগ গ্রহণ করেছে।
শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকাল ৪টায় সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা পিনাকী ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে ফরাসি পুলিশের কাছে এই অভিযোগ করেন।
এদের মধ্যে রয়েছেন সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি অস্ট্রিয়া প্রবাসী মানবাধিকারকর্মী, লেখক ও সাংবাদিক এম. নজরুল ইসলাম, সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান, ফ্রান্স আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ কাশেম, সাধারণ সম্পাদক দিলওয়ার হোসেন কয়েছ ও সহ-সভাপতি মনজুরুল হাসান সেলিম।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সঙ্কটে ফ্রান্স বাংলাদেশের পাশে থাকবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
প্যারিসের সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি এম. নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘পিনাকী ভট্টাচার্য বাংলাদেশ বিরোধী অপতৎপরতায় লিপ্ত। এই তথাকথিত লেখক ফ্রান্সে বসে বাংলাদেশ, বাংলাদেশ সরকার, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধু পরিবারকে নিয়ে বিভ্রান্তিকর মিথ্যা তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। তিনি বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল, ফেসবুক, ইউটিউব চ্যানেল, টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এইসব অপপ্রচার অব্যাহত রেখেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি ঘৃণ্য চক্র অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা করছে। পিনাকী ভট্টাচার্য এই চক্রের অন্যতম সদস্য। যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বিএনপি নেতা তারেক রহমান এই চক্রের প্রধান। তাদের পেছনে আছে একাত্তরের পরাজিত শক্তি ও তাদের দোসররা। এই অপপ্রচারের জন্য তারা বিপুল পরিমাণ টাকা ঢালছে। আমরা অভিযোগ দায়ের করেছি এই জন্য যে, এ ধরণের অপপ্রচার আর চলতে দেয়া যায় না। আইনগতভাবেই এটা বন্ধ হওয়া দরকার। ফ্রান্সের মাটিতে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, এটা আমরা এই দেশের আইনের দৃষ্টিতে এনেছি।’
আরও পড়ুন: ঢাকা-প্যারিস সম্পর্ক উন্নয়নে ফ্রান্স সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
২ সপ্তাহের সফরে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশে ‘নলেজ সেন্টার’ স্থাপনের প্রস্তাব শেখ হাসিনার
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের প্রযুক্তিগত সমাধানের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করার জন্য বাংলাদেশে একটি ‘সাউথ-সাউথ নলেজ অ্যান্ড ইনোভেশন সেন্টার’ স্থাপনের জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থন চেয়েছেন। শুক্রবার প্যারিস পিস ফোরাম-২০২১-এ দেয়া বক্তব্যে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
এসময় শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৯ সালে বাংলাদেশ একটি ‘সাউথ-সাউথ নলেজ অ্যান্ড ইনোভেশন সেন্টার’ স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছে। এটি আদর্শগতভাবে প্রাচ্যের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের প্রযুক্তিগত সমাধানের একটি প্ল্যাটফর্ম হিসাবে কাজ করবে।
তিনি বলেন, আমি জাতিসংঘ,জি-২০ এবং ওইসিডিকে এই ধরনের দূরদর্শী প্রস্তাবগুলিতে বিনিয়োগের বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেহেতু বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে উন্নীত হয়েছে, আমরা অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার জন্য আমাদের নিজস্ব প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার লক্ষ্যে কাজ করতে চাই। যে প্ল্যাটফর্মটি আমাদের কূটনৈতিক মূল্যবোধভিত্তিক কাজকে সমন্বয় ও প্রসারিত করতে সাহায্য করবে এবং এটি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন, শান্তিরক্ষা এবং মানবিক প্রচেষ্টায় অবদান রাখতে একাধিক উপায়ে সাহায্য করবে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উঠে এসেছে। আমরা এখন জলবায়ুর ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে থাকা দেশগুলোর কণ্ঠস্বর হিসেবে কাজ করছি। গ্লোবাল সাউথের প্রতি আমাদের এই প্রতিশ্রুতি দীর্ঘ দিনের।
আরও পড়ুন: সৃজনশীল অর্থনীতিতে বিনিয়োগ উন্নয়ন ত্বরান্বিত করবে: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, চার দশকেরও বেশি সময় ধরে সাউথ-সাউথ কোঅপারেশনের ধারণা আমাদের ভাবনায় রয়েছে। শেষ পর্যন্ত টেকসই উন্নয়নের ২০৩০ এজেন্ডায় তার স্থান হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই সহযোগিতার উদ্যোগ বাড়ছে। অনেকে সৃজনশীল উন্নয়ন সমাধানের জন্য অপেক্ষা করছে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, তবুও সাউথ-সাউথ কোঅপারেশন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন আলোচনায় আড়ালে চলে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতায় ঐতিহ্যবাহী চিন্তাভাবনা এবং আখ্যান পরিবর্তন করা কঠিন। এ কারণে অনেক সম্ভাব্য প্রকল্পের অর্থায়ন কম হচ্ছে। ত্রিভুজাকার সহযোগিতার ধারণাও তার সম্ভাব্যতা অনুসারে নেই। এই ব্যবধান পূরণ করা প্রয়োজন।
উন্নত দেশগুলো প্রতিশ্রুতি পালনে পিছিয়ে রয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক উন্নত দেশ এখনও তাদের আন্তর্জাতিকভাবে দেওয়া উন্নয়ন প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে পিছিয়ে রয়েছে। তাদের জন্য, সাউথ-সাউথ কোঅপারেশন সহযোগিতা কার্যক্রমকে সমর্থন করা নিজস্ব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের একটি উপায় হতে পারে।
তিনি বলেন, সাউথ-সাউথ কোঅপারেশনের জন্য জাতীয় উন্নয়নের অগ্রাধিকারে সরাসরি সাড়া দেয়ার আরও ভালো সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তরের অর্থায়ন এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা সাউথ-সাউথ কোঅপারেশন কর্মসূচির স্বচ্ছতা এবং ব্যয়-কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।
টিকার বৈষম্য নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা এখন বিশ্বায়নের অসম প্রতিক্রিয়ার সাক্ষী। বিশেষ করে কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন আমরা দেখেছি, আন্তর্জাতিকভাবে লাখ লাখ মানুষ টিকা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। টিকা ও চিকিৎসা সংকটের এই ব্যবধানটি বিশাল।
আরও পড়ুন: প্রথম ইউনেস্কো-বঙ্গবন্ধু পুরস্কার প্রদান করলেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মতো কয়েকটি উন্নয়নশীল দেশের টিকার সমতা এবং গুণগতমান নিশ্চিত করার ক্ষমতা রয়েছে। বিশ্বের অন্য দেশের সঙ্গে টিকা ভাগ করার জন্য, টিকার বড় ধরনের উৎপাদনে যাওয়ার জন্য আমাদের প্রযুক্তিগত জ্ঞান রয়েছে। এ জন্য ট্রিপস মওকুফ করা প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা অনেক বছর ধরে অন্য দেশের সঙ্গে আমাদের নিজস্ব উন্নয়ন অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেয়ার জন্য কাজ করছি। কৃষি, কমিউনিটি হেলথ কেয়ার, অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা, প্রজনন স্বাস্থ্য, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ক্ষুদ্র অর্থায়নে আমাদের অর্জন বিশ্বের অন্যান্য অংশে পৌঁছেছে। গত ২০ বছরে আমাদের কাজের ওপর ভিত্তি করে আমরা জাতিসংঘের উদ্যোগের অধীনে আফগান জনগণের জন্য মানবিক সহায়তায় জড়িত থাকার প্রস্তাব দিয়েছি।
তিনি বলেন, আমরা প্রতিবেশি দেশের মানবসম্পদ উন্নয়নে কয়েক বছর ধরে অবদান রাখছি। ইউএনডিপির সহায়তায়, কমিউনিটি-লেভেল ডিজিটাল পরিষেবা এবং পাবলিক সার্ভিস উদ্ভাবনের বিষয়ে আমাদের কাজ গ্লোবাল সাউথের বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে ভাগ করা হচ্ছে। আমাদের কিছু জলবায়ু অভিযোজন পদ্ধতি উত্তরে বাড়তি মনোযোগ পাচ্ছে।
আরও পড়ুন: প্যারিসের উদ্দেশে লন্ডন ত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী
রোহিঙ্গা ইস্যুতে পদক্ষেপ নিতে বিশ্বনেতাদের প্রতি শেখ হাসিনার আহ্বান
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনে বিশ্বনেতাদের গুরুত্ব সহকারে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার গ্রান্ডে হ্যালে দে লা ভিলেতে প্যারিস শান্তি ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ‘মাইন্ডিং দ্য গ্যাপ: ইমপ্রুভিং গ্লোবাল গভর্ন্যান্স আফটার কোভিড-১৯’ শীর্ষক বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
এসময় শেখ হাসিনা বলেন, বাস্তূচ্যুত এই মানুষগুলো যাতে শীঘ্রই মিয়ানমারে ফিরে যেতে পারে তা নিশ্চিত করতে বিশ্বকে অবশ্যই গুরুত্ব সহকারে কাজ করতে হবে। অন্যথায় সংকট ও নিরাপত্তা ঝুঁকি শুধু আমাদের সীমানায় সীমাবদ্ধ থাকবে না। আমরা ইতোমধ্যে এর লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০১৭ সালে মিয়ানমারের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত জনগণকে (রোহিঙ্গাদের) সাময়িক আশ্রয় দিয়ে একটি বড় আঞ্চলিক সংকট এড়াতে বিশ্বকে সাহায্য করেছে। এখন সময় এসেছে, আন্তর্জাতিক সীমান্তে আটকে থাকা কয়েক হাজার অভিবাসীর ঠিকানা নিশ্চিত করা।
আরও পড়ুন: ফরাসি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের অবশ্যই জাতি, বর্ণ এবং জাতিগত বৈষম্যের অবসান ঘটাতে হবে। আমাদের নারী এবং মেয়েদের সমস্ত শৃঙ্খল ভাঙ্গার সুযোগ দিতে হবে। আমাদের সবার জন্য উপযুক্ত কাজের সুযোগ তৈরি করতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বাস করে যে বিশ্বব্যাপী শান্তি আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য সর্বোত্তম গ্যারান্টি। আমরা সংঘাতের পথ এড়িয়ে চলি এবং বিরোধের মীমাংসা চাই। পুরনো এবং নতুন দ্বন্দ্বের ন্যায্য এবং স্থায়ী সমাধান খোঁজার জন্য আমাদের একটি যৌথ দায়িত্ব রয়েছেশেখ হাসিনা বলেন, আমরা আমাদের ভূমি অন্য কোনো দেশের বিরুদ্ধে ক্ষতিকর কর্মকাণ্ডে ব্যবহার হতে দেব না। ১৯৯৭ সালে ঐতিহাসিক ‘শান্তি চুক্তির’ মাধ্যমে আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামে সশস্ত্র সংঘাতের অবসান ঘটাই।
তিনি বলেন, আমরা সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ এর প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। আমরা সন্ত্রাসবাদের বিস্তারকে থামাতে কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, বহু বছর ধরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অবদানকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ শীর্ষে রয়েছে। আমরা ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়ায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছি।
আরও পড়ুন:প্যারিসের উদ্দেশে লন্ডন ত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য সম্পর্ক নিয়ে প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন প্রয়োজন: প্রধানমন্ত্রী
প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াতে ঢাকা-প্যারিস সম্মতিপত্র স্বাক্ষর
প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা বৃদ্ধির আগ্রহ প্রকাশ করায় বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে একটি প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিষয়ক সম্মতিপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.এ কে আব্দুল মোমেন ইউএনবিকে বলেছেন,‘হ্যাঁ, আমরা করেছি (সম্মতিপত্রে স্বাক্ষর)। এটি প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি বিনিময়ের সাথে সম্পর্কিত।’
মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক সরকারি সফরে ফ্রান্সে যান। এসময় এক উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকে শেখ হাসিনা ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নত করা, কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন এবং আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বিভিন্ন বিষয়ে পারস্পরিক স্বার্থ ও সহযোগিতার বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই দেশই প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের প্রয়োজনীয়তা অনুভবে আহ্বান জানালে, নিজেদের সক্ষমতার ভিত্তিতে একে অপরকে সহযোগিতা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এছাড়া একে অন্যকে সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমেও সহায়তা অব্যাহত রাখবে।
দুই দেশই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক নেতৃত্বের কথা স্মরণ করে এবং বাংলাদেশ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ফ্রান্স সরকার ও জনগণের সমর্থনের কথা স্বীকার করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: প্যারিসের উদ্দেশে লন্ডন ত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী
এসময় উভয় পক্ষই প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক এবং নিরাপত্তা বিষয়ক বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করে। দুই দেশই প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে সকলের জন্য কল্যাণকর একটি মুক্ত, স্বাধীন, শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ পরিবেশ কামনা করেন।তারা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার বজায় রাখতে এবং সামুদ্রিক নিরাপত্তা ও সমুদ্র অর্থনীতিতে সহযোগিতার সুযোগ বৃদ্ধিতে সম্মত হয়েছে।
জাতিসংঘের কনভেনশন প্রণীত ১৯৮২ সালের সমুদ্র আইন পালনের পাশাপাশি সমুদ্র নিয়ে বিভ্ন্ন বিরোধের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তি, হুমকি বা বলপ্রয়োগ থেকে বিরত থাকা প্রভৃতি বিষয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে।
রোহিঙ্গাদের নিয়ে সৃষ্ট নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়ে ঢাকা-প্যারিসের মতবিনিময়
দেশের আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য রোহিঙ্গা সংকট থেকে সৃষ্ট সম্ভাব্য নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা তুলে ধরে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি এই সংকট নিরসনে গঠনমূলক ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় এক বৈঠকে শেখ হাসিনা এই আহ্বান জানান।
এসময় দুই দেশই বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে জাতিসংঘের কার্যকর ভূমিকার জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল নিশ্চিত করার এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মিয়ানমারে তাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ এবং টেকসই প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে।
নিজ দেশে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উদারতাকে স্বাগত জানিয়েছে ফ্রান্স।
উভয় দেশই রোহিঙ্গা সঙ্কটের কারণে বাংলাদেশের ওপর সৃষ্ট চাপের কথা উল্লেখ করেছে। বিশেষ করে ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকার মানুষদের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৯ নভেম্বর এক সরকারি সফরে ফ্রান্স যান। এসময় দুই দেশই বাংলাদেশের সঙ্গে ফরাসি উন্নয়ন সংস্থার (এএফডি) দীর্ঘমেয়াদী অংশীদারিত্বকে স্বাগত জানিয়েছে।
আরও পড়ুন:রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আটক ৩ রোহিঙ্গা, অস্ত্র জব্দ
এএফড‘র কার্যক্রমের মাধ্যমে এবং বাংলাদেশের জাতীয় উন্নয়ন কৌশলের প্রতিক্রিয়া হিসেবে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পাশাপাশি সমুদ্র অর্থনীতি, জ্বালানি ও পানি খাতে অব্যাহত সমর্থন অব্যাহত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ফ্রান্স।
উভয় পক্ষই স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আধুনিকায়ন এবং একটি পানি শোধনাগার স্থাপনের জন্য ক্রেডিট সুবিধা চুক্তি স্বাক্ষরকে স্বাগত জানিয়েছে।
স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত কপ-২৬ এ অংশ নেয়ার পর ফ্রান্স এবং বাংলাদেশ ২০৩০ সালের লক্ষ্যমাত্রার অংশ হিসেবে পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই এবং টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহযোগিতা জোরদার করার জন্য তাদের যৌথ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করেছে।
ফ্রান্স ‘জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ ফোরামে’ বাংলাদেশের নেতৃত্বের প্রশংসা করেছে। দুই দেশই প্যারিস জলবায়ু চুক্তির অধীনে প্রতিশ্রুত জলবায়ু অর্থায়নের জন্য কাজ করতে সম্মত হয়েছে।
ফ্রান্স প্রাসঙ্গিক ফরাসি প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশের কূটনৈতিক ও সামরিক পেশাজীবীদের জন্য বিশেষ কোর্স প্রদানে সম্মত হয়েছে।
উভয় দেশই বাংলাদেশে ফরাসি ভাষা এবং ফ্রান্সে বাংলা ভাষার ব্যবহার প্রচারে তাদের আকাঙ্ক্ষার কথা জানিয়েছে।
উভয় পক্ষই নিশ্চিত যে এই সফর ফ্রান্স ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।
আরও পড়ুন:রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘কথিত’ আরসা নেতা হাসিমের লাশ উদ্ধার
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৬ খুনের ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ১০
প্যারিসের উদ্দেশে লন্ডন ত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী
ইউনেস্কোর ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগদান ও সৃজনশীল অর্থনীতিতে অবদানের জন্য প্রথমবারের মতো ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রদান করতে মঙ্গলবার প্যারিসের উদ্দেশে লন্ডন ত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, ‘সকাল ৯টায় (স্থানীয় সময়) প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গী নিয়ে বিমান বাংলাদেশের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যায়।’
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত সাদিয়া তাসনিম মুনা প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে বিদায় জানান।
স্থানীয় সময় বেলা সোয়া ১১টায় ফ্লাইটটি দ্য গোল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে এবং সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্রদূত খন্দকার মোহাম্মদ তালহা স্বাগত জানাবেন।
আরও পড়ুন: 'অস্তিত্বের' লড়াইয়ে লড়ছে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী
এর আগে গত ৩০ অক্টোবর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন জানিয়েছেন, ফ্রান্স সফরকালে প্রধানমন্ত্রী দেশটির প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেবেন। এছাড়াও ফ্রান্সের অন্যান্য মন্ত্রী ও ফ্রান্সের দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদের সদস্যদের সাথে প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক সাক্ষাতের কথা রয়েছে।
তিনি জানান, সফরকালে বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও উচ্চতর পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। ফরাসী প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সাথে বৈঠকালে বিভিন্ন বিষয়ে কয়েকটি সমঝোতা স্মারক ও লেটার অব ইনটেন্ট স্বাক্ষরিত হতে পারে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তার নামে একটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রবর্তনের প্রস্তাব জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো’র নির্বাহী বোর্ডের ২১০তম সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। এটা সমগ্র জাতির জন্য একটি গর্বের বিষয়। আগামী ১১ নভেম্বর প্যারিসে ইউনেস্কো সদর দপ্তরে ‘ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ফর দ্য ক্রিয়েটিভ ইকোনমি’ শীর্ষক এই আন্তর্জাতিক পুরস্কারটি বিজয়ী ব্যক্তি ও সংস্থাকে দেয়া হবে।
প্যারিস সফর শেষে ১৪ নভেম্বর দেশে ফেরার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। এর আগে দুই সপ্তাহের যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স সফরের জন্য ৩১ অক্টোবর গ্লাসগোতে পৌঁছান তিনি।
পড়ুন: বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য সম্পর্ক নিয়ে প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন প্রয়োজন: প্রধানমন্ত্রী
বিশ্বকে জলবায়ু অভিবাসীদের দায়িত্ব ভাগ করে নিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
যথাযথ মর্যাদায় প্যারিসে জাতীয় শোক দিবস পালিত
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করেছে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস।
শোক দিবসের এ আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।
আরও পড়ুন: আঙ্কারায় বাংলাদেশ দূতাবাসে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত
অনুষ্ঠানের ডা. দীপু মনি বলেন, ‘এ পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড শুধু যে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে চেয়েছিল তা নয়, তারা বঙ্গবন্ধুর বংশধর ও নিকটাত্মীয়দের ও নির্মূল করতে চেয়েছিল। এই হত্যাকাণ্ডের পরবর্তী সময়ে হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষাপট তৈরি, হত্যাকাণ্ডের পক্ষে সামাজিক গ্রহণ যোগ্যতা অর্জনের লক্ষ্যে নানা ধরনের অপপ্রচার করা হয়।’
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আজন্ম লালিত স্বপ্ন ছিল একটি অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন। বাংলার মানুষকে কীভাবে তাদের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে দেয়া যায় তাই ছিল বঙ্গবন্ধুর প্রধান লক্ষ্য।
বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন কমিটির পক্ষ থেকে এ বছরের প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে, 'শোক থেকে শক্তি, শোক থেকে জাগরণ'। তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানী সরদার ফজলুল করিমকে উদ্ধৃত করে বলেন, 'ঘাতকের বুলেটের আওয়াজ থেকে জন্ম নিয়েছিল লক্ষ মুজিব যা ঘাতকেরা অনুধাবন করতে পারেনি।'
আরও পড়ুন: লকডাউনে বন্ধ থাকবে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস সেবা
শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে আলোচনা পর্বে ভার্চুয়াল মাধ্যমে অংশগ্রহণকারী অতিথিরা বঙ্গবন্ধুর জীবন ও দর্শনের উপর আলোচনা করেন। আলোচকবৃন্দ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সংঘটিত ইতিহাসের বর্বরতম হত্যাকাণ্ডে বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের আঠারো জন শাহাদাতবরণকারী সদস্যের রূহের মাগফেরাত কামনা এবং গভীর শোক প্রকাশ করেন।