আহত ২, নিখোঁজ ৪
বরগুনায় চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে আহত ২, নিখোঁজ ৪
বরগুনার পাথরঘাটায় সাগর থেকে মাছ ধরে ফেরার পথে দুটি ট্রলিং ট্রলার আটক, চাঁদা দাবি, আহরিত মাছ ছিনতাইসহ মৎসজীবীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে কোস্টগার্ডের সদস্যদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় দুই মৎসজীবী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এ ছাড়াও ট্রলার থেকে খালে পড়ে ৪ জন নিখোঁজ হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন পাথরঘাটার মৎসজীবীরা।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনার পাথরঘাটার বিষখালী ও বলেশ্বর নদীর ভাড়ানি খালে কোস্টগার্ডের বোর্ট কূলে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে, গতকাল (মঙ্গলবার) সকাল ৯টার দিকে স্থানীয় আলম কোম্পানি ও মাসুম কোম্পানির দুটি মডিফাইড ট্রলিং ট্রলার আটক করে কোস্টগার্ড।
আটক হওয়া একটি ট্রলারের মালিক ও বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাসুম আকন জানান, ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে মাছ ধরার জন্য যান উপকূলের হাজার হাজার মৎসজীবীরা।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে আবহাওয়া খারাপ হওয়ার কারণে মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে আমার একটি ট্রলার ঘাটের দিকে আসে। এ সময় কোস্টগার্ড ট্রলারটি আটক করে। এর পরপরই আলম কোম্পানি আরেকটি ট্রলার আটক করে কোস্টগার্ড।’
মাসুম আকন অভিযোগ করেন, ‘ট্রলার আটক করার পর আমাদের উপস্থিতিতে কোস্টগার্ড সদস্যরা পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। তখন আমরা বৈধ কাগজপত্র দেখালেও তা গ্রহণ না করে ট্রলার ধ্বংসের চেষ্টা করেন তারা। এ সময় পাথরঘাটা মৎস্য কর্মকর্তা আমাদের বৈধ কাগজপত্র ও হাইকোর্টের আদেশ দেখে ট্রলার ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে চলে যান।’
তবে কোস্টগার্ড সদস্যরা বিষয়টি না মেনে মঙ্গলবার রাতে ট্রলার ধংস করা শুরু করেন বলে জানান তিনি।
মাসুম আরও বলেন, ‘ট্রলার ধংস করা শুরু করলে মৎসজীবীরা আপত্তি জানান। তখন দুজন মৎসজীবীকে মারধর করা হয়। এতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং সংঘর্ষ শুরু হয়।’
এ ঘটনায় ২ জেলে আহত হয়েছেন এবং আরও ৪ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানান তিনি।
মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আরও জানান, ঈদের ছুটির আগেও কোস্টগার্ড কর্মকর্তাকে এক লাখ টাকা দিয়েছেন তিনি। ঈদের ছুটির পর বাড়ি থেকে এসে আবারও তাদের স্টেশনে ডেকে নিয়ে ট্রলিং ট্রলারের তালিকা চাওয়া হয়। সেই তালিকা থেকে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন কোস্টগার্ড কর্মকর্তারা। এর আগেও কয়েক দফা টাকা দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
বিভিন্ন সূত্রের বরাতে জানা গেছে, উত্তেজনার একপর্যায়ে কোস্টগার্ড সদস্যরা মৎসজীবীদের লক্ষ্য করে ফাঁকা গুলি ছোড়েন। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় মৎসজীবীরাও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ ছাড়াও আটক ট্রলারে থাকা মৎসজীবীদের মারধরের অভিযোগও উঠেছে কোস্টগার্ডের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: সাম্য হত্যা: ঢাবির তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা
এদিকে, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে থানা পুলিশ।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান বলেন, তারা উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন।
তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, কোস্টগার্ড ও মৎস্য বিভাগ এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।
১৭০ দিন আগে