পদ্মা সেতু
২৫ এপ্রিল পর্যন্ত পদ্মা সেতুতে টোল আদায় ৬৬০.২৪ কোটি টাকা: কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, পদ্মা সেতু থেকে গত ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত ৬৬০ কোটি ২৪ লাখ টাকা টোল আদায় করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ২২ এপ্রিল সকাল ৬টা থেকে ২৬ এপ্রিল সকাল ৬টা পর্যন্ত ৭৭ হাজার ৫২৯ টি মোটরবাইক সেতুটি অতিক্রম করেছে। এছাড়া এই সময়ে মোটরসাইকেল থেকে টোল আদায় হয়েছে ৭৭ লাখ ৫২ হাজার ৯০০ টাকা।
আরও পড়ুন: বৃহস্পতিবার থেকে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলবে: ওবায়দুল কাদের
বুধবার সচিবালয়ে সেতু বিভাগের কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এছাড়া আগামী সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
এদিকে তিনি গরুর হাট, গরু বোঝাই যানবাহন চলাচল এবং বৃষ্টির মধ্যেও মানুষের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আগাম পদক্ষেপ নিতে বলেন।
এসময়, সেতু বিভাগের সচিব মো. মঞ্জুর হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী মো. ফেরদৌসসহ বিভিন্ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: এবার ঈদুল ফিতরের যাত্রা স্বস্তিদায়ক ছিল: কাদের
এবারের ঈদ যাত্রায় কোনো ভোগান্তি নেই: কাদের
বৃহস্পতিবার থেকে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলবে: ওবায়দুল কাদের
সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) সকাল ৬টা থেকে পদ্মা সেতু দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পরীক্ষামূলকভাবে এ সুযোগ দেওয়া হয়েছে। সার্ভিস লেন ব্যবহার করে মোটরসাইকেলে পদ্মা সেতু দিয়ে চলাচল করা যাবে। তবে সার্ভিস লেন ছেড়ে সেতুর মূল লেনে প্রবেশ করা যাবে না।
আরও পড়ুন: দেশে অরাজকতা সৃষ্টির দিকে এগোচ্ছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের
মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) গণভবনে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এসব কথা জানান।
মোটরসাইকেলকে গতিসীমা মেনে পদ্মা সেতু পার হতে হবে জানিয়ে কাদের বলেন, মোটর সাইকেলের সর্বোচ্চ গতি হবে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার।
শৃঙ্খলা না মানলে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলার সুযোগ বাতিল করা হবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, শৃঙ্খলা নষ্ট করলে এ সুযোগ বাতিল করা হবে। আশা করি আপনারা সুযোগটি নষ্ট করবেন না।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে হেয় করতে প্রথম আলো ও বিএনপি একে অপরের পরিপূরক: ওবায়দুল কাদের
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের
পদ্মা সেতু থেকে মার্চ পর্যন্ত টোল আদায় ৬০৩.৭৬ কোটি টাকা: কাদের
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জাতীয় সংসদে বলেছেন, ২০২২ সালের ২৫ জুন উদ্বোধনের পর থেকে মার্চ পর্যন্ত পদ্মা সেতু থেকে ৬০৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকার টোল আদায় করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ঢাকা-২০ আসন থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য বেনজীর আহমেদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন বঙ্গবন্ধু সেতু চালুর পর এ বছরের মার্চ পর্যন্ত টোল বাবদ আদায় হয়েছে সাত হাজার ৬৯৭ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
নোয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনসহ (বিআরটিসি) বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানির প্রায় ছয় হাজার বাস ঢাকা শহরে চলাচল করে।
আরও পড়ুন: সরকারকে দেওয়া ৩১৬.৯১ কোটি টাকা দিয়ে শুরু হচ্ছে পদ্মা সেতুর ঋণ পরিশোধ
তিনি আরও বলেন যে বিআরটিসির বেশ কয়েকটি রুটে ই-টিকিট ব্যবস্থা চালু রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির তত্ত্বাবধানে ৯৭টি বেসরকারি পরিবহন কোম্পানির মধ্যে ৬৯টি কোম্পানির তিন হাজার ৩০০টি বাসে ই-টিকিটিং চালু করা হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের সংসদে বলেন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এসব কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছে। শিগগিরই বাকি কোম্পানিগুলোর বাসে ই-টিকিটিং ব্যবস্থা চালু করা হবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বর্তমানে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে কোনো গবেষণা কর্মসূচি নেই।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্ব টেবিলে অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শুরু
সরকারকে দেওয়া ৩১৬.৯১ কোটি টাকা দিয়ে শুরু হচ্ছে পদ্মা সেতুর ঋণ পরিশোধ
প্রথম দুই কিস্তিতে সরকারকে দেওয়া ৩১৬ কোটি ৯১ লাখ টাকা দিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য নেওয়া ঋণ পরিশোধ শুরু হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঋণের প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তির ৩১৬ কোটি ৯০ লাখ ৯৭ হাজার ৪৯ টাকার চেক গ্রহণ করেন।
বুধবার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই চেক হস্তান্তর করেন।
অর্থ বিভাগ ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে স্বল্প সুদে এই ঋণ নেওয়া হয়।
২০২২ সালের ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী পদ্মা নদীর ওপর দেশের সর্ববৃহৎ ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শুরু
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুটি দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলাকে রাজধানীর সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত করবে এবং এটি জিডিপি প্রবৃদ্ধি এক দশমিক ২৩ শতাংশ ত্বরান্বিত করবে এবং দারিদ্র্য বিমোচনের মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মোট বরাদ্দ ছিল ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। তবে মূল সেতুর জন্য বরাদ্দ ছিল ১২ হাজার ১৩৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা (৪০০ কিলোভোল্ট বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ও গ্যাস লাইন স্থাপনের জন্য এক হাজার কোটি টাকাসহ)।
এ ছাড়া নদী প্রশিক্ষণ কাজের জন্য ৯ হাজার ৪০০ কোটি টাকা, অ্যাপ্রোচ রোড (দুটি টোল প্লাজাসহ থানা ও তিনটি সার্ভিস এলাকার জন্য দুটি ভবন নির্মাণ), বাস্তুচ্যুতদের পুনর্বাসনে (প্রকল্পের কারণে সৃষ্ট) এক হাজার ৫১৫ কোটি টাকা এবং ভূমি অধিগ্রহণে দুই হাজার ৬৯৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
পদ্মা সেতু ১০০ বছরের বেশি স্থায়ী হবে বলে আশা করা হলেও আগামী ৩৫ বছরের মধ্যে এর নির্মাণ ব্যয় পুনরুদ্ধার করা হবে।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু এক্সপ্রেসওয়ের গতি নিয়ন্ত্রণে বিশেষ অভিযান
পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শুরু
দেশের দীর্ঘতম রেল-সড়ক সেতু উদ্বোধনের ১০ মাস পর পদ্মা সেতুতে প্রথমবার ট্রেন চলল। মঙ্গলবার পাঁচটি যাত্রীবাহী কোচ নিয়ে পরীক্ষামূলক ট্রেনটি ভাঙ্গা স্টেশন থেকে দুপুর ১টা ২১ মিনিটে ছেড়ে যায় এবং ৪২ দশমিক ২০ কিলোমিটার রেলপথ পাড়ি দিয়ে বিকাল ৩টা ১৮ মিনিটে মাওয়া স্টেশনে থামে।
রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন ভাঙ্গা স্টেশনে ট্রেনটির ট্রায়াল রানের উদ্বোধন করেন।
নিরাপত্তার কারণে প্রথম ট্রায়াল রানের দিন ট্রেনটি স্বাভাবিক গতির চেয়ে ধীর গতিতে যাত্রা করে।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু চালুর পর খুলনায় ট্রেনের যাত্রী অর্ধেক
এছাড়া রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, চিফ হুইপ নূর-ই আলম চৌধুরী লিটন, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, স্থানীয় সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরী, আবদুস সোবহান গোলাপ ও ইকবাল হোসেন অপুসহ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং প্রকল্প পরিচালক ড. পদ্মা রেল সেতু নির্মাণ প্রকল্পে বেশ কিছু সাংবাদিক ও স্থানীয় লোকজন ট্রেনে যাতায়াত করেন।
পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ভাঙ্গা ও নড়াইল হয়ে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার রেলপথটি পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের অধীনে নির্মিত হচ্ছে।
২০২৪ সালের জুন মাসে এটি চালু হওয়ার কথা রয়েছে।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা এবং প্রকল্পের সার্বিক ভৌত অগ্রগতি ৭৫ শতাংশ।
পদ্মা সেতু এক্সপ্রেসওয়ের গতি নিয়ন্ত্রণে বিশেষ অভিযান
পদ্মা সেতু এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে বিশেষ অভিযান চালাচ্ছে শিবচর হাইওয়ে পুলিশ।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু নাঈম মো. মোফাজ্জল হক জানান, পদ্মা সেতু এক্সপ্রেসওয়েতে গতিসীমা অমান্য করায় গত তিন দিনে ৩৭৮টি যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে হাইওয়ে পুলিশ।
বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত গতিসীমা অমান্য করায় ৩০টি যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এর আগে মঙ্গলবার ১৫৪টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
এদিকে শিবচর হাইওয়ে পুলিশ জানায়, গত ২৭ মার্চ ১৯৪টি মামলা হয়েছে। হাইওয়ে পুলিশের তিনটি দল এক্সপ্রেসওয়েতে গতিসীমা নিয়ন্ত্রণে একসঙ্গে কাজ করছে।
এর আগে গত ১৯ মার্চ মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় খুলনা থেকে ঢাকাগামী ইমাদ পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে ১৯ জন নিহত ও ২০ জন আহত হন। এরপর থেকে এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু: বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জীবন ও অবস্থার পরিবর্তন
পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে করা রিট খারিজ
৭৩ বছর পর ট্রেন যাচ্ছে মোংলা সমুদ্র বন্দরে
পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর দ্রুত এগিয়ে চলেছে দক্ষিণাঞ্চলের অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ। এবার প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ৭৩ বছর পর রেল যোগাযোগে যুক্ত হবে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলা।
এরইমধ্যে খুলনা-মোংলা রেলপথের কাজ ৯৬ শতাংশ শেষ হয়েছে। চলতি বছরের জুনে বাকি কাজ শেষ হওয়ার কথা।
জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই রেলপথের উদ্বোধন করবেন বলে আশা করছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
১৯৫০ সালের ১লা ডিসেম্বর মোংলা বন্দর প্রতিষ্ঠিত হয়। মোংলা বন্দর দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত। এটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে সেলফি তোলার সময় ট্রেন থেকে পড়ে যুবকের মৃত্যু
খুলনা শহর থেকে ৪৮ কিলোমিটার দক্ষিণে পশুর নদী ও মোংলা নদীর সংযোগস্থলে এই বন্দরের অবস্থান।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পণ্য ও পর্যটন পরিবহনে মোংলা বন্দরকে রেলসেবার আওতায় আনা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে নির্মাণ করা হচ্ছে খুলনা থেকে মোংলা পর্যন্ত ৬৪ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার রেলপথ।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা আরও জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে রেলপথের ৯৬ শতাংশ কাজ। চলতি বছরের জুনে পুরো কাজ শেষ হবে।
বন্দরের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, রেলসেবা চালু হলে ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারিত হবে। রেলপথ না থাকায় এতদিন বন্দরের বড় বড় কন্টেইনার পরিবহনে সমস্যা হতো।
এছাড়া সুন্দরবনে পর্যটক পরিবহন সহজ হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন ঘটবে।
মোংলা বন্দরের ব্যবসায়ী এইচ এম দুলাল, মশিউর রহমান ও ইকবাল হোসেন জানান, মোংলা দেশের অন্যতম সমুদ্রবন্দর হলেও এখানে এতদিন রেল সংযোগ ছিল না। ফলে বন্দরটিতে অন্য দেশের বড় মালবাহী জাহাজ ভিড়তে আগ্রহ দেখাচ্ছিল না। বরং বড় বড় জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে আসছিল। এতে মোংলা বন্দরের ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল।
তারা আরও জানান, মোংলা বন্দরকে রেলসেবার আওতায় আনতে ইতোপূর্বে একাধিক পরিকল্পনা নেয়া হলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। বর্তমানে দেশের আর্থিক সমৃদ্ধির কথা বিবেচনা করে ভারত, নেপাল ও ভুটানসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক যোগাযোগ সম্প্রসারণে বন্দরকে রেলসেবার আওতায় আনা হচ্ছে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং এই অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় গতি আসবে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্পটি ২০১০ সালের ২১শে ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পায়। প্রকল্পটি তিনটি ভাগে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
এরমধ্যে:
প্যাকেজ ১-রেললাইন নির্মাণ,
প্যাকেজ ২-রূপসা নদীর ওপর রেলসেতু,
প্যাকেজ ৩-টেলিযোগাযোগ ও সিগন্যালিং সিস্টেম।
আরও পড়ুন: যশোরে শিক্ষিকার নাক ফাটানো সেই ট্রেনপরিচালক বরখাস্ত
এসব প্রকল্পের আওতায় মূল লাইনসহ রেলওয়ে ট্র্যাকের দৈর্ঘ্য ৮৬ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার।
তার মধ্যে ৬৪ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ। আর রূপসা নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়েছে পাঁচ দশমিক ১৩ কিলোমিটার রেলসেতু।
ইতোমধ্যে ওই সেতুর কাজ প্রায় শতভাগ শেষ হয়েছে। এছাড়া ৩১টি ছোট সেতুর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আর ১০৭টি কালভার্টের মধ্যে ১০৫টির কাজ শেষ হয়েছে। ৯টি ভিইউপি’র নির্মাণকাজ এবং ২৯ এলসি গেটের মধ্যে ২৬টির কাজ শেষ হয়েছে।
সাতটি স্টেশন বিল্ডিংয়ের মধ্যে ফুলতলা, আড়ংঘাটা ও মোহাম্মদ নগরের কাজও শেষ হয়েছে। বাকি পাঁচ স্টেশনের মধ্যে কাটাখালীর ৮০ শতাংশ, চুলকাঠির সাত শতাংশ, ভাগার ৭২ শতাংশ, দিগরাজের ৯৮ শতাংশ ও মোংলা স্টেশন নির্মাণের কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
কাজের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্পের পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান বলেন, খুলনা থেকে মোংলা পর্যন্ত ৬৪ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯৬ শতাংশ শেষ হয়েছে। গত কয়েক মাসে আরও অগ্রগতি হয়েছে। ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে পুরো রেলপথ নির্মাণের কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি।
এছাড়া জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই রেলপথের উদ্বোধন করবেন।
তিনি আরও বলেন, প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে চার হাজার ২৬০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এরমধ্যে ভারতীয় লোন রয়েছে দুই হাজার ৯৪৮ কোটি এক লাখ ৮৪ হাজার টাকা। বাকি এক হাজার ৩১২ কোটি ৮৬ লাখ ৭৬ হাজার টাকা সরকারি ফান্ড থেকে ব্যয় হবে।
এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে দক্ষিণের জেলাগুলোর ব্যবসা-বাণিজ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন ঘটবে বলে জানালেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী।
তিনি বলেন, মোংলা বন্দর প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর বন্দরের সঙ্গে রেল যোগাযোগের ব্যবস্থা ছিল না। এখন খুলনা-মোংলা রেলপথ চালু হলে সড়কপথে পণ্য পরিবহনের চাপ কমবে। সেইসঙ্গে পণ্য পরিবহন ব্যয় ও সময় কমবে।
তিনি আরও বলেন, পাশাপাশি বন্দরের নৌ, সড়ক ও রেলপথের মাল্টিমোডাল যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। ফলে ভারত, নেপাল ও ভুটানের পণ্য পরিবহন সহজ হবে। ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে। সেই সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থায় গতি আসবে।
আরও পড়ুন: ঈদ যাত্রায় ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু ৭ এপ্রিল
পদ্মা সেতু: বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জীবন ও অবস্থার পরিবর্তন
ভ্যানচালক সাইফুল এখন পদ্মা সেতুর কাছে ‘ফুচকা’ বিক্রি করেন। তিনি এখন আগের তুলনায় বেশি উপার্জন করেন। ২০২২ সালের জুনে পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে স্থানীয় পর্যটনে যে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে, তা তার জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে।
তিনি বলেন, ‘আগে ভ্যান চালাতাম। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের তারিখ ধার্য হওয়ার পর থেকেই ভ্যান চালানো বাদ দিয়েছি। এখন ঘুরে ঘুরে ফুচকা বিক্রি করি। আগের চেয়ে রোজগারও ভালো হচ্ছে।’
সাইফুলের মতো অনেক দিনমজুর এই এলাকার ইতিবাচক পরিবর্তনের সুবিধা পাচ্ছেন।
উন্নত যোগাযোগের সুবিধার কারণে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান দেখতে পর্যটকদের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি, শুধুমাত্র পদ্মা সেতু দেখতেও বিপুল সংখ্যক মানুষ এখানে ঘুরতে আসছেন।
সেতুর কাছে অনেক হোটেল, রেস্তোরাঁ, রিসোর্ট ও পার্ক তৈরি করা হয়েছে। বেশি রোজগারের আশায় অনেকেই তাই নিজেদের আগের পেশা পরিবর্তন করেছেন।
পদ্মা সেতু সংলগ্ন নাওডোবা এলাকায় গড়ে উঠেছে ‘ফুড এক্সপ্রেস’ নামে একটি রেস্তোরাঁ।
রেস্তোরাঁর স্বত্বাধিকারী মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, আমরাই প্রথম পদ্মা সেতু এলাকায় রেস্তোরাঁ দিয়েছি। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ আসছে পদ্মা সেতু দেখতে। পদ্মা সেতু দেখা শেষে ভ্রমণপিপাসু মানুষেরা আমার রেস্টুরেন্টে আসছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘দূর-দূরান্ত থেকে সেতু দেখতে আসা মানুষের রাতে থাকার জন্য এখানে আবাসিক হোটেল নির্মাণের কাজও চলমান রয়েছে।’
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুর সুবাদে প্রথমবার গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানির সাক্ষী হলো মোংলা বন্দর
পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে করা রিট খারিজ
পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলের নির্দেশনা চেয়ে করা রিটটি উত্থাপিত হয়নি (নট প্রেস রিজেক্ট) মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
রবিবার আবু হানিফ হৃদয় নামের যাত্রাবাড়ীর এক বাসিন্দার করা রিটটি বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ নট প্রেস রিজেক্ট আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইয়ারুল ইসলাম। আদেশের বিষয়টি এই আইনজীবী নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: পরীক্ষামূলক ভাবে পদ্মা সেতু দিয়ে রেল চলাচল শুরু
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ জুন সেতু উদ্বোধন করার পরদিন ২৬ জুন যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। তবে ২৭ জুন ভোর ৬টা থেকে পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়।
গত ১২ জানুয়ারি ওই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়। রিটে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। রিটে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয় বলেও জানা গেছে।
আরও পড়ুন: প্রথমবারের মতো পদ্মা সেতুতে রাষ্ট্রপতি
নিউইয়র্কে পদ্মা সেতুর আলোকচিত্র প্রদর্শনী পরিদর্শন প্রধানমন্ত্রীর
চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস হয়েছে রেলের ১৫টি বগি
চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস হয়েছে পদ্মা সেতুর জন্য চীন থেকে আনা রেলের ১৫টি বগি ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি। বন্দরের ১২ নম্বর জেটিতে রবিবার এ সকল বগিগুলোর খালাস কার্যক্রম চলে।
আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আরও ৮৫টি বগি ধারাবাহিকভাবে আসবে বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, রবিবার (১১ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খালাস করা হয় সাতটি। এর আগে শনিবার খালাস হয় আটটি ওয়াগন।
জাহাজ থেকে এসব ওয়াগন জেটিতে রেল ট্র্যাকে নামানো হয়। এরপর ইঞ্জিন লাগিয়ে বন্দর থেকে খালাস করা হয়।
সূত্রে জানা গেছে, পানামার পতাকাবাহী জাহাজ ‘টয়ো ওয়ার্ল্ড’ দু’দিন আগে চীন থেকে ১৫টি বগি নিয়ে প্রথম চালান চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। শনিবার থেকে শুরু হয় এসব পণ্য খালাস কার্যক্রম।
ক্রেনের সহায়তায় বগিগুলো জেটিতে নামানোর পর বিশেষ ওয়াগনে করে সিজিপিওয়াই ইয়ার্ডে নেয়া হচ্ছে।
সেখান থেকে যন্ত্রপাতি ফিটিংয়ের জন্য পাঠানো হবে ঢাকার সৈয়দপুর রেল কারখানায়।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, জাহাজ ‘টয়ো ওয়ার্ল্ড’ নামে জাহাজে করে চীন থেকে আনা ১৫টি বগি চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। খালাসের কাজও শেষ হয়েছে।
আরও পড়ুন: টঙ্গীতে মালবাহী ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত