বাণিজ্য
প্রতিযোগী দেশগুলোর সমান ২০ শতাংশ শুল্কহার অর্জন করেছে বাংলাদেশ
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার পর আরোপিত শুল্কহার ১৫ শতাংশ কমিয়ে ২০ শতাংশ নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় দফার শুল্ক আলোচনা শেষ হওয়ার পর হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এই হার যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক বাজারে বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশ, যেমন: শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়ার ১৯ থেকে ২০ শতাংশের সমতুল্য। এতে করে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান অপরিবর্তিতই থাকছে বলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ সমঝোতায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ায় ভারতের জন্য ২৫ শতাংশ শুল্কহার নির্ধারিত হয়েছে।
এর আগে গত এপ্রিলে বাংলাদেশের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। পরে তা তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। সে সময় শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিভিন্ন দেশকে আলোচনার সুযোগ দেয় ওয়াশিংটন।
ওই মেয়াদ শেষে ২ শতাংশ কমিয়ে ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পাল্টা শুল্ক নিয়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) সঙ্গে টানা তিন দিন আলোচনা করে। এরপরই নতুন শুল্ক নির্ধারিত হলো।
যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে গড় শুল্কহার ১৫ শতাংশ। এবার নতুন ২০ শতাংশসহ মোট শুল্ক দাঁড়াল ৩৫ শতাংশে।
আরও পড়ুন: শুল্ক আলোচনা: বৃহস্পতিবারের বৈঠকেও অগ্রগতির দেখা নেই
শুল্ক আলোচনায় বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন। ১৫ শতাংশ শুল্কহার কমানোর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানান, ‘বাংলাদেশের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় আমরা প্রতিযোগিতামূলক অবস্থায় থাকব। যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে আমরা ২০ শতাংশের নিচে প্রত্যাশা করেছিলাম।’
ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের পক্ষে অন্যতম প্রধান আলোচক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান বলেন, ‘আজ আমরা সম্ভাব্য ৩৫ শতাংশ শুল্কারোপ এড়াতে পেরেছি। এটি আমাদের পোশাক শিল্প এবং পোশাক খাতের ওপর নির্ভরশীল লাখো মানুষের জন্য স্বস্তির খবর। সেই সঙ্গে আমরা বৈশ্বিক প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানও ধরে রেখেছি এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভোক্তা বাজারে প্রবেশাধিকার বাড়ানোর নতুন সুযোগ তৈরি করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সতর্কতার সঙ্গে আলোচনা করেছি যাতে আমাদের প্রতিশ্রুতিগুলো জাতীয় স্বার্থ ও সক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার ছিল দেশের তৈরি পোশাক শিল্পকে রক্ষা করা। এর পাশাপাশি আমরা যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্য আমদানির প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, যা আমাদের খাদ্য নিরাপত্তার লক্ষ্য পূরণে সহায়ক হবে। পাশাপাশি এটি মার্কিন কৃষিপ্রধান অঙ্গরাজ্যগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে সাহায্য করবে।’
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ (স্থানীয় সময় ৩১ জুলাই) এক ঘোষণায় ৭০টি দেশের ওপর সর্বোচ্চ ৪১ শতাংশ পর্যন্ত নতুন শুল্কহার প্রকাশ করেন। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তির চূড়ান্ত সময়সীমা, অর্থাৎ ১ আগস্টের ঠিক আগে এই ঘোষণাটি দেওয়া হলো।
এই চুক্তিগুলো কেবল শুল্ক সমন্বয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতার জন্য দায়ী বলে বিবেচিত দেশীয় নীতির সংস্কারও এর অন্তর্ভুক্ত। এ ছাড়া অর্থনৈতিক ও জাতীয় নিরাপত্তা-সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোও এ সময় বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।
আলোচনার অংশ হিসেবে দেশগুলোকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্য কেনার ব্যাপারে স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দিতে বলা হয়েছিল যাতে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানো যায়। চুক্তিগুলোতে বিষয়বস্তু বিস্তৃত হওয়ায় আলোচনা প্রক্রিয়া ছিল জটিল ও দীর্ঘ।
শুক্রবার (১ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, এই শুল্কছাড় কেবল যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানিপণ্যের ওপর শুল্ক কমানোর সঙ্গে নয়, বরং অ-শুল্ক বাধা, বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা এবং নিরাপত্তা-সংক্রান্ত মার্কিন উদ্বেগের প্রতি একটি দেশের সদিচ্ছাও এর সঙ্গে জড়িত ছিল।
আরও পড়ুন: কানাডায় ৩৫ শতাংশ শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত ট্রাম্পের, অনিশ্চয়তায় ইউএসএমসিএ চুক্তি
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে স্পষ্ট করা হয়, প্রতিটি দেশের জন্য নির্ধারিত শুল্কহার নির্ভর করবে এসব ক্ষেত্রে তাদের প্রতিশ্রুতির গভীরতার ওপর।
যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিকারক বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশগুলোর মধ্যে ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্কহার নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া শ্রীলংকার ওপর ২০ শতাংশ, ভিয়েতনামের ওপর ২০ শতাংশ, কম্বোডিয়ার ওপর ১৯ শতাংশ ও পাকিস্তানের ওপর ১৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে দেশটি।
১২৬ দিন আগে
বাণিজ্য লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসতে হবে: উপদেষ্টা
জনবহুল দেশ বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্য কাঙ্ক্ষিত বাণিজ্য লক্ষ্য অর্জনে দুদেশের ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ-পাকিস্তানের বিজনেস ফোরাম দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ক শক্তিশালী ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
সোমবার (২৮ এপ্রিল) ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাংলাদেশ-পাকিস্তান বিজনেস ফোরামের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘পাকিস্তান ও বাংলাদেশ জনবহুল দেশ হওয়া সত্ত্বেও দুদেশের মধ্যে যে বাণিজ্য—তা প্রত্যাশিত নয়। কাঙ্ক্ষিত বাণিজ্য লক্ষ্য অর্জনে দুদেশের ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসতে হবে।’
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘দুদেশের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও বাণিজ্য সংস্থাগুলোর মধ্যে সংযোগ স্থাপন, বাণিজ্য প্রসার এবং বিনিয়োগের সুযোগ অন্বেষণের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে এটি কাজ করবে।’
এসময় তিনি দুদেশের জনগণের মধ্যে সংযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
আরও পড়ুন: উচ্চ আদালতে আমাদের হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই: আইন উপদেষ্টা
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ-পাকিস্তান এই দুদেশের মধ্যে শুল্ক ও অশুল্ক বাধা নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি সেগুলো কিভাবে যৌক্তিক করা যায় সেটি আমাদের বের করতে হবে।’
দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য জোরদার করতে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সঙ্গে পাকিস্তান রেডিমেড গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন (পিআরজিএমইএ) সমঝোতা স্মারক সই হয়।
২২১ দিন আগে
ফরিদপুরে পেঁয়াজ বীজের বাম্পার ফলন, ৫০০ কোটি টাকার বাণিজ্যের সম্ভাবনা
দীর্ঘ সময় ধরে পেঁয়াজ চাষাবাদের সুনাম রয়েছে ফরিদপুর জেলার। পেঁয়াজ উৎপাদন করে থাকে এ জেলার চাষিরা। পাটের পরে ধান ও পেঁয়াজ আবাদে চাষিদের আগ্রহ রয়েছে। কারণ এ জেলার মাটি পাট পেঁয়াজ ও ধান উৎপাদনে উৎকৃষ্ট। পেঁয়াজ উৎপাদনে দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলার স্থানটি দখলে রেখেছে ফরিদপুর।
গত এক যুগ ধরে পেঁয়াজ বীজের বাম্পার ফলন হচ্ছে ফরিদপুরে। দেশের সরকারি পেয়াঁজ বীজের চাহিদার মোট ৫০ শতাংশ বেশি বীজ সরবরাহ করে ফরিদপুরের চাষীরা। আর এই কৃষি পণ্যটি উৎপাদন করে অর্থনৈতিকভাবে জীবন মানের উন্নয়ন ঘটিয়েছে তারা ( জেলার পেঁয়াজ বীজ চাষিরা)।
এজন্যই এই বীজকে 'কালো সোনা' বলে এ অঞ্চলের মানুষ। সেই বীজ (কালো সোনা) উৎপাদনে ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে এখন চাষিরা। চলতি মৌসুমে অন্তত ৫০০ কোটি টাকা বাণিজ্যের আশা কৃষি বিভাগের।
জেলার সদর, বোয়ালমারী, ভাঙ্গা, মধুখালী ও সদরপুর উপজেলার মাঠগুলোতে যেদিকে চোখ যায়, সেদিকেই শুধু, সাদা কদম ফুলের সমারোহ।
সরজমিনে ফরিদপুর জেলার সদর উপজেলার অম্বিকাপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠজুড়ে পেঁয়াজের সাদা ফুল দেখা মেলে। এই খেতগুলোতে এখন কৃষক কৃষানিরা পরিবারেরর সদস্য ও শ্রমিক নিয়ে সাদা কদমে হাত দিয়ে পরাগায়নের কাজ করছেন। কোথাও আবার আগাছা পরিষ্কার ও কদম পচা রোথে ঔষধ স্প্রে করছে।
এ মৌসুমে পেঁয়াজের ভালো উৎপাদনের পর ফরিদপুরে বাম্পার ফলন হয়েছে পেঁয়াজ বীজ আবাদেও।
অম্বিকাপুরের কৃষানী শাহেদা বেগম ও লাভলী পারভিন জানান কিভাবে কালো সোনা খ্যাত পেয়াঁজ বীজ উৎপাদন হয়, ছোট শিশুর মতো যত্ন করতে হয় এই বীজ উৎপাদনে। নভেম্বর-ডিসেম্বরে আবাদ শুরু হয়ে ফলন উঠবে এপ্রিল-মে’তে। এরপর এক বছর বীজ সংরক্ষণ করে পরবর্তী বছরে করা হয় আবাদ ও বিক্রি। তবে চলতি মৌসুমে মৌমাছি না থাকায় হাত দিয়েই পরাগায়ন করতে হচ্ছে।
পেঁয়াজের এই মৌসুমে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পেঁয়াজ বীজের ক্ষেতে কাজ করতে আসে শ্রমিকরা। তারা জানায় বীজের খেতে কাজ করেই চলে তাদের সংসার ও সন্তানদের পড়ালেখা।
পাবনা থেকে ফরিদপুরে পেয়াঁজ বীজ খেতে কাজ করতে আসা আনোয়ার, কুষ্টিয়া থেকে আসা আব্দুর রহমান প্রামানিক, রহিম মোল্লা, শইব্রাহিম শেখ'র মতো বেশ কয়েজন শ্রমিক জানান, এ মৌসুমে বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রমিকরা পেঁয়াজ চাষাবাদের কাজে যুক্ত হতে ফরিদপুর অঞ্চলে গত এক যুগের বেশি সময় ধরে আসছে।
তারা জানান, আমরা দিনরাত পরিশ্রম করি পেঁয়াজের বীজ ঘরে তোলা পর্যন্ত। ভালো দানা উৎপাদন করতে পারলে মালিকের যেমন লাভ হয়, তেমনি আমাদেরও আর্থিক পরিবর্তন আসে জীবনমানের।
আরও পড়ুন: পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল করতে দেশে উৎপাদন বাড়াতে হবে: ভোক্তা অধিকারের মহাপরিচালক
এদিকে মাঠের পর মাঠ বীজের সাদা ফুলের সৌর্ন্দয্য দেখতে প্রতিদিনই দর্শনার্থীরা আসছে মাঠগুলোতে। নানা অঙ্গ ভঙ্গিতে তুলছেন সেলফি। আবার দলবেধে এসে করছেন সুটিং।
কৃষি বিভাগ জানায়, দেশের চাহিদার অর্ধেক বীজ উৎপাদন হয়ে থাকে এ জেলায়। এবছর পেঁয়াজ বীজের আবাদ হয়েছে ১ হাজার ৮৫৪ হেক্টর জমিতে, যা থেকে উৎপাদিত বীজের বাজার মূল্য প্রায় ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আনোয়ার হোসেন বলেন, গুণগত মান ভালো হওয়ায় ফরিদপুরের বীজেরে চাহিদা সর্বত্র রয়েছে। প্রকার ভেদে এর বাজার মূল্য দুই লাখ থেকে পাঁচ লাখ পর্যন্ত ওঠে। এই কৃষি পণ্যটির বাজারমূল্য অধিক হওয়ায় ‘কালো সোনা’ বলে অভিহিত করে।
সম্প্রতি কয়েক বছর হলো পেঁয়াজ বীজ খেতে মৌমাছির উপস্থিতি কমে গেছে। এ কারণে পরাগায়নের সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আমরা চাষিদের ফুলের উপর হাত দিয়ে পরাগায়ন কিভাবে করতে সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. শাহাদুজ্জামান বলেন, এবছর আমাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে বীজের আবাদ হয়েছে। দিন দিন পেয়াঁজ বীজ আবাদের চাষির সংখ্যা বাড়ছে।
তিনি জানান, এবারের আবহাওয়া ভালো থাকায় ১ হাজার ৮৫৪ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ বীজের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৬৪ টন। যার বাজার মূল্য আনুমানিক প্রায় ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে পেঁয়াজের চাষ বেড়ে দ্বিগুণ
২৭২ দিন আগে
যশোরে অবৈধ ইটভাটার রমরমা বাণিজ্য
অবৈধ ইটভাটায় সয়লাব হয়ে গেছে যশোর। জেলায় মোট ১৪৪টি ইটভাটা থাকলেও সেগুলোর ১১৪টিই অবৈধ বলে জানিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, পরিবেশ আইনের ব্যত্যয় ও ডিসির লাইসেন্স না থাকায় ওই ভাটাগুলোর কার্যক্রম পরিচালনার বৈধতা নেই। এমনকি জেলার কোনো ভাটাই সব শর্ত পূরণ করেনি।
পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে বেশিরভাগ ভাটা। জিগজ্যাগ পদ্ধতির মাত্র ৩০টি ইটভাটা এখন পর্যন্ত মোটামুটি আইনসিদ্ধভাবে চলছে বলে দাবি পরিবেশ অধিদপ্তর যশোরের।
যশোরের বেশিরভাগ ভাটার বৈধতা না থাকায় বিষয়টি এর আগে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকেও উঠে আসে। তবে সম্প্রতি অবৈধ ভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
যশোর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এমদাদুল হক জানিয়েছেন, গত এক মাসে ১৮টি ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। শিগগিরই অবৈধ ভাটাগুলো উচ্ছেদে কাজ শুরু হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: শেরপুরে ৮ ইটভাটাকে ৪৭ লাখ টাকা জরিমানা
২০১৩ সালের ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইনে সংশোধনী এনে ইটভাটার জন্য লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করা হয়। নির্দিষ্ট এলাকায় ইটভাটার জায়গা, ভাটার দূরত্ব ও সংখ্যা নির্ধারণের নির্দেশনাও সে সময় দেওয়া হয়। এমনকি, লাইসেন্সবিহীন ইটভাটা চালালে দুই বছরের জেল ও ২০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান সংযোজন করে ‘ইট প্রস্তুত ও ভাটা (নিয়ন্ত্রণ) সংশোধন আইন, ২০১৯’ বিল সংসদে পাস হয়।
ধারা-৪ এ সংশোধন এনে প্রতিস্থাপন করে বলা হয়, চলমান যেকোনো আইনে যা কিছুই থাক না কেন, ইটভাটা যে জেলায় অবস্থিত সেই জেলার জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে লাইসেন্স গ্রহণ না করলে কোনো ব্যক্তি ইট প্রস্তুত করতে পারবে না। কিন্তু যশোরের প্রেক্ষাপটে এ সবের ব্যত্যয় ঘটে আসছে ২০১৩ তো পরের কথা, ২০১৯ সালের সংশোধনী আইনের পর থেকেও।
পবিবেশ আইন অনুযায়ী, এক কিলোমিটারের মধ্যে আবাসিক এলাকা, সরকারি বা ব্যক্তি মালিকানাধীন বন, বাগান জলাভূমি, কৃষি জমি, বিশেষ কোনো স্থাপনা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও ক্লিনিক, গবেষণা প্রতিষ্ঠান বা অনুরূপ কোন স্থান বা প্রতিষ্ঠান থেকে কমপক্ষে ১ কিলোমিটার বা ১ হাজার মিটার দূরত্বে ভাটা স্থাপন করতে হবে। একইসঙ্গে ভাটাগুলো এখন জিগজ্যাগ পদ্ধতির হতে হবে। ১২০ ফিট চিমনীর সনতনি ভাটা এখন আর আইনসিদ্ধ নয়, কিন্তু যশোর জেলার অধিকাংশ ভাটার ক্ষেত্রে এর ব্যত্যয় ঘটে চলেছে।
আইনের ব্যত্যয় ঘটলেও অনেকে এর আগে ছাড়পত্র সংগ্রহ করেছেন। যদিও বিধি অনুযায়ী, পরিবেশ আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকে নিষিদ্ধ এলাকার সীমানার ভেতরে ইটভাটা স্থাপনের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ কোনোপ্রকার অনুমতি বা ছাড়পত্র বা লাইসেন্স দিতে পারবে না। অথচ এর আগে অনেকেই নানা বাঁকা পথে হাসিল করেছেন ছাড়পত্র।
জেলায় এমন ভাটাও রয়েছে, যেখানে এক কিলোমিটার তো দুরের কথা, ২০ গজের মধ্যেই রয়েছে বসতবাড়ি, ১০০ গজের মধ্যে ঘনবসতি গ্রাম রয়েছে। ভাটা নির্মাণের ক্ষেত্রে কোনো শর্তই মানা হয়নি।
আবার সম্পূর্ণ অনিয়মতান্ত্রিকভাবেও চলছে কয়েকটি ইটভাটা। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই, আবাসিক এলাকায় ধানি ও কৃষি জমি নষ্ট করে নির্মাণ করা হয়েছে ইটভাটা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কবরস্থান ও মসজিদ, শতাধিক পরিবারের বসতি গ্রামসহ রয়েছে স্পর্শকাতর অনেক প্রতিষ্ঠান। বিগত সময়ে পরিবেশ আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে ভাটা নির্মাণ করা হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, এক কিলোমিটারের মধ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে—জেলায় এমন ভাটার সংখ্যা রয়েছে ১১০টি। এর অনেকগুলো জিগজ্যাগ হলেও পরিবেশ আইন মানা হয়নি। শর্ত পূরণ না করেই চলছে এসব ভাটার কার্যক্রম। যে কারণে অবৈধ ভাটার তালিকায় পড়েছে সেগুলো। ওই তালিকা থেকে বছর কয়েক আগে ৩৩টি ভাটার ব্যাপারে যশোর পরিবেশ অধিদপ্তর ঢাকা সদর দপ্তরের মনিটরিং ও এনফোর্সমেন্ট শাখায় প্রতিবেদন পাঠিয়েছিল। আইনগত বৈধতা না থাকায় ওই ভাটাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছিল প্রতিবেদনে। তারপরও ভাটাগুলোর অধিকাংশই এখন চলছে বহাল তবিয়তে।
সুত্রের দাবি, ডিসির লাইসেন্স ও পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়াই ভাটাগুলো চলায় সেগুলোর বেশিরভাগের পাশেই রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা; নষ্ট হয়েছে কৃষি জমি; নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে আবাসিক এলাকায়।
পরিবেশ অধিদপ্তর জানিয়েছে, জেলার অবৈধ ১১৪টি ভাটার ওপর সম্প্রতি নজরদারি শুরু করা হয়েছে। ইতোমধ্যে গত ২৭ ডিসেম্বর ও ৮ জানুয়ারি জেলার ১৮টি অবৈধ ভাটার বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে অধিদপ্তর। আইনগতভাবে না হলেও পরিবেশ আইনের ব্যত্যয় ঘটলে একে একে সেগুলো উচ্ছেদ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এছাড়া জেলায় খাতা-কলমে এখন যে ৩০টি বৈধ ভাটা আছে, তাদের ব্যাপারেও নতুন করে খোঁজখবর নেবে অধিদপ্তর।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে ৪ ইটভাটায় ৫ লাখ টাকা জরিমানা
এ ব্যাপারে এমদাদুল হক ইউএনবিকে বলেন, ভাটা-সংক্রান্ত সব অসঙ্গতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে মাঠে নামা হচ্ছে। সব ধরনের দেন-দরবার উপেক্ষা করে জনস্বার্থে এবং এলাকার পরিবেশ সমুন্নত রাখতে অবৈধ সব ভাটা উচ্ছেদে কাজ শুরু হয়েছে। অনেক ভাটার আংশিক ভেঙে দেওয়াও হয়েছে। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে জরিমানা করা হচ্ছে।
তার ভাষ্যে, যশোরে (পরিবেশ নিয়ে) কোনো অনিয়ম মেনে নেওয়া হবে না। আগে কী হয়েছে সেটি বিবেচ্য নয়, এখন সব ভাটাই বিধি অনুযায়ী চালাতে হবে। পরিবেশ আইনের ব্যত্যয় ঘটলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৩১৫ দিন আগে
স্পেনের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে চান ড. ইউনূস
বছরের পর বছর ধরে শোষণের পর দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সহায়তার জন্য বাংলাদেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে স্পেনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বাংলাদেশ থেকে কারিগরি ও অন্যান্য খাতে আরও কর্মী নিয়োগের জন্য স্পেনের প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশে নিযুক্ত স্পেনের রাষ্ট্রদূত গ্যাব্রিয়েল সিস্তিয়াগা বুধবার (৯ অক্টোবর) তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ আহ্বান জানান।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বর্তমানে স্পেনে প্রায় ৬০ হাজার বাংলাদেশি কর্মরত।
স্পেনের রাষ্ট্রদূত জানতে চেয়েছিলেন যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তার সংস্কার উদ্যোগে স্পেন তার অভিজ্ঞতার আলোকে সহায়তা করতে পারে কিনা।
প্রধান উপদেষ্টা এই প্রস্তাবের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে যেসব সংস্কার বাস্তবায়ন করছে তা এগিয়ে নিতে স্পেনের যেকোনো সহযোগিতাকে বাংলাদেশ স্বাগত জানাবে।
আরও পড়ুন: ইতালির ভিসা সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে, আশা উপদেষ্টা তৌহিদের
অধ্যাপক ইউনূস স্বাস্থ্যসেবা খাতে বিনিয়োগ এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ সম্ভাব্য সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো তুলে ধরেন।
প্রধান উপদেষ্টো রাষ্ট্রদূতকে বলেন, ‘স্পেন আমাদের বিভিন্নভাবে সমর্থন দিতে পারে। এখানে আরও বিনিয়োগ আনতে পারে এবং আমাদের পোশাক পণ্যের আমদানি সম্প্রসারণ করতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘পাশাপাশি আমাদের উন্নয়ন খাতে স্পেনের সহায়তা পেলে তা লাভজনক হবে।’
রাষ্ট্রদূত সিস্তিয়াগা স্পেনের প্রেসিডেন্ট পেদ্রো সানচেজের একটি চিঠি ড. ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করেন। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করায় তাকে অভিনন্দন জানান স্পেনের প্রেসিডেন্ট।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, রাষ্ট্রদূত ২০২৫ সালের ৩০ জুন থেকে ৩ জুলাই পর্যন্ত স্পেনে অনুষ্ঠিতব্য উন্নয়নের জন্য অর্থায়ন সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্পেনের রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণপত্র হস্তান্তর করেন।
প্রধান উপদেষ্টা স্পেনের রানী সোফিয়ার কাছে তার শুভেচ্ছা পৌঁছে দিতে রাষ্ট্রদূতের প্রতি আহ্বান জানান এবং তার বাংলাদেশ সফরকালে তার সঙ্গে তার মধুর স্মৃতির কথা স্মরণ করেন।
তিনি তাকে আবারও বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে রাশিয়ার সহযোগিতার প্রশংসা ড. ইউনূসের
৪২২ দিন আগে
বাণিজ্য বহুমুখীকরণে চামড়া শিল্প গুরুত্বপূর্ণ: বাণিজ্য উপদেষ্টা
বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বাণিজ্য বহুমুখীকরণে চামড়া শিল্পের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এই শিল্পের অনেক সম্ভাবনা আছে।
রবিবার (৬ অক্টোবর) অর্থ মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে মত বিনিময় শেষে তিনি একথা বলেন।
আরও পড়ুন: ফ্যাসিস্ট সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতেই ছাত্র জনতার আত্মত্যাগ: প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, চামড়া শিল্পের নানাবিধ সম্ভাবনার পাশাপাশি কিছু সমস্যাও আছে। আমরা তাদের (ব্যাবসায়ী) সঙ্গে আলোচনা করেছি।
তিনি আরও বলেন, তাদের ট্যানারি স্থানান্তর করা হয়েছে সাভারে। ওখানকার পরিবেশ, অর্থায়ন ও বিদেশে রপ্তানির ক্ষেত্রে সার্টিফিকেশন বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মোট কথা আমরা চামড়াজাত দ্রব্য ও ফুটওয়্যার শিল্পের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছি।
চামড়া শিল্পকে সম্পূর্ণ দেশীয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর কাঁচামাল দেশীয়, গার্মেন্টসের জন্য বিদেশ থেকে সুতা আনতে হয়, তুলা আনতে হয়।
তিনি বলেন, চামড়া শিল্পের সঙ্গে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের লিংকআপ রয়েছে। আমরা এটাকে উৎসাহিত করব।
উপস্থিত ছিলেন- শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব জাকিয়া সুলতানা, পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাভিদ সফিউল্লাহ, ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহিন আহমেদ, ফিনিশড লেদার গুডস অ্যাসোসিয়েনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ।
আরও পড়ুন: বেকারত্ব কমিয়ে আনা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান লক্ষ্য: উপদেষ্টা নাহিদ
৪২৫ দিন আগে
দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য ও সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর
দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং সহযোগিতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশেষ করে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
গণভবনে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. নলিনী তাভিসিনের সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়ে জোর দেন শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: জাতীয় অগ্রগতিতে খেলাধুলার ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর
এসময় থাই বিনিয়োগকারীদের তাদের পর্যটন ব্যবসার বিকাশের জন্য কক্সবাজারে একটি বিশেষ জমি বরাদ্দের প্রস্তাব করেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'থাই বিনিয়োগকারীরা যাতে তাদের পর্যটন ব্যবসা বিকশিত করতে পারে সেজন্য কক্সবাজারে একটি পৃথক জমি দিতে পারে বাংলাদেশ।’
সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এম নাঈমুল ইসলাম খান।
থাই ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধি দল নিয়ে চার দিনের সরকারি সফরের অংশ হিসেবে শনিবার ঢাকায় পৌঁছেছেন থাইল্যান্ডের মন্ত্রী ও থাই বাণিজ্য প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ড. নলিনী।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ হলে থাইল্যান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও সহজ হবে। সুনীল অর্থনীতির জন্য দেশের সমুদ্রসীমাকে কাজে লাগানোর ওপরও জোর দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সমুদ্রসীমা প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় আমাদের প্রচুর সুযোগ রয়েছে। থাই বিনিয়োগকারীরা এখানে তাদের দক্ষতা কাজে লাগাতে স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ নিতে পারে।’
এসময় ড. নলিনী বলেন, তারা বাংলাদেশে জ্বালানি, লজিস্টিকস, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, সামুদ্রিক খাদ্য এবং পর্যটন খাতে সম্ভাবনা খুঁজে বের করছেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব বলেন, 'তারা এখানে সক্রিয়ভাবে অংশীদার খুঁজছেন এবং সে লক্ষ্যে তারা কাজ করছেন।’
হালাল খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে আগ্রহ প্রকাশ করে থাই প্রতিনিধিদল জানায়, তাদের হাজার হাজার হালাল খাদ্য পণ্য রয়েছে এবং বৈশ্বিক ও জাতীয় উভয় বাজার ধরতে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতার একটি চমৎকার সুযোগ দেখতে পায়।
নাঈমুল ইসলাম খান বলেন, 'এই খাতে সহযোগিতা করার এবং বৈশ্বিক ও জাতীয় বাজারে যুক্ত হতে বাংলাদেশের জন্য একটি অসাধারণ সুযোগ রয়েছে।’
বৈঠকে আরও ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান ও অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ এম জিয়াউদ্দিন।
আরও পড়ুন: আদালতে সমাধান না হওয়া পর্যন্ত কিছু করার নেই: কোটা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশি পণ্যের নতুন বাজার অনুসন্ধান করতে রপ্তানিকারকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
৫০৯ দিন আগে
বাংলাদেশ ও মরোক্কোর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধি-সংক্রান্ত ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্প্রসারণসংক্রান্ত কূটনৈতিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে একটি ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়।
মরোক্কোয় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে বাংলাদেশ ও মরোক্কোর ব্যবসায়িক নেতাদের মধ্যে এ ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম, ডিসিসিআই প্রেসিডেন্ট আশরাফ আহমেদ, এফবিসিসিআই সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. আমিন হেলালী।
আরও পড়ুন: দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে যুক্তরাষ্ট্রের ‘নীতি সহায়তা’ চায় বাংলাদেশ
স্বাগতিক বক্তব্য রাখেন মরোক্কোর রাবাত-সালেহ-কেনিত্রা অঞ্চলের চেম্বারের প্রেসিডেন্ট হাসান সাকি।
ওয়েবিনারে দুই পক্ষের তরফ থেকে বাংলাদেশ ও মরোক্কোয় ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধাসমূহের উপর আলোকপাত করে দুটি প্রেজেন্টেশন করা হয়। এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে সেক্রেটারি জেনারেল মো. আলমগির বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য-বিনিয়োগের সুযোগ-সংক্রান্ত বিশদ তথ্যাবলী উপস্থাপন করেন।
এ ছাড়াও বাংলাদেশের ব্যবসায়িক সম্প্রদায় থেকে তৈরি পোশাক, পাট, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক শিল্পের প্রতিনিধিরা তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
মরোক্কোয় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হারুন আল রশিদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই ওয়েবিনারে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য-পর্যটন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কতগুলো পদক্ষেপের বিষয় আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এর মধ্যে রয়েছে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক প্রতিনিধি দল বিনিময়, বাণিজ্য মেলার আয়োজন, দুই দেশের ব্যবসায়িক সম্প্রদায়ের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি।
রাষ্ট্রদূত হারুন আল রশিদ বলেন, তার মিশন দুই দেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য নিবেদিতভাবে কাজ করছে। দুই দেশের বাণিজ্য-বিনিয়োগ বৃদ্ধি-সংক্রান্ত দূতাবাসের উদ্যোগসমূহ সফল করার লক্ষ্যে এগিয়ে আসার জন্য তিনি দুই দেশের ব্যাবসায়িক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
ওয়েবিনারটি সফল করার জন্য রাষ্ট্রদূত এফবিসিসিআই ও রাবাত চেম্বারের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ দেন। গৃ
হীত প্রক্রিয়াটি যাতে অব্যাহত থাকে সে ব্যাপারেও তিনি সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
আরও পড়ুন: দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে সম্মত বাংলাদেশ-মেক্সিকো
৫১৮ দিন আগে
বাংলাদেশ-স্পেনের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
পারস্পরিক সহযোগিতা ও সুবিধা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ ও স্পেনের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘আমরা বাংলাদেশ ও স্পেনের মধ্যে বাণিজ্য বাড়াতে চাই।’
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) গণভবনে স্পেনের রাষ্ট্রদূত গাব্রিয়েল মারিয়া সিস্তিয়াগা ওচোয়া দে চিনচেত্রুর সঙ্গে বৈঠককালে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এম নাঈমুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন।
প্রেস সচিব জানান, বর্তমানে স্পেন বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করে জানিয়ে সিমেন্ট খাতে স্প্যানিশ বিনিয়োগের কথাও উল্লেখ করেন স্পেনের রাষ্ট্রদূত।
আরও পড়ুন: দুই দেশের অর্থনীতিতেই অবদান রাখছেন ওমানে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশে স্পেনের বিনিয়োগ আরও বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে রাষ্ট্রদূতকে আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। এসময় তিনি সারা দেশে প্রায় ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য তার সরকারের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্পেনের বিনিয়োগকারীরাও এই অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগ করতে পারে। আমরা স্পেন থেকে আরও বিনিয়োগ দেখতে চাই।’
স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা থেকে উন্নীত হওয়ার পরও বাংলাদেশকে সহায়তা করার জন্য স্পেনের রাষ্ট্রদূতকে এসময় অনুরোধ করেন তিনি।
বৈঠকে জানা গেছে, সেপ্টেম্বরে দুই দেশের মধ্যে একটি অংশীদারত্ব চুক্তির জন্য আলোচনা শুরু হবে।
বর্তমানে ৬০ হাজার বাংলাদেশি স্পেনে বসবাস করছেন। প্রধানমন্ত্রী তথ্যপ্রযুক্তি খাতে আরও বাংলাদেশিকে স্পেনে কর্মসংস্থানের জন্য রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ জানান।
বৈঠকে বাংলাদেশের বাজেটের ভূয়সী প্রশংসা করেন স্পেনের রাষ্ট্রদূত। তিনি শিক্ষা ও সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সরকারের মনোযোগের কথাও উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: ২০৩৫ সালের মধ্যে হাইড্রোজেন থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চায় বাংলাদেশ: সংসদে প্রধানমন্ত্রী
রাষ্ট্রদূত গাব্রিয়েল বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে আপনার আগ্রহ এবং বরাদ্দ আমাদের দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’
আসন্ন দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে আমন্ত্রণের জন্য প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রদূতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ও মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া এসময় উপস্থিত ছিলেন।
৫১৯ দিন আগে
অর্থনৈতিক কূটনীতিতে জোর দিয়ে করেছেন প্রধানমন্ত্রী: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী অর্থনৈতিক কূটনীতিতে জোরারোপ করেছেন জানিয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, ‘তার নির্দেশে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়াতে কাজ করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।’
মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সোমবার (১ জুলাই) দুপুরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) সভায় প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান।
আরও পড়ুন: বোতলজাত পানির দাম বাড়ার কারণ অনুসন্ধান করা হবে: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘রপ্তানির বাজার বহুমুখী করতে কমার্শিয়াল কাউন্সিলরদের বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়াতে আমাদের সক্ষমতাও বাড়াতে হবে।’
বাংলাদেশের ট্রেড নেগোশিয়েশনে সক্ষমতা বাড়াতে ইউএনডিপি, অস্ট্রেলিয়া ও জাপান সহযোগিতা করতে আগ্রহী বলে এসময় জানান বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘এছাড়া ট্যারিফ কমিশনকে আরও সক্ষম করে গড়ে তুলতে বিশ্বব্যাংক আগ্রহ দেখিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের সকলকে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে।’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন নতুন অর্থবছরের প্রথম দিন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী যে ভিশন দিয়েছেন, তা বাস্তবায়নে সকলে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।
এসময় মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা সেলের যুগ্মসচিব শায়লা ইয়াসমিন, টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান, বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম, উপসচিব ফিরোজ আল মামুনসহ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তর প্রধান ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: শহরের নির্ধারিত আয়ের মানুষ খুব বেশি চাপে আছে: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
নিত্যপণ্য আমদানি করতে ভারতের পাশাপাশি মিয়ানমারের সঙ্গেও চুক্তি হচ্ছে: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
৫২২ দিন আগে