বিএনপি
সাংবিধানিক-রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টির প্রচেষ্টা বানচালে ঐক্যের আহ্বান বিএনপির
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবির মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টির যেকোনো প্রচেষ্টা বানচাল করতে জাতীয় ঐক্য জোরদারের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসরদের যেকোনো ষড়যন্ত্র তারা গণতন্ত্রপন্থি সব রাজনৈতিক দল ও সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করবেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করছি, ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদী সরকারের সহযোগীরা দেশে সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন প্রচেষ্টা ও বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে। আমরা মনে করি, বহু প্রাণের বিনিময়ে দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা যে পরিবর্তন করেছি তা পুনরুদ্ধার করতে জাতীয় ঐক্য আরও সুসংহত করতে হবে।’
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি ইস্যুতে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার
এর আগে সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ ও সালাহউদ্দিন আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন নজরুল ইসলাম।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সংস্কারের চলমান প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তারা জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে জনদুর্ভোগের কথাও তারা বলেছেন। ‘এ সমস্যা সমাধানে সরকারকে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছি আমরা।’
নজরুল ইসলাম বলেন, সব রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী সংগঠন এবং ছাত্র-যুব সংগঠনের সমন্বয়ে একটি ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। ‘দেশে যেন কেউ নতুন কোনো রাজনৈতিক বা সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য আমাদের সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, সরকারের উচিত সংস্কার প্রক্রিয়া জোরদার করা এবং ঐকমত্যের ভিত্তিতে এটি দ্রুত সম্পন্ন করা। এটিই সাম্প্রতিক গণঅভ্যুত্থানের মূল আকাঙ্ক্ষা।
বিএনপির এই নেতা বলেন, জনগণ যে অব্যাহত সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে সরকারকে তা সমাধান করতে হবে এবং চূড়ান্তভাবে গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করতে হবে, যা সাম্প্রতিক গণআন্দোলনের মূল আকাঙ্ক্ষা।
তিনি বলেন, ‘ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারের দোসররা সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টির অশুভ প্রচেষ্টা চালালে আন্দোলনে থাকা সব গণতন্ত্রপন্থি রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন সংগঠন ঐক্যবদ্ধভাবে এই সংকট মোকাবিলা করবে বলেও আমরা জানিয়েছি।’
রাষ্ট্রপতির অপসারণের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা তাদের কাছে কোনো মতামত চেয়েছেন কি না তা জানতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে যান নজরুল।
পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চলমান সংলাপের অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধানের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে বঙ্গভবন ঘিরে বিক্ষোভ, নিরাপত্তা জোরদার
৫ ঘণ্টা আগে
হাসিনার মন্ত্রীদের গ্রেপ্তারে সরকারের বিরুদ্ধে'লুকোচুরি'র অভিযোগ রিজভীর
শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যদের গ্রেপ্তার নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার 'লুকোচুরি' খেলছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার শাসনামলে যারা অপরাধ ও অন্যায় করেছে, তাদের গ্রেপ্তার ও আটকে রাখা নিয়ে আপনারা এত লুকোচুরি খেলছেন কেন?’
বিএনপির এই নেতা বলেন, তারা প্রথমে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করার কথা শুনেছেন এবং পরে শুনেছেন তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জ্যাকসন হাইটসে ঘোরাঘুরি করছেন।
আরও পড়ুন: সাবের হোসেনের জামিন পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন রিজভীর
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর বাহাদুর শাহ পার্কের সামনে ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে লিফলেট বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী আরও বলেন, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে তারা প্রথমে শুনলেও দুই-তিন দিন পর জানতে পারেন তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। ‘কেন আপনারা জনগণকে ধোঁকা দিচ্ছেন? এই লুকোচুরি খেলছেন কেন? এটাই জনগণ জানতে চায়।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারে বিলম্বের সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, এই বিলম্ব আওয়ামী লীগের মিত্রদের নীল নকশার অংশ।
তিনি বলেন, এমনকি মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দীনও (২০০৭-০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়) ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক রহমানের নাম জড়াতে পারেননি।
‘এই মামলা শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বহির্ভূত। তারপরও কেন তার বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করা হচ্ছে না? দেশের মানুষ এর কারণ জানতে চায়,’প্রশ্ন তোলেন রিজভী।
রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমিতে ৪০তম ক্যাডেট ব্যাচের প্রশিক্ষণার্থী উপ-পরিদর্শকদের (এসআই) চাকরিচ্যুত প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, শেখ হাসিনার আমলে নিয়োগ পাওয়া ২৪২ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল, তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে, যদিও সেখানে ৮০৩ জন কর্মকর্তা বাদ দেওয়ার কথা ছিল।
এ সময় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: দ্রুত দোষী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি রিজভীর
১৪ ঘণ্টা আগে
ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান বিএনপির
সকল চক্রান্ত ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতা করতে রাজনৈতিক দল ও সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, ‘নানা ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা চলছে।’
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর)রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি নেতা আরও বলেন, গণআন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া পদচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন কি না, তাতে কিছু যায় আসে না।
তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্র থেমে নেই। বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এসব চক্রান্ত মোকাবিলায় আমাদের সজাগ থাকতে হবে এবং সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে। আমরা জানি এই সরকার খুব শক্তিশালী নয়, কারণ এটি কোনো দল বা মতের প্রতিনিধিত্ব করে না।’
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা দখল করেনি, জাতি তাদের ওপর রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করেছে। যেহেতু আমরা সরকারকে এই দায়িত্ব দিয়েছি সেহেতু আমাদের অবশ্যই সহযোগিতা করতে হবে। ‘দেশের বিভিন্ন খাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। সাম্প্রতিক দুর্গাপূজার সময় শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করার চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু আমরা সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় সেই প্রচেষ্টা প্রতিহত করেছি।’
আরও পড়ুন: আওয়ামী ফ্যাসিবাদ পুনরুত্থানের বিরুদ্ধে ঐক্যের ডাক বিএনপির
শ্রমিক নেতা নজরুল ইসলাম বলেন, তৈরি পোশাক কারখানায় নারী ও পুরুষ শ্রমিকের সমতা নিশ্চিত করার দাবির কথা তিনি কখনো শোনেননি। ‘তবে, এ নিয়ে আন্দোলন শুরু হলে কারখানায় হামলা, ভাঙচুর, বন্ধ হয়ে যায়। যারা এই আন্দোলন করেছে তারা কি আসলেই শ্রমিক?’
দলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ লেবার পার্টি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, শুধু ক্ষমতায় নেই এবং দলের শীর্ষ নেতারা পালিয়ে গেছেন বলেই আওয়ামী লীগের দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সামর্থ্য নেই, এমনটা ভাবা ভুল।
তিনি বলেন, ‘তাদের সেই সক্ষমতা আছে এবং তারা বিভিন্নভাবে সমস্যা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। অথচ অন্যায় দমনের দায়িত্ব সরকারের। আমরা তাদের সহায়তা করতে পারি, কিন্তু সরকারের পক্ষে তা করতে পারি না। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রেখে জনগণকে স্বস্তি দিতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
শেখ হাসিনার পদত্যাগের বিষয়টি হঠাৎ কেন সামনে এল তা নিয়ে উদ্বেগ ও সংশয় প্রকাশ করেন বিএনপির এই নেতা। ‘বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব সরকারের।’
৫ আগস্ট কারাগারে থাকা নজরুল বলেন, 'কারাগার থেকে আমরা টেলিভিশনে দেখেছি, রাষ্ট্রপতি তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে নিয়ে বলেছেন, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন এবং তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন। রাষ্ট্রপতির ঘোষণার পর এ নিয়ে কোনো বিতর্ক হওয়া উচিত নয়।’
এরপর তিনি উল্লেখ করেন, শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় দাবি করেছেন, তিনি পদত্যাগ করেননি। পরে আমরা একটি টেলিফোন আলাপ শুনেছি যেখানে শেখ হাসিনা বলেছেন যেভাবে পদত্যাগ করা উচিত ছিল সেভাবে তিনি পদত্যাগ করেননি। এর অর্থ তিনি পদত্যাগ করেছেন... তাই তার পদত্যাগ নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকার কথা নয়। তিনি পদত্যাগ করেছেন কিনা, যেহেতু তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন, সেহেতু তা খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ নয়।’
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার দ্রুত পলায়নই তার পদত্যাগের প্রমাণ: বিএনপি
বিএনপির এই নেতা বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল হঠাৎ করে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) নির্বাচন পদ্ধতির পক্ষে ওকালতি করছে। ‘তারা এর আগে কখনো এটি নিয়ে আলোচনা করেনি এবং এমনকি কয়েকটি বড় দলও এখন এটি সমর্থন করছে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত যা আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করা উচিত।’
তিনি বলেন, বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র ভারত তাদের নিম্নকক্ষ বা লোকসভা নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি ব্যবহার করে না, বিধানসভাতেও করে না। ‘পিআর সিস্টেমটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা বা ফ্রান্সেও প্রয়োগ করা হয় না। এমনকি ইংল্যান্ডে, যেখানে গণতন্ত্রের উৎপত্তি, সেখানেও পিআর সিস্টেম ব্যবহার করা হয় না।’
নজরুল ইসলাম আরও বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় নেপাল ও শ্রীলঙ্কায় পিআর সিস্টেম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ‘আমরা এটাও দেখেছি যে নেপালে গত ৫-৭ বছরে কতবার সরকার বদল হয়েছে।’
তিনি বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর বিশেষ এজেন্ডা বাস্তবায়নের সুযোগ থাকা উচিত নয়। ‘জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কিছু চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়, বরং সবার জন্য যেটা কল্যাণকর সেটাই আমাদের গ্রহণ করা উচিত।’
একই অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা সরকারের দোসররা এখনও দেশের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন। ‘এই সহযোগীরা পরিকল্পিতভাবে ফিরে আসার চেষ্টা করছে। তবে তাদের রাজনীতিতে ফেরা এত সহজ হবে না।’
আরও পড়ুন: হাসিনাকে পুনর্বাসন করতে চান রাষ্ট্রপতি: বিএনপি
১৬ ঘণ্টা আগে
হাসিনাকে পুনর্বাসন করতে চান রাষ্ট্রপতি: বিএনপি
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেছেন, রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিস্ট শাসক শেখ হাসিনাকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছেন।
ব্যাংক টাউন এলাকায় এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও বলেন, 'পালিয়ে যাওয়া স্ত্রীর' যেমন ডিভোর্স লেটারের প্রয়োজন হয় না, তেমনি শেখ হাসিনার মতো পলায়নপর নেতার প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগপত্রেরও প্রয়োজন হয় না।
রিজভী বলেন, 'রাষ্ট্রপতিকে তিনি (হাসিনা) নিয়োগ দিয়েছিলেন। ছাত্রজীবনে তিনি ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং যুবলীগের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। আমরা তার সম্পর্কে কিছু বলা থেকে বিরত ছিলাম কারণ আমরা চেয়েছিলাম তিনি নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করুন। তবে তার সুর ধীরে ধীরে বদলাচ্ছে।’
তিনি উল্লেখ করেন, রাষ্ট্রপতি বলেছেন, শেখ হাসিনার কাছ থেকে তিনি কোনো পদত্যাগপত্র পাননি। ‘যে নারী তার স্বামীকে ছেড়ে অন্য পুরুষের কাছে চলে যায়, সে কি বিবাহবিচ্ছেদের চিঠি দেয়? একইভাবে পলাতক নেতা পদত্যাগপত্র জমা দেন না। এমনটা হতেই পারে। কিন্তু আমরা জানি তিনি (শেখ হাসিনা) পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।’
আরও পড়ুন: আওয়ামী ফ্যাসিবাদ পুনরুত্থানের বিরুদ্ধে ঐক্যের ডাক বিএনপির
বিএনপি নেতা বলেন, শেখ হাসিনাকে পুনর্বাসনের চেষ্টায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের সঙ্গে নিজেকে একাত্ম করতে চায় বলে রাষ্ট্রপতি এ ধরনের মন্তব্য করেছেন।
তিনি উল্লেখ করেন, ছাত্র-নেতৃত্বাধীন প্রচণ্ড গণআন্দোলনে শেখ হাসিনার পতনের পর রাষ্ট্রপতি নীরব ছিলেন। ‘কিন্তু ধীরে ধীরে তিনি শেখ হাসিনার অনুসারী হয়ে উঠছেন। তিনি সম্ভবত কোনো ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এটা করছেন।’
শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে নিহত আসহাবুল ইয়ামিন ও নাফিসার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিতে এ কর্মসূচির আয়োজন করে আমরা বিএনপি পরিবার নামের একটি সংগঠন। নিহত দুই শহীদের পরিবারের হাতে নগদ অর্থ তুলে দেন রিজভী।
রিজভী দাবি করেন, স্বৈরাচারী শাসক শেখ হাসিনার সহযোগীরা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য নানাভাবে ষড়যন্ত্র করছে। তিনি বলেন, 'গতকাল (সোমবার) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গুলি চালিয়েছে। অস্থিতিশীলতা উসকে দিতে তারা তাদের গোপন আস্তানা থেকে বেরিয়ে আসবে।’
আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, এমপি ও গণহত্যায় জড়িত নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হওয়ায় সরকারের সমালোচনা করেন তিনি। ‘যদি ফ্যাসিবাদ পুনরুজ্জীবিত হয়, তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এর দায় বহন করতে হবে।’
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসররা তাদের কালো টাকা ও অবৈধ অস্ত্র নিয়ে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছে, কারণ সরকার এসব অস্ত্র উদ্ধার বা সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে জোরালো প্রচেষ্টা চালায়নি।
আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রীয় সংস্কার দ্রুত সম্পন্ন করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার দ্রুত পলায়নই তার পদত্যাগের প্রমাণ: বিএনপি
১ দিন আগে
শেখ হাসিনার দ্রুত পলায়নই তার পদত্যাগের প্রমাণ: বিএনপি
বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেছেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে আলোচনা ষড়যন্ত্রের নতুন মাত্রার আভাস দিচ্ছে। জনগণের ক্ষোভের মুখে তার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের সুস্পষ্ট প্রমাণ।
তিনি আরও বলেন, ‘দিনের পর দিন অসংখ্য মিথ্যা প্রচারণা চালানো হয়েছে, এখন আবার শুরু হয়েছে। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেননি বলে বিরক্তিকর ও উদ্বেগজনক সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে।’
সোমবার এক আলোচনা সভায় বিএনপির এই নেতা বলেন, রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন বলেছেন যে তিনি শেখ হাসিনার কাছ থেকে কোনো পদত্যাগপত্র পাননি এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিবও বলেছেন যে তার কাছে পদত্যাগপত্র নেই।
হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘এটা তাদের ষড়যন্ত্রের নতুন মাত্রা। তিনি (শেখ হাসিনা) অবশ্যই পদত্যাগ করেছেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই। আমরা ইউটিউবে শেখ হাসিনার সই করা পদত্যাগপত্র দেখেছি। তাছাড়া মাত্র ৪৫ মিনিটের নোটিশে তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন, তাই আনুষ্ঠানিক পদত্যাগের প্রয়োজন নেই। এটাই তার পদত্যাগের শামিল।’
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নিয়ে মিথ্যাচার করেছেন রাষ্ট্রপতি: আইন উপদেষ্টা
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনার এখন কোনো পাসপোর্ট নেই। বাংলাদেশ সরকার তার পাসপোর্ট বাতিল করে দিয়েছে। তিনি একটি প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় নিয়েছেন যারা তাকে অন্য দেশে পাঠিয়ে দিতে চায়। তারপরও তার পদত্যাগপত্রের প্রয়োজনীয়তা কী?’
বিএনপির এই নেতা বলেন, শেখ হাসিনা এখনও বৈধ প্রধানমন্ত্রী এটা বিশ্বাস করে একটি স্বার্থান্বেষী মহল জনগণকে বিভ্রান্ত করতে এ ধরনের সংবাদ প্রচার করছে। এর চেয়ে বড় মিথ্যা আর কী হতে পারে?
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবিতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। তারা খুনি শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা এবং আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করারও আহ্বান জানান।
আলোচনা সভায় হাফিজ বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর জাতি একটি নতুন সরকার প্রতিষ্ঠার আশা করেছিল, যা জনগণের কল্যাণকে অগ্রাধিকার দেবে। আড়াই মাস পেরিয়ে গেছে। আমরা এখন ক্রমবর্ধমান উদ্বিগ্ন কেন না আমরা এই সরকারের লক্ষ্য সম্পর্কে অনিশ্চিত রয়েছি। তারা কীভাবে সংস্কার বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করছে এবং তারা কী অর্জন করতে পারে। তারা তাদের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে সচেতন কি না তা নিয়েও আমরা বিভ্রান্ত।’
আরও পড়ুন: আওয়ামী ফ্যাসিবাদ পুনরুত্থানের বিরুদ্ধে ঐক্যের ডাক বিএনপির
তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘গত ১৬ বছরে যারা ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন তাদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহারের কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তারেক রহমান, খালেদা জিয়াসহ যাদের বারবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলাগুলো এখনও কেন প্রত্যাহার করা হয়নি তা আমাদের বোধগম্য নয়।’
তারেক রহমানসহ যারা আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব।
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট করা এবং স্বাধীনতা বিপন্ন করার চেষ্টায় ষড়যন্ত্রের সম্মুখীন হচ্ছে যাতে ভারত সহায়তা করছে।
হাফিজ উদ্দিন বলেন, 'প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টির জন্য নানা ষড়যন্ত্র করছে। জনগণ যাদের বিতাড়িত করেছিল তারাই এখন ভারত থেকে বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এসব চক্রান্ত থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
আরও পড়ুন: হাসিনার বিচার করতে দেশে ফেরানোর দাবি বিএনপির
১ দিন আগে
উত্তর-ময়মনসিংহের বন্যার্ত কৃষকদের ত্রাণ সহায়তা চেয়েছে বিএনপি
সাম্প্রতিক বন্যায় দেশের উত্তরাঞ্চল ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের কৃষকরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন উল্লেখ করে কৃষকদের ত্রাণ সহায়তা, প্রণোদনা ও সুদমুক্ত ঋণসহ সার্বিক সহায়তা দিতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
রবিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, বন্যা দুর্গতদের দুর্ভোগ লাঘবে সরকার এখনও দৃশ্যমান কোনো ত্রাণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, কয়েকদিন আগে পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় গত মাসের শেষ থেকে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত বৃহত্তর ময়মনসিংহ ও উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা ভারী বন্যায় প্লাবিত হয়। লাখ লাখ মানুষ বন্যায় অসহায় হয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
আরও পড়ুন: আওয়ামী ফ্যাসিবাদ পুনরুত্থানের বিরুদ্ধে ঐক্যের ডাক বিএনপির
বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃত করে এই বিপর্যয়কর বন্যার জন্য মৌসুমি বৃষ্টিপাত এবং উজানের পাহাড়ি ঢলকে দায়ী করেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি আরও বলেন, ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুর, নেত্রকোণা, কুড়িগ্রাম, কুষ্টিয়া, যশোর ও খুলনাসহ বিভিন্ন জেলায় আমন ধান চাষি, সবজি চাষিদের পাশাপাশি মাছ ও পোল্ট্রি খামারের মালিকরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
রিজভী বলেন, দেশের পূর্বাঞ্চলে বন্যার সময় যে ব্যাপক ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিলক্ষিত হয়েছে তা বর্তমানে দৃশ্যমান নয়। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও খামারিদের পুনর্বাসনের জন্য জরুরি সহায়তা প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, বন্যাদুর্গতদের দুর্ভোগ লাঘবে সরকারকে মুখ্য ভূমিকা নিতে হবে। বাজারে চাল, ডাল, শাকসবজি, মাছ, মাংস ও ডিমের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকারকে অবশ্যই সক্রিয় হতে হবে। কৃষকদের সার, কীটনাশক এবং বীজের প্রাপ্যতা বাড়ানো বা প্রণোদনার মাধ্যমে সহায়তা পাওয়া উচিত।
বন্যায় যাদের ফসল ও জমির ক্ষতি হয়েছে তাদের সঠিক তালিকা তৈরি করে পরবর্তী ফসল কাটার উপযোগী না হওয়া পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ ত্রাণ সহায়তা দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব।
তিনি বলেন, সরকারের উচিত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পরবর্তী ফসলের জন্য বিনা সুদে কৃষি ঋণ, বিনামূল্যে সার, বীজ, কীটনাশক ও সেচের জন্য জ্বালানি সরবরাহ করা। পরবর্তী ক্রমবর্ধমান মৌসুমের প্রস্তুতির জন্য তাদের রবি ফসল উৎপাদনের বীজও পাওয়া উচিত।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত মাছ, হাঁস-মুরগি ও গবাদি পশুর খামারের তালিকা তৈরি করে খামার পুনঃস্থাপনে সুদমুক্ত ঋণ ও অন্যান্য অতিরিক্ত সহায়তা দিতে হবে।
আরও পড়ুন: যোগ্য ইসির অধীনে জাতীয় ঐক্য ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আহ্বান গণফোরামের
২ দিন আগে
আওয়ামী ফ্যাসিবাদ পুনরুত্থানের বিরুদ্ধে ঐক্যের ডাক বিএনপির
আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান রুখে দিতে সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা নজরুল ইসলাম খান।
নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দায়িত্ব যত দ্রুত সম্ভব পালনের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
শনিবার রাজধানী ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নেতা ও সাবেক এমপি মুফতি মোহাম্মদ ওয়াক্কাসের স্মরণ সভায় তিনি এ আহ্বান জানান। পরে দলের জাতীয় কাউন্সিলও অনুষ্ঠিত হয়।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, গত ১৬ বছরে যারা দেশের মানুষের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে তারা অনুশোচনা প্রকাশ করেনি, অনুতাপ প্রকাশ করেনি এবং তারা দেশের ক্ষতির জন্য কাজ করেই যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য অবিচল রেখে সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। দুর্ভাগ্যজনক হলো- এত দমন-পীড়ন সহ্য করেও আমরা শিক্ষা নিইনি।’
আরও পড়ুন: হাসিনার বিচার করতে দেশে ফেরানোর দাবি বিএনপির
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম আক্ষেপ করে বলেন, শুধু সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থে একটি গণতন্ত্রপন্থি দল আরেক দল সম্পর্কে কটূক্তি করছে, যা কোনো কাজে আসে না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যে গণঐক্য গড়ে তুলেছি তা দিয়ে আমরা স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদকে উৎখাত করতে পারি। এই ঐক্যের সঙ্গে যদি কোনোভাবে আপস করা হয়, তাহলে সেই ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরতন্ত্র পুনরুজ্জীবিত হবে এবং আমাদের কাউকেই রেহাই দেওয়া হবে না। এজন্য আমাদের একতা বিপন্ন করা উচিত নয়।’
বিএনপির এ নেতা বলেন, দেশ গঠন ও জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করতে ডান, বাম, মধ্যপন্থি ও ইসলামি সব শক্তিকে নিয়ে কাজ করাই বিএনপির লক্ষ্য। ‘আমরা নিশ্চিত করতে চাই, এ দেশের মানুষ যেন আর কখনো ফ্যাসিবাদ ও নিপীড়নের শিকার না হয়। আমরা সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পক্ষেও কথা বলি, কিন্তু এর অপব্যবহারের পক্ষে নই।’
স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠীর দোসররা গণতান্ত্রিক শক্তির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির জন্য নানামুখী প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বলে সতর্ক করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের সব অশুভ প্রচেষ্টা প্রতিহত করতে হবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, স্বৈরাচারের পতনের পর গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারসহ বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনে সহায়তা করাই তাদের দলের লক্ষ্য।
তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র মানে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে দেশ পরিচালনা করা। ফ্যাসিবাদ দূর হলেও গণতন্ত্র এখনো পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়নি। এটি পুনরুদ্ধার করার দায়িত্ব সরকারের। আমরা আশা করি, তারা এটি সঠিকভাবে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব করবে।’
তিনি বলেন, বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সরকারকে একটি যৌক্তিক সময়সীমা দিতে প্রস্তুত রয়েছে। ‘তবে সরকারের লক্ষ্য জনগণের কাছে পরিষ্কার হতে হবে। তাদের কর্মকাণ্ডের প্রকৃতি আমাদের বুঝতে হবে।’
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, যারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করবে তাদের কঠোরভাবে মোকাবিলা করতে হবে।
তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদের সহযোগীরা এখনও প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। ‘তারা যেন ফ্যাসিবাদী আওয়ামী বাহিনীকে ফিরিয়ে আনার ষড়যন্ত্র করতে না পারে সেজন্য আমাদের সজাগ থাকতে হবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, গত ১৫ বছরে বিএনপির সাত শতাধিক নেতা-কর্মী গুমের শিকার হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই আর ফিরে আসেননি।
তিনি বলেন, 'আমরা জানি না তারা বেঁচে আছেন কি না। তাদের সন্তান, বাবা-মা ও স্বজনরা এখনো প্রিয়জনদের ফেরার অপেক্ষায় আছেন।’
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে বিএনপির সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে এবং লাখ লাখ মানুষকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, অসংখ্য ছাত্র ও নাগরিকের আত্মত্যাগের মাধ্যমে দেশের মানুষ শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসন থেকে মুক্ত হয়েছে। ‘জনগণ যাতে আর এ ধরনের শাসনের মুখোমুখি না হয় তা নিশ্চিত করা এখন আমাদের দায়িত্ব।’
আরও পড়ুন: গ্রেপ্তার তৃণমূল বিএনপি চেয়ারম্যান শমসের মবিন
৩ দিন আগে
যোগ্য ইসির অধীনে জাতীয় ঐক্য ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আহ্বান গণফোরামের
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সর্বাত্মক সমর্থন জানিয়ে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে শক্তিশালী ও যোগ্য নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যেতে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছে গণফোরাম।
শনিবার গণফোরামের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান গণফোরামের সমন্বয়কারী দলের চেয়ারম্যান মোস্তফা মহসিন মন্টু।
তিনি বলেন, ‘আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। আজকের সরকার জনগণের সরকার। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে আমরা সরকারকে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করব।’
আরও পড়ুন: গণফোরামের দুই পক্ষ এক হচ্ছে
মন্টু বলেন, ‘আমাদের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) আমাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন। আমরা সংবিধান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও বিচার বিভাগ নিয়ে আলোচনা করেছি।’
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অবশ্যই সিন্ডিকেট নির্মূল করতে হবে। আমাদের জাতীয় ঐক্য রক্ষায় সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।’
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গণফোরামের ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে দলের ৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল সংলাপে অংশ নেয়।
সঠিক ব্যক্তিদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং চলমান সংস্কার কাজ সম্পন্ন করে দ্রুত আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দলটি।
সংস্কার কাজ শেষ না করে নির্বাচন হলে পরিস্থিতি আগের মতোই থাকবে বলে মনে করেন তারা।
মন্টু বলেন, ‘আমরা চাই খুব দ্রুত নির্বাচন হোক। কিন্তু আমরা কোনো তারিখ নির্দিষ্ট করে দিইনি। নির্বাচনের আগে আমরা রাম হিসেবে কাজ করি এবং নির্বাচনের পরে আমরা 'রাবণ' হয়ে যাই।’
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনে যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটি বা প্রয়োজনীয় যা কিছু করা দরকার তা করতে হবে।
গত ৫ অক্টোবর বিএনপি, জামায়াত, সিপিবিসহ কয়েকটি দলের অংশগ্রহণে শুরু হওয়া চলতি পর্বে এটি দ্বিতীয় সংলাপ।
সংলাপের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সংস্কার কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে রাজনৈতিক দলগুলোকে জানো এবং তাদের পরামর্শ নেওয়া।
আরও পড়ুন: গণফোরামের সভাপতির পদ ও সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন ড. কামাল
গণফোরাম ও পিপলস পার্টির সঙ্গে আন্দোলনের কৌশল নিয়ে আলোচনা করেছে বিএনপি
৩ দিন আগে
বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের কাছে কার্যকর পদক্ষেপ চান তারেক
দেশের মানুষের ওপর আর্থিক চাপ কমাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) এক আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি দেওয়া বক্তব্যে তিনি বিগত সরকারের আমলে প্রতিষ্ঠিত বাজার সিন্ডিকেট নির্মূলকে অগ্রাধিকার দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে সর্বস্তরের মানুষ বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।’
তিনি বলেন, মানুষ যখন অর্ধভোজিত থাকবে তখন নিছক মিষ্টি কথাই যথেষ্ট হবে না।
তারেক রহমান বলেন, ‘আমি অন্তর্বর্তী সরকারকে অবিলম্বে দ্রব্যমূল্য কমাতে এবং জনগণকে স্বস্তি দেওয়ার অগ্রাধিকার হিসেবে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।’
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতাকে ছাড়িয়ে গেছে।
বিএনপি নেতা বলেন, 'বিগত সরকারের আমলে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া চ্যালেঞ্জিং হলেও সদিচ্ছা ও যথাযথ হস্তক্ষেপে তা অসম্ভব নয়।’
জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে রজতজয়ন্তী উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন: নির্বাচনে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য হবে না: রিজভী
তারেক হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী সরকারের সহযোগীরা এখনো সরকারের জন্য জটিলতা সৃষ্টি ও সফলতা ক্ষুণ্ন করতে ষড়যন্ত্র করছে।
বিএনপি নেতা আরও বলেন, সরকারের বেহাল অবস্থা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে এবং তারা একটি সুস্পষ্ট অগ্রাধিকার এজেন্ডা প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন নিয়ে সরকারের বিভিন্ন উপদেষ্টার পরস্পরবিরোধী বক্তব্য জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে।
জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ডা. জোবাইদা রহমান ভার্চুয়ালি বক্তব্যে ফাউন্ডেশনের রজতজয়ন্তী উপলক্ষে সদস্যদের শুভেচ্ছা জানান।
তিনি ফাউন্ডেশনের উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেন এবং মানবতার কল্যাণে কাজ করার জন্য ফাউন্ডেশনের সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা বলেন, 'আমি আশা করি, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন মানবতার সেবায় একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।’
আরও পড়ুন: হাসিনার বিচার করতে দেশে ফেরানোর দাবি বিএনপির
৪ দিন আগে
হাসিনার বিচার করতে দেশে ফেরানোর দাবি বিএনপির
ভারত শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে অপরাধ ও খুনিদের মদদ দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, 'গতকাল (বৃহস্পতিবার) আমাদের প্রতিবেশী দেশ পরিষ্কারভাবে বলেছে শেখ হাসিনা সেখানে আছেন। তাদের বক্তব্য দেখে মনে হচ্ছে তারা বিগ ব্রাদার সুলভ আচরণ করেছে।’
জিয়াউর রহমানের কবরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শেখ হাসিনাকে সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী ও খুনি বলে উল্লেখ করেন রিজভী।
তিনি বলেন, যিনি শিশুদের রক্ত পান করতে পারেন, তার চেয়ে বড় সন্ত্রাসী আর কে হতে পারে? তাকে (হাসিনা) আশ্রয় দেওয়া মানে অপরাধ, অন্যায়কে সমর্থন করা এবং খুনিদের প্রশ্রয় দেওয়া।’
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বহিঃসমর্পণ চুক্তি হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, যেহেতু আদালত থেকে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে, সেহেতু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে পারে।
তিনি বলেন, ‘তার প্রত্যর্পণের জন্য কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে এ ধরনের সমস্যার সমাধান হতে পারে। তা না হলে বাংলাদেশের শীর্ষ সন্ত্রাসীরা ভারতসহ অন্যান্য দেশে আশ্রয় নেওয়ার সুযোগ পাবে।’
জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের রজতজয়ন্তী উপলক্ষে রিজভী সংগঠনের সদস্যদের নিয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রতিবেদন দেখেছেন।তবে এ বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তিনি বলেন, 'তিনি (শেখ হাসিনা) স্বল্প সময়ের নোটিশে এখানে এসেছিলেন। তার অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। তিনি এখানেই অবস্থান করছেন।’
৪ দিন আগে