দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলি বিমান হামলায় পাঁচ হিজবুল্লাহ পাঁচ সদস্যসহ এক শিশু নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আরও তিন বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) লেবাননের একাধিক সামরিক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রগুলো জানিয়েছে, মায়েস আল-জাবাল গ্রামের একটি বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় হিজবুল্লাহর দুই সদস্য নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে একজন সামরিক কর্মকর্তা ছিলেন। এ ঘটনায় তিন বেসামরিক নাগরিক আহত হন এবং বাড়িটি ধ্বংস হয়ে যায়।
সূত্র জানায়, পরে সিভিল ডিফেন্সের একটি গাড়ি হতাহতদের দক্ষিণ লেবাননের বিনতে জাবেইলের একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়।
নিহত হিজবুল্লাহ সেনা কর্মকর্তার নাম মো. মোহাম্মদ নাজম। দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লার কেন্দ্রীয় অঞ্চলে নিয়োজিত ছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলের হামলায় নিহত ৫৬৪, আহত ১৮৪৮
এছাড়া পৃথক একটি ঘটনায় তায়ার-আল-হামাদিয়া সড়কের ওপর একটি ইসরায়েলি ড্রোন থেকে বেসামরিক গাড়িতে দুটি এয়ার-টু-গ্রাউন্ড ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। এতে হিজবুল্লাহর এক সদস্য নিহত হয়েছেন।
সূত্র জানিয়েছে, লাশটি তায়ারে লেবাননের ইতালিয়ান হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, আইতারুন গ্রামের পথে চলাচলকারী একটি মোটরসাইকেল লক্ষ্য করে ইসরায়েলি দুটি ড্রোন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করলে হিজবুল্লাহর আরও এক সদস্য ও পাশেই থাকা সাত বছর বয়সী এক শিশু নিহত হয়।
এ ছাড়াও, এদিন সকালে তায়ের হারফা গ্রামে ইসরায়েলি হামলায় আহত হিজবুল্লাহর এক সদস্য মারা গেছেন বলে সূত্র জানিয়েছে।
এদিকে, হিজবুল্লাহ মিডিয়া শাখা জানিয়েছে, গত ৩০ জুলাই থেকে বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলীতে ইসরায়েলের হামলায় মোট ৩৮ হিজবুল্লাহ যোদ্ধা নিহত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা করার সময় থেকেই হামলা শুরু করেছে হিজবুল্লাহ। এরপর থেকে প্রায় প্রতিদিনই ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে গুলি বিনিময় চলছে। তবে ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীটির সঙ্গে লড়াই সম্প্রতি তীব্র আকার ধারণ করেছে। এটি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, তা একটি পূর্ণ যুদ্ধের রূপ নিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলের হামলায় হামাস নেতা নিহত
হিজবুল্লাহ হামাসের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। তাদের সঙ্গে নতুন করে যুদ্ধ শুরু হলে ইরানও তাতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িয়ে পড়তে পারে। ফলে তারাও ইসরালের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করতে পারে। সর্বোপরি, এটি একটি বড় পর্যায়ের আঞ্চলিক যুদ্ধের রূপ নিতে পারে।
সম্প্রতি হিজবুল্লাহর মোকাবিলায় ইসরায়েলের উত্তর সীমান্তে সৈন্য জড়ো করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
এ ব্যাপারে হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহ ইসরায়েলকে সতর্ক করে বলেছেন, আমাদের কাছে নতুন এমন অস্ত্র ও গোয়েন্দা সক্ষমতা রয়েছে, যা ইসরায়েলের গভীরে আরও গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করার সক্ষমতা রাখে।
অবশ্য গাজায় যুদ্ধবিরতি হলেই কেবল ইসরায়েলে হামলা বন্ধ করা হবে বলে হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।