জুলাই-আগস্টে সংঘটিত অপরাধের বিচারপ্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কী ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে, চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ের কাছে তা জানতে চেয়েছে জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল। অন্যদিকে ট্রাইব্যুনালের বিচারপ্রক্রিয়ার প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখতে জাতিসংঘের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়।
রবিবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইস ও মানবাধিকার বিষয়ক উপদেষ্টা হুমা খান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কার্যালয় পরিদর্শনে আসেন। এ সময় তারা চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলামের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাৎকালে ট্রাইব্যুনালের অন্য প্রসিকিউটরা উপস্থিত ছিলেন। পরে দুপক্ষের আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন চিফ প্রসিকিউটর।
আরও পড়ুন: ক্রসফায়ার ও গুম-খুনের অভিযোগ নিয়ে ট্রাইব্যুনালে বিএনপি
ব্রিফিংয়ে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের এই ট্রাইব্যুনালের বিচার ও তদন্ত প্রক্রিয়া কেমন এগোচ্ছে? কোনো সমস্যা আমাদের আছে কি না? তাদের পক্ষ থেকে কোনো সাহায্য-সহযোগিতা বা সমন্বয় দরকার কি না?—এইসব বিষয় তারা জানতে চেয়েছেন। এছাড়া বিচার প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ করার ব্যপারে আমরা কী ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছি, কী কী কাজ করছি, এসব ব্যপারে কোনো সহযোগিতার দরকার আছে কি না—এসব বিষয় নিয়ে তাদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, আলোচনা শেষে তাদের কাছে আমরা অনুরোধ করেছি, আমাদের প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থাকে প্রশিক্ষিত করতে সহযোগিতার জন্য। তারা যদি এবিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করে সেটা আমাদের জন্য সহায়ক হবে।
বিচার প্রক্রিয়ার প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করার জন্য জাতিসংঘ প্রতিনিধিদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে এবং তারাও অনুরোধে সাড়া দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এর আগে প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ে আমাদের একটা ট্রেনিং সেশন হয়েছে। ভবিষ্যতে তারা আরও ট্রেনিংয়ের আয়োজন করবে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধায়নে, সে আশ্বাস দিয়েছেন। প্রযুক্তিগত সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছেন।’
আরও পড়ুন: ডা. ফয়েজ হত্যা : হাসিনাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ
‘তারা আমাদের জানিয়েছেন যে, যেহেতু বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে বিচারের ব্যাপারে আকাঙ্ক্ষা আছে। যে অপরাধ এখানে হয়েছে বা যারা স্বজন হারিয়েছেন, তাদের বিচারপ্রাপ্তির অধিকার আছে। ফলে বিচারটা যাতে ভালোভাবে হয় সেজন্য যত দ্রুত সম্ভব জাতিসংঘ সমর্থন জানাবে।’
তিনি আরও বলেন, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার বিষয়ে ভারত এখনও কোনো জবাব দেয়নি। না দিলেও আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। বিচারপ্রক্রিয়া তার নিজস্ব প্রক্রিয়া অনুসরণ করে চলবে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত গণহত্যা এবং বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে সংঘটিত গুম, খুনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করা হচ্ছে।