সার আমদানিতে কোনো নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ নাকচ করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, এ বিষয়ে দায়িত্ব মূলত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি ও অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, ‘অর্থ মন্ত্রণালয় এমন অনুমোদন দিয়েছে, এমন কথা সঠিক নয়। সার আমদানি মূলত কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ও শিল্প মন্ত্রণালয় পরিচালনা করে। এটি তাদের দায়িত্ব।’
সার আমদানি নিয়ে সম্প্রতি একটা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে সে বিষয়ে আপনারা কোনো ব্যবস্থা নেবেন কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা বিষয়টা দেখছি। চটকরে আপনে বললেন আর আমরা ব্যবস্থা নেবো বিষয়টা সে রকম না।
কোনো তদন্ত চলছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিস্তারিত জানি না। যদি নির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে, তাহলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ই তা খতিয়ে দেখবে। আমরাও বিষয়টা খতিয়ে দেখবো।
তিনি আরও বলেন, সর্বনিম্ন দরদাতাকে বেছে না নেওয়া হয়ে থাকলে তা পর্যালোচনা করা উচিত এবং এ ধরণের বিষয় অবশ্যই তদন্তযোগ্য।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর কৃষি মন্ত্রণালয় সাম্প্রতিক সময়ে সার আমদানিতে অনিয়মের অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন, কল্পনাপ্রসূত, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অসত্য’ বলে বিবৃতি দেয়।
মন্ত্রণালয় জানায়, সরকারি নীতির আলোকে নন-ইউরিয়া সার বেসরকারি আমদানিকারক এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের চুক্তি বা সরকার-টু-সরকার (জি-টু-জি) চুক্তির মাধ্যমে আমদানি করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়াতে প্রস্তুত বাংলাদেশ: প্রধান উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে কেবল সর্বনিম্ন দরদাতা কোম্পানিকেই ক্রয়াদেশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, যা বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করেছে এবং অস্বাভাবিক মুনাফা রোধ করেছে বলে মন্ত্রণালয় দাবি করে।
বাংলাদেশের সার চাহিদা একক কোনো দেশ পূরণ করতে না পারায়, অবিচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে একাধিক দেশ থেকে আমদানি করা হয়।
মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সিআইএফ (কস্ট অ্যান্ড ফ্রেইট) মূল্য দূরত্ব ও পরিবহন খরচের ওপর নির্ভর করে ভিন্ন হয়ে থাকে। আন্তর্জাতিক বুলেটিন— আরগাস এফএমবি ও ফার্টিকন ব্যবহার করে আমদানি মূল্যের যাচাই করা হয়।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম ধাপে ১৩টি প্রতিষ্ঠানকে ৩০ হাজার টন টিএসপি, ২ লাখ ৫৫ হাজার টন ডিএপি এবং ৯০ হাজার টন এমওপি সরবরাহের চুক্তি দেওয়া হয়েছে।
দ্বিতীয় ধাপে আরও ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে একই দামে ৯০ হাজার টন টিএসপি এবং ১ লাখ ২০ হাজার টন ডিএপি সরবরাহের অর্ডার দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি, দেশে যখন সারের সংকট চলছে, ঠিক সে সময় এক ব্যক্তির একাধিক কোম্পানিকে সার আমদানিতে সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওই অসাধু কার্যক্রমে কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের যোগসাজশ রয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। এ অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেছে মন্ত্রণালয়।