যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে একটি বহুতল অফিস ভবনে এক বন্দুকধারীর হামলায় এক বাংলাদেশি অভিবাসীসহ চারজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও একজন আহত হয়েছেন। এরপর হামলাকারী নিজেও আত্মহত্যা করেন।
স্থানীয় সময় সোমবার (২৮ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নিউইয়র্কের ৩৪৫ পার্ক অ্যাভিনিউ নামের একটি বাণিজ্যিক অফিস ভবনে এ ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ঘটনার পর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, বন্দুকধারীর হামলায় পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এর মধ্যে ৪ জন নিহত হয়েছেন। আরেকজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
তিনি আরও জানান, নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ৩৬ বছর বয়সী পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম। তিনি বাংলাদেশি অভিবাসী এবং নিউ ইয়র্ক সিটি পুলিশ বিভাগে তিন বছর ছয় মাস কর্মরত ছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, বন্দুকধারীর নাম শেন তামুরা, তিনি লাস ভেগাসের বাসিন্দা ছিলেন। হামলার পরপরই তিনি আত্মহত্যা করেন। তার মানসিক স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত ইতিহাস রয়েছে। তবে ঠিক কী কারণে শেন এই ঘটনা ঘটিয়েছেন, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানান জেসিকা।
আরও পড়ুন: ইরানে আদালতে সশস্ত্র হামলায় নিহত ৯, আহত ২২
নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস জানিয়েছেন, হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন, একজন গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাছাড়া ঘটনাস্থল থেকে পালাতে গিয়ে আরও চারজন সামান্য আহত হয়েছেন।
ওই এলাকার একটি নজরদারি ক্যামেরায় অস্ত্র হাতে সানগ্লাস পরা একজন ব্যক্তিকে হেঁটে যেতে দেখা যায়, যাকে সন্দেহভাজন হামলাকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
অন্য একটি পর্যবেক্ষণ ক্যামেরায় দেখা যায়, এক ব্যক্তি একটি ডাবল পার্ক করা বিএমডব্লিউ গাড়ি থেকে নেমে এম৪ রাইফেল হাতে ভবনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন।
পুলিশ কমিশনার জেসিকা জানান, তিনি ভবনে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ কর্মকর্তার ওপর গুলি চালান এবং এরপর এক নারীকে গুলি করেন। পরে লবির ভেতর এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকেন ওই বন্দুকধারী।
এরপর তিনি লিফটের দিকে এগিয়ে যান এবং নিরাপত্তা ডেস্কের পেছনে লুকিয়ে থাকা এক নিরাপত্তারক্ষীকে গুলি করেন। একই সঙ্গে লবিতে থাকা আরও একজনকে গুলি করেন বলে জানান কমিশনার।
পরে লিফটে করে ৩৩ তলায় একটি রিয়েল এস্টেট ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানে যান এবং সেখানে একজনকে গুলি করে হত্যা করেন। এরপর তিনি আত্মহত্যা করেন।
আরও পড়ুন: রাশিয়ায় ৫০ বছর পুরোনো বিমান বিধ্বস্তে সব আরোহী নিহত
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কমিশনার বলেন, সন্দেহভাজন ব্যক্তির গাড়ি থেকে একটি এম৪ রাইফেল ও গুলিভর্তি ম্যাগাজিনসহ একটি রিভলবার উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী জেসিকা চেন জানান, তিনি দ্বিতীয় তলায় একটি প্রেজেন্টেশন দেখছিলেন, তখন প্রথম তলা থেকে একাধিক গুলির শব্দ শুনতে পান। পরে তারা একটি সম্মেলনকক্ষে আশ্রয় নেন এবং দরজার সামনে টেবিল ঠেলে ব্যারিকেড তৈরি করেন।
জেসিকা চেন বলেন, ‘আমরা সত্যিই খুব, খুব ভয় পেয়েছিলাম।’