শ্রীলঙ্কায় দেশজুড়ে ব্যাপক ব্ল্যাকআউটের জন্য একটি বানরকে দায়ী করেছেন দেশটির জ্বালানি মন্ত্রী কুমারা জায়াকোদি। রবিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় সারা দেশে ব্ল্যাকআউট দেখা দেয়। এরপর বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে কয়েক ঘণ্টা লেগেছিল।
বিদ্যুৎ না থাকায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে অর্থনীতিতে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ইন্ডিপেন্ডেন্ট বলছে, এটি ছিল শ্রীলঙ্কার ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ ব্ল্যাকআউটের একটি। এতে সেখানকার বহুলোককে বিদ্যুতের জন্য জেনারেটরের ওপর নির্ভর করতে হয়েছে।
একদল বানর হট্টগোল ও মারামারি করতে করতে পানাদুরা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ওপর ঝাঁপ দেয়, তাদের মধ্য থেকে একটি এসে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনে পড়ে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী কুমারা জায়াকোদি।
‘একটি বানর গ্রিড ট্রান্সফর্মারের সংস্পর্শে এলে সিস্টেমে ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়,’ বলেন তিনি। অসুবিধার জন্য দেশের জনগণের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন দেশটির এই জ্বালানিমন্ত্রী।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একজন নিরাপত্তা প্রহরী বলেন, তিনি বিকট বিস্ফোরণ শুনতে পেয়েছেন ও আগুনের গোলা দেখতে পেয়েছেন। কিন্তু একটা বানর এমন একটা সংকট তৈরি করতে পারে বলে মনে হচ্ছে না।
‘প্রায়ই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ওপর বানর ঝাঁপিয়ে পড়ে। কিন্তু তার মানে এই না যে, সে কারণে বিদ্যুৎ সংকট দেখা দেবে,’ বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: ভারতে তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট, হাসপাতালগুলোতে বেড়েই চলেছে মৃতের সংখ্যা
স্থানীয় ডেইলি মিরর পত্রিকার প্রধান সম্পাদক জামিলা হুসেইন লিখেছেন, ‘একমাত্র শ্রীলঙ্কাতেই এমন ঘটনা ঘটতে পারে, যেখানে একটি একদল বানরের মধ্যে লড়াইয়ে পুরো দ্বীপে বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটে।’
পত্রিকাটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকৌশলীরা কয়েক বছর ধরেই সরকারকে এই বিষয়ে সতর্ক করে আসছেন। তারা সরকারকে জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ গ্রিড আধুনিকীকরণ না করলে বারবার বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটবে।
প্রতিবেদনে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জ্যেষ্ঠ প্রকৌশলীর ভাষ্যে, দেশটির জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিড এতটাই দুর্বল অবস্থায় রয়েছে যে, সামান্যতম সমস্যা থেকেও পুরো দ্বীপে বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটতে পারে।
এর আগে ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকটের সময় দেশজুড়ে ব্যাপক বিদ্যুৎ বিপর্যয় হয়েছিল।