গ্যাস সংকটের কারণে আড়াই মাস ধরে বন্ধ রয়েছে ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সাতটি ইউনিটের সবকটির উৎপাদন। এতে নরসিংদীর পলাশের ঘোড়াশালে অবস্থিত এই তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটির অবস্থা প্রতিনিয়তই নাজুক হয়ে পড়ছে।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী এনামুল হক ইউএনবিকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, দুই বছর ধরেই এ বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সংকট চলছে। এ কারণে গত ৯ জুন ২১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার ৫ নম্বর ইউনিট, ১৩ জুন ৩৬০ মেগাওয়াটের ৪ নম্বর ইউনিট এবং ১৪ জুন ৩৬০ মেগাওয়াটের ৭ নম্বর ইউনিটের উৎপাদন একেবারে বন্ধ হয়ে যায়।
এনামুল হক জানান, সরকার সার কারখানায় গ্যাস দেওয়ায় বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। বিকল্প উপায়ে গ্যাস সরবরাহের জন্য বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় আবেদন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ৪, ৫ ও ৭ নম্বর ইউনিটে কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি নেই। গ্যাস পেলেই উৎপাদন শুরু হবে।
এনামুল হক আরও জানান, গত জুন মাসের প্রথম দিকে ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৩৬০ মেগাওয়াটের ৩ নম্বর ইউনিটের টারবাইন রোটারের ব্লেডে সমস্যা দেখা দেয়। এর পর থেকে এই ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ। এটি এখন মেরামতের শেষ পর্যায়ে। গ্যাস সংযোগ চালু করলেই এ ইউনিটেও বিদ্যুৎ উৎপাদন আবার শুরু হবে।
আরও পড়ুন: প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে বন্ধ সিলেটের কুমারগাঁও বিদ্যুৎকেন্দ্র, ভোগান্তি
বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০১০ সালের জুন মাসে ২১০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন ৬ নম্বর ইউনিটে আগুন লেগে টারবাইন পুড়ে গিয়েছিল। সেই থেকে এই ইউনিটটির বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
১৯৬৭ সালে ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১ নম্বর ইউনিটের নির্মাণকাজ শেষ করে রাশিয়া টেকনোপ্রম এক্সপার্ট। ১৯৭৪ সালের জানুয়ারি মাসে মাত্র ৫৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে সেটি যাত্রা শুরু করে। পরে ৫৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ২ নম্বর ইউনিটটি ১৯৭৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে উৎপাদনে আসে। তবে বারবার যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় এ দুটি ইউনিটেরও উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
১ ও ২ নম্বর ইউনিটদুটি ভেঙে নতুন করে একটি নতুন ইউনিট স্থাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানিয়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।