মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বিবন্দি গ্রামে রাতে পানিতে ডুবিয়ে ৭ মাস বয়সী দুই যজম শিশুকন্যাকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (৭ জুলাই) রাত ৮টার দিকে বিবন্দীর একটি পুকুর থেকে লামিয়া ও সামিহা নামের ওই দুই শিশুকে উদ্ধার করে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
এই ঘটনার জন্য শিশুদুটির বাবা-মা একে অপরকে দায়ী করেন। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের দুজনকেই আটক করে থানায় নিয়েছে পুলিশ। পারিবারিক কলহের জেরে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা থানা পুলিশের।
স্থানীয়রা জানান, বিবন্দী গ্রামের দিনমজুর সোহাগ শেখের (২৮) সঙ্গে প্রায় দুই বছর আগে উপজেলার বীরতারা ইউনিয়নের মজিদপুর দয়হাটা গ্রামের শাহ আলমের মেয়ে শান্তার (২৪) বিয়ে হয়। ৫ মাস আগে শান্তা যমজ কন্যা সন্তান প্রসব করেন। সন্তান হওয়ার পর থেকে তাদের মধ্যে প্রায়ই পারিবারিক কলহ হতো। এর জেরে শান্তা সন্তানদের নিয়ে বাবার বাড়িতে গিয়ে থাকতেন। তবে সম্প্রতি তিনি স্বামীর বাড়িতে আসেন।
সবশেষ গতকাল (সোমবার) রাত ৮টার দিকে সোহাগের ঘর থেকে হট্টোগোলের শব্দ শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে গিয়ে জানতে পারেন, বেশ কিছুক্ষণ আগে লামিয়া ও সামিহাকে বাড়ির পাশের পুকুরের পানিতে ফেলে দেওয়া হয়ছে। এ সময় স্থানীয়রা পুকুরে নেমে শিশুদুটিকে উদ্ধার করে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে ছুটে যান সোহাগও। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: সিলেটের টিলাগড়ে ছাত্রদলের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, আটক ২
এ ঘটনায় শান্তা বেগমের অভিযোগ, সোহাগ ঘর থেকে দুই মেয়েকে নিয়ে গিয়ে পাশের পুকুরে ফেলে দেন। আর সোহাগের অভিযোগ, তার স্ত্রীই পানিতে ফেলে দিয়ে মেয়েদুটিকে হত্যা করেছে।
শিশুদুটির চাচা সাকিব শেখ বলেন, ‘রাত ৮টার দিকে হঠাৎ সোহাগের ঘর থেকে চিল্লাচিল্লির শব্দ শুনে এগিয়ে গেলে শান্তা জানায়, তার স্বামী বাচ্চাদের পুকুরে ফেলে দিয়েছে। সে সময় সোহাগকে আমি ঘরে দেখতে পাইনি। পরে আমি দৌড়ে পুকুরে গিয়ে দেখি উপুড় হয়ে তারা পানিতে পড়ে আছে। সঙ্গে সঙ্গে পানিতে নেমে তাদের উঠিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাই।’
শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. সিনথিয়া নূর বলেন, ‘দুই শিশুরই পেটভর্তি পানি ছিল। পানি থেকে তোলার আগেই হয়তো তাদের মত্যু হয়েছে।’
শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমূল হুদা খান জানান, স্থানীয়ভাবে পানিতে চুবিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। তবে মৃত্যুর সঠিক রহস্য উদঘাটনে পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছে। এ বিষয়ে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে রয়েছে।
তিনি আরও জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। এ ছাড়া জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই দম্পতিকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।