গৃহকর্মী
উন্নয়নের পদযাত্রায় আজও আড়ালে উপেক্ষিত গৃহকর্মীরা
ঢাকার অসংখ্য বাড়ির উঁচু দেওয়ালের আড়ালে ঢাকা পড়ে আছে এক অদৃশ্য পরিশ্রমী শ্রেণি; তারা নিরলসভাবে দিনরাত খেটে চলেছেন। তাদের শ্রম স্বীকৃত নয়, নিয়ন্ত্রিত নয় এবং সুরক্ষিতও নয়।
যাদের কথা বলা হচ্ছে তারা গৃহকর্মী। এদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী, আবার কিশোরীও হয়ে উঠতে না পারা অনেক মেয়ে রয়েছে। তারা রান্না করেন, ঘরবাড়ি পরিষ্কার করেন, শিশুদের দেখাশোনা করেন— মানুষের বাসার এমন অসংখ্য কাজের দায়িত্ব পালন করছেন তারা। তবে সমাজে তাদের এই অবদান উন্নয়ন কিংবা শ্রমিক অধিকারবিষয়ক বৃহত্তর আলোচনায় বরাবরই উপেক্ষিত থেকে যায়।
এই তো গত ১৬ জুন সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও আন্তর্জাতিক গৃহকর্মী দিবস পালিত হলো। অথচ দেশের এই শ্রমজীবী শ্রেণির অবস্থানে কোনো অর্থবহ স্বীকৃতি বা পরিবর্তন আসার কোনো লক্ষণ এখনও দেখা যায়নি।
বাড়ছে সংখ্যা ও ঝুঁকি
সরকারি জরিপ বলছে, এই খাতে নারী শ্রমিকদের অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৯৯৯-২০০০ সালে যেখানে নারী শ্রমশক্তির অংশগ্রহণ ছিল ২৩ দশমিক ৯ শতাংশ, তা ২০১৬-১৭ সালে বেড়ে হয়েছে ৩৬ দশমিক ৩ শতাংশ।
এ ছাড়া, ২০১১ সালে ডোমেস্টিক ওয়ার্কার্স রাইটস নেটওয়ার্কের (ডিআরডব্লিউএন) হিসাবে দেখা যায়, বাংলাদেশে প্রায় ২০ লাখ গৃহকর্মী নিয়োজিত, যাদের অনেকেই দরিদ্র পরিবার থেকে আসা অল্পবয়সী মেয়ে।
আরও পড়ুন: কিশোরী গৃহকর্মীর মর্মান্তিক মৃত্যু: ক্ষোভের জন্ম, ন্যায়বিচারের দাবি
বিশ্বব্যাপী এই সংখ্যা আরও বিস্ময়কর। প্রকাশিত তথ্যমতে, সারা বিশ্বে প্রায় ১০৫ লাখ মানুষ বেতনভুক্ত গৃহকর্মী—যা কানাডার মোট জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশের সমান।
বাংলাদেশে এই শ্রমিকরা মাসে গড়ে মাত্র ১৫ ডলার (প্রায় ১৭৫৫ টাকা) আয় করেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিআইএলএস)।
২০২২ সালে অক্সফামের এক সমীক্ষা জানায়, ৯৩ শতাংশ নারী গৃহকর্মী তাদের কর্মস্থলে হয়রানির শিকার হন। এর মধ্যে ৬৭ শতাংশ মানসিক নির্যাতনের শিকার, ৬১ শতাংশ মৌখিক নির্যাতন এবং ২১ শতাংশ নারী শারীরিক নির্যাতনের শিকার।
নেই চুক্তি, নেই সুরক্ষা
শহুরে পরিবারগুলোতে এই গৃহকর্মীরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও তাদের অধিকাংশই কোনো আনুষ্ঠানিক চাকরির কাঠামোর আওতায় নেই। বিআইএলএসের তথ্য অনুযায়ী, ৯০ শতাংশের বেশি গৃহকর্মীর কোনো লিখিত চুক্তি নেই।
১২ বছর বয়স থেকেই ধানমণ্ডির এক বাড়িতে কাজ করা ১৬ বছর বয়সী রিনা বলেন, ‘কাজের কোনো নির্দিষ্ট সময় নাই। ভোরে উঠি, কাজ শেষ হয় গভীর রাইতে। অসুস্থ হইলে বা সামান্য ভুল করলে গালাগালি বা মার খাই। অভিযোগ করারও কেউ নাই।’
বন্ধ দরজার আড়ালে নির্যাতন
সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা আবারও গৃহকর্মীদের প্রতি সহিংসতা ও অপমানের বিষয়টি সামনে এনেছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো গৃহকর্মীদের ওপর নিয়মিত শারীরিক নিপীড়ন, মৌখিক অবমাননা, এমনকি যৌন সহিংসতার ঘটনাও নথিভুক্ত করছে। ভয়ে, কিংবা জীবিকা হারানোর আশঙ্কায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই ঘটনাগুলো প্রকাশ পায় না।
আরও পড়ুন: রাজধানীর বনশ্রীতে গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধার, সংঘর্ষ-গাড়িতে আগুন
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (এএসকে) মামলার দায়িত্বে থাকা ফারজানা আখতার বলেন, ‘আমরা নিয়মিত অভিযোগ পাই, বিশেষ করে অল্পবয়সী মেয়েদের কাছ থেকে যাদের কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই শহরে আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই অতি দরিদ্র পরিবার থেকে আসে। কেউ কেউ পড়াশোনার আবার কেউ ভালো জীবনের প্রতিশ্রুতি পেয়ে আসে। তবে আসার পর আটকে পড়ে শোষণ-নির্যাতনের ফাঁদে।’
গৃহকর্মী নিয়োগে অস্বচ্ছতা
এই অল্পবয়সী শ্রমিকদের অনেককেই শহরে আনা হয় দালালদের মাধ্যমে, অর্থাৎ অপ্রাতিষ্ঠানিক ‘নিয়োগ এজেন্ট’ বা দূরসম্পর্কের আত্মীয়ের মাধ্যমে। এরা কোনো আইনি কাঠামোর আওতায় পড়েন না, বরং কমিশন খেয়ে মেয়েদের অনিরাপদ ও অপরিচিত ঘরে পাঠিয়ে দেন।
এমনই একজন সাবেক দালাল নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বীকার করেন, ‘এটা এক ধরনের ছায়া বাজার। কোনো রেজিস্ট্রেশন নেই, সরকারের নজরদারি নেই। চাহিদা আর যোগানের খেলা। কিছু মেয়েকে তো জিনিসের মতো হাতবদল করা হয়।’
সম্প্রতি ঢাকার কিছু কিছু এলাকায় কয়েকটি প্রশিক্ষিত গৃহকর্মী সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে, যারা তুলনামূলক ভালো পারিশ্রমিক দেয়। তবে এসব উদ্যোগ এখনও খুবই সীমিত।
কাগজে নীতি, বাস্তবে শূন্যতা
২০১৫ সালে সরকার ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি’ চালু করে। ওই নীতিতে ন্যূনতম মজুরি, নির্ধারিত কর্মঘণ্টা, বিশ্রাম ও ছুটির ব্যবস্থা, নির্যাতনের বিরুদ্ধে সুরক্ষা ও আইনি অভিযোগের সুযোগের মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল।
এই নীতি একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতি হিসেবে বিবেচিত হলেও, তার বাস্তবায়ন কার্যত শূন্য। গৃহকর্মীদের শ্রম আইন ২০০৬-এর আওতাভুক্ত না করায় এই নীতি মেনে চলার জন্য নিয়োগকর্তার ওপর কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা নেই।
আরও পড়ুন: সিলেটে পুলিশ কর্মকর্তার বাসায় মিলল গৃহকর্মীর লাশ
আওয়াজ ফাউন্ডেশনের সভাপতি ডা. নাজমা আক্তার বলেন, ‘কেবল আলাদা একটি নীতিই যথেষ্ট নয়। আইনগত বাধ্যবাধকতা ও প্রয়োগ ছাড়া কিছুই বদলাবে না।’
এ কারণে অধিকারকর্মীরা দীর্ঘদিন ধরেই গৃহকর্মকে শ্রম আইনের আওতায় আনতে দাবি জানিয়ে আসছেন।
বিপদের মুখে একটি প্রজন্ম
আইনি ও অর্থনৈতিক লড়াইয়ের বাইরেও এই অনিয়ন্ত্রিত খাত আরও গভীর প্রভাব ফেলে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষত শিশুদের ক্ষেত্রে বাস্তবতা আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে।
শিক্ষা ও সহায়তার সুযোগ না থাকায় হাজার হাজার শিশু অল্প বয়সেই শ্রমে নিযুক্ত হচ্ছে, যা দারিদ্র্যের চক্রকে আরও জটিল করে তোলে।
১৪ বছর বয়সী মুন্নি তৃতীয় শ্রেণি পড়ার পর স্কুল ছেড়েছে। সে বলে, ‘আমি শিক্ষক হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এখন আমি অন্যের সন্তান সামলাই, আর আমার নিজের বাচ্চা গ্রামে আমার মায়ের কাছে রয়েছে।’
সম্প্রতি ১৫ বছর বয়সী আরেক গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধার করা হয় তার কর্মস্থলের সামনে থেকে; এ ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে।
তাছাড়া, বহু গৃহকর্মীর সন্তান বড় হয় তার মায়ের থেকে দূরে কোনো গ্রাম বা বস্তিতে। বিষয়টি আর্থিক কষ্টের পাশাপাশি গৃহকর্মীদের মানসিক চাপও বাড়ায়।
এমন প্রেক্ষাপটে দেশ যখন উন্নয়নের পথে দৃপ্ত পদক্ষেপে এগিয়ে চলছে, তখন প্রশ্ন থেকে যায়— কার উন্নয়ন?
যতদিন না প্রতিদিন লাখ লাখ পরিবারকে সচল রাখা গৃহকর্মীদের আইনি সুরক্ষা ও সামাজিক মর্যাদার আওতায় আনা হবে, ততদিন এই উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি থেকে যাবে অসম্পূর্ণ ও কষ্টদায়ক।
১৬৩ দিন আগে
গৃহকর্মীর মৃত্যু: জামিন পাননি সাংবাদিক আশফাক ও তার স্ত্রী
গৃহকর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় জামিন পাননি ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল ও তার স্ত্রী তানিয়া খন্দকার।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারাহ দিবা ছন্দা আসামিদের জামিনের আবেদন নাকচ করে দেন।
আসামিপক্ষে জামিন চেয়ে শুনানি করেন- সিনিয়র আইনজীবী এহেসানুল হক সমাজী ও আশরাফ উল আলম।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এ জামিনের বিরোধিতা করা হয়। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিনের আবেদন নামঞ্জুরের আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ভাঙচুরের মামলায় ফখরুল-খসরুর জামিন
এর আগে ১৩ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হাসান আসামিদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করলে আদালত চার দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি আদালত আসামিদের রিমান্ড ও জামিনের আবেদন নাকচ করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তাদের তিন দিন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন আদালত।
গত ৭ জানুয়ারি ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হক ও তার স্ত্রী তানিয়া খন্দকারের বিরুদ্ধে মামলাটির দায়ের করেন গৃহকর্মী প্রীতির বাবা লোকেশ উরাং। মামলায় ৩০৪ (ক) ধারায় অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ করা হয়েছে।
জানা যায়, গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মোহাম্মদপুরে আবাসিক ভবনের নবম তলা থেকে পড়ে এক কিশোরী গৃহকর্মীর মৃত্যু হয়। প্রীতি উরাং নামের ১৫ বছর বয়সী ওই কিশোরী ওই ভবনে সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসায় কাজ করতেন।
আরও পড়ুন: মির্জা আব্বাসের জামিন মঞ্জুর
ফখরুল-খসরু জামিনে মুক্ত
৬৫৩ দিন আগে
ধানমণ্ডিতে ৫ তলা ভবন থেকে পড়ে গৃহকর্মীর মৃত্যু
রাজধানীতে ৫তলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে ২৫ বছর বয়সী এক গৃহকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (১৫ জুলাই) ভোরে ধানমন্ডি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত নাসরিন ভোলার বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: কিশোরগঞ্জে নিখোঁজের ৩৮ ঘন্টা পর মাঝির লাশ উদ্ধার
ধানমন্ডি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মুহিত খান জানান, নাসরিন ছয় বছর ধরে ওই বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করছিলেন।
খবর পেয়ে পুলিশ ভোর ৩টার দিকে নাসরিনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
এসআই আরও বলেন, মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে, না কি দুর্ঘটনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: সিলেটে তরুণীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
সিলেটে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, স্বামী গ্রেপ্তার
৮৭৪ দিন আগে
ঢাকার বাড্ডা থেকে গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধার
রাজধানীর বাড্ডা এলাকার ময়নারবাগের একটি বাড়ি থেকে রবিবার ভোরে সোনিয়া (২০) নামের এক গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহত সোনিয়া পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার জাহিদুল ইসলামের মেয়ে।
বাড্ডা থানার উপ-পরিদর্শক মেহেদী হাসান জানান, গত ৮-৯ মাস ধরে পারভীন নামের এক নার্সের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করছিলেন সোনিয়া। নার্স পারভীন তার দুই মেয়েসহ ওই বাড়ির বাসিন্দা।
শনিবার মধ্যরাতে বাসা থেকে ফোন পেয়ে পুলিশ সোনিয়ার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
তিনি বলেন, ‘আমরা সোনিয়ার মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করেছি এবং আমরা শুনেছি যে তার বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে। তিনি অন্য একজনের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন, কিন্তু তাদের মধ্যে সম্পর্ক স্থায়ী হয়নি। মৃত্যুর কারণ উদঘাটনের জন্য পুলিশ তদন্ত করছে।’
এসআই আরও বলেন, ‘ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।’
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে পৃথক স্থানে দু’টি ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
কিশোরগঞ্জে পুকুর থেকে আ. লীগ নেতা বাদলের লাশ উদ্ধার
যাত্রাবাড়ীতে পুকুর থেকে শিশুর লাশ উদ্ধার
৮৭৯ দিন আগে
নেত্রকোণায় ঠিকানা বিহীন গৃহকর্মীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার!
নেত্রকোণার সদর উপজেলায় গাছের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বুধবার সকালে স্থানীয় লোকজন বাড়ির আঙ্গিনায় গৃহকর্মী সমলার লাশ গাছে ঝুলতে দেখে মডেল থানা পুলিশকে খবর দিলে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
সমলা আক্তার(৪০) ওই নারী সাবেক চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন তালুকদারের বাড়িতে গৃহকর্মী ছিলেন।
আরও পড়ুন: সিলেটে শয়ন কক্ষ থেকে স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
সাবেক চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন জানান, চার থেকে পাঁচ মাস আগে ঠিকানা বিহীন মহিলার থাকা খাওয়ার জায়গা না থাকায় আমার বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ দেয়া হয়। বৃহস্পতিবার ভোর বেলায় বাড়ির আঙ্গিনার কাঁঠাল গাছে তার লাশ দেখতে পেয়ে আমি পুলিশকে খবর দেই।
এ ব্যাপারে সদর সার্কেল মোরশেদা খাতুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সমলা নামের ঠিকানা বিহীন গৃহকর্মীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছি।
ময়না তদন্তের জন্য নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: নাটোরে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
১১১৩ দিন আগে
সৌদির বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে ২৪ নারী গৃহকর্মী উদ্ধার
সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ থেকে প্রায় ১১০০ কিমি দূরে অবস্থিত আরআর শহর থেকে বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে ২৪ জন বাংলাদেশি নারী গৃহকর্মীকে উদ্ধার করা হয়েছে।
একটি সৌদি রিক্রটিং এজেন্সি ২৪ জন বাংলাদেশি নারী গৃহকর্মীকে অবৈধভাবে আটকে রেখেছে মর্মে জানতে পেরে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বিপিএম (বার) তাদের দ্রুত উদ্ধার করে দেশে পাঠানোর জন্য দূতাবাসের শ্রম কল্যাণ উইংকে নির্দেশ দেন। এ প্রেক্ষিতে দূতাবাসের শ্রম কল্যাণ উইংয়ের কর্মকর্তা সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনে জানা যায়, সৌদি রিক্রটিং এজেন্সি ‘মাকতাব তাওয়াসুল আলসারি’ বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সি ‘মেসার্স এস. আনোয়ার ওভারসিজ’- এর মাধ্যমে ওই নারী কর্মীদেরকে সৌদি আরবে এনে সৌদি নিয়োগ কর্তাদের বাসায় কাজে না পাঠিয়ে বেআইনিভাবে দীর্ঘদিন আটকে রাখে। পরিবারের সঙ্গে তাদের সকল প্রকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। পর্যাপ্ত খাবার ও পানীয়ের অভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লেও তাদেরকে কোন চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়নি। দূতাবাসের কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে নারী কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে সংশ্লিষ্ট সৌদি এজেন্সি বাধা দেয়।
এ প্রেক্ষিতে সৌদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় ওই ২৪ নারী গৃহকর্মীকে উদ্ধার করে সৌদি ফিমেল ডিপোর্টেশন সেন্টারে হস্তান্তর করা হয়। উদ্ধার করা নারী গৃহকর্মীদের পর্যাপ্ত খাবার, পানীয় ও সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। অভিযুক্ত সৌদি রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তাদের এজেন্সি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সৌদি কর্তৃপক্ষের সহায়তায় উদ্ধারকৃত নারী গৃহকর্মীদের দ্রুত বাংলাদেশে পাঠানোর কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
১১৩৬ দিন আগে
ভিডিও ধারণ করে গৃহকর্মীকে একাধিকবার ধর্ষণ, থানায় মামলা
নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় এক কিশোরী গৃহকর্মীকে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইলিং করে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে হাতিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হলেন-উপজেলার চানন্দী ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব আদর্শ গ্রামের মো. মানিকের ছেলে মো. নূর আলম রাব্বি (২২) এবং তার বড় ভাই নূর হোসেন (২৯) এবং ভাবি রাশেদা আক্তার (২৪)।
এ ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামলার দুই নম্বর আসামি বড় ভাই নূর হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগীর পরিবার গরীব হওয়ায় তাকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের দিকে পার্শ্ববর্তী বাড়ির প্রধান আসামি নূর আলমের ভাবি রাশেদা আক্তার তার ছোট সন্তানদের দেখাশোনা করার জন্য ওই কিশোরীকে বাড়িতে রাখে।
আরও পড়ুন: সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যা, ৯ জনের যাবজ্জীবন
একপর্যায়ে নূর আলম রাব্বি ওই গৃহকর্মীকে বিয়ের আশ্বাস দেখিয়ে নিজের রুমে ১৯ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ করে। পরে, ভিডিও দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইলিং করে ভুক্তভোগীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে এবং এ বিষয়ে কাউকে কিছু জানালে ধারণকৃত ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়।
পরে, ভুক্তভোগী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়।
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমির হোসেন ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগ পেয়ে এক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রধান আসামিসহ বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে শিশু ধর্ষণ চেষ্টা মামলার আসামি গ্রেপ্তার
ধর্ষণের অভিযোগ: টঙ্গীতে দুই যুবককে পুলিশে দিলো স্থানীয়রা
১১৫৮ দিন আগে
সাবেক ক্রিকেটার আকরাম খানের গৃহকর্মীর মরদেহ উদ্ধার
রাজধানীর মহাখালী ডিওএইচএস এলাকা থেকে জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক আকরাম খানের গৃহকর্মীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহতের নাম সাহিদা আক্তার (২৫)।
কাফরুল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. হাসিব বলেন, আকরাম খানের কাছ থেকে খবর পেয়ে রবিবার রাত ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে গৃহকর্মীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, ‘রাতেই মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।’
পড়ুন: জি কে শামীমসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলার রায় ২৫ সেপ্টেম্বর
অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কাপ্তাইয়ে ১৪৪ ধারা জারি
১১৯৪ দিন আগে
দূতাবাসের সহায়তায় সৌদি থেকে দেশে ফিরলেন শিল্পী আক্তার
সৌদি আরবের রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সহায়তায় দেশে ফিরেছেন সৌদি আরবে কর্মরত গৃহকর্মী শিল্পী আক্তার। গত রবিবার (১৪ আগস্ট) ঢাকায় পৌঁছেছেন তিনি।
জানা যায়, হবিগঞ্জের চুনারুঘাট এলাকার সৌদি প্রবাসী শিল্পী আক্তার সম্প্রতি দেশে ফেরার আকুতি জানিয়ে তার বাবা-মায়ের কাছে টেলিফোনে আকুল আবেদন জানান। যা গত ৮ আগস্ট দেশের বেশ কয়েকটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হলে বিষয়টি দূতাবাসের নজরে আসে। এরপর সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার) তাৎক্ষণিকভাবে দূতাবাসের শ্রম কল্যাণ উইংকে গৃহকর্মী শিল্পী আক্তারকে তার পাওনা আদায় করে জরুরি ভিত্তিতে দেশে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ প্রেক্ষিতে দূতাবাসের শ্রম কল্যাণ উইং সৌদি আরবে কর্মরত বাংলাদেশি গৃহকর্মী শিল্পী আক্তারের কর্মস্থলের ঠিকানা ও পাসপোর্ট নম্বর সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সি ‘ফোর সাইট ইন্টারন্যাশনাল’- এর সঙ্গে যোগাযোগ করে সংগ্রহ করে।
দূতাবাসের আইন সহকারী সৌদি শ্রম মন্ত্রণালয়ের ‘সমর্থন ও সহায়তা বিভাগ’ এবং সৌদি আরবের আল-কাসিম অঞ্চলের সংশ্লিষ্ট থানা কর্তৃপক্ষের সহায়তায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গৃহকর্মী শিল্পী আক্তারের নিয়োগকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে তার পাওনা পরিশোধের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। এছাড়া সৌদি শ্রম আইন অনুযায়ী নিয়োগকর্তার খরচে তাকে বাংলাদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়া হয়। এ প্রেক্ষিতে গত ১৪ আগস্ট দেশে পৌঁছান শিল্পী আক্তার।
দেশে বাবা-মায়ের কাছে ফিরতে পেরে দূতাবাসের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন শিল্পী আক্তার। তার বাবা-মাও তাদের মেয়েকে ফিরে পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন এবং দূতাবাসকে ধন্যবাদ জানান।
আরও পড়ুন: শিশু গৃহকর্মীদের অধিকার নিশ্চিতের আহ্বান আইন প্রণেতা ও অধিকার কর্মীদের
সৌদি আরবে ২০২১ সালে গৃহকর্মী নিয়োগ চুক্তি বেড়েছে
১২০৬ দিন আগে
শিশু গৃহকর্মীদের অধিকার নিশ্চিতের আহ্বান আইন প্রণেতা ও অধিকার কর্মীদের
এক সংলাপে সংসদ সদস্য ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা গৃহকর্মী শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করতে সমন্বিত প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়েছেন।
সোমবার অ্যাকশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট (এএসডি) নামক একটি অলাভজনক সংগঠন পার্লামেন্ট মেম্বারস ক্লাব মিলনায়তনে ‘গৃহকর্মী শিশুর অধিকার ও সুরক্ষা: আইনের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক সংলাপের আয়োজন করে।
সংলাপে বক্তারা বলেন, সরকারের একার পক্ষে শিশুশ্রম বন্ধ করা বা গৃহকর্মী শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। বিষয়টি মোকাবিলায় সকল সুবিধাভোগীদের এগিয়ে আসা উচিত।
বক্তারা বিদ্যমান সীমাবদ্ধতা দূর করতে গৃহকর্মীদের সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি-২০১৫-এর পরামর্শে একটি পূর্ণাঙ্গ আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন।
তারা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, সরকার ২০১৫ সালে গৃহকর্মীদের সুরক্ষা ও কল্যাণের জন্য একটি নীতিমালা প্রণয়ন করলেও গৃহকর্মীরা এখনও পেশা হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি। ফলে গৃহকর্মীরা দমন-পীড়নের পরও ন্যায়বিচার পাচ্ছেন না।
শিশু অধিকার বিষয়ক সংসদীয় ককাসের চেয়ারম্যান শামসুল হক টুকু বলেন, সরকার গৃহকর্মীর অধিকার রক্ষায় একটি আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিশুদের অধিকার রক্ষার উদ্যোগ নিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, এই উদ্যোগের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের অধিকার রক্ষায় শিশুবান্ধব আইন ও নীতিমালার সংশোধন আনেন।
আরও পড়ুন: সৌদি আরবে ২০২১ সালে গৃহকর্মী নিয়োগ চুক্তি বেড়েছে
টুকু আরও বলেন, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে এবং বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে। শিশুদের অধিকার রক্ষায় পৃথক অধিদপ্তর গঠনের প্রস্তাবও চূড়ান্ত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘এরই মধ্যে নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। এখন একটি আইন প্রণয়ন করা এবং শিশুদের অধিকার রক্ষার জন্য একটি পৃথক অধিদপ্তর গঠন করা সময়ের ব্যাপার।’
সংলাপে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য রেজাউল করিম, সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল, এমপি সৈয়দা রুবিনা আক্তার ও গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার।
এএসডির প্রকল্প পরিচালক হামিদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সংসদ সচিবালয়ের পরিচালক লাবণ্য আহমেদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, এএসডির নির্বাহী পরিচালক এম এ করিম, শিশু অধিকার ফোরামের পরিচালক আবদুস শহীদ মাহমুদ, ডন ফোরামের মাহবুবুল হক, আইএলও প্রতিনিধি সৈয়দা মুনিরা সুলতানা, সুন্দরবন ও উপকূল রক্ষা আন্দোলনের নিখিল চন্দ্র ভদ্র এবং স্ক্যানের মনিরুজ্জামান মুকুল প্রমুখ।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগে নারী গ্রেপ্তার
শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতন, গৃহকর্তী আটক
১২৪৯ দিন আগে