ঈদুল ফিতর
এবারের ঈদে মুক্তির অপেক্ষায় ১০টি নাটক
ঈদ উৎসবের সঙ্গে এবার থাকছে ঝড়-বৃষ্টির আমেজ। তাই ঘরে থাকার আনন্দটা বেশ ভালো জমে উঠবে ঈদ নাটকের সঙ্গে। ঈদুল ফিতর ২০২৪ এ এই আবহকে কেন্দ্র করে চাঁদ রাত থেকে শুরু করে পুরো সপ্তাহজুড়ে জড়ো হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের নাটক। উৎসবমুখরতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রোমান্টিক ও কমেডির মিশেলে প্রস্তুতি নিয়েছে ছোট পর্দার ঈদ নিবেদন। পাশাপাশি বৈচিত্র্যপূর্ণ কিছু নাটকীয়তাও স্থান পেয়েছে নাট্যপ্রেমীদের ভিন্ন স্বাদ দিতে। চলুন, সেগুলোর মধ্যে থেকে আসন্ন ঈদের সেরা ১০টি নাটকের ব্যাপারে জেনে নেওয়া যাক।
আসন্ন ঈদুল ফিতর ২০২৪ এ যে ১০টি নাটক দর্শকনন্দিত হওয়ার অপেক্ষায়
.
জাদুর শহর
ধনী পরিবারের সন্তান মাদকের টাকার জন্য জড়িয়ে পড়ে ছিনতাইয়ে। এমনকি সেই ছিনতাইয়ে একজনের মৃত্যু পর্যন্ত হয়। কাহিনী সামনে এগোনোর সঙ্গে উন্মুক্ত হতে থাকে এই ঘটনার সঙ্গে নাটকের প্রধান চরিত্রগুলোর এক বিস্ময়কর যোগসূত্র।
এমনি গল্প নিয়ে নাটকটি পরিচালনা করেছেন তুহিন হোসেন। চিত্রনাট্যে ছিলেন নাহিদ হাসনাত। শ্রেষ্ঠাংশে রয়েছেন ফারহান আহমেদ জোভান এবং সাফা কবির। এছাড়া অন্যান্য ভূমিকায় রয়েছেন হিন্দোল রয়, দিশা এবং আখি আক্তার।
‘জাদুর শহর’ দেখা যাবে এনটিভির পর্দায় এবং তারপর মুক্তি পাবে এনটিভি নাটক ইউটিউব কন্টেন্ট হিসেবে।
আরও পড়ুন: আম্বানিপুত্রের রাজকীয় বিবাহ-পূর্ব অনুষ্ঠানে দেশি-বিদেশি তারকা ও খ্যাতিমান ব্যক্তিত্বদের মিলনমেলা
প্রেম এসেছিল একবার
রামিম একটি বিজ্ঞাপন সংস্থার কর্মকর্তা। একটি বিজ্ঞাপনে ভয়েজ ওভার দেওয়ার সুবাদে নীলিমার সঙ্গে পরিচয় হয় রামিমের। তাদের দুজনের মধ্যেই একটি সাধারণ ব্যাপার হচ্ছে- দুজনেই কবিতাপ্রেমী। আর এর ভিত্তিতেই পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব এবং সে বন্ধুত্ব পরিণত হয় পরিণয়ে।
এই মিষ্টি প্রেমের গল্প নিয়ে চিত্রনাট্য বানিয়েছেন মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ। আর সেই চিত্রনাট্যকে নাটকে রূপ দিয়েছেন পরিচালক রুবেল হাসান।
নাটকে রামিমের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ইয়াশ রোহান এবং নীলিমা চরিত্রে রয়েছেন তানজিম সাইয়ারা তটিনী। অন্যান্যদের মধ্যে আছেন- মিলি বাশার, শম্পা নিজাম, নিজাম উদ্দিন তামুর এবং আনন্দ খালিদ।
প্রযোজনা সংস্থা সিএমভি’র ব্যানারে নির্মিত নাটকটি মুক্তি পাবে সিএমভি’র ইউটিউব চ্যানেলে।
আরও পড়ুন: ২০২৪ সালে ভিসা ছাড়াই যেসব দেশে যেতে পারবেন বাংলাদেশিরা
শেষমেশ
‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ ধারাবাহিক-খ্যাত পরিচালক কাজল আরেফিন অমি এবার দেখাতে চলেছেন পারিবারিক গল্প। ‘শেষমেশ’ শিরোনামের এই নাটকে পারিবারিক সম্পর্কগুলোকে ফুটিয়ে তোলা হবে হাস্যরসের মাধ্যমে।
নাটকে বিভিন্ন ধরনের অযাচিত অথচ কষ্টসাধ্য কাজের মাধ্যমে একটি ছেলে তার পরিবারকে খুশী করার চেষ্টা করে। কিন্তু শেষমেশ তা কতটুকু সুখের আর কতটুকু বিড়ম্বনাপূর্ণ হয় তারই হিসেব চলে গোটা নাটক জুড়ে।
বরাবরের মতো এবারও অমির পুরনো নাট্যগ্রুপ থেকে থাকছেন মনিরা মিঠু, জিয়াউল হক পলাশ, পারসা ইভানা, পাভেল, চাষি আলম এবং শিমুল শর্মা। পাশাপাশি আরও দেখা যাবে সুমন পাটোয়ারী, সাদিয়া তানজিন, ইশরাত জাহিন এবং তানজিম হাসান অনিককে।
নাটকটি এই ঈদে ক্লাব ইলিভেন এন্টারটেইনমেন্টের ইউটিউব কন্টেন্ট হিসেবে থাকছে।
আরও পড়ুন: একই প্ল্যাটফর্মে দুই তারকা শাকিব-সাকিব
আমরণ বিয়েশন
সেরনিয়াবাত শাওনের রচনা ও পরিচালনায় অদ্ভূত শিরোনামের এই নাটকটি সম্পূর্ণ কমেডি ঘরানার। ফাহাদকে বিয়ে করার জন্য সরাসরি বাসায় এসে হাজির হয় তার প্রেমিকা মারিয়া। ফাহাদ বিয়েতে অস্বীকৃতি জানালে তার বাসাতেই আমরণ অনসন শুরু হয় মারিয়ার। এমন অদ্ভূত কাণ্ডে বাসায় সাংবাদিকরাও এসে জড়ো হয়। বিয়ের জন্য অনসনকে এখানে নাম দেওয়া হয়েছে বিয়েশন।
এখানে ফাহাদ হিসেবে থাকছেন উদীয়মান তারকা জুনায়েদ বুকদাদি। আর মারিয়া চরিত্রে আছেন এ সময়ের আলোচিত অভিনেত্রী তানজিন তিশা।
নাটকের সহশিল্পীরা হলেন শিল্পী সরকার অপু, মেহেদী হাসান পিয়াল, দিলু মজুমদার, তিশা চৌধুরী, এবং নীলা ইস্রাফিল। ‘আমরণ বিয়েশন’ এনটিভি থেকে সম্প্রচারণের জন্য নির্ধারিত। অতঃপর এটি এনটিভি নাটক ইউটিউব কন্টেন্ট হিসেবেও মুক্তি পাবে।
আরও পড়ুন: সুপারশী: যে দ্বীপে পুরুষদের প্রবেশ নিষিদ্ধ
বুনোফুল ও ভাঙা ফুলদানি
জনপ্রিয় জুটি খায়রুল বাশার ও সাদিয়া আয়মানের এই রোমান্টিক নাটকটি পরিচালনা করেছেন সেলিম রেজা। গল্প, সংলাপ ও চিত্রনাট্যে ছিলেন নাসির খান।
ইমতিয়াজ ও রানু পরস্পরকে ভালবাসে। কিন্তু রানু পরিবার এই সম্পর্ককে স্বীকৃতি দিতে নারাজ। কারণ ইমতিয়াজের একটি পা খোঁড়া। এই প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে তাদের প্রণয় আদৌ আলোর মুখ দেখতে পারবে কিনা তারই গল্প বলেছে এই নাটকটি।
অন্যান্য অভিনয়শিল্পীর হলেন তুতিয়া ইয়াসমিন পাপিয়া, আনিকা তাবাসসুম হায়াত, নাবিলা আলম পলিন এবং নুসরাত মেঘলা।
আরও পড়ুন: রেস্তোরাঁ-শপিং মলে প্রবেশের আগে যে বিষয়গুলোতে সাবধান থাকা জরুরি
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বিমানের অতিরিক্ত ফ্লাইট
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের জন্য বিগত বছরগুলোর মতো এবারও অভ্যন্তরীণ রুটে অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) বিমানের বিক্রয় ও বিপণন অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে সরাসরি বিমান যোগাযোগ চালু করতে আগ্রহী সুইজারল্যান্ড
গত বছরের ঈদকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এয়ারলাইন্সগুলো ঢাকা-রাজশাহী, ঢাকা-সৈয়দপুর ও ঢাকা-বরিশাল রুটে ১২টি করে ফ্লাইট পরিচালনা করেছে এবং ঢাকা-যশোর রুটে ছয়টি অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনা করেছে।
এ বছর অভ্যন্তরীণ রুটে অতিরিক্ত ৪০টি ফ্লাইট পরিচালনা করবে এয়ারলাইন্সটি।
তবে যাত্রীদের আসনের প্রাপ্যতা ও চাহিদার উপর নির্ভর করে টিকিটের দাম বাড়তে পারে।
বিভিন্ন রুটে মূল ভাড়ায় ১৫ থেকে ২৫ শতাংশ ছাড় দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বিমানের।
অফারটি চলবে রমজান মাসের ১ থেকে ২০ তারিখ পর্যন্ত।
বর্তমানে (গ্রীষ্ম মৌসুম) অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন রুটে প্রতি সপ্তাহে ১৮৩টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে বিমান।
এর মধ্যে- ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে সপ্তাহে সর্বোচ্চ ৪১টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে ২.২২৮ কেজি স্বর্ণ জব্দ, ২ যাত্রী আটক
ঢাকা বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের কাজ শেষ হবে ৫ এপ্রিলের মধ্যে
ঈদে সড়কপথে ঢাকা ছাড়বে ৯০ লাখ মানুষ: এসসিআরএফ
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রাজধানীসহ এর আশপাশের প্রায় দেড় কোটি মানুষ স্বজনের কাছে ফিরবে। এসব মানুষ ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনসহ ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলায় বসবাস করে।
এর মধ্যে সড়কপথে যাবে ৬০ শতাংশ। এই হিসেবে সড়কপথের যাত্রীসংখ্যা প্রায় ৯০ লাখ। অবশিষ্ট ৪০ শতাংশ মানুষ নৌ ও রেলপথে ঢাকা ছাড়বে।
বুধবার (১৪ জুন) ঢাকায় গণমাধ্যমকর্মীদের সংগঠন শিপিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরাম (এসসিআরএফ) প্রকাশিত ঈদ-পূর্ব প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঈদের ছুটিতে ঢাকার ৬০ শতাংশ মানুষ সড়কপথে বাড়ি যাবে: এসসিআরএফ
অবশ্য সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি কোনো দপ্তরে ঈদে বাড়ি ফেরা বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ ডাটাবেজ না থাকায় প্রতিবেদনটি শতভাগ তথ্যনির্ভর নাও হতে পারে বলে জানিয়েছে সংগঠনটির সভাপতি আশীষ কুমার দে।
এসসিআরএফ জানায়, বিগত বছরগুলোর মতো এবারও সড়কপথে জনভোগান্তি ও দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। তবে নির্বিঘ্ন ঈদ যাত্রার জন্য সরকার ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে।
সর্বশেষ জনশুমারির বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা বিভাগে ৪ কোটি ৪০ লাখ মানুষ বাস করে। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকার জনসংখ্যা যথাক্রমে ৫৯ লাখ ৭৯ হাজার ৫৩৭ ও ৪২ লাখ ৯৯ হাজার ৩৪৫।
দেশের প্রায় ৭৫ শতাংশ গার্মেন্টস শিল্প গাজীপুর অঞ্চলে হওয়ায় গাজীপুর মহানগরের জনসংখ্যা এখন প্রায় ৭০ লাখ। নারায়ণগঞ্জ মহানগরে বাস করে ২৫ লাখ মানুষ।
এসব শহরের বাইরে তিন জেলায় আরো প্রায় ৫০ লাখ মানুষ বাস করে। এছাড়া নরসিংদী ও মানিকগঞ্জ জেলার জনসংখ্যা যথাক্রমে ২৬ ও ২০ লাখ।
এসসিআরএফ জানায়, ঈদুল আজহা উপলক্ষে জনবহুল বড় শহরসহ শিল্প ও বাণিজ্যিক এলাকাগুলোর অন্তত ৫০ শতাংশ মানুষ বর্তমান আবাসস্থল ছেড়ে যায়।
গবেষক, স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান এবং পরিবহন বিষয়ক বিভিন্ন সংগঠনের তথ্যমতে, সব মিলিয়ে ঢাকা অঞ্চল ছেড়ে যায় প্রায় দেড় কোটি মানুষ।
সাধারণত এক সপ্তাহ আগে ঈদযাত্রা শুরু হয় উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, মাত্র সাতদিনে বিপুলসংখ্যক মানুষকে সুশৃঙ্খলভাবে গন্তব্যে পৌঁছে দেয়ার সক্ষমতা সড়ক পরিবহন খাতে নেই।
সরকার সড়ক অবকাঠামো উন্নয়নে পর্যাপ্ত অর্থবরাদ্দ দিলেও দূরপাল্লার অনেক সড়কের কিছু স্থানের অবস্থা এখনো বেহাল রয়েছে। সারা দেশে আট শতাধিক ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক রয়েছে।
ঈদকে কেন্দ্র করে মহাসড়কগুলোতে প্রাণি বহনকারী ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানসহ হাজার হাজার মোটরসাইকেল ও ব্যক্তিগত গাড়ি চলবে। এছাড়া জাতীয় মহাসড়কসহ বিভিন্ন সড়কের অনেক স্থানে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে টোল আদায় করা হয়।
সব মিলিয়ে বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘ যানজট, বাসের সময়সূচি বিপর্যয় এবং অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনার ঝুঁকিও রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
তবে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সরকার নির্বিঘ্ন ঈদযাত্রার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষকে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন।
পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো এবং সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থা নানা পদক্ষেপ নিয়েছে।
এতে ঈদ যাতায়াতে জনদুর্ভোগ অনেক কমবে।
আরও পড়ুন: মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৩ মাসে ৫৭৯ জনের মৃত্যু: এসসিআরএফ
রেল দুর্ঘটনায় ২০১৯ সালে ৪২১ জনের প্রাণহানি: এসসিআরএফ
এবার ঈদুল ফিতরের যাত্রা স্বস্তিদায়ক ছিল: কাদের
এবার ঈদুল ফিতরের যাত্রা স্বস্তিদায়ক ছিল বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ঈদের পর প্রথম কর্মদিবসে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়কালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, এবার আমরা একটা হ্যাসেল ফ্রি ঈদ উদযাপন করতে পেরেছি। এবার যাত্রা ছিল স্বস্তিদায়ক। এবং ঘরমুখো যাত্রীদের জন্য এরচেয়ে হ্যাসেল ফ্রি যাত্রা গত অনেক বছর ধরে হয়ে উঠেনি, প্রধানমন্ত্রীও খুশী।
আমাদের সকলের সন্দেহ ছিল পদ্মায় মোটরসাইকেল নিয়ে সমস্যা হতে পারে। বাইকারদের অসন্তোষ ছিল, তারপরও আমরা সার্বিক সংকট হবে বলে বন্ধ রেখেছিলাম কয়েকমাস। চালু করে দেখেছি আমাদের তরুণরা যে শৃঙ্খলার সঙ্গে চালিয়েছে তা অসাধারণ। সুশৃঙ্খলভাবে তারা পদ্মা সেতু দিয়ে যাতায়াত করেছে।
আরও পড়ুন: এবারের ঈদ যাত্রায় কোনো ভোগান্তি নেই: কাদের
ওবায়দুল কাদের বলেন, গাজীপুর রুটে বিআরটি প্রজেক্ট নিয়ে শঙ্কা ছিল। কিন্তু মানুষ নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পেরেছে। মানুষের ফিরে আসা শুরু হবে। ঘরমুখো যাত্রা যেমন স্বস্তিদায়ক ছিলো, তেমনি ফিরে আসাটাও যেনো স্বস্তিদায়ক হয়। ঈদের আগে সড়ক দুর্ঘটনা কম হলেও পরের যাত্রায় দুর্ঘটনা অনেক বেড়ে যায়। এ সময় একটু কঠোরভাবে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে হবে। কর্মস্থলে ফেরার যাত্রা নিরাপদ করার জন্য আপনারা চেষ্টা করবেন, যাতে অতীতের পুনরাবৃত্তি না হয় সেদিকে সবার লক্ষ্য রাখতে হবে।
এবার সবাই ইতিবাচক বলছে, স্বস্তিদায়ক যাত্রা হয়েছে সেটা সবাই বলছেন। যেভাবে এবার আমাদের কর্মকর্তারা যার যার দায়িত্ব পালন করেছ সেটা আমাদের জন্য স্বস্তিদায়ক। সবার সম্মিলিত প্রয়াসে এটি সম্ভব হয়েছে। কেউ কাজে ফাঁকি দিয়েন না। কাজকে ফাঁকি দেয়া মানে দেশকে ফাঁকি দিয়েছেন। বিশ্ব সংকটের মধ্যে আমরা চ্যালেঞ্জিং সময় পার করছি।
মন্ত্রী বলেন, এ বছর নির্বাচনের বছর। অনেকগুলো কাজ আমাদের রয়ে গেছে। এমআরটি লাইন-৬ এ বছর শেষ করার কথা বলেছি, সেভাবেই কাজ এগুচ্ছে। আমরা একটা প্রকল্পে পিছিয়ে ছিলাম বাস র্যাপিড ট্রানজিট, সেটা অনেকটা অগ্রসর করেছে। এবার যানজটের বিরম্বনা সেভাবে সইতে হয়নি। কোথাও তেমন কমপ্লেইন আসেনি। আমরা ভবিষ্যতের জন্য আরও কিছু কাজ আছে, সেগুলো শেষ করতে হবে। ঢাকা-সিলেট শুরু হলো, ঢাকা-চট্টগ্রাম ছয় লেন করতেই হবে। খুলনা-যশোর, নড়াইল থেকে বেনাপোল, ভাঙ্গা-বরিশাল, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার এগুলো করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর টোকিও সফরে চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের বিষয়টিও অন্তভুক্ত থাকবে বলে আশা করছি।
তিনি আরও বলেন, আজ বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব নিয়েছে। শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর আমরা সামনে থেকে দেখেছি।
আরও পড়ুন: বৃহস্পতিবার থেকে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলবে: ওবায়দুল কাদের
ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে আজ অফিস খুলেছে
ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে আজ অফিস খুলেছে। কিন্তু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপস্থিতি কম। কর্মস্থলগুলোতে এখনও ফেরেনি পুরো কর্মচাঞ্চল্য।
সোমবার (২৪ এপ্রিল) ঈদের পর প্রথম কর্মদিবসে সচিবালয় কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপস্থিতি অনেক কম। বেশিরভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐচ্ছিক ছুটিতে রয়েছেন।
আজ সচিবালয়ে সকালে সরেজমিনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ঘুরে এই চিত্র দেখা যায়।
আরও পড়ুন: ঈদের ছুটি আরও ১ দিন বাড়ল
গত ১৯ এপ্রিল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি শুরু হয়। তাদের সেই ছুটি শেষ হয় রবিবার (২৩ এপ্রিল)।
জানা যায়, যারা দূর-দূরান্তে ঈদ করতে গেছেন, তারা সবাই ঐচ্ছিক ছুটি নিয়েছেন। তাই উপস্থিতি কম।
ঈদের পর প্রথম কর্মদিবসে সচিবালয়ের বারান্দা, সিড়ি, লিফট, সর্বত্রই ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় চলছে। একে অপরকে দেখা মাত্রই বুকে জড়িয়ে নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: ২০২৩ সালে ব্যাংকগুলো সরকারি ছুটি পাবে ২৪ দিন
জনগণ ‘দুঃখ-কষ্টের’ মধ্য দিয়ে ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জনগণ ‘দুঃখ-কষ্টের’ মধ্য দিয়ে ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে।
শনিবার বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ফখরুল বলেন, ‘এবারের ঈদ আমাদের জন্য খুবই বেদনাদায়ক ও কঠিন ছিল। আমাদের অনেক নেতাকর্মী কারাগারে রয়েছেন, অন্যদিকে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে সাধারণ মানুষ এবারের ঈদের আনন্দ উপভোগের জন্য প্রয়োজনীয় ন্যূনতম জিনিসপত্র কিনতে পারছে না। তাই, তারা দুর্দশা ও কষ্টের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।’
ফখরুল আরও বলেন, এবারের ঈদের বাজার মোটেই গতি পায়নি, কারণ সব পণ্যের দাম ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায় মানুষের ক্রয়ক্ষমতা পুরোপুরি কমে গেছে। যখন দামের স্তর বৃদ্ধি পায়, তখন একই পরিমাণ অর্থ স্পষ্টতই কম কিনতে সক্ষম হয়।
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তিনি দেশবাসীকে 'ঈদ মোবারক' জানিয়েছেন।
সকাল ১১টার দিকে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও নজরুল ইসলাম খানকে সঙ্গে নিয়ে মির্জা ফখরুল জিয়ার কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পরে তারা দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে ফাতেহা পাঠ করেন এবং বিএনপির প্রতিষ্ঠাতার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করেন।
আরও পড়ুন: সরকার আগুন নিয়ে খেলছে, মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পুড়িয়ে দিচ্ছে: ফখরুল
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার মিথ্যা প্রচারণার মাধ্যমে, বিশেষ করে গণমাধ্যমের সহায়তায় জনগণকে একটি ধারণা দিতে চায় যে দেশ ও অর্থনীতি ভালো পথে চলছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে দেশে এখন নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে। প্রকৃতপক্ষে, দেশে একটি চরম অর্থনৈতিক সংকট রয়েছে।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, অর্থনীতিবিদরা মনে করেন যে খুব শিগগিরই দেশ মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকটের দিকে যাবে। কিন্তু এই সরকার জোর করে মিথ্যা ও ভুল প্রচারণা চালিয়ে ক্ষমতায় টিকে আছে।
আন্দোলনের মাধ্যমে এই অবস্থার পরিবর্তন আনতে দেশের জনগণকে জেগে ওঠার আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘অতীতে বাংলাদেশের মানুষ আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের অধিকার ফিরিয়ে এনেছে। তারা এবারও সংগ্রামের মাধ্যমে তাদের অধিকার পুনরুদ্ধার করবে।’
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে, পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে হবে এবং একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে, যা এমন একটি সরকার তৈরি করবে যা জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক ভাগ করে নেবে এবং এভাবে জনগণের কাছে জবাবদিহি করবে।
আরও পড়ুন: আগামী নির্বাচনের আগে বিএনপি নেতাদের দোষী সাব্যস্ত করে জেলে পাঠানোই সরকারের মূল পরিকল্পনা: ফখরুল
সংসদ চত্বরে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত
শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়- ঈদের জামাতে জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, সরকারি প্রতিষ্ঠান কমিটির চেয়ারম্যান ও সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বিভিন্ন এলাকার মানুষ অংশ নেন বলে জানা গেছে।
খুতবা ও জামাত শেষে দেশ ও জাতির পাশাপাশি সমগ্র মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ, সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
মোনাজাত পরিচালনা করেন সংসদ সচিবালয়ের মসজিদের খতিব ইমাম ক্বারী আবু রায়হান।
ঈদের জামাত শেষে স্পিকার শিরীন শারমিন তার বাসভবনে জাতীয় সংসদ সদস্য ও সংসদ সচিবালয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
আরও পড়ুন: সিলেটের শাহী ঈদগাহে লাখো মানুষের ঈদের নামাজ আদায়
৫ লাখের বেশি মুসল্লির অংশগ্রহণ শোলাকিয়ার ঈদের জামাতে
ঈদুল ফিতর উদযাপন হবে শনিবার
শুক্রবার সন্ধ্যায় শাওয়ালের চাঁদ দেখা যাওয়ায় বাংলাদেশের মুসলমানরা শনিবার তাদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উদযাপন করবে।
মাগরিবের নামাজের পর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ কার্যালয়ে এক সভা শেষে শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
আরও পড়ুন: সৌদি আরবে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে শুক্রবার
ইতোমধ্যে রাজধানীসহ দেশের অন্যান্য স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
এদিকে গ্রামের বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে ইতোমধ্যে রাজধানী ছেড়েছেন লাখো মানুষ।
এ উপলক্ষে টেলিভিশন চ্যানেল ও রেডিও স্টেশনগুলো বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে এবং সরকারি ও বেসরকারি অফিস ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে।
এছাড়া হাসপাতাল, জেল, সরকার পরিচালিত শিশু হোম-ছোটমনি নিবাস-প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য কেন্দ্র, আশ্রয়কেন্দ্র, এতিমখানা, ভবঘুরে কল্যাণ ও নিঃস্ব কল্যাণ কেন্দ্রে বিশেষ খাদ্য পরিবেশন করা হবে।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরের ৪০ গ্রামে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদুল ফিতর উদযাপন
সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে দিনাজপুরে পৃথক স্থানে ঈদুল ফিতর উদযাপন
ঈদকে সামনে রেখে ঢাকায় বেড়েছে মাংসের দাম
ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে রাজধানীতে চাহিদা বাড়ায় বেড়েছে গরুর মাংস ও সব ধরনের মুরগির মাংসের দাম।
বৃহস্পতিবার রাজধানীতে গরুর মাংসের দাম কেজিতে ৫০ টাকা বেড়েছে এবং সব ধরনের মুরগির দাম ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকা বেড়েছে।
আরও পড়ুন: চাঁদাবাজি বন্ধ করা গেলে মাংসের দাম কমবে: সাঈদ খোকন
ঈদে গরুর দাম ও বহন খরচ বেড়েছে দাবি করে ঢাকার বাজারে গরুর মাংসের দাম কেজিতে ৫০ টাকা বাড়িয়েছে কসাইরা।
হাতিরপুল, কারওয়ান বাজার, খিলগাঁও, মালিবাগ, শান্তিনগর, রামপুরা ও বাসাবোসহ বিভিন্ন কিচেন মার্কেটে ঘুরে দেখা যায়, বুধবার প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০ টাকায় বিক্রি হলেও কসাইরা প্রতি কেজি ৮০০ টাকা (গড়) বিক্রি করছে।
জানতে চাইলে হাতিরপুল এলাকার কসাই রতন বলেন, রমজানের প্রথম থেকে ২৭ তারিখ পর্যন্ত কেজি ছিল ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা। আজ (বৃহস্পতিবার) থেকে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০০ টাকায়।
তিনি বলেন, প্রতি বছর ঈদের আগে মাংসের দাম কেজিতে ৩০ থেকে ৫০ টাকা বেড়ে যায়।
এছাড়া গরুর দাম বেশি এবং পরিবহন খরচও বেশি। তাই মাংসের দাম বেড়েছে বলে জানান তিনি।
রামপুরার গরুর মাংস বিক্রেতা হাবিবও একই কথা বলেছেন।
এছাড়া প্রতি কেজি মাটন বিক্রি হচ্ছে ১১৫০ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত।
গরুর মাংস কিনতে হাটে আসা শান্তিনগরের বাসিন্দা ইয়াকুব জানান, প্রতিদিনই দাম বাড়ছে। ‘রমজানের শুরুতে আমি এক কেজি গরুর মাংস ৭৫০ টাকায় কিনেছিলাম। আজ (বৃহস্পতিবার) ৮০০ টাকায় কিনেছি। আমাদের বলার কিছু নেই।’
ব্রয়লার মুরগির দামও বেড়েছে।
কারওয়ান বাজারের মুরগির ব্যবসায়ী সোহাগ বলেন, ‘গতকাল বুধবারও ব্রয়লার মুরগি ২৩০ টাকায় বিক্রি করেছি) যা আজ প্রতি কেজি ২৬০ টাকা।’
মোরগ (সোনালী) ও লেয়ার মুরগির দামও বেড়েছে। বৃহস্পতিবার সোনালী (মোরগ) মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩৬০ থেকে ৩৬০ টাকায়।
লেয়ার (লাল) প্রতি কেজি সাদা লেয়ার ৩৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকায়।
গত সপ্তাহের তুলনায় লেয়ার মুরগির দাম কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে।
বৃহস্পতিবার স্থানীয় জাতের মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা, যা বুধবার বিক্রি হয়েছে ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায়।
তবে ঈদুল ফিতর উদযাপনে নগরবাসী ঢাকা ছেড়ে যাওয়ায় রাজধানীতে বৃহস্পতিবার সবজির দাম কমেছে।
আরও পড়ুন: ঢাকায় ঈদ উপলক্ষে বেড়েছে গরু-মুরগির মাংসের দাম
করোনাভাইরাস ঢাকায় বাড়িয়ে দিয়েছে মাংসের দাম
শোলাকিয়ায় চলছে দেশের সর্ববৃহৎ ঈদ জামাতের প্রস্তুতি
ঈদুল ফিতরের ১৯৬তম জামাতের জন্য মোটামুটি প্রস্তুত করা হয়েছে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান।
ঈদের জামাতে অংশ নিতে আসা মুসল্লিদের নিরাপত্তায় চার স্তরে কাজ করবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পূর্বের চেয়ে দেড়গুণ বেশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে শোলাকিয়ায়। মুসল্লিদের সঙ্গে মোবাইল ও ছাতা নেওয়ার ওপর দেওয়া হয়েছে নিষেধাজ্ঞা।
সকাল ১০টায় শুরু হবে ঈদুল ফিতরের জামাত। জামাতে ইমামতি করবেন বাংলাদেশ ইসলাহুল মুসলিমিন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ।
ঈদুল ফিতরের নামাজ সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের লক্ষ্যে ঈদগাহ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মাঠ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদেরকে তিনি এ কথা জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ঈদগাহ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) নূরে আলম, ময়মনসিংহ র্যাব-১৪’র অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান, র্যাব- ১৪ (সিপিসি- ২) কিশোরগঞ্জের ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. শাহরিয়ার মাহমুদ খানসহ আরও অনেকে।
আরও পড়ুন: বঙ্গবাজার অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ঈদ উপহার হিসেবে ৯ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রধানমন্ত্রীর
মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ আরও বলেন, শোলাকিয়া ঈদগাহে জঙ্গি হামলার সতর্কতা হিসেবে অতিরিক্ত নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হবে। পুলিশ ও র্যাবের পাশাপাশি পাঁচ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েনসহ চার স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। তাছাড়াও মাঠে ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন এবং সিসি ক্যামেরা দ্বারা পুরো মাঠ মনিটরিং করা হবে।
তিনি আরও বলেন যে এ কাজে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন থাকবে। ছয়টি অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিয়ন সার্বক্ষণিক মোতায়েন থাকবে। কোনোভাবেই মোবাইল ফোন ও ছাতা নিয়ে মাঠে প্রবেশ করা যাবে না। বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা ও ভাবগাম্ভির্য্যের মধ্য দিয়ে ১৯৬তম ঈদের জামাতটি অনুষ্ঠিত করতে পারব।
ঈদের জামাতে বিকল্প ইমাম হিসেবে থাকবেন মাওলানা সোয়াইব বিন আ. রউফ।
ছয়টি ওয়াচ টাওয়ার থাকবে, এর মধ্যে চারটি পুলিশের ও দু’টি র্যাবের। সার্বক্ষণিক সিসি ক্যামেরা ও ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হবে। বোম ডিসপোজাল টিম, পুলিশের কুইক রেসপন্স টিম, মাইন ডিটেক্টর ইউনিটসহ পুলিশের অন্যান্য টিম কাজ করবে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়, মুসল্লিদের দেহ তল্লাশির পাশাপাশি একমাত্র জায়নামাজ ও মাস্ক ছাড়া আর কোনো কিছু নিয়ে মাঠে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। তবে বৃষ্টি হলে ছাতা নিয়ে আসার বিষয়টি বিবেচনাধীন থাকবে।
এদিকে শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতে অংশগ্রহণের সুবিধার্থে ভৈরব-কিশোরগঞ্জ-ভৈরব ও ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ লাইনে ‘শোলাকিয়া এক্সপ্রেস’ নামে দুটি স্পেশাল ট্রেন চলাচল করবে। শোলাকিয়া এক্সপ্রেস-১ ভৈরব থেকে ছাড়বে সকাল ৬টায়, কিশোরগঞ্জ পৌঁছাবে সকাল ৮টায়, আবার কিশোরগঞ্জ থেকে ছেড়ে যাবে দুপুর ১২টায়, ভৈরব পৌঁছাবে দুপুর ২টায়। শোলাকিয়া এক্সপ্রেস-২ ময়মনসিংহ থেকে ছাড়বে সকাল পৌনে ৬টায়, কিশোরগঞ্জ পৌঁছাবে সকাল সাড়ে ৮টায়; আবার কিশোরগঞ্জ থেকে ছেড়ে যাবে দুপুর ১২টায় এবং ময়মনসিংহে পৌঁছাবে বিকাল ৩টায়।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ২০১৬ সালের ৭ জুলাই ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য, এক নারী ও এক জঙ্গিসহ চারজন নিহত হন। ওই জঙ্গি হামলায় পুলিশসহ ১৬ মুসল্লি আহত হন। এরপর থেকে আমরা সব সময় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি ও করছি।
তিনি আরও বলেন, এবার পূর্বের চেয়ে দেড়গুণ বেশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে শোলাকিয়ায়। তাই আমরা কিছু বাড়তি আয়োজন করেছি। এর মধ্যে ঈদগাহ ময়দানকে লক্ষ্য করে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি মানুষ যখন ঈদগাহ ময়দানে আসবেন পুলিশের চারটি স্থাপনা পেরিয়ে আসতে হবে। সেটি চেকপোস্ট হোক বা পিকেট হোক। আবার কোথাও কোথাও পাঁচ থেকে ছয়টি স্থাপনা পেরিয়ে ময়দানে আসতে হবে। সাদা পোশাকে পুলিশ কাজ করবে। আমরা কোনো হুমকি মনে করছি না।
ময়মনসিংহ র্যাব-১৪’র অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান জানান, স্নাইপার, ড্রোন ক্যামেরা, দু’টি ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। এ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতে শতাধিক র্যাব সদস্য মোতায়ন থাকবে। তারা দুই থেকে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কাজ করবেন। জঙ্গি হামলার কোনো থ্রেট বা হুমকি নেই বলেও তিনি জানান।
দীর্ঘদিনের রেওয়াজ অনুযায়ী ঈদের জামাত শুরু হওয়ার পাঁচ মিনিট পূর্বে তিনটি, তিন মিনিট পূর্বে দুইটি এবং এক মিনিট পূর্বে একটি শটগানের গুলি ফুটিয়ে আওয়াজ করা হয়।
আরও পড়ুন: ঈদ উপলক্ষে ৯ দিন বন্ধ থাকবে কুড়িগ্রামের সোনাহাট স্থলবন্দর