জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
জবির রেজিস্ট্রার দপ্তরে ব্যাপক রদবদল, জানেন না উপাচার্য
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) রেজিস্ট্রার দপ্তরে ২৪ জন কর্মকর্তার দায়িত্ব পুনর্বণ্টন করা হয়েছে, যা উপাচার্য বা রুটিন দায়িত্বে থাকা কোষাধ্যক্ষের অনুমতি ছাড়াই করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. শেখ গিয়াস উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ পরিবর্তন কার্যকর করা হয়।
জানা যায়, উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিদেশ সফরে ছুটিতে যান। এর কিছুদিন পরেই রেজিস্ট্রার এ আদেশ জারি করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সিনিয়র কর্মকর্তা অভিযোগ করে বলেন, উপাচার্য ছুটিতে যেতেই রেজিস্ট্রার তড়িঘড়ি করে বদলির আদেশ দেন। তার এ ধরনের ক্ষমতা নেই এবং এটি সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাচারিতা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন কর্মকর্তা অ্যাডভোকেট রঞ্জন কুমার দাস বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় আইন কিংবা সংবিধিতে রেজিস্ট্রারের এমন ক্ষমতা নেই। বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৫-এর ১৩(ছ) ধারায় বলা হয়েছে, রেজিস্ট্রার সংবিধি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী কিংবা একাডেমিক কাউন্সিল, সিন্ডিকেট বা উপাচার্যের অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন।
পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে উত্তপ্ত রাবি, উপ-উপাচার্য ও প্রক্টর অবরুদ্ধ
অভিযোগের বিষয়ে রেজিস্ট্রার গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘এটি বদলি নয়, অভ্যন্তরীণ দায়িত্ব পুনর্বণ্টন করা হয়েছে। এর জন্য উপাচার্যের অনুমতি প্রয়োজন হয় না।’ তবে তিনি স্বীকার করেন, আইন বা সংবিধিতে এর সুস্পষ্ট উল্লেখ নেই।
রুটিন দায়িত্বে থাকা কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শারমিন বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি, তবে এতে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না। উপাচার্য আদেশ দিয়েছেন কি না, সে সম্পর্কেও আমি কিছু জানি না।’
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। বিষয়টি আমার নজরে এসেছে এবং আলোচনা চলছে। যৌক্তিক সমাধান হবে ইনশাআল্লাহ। কেন রেজিস্ট্রার এ কাজ করেছেন, তা আমি জানি না।’
৭১ দিন আগে
চবি ও বাকৃবি শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বিক্ষোভ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীদের উপর সাম্প্রতিক হামলার প্রতিবাদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের(জবি) শিক্ষকরা মানববন্ধন করেছেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (জেএনইউটিএ) ব্যানারে মঙ্গলবার(২ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরাও সংহতি প্রকাশ করেছেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, শিক্ষার্থীদের উপর এই ধরনের হামলা অগ্রহণযোগ্য এবং ক্যাম্পাসে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করেছে। তারা অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তার এবং দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক বেলাল হোসেন বলেন, ‘সাম্প্রতিক দিনগুলোতে রাজনৈতিক নেতা ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলা ৫ আগস্টের পূর্ববর্তী পরিস্থিতির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। এই ঘটনায় জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।’
আরও পড়ুন: বাকৃবির আর্থিক লেনদনকারী প্রতিষ্ঠানে তালা ঝোলালেন আন্দোলনকারীরা
অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইস উদ্দিন বলেন, ‘নুরুল হক নূরের উপর হামলার ঘটনাটি যথাযথভাবে তদন্ত করতে হবে। লাল টি-শার্ট পরা পুলিশ সদস্য, যাকে আক্রমণাত্মক আচরণ করতে দেখা যাচ্ছে, তাকে অবশ্যই চিহ্নিত করতে হবে। একই সঙ্গে, চবি এবং বাকৃবি শিক্ষার্থীদের উপর হামলার অপরাধীদের জবাবদিহি করতে হবে।’
অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমাদের দুটি যৌক্তিক দাবি রয়েছে- সরকারকে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং আক্রমণকারীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
৯৩ দিন আগে
জবির দুই শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় বহিষ্কার ও ক্যাম্পাসে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ম্যানেজমেন্ট বিভাগের দুই শিক্ষক ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের তিন নেতার উপর হামলার ঘটনায় শাস্তিপ্রাপ্তদের ক্যাম্পাসে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. শেখ গিয়াস উদ্দিনের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ ও শহিদ সাজিদ ভবনের নিচ তলায় সংঘঠিত অনাকাঙ্খিত ঘটনায় শিক্ষার্থীদের আবেদন ও অভিযোগকারী শিক্ষকদ্বয়ের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে এবং কমিটির প্রস্তাব অনুযায়ী শাস্তি প্রত্যাহার করা হলো।
শাস্তিমুক্ত হওয়া পাঁচজন হলেন-
ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা পাওয়া দুইজন শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং রসায়ন বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের মো. মাহমুদুল এবং একই শিক্ষাবর্ষের দর্শন বিভাগের হাসান মো. জাহিদুল হাসান।
সাময়িক বহিষ্কার হওয়া তিন শিক্ষার্থী বাংলা বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ইমরান হাসান ইমান, সমাজকর্ম বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আবু হেনা মুরসালিন এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের মো. ইয়াসিন হোসেন সাইফ।
উল্লেখ, গত ১০ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনের নিচে বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রফিক বিন সাদেক রেসাদের ছাত্রলীগ সম্পৃক্ততার অভিযোগ তুলে মারধর শুরু করে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এসময় বিভাগের শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা ড. এ কে এম রিফাত হাসান এবং সহকারী প্রক্টর শফিকুল ইসলাম রক্ষা করতে গেলে তাদেরকে গালিগালাজ ও হামলা করে ছাত্রদলের নেতকর্মীরা। একই সঙ্গে শাখা বাগছাস সভাপতি, মুখ্য সংগঠক ও যুগ্ম-আহ্বায়ক যথাক্রমে মো. ফয়সাল মুরাদ, ফেরদৌস হাসান এবং ফারুককে ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে তাদের উপরও হামলা ও মারধর শুরু করে তারা।
এ ঘটনায় গত ১৪ জুলাই দুই শিক্ষক ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের তিন নেতার উপর হামলার ঘটনায় তিনজনকে সাময়িক বহিষ্কার এবং দুইজনকে ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
৯৮ দিন আগে
চকবাজারে ব্যবসায়ী হত্যা: দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে জবি ছাত্রদলের বিক্ষোভ
রাজধানীর চকবাজারে ব্যবসায়ীকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
শনিবার (১২ জুলাই) দুপুর ২টায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটির জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল।
বিক্ষোভ মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঁঠালতলা এলাকা থেকে শুরু হয়ে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে রায়সাব বাজার মোড় পর্যন্ত যায় এবং সেখান থেকে ফিরে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
সমাবেশে বক্তারা চকবাজারে একজন ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে ও বর্বরোচিতভাবে হত্যার তীব্র নিন্দা জানান। বক্তারা বলেন, ‘একটি স্বাধীন দেশে এভাবে একজন সাধারণ ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা কেবল আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি নয়, এটি মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তোলে।’
আরও পড়ুন: মিডফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী হত্যা: ছাত্রদল নেতা রবিনের দায় স্বীকার
জবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, ‘চকবাজারে যে ঘটনা ঘটেছে, তা সভ্য সমাজে কল্পনাও করা যায় না। আমরা অবিলম্বে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’ অপরাধী যে দলেরই হোক না কেন তার একটাই পরিচয় সে অপরাধী। আমরা জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী আমরা চাই এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনা হোক, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘চকবাজার, খুলনায় একের পর এক হত্যাকাণ্ড শুধু আমাদের নয়, পুরো জাতিকে শোকাহত করেছে। আমরা এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দ্রুত বিচার দাবি করছি। একইসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি—আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।’
১৪৫ দিন আগে
জবির চলমান আন্দোলনে যোগ দিলেন সাবেক শিক্ষার্থীরা
চার দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক শিক্ষার্থীরা। দ্বিতীয় দিনে আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন তারা। এ ছাড়া, গতকাল উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের দিকে বোতল ছুঁড়ে মারায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে সড়ক অবরোধ করে জবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনে স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, জগন্নাথ কলেজ নাম থাকাকালীন এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। তাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের সাবেক নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
জবির সাবেক শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার পর থেকেই এটি বৈষম্য ও অবহেলার শিকার হয়ে আসছে। কখনো হল আবার কখনো ক্যাম্পাস নিয়ে আমাদের আন্দোলনে যেতে হয়। যেকোনো জাতীয় আন্দোলনে জবি সবার আগেই নিজেদের অবস্থান জানান দিয়ে অংশগ্রহণ করে। কিন্তু সবসময়ই দেখা যায়, দিনশেষে আমরাই বঞ্চিত। বর্তমানদের যে তিন দাবি, তা অত্যন্ত যৌক্তিক।’
এ সময় সরকারের কাছে জবি শিক্ষার্থীদের দাবি অনতিবিলম্বে মেনে নেওয়ার দাবি জানান তারা। এ ছাড়াও, মানবেতর জীবনযাপন থেকে জবি শিক্ষার্থীদের মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি আবেদন জানান সাবেকরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী রাইসুল ইসলাম নয়ন বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ২০ বছর ধরে বঞ্চিত হয়ে আসছে। আগে আন্দোলন করে কোনো লাভ হয়নি। তবে, শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের দাবিগুলো মেনে নেওয়া হোক।’
২০৩ দিন আগে
কোটা সংস্কার আন্দোলন: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ
কোটা সংস্কারের দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ক্যাম্পাসের সামনে আন্দোলনরত চার শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) ওই শিক্ষার্থীদের গুলি করে আহত করা হয়েছে।
বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তারা যখন রায় সাহেব বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন তখন একটি গলি থেকে গুলি ছোড়া হয়, এতে চার শিক্ষার্থী আহত হয়।
এদের মধ্যে ব্যবস্থাপনা বিভাগের ফেরদৌস আহমেদ ও অনিক গুরুতর আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: সাধারণ শিক্ষার্থী-ছাত্রলীগের ওপর হামলার নিন্দা কাদেরের
আহতদের ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কোতোয়ালি জোনের এএসপি নজরুল বলেন, ‘গুলির খবর শুনেছি। কিন্তু আমরা দেখলাম মাত্র একটি দল মিছিল করছে। আমরা হামলাকারীকে দেখিনি।’
ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ ডা. আরিফ জানান, গুলিবিদ্ধ চার শিক্ষার্থীসহ আরও একজনক আহতকে হাসপাতালে আনা হয়।
গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থীদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং অন্য আহত শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কোটা সংস্কার: রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে শিক্ষার্থী নিহত
৫০৬ দিন আগে
যৌন নিপীড়নের অভিযোগে জবি শিক্ষক শাহেদ ইমনকে বরখাস্ত ও চেয়ারম্যান জুনায়েদ হালিমকে অব্যাহতি
শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন বিভাগের প্রভাষক আবু শাহেদ ইমনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এরই সঙ্গে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে অসহযোগিতার অভিযোগে অধ্যাপক ড. জুনায়েদ হালিমকে বিভাগীয় চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিন্ডিকেট সভা শেষে সিদ্ধান্তের কথা জানান জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম।
উপাচার্য বলেন, 'যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সেলের দেওয়া প্রতিবেদনে যৌন হয়রানি ও মানসিক নির্যাতনের বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় সিন্ডিকেট এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শিক্ষকের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীর দায়ের করা অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ফাইরুজের আত্মহত্যার ঘটনায় জবি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ, অভিযুক্ত সহকারী প্রক্টর ও সহপাঠী সাময়িক বরখাস্ত
এ বিষয়ে আরও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান উপাচার্য। তিনি বলেন, ‘আমি উপাচার্য হিসেবে এখানে আসার পর আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। আমরা আশা করছি খুব শিগগিরই প্রতিবেদন পাওয়া যাবে।’
তিনি আরও বলেন, আইন বিভাগের শিক্ষার্থী অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আম্মান সিদ্দিকী ও সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ নিয়ে সিন্ডিকেট সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: অবন্তিকার আত্মহত্যা: বিচারের দাবিতে জবি আইন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
অবন্তিকার মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তে গঠিত কমিটি সম্পর্কেও সিন্ডিকেট সদস্যদের জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
৬২৩ দিন আগে
অবন্তিকার আত্মহত্যা: বিচারের দাবিতে জবি আইন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও শোক র্যালি করেছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (১৮ মার্চ) বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে শোক র্যালি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে মানববন্ধন করে।
মানববন্ধনে বক্তারা অবন্তিকার আত্মহত্যার কারণ উদঘাটন ও দায়ীদের দ্রুত বিচারের দাবি জানান।
অবন্তিকার সহপাঠী সেতু পাল বলেন, ‘আমরা কখনো ভাবিনি ও এমন কাজ করবে। আত্মহত্যা কোনো সমাধান নয়। আমি এর সুষ্ঠু তদন্ত চাই। যারা জড়িত তাদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।’
আরও পড়ুন: ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
আইন বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী তানিম বলেন, ‘আমি অবন্তিকার জন্য বিচার চাই। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার জন্য যারাই দায়ী থাকুক না কেন তাকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
আইন বিভাগের শিক্ষক আহমেদ এহসানুল কবির বলেন, ‘সে একজন সক্রিয় এবং মেধাবী ছাত্রী ছিল। আমরা একজন মেধাবী তরুণকে হারালাম। আমি তদন্ত কমিটির কাছে আমার বক্তব্য জানিয়েছি। আশা করি আমরা ন্যায়বিচার পাব।’
আরও পড়ুন: অবন্তিকার আত্মহত্যা: রিমান্ডে জবি’র সহকারী প্রক্টর ও সহপাঠী
আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী আক্কাস সরকার বলেন, ‘আমার ৩৪ বছরের শিক্ষকতা জীবনে অনেক ঘটনা দেখেছি কিন্তু অবন্তিকার মৃত্যু খুবই কষ্ট দিয়েছে। সে তার অনার্স সম্পন্ন করেছিল। বিচারক হতে পারত। আমরা তার আত্মহত্যার কারণ অনুসন্ধান ও দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। প্রয়োজনে দ্রুত বিচার করতে হবে। দৃষ্টান্তমূলক বিচার হোক।’
মানববন্ধনে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ফাইরুজের আত্মহত্যার ঘটনায় জবি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ, অভিযুক্ত সহকারী প্রক্টর ও সহপাঠী সাময়িক বরখাস্ত
৬২৬ দিন আগে
অবন্তিকার মৃত্যু: আম্মান ও দ্বীন ইসলামের আংশিক সম্পৃক্ততা পেয়েছে ডিএমপি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় তার সহপাঠী রায়হান সিদ্দিকী আম্মান ও সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের আংশিক সম্পৃক্ততা পেয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাতে কুমিল্লায় নিজ বাসায় আত্মহত্যা করেন অবন্তিকা।
রবিবার (১৭ মার্চ) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার খ মহিদ উদ্দিন।
এক প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আম্মান ও দ্বীন ইসলামের আংশিক সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।’
দুজনকে কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে জানিয়ে মহিদ উদ্দিন আরও বলেন, ‘তাদের সম্পৃক্ততার গভীরতা তদন্তের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে। আমাদের যা করার কথা ছিল আমরা করেছি, এখন কুমিল্লার কোতোয়ালি থানা তদন্ত করবে।’
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার জানান, অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম বাদী হয়ে কুমিল্লার কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন। এই ঘটনায় দুজনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচণা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
ফেসবুকে সহপাঠী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে এর আগে গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে কুমিল্লার বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকা।
আত্মহত্যার আগে এক ফেসবুক পোস্টে অবন্তিকা বলেছিলেন, তার আত্মহত্যার জন্য তার সহপাঠী রায়হান আম্মান ও সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম দায়ী।
ওই পোস্টে তিনি লেখেন, আমি যদি কখনো সুইসাইড করে মারা যাই তবে আমার মৃত্যুর জন্য একমাত্র দায়ী থাকবে আমার ক্লাসমেট আম্মান সিদ্দিকী, আর তার সহকারী হিসেবে তার সাথে ভালো সম্পর্ক থাকার কারণে তাকে সাপোর্টকারী জগন্নাথের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম। আম্মান যে আমাকে অফলাইন অনলাইনে থ্রেটের উপর রাখতো সে বিষয়ে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করে ও আমার লাভ হয় নাই। ’
তিনি আরও লেখেন, ‘এটা সুইসাইড না এটা মার্ডার। টেকনিক্যালি মার্ডার।’
শুক্রবার রাতে আত্মহত্যার খবর ছড়িয়ে পড়লে জবি ক্যাম্পাসে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়।
প্রতিবাদের মুখে তাৎক্ষণিকভাবে সহকারী প্রক্টরকে অব্যাহতি দেয় এবং ওই শিক্ষার্থীকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ।
এছাড়া আইন অনুষদের ডিন মাসুম বিল্লাহকে আহ্বায়ক ও আইন কর্মকর্তা রঞ্জন কুমার দাসকে সদস্য সচিব করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
গত শনিবার ছয় দফা দাবিতে উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও করার ঘোষণা দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
৬২৭ দিন আগে
জবি শিক্ষার্থী ফাইরুজের সুইসাইড নোটে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিবৃতি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা আত্মহত্যার আগে লেখা সুইসাইড নোটে তার মৃত্যুর জন্য দুই ব্যক্তিকে দায়ী করেন। তাদের একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম। তিনি এ বিষয়ে তার অবস্থান ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন।
তার দেওয়া ব্যাখ্যা তুলে ধরা হলো:
‘আসসালামু আলাইকুম,
আমি দ্বীন ইসলাম
সহকারী অধ্যাপক,
ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগ,
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রথমত আমি একজন মানুষ, দ্বিতীয়ত আমি একজন শিক্ষক, তৃতীয়ত আমি দুইজন কন্যা সন্তানের বাবা। আপনাদের কাছে অনুরোধ আপনারা আমার কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনুন এবং প্রকৃত ঘটনা জানুন। দয়া করে আমার জীবনটাকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়ে আমার সন্তানদের এতিম করবেন না।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার অকাল মৃত্যুর জন্য গভীর শোক প্রকাশ করছি। অবন্তিকার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
আরও পড়ুন: কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণে নয়: জবি ভিসি
আমাদের ছাত্রী অবন্তিকা ও তার সহপাঠীদের নিয়ে প্রকৃত ঘটনা নিচে তুলে ধরলাম:
ঘটনা প্রায় দেড় বছর আগের। অবন্তিকার ব্যাচমেটরা কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে, সেখানে অবন্তিকাও উপস্থিত ছিল। জিডিতে উল্লেখ করা হয় যে, কেউ একজন ফেইসবুকে ভুয়া একাউন্ট খুলে তাদের হয়রানি করে। পুলিশ তখন উচ্চতর তদন্তের আশ্বাস দিয়ে বলে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আইডিটা কে চালায় সেটা বের করে দেবে। এই কথা শুনে অবন্তিকা থানা থেকে বের হয়ে ক্যাম্পাসে আসার পথেই তার বন্ধুদের কাছে স্বীকার করে যে, আইডিগুলো (ফেইক একাউন্টসগুলো) সে নিজেই চালায়।তখন তার বন্ধুরা তাকেসহ প্রক্টর অফিসে নিয়ে এসে অবন্তিকার বিরুদ্ধে গত ০৮.০৮.২০২২ ইং তারিখে একটা লিখিত অভিযোগ দেয়।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন প্রক্টর মোস্তফা কামাল স্যার আমাকে এবং সহকারী প্রক্টর গৌতম কুমার সাহা (গণিত বিভাগ) স্যারকে গত ১১.০৮.২০২২ তারিখে তদন্তের দায়িত্ব দেন।
পরবর্তীতে গত ১৬.০৮.২০২২ তারিখে প্রক্টর স্যারের উপস্থিতিতে আমি এবং সহকারী প্রক্টর গৌতম কুমার সাহা অবন্তিকা এবং অবন্তিকার অভিভাবকদের প্রক্টর অফিসে আসার জন্য আহ্বান করি। পরে অবন্তিকার মা মিটিং এ আসে এবং এখানে অবন্তিকার ক্লাসমেইটস সহ (অভিযোগ কারীরা) সবাই উপস্থিত ছিল। তখন অবন্তিকার মা তার ব্যাচমেইট (যারা এ অভিযোগ করেছে) তাদের কাছে ঘটনার সত্যতা শুনে বলে যে, আমার মেয়ে যা করেছে ভুল করেছে, ঘটনার জন্য অভিযোগকারী সকলের কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করে এবং ভবিষ্যতে আমার মেয়ে আর এই ধরনের কাজ করবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেয় এবং বলে, যদি করে তার দ্বায় আমরা নেব। এবারের মতো বিষয়টি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য অনুরোধ জানান এবং বলেন, আমার মেয়ে ভালো শিক্ষার্থী কিন্তু সে কয়েকদিন ধরে মানসিকভাবে অসুস্থ এবং ওষুধ খাচ্ছে।
তখন তার ব্যাচমেইটরা বিষয়টা মানবিক এবং ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখেন। এভাবে বিষয়টা প্রাথমিকভাবে মিমাংসা করা হয়। মিমাংসার পরে অবন্তিকার মা জিডিটা তুলে নেওয়ার জন্য অভিযোগকারীদের বারবার অনুরোধ করেন। কিন্তু অভিযোগকারীরা জিডি তুলে নিতে অসম্মতি জানায়, কারণ তাদের ধারণা অবন্তিকা ভবিষ্যতে এ ধরনের আচরণ আবারও করতে পারে।
তখন আর জিডিটা সাথে সাথেই তোলা সম্ভব হয়নি। অভিযোগকারীরা বলেন, আমরা তাকে আগামী ৩ মাস পর্যবেক্ষণ করব এবং যদি অবন্তিকা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে তাহলে আমরা ৩ মাস পরে জিডিটা তুলে নেব। ঝামেলা এখানেই প্রাথমিকভাবে নিষ্পত্তি করা হয়। এর কিছুদিন পরে অবন্তিকা ও তার মা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন এবং আমাকে প্রক্টর অফিসে না পেয়ে আমার বিভাগে আসেন। যেহেতু আমার এলাকার আমি তাদের আমার সাধ্যমত আপ্যায়ন করি। যেহেতু তিনি আমার এলাকার এবং তিনি একজন অভিভাবক আমি আমার জায়গা থেকে সর্বোচ্চ টুকু দিয়ে আপ্যায়ন করি। ওইদিন অবন্তিকার মা আমাকে জানান অবন্তিকার হলের বন্ধুরা ওর সাথে ভালো ব্যবহার করছে না, এতে অবন্তিকা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছে।
তখন আমি তাদের প্রক্টর অফিসে লিখিতভাবে অভিযোগ করার পরামর্শ দেই। তখন অবন্তিকার মা বলে যা হওয়ার হয়ে গেছে এখন আর এ বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে চাচ্ছি না এবং বলেন আমি আমার মেয়েকে হলে রাখবো না, এতে করে তার পড়াশুনা খারাপ হয়ে যাবে এবং সে মানসিকভাবে আরও ভেঙে পড়বে। তখন আমি তাকে বলি আপনি অভিভাবক যা ভালো মনে করেন সেটাই করেন। যেকোনো প্রয়োজনে আমার সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। অভিযোগ নিষ্পত্তির ৩ মাসেরও কিছুদিন পরে অবন্তিকা এবং তার বাবা-মা প্রক্টর অফিসে জিডি তোলার জন্য আসে কিন্তু তার ব্যাচমেইটরা জিডি তুলতে অসম্মতি জানায়।তখন অবন্তিকার মা-বাবা ও অবন্তিকা আবার আমাকে ফোন করে আমার বিভাগে দেখা করতে আসে।
আরও পড়ুন: ফাইরুজের আত্মহত্যার ঘটনায় জবি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ, অভিযুক্ত সহকারী প্রক্টর ও সহপাঠী সাময়িক বরখাস্ত
আমি তখন ক্লাস নিচ্ছিলাম এবং পরে ক্লাস থেকে বের তাদের আমার রুম এ নিয়ে আমার সাধ্যমত আপ্যায়ন করি। তখন তারা জিডি তুলার বিষয়ে আমাকে অনুরোধ করে। আমি তখন তাদের বিষয়টা বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করি যে বিষয়টা আমার হাতে নেই। আমাদের কাজ তদন্ত করে রিপোর্ট প্রদান করা এবং আমরা তাই করি। জিডির বিষয়ে প্রক্টর স্যার এবং অভিযোগকারীদের সাথে আলাপ করে নিষ্পত্তি করার পরামর্শ দেই।
তৎক্ষনাৎ অবন্তিকার মা কিছুটা হতাশার ভাষায় বলেন, আমি দুজন (অবন্তিকা এবং ওর বাবা) ডিপ্রেশনের রোগীকে নিয়ে এত বছর সংসার করে আসছি। আমি নিজেও অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ছি।এবং বলেন আমার মেয়েটা মারাত্মক ডিপ্রেশনে পড়ে গেছে। এরপরে অবন্তিকা ও তার পরিবারের কারো সাথে এ বিষয়ে আজ পর্যন্ত আমার কোনো যোগাযোগ হয়নি।’
এ ছাড়া মৃত্যুর আগে ফেইসবুকে দেওয়া অবন্তিকার স্ট্যাটাস নিয়ে তিনি লেখেন:
‘প্রথমত আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ, আম্মানকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা, যা সম্পুর্ণ ভিত্তিহীন। কারণ ঘটনা নিস্পত্তি হয় ১৬-০৮-২০২২ সালে। এরপর এই বিষয় নিয়ে আর কারো সাথে কোনো আলোচনা হয়নি কখনোই।
প্রক্টর অফিসে অবন্তিকা ও তার মাকে একবারই ডাকা হয়েছিল। সেই সময় প্রক্টর মোস্তফা কামাল স্যার সহকারী প্রক্টর গৌতম সাহা স্যার এবং অভিযোগকারী তার বন্ধুরা উপস্তিত ছিলেন। একাধিকবার ডেকে হেনস্তা করার বিষয়টি সম্পুর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। কারণ বিষয়টি ওইদিনই মিমাংসা হয়ে গিয়েছিল।
সুইসাইড নোটে প্রক্টর অফিসে আম্মানের বিরুদ্ধে আনিত যৌন হয়রানি ও ভয়ভীতির অভিযোগের বিচার না পাওয়ার বিষয়টি তৎকালীন প্রক্টর মোস্তফা কামাল স্যার ভালো বলতে পারবেন। এ অভিযোগ সম্পর্কে আমি অবগত নই।
সুইসাইড নোটে আনিত অভিযোগ অবন্তিকাকে বহিষ্কার করার বিষয়ে পরবর্তীতে আমি কখনো কিছুই বলিনি। কারণ বিষয়টি মিমাংসা হওয়ার পরে অবন্তিকার সাথে বিগত দেড় বছরে একবারের জন্যেও অবন্তিকা বা তার পরিবারের সাথে আমার কোনো কথা বা যোগাযোগ হয়নি।’
এ বিষয়ে তিনি আরও কিছু কথা বলেন।
তিনি লেখেন, ‘একজন শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীদের পাশে থাকা এবং তাদের জন্য কাজ করা আমার নৈতিক দায়িত্ব। দীর্ঘ ১১ বছরের শিক্ষকতার জীবনে আমি আমার সর্বোচ্চটুকু দিয়ে শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলাম ইনশাল্লাহ ভবিষ্যতেও থাকবো।’
‘শুধুমাত্র স্ট্যাটাসের উপর ভিত্তি করে কাউকে ভুল না ভাবার অনুরোধ রইল। এই অপ্রত্যাশিত ঘটনার প্রকৃত রহস্য উন্মোচনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার জন্য আমি সবিনয়ে প্রস্তুত। সঠিক তথ্য জেনে সিদ্ধান্ত এবং মন্তব্য করার অনুরোধ রইল। সবাই ভালো থাকবেন।’
আরও পড়ুন: ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
৬২৮ দিন আগে