হ্যাটট্রিক
এমবাপ্পের হ্যাটট্রিক ম্লান করে মৌসুমের শেষ এল ক্লাসিকোও জিতল বার্সেলোনা
রিয়াল মাদ্রিদকে ৪-২, ৫-২ ও ৩-২ গোলে তিনটি ম্যাচ হারিয়ে আগেই দুটি শিরোপা নিজেদের করে নিয়েছিল বার্সেলোনা। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের এবার ৪-৩ গোলে হারিয়ে মৌসুমের সবগুলো এল ক্লাসিকো জিতে নিল কাতালান জায়ান্টরা। সেইসঙ্গে ঘরোয়া ট্রেবল জয়ের বন্দরে প্রায় নোঙর করেই ফেলেছে হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা।
ক্যাম্প ন্যুতে রবিবার লা লিগার দ্বিতীয় ও মৌসুমের শেষ এল ক্লাসিকোতে মাঠে নেমেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। ম্যাচের শুরুতে দুই গোলে এগিয়ে গিয়েও ৪-৩ গোলে হেরে গেছে মাদ্রিদ জায়ান্টরা।
এই জয়ে লিগের আর মাত্র তিন ম্যাচ বাকি থাকতে দুইয়ে থাকা রিয়ালের চেয়ে ৭ পয়েন্ট এগিয়ে গেছে বার্সেলোনা। ৩৫ ম্যাচে ২৬ জয় ও চার ড্রয়ে তাদের সংগ্রহ ৮২ পয়েন্ট। সমান ম্যাচে ৭৫ পয়েন্ট সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছে গতবারের চ্যাম্পিয়নরা।
লিগ শিরোপা জয়ের জন্য কাতালানদের আর দরকার দুই পয়েন্ট। আগামী বৃহস্পতিবার রাতে কাতালুনিয়া ডার্বিতে এস্পানিওলের মাঠে খেলতে যাবে ফ্লিকের দল। টেবিলের চতুর্দশ স্থানে থাকা নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে ওই ম্যাচটি জিতলেই শিরোপা নিশ্চিত করে ফেলবে তারা।
এদিন রিয়াল মাদ্রিদের তিন গোলের তিনটিই করেছেন এমবাপ্পে। লস ব্লাঙ্কোসদের হয়ে একমাত্র ৮ বা তার বেশি রেটিংয়ের পারফরম্যান্স দিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি তিনি (৮.৮)। বার্সেলোনার দলীয় পারফরম্যান্সের সামনে বৃথা গেছে তার হ্যাটট্রিক।
অবশ্য দল না জিতলেও ব্যক্তিগত একাধিক অর্জন হয়েছে এই ফরাসি তারকার। রিয়ালের জার্সিতে প্রথম মৌসুমে সর্বোচ্চ গোল করার রেকর্ড গড়েছেন তিনি। চলতি মৌসুমে ৩৮টি গোল করে ফেলেছেন এমবাপ্পে, অভিষেক মৌসুমে যা রিয়াল মাদ্রিদের কোনো খেলোয়াড়ের সর্বোচ্চ। এই রেকর্ড গড়তে গিয়ে ১৯৯২-৯৩ মৌসুমে ইভান জামোরানোর ৩৭ গোলের রেকর্ড ভেঙেছেন এমবাপ্পে। এমনকি হাতে আরও তিনটি ম্যাচ থাকায় এই রিকর্ডটি তিনি আরও উচ্চতায় তুলতে পারেন।
এছাড়া লা লিগায় ২৫ গোল নিয়ে ম্যাচ শুরু করা এমবাপ্পের লিগে গোল বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮টিতে। চলতি মৌসুমের পিচিচি ট্রফিরে দৌড়ে বার্সেলোনার রবের্ট লেভানডোভস্কিকে (২৬) পেছনে ফেলে দিয়েছেন তিনি।
ম্যাচের শুরুতেই এদিন রক্ষণের ভুলে পেনাল্টি পেয়ে যায় রিয়াল মাদ্রিদ, আর তা থেকে সফরকারীদের এগিয়ে নেন এমবাপ্পে। চতুর্থ মিনিটে বল নিয়ে বক্সের ঢোকার আগে কুবারসিকে পরাস্ত করে এগিয়ে যান এমবাপ্পে, এরপর স্টান্সনি এগিয়ে গিয়ে এমবাপ্পের পা থেকে ঝাঁপিয়ে বল কাড়তে গিয়ে তাকে ফাউল করে বসেন। এরপর ভিএআর রিভিউ শেষে ষষ্ঠ মিনিটে সফল স্পট কিক থেকে রিয়ালকে লিড এনে দেন এই ফরাসি তারকা।
চতুর্দশ মিনিটে বার্সার হাইলাইন ডিফেন্স ভেঙে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন রিয়ালের ফরাসি স্ট্রাইকার। গোল খেয়ে অবশ্য মাঝমাঠ থেকে লামিনকে ফাউল করে বল কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ করেছিল বার্সেলোনা, তবে রিভিউতে তাদের সে আবেদন জোর পায়নি।
এর পাঁচ মিনিট পর এরিক গার্সিয়ার গোলে ব্যবধান কমায় বার্সেলোনা। এ সময় বক্সের মধ্যে আসা ক্রসে প্রথমে মাথা দিয়ে বল গোলপোস্টের মাঝ বরাবর পাঠান ফেররান, তাতে সফল হেডারে ঠিকানা খুঁজে নেন এরিক।
এরপর ৩২তম মিনিটে লামিন ইয়ামাল ও ৩৪তম মিনিটে রাফিনিয়ার গোল প্রথমোর্ধেই রিয়ালকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয় বার্সেলোনা। দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য এমবাপ্পের আরও এক গোলে ব্যবধান কমানোর সুযোগ পেয়েছিল দলটি। তবে তা ম্যাচ জিতে লিগে টিকে থাকার জন্য যথেষ্ট ছিল না।
একেবারে শেষ মুহূর্তে বার্সেলোনার পক্ষে পঞ্চম গোলটি করেন ফেরমিন লোপেস। তবে অফসাইডে গোলটি কাটা পড়লে ৪-৩ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে কাতালানরা।
এর মাধ্যমে গত সপ্তাহে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে ৪-৩ গোলে হেরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হওয়া বার্সেলোনার ক্ষতে কিছুটা হলেও প্রলেপ মিলেছে। সেইসঙ্গে লা লিগা জয়ের একেবারে কাছাকাছি পৌঁছে গেছে হান্সি ফ্লিকের দল।
২০৭ দিন আগে
ফিরে আসা কাকে বলে, দেখিয়ে দিল বার্সেলোনা
পিএসজির বিপক্ষে বার্সেলোনার সেই ঐতিহাসিক ‘রেমন্তাদা’র কথা মনে আছে নিশ্চয়ই। ওই রকম না হলেও উত্তেজনার অন্যরূপ দেখিয়ে, নাটকীয়তার চরমে উঠে আরও একটি ফিরে আসার গল্প লিখল কাতালান জায়ান্টরা।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের আবহে গত সপ্তাহজুড়ে রিয়াল মাদ্রিদ জগতে চর্চিত ছিল ‘ফিরে আসার গল্প’ বা রেমন্তাদা। কামব্যাকের আরও একটি গল্প লেখার প্রত্যয়ে দলটির খেলোয়াড় থেকে সমর্থক—সবাই মুখে ‘রেমন্তাদা’র ফেনা তুলে ফেললেও শেষ পর্যন্ত আর্সেনালের কাছে হেরে বসে। দুই লেগেই হেরে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হয়েছে টুর্নামেন্টের ইতিহাসের সফলতম দলটিকে।
ওই ঘটনার তিন দিন পরই কাকতালীয়ভাবে লা লিগায় রেমন্তাদা, অর্থাৎ ফিরে আসার নাটক রচনা করল রিয়ালের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা।
ফুটবলের অপকৌশল খ্যাত রক্ষণাত্মক ফুটবল যে সেল্তা ভিগো খেলতে জানে না, তা অনেক আগে থেকেই সবার জানা। দলটির অধিনায়ক ও ফরোয়ার্ড ইয়াগো আসপাসের ক্ষিপ্রতার কথা কে না জানে! তার ওপর আবার চলতি মৌসুমে আক্রমণে ধার বাড়িয়েছে দলটি। বোরহা ইগলেসিয়াসকে দলে ভিড়িয়েছে তারা। ফলে এই আক্রমণ-শক্তির সামনে বার্সেলোনার হাই লাইন ডিফেন্স ঠিক কতটা কার্যকর হয়, ছিল তা-ই দেখার অপেক্ষা।
মাঠের খেলায় নিজেদের নামের প্রতি সুবিচারে একটুও কমতি রাখেনি সেল্তা। আসপাসকে শুরুর একাদশে না রাখা হলেও ঝলক দেখিয়েছেন ইগলেসিয়াস।
আরও পড়ুন: হারের শঙ্কা জাগিয়েও সাত গোলের থ্রিলার জিতল বার্সেলোনা
ফ্লিকের অফসাইডের ফাঁদ ভাঙতে দলটি যে বিশেষ অনুশীলন করে মাঠে নেমেছে, তা খেলা শুরুর পর তাদের একের পর এক নির্ভুল লং পাস ও সুনিপুণভাবে অফসাইড এড়িয়ে আক্রমণে ওঠা থেকেই বোঝা যাচ্ছিল। আর এই খেলার কাছেই এদিন দিশেহারা হয়ে যায় তারুণ্যনির্ভর বার্সেলোনা। সেল্তাকে কীভাবে থামাবে তা কোনোভাবেই বুঝে উঠতে পারছিলেন না কুবারসি, কুন্দে, ইনিগো মার্তিনেসরা।
ফলে দ্বাদশ মিনিটে পেদ্রির থ্রু বল ধরে অসাধারণ নৈপুণ্যে ফেররান তোরেস দলকে এগিয়ে নিলেও মিনিট চারেক পরেই সেল্তাকে সমতায় ফেরান বোরহা। এখানেও সেই ডিফেন্সভাঙা কৌশলে সাফল্যস্বরূপ গোলের দেখা পান তিনি।
এ সময় বার্সার ডিফেন্স চিরে সতীর্থের দুর্দান্ত পাস পেয়ে এগিয়ে যান ইকের লোসোদা। এরপর বিপরীত পাশে ইগলেসিয়াসের উদ্দেশে পাস বাড়ান তিনি। এ সময় ভয়চিয়েখ স্টান্সনি এগিয়ে এসে ঝাঁপিয়ে পাসটি নিষ্ক্রিয় করতে চেয়েও ব্যর্থ হন। আর প্রথম ছোঁয়াতেই উন্মুক্ত গোলে বল পাঠান ৩২ বছর বয়সেও ছুটে চলা এই স্প্যানিশ স্ট্রাইকার।
২২৯ দিন আগে
হ্যাটট্রিক করেও হতাশ গিরাসি, হেরেও সেমিফাইনালে বার্সেলোনা
হান্সি ফ্লিকের অধীনে বদলে যাওয়া বার্সেলোনার আক্রমণের যে ধার, তার বিন্দুমাত্রও দেখা মিলল না পুরো ম্যাচজুড়ে। ঘর সামলাতেই পার হয়ে গেল নিজেদের খুঁজে ফেরা দলটির সময়। মাঝে তিনটি গোল হজম করে হেরেও গেল, তবুও অগ্রগামিতায় এগিয়ে থাকায় সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে কাতালান জায়ান্টরা।
জার্মানির জিগনাল ইডুনা স্টেডিয়ামে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের ফিরতি লেগের ম্যাচটি ৩-১ গোলে জিতেছে বরুসিয়া ডর্টমুন্ড। তবে প্রথম লেগে বার্সেলোনার মাঠে ৪-০ গোলে হেরে থাকায় সেমিফাইনালে ওঠার জন্য পর্যাপ্ত হয়নি দ্বিতীয় লেগের এই জয়। দুই লেগ মিলিয়ে অগ্রগামিতায় ৫-৩ গোলে পিছিয়ে থাকায় শেষ আট থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে নিকো কোভাকের শিষ্যদের।
এই ম্যাচে সবচেয়ে বেশি হতাশ হয়েছেন অবশ্য ডর্টমুন্ডের গিনিয়ান স্ট্রাইকার সেরহু গিরাসি। দলের তিনটি গোলের সবগুলো এসেছে তার পা থেকে। হ্যাটট্রিকের রাতে হয়েছেন ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়, হয়েছেন এখন পর্যন্ত টুর্মামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতাও; দলকে জেতানোর রাতে তবুও থেমেছে তার যাত্রা।
বার্সেলোনা এদিন নিজেদের পা থেকে কোনো গোলই করতে পারেনি। একটি গোল যে পেয়েছে, তাও ডর্টমুন্ডের কাছ থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া আত্মঘাতী গোল।
তারা যে কতটা নিষ্প্রভ ছিল, পরিসংখ্যানের দিকে তাকালেই তার আভাস পাওয়া যায়। ম্যাচজুড়ে ৫৪ শতাংশ সময় পজেশন ধরে রাখলেও মাত্র দুটি শট লক্ষ্যে রাখতে পারেন লেভানডোভস্কি, রাফিনিয়ারা। অপরদিকে, মোট ১৮টি শটের ১১টি লক্ষ্যে রাখে ডর্টমুন্ড।
আরও পড়ুন: লামিন, রাফিনিয়ার রেকর্ডের রাতে সবার আগে কোয়ার্টারে বার্সেলোনা
এর ফলে টানা ২৪ ম্যাচের অপরাজেয় যাত্রা থামল ফ্লিকের শিষ্যদের। নতুন বছরে এটিই তাদের প্রথম হার। অবসর ভেঙে ফেরা পোলিশ গোলরক্ষক ভয়চিয়েখ স্টান্সনিরও বার্সার জার্সিতে হয়েছে প্রথম হারের অভিজ্ঞতা। নিজের ২৩তম ম্যাচে এসে হারলেন তিনি।
২৩৩ দিন আগে
এমবাপ্পের হ্যাটট্রিকে বিধ্বস্ত সিটি, শেষ ষোলোয় রিয়াল
৩-২ গোলে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় লেগ খেলতে নেমেছিল ম্যানচেস্টার সিটি। ফলে ঘুরে দাঁড়িয়ে জিতে নকআউট পর্ব নিশ্চিত করতে যে আক্রমণাত্মক মনোভাব ও নিয়ন্ত্রিত ফুটবল খেলার প্রয়োজন ছিল দলটির, তার কিছুই দেখাতে পারেনি তারা। উল্টো দুর্দান্ত রিয়াল মাদ্রিদের কাছে নাকানি-চুবানি খেয়ে প্রথম পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে গার্দিওলার শিষ্যদের।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে সান্তিয়াগো বের্নাবেউতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দ্বিতীয় লেগে সিটিকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। এর ফলে দুই লেগ মিলিয়ে ৬-৩ গোলের বিশাল ব্যবধানে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছে কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা।
এদিন ম্যাচের সবটুকু আলো কেড়ে নিয়েছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। রিয়ালের তিনটি গোলের সবগুলোই এসেছে তার পা থেকে। অপ্রতিরোধ্য এমবাপ্পেকে ঠেকাতেই সবটুকু শক্তি নিঃশেষ হয়ে যায় সিটির খেলোয়াড়দের। আর ভিনিসিউস, রদ্রিগো, বেলিংহ্যাম ও ফেদেরিকো ভালভের্দেদের যৌথ আক্রমণে দিশেহারা হয়ে দুস্বপ্নের মতো এক রাত পার করেছে ম্যানচেস্টারের দলটি।
আরও পড়ুন: ডেভিসের শেষ মুহূর্তের গোলে সেল্টিকের হৃদয় ভাঙল বায়ার্ন
গোল দিয়েই কার্যত ম্যাচটি শুরু করে রিয়াল মাদ্রিদ। চতুর্থ মিনিটে নিজেদের ডি-বক্সের সামান্য উপর থেকে ডিফেন্ডার রাউল আসেন্সিওর দুর্দান্ত এক উড়ন্ত লং পাস ধরে সিটির ডিফেন্স ভেঙে ঠিকানা খুঁজে নেন এমবাপ্পে।
আক্রমণের ধারা অব্যাহত রেখে ৩৩তম মিনিটে আরও একটি দর্শনীয় গোল করে দলকে তিন গোলের লিড এনে দেন তিনি। এবারের গোলটির মূল কারিগর ছিলেন রদ্রিগো। সিটির বক্সে ঢোকার মুখে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারদের মাঝ দিয়ে এমবাপ্পেকে পাস দেন তিনি, আর তা থেকে ব্যবধান বাড়াতে মোটেও কষ্ট হয়নি ফরাসি তারকার।
অসুস্থতার কারণে বেঞ্চে থাকা কেভিন ডি ব্রুইনে ও আর্লিং হালান্ডের অুনপস্থিতিতে এদিন বলের ওপর একেবারেই নিয়ন্ত্রণ হারায় সিটি। প্রথমার্ধে গোলে শট নেওয়া তো দূরের কথা, তেমন কোনো আক্রমণই শানাতে পারেনি তারা। সেইসঙ্গে দুর্দান্ত রিয়ালের ক্রমাগত চাপে বলের ওপর নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতেও যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছিল তাদের।
আরও পড়ুন: প্লে-অফে ফের অঘটন, এবার ইউভেন্তুসের বিদায়
২৮৮ দিন আগে
এমবাপ্পের ‘প্রথম’ হ্যাটট্রিকে ১০ জনের ভায়াদোলিদকে হারাল রিয়াল মাদ্রিদ
পয়েন্ট টেবিলের তলানির দল রিয়াল ভায়াদোলিদের ওপর রীতিমতো শাসন চালাল রিয়াল মাদ্রিদ। তবে বিশাল ব্যবধানে জয় না পেলেও পূর্ণ তিন পয়েন্ট সংগ্রহ করে শীর্ষস্থান সুসংহত করেছে কার্লো আনচেলত্তির দল।
হোসে সরিয়া স্টেডিয়ামে লা লিগার ২১ রাউন্ডের ম্যাচে কিলিয়ান এমবাপ্পের হ্যাটট্রিকে চলতি মৌসুমে ভুগতে থাকা রিয়াল ভায়াদোলিদকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে বর্তমান লিগ চ্যাম্পিয়নরা।
এর ফলে ১৫ জয় ও চার ড্রয়ে ৪৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থানের পয়েন্ট ব্যবধান আরও বাড়িয়ে নিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ।
এদিন আক্রমণে ঢেউ তুললেও কোনোভাবেই গোল পাচ্ছিল না লিগ টপাররা। এরপর ম্যাচের ৩০তম মিনিটে ভালভের্দে-বেলিংহ্যাম-এমবাপ্পে ঝলকে গোলের খাতা খোলে রিয়াল।
মাঝমাঠ থেকে সতীর্থের থ্রু বল পেয়ে প্রথম ছোঁয়াতেই এমবাপ্পেকে বাড়ান ভালভের্দে। বল পেয়ে তা ডি-বক্সের কিছুটা বাইরে মাঝামাঝি জায়গায় থাকা বেলিংহ্যামকে পাস দিয়েই বক্সে ঢুকে পড়েন এমবাপ্পে। আর ফিরতি স্পর্শে ফের বল এমবাপ্পের উদ্দেশে বাড়ালে তা থেকে ঠিকানা খুঁজে নেন এই ফরাসি স্ট্রাইকার।
আরও পড়ুন: বড় জয়ে সেরা আটে থাকার আশা বাঁচিয়ে রাখল রিয়াল
ওই এক গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যাওয়ার পর ফিরে ম্যাচের ৫৭তম মিনিটে আরও এক গোল করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন এমবাপ্পে।
এ সময় দানি সেবায়োসের বাড়ানো বল ধরেই দ্রুতগতিতে এগিয়ে যান রদ্রিগো। এরপর প্রতিপক্ষের বক্সের কিছুটা বাইরে থেকে বাঁ পাশ দিয়ে ভেতরে ঢোকা এমবাপ্পেকে পাস বাড়ান এই ব্রাজিলীয়। বল ধরে নিপুণতার সঙ্গে তা গোলে পরিণত করেন এমবাপ্পে।
এরপর ম্যাচ যখন ২-০ গোলেই শেষ হওয়ার পথে, ঠিক তখনই পেনাল্টি দিয়ে বসেন ভায়াদোলিদ মিডফিল্ডার মারিও মার্তিন। শুরুতে ফাউল না দিলেও ভিএআরের পরামর্শে চাটলাইন মনিটরে রিভিউ দেখে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি, সঙ্গে মার্তিনকে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখিয়ে মাঠছাড়া করেন। এর ফলে অবশিষ্ট সময়ের জন্য দশজনের দলে পরিণত হয় স্বাগতিকরা।
এরপর স্পট কিক থেকে রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে নিজের প্রথম হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন এমবাপ্পে।
এর ফলে সব মিলিয়ে সবশেষ পাঁচ ম্যাচে ৮ গোল করলেন এই তারকা স্ট্রাইকার। পাশাপাশি লা লিগায় তার গোলসংখ্যা বেড়ে হলো ১৫টি, সব মিলিয়ে চলতি মৌসুমে এমবাপ্পের গোল ২২টি।
আরও পড়ুন: গোল উৎসব করে শীর্ষে উঠল রিয়াল মাদ্রিদ
দিনের অপর ম্যাচে ঘরের মাঠে ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করেছে দুই পয়েন্ট খুইয়েছে দুইয়ে থাকা আতলেতিকো মাদ্রিদ। ফলে সমান ২১ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ৪৫, রিয়ালের চেয়ে যা চার পয়েন্ট কম।
এছাড়া ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তিন নম্বরে রয়েছে এক ম্যাচ কম খেলা বার্সেলোনা। রবিবার রাতে ভালেন্সিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামবে হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা। ম্যাচটি জিতে শীর্ষ দুই দলের সঙ্গে ব্যবধান কমানোর সুযোগ রয়েছে তাদের সামনে।
৩১৩ দিন আগে
ভাগ্যের পালাবদলের রাতে ৯ গোলের থ্রিলারে শেষ হাসি বার্সেলোনার
খ্যাতিমান কোনো নাট্যকার বা সিনেমার গল্পলেখককেও যেন হারিয়ে দিল বেনফিকা-বার্সেলোনা ম্যাচ। একের পর এক দৃশ্যপট পরিবর্তন, বারবার ভাগ্যদেবীর রসিকতা, ২ গোলে পিছিয়ে পড়ার পর জানুয়ারির শীতে বৃষ্টির হানা, ব্যবধান কমিয়ে ফের ২ গোলে পিছিয়ে পড়া এবং একেবারে শেষ মুহূর্তে হারতে গিয়েও অকল্পনীয়ভাবে জিতে যাওয়া— বিশ্বের দুর্দান্ত সব থ্রিলার গল্পের চেয়ে কোনো অংশেই কম কিছু ছিল না। এসবের জেরে পুরোটা সময় আনন্দে টইটম্বুর থেকে ম্যাচশেষে গোমড়া মুখে মাঠ ছাড়তে হয়েছে বেনফিকার সমর্থকদের। ‘অবিচার করা হয়েছে’ ভেবে রাতের ঘুম তাদের হবে কি না, বলা মুশকিল।
পর্তুগালের দা লুস স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সপ্তম রাউন্ডের ম্যাচে স্বাগতিকদের ৫-৪ গোলে হারিয়েছে বার্সেলোনা।
এর ফলে সাত ম্যাচে ৬ জয়ে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই টেবিলের চূড়ায় থাকা লিভারপুলের সঙ্গে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছে হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা।
ভানগেলিস পাভলিদিসের প্রথমার্ধের হ্যাটট্রিকের পর দ্বিতীয়ার্ধে রোনালদ আরাউহোর আত্মঘাতী গোল, সব মিলিয়ে চার গোল করে বেনফিকা। অপরদিকে, দুই অর্ধে পেনাল্টি থেকে দুই গোল করেন রবের্ট লেভানডোভস্কি এবং এরিক গার্সিয়ার একটি ও রাফিনিয়ার জোড়া গোলে জয় নিশ্চিত করে বার্সেলোনা।
এদিন খেলা শুরুর পরপরই বেনফিকার দুর্দান্ত একটি আক্রমণে গোল খেয়ে বসে বার্সেলোনা। দ্বিতীয় মিনিটে নিজেদের অর্ধ থেকে সতীর্থের কাছ থেকে আসা উড়ন্ত পাস ধরে বাঁ পাশ দিয়ে এগিয়ে গিয়ে প্রতিপক্ষের বক্সের মধ্যে ক্রস দেন আলভারো কারেরাস। অসাধারণ ভলিতে প্রথম স্পর্শেই তা থেকে সমর্থকদের উল্লাসের উপলক্ষ এনে দেন পাভলিদিস।
আরও পড়ুন: দ্বিতীয়ার্ধের চরম নাটকীয়তা শেষে ডর্টমুন্ড বধ বার্সেলোনার
গোল খাওয়ার পর আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলা শুরু করে বার্সেলোনা, অপরদিকে বেনফিকাও সফরকারীদের ছেড়ে কথা বলার মনোভাব দেখায় না। ফলে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে উত্তেজনার পারদ চড়ে খেলায়।
এরই ধারাবাহিকতায় ম্যাচের ত্রয়োদশ মিনিটে পেনাল্টি থেকে পাওয়া গোলে সমতায় ফেরে কাতালান জায়ান্টরা। বেনফিকার বক্সের মধ্যে বল নিয়ে ঢোকার পর আলেহান্দ্রো বালদের শট প্রতিহত করতে গিয়ে তার পায়ে পাড়া দিয়ে বসেন দলটির পর্তুগিজ ডিফেন্ডার তমাস আরাউহো।
শুরুতে বার্সেলোনার খেলোয়াড়রা আবেদন করেনি, রেফারিও গুরুত্ব দেনটি বিষয়টিতে। তবে কিছুক্ষণ পর ভিএআর বক্স থেকে রেফারিকে রিভিউ দেখার কথা জানানো হয়। এরপর টাচলাইন মনিটর থেকে রিভিউ দেখে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি, আর নিখুঁত স্পট কিকে দলকে সমতায় ফেরান লেভানডোভস্কি।
৩১৭ দিন আগে
রাফিনিয়ার হ্যাটট্রিকে ৯ বছর পর বায়ার্নকে হারাল বার্সেলোনা
২০১৫ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের পথে সবশেষ বায়ার্ন মিউনিখকে হারিয়েছিল বার্সেলোনা। তারপর থেকে এই বায়ার্নই হয়ে ছিল দলটির কাছে এক আতঙ্কের নাম। পরে যতবার দেখা হয়েছে, বড় ব্যবধানে বার্সাকে হারিয়ে জয়োল্লাস করেছে বাভারিয়ানরা। তবে ৯ বছর পর দুর্দান্তভাবে জিতে সেইসব ক্ষতে প্রলেপ দিয়েছে হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচে বুধবার রাতে অলিম্পিক স্টেডিয়ামে বায়ার্ন মিউনিখকে ৪-১ ব্যবধানে হারিয়েছে হান্সি ফ্লিকের ছোঁয়ায় বদলে যাওয়া বার্সেলোনা।
এদিন রাফিনিয়ার হ্যাটট্রিকের পাশাপাশি অন্য গোলটি করেন রবের্ট লেভানডোভস্কি। আর বায়ার্নের একমাত্র গোলটি আসে হ্যারি কেইনের পা থেকে।
ইউরোপ সেরার এ প্রতিযোগিতায় বায়ার্নের বিপক্ষে টানা ছয় ম্যাচ হারের পর জয়ের মুখ দেখল বার্সেলোনা। তাদের সবশেষ জয়টি ছিল প্রায় সাড়ে ৯ বছর আগে; ২০১৫ সালের মে মাসে কাম্প নউয়ে সেমিফাইনালের প্রথম লেগে নেইমারের একটি ও লিওনেল মেসির জোড়া গোলে ৩-০ ব্যবধানে জিতেছিল কাতালানরা।
আরও পড়ুন: সেভিয়াকে বিধ্বস্ত করে এল ক্লাসিকোর প্রস্তুতি সারল বার্সেলোনা
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সব মিলিয়ে বায়ার্নের সঙ্গে ১৪ বারের দেখায় বার্সেলোনার মাত্র তৃতীয় জয় এটি; এছাড়া একটি ম্যাচ ড্র এবং হেরেছে ১০টি।
ম্যাচের তখনও এক মিনিট পার হয়নি, এর আগেই গোল করে বার্সেলোনাকে এগিয়ে নেন রাফিনিয়া।
মাঝমাঠ থেকে ফের্মিন লোপেসের বাড়ানো বল ধরে বায়ার্নের হাই লাইন ডিফেন্স ভেঙে এগিয়ে যান রাফিনিয়া। এরপর ম্যাচের ৫৭তম সেকেন্ডে মানুয়েল নয়ারকে পরাস্ত করেন তিনি।
৪০৭ দিন আগে
হ্যাটট্রিক করে রোনালদোকে ছুঁলেন মেসি
ক্যারিয়ারের একেবারে শেষপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো ও লিওনেল মেসি। তারপরও রেকর্ড ভাঙা-গড়ার খেলায় একের পর এক একে অপরকে টেক্কা দিয়ে চলেছেন।
মঙ্গলবার রাতে লাতিন আমেরিকা পর্বের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে বলিভিয়াকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। এই ম্যাচে হ্যাটট্রিকের পাশাপাশি আরও দুটি অ্যাসিস্টসহ মোট ৫ গোলে অবদান রেখেছেন আর্জেন্টাইন মায়েস্ত্রো।
বলিভিয়ার বিপক্ষে এটি ছিল মেসির ক্যারিয়ারের ৫৮তম হ্যাটট্রিক, দেশের জার্সিতে যা দশম। এতেই পর্তুগিজ মহাতারকার রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন তিনি।
২০২১ সালে লুক্সেমবার্গের বিপক্ষে পর্তুগালের ৫-০ গোলের জয়ের ম্যাচে দেশের জার্সিতে দশম হ্যাটট্রিক করেন রোনালদো। ছেলেদের আন্তর্জাতিক ফুটবলে সুইডেনের সভেন রিডেলের সর্বোচ্চ হ্যাটট্রিকের রেকর্ড (৯) ভেঙে সেদিন অনন্য উচ্চতায় ওঠেন তিনি। এর তিন বছরের মধ্যে তাকে ছুঁয়ে ফেললেন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মেসি।
অবশ্য ১০ম হ্যাটট্রিকের দেখা পেতে ১৯১ ম্যাচ খেলা লাগে রোনালদোর, মেসির সেখানে লাগল ১৮৯ ম্যাচ।
আরও পড়ুন: পর্তুগালের জয়ের রাতে ইতিহাস গড়লেন রোনালদো
তবে আন্তর্জাতিক গোলসংখ্যায় মেসির চেয়ে অনেক উপরে রয়েছেন রোনালদো। পর্তুগালের হয়ে ২১৬ ম্যাচে ১৩৩ গোল করেছেন তিনি, যেখানে এই ম্যাচের পর ১৮৯ ম্যাচে ১১২ গোল হলো মেসির। ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক গোলের তালিকায় এ দুজনই সবার উপরে। ১৪৮ ম্যাচে ১০৮ গোল নিয়ে তাদের পরে রয়েছেন ইরানের সাবেক ফরোয়ার্ড আলী দাইয়ি।
এদিকে, ক্যারিয়ার হ্যাটট্রিকেও মেসির চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন রোনালদো। মেসির ৫৮ হ্যাটট্রিকের জায়গায় রোনালদোর হ্যাটট্রিক সংখ্যা ৬৬টি। তবে পেশাদার ফুটবলে তাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে রয়েছেন আরও তিন ফুটবলার। ১৪১টির বেশি হ্যাটট্রিক নিয়ে এই তালিকায় সবার উপরে জার্মানির এরভিন হেলমশেন, ১০১টির বেশি হ্যাটট্রিক করেছেন অস্ট্রিয়া ও চেক প্রজাতন্ত্রের হয়ে খেলা জোসেফ বাইকান এবং ১০০টির বেশি হ্যাটট্রিক রয়েছে হাঙ্গেরির ফেরেঙ্ক ডিকের।
এছাড়া, লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে তিনটি হ্যাটট্রিক করলেন মেসি। এর ২টিই বলিভিয়ার বিপক্ষে, অন্যটি ইকুয়েডরের বিপক্ষে।
আরও পড়ুন: শেষ লগ্নেও মায়া ছড়িয়ে চলেছেন মেসি রোনালদো
এদিনের ম্যাচের পর ১০ ম্যাচে ৭ জয় ও ১ ড্রয়ে ২২ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান মজবুত করল আর্জেন্টিনা। ৩ পয়েন্ট কম নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কলম্বিয়া।
দিনের অপর ম্যাচে রাফিনিয়ার জোড়া পেনাল্টির পর পেরুকে ৪-০ গোলে হারিয়ে সমান সংখ্যক ম্যাচে ৫টি জয় ও একটি ড্রয়ে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে ব্রাজিল। সমান পয়েন্ট নিয়েও গোল ব্যবধানে তাদের চেয়ে এগিয়ে থাকায় তিনে রয়েছে উরুগুয়ে। ইকুয়েডরের বিপক্ষে এদিন গোলশূন্য ড্র করেছে মার্সেলো বিয়েলসার শিষ্যরা।
৪১৪ দিন আগে
লেভানডোভস্কির হ্যাটট্রিকে দারুণ জয় বার্সেলোনার
হান্সি ফ্লিকের তত্ত্বাবধায়নে উড়তে থাকা বার্সোনার প্রতাপ দেখল এবার আলাভেস। রবের্ট লেভানডোভস্কির হ্যাটট্রিকে ক্লাবটিকে উড়ে দিয়েছে বার্সা।
লা লিগায় রবিবার আলাভেসকে তাদের মাঠেই ৩-০ ব্যবধানে হারিয়েছে বার্সেলোনা। দলের হয়ে প্রথম ৩২ মিনিটের মধ্যে নিজের হ্যাটট্রিক পূরণ করেন লেভানডোভস্কি।
এর ফলে চলতি মৌসুমে লিগে ৯ ম্যাচে ১০ গোল ও ২ অ্যাসিস্টসহ মোট ১২ গোলে অবদান রাখলেন তিনি। এছাড়া পিচিচির দৌড়ে নিজেকে আরও উপরে তুললেন ৩৬ বছর বয়সী এই পোলিশ স্ট্রাইকার।
দুই অর্ধে অবশ্য দুটি গোল পেয়েছিল আলাভেস, তবে অফসাইডের কারণে দুবারই হতাশ হতে হয় তাদের। অবশ্য বার্সেলোনার একটি গোলও অফসাউডে কাটা পড়ে।
এদিন বল দখলের লড়াইয়ে পরিষ্কার এগিয়ে ছিল বার্সেলোনা। ৭২ শতাংশ সময় নিজেদের দখলে বল রেখে মোট ১৫টি শট নেয় তারা যার ৯টিই ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে, প্রথমার্ধে একবারও লক্ষ্যে রাখতে না পারা আলাভেসের ১১টি শটের মধ্যে লক্ষ্যে ছিল মাত্র দুটি।
আরও পড়ুন: বার্সেলোনাকে খুশি করে সমতায় শেষ মাদ্রিদ ডার্বি
প্রতিপক্ষের মাঠে ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণে উঠতে থাকে বার্সেলোনা। এরই ধারাবাহিকতায় রাফিনিয়ার গোলে চতুর্থ মিনিটেই এগিয়ে যায় কাতালানরা। তবে মাঝমাঠ থেকে লং পাস ধরে রাফিনিয়াকে বাড়ানোর আগে অফসাইডে ছিলেন লামিন ইয়ামাল। ফলে গোলটি বাতিল হয়ে যায়।
তবে এর দুই মিনিট পর পায়ের পেশিতে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয় বার্সা উইঙ্গার ফেররান তোরসকে। তার বদলি হিসেবে এরিক গার্সিয়াকে মাঠে নামান হান্সি ফ্লিক।
এরপর সপ্তম মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায় বার্সা। ডান পাশে প্রতিপক্ষের বক্সের অনেকটা বাইরে ফ্রি কিক আদায় করেন লামিন, তা থেকে গোলমুখে দারুণ একটি ক্রস দেন রাফিনিয়া। এরপর লাফিয়ে উঠে চমৎকার হেডারে ঠিকানা খুঁজে নেন রবের্ট লেভানডোভস্কি।
ম্যাচের ২২তম মিনিটে দ্বিতীয় গোল করে ব্যবধান বাড়ান লেভানডোভস্কি। বাঁ পাশ দিয়ে বক্সে ঢুকেই পেনাল্টি স্পটের সামনে থ্রু বল বাড়ান রাফিনিয়া, এরপর এগিয়ে গিয়ে গোলরক্ষককে বোকা বানান লেভানডোভস্কি।
দুই মিনিট পর ব্যবধান আরও বাড়াতে পারতেন রাফিনিয়া। তবে বাঁ পাশ থেকে কাছের পোস্টে তিনি নিচু শট নিলে গোলরক্ষক তা ঠেকিয়ে দেন।
৩২তম মিনিটে দুর্দান্ত এক গোলে নিজের হ্যাটট্রিক পূরণ করেন লেভানডোভস্কি। লেভাকে বক্সে ঢুকতে দেখে রক্ষণচেরা অসাধারণ একটি পাস দেন এরিক গার্সিয়া, তা ধরে কিছুটা ডান দিকে সরে গিয়ে পড়ে যাওয়ার মুখে দূরের পোস্টের দিকে আচমকা বল ঠেলে দেন লেভানডোভস্কি। গোলরক্ষক বিষয়টি একেবারেই আঁচ করতে না পেরে কাছের পোস্টের দিকে এগিয়ে এসেছিলেন। ফলে শটে গতি না থাকলেও বলের গড়িয়ে গড়িয়ে জালে জড়িয়ে যাওয়া দেখতে হয় তাকে।
এর ফলে প্রথম গোল করার ২৫ মিনিটের মধ্যে নিজের হ্যাটট্রিক পূরণ করেন ৩৬ বছর বয়সী এই পোলিশ।
৩৯তম মিনিটে ড্রিবল করে এগিয়ে গিয়ে ডি-বক্সের বাইরে থেকে শট নেন পেদ্রি, তবে সহজেই তা লুফে নেন আলাভেস গোলরক্ষক আন্তনিও সিভেরা।
দুই মিনিট পর চতুর্থ গোল পেতে পারতেন লেভানডোভস্কি, তবে সতীর্থের বাড়ানো পাসে গতি বেশি থাকায় এগিয়ে এসে বলের নিয়ন্ত্রণ নেন সিভেরা।
প্রথমার্ধের এক মিনিট বাকি থাকতে আক্রমণে ওঠে আলাভেস। এরপর দুই কর্নারের পর ৪৫তম মিনিটে একটি গোল পেয়ে যায় স্বাগতিকরা, কিন্তু অফসাইডে গোলটি বাতিল হয়ে যায়। ফলে হতাশ হয়ে ৩-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় আলাভেস।
৪২৪ দিন আগে
চার গোল করে ইতিহাসের পাতায় পালমার
প্রিমিয়ার লিগে শনিবার ব্রাইটনের বিপক্ষে দারুণ এক জয় পেয়েছে চেলসি। আর তাতে একাই চার গোল করে অনন্য এক কীর্তি গড়েছেন ব্লুসদের ইংলিশ মিডফিল্ডার কোল পালমার।
প্রিমিয়ার লিগে শনিবার স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে ব্রাইটন অ্যান্ড হোভ অ্যালবিয়নকে ৪-২ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে চেলসি।
চেলসির চারটি গোলই করেছেন ২২ বছর বয়সী ইংলিশ প্রতিভা কোল পালমার। মাত্র দশ মিনিটের ব্যবধানে হ্যাটট্রিক করার পর ২০ মিনিটের মধ্যে ওই চার গোল করেন তিনি।
পালমারের চারটি গোলই এসেছে বিরতির আগে। আর তাতেই ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিয়েছেন এই প্রতিভাবান তরুণ।
প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে প্রথমার্ধে চার গোল করার রেকর্ড আর কারও নেই। লিগের ৩২ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো ফুটবলার এই কীর্তি গড়ল বলে জানিয়েছে প্রিমিয়ার লিগের পরিসংখ্যান প্রকাশকারী সাইট অপটা।
আরও পড়ুন: পালমারের চার গোল, চেলসিতে বিধ্বস্ত ব্রাইটন
এদিন ম্যাচের ২১, ২৮, ৩১ ও ৪১তম মিনিটে গোলগুলো করেন পালমার। এর মধ্যে তার দ্বিতীয় গোলটি আসে পেনাল্টি থেকে।
অবশ্য ওই চার গোলের পর দ্বিতীয়ার্ধে আর কোনো গোলের দেখা পায়নি চেলসি। দ্বিতীয়ার্ধে গোল পায়নি ব্রাইটনও। ফলে ৪-২ গোলে জিতে ম্যাচ শেষ করে চেলসি।
এর আগে, গত মৌসুমেও প্রিমিয়ার লিগে চার গোল করেন পালমার। এভারটনের বিপক্ষে চলতি বছরের এপ্রিলে অনুষ্ঠিত ওই ম্যাচটি ৬-০ গোলে জেতে চেলসি।
এদিকে, আজকের হ্যাটট্রিকের ফলে লিগে তার মোট হ্যাটট্রিক সংখ্যা হলো তিনটি। এর মাধ্যমে প্রিমিয়ার লিগে তিন হ্যাটট্রিক করা চেলসির চতুর্থ ফুটবলার হিসেবে দিদিয়ের দ্রগবা, ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ড ও জিমি ফ্লয়েডের পাশে বসলেন তিনি।
আজকের পারফরম্যান্সের পর লিগে ৬ ম্যাচে পালমারের গোলসংখ্যা হলো ৬টি। এর পাশাপাশি চারটি অ্যাসিস্টও করেছেন তিনি।
দশ গোল নিয়ে লিগে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ গোলদাতা ম্যানচেস্টার সিটির আর্লিং হালান্ড। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন পালমার। আর সর্বোচ্চ অ্যাসিস্টের তালিকায় লেস্টার সিটির উইলফ্রেদ এনদিদি ও লিভারপুলের মোহাম্মদ সালাহর সঙ্গে যৌথভাবে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন তিনি। ৬ অ্যাসিস্ট নিয়ে এই তালিকার শীর্ষে রয়েছেন আর্সেনালের ইংলিশ উইঙ্গার বুকায়ো সাকা।
৪৩২ দিন আগে