দুর্নীতির অভিযোগ
কেওয়াটখালী সেতু প্রকল্পে নকশা পরিবর্তন ও দুর্নীতির অভিযোগ
বহুল প্রতীক্ষিত কেওয়াটখালী আর্চ স্টিল সেতু প্রকল্পে অনুমোদিত নকশা পরিবর্তন করে নির্মাণকাজ পরিচালনা, ভূমি অধিগ্রহণে অনিয়ম ও অতিরিক্ত ব্যয়ের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয়ের অভিযোগ তুলেছে নাগরিক সংগঠন ‘ব্রহ্মপুত্র সুরক্ষা আন্দোলন’। শনিবার (১৪ জুন) ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের পক্ষ থেকে একনেক অনুমোদিত নকশায় সংযোগ সড়ক বাস্তবায়নসহ প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও শাস্তির দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সমন্বয়ক আবুল কালাম আল আজাদ। তিনি বলেন, “একনেক অনুমোদিত মূল নকশা উপেক্ষা করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রকল্পের সংযোগ সড়কে পরিবর্তন আনা হয়েছে। যাতে কিছু প্রভাবশালী রিয়েল এস্টেট কোম্পানিকে সুবিধা দেওয়া হয়। এতে শুধু উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে না, প্রকল্প ব্যয়ও অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া ২০২১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর একনেক প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়। নকশা অনুযায়ী মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ৩২০ মিটার এবং উভয় পাশে ৫ দশমিক ১ কিলোমিটার সংযোগ সড়কসহ মোট প্রকল্পের দৈর্ঘ্য ছিল ৬ দশমিক ২ কিলোমিটার। মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ২৬৩ কোটি টাকা। তবে বাস্তবায়ন পর্যায়ে গিয়ে সংযোগ সড়ক বাড়িয়ে ৮ দশমিক ২ কিলোমিটার করা হয়েছে, যা একনেক অনুমোদনের বাইরে।’
এছাড়া, ভূমি অধিগ্রহণের পরিমাণ ৮১ দশমিক ৫৬ একর থেকে বাড়িয়ে ১১৩ একরে উন্নীত করা হয়েছে, যার ফলে ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ অতিরিক্ত প্রায় ৫০০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এই অতিরিক্ত জমির মালিকদের বড় একটি অংশ রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় এতে দুর্নীতির গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।
সংযোগ সড়কে নকশাবহির্ভূত ২ দশমিক ১ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের ফলে ছোট-বড় সেতু, র্যাম্প, ওভারপাস নির্মাণের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। এতে করে কৃষিজমি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় স্থাপনা ও বসতভিটা উচ্ছেদের পাশাপাশি পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর ফলে প্রকল্প ব্যয় আরও ২ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত বাড়বে বলে মত প্রকাশ করেন ময়মনসিংহ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র ফয়সাল ফারনিম।
সংগঠনের সদস্য বিপ্লব নিভ বলেন, “এই সংযোগ সড়কটি যুক্ত করা হচ্ছে পুরাতন চায়না সেতু হাইওয়ের সঙ্গে। এতে করে যানজট কমার পরিবর্তে আরও বাড়বে ও সড়কটি হবে দুর্ঘটনাপ্রবণ।” এমনিতেই ময়মনসিংহ বিশ্বের ৯ম ধীরগতির শহর, পরিবর্তিত নকশায় সংযোগ সড়ক বাস্তবায়ন হলে এটি বিশ্বের ধীরগতির ৫ম তালিকায় চলে আসতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রকল্পের নকশা পরিবর্তন ও দুর্নীতির অভিযোগে ময়মনসিংহ নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে গত ৪ জুন হাইকোর্টে জনস্বার্থে একটি রীট মামলা দায়ের করা হয়। আবুল কালাম আল আজাদ বনাম বাংলাদেশ সরকার ও অন্যান্য শিরোনামে দায়ের করা রীটে একনেক অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী কাজ পরিচালনার নির্দেশনা চেয়ে আদালত রুল জারি করেছেন।
১৭৪ দিন আগে
দুর্নীতির অভিযোগ: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ব্যবস্থা নিতে পারে ইউজিসি
দেশের ২০ থেকে ৩০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টির (বিওটি) বিরুদ্ধে অর্থ পাচার ও তহবিল তছরুপের মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিওটি ভেঙে প্রশাসক বসানো হতে পারে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে থাকা ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ইউএনবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিওটির বিরুদ্ধে যদি গুরুতর অভিযোগ থাকলে তাদের সঙ্গে কথা বলে সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রয়োজনে প্রশাসক বসানো হবে। প্রশাসক বসানো ছাড়াও যদি আরও বেশি কিছু করা যায় বা সরকারের আরও বেটার বা ইনোভেটিভ আইডিয়া থাকে, প্রয়োজনে সেটিও করা হবে।’
তবে যায় করা হোক না কেন, তা নিয়মতান্ত্রিকভাবেই করা হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: সাত কলেজ নিয়ে যৌক্তিক সমাধান আসবে: ইউজিসি চেয়ারম্যান
এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে কী ধরনের অভিযোগ রয়েছে—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিওটির বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ অর্থ পাচার। এছাড়া তহবিল তছরুপসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগও রয়েছে।’
বিওটির এসব অনিয়ম নিয়ে কীভাবে তথ্য পেলেন?—উত্তরে এই ইউজিসি সদস্য বলেন, ‘দুদক, আমাদের নিজস্ব তদন্ত, সংবাদপত্রসহ অনেক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিভিন্নভাবে তথ্য এসেছে আমাদের কাছে। এসব বিষয়গুলো আমলে নিয়ে (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে) একটি সুশৃঙ্খল প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দেওয়ার বিষয়ে কাজ হচ্ছে। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়মের মধ্যে আনার জন্য যা যা করা দরকার, তা-ই করা হবে।’
কতগুলো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টির (বিওটি) বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘২০ থেকে ৩০টির মতো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিওটির বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়ম তদন্তে কমিটিও করে দিয়েছি; সেটি সাধীন ভাবে কাজ করছে। কাজ শেষ করে রিপোর্ট দিলে সিদ্ধান্তের জন্য তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অভিযুক্ত প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আলাদা আলাদা কমিটি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপোর্ট চলেও এসেছে। যেমন: সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি; তাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এখানে প্রশাসক নিয়োগের জন্য আমার সুপারিশ করে প্রতিবেদনটি সরকারকে পাঠিয়েছি, সরকার সিদ্ধান্ত দিলেই প্রশাসক বসানো হবে।’
তদন্ত কমিটিতে কারা কারা আছে, এ ব্যাপারে আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘অধিকাংশ কমিটির কনভেনার (আহ্বায়ক) বাইরে থেকে নেওয়া হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ইউজিসি থেকে সদস্য নেওয়া হয়েছে আবার বাইরে থেকেও নেওয়া হয়েছে। তবে প্রতিটি কমিটিতে আমাদের সংশ্লিষ্ট শাখার ডিলিং অফিসারকে (দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) রাখা হয়েছে, যিনি সেই ভার্সিটির দায়িত্ব পালন করছেন।’
তদন্ত কমিটির কনভেনার হিসেবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাবেক বিচারকদের রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ঢাকায় কেন এত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
ইউজিসি সুত্রে জানা যায়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। প্রতি বছর শিক্ষার্থী বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিষ্ঠানগুলোর আয়ের সঙ্গে দুর্নীতিও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়-ব্যয়ের স্বচ্ছতা ও হিসাব-নিকাশ ঠিকঠাক নেই। আইনের তোয়াক্কা না করে নানা কৌশলে বিপুল অর্থ লুটছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের (বিওটি) সদস্যরা।
নাম না প্রকাশের শর্তে ইউজিসির এক কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেন, ‘গত সরকারের আমলে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিওটি গঠন করা হয়। তারা ব্যবসা হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিক। তবে তারা আমাদের দায়িত্ব দিয়েছে। কমিশনের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে পূর্ণ কমিশনের সভায় অভিযোগ ওঠা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
২১৪ দিন আগে
সুনামগঞ্জে হাওরে দায়সারা প্রকল্প, অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ
সুনামগঞ্জে হাওরের কান্দা কাটা গর্ত ভরাটে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নেওয়া প্রকল্প দায়সারা প্রকল্পে রূপ নিয়েছে। কৃষিবান্ধব এ প্রকল্পে মোটেও রক্ষা হয়নি হাওরের স্বার্থ। এরই মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমাও শেষ পর্যায়ে। নির্ধারিত সময়ের প্রায় দেড় বছরে কাজ হয়েছে নামমাত্র।
পাউবো’র প্রকল্প কাজের অগ্রগতি প্রতিবেদনের সঙ্গে সরেজমিনে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। কৃষকের চোখ ফাঁকি দিয়ে পাউবো ও ঠিকাদার উভয়ে বরাদ্দের কোটি কোটি টাকা লুটপাটে তৎপর রয়েছে - এমন অভিযোগ কৃষক ও হাওর আন্দোলনের নেতাদের।
একাধিক হাওরের গর্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে সেরকম বাস্তবতাই চোখে পড়েছে। তবে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ না জেনে, না বুঝে করা হচ্ছে বলে দাবি সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের(পাউবো)।
জামালগঞ্জের হালি, শনি ও মহালিয়া হাওরের প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনের পাশাপাশি কৃষক ও হাওর আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হাওরের গর্ত (বাঁধে মাটি নেওয়ার ফলে সৃষ্ট গর্ত) ভরাটে এ উদ্যোগ ইতিবাচক। তবে পাউবো ও ঠিকাদারের অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে এখন পর্যন্ত এ প্রকল্পের কাজ ২০ শতাংশও হয়নি। হাওর অভ্যন্তরে অসংখ্য গর্ত থাকার পরও কোনো গর্তই পুরোদস্তুর ভরাট করেনি ঠিকাদার। কিছু কিছু গর্তে খুবই সামান্য বালু ফেলা হয়েছে। আবার বেশিরভাগ গর্ত আগে যেরকম ছিল এখনও সে রকমই আছে। প্রায় দেড় বছর মেয়াদের এ প্রকল্পে সময় ক্ষেপণ ছাড়া কাজের কাজ কিছুই হয়নি। হাওরপাড়ের মানুষ এ কাজের ব্যাপারে তেমন কিছু জানেও না। প্রাক্কলন তৈরির আগে ও পরে পাউবো এ নিয়ে কৃষকের সাথে কথা বলার প্রয়োজনও মনে করেনি। গর্তে বিটবালু ফেলে না ফেলে অনেকটা চুপিসারে এ কাজের ইতি টানতে চাইছে সংশ্লিষ্টরা।
আরও পড়ুন: নড়াইলে লবণাক্ততায় তিন ফসলি জমি এক ফসলিতে পরিণত
টেকসই বাঁধ, জীববৈচিত্র্য ও গোচারণ ভূমি রক্ষাসহ হাওরের নিরাপদ পরিবেশ বজায় রাখতে এ প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত। গর্ত এলাকা পরিদর্শনে গেলে এ প্রতিবেদকের কাছে হাওরের নিরাপত্তা ও কৃষকের ভাগ্য নিয়ে পরিহাস করা ছাড়া কিছুই মনে হয়নি।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, জরুরি বন্যা পুনঃনির্মাণ সহায়তা প্রকল্পের আওতায় জেলার দশটি হাওরে বরাদ্দ হয়েছে ১৪ কোটি ৫ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। এর মধ্যে জামালগঞ্জে ৩ কোটি ২১ লাখ ৩৭ হাজার, তাহিরপুরে ৩ কোটি ৯২ লাখ ৭৮ হাজার, বিশ্বম্ভরপুরে ১ কোটি ৬৯ লাখ ৮১ হাজার, ধর্মপাশা ও মধ্যনগর মিলে ৫ কোটি ২১ লাখ ৪১ হাজার টাকা।
এ প্রকল্পের কাজ পায় নেত্রকোণার অসীম সিংহ ও টাঙ্গাইলের গুডম্যান এন্টারপ্রাইজ। প্রকল্পের সময়সীমা ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের ৩০ মে পর্যন্ত রয়েছে। সময় ফুরিয়ে গেলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। নদী থেকে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে ভিটবালু দিয়ে হাওরের পুরোনো গর্ত ভরাটের কথা উল্লেখ আছে অগ্রগতি প্রতিবেদনে।
এর মধ্যে পাউবো’র হিসাব অনুযায়ী জামালগঞ্জে ৫৫ ভাগ, তাহিরপুরে ৩৫ ভাগ, ধর্মপাশা-মধ্যনগরে ১৩ ভাগ এবং বিশ্বম্ভরপুরে ১৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন পর্যন্ত বিলের ১৫ ভাগ অর্থ ছাড় হয়েছে বলে জানিয়েছে পাউবো। সবকিছু মিলে কাগজপত্রে কাজের অগ্রগতি সবচেয়ে বেশি হয়েছে জামালগঞ্জে। কিন্তু জামালগঞ্জের হালি, শনি ও মহালিয়া হাওরের সরেজমিনের চিত্র বলছে সেখানে ২০ ভাগের বেশি কাজ হয়নি। স্থানীয় কৃষক ও হাওর সচেতন মানুষও পাউবো’র এমন কাণ্ডে ক্ষোভ জানিয়েছে।
মহালিয়া হাওরে মদনাকান্দি গ্রামের গরু চড়াতে আসা সুশীল দাস বলেন, ‘শুনছি গর্ত ভরাটের ডাক হইছে। যেডা ভরছে এইডা মনে করইন চার ভাগের এক ভাগ হইছে। যদি পুরাপুরি ভরাড হইত, তাহইলে হাওরে ঘাস হইলনে, গরু ঘাস খাইলনে, বান্ধের (বাঁধের) শক্তি থাকলনে, বাঁন ভাঙবার ভয় থাকলনানে, হাওর তল হইলনানে। এই ভরাডে হাওরের উপকার হওয়ার কথা। কিন্তু উপকার হইল কই? ’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘কার্তিক মাসে দেখছি কিছু কিছু জায়গা ভরাট করতাছে। পরে দেখছি তারা ড্রেজার লইয়া গেছে গা। এরপরে গর্ত ভরবার লাগি আর ড্রেজার আনা হইছে না।’
আরও পড়ুন: বরাদ্দ সংকটে হুমকিতে পবিপ্রবির ঐতিহ্যবাহী দুটি লেক
বেহেলী ইউনিয়নের আছানপুর গ্রামের কৃষক ও ইউপি সদস্য মো. ইউছুফ মিয়া বলেন, হালি হাওরের হেরাকান্দি অংশে সামান্য মাটি ফেলা হয়েছে। কোন গর্তই পুরোপুরি ভরাট করা হয়নি। এতে করে হাওরবাসীর কোনো উপকার হবে না। যারা কাজ করেছে তারাই লাভবান হবে।
মহালিয়া হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি সিরাজুল হক তালুকদার বলেন, সর্ব সাকূল্যে মহালিয়া হাওরের গর্ত ২০ শতাংশ ভরাট হয়েছে। যে কাজ হয়েছে, তাতে হাওরের কোনো কাজে আসবে না। যে সময় ভরাটের কাজ শুরু হয়েছে, তখন জিজ্ঞেস করলে তারা জানিয়েছে হাওরের গর্ত সম্পূর্ণ ভরাট করা হবে। কিন্তু কাজ না করেই তারা সবকিছু নিয়ে চলে গেছে।
কাজের ভালো-মন্দ তদারকির জন্য কোনো টিমকে আসতে দেখেননি জানিয়ে বেহেলী ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য ও মদনাকান্দি গ্রামের কৃষক দেবাশীষ তালুকদার বলেন, ড্রেজিংয়ের পাইপ দিয়ে শুধু পানিই এসেছে বালু আসেনি। বালু না আসলে তো গর্ত ভরাট হবে না। শুধু লোকদেখানো কাজ হয়েছে। কোনো গর্তই ভরাট হয়নি। শুনেছি এ কাজ বাইরের এক কন্ট্রাক্টরের। তবে হরিপুরের ভজন তালুকদার এ কাজ তদারকি করছেন।
হাওর থেকে ফিরে জামালগঞ্জ উপজেলা হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক আলী আক্কাছ মুরাদ বলেন, গর্ত ভরাটে কোটি টাকার প্রকল্প হয়েছে। কিন্তু কাজ হয়েছে লাখ টাকার। অধিকাংশ গর্তে মাটিই পড়েনি। কিছু গর্তের দুই-এক জায়গায় সামান্য ভিটবালু ফেলা হয়েছে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, দিনের পর দিন এভাবে আমাদের বোকা বানিয়ে ফায়দা লুটছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কোটি কোটি টাকার সরকারি প্রকল্পের বিপরীতে হাওরের কোনো উপকারই হচ্ছে না।
হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় বলেন, এসব প্রকল্প দেওয়া হয় মূলত লুটপাটের জন্য। এ ব্যাপারে হাওরপাড়ের মানুষের সঙ্গে কোনো কথাবার্তা নেই। হাওরে গর্ত ভরাটের যে প্রকল্প দেওয়া হয়েছে, স্থানীয় লোকজন তার কিছুই জানে না। কৃষকদের না জানিয়ে প্রকল্প নেওয়া মানে বরাদ্দ গিলে খাওয়ার পথ তৈরি করা। আর পাউবো তাই করে বেড়াচ্ছে।
আরও পড়ুন: ধানের ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় সুনামগঞ্জের কৃষকরা
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, অনেক গর্তই ভরাট হয়েছে। বাকিগুলো করা হবে। হাওরে বিল-বাদাল আছে, বলা হচ্ছে মাছ মারা যাবে। কৃষকরা বলছেন জমির ফসল নষ্ট হবে। সে কারণে কাজ করা যাচ্ছে না। সময় যদিও শেষ পর্যায়ে, তবে সময় আরও বাড়ানো হবে।
তিনি আরও বলেন, অনিয়ম-দুর্নীতির যে অভিযোগ সে ব্যাপারে অনেকেই অনেক কিছু জানে না। যতটুকু কাজ হয়েছে তার চেয়েও অনেক কম বিল দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ১৫ শতাংশ বিল ছাড় হয়েছে। তাহলে অনিয়ম ও দুর্নীতি কোথায় হলো?
এ ব্যাপারে সাব-কন্ট্রাক্টর (সহ-ঠিকাদার) ভজন তালুকদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
২২০ দিন আগে
আইসিসির দুর্নীতির অভিযোগে ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ নাসির হোসেন
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) দুর্নীতির অভিযোগের পর ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে সাময়িক নিষিদ্ধ হয়েছেন অলরাউন্ডার নাসির হোসেন।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সূত্র নিশ্চিত করেছে, ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরতে নাসিরকে অবশ্যই আইসিসির ছাড়পত্রের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) আসন্ন আসরের প্লেয়ার্স ড্রাফট ২৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তবে বিসিবি প্রকাশিত খেলোয়াড়দের তালিকায় নাসিরের নাম নেই।
আরও পড়ুন: নাসির-তামিমার বিচার শুরু
আইসিসি অনুসারে, ডানহাতি এই অলরাউন্ডার ২০২১ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে একটি টি-টোয়েন্টি লিগে অংশ নিয়েছিলেন, যেখানে তিনি অন্যান্য খেলোয়াড়দের সঙ্গে অনৈতিক অনুশীলনে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
নাসির হোসেন সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচে অংশ নেন ২০১৮ সালে, যার পর থেকে তিনি জাতীয় দল থেকে অনুপস্থিত ছিলেন। টাইগারদের হয়ে ১৯টি টেস্ট, ৬৫টি ওয়ানডে ও ৩১টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ক্রিকেটার নাসির ও তামিমার বিরুদ্ধে মামলা পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ
৮০৪ দিন আগে
নড়াইলে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মারধর, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ
নড়াইল সদরের বিছালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হেমায়েত হোসেন ফারুকের বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার বিভাগে মেম্বারদের মারধর, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই ইউনিয়নের আটজন সদস্য।
অভিযোগকারী ইউপি সদস্যরা হলেন-১নং ওয়ার্ডের সদস্য পান্না বিশ্বাস, ২নং ওয়ার্ডের সদস্য খন্দকার মঈন উদ্দিন, ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য গাজী হাফিজুর রহমান, ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য আলী ইমাম সরদার, ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. জাহাঙ্গীর আলম, ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য সাধন কুমার বিশ্বাস, সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য হোসনে আরা বেগম ও রাজিয়া বেগম।
রবিবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে নড়াইল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো. ফখরুল হাসানের কাছে এ অভিযোগপত্র জমা দেন।
আরও পড়ুন: হাওর রক্ষা বাঁধের দুর্নীতির অভিযোগে শাল্লার ইউএনও প্রত্যাহার
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, চেয়ারম্যান হেমায়েত হোসেন ফারুক গত এক বছর ধরে ইউনিয়নে বরাদ্দকৃত এলজিএসপি, এডিবি, টিআর, কাবিটা, টিসিবি, ভিজিডি, বয়স্কভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতাসহ উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে স্বেচ্ছাচারিতা করে নিজের ইচ্ছামতো ও পছন্দের লোক দিয়ে বাস্তবায়ন করছেন এবং এসব প্রকল্পের অর্থ অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে। এসব কাজে পরিষদের আটজন সদস্যকে কখনও ডাকা হয় না। মাসিক মিটিং বা রেজুলেশনও করা হয় না। পরিষদের হোল্ডিং ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্সের ট্যাক আদায় করে নিজেই আত্মসাৎ করেছেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে এসব সদস্যদের সই জাল করে নিজ স্বার্থ হাসিল করে থাকেন।
মেম্বার আলী ইমাম সরদার অভিযোগ করে বলেন, ‘এসব অন্যায়ের প্রতিবাদের বিষয়ে বৃহস্পতিবার ( ৮ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে রুখালী বাজারে আলমের চায়ের দোকানে কয়েকজন মেম্বার কথা বলছিলাম। এ সময় চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী বাহিনী আমাদের ওপর হামলা মারধর করে। এ সময় মেম্বার সাধন বিশ্বাসের মাথা ফেটে যায়। এ ঘটনায় আমরা সবাই সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিই। পরদিন আটজনকে আসামি করে নড়াইল সদর থানায় মামলা করি। বর্তমানে আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান হেমায়েত হোসেন ফারুক বলেন, ‘আমি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়নমূলক কাজ স্বচ্ছতার সঙ্গে করে যাচ্ছি। অভিযোগকারী মেম্বাররা বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ না করে আর্থিক ভাগবাটোয়ারার প্রস্তাব দিয়েছিল। আমি তাতে রাজি না হওয়ায় কাল্পনিক ও ভিত্তিহীন অভিযোগ উপস্থাপন করেছেন। অনিয়ম- দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করে দোষী প্রমাণিত হলে শাস্তি ভোগ করতে রাজি আছি। মেম্বারদের ওপর হামলার বিষয়ে বলেন, তাদের অভ্যন্তরীণ কোনো কোন্দল বা মাদককে কেন্দ্র করে কোনো ঘটনা ঘটতে পারে। কারণ তারা যেখানে ছিল সেটা মাদকের আখড়া। হামলার বিষয়টি ভালো জানা নেই।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও স্থানীয় সরকার বিভাগের দায়িত্বরত উপ-পরিচালক মো. ফখরুল হাসান বলেন, ‘বিছালী ইউনিয়নের আটজন সদস্য উপস্থিত হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন: দুর্নীতির অভিযোগে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষকে দুদকের তলব
ফখরুলের টিকা দুর্নীতির অভিযোগ কাল্পনিক: কাদের
১০৮৯ দিন আগে
ঠাকুরগাঁওয়ের ১৫ শিক্ষককে দুদকে তলব
দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত ঠাকুরগাঁওয়ের ১৫ জন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষককে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
১৭৯২ দিন আগে
উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ: পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন
ঘুষ, দুর্নীতি, অনিয়মের অভিযোগ এনে বরগুনার আমতলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানানো নিয়ে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন হয়েছে।
১৯২৩ দিন আগে
সিরাজগঞ্জে দুর্নীতির অভিযোগে ৩ ইউপি সদস্য বরখাস্ত
কাজিপুর উপজেলায় অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে তিন ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
১৯৩৮ দিন আগে
শালিখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ
মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তানভীর রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে।
১৯৭৬ দিন আগে
মন্ত্রী রেজাউলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনলেন সাবেক এমপি আউয়াল
দুর্নীতির মামলায় জামিনের একদিন পরই পিরোজপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএমএ আউয়াল মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছেন।
২১০২ দিন আগে