ঋণ
ঋণ করে ওমানে গিয়েছিলেন অগ্নিকাণ্ডে নিহত হোসেন
আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে এনজিও থেকে ঋণ এবং আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে ধার করে ওমানে যান হোসেন মিয়াজী। আগুন নিভিয়ে দিল সব স্বপ্ন। চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে তার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।
হোসেন মিয়াজী ওমানের উত্তরাঞ্চলীয় শহর বুরাইমির একটি সোফা কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। সোমবার (১১ মার্চ) ভোরে ওমানের ওই কারখানায় হঠাৎ গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে লাগা আগুনে তার মৃত্যু হয়।
চাঁদপুরের শাহরাস্তি পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের নিজমেহার গ্রামের যুগী বাড়ির আব্দুস সালামের একমাত্র ছেলে তিনি।
আরও পড়ুন: যশোরে সড়ক দুর্ঘটনায় মাইক্রোবাসচালক নিহত
একমাত্র পুত্রসন্তান ও পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎসকে হারিয়ে নির্বাক বাবা আব্দুস সালাম এবং মা নুরজাহানের কান্না থামছেই না। তারা কেবলই বিলাপ করছেন ও র্মূছা যাচ্ছেন।
স্বজনরা জানান, পরিবারের স্বচ্ছলতার আশায় আত্মীয়-স্বজন ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ২০১৯ সালে বিদেশ পাঠানো হয় তাকে। করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে ঋণের দায় কাটিয়ে এখনো উঠতে পারেনি পরিবারটি। এমন পরিস্থিতিতে পুত্রের মৃত্যু!
হোসেনের ছোট বোন মরিয়ম আক্তার জানান, নিজের ভাইয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তার শ্বশুর বাড়ি এলাকার এনজিও থেকে ঋণ এনে দিয়েছেন। একটি দুর্ঘটনা তাদের সবাইকে পথে বসিয়ে দিল।
হোসেনের মা নুরজাহান বেগম বিলাপ করতে করতে বলেন, একটু ভালো থাকার আশায় ছেলেকে বিদেশে পাঠিয়েছি। আজ আমার সব শেষ।
হোসেনের মৃতদেহ দেশে আনতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান মা বাবা ও পরিবারের সদস্যরা। শেষবারের মতো সন্তানকে একনজর দেখতে তারা আকুতি জানান।
পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মিজানুর রহমান ইউএনবিকে জানান, তার লাশ দেশে আনতে পরিবারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।
তিনি আরও জানান, তার অকাল মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। হোসেন অত্যন্ত বিনয়ী ও কর্মঠ ছিল।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় ভটভটির ধাক্কায় কৃষক নিহত
বরগুনায় সাংবাদিক নিহতের ঘটনায় ৭ সহকর্মী কারাগারে
আইএমএফ ফর্মুলায় ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির পর বাংলাদেশের রিজার্ভ ২০.২৫ বিলিয়ন ডলার: বাংলাদেশ ব্যাংক
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ৪ দশমিক ৭০৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) বাজেট সহায়তা ঋণ থেকে ৪০০ মিলিয়ন ডলার ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি হিসেবে ৬৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ।
এর অর্থ হলো- অভ্যন্তরীণ মুদ্রাবাজারে ডলারের স্বল্প সরবরাহের মধ্যে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে প্রায় ১ দশমিক ০৯ বিলিয়ন ডলার যোগ হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক শনিবার ইউএনবিকে বলেন, শুক্রবার রাতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে এই পরিমাণ ঋণ সহায়তা যোগ হয়েছে।
আরও পড়ুন: ৬৯০ মিলিয়ন ডলার ঋণের দ্বিতীয় কিস্তিতে শর্তারোপ আইএমএফের
ফলে শনিবার বাংলাদেশের রিজার্ভ (গ্রস) দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার, যা বৃহস্পতিবার ছিল ২৪ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার। তবে আইএমএফ ফর্মুলা বা বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ হিসাব করলে রিজার্ভ দাঁড়াবে ২০ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলারে।
এর আগে মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে আইএমএফের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংস্থাটির নির্বাহী বোর্ডের সভায় বাংলাদেশের জন্য ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি অনুমোদন করা হয়।
এদিকে, গত জুনের শেষে বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংরক্ষণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে না পারায় আইএমএফের বোর্ড আনুষ্ঠানিকভাবে আইএমএফের কাছ থেকে যে ছাড় চেয়েছিল তা অনুমোদন করে।
একই সঙ্গে ডিসেম্বর শেষে রিজার্ভ সংরক্ষণের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ বিলিয়ন ডলার।
আরও পড়ুন: ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ের অনুমোদন আইএমএফ বোর্ডের
বাংলাদেশের জ্বালানি সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে এডিবি
৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ের অনুমোদন আইএমএফ বোর্ডের
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) মঙ্গলবার তাদের ডিসেম্বরের বোর্ড সভায় ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ের অনুমোদন দিয়েছে। দ্বিতীয় কিস্তি অনুমোদিত হয়েছিল জানুয়ারিতে।
দ্বিতীয় ধাপে বাংলাদেশের অ্যাকাউন্টে ৬৮ কোটি ২০ লাখ ডলার স্থানান্তর করা হবে। প্রথম ধাপে প্রায় ৪৫ কোটি ডলার স্থানান্তর করা হয়।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) থেকে ৪০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ পাওয়ার পাশাপাশি আইএমএফের অর্থ গত দুই বছরে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর যে উল্লেখযোগ্য চাপ তৈরি হয়েছে তা প্রশমিত করতে সহায়তা করবে।
আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ প্রধানদের সঙ্গে ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) রাতে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ইউএনবিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
৩০ জানুয়ারি আইএমএফ বোর্ড ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন করে।
চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি প্রথম কিস্তিতে বাংলাদেশ পেয়েছে ৪৪ কোটি ৭৮ লাখ ডলার। বাকিগুলো আরও ৫ কিস্তিতে পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এর আগে অক্টোবরে আইএমএফের একটি প্রতিনিধি দল ২ সপ্তাহের সফরে বাংলাদেশে এসে ঋণ কর্মসূচি পর্যালোচনা করে এবং আইএমএফ বোর্ডের কাছে দ্বিতীয় কিস্তির প্রস্তাব উপস্থাপন করে।
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরে আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি পাওয়ার আশা বাংলাদেশ ব্যাংকের
৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের পরবর্তী কিস্তির জন্য আইএমএফের সঙ্গে চুক্তি সই
এনজিওর ঋণের চাপে রাবি কর্মচারীর আত্মহত্যার অভিযোগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক কর্মচারীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবারেরর দাবি এনজিওর ঋণের চাপ সইতে না পেরে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
সোমবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল ৮টার দিকে পরিবারের লোকজন নিজ বাড়ির বাথরুম থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালের নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: খাগড়াছড়িতে আত্মহত্যার চেষ্টা: প্রেমিকের মৃত্যু, প্রেমিকা হাসপাতালে
নিহত রাজন কুমারের বাড়ি নগরীর রাজপাড়া থানার লক্ষ্মীপুর বাকির মোড় এলাকায়। তার বাবার নাম অসিত কুমার। রাজন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সুইপার পদের চাকরি করতেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে কর্মরত ছিলেন।
রাজনের স্ত্রী রাখি রানী জানান, মানব সেবা উন্নয়ন নামে একটি এনজিও থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা ঋণ নেন। এর বিপরীতে মাসে ১০ হাজার টাকা কিস্তি দিতে হয়। আরও সাতটি কিস্তি বাকি আছে। সোমবার কিস্তি দেওয়ার দিন ছিল। কিন্তু তার কাছে কিস্তি দেওয়ার কোনো টাকা ছিল না।
তিনি আরও জানান, আইডি বাগানপাড়া এলাকার একরাম আলীর ছেলে দাদন ব্যবসায়ী সাদির কাছ থেকে ২ লাখ টাকা ঋণ নেন রাজন। সুদ ও আসল মিলে তাকে ৩ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। এরপর সাদি আরও ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। এর মধ্যে ৩০ হাজার টাকাও দেন। ২০ হাজার টাকার জন্য সাদি ও তার ভাই রকি চাপ দিচ্ছিলেন। রবিবার রাতে ফোন করে আজকের মধ্যে ২০ হাজার টাকা না দিলে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন সাদি। এ কারণে রাজন আত্মহত্যা করে বলে দাবি করেন তার স্ত্রী রাখি।
রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, রাজন বাড়ি করার জন্য সুদের উপর একটি এনজিওসহ কয়েকজনের কাছ থেকে ৫-৬ লাখ টাকা ঋণ নেন। এর মধ্যে কিছু টাকা পরিশোধ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, তবে বাকি টাকার জন্য পাওনাদাররা চাপ দিচ্ছিল। এ কারণে তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এ মৃত্যুর পেছনে আর কোনো কারণ আছে কি না সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: হাসপাতালে ভর্তি তিশা, আত্মহত্যাচেষ্টার গুঞ্জন
বিয়ের ভয়ে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইতালিয় কিশোরীর আত্মহত্যা
ডিসেম্বরে আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি পাওয়ার আশা বাংলাদেশ ব্যাংকের
বাংলাদেশ ব্যাংক আগামী ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণের দ্বিতীয় ধাপে ৬৮১ মিলিয়ন ডলার পাওয়ার আশা করছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আইএমএফের বেশ কিছু শর্ত ছিল এবং বাংলাদেশ ব্যাংক এসব শর্ত নিয়ে কাজ করেছে, কিছু শর্ত ইতোমধ্যে পূরণ করা হয়েছে। গত বৈঠকে বেশ কিছু বিষয়ে দুই পক্ষই একমত হয়েছে। তাই বাংলাদেশ ৬৮১ মিলিয়ন ডলার ঋণের দ্বিতীয় অংশ পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তবে আইএমএফ ডিসেম্বরে তার বোর্ড সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বলেও তিনি জানান।
আরও পড়ুন: পলিসি রেট ৭৫ পয়েন্ট বাড়িয়ে ৭.২৫ শতাংশ করল বাংলাদেশ ব্যাংক
এক প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র বলেছিলেন, ‘ঋণ অনুমোদনের সময় আইএমএফ আমাদের কিছু শর্ত দিয়েছিল। এর মধ্যে কয়েকটি শর্ত পূরণ করা হয়েছে। দুটি ক্ষেত্রে ব্যর্থতা রয়েছে। এগুলো হলো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কম থাকা এবং রাজস্ব সংগ্রহের ঘাটতি।’
মেজবাউল বলেন, ‘তবে আইএমএফের অনেকগুলো শর্ত পূরণ হয়েছে। ব্যাংকগুলোর আর্থিক স্থিতিশীলতার প্রতিবেদন প্রকাশের কথা থাকলেও তা প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ গণনা করা হচ্ছে।’
এছাড়া মুদ্রার বাজার-নির্ধারিত বিনিময় হার চালু করা হয়। সুদের নতুন নিয়ম চালু করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে আইএমএফ বাংলাদেশকে ৪ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। ঋণের প্রথম অংশে গত ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ পেয়েছে ৪৭৬ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার।
আরও পড়ুন: ১৪-১৮ বছর বয়সী নাগরিকরা এনআইডি ছাড়াই এমএফএস অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবে: বাংলাদেশ ব্যাংক
শিগগিরই এসক্রো বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করবে বাংলাদেশ ব্যাংক
৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের পরবর্তী কিস্তির জন্য আইএমএফের সঙ্গে চুক্তি সই
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির পর্যালোচনা করতে প্রয়োজনীয় নীতিগুলোর বিষয়ে সরকারের সঙ্গে কর্মকর্তা পর্যায়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছেছে সংস্থাটির প্রতিনিধি দল ও বাংলাদেশ। দ্বিতীয় কিস্তিতে ৬৮১ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার কথা রযেছে।
বাংলাদেশের অংশীজনদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠকের মাধ্যমে প্রথম পর্যালোচনা শেষ করে আইএমএফ এই বিবৃতি জারি করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, কর্মকর্তা পর্যায়ের সমঝোতাটি আইএমএফ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন এবং নির্বাহী বোর্ডের অনুমোদন সাপেক্ষে। এটি আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশি অংশীজন এবং আইএমএফের প্রতিনিধি দল ২০২৩ সালের আর্টিকেল ৪ বিষয়ে আলোচনা করেছে। একই সঙ্গে ইসিএফ/ইএফএফ/আরএসএফ ব্যবস্থার অধীনে প্রথম পর্যালোচনা সম্পূর্ণ করার জন্য প্রয়োজনীয় নীতিগুলোর বিষয়ে কমৃকর্তা পর্যায়ের সমঝোতায় পৌঁছেছেন তারা।
অবশেষে বৈশ্বিক ঋণদাতা সংস্থাটি বলেছে, আইএমএফ-সমর্থিত কর্মসূচির অধীনে কাঠামোগত সংস্কারে যথেষ্ট অগ্রগতি করেছে বাংলাদেশ। তবে সংকটগুলো রয়ে গেছে। অব্যাহত বৈশ্বিক আর্থিক কঠোরতা এবং বিদ্যমান দুর্বলতা সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে। এটি টাকা ও বৈদেশিক রিজার্ভের উপর চাপ সৃষ্টি করছে।
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরে আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি পাওয়ার আশা বাংলাদেশ ব্যাংকের
এতে বলা হয়েছে, শিগগিরিই সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারের জন্য নিরপেক্ষ রাজস্ব নীতি দ্বারা সমর্থিত আরও আর্থিক কঠোরতা এবং বৃহত্তর বিনিময় হারের নমনীয়তা প্রয়োজন।
সামাজিক ও উন্নয়নমূলক ব্যয়ের জন্য অতিরিক্ত আর্থিক খাত তৈরি করতে বিদ্যমান নীতি সংস্কার; নীতি কাঠামো আধুনিকীকরণ; নিয়ন্ত্রণ বাড়ানো এবং জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা জোরদারের উপর আলোকপাত করে আর্টিকেল ৪।
বাংলাদেশ সরকার এবং অন্যান্য অংশীজনদের আতিথেয়তা ও খোলামেলা আলোচনার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে আই্মএফের প্রতিনিধি দল।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারসহ সরকারি ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে দলটি।
দলটি বেসরকারি খাতের প্রতিনিধি, থিঙ্ক ট্যাঙ্ক, দ্বিপক্ষীয় দাতা এবং উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছে।
আরও পড়ুন: আইএমএফ ৪.৭০ বিলিয়ন ডলার ঋণের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা শিথিল করেছে
আইএমএফকে ঋণের পরবর্তী কিস্তির জন্য প্রয়োজনীয় রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনার আহ্বান বাংলাদেশের
মুদ্রাস্ফীতি মোকাবিলায় ঋণের সুদের হার বাড়াল বিবি
মুদ্রাস্ফীতির ক্রমবর্ধমান প্রবণতা নিয়ন্ত্রণে ঋণের সুদের হার ৫০ পয়েন্ট বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধান ও নীতি বিভাগ (বিআরপিডি) এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে।
ব্যাংকগুলোর ঋণের হার ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ১০ দশমিক ২০ শতাংশ থেকে ১০ দশমিক ৭০ শতাংশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
যে পদ্ধতির ভিত্তিতে এখন ঋণের সুদের হার নির্ধারণ করা হচ্ছে, তা 'স্মার্ট' বা ট্রেজারি বিলের ছয় মাসের চলমান গড় হার নামে পরিচিত। কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি মাসের শুরুতে এই হার জানিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন: এমএফএস’র ২১৭২৫ অ্যাকাউন্ট স্থগিত করেছে বিএফআইইউ
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক সাংবাদিকদের বলেন, ব্যাংকগুলো এখন রেফারেন্স লেন্ডিং রেটের সঙ্গে সাড়ে ৩ শতাংশ যোগ করতে পারবে, যা ৭ দশমিক ২০ শতাংশের স্মার্ট রেট নামেও পরিচিত।
প্রি-শিপমেন্ট রফতানি ঋণের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো স্মার্টের সঙ্গে আড়াই শতাংশ যোগ করতে পারে, যা আগে ছিল ২ শতাংশ।
মুদ্রাস্ফীতি মোকাবিলায় পলিসি রেট (রেপো রেট) ৭৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়ানোর পর ঋণের হার বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
আরও পড়ুন: বৈদেশিক মুদ্রার পরিসংখ্যান মিলছে না: অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন
নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো সেপ্টেম্বরের 'স্মার্ট' রেটের সঙ্গে সর্বোচ্চ সাড়ে ৩ শতাংশ হারে মার্জিন বা সুদ যোগ করে অক্টোবর মাসে ঋণ দিতে পারবে।
চলতি মাসে বড় ঋণের ক্ষেত্রে ব্যাংক থেকে সর্বোচ্চ ১০ দশমিক ৭০ শতাংশ সুদ নেওয়া যাবে। প্রি-শিপমেন্ট রপ্তানি ঋণের সুদের হার হবে ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ। কৃষি ও পল্লী ঋণের ক্ষেত্রে আগের মতোই সর্বোচ্চ সুদ নেওয়া যাবে ৯ দশমিক ২০ শতাংশ।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের রিজার্ভ-সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থা পর্যালোচনা করছে আইএমএফ
৪.৫ মিলিয়ন সুদসহ ২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ বাংলাদেশকে পরিশোধ করেছে শ্রীলঙ্কা
দুই বছর আগে মুদ্রা বিনিময় চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের কাছ থেকে নেওয়া ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণের পুরোটাই পরিশোধ করেছে শ্রীলংকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইউএনবিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, শেষ কিস্তিতে শ্রীলঙ্কা বৃহস্পতিবার রাতে প্রায় ৫০ মিলিয়ন ডলার এবং ঋণের সুদ ৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে।
আরও পড়ুন: ভবিষ্যতে ব্যাংক ঋণের সুদ বাড়বে: সালমান এফ রহমান
২০২১ সালের মে মাসে এক বছরের জন্য এই ঋণ নেয় শ্রীলঙ্কা। তবে অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক সংকটের কারণে দেশটি ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয় এবং শ্রীলঙ্কা সরকার নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণা করে। এ কারণে দেশটি বেশ কয়েকবার ঋণ পরিশোধের মেয়াদ বাড়িয়েছে।
এ বছর শ্রীলংকার অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে এবং দেশটি ঋণ পরিশোধ করতে সক্ষম হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মতে, গত ২০ আগস্ট প্রাথমিকভাবে ৫০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করে শ্রীলঙ্কা। এরপর ৩১ আগস্ট তারা ১০০ মিলিয়ন ডলার ফেরত দেয়। অবশেষে বৃহস্পতিবার রাতে বাকি ৫০ মিলিয়ন ডলার ফেরত দেয় তারা। বাংলাদেশ থেকে নেওয়া ঋণ তিন কিস্তিতে পরিশোধ করেছে শ্রীলঙ্কা।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়কে ১০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে এডিবি
নগর পরিচালনা ও অবকাঠামো উন্নয়নে বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে ১৮৪ ইউরোর ঋণ সহায়তা চুক্তি সই
বাংলাদেশের তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়কে ১০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে এডিবি
বাংলাদেশের তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান, সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং ও তথ্য প্রযুক্তি (আইটি) প্রোগ্রাম উন্নত করতে ১০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
শুক্রবার(২২ সেপ্টেম্বর) এই ঋণের অনুমোদন দেয় ব্যাংকটি।
এডিবির সামাজিক খাতের অর্থনীতিবিদ রিওতারো হায়াশি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব প্রযুক্তি গ্রহণকে ত্বরান্বিত করতে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকল্প বাস্তবায়নে উচ্চশিক্ষায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোগ্রাম উন্নীত করা সময়ের দাবি।
তিনি বলেন, ‘এই প্রকল্পটি আরও দক্ষ ও প্রযুক্তিবান্ধব স্নাতক এবং উদ্যোক্তাদের বিকাশে সহায়তা করবে, যারা দেশের আইটি শিল্পকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করতে পারে।’
আরও পড়ুন: দক্ষ জনশক্তি গড়তে বাংলাদেশকে ৩০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে এডিবি
এডিবির তথ্য মতে, প্রকল্পটি বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল, সফটওয়্যার প্রকৌশল ও তথ্য প্রযুক্তিবিষয়ক প্রোগ্রামগুলোকে সময়োপযোগী করবে।
এই প্রোগ্রামগুলো মিশ্র শিক্ষার কৌশলগুলো গ্রহণ করবে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবোটিক্স ও ইন্টারনেট অব থিংসের মতো সর্বশেষ প্রযুক্তিগুলোকে একীভূত করবে।
শিক্ষার্থীরা যাতে আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে করা সময়োপযোগী পাঠ্যক্রম পায় সেটি নিশ্চিত করতে এই প্রোগ্রামগুলো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দাবি করবে।
আরও পড়ুন: ২০২২ সালে বৈশ্বিক বাণিজ্যিক আর্থিক ঘাটতি ২.৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত: এডিবি
এডিবি তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আধুনিক শ্রেণীকক্ষ ও পরীক্ষাগার স্থাপন, সহযোগিতা ওস্টার্ট-আপ স্পেস এবং সহায়ক সুবিধাদি প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করবে।
এই সুবিধাগুলো জলবায়ু ও দুর্যোগসহনশীল নকশা, জ্বালানি ও পানিসাশ্রয়ী বৈশিষ্ট্যগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করবে এবং নারীবান্ধব সুযোগ-সুবিধা ও পরিষেবাগুলো অন্তর্ভুক্ত করবে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নতুন শিক্ষামূলক পদ্ধতি এবং উদীয়মান ডিজিটাল প্রযুক্তিতে দক্ষ হতে শিক্ষকদের সক্ষমতা তৈরি করবে।
নির্ধারিত তিন বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও শিক্ষকরা যৌথ গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে উদ্ভাবনী সমাধান নিয়ে আসার জন্য শিল্প অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করবে।
আন্ডারগ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের বিশেষ করে নারীদের জন্য বাধ্যতামূলক ইন্টার্নশিপের সুযোগ, ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং ও ইন্ডাট্রি প্লেসমেন্ট করা হবে।
আরও পড়ুন: এডিবি'র সর্বশেষ প্রতিবেদন: ২০২৪ অর্থবছরকে বাংলাদেশের জন্য একটি ভালো বছর হিসেবে পূর্বাভাস
ভবিষ্যতে ব্যাংক ঋণের সুদ বাড়বে: সালমান এফ রহমান
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বৃহস্পতিবার ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে বলেছেন, আগামী দিনে ব্যাংক সুদের হার বাড়বে।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনস্থ সংস্থা বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) সম্মেলন কক্ষে এফবিসিসিআইয়ের নবনির্বাচিত কমিটির সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
সালমান বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অস্থিরতায় ব্যবসায়ীরা ভীত নন।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছর ধরে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরও এমন স্থিতিশীলতা আসবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
আরও পড়ুন: ঝুঁকিপূর্ণ ৮৫৬টি পোশাক কারখানায় নজরদারির সুপারিশ সিপিডির
এফবিসিসিআই নেতারা দেশের বাণিজ্যের চ্যালেঞ্জ এবং রাজস্ব কর্মকর্তাদের বিভিন্ন হয়রানির কথা তুলে ধরেন। জবাবে সালমান সংকট সমাধানে এফবিসিসিআইকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, ‘সরকারের কাজ ব্যবসার পরিবেশ নিশ্চিত করা। ব্যবসায়ীদের মুনাফা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব নয়।’
সালমান বলেন, ব্যবসায়ীদের নানা অভিযোগের কারণে সরকার দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংকের সুদের হার নিয়ন্ত্রণে রেখেছিল। কিন্তু এখন আমানতের সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় ভবিষ্যতে তা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে না।
বর্ধিত সুদের হারের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ব্যবসায়ীদের প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সালমান বলেন, কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে রাজস্ব আদায়ে সরকারের চ্যালেঞ্জ রয়েছে এবং ব্যবসায়ীদের দাবি সত্ত্বেও কর কমানো হলেও ইচ্ছা অনুযায়ী রাজস্ব বাড়েনি।
দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ব্যবসায়ীদের প্রতিনিয়ত কর প্রদানেরও আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারের মার্কিন-নিষেধাজ্ঞায় থাকা ব্যাংকগুলোর সঙ্গে লেনদেন না করার নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের