ক্ষতিপূরণ দাবি
বাসের ধাক্কায় জাবি শিক্ষার্থীর বাবা নিহত, ক্ষতিপূরণ দাবিতে ১০ বাস আটক
ঢাকার বকশীবাজারে মৌমিতা পরিবহনের বাসের ঢাক্কায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক শিক্ষার্থীর বাবা নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিতে ওই পরিবহনের ১০টি বাস আটকে রেখেছেন একদল শিক্ষার্থী।
বুধবার (৯ জুলাই) দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক-সংলগ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক (ডেইরি গেইট) থেকে বাসগুলো আটক করে ক্যাম্পাসে নিয়ে আসা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, নিহত জহুরুল হক সেলিম (৫২) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রিফাতের বাবা। তিনি পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার বাসিন্দা ছিলেন।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ৯টার দিকে মৌমিতা পরিবহনের দুটি বাসের মাঝে চাপা পড়ে গুরুতর আহত হন রিফাতের বাবা। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
জাবি শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, মৌমিতা পরিবহনের দুটি বাস যাত্রী তুলতে গিয়ে প্রতিযোগিতা করার সময় দুই বাসের মাঝে পিষ্ট হয় ভুক্তভোগী।
আরও পড়ুন: চকবাজারে দুই বাসের চাপায় পথচারী নিহত
রিফাতের সহপাঠীরা জানান, তিনি পরিবারের বড় ছেলে। তার ক্যান্সারে আক্রান্ত একটা ছোট ভাই আছে, যার বয়স ১৩। রিফাতের বাবাই ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তিনি তার ছোট ছেলে জুবায়েরের চিকিৎসা ও টাকা সংগ্রহের জন্য ঢাকায় এসেছিলেন।
এর আগে, জুবায়েরের চিকিৎসার জন্য জাবিতে কয়েক দফায় টাকা সংগ্রহের কথাও জানান শিক্ষার্থীরা।
রিফাতের সহপাঠী হাসিবুল হাসান ইউএনবিকে বলেন, ‘আমরা পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ রিফাতের বাবার অকালমৃত্যুতে মর্মাহত। রাষ্ট্রের কাছে এই হত্যাকাণ্ডের উপযুক্ত বিচার দাবি করছি। রিফাতের ছোট ভাই ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত, তার চিকিৎসা নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এজন্য ঘাতক মৌমিতা পরিবহনের বাস মালিকপক্ষের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ দাবি করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘দুর্ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও বাস সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। এতে বিভাগের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা মৌমিতা পরিবহনের ১০টি বাস আটক করেছে। দ্রুত সমাধান না হলে আমরা আরও কঠোর কর্মসুচিতে যাব।’
জব্দ হওয়া একটি বাসের চালক আব্দুল কাদের ইউএনবিকে বলেন, ‘ডেইরি গেইটে যখন আমাদের বাসগুলো আটকাচ্ছিল তার আগ পর্যন্ত কিছুই জানতাম না। পরে জানতে পারলাম, এক ছাত্রের বাবা মারা গেছেন আমাদের একটি বাসের চাপায়, তাই আটকাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথমে শিক্ষার্থীরা আমাদের মোবাইল ফোন ও চাবি নিয়েছিল, কিন্তু বিকেল ৫টার দিকে ফোনগুলো ফিরিয়ে দিয়েছে। তারা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেনি আর এখন পর্যন্ত টাকাও দাবি করেনি। এগুলো আমাদের বিষয় না। মালিকের সঙ্গে কথা বলে তারা সমস্যা সমাধান করুক।’
মৌমিতা পরিবহনের সাভার অঞ্চলের লাইনম্যান সুমন মিয়া ইউএনবিকে জানান, তাদের মালিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যাটি সমাধান করবেন। সবাইকে ধৈর্য ধরার অনুরোধও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: মানিকগঞ্জে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম রশিদুল আলম বলেন, ‘এটি অত্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনা যে, আমাদের একজন শিক্ষার্থীর বাবা ঢাকায় বাসচাপায় নিহত হয়েছেন। ঘটনাটি ক্যাম্পাসের বাইরে ঘটলেও শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানিয়ে এখানে বাস আটক করেছে। বাসমালিকদের সঙ্গে এখনও আমাদের যোগাযোগ হয়নি। কীভাবে বিষয়টি মীমাংসা করা যায় তা ভাবা হচ্ছে।’
বাস মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ হলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে কার্যকরী একটা সমাধানে যাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
১৪৮ দিন আগে
শিক্ষকের বেত্রাঘাতে চোখ হারাল চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী, ক্ষতিপূরণ দাবি ভুক্তভোগীর পরিবারের
ফেনীর দাগনভূঞায় শিক্ষকের বেত্রাঘাতে চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী ডান চোখ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাম চোখও।
এ ঘটনা অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তি ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সংবাদ সম্মেলন করেছে ওই শিক্ষার্থীর পরিবার।
শিক্ষার্থী মাহেদুল হাসান (৯) উপজেলার জগতপুর এলাকার ডাক্তার বাড়ির প্রবাসী রেয়াজুল হকের ছেলে। আর অভিযুক্ত শিক্ষক তাপস মজুমদার উপজেলার রামানন্দপুর গ্রামের কামিনী মজুমদারের ছেলে।
আরও পড়ুন: দুই নারীকে বেত্রাঘাতে ইসলামের ন্যায়বিচার প্রতিফলিত হয়নি: মাহাথির
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীর মা হাসিনা আক্তার বলেন, গত ১৪ মে ওয়াজেরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। গণিতে ভুল করার অভিযোগে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তাপস মজুমদার ওই ছাত্রকে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে বেত্রাঘাত করে। এসময় কঞ্চির একটি অংশ তার ডান চোখে ঢুকে যায়। পরে ছাত্রের চিৎকারে স্কুলের শিক্ষক, কর্মচারী ও স্থানীয় লোকজন এগিয়ে গিয়ে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে দাগনভুঞা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ফেনীতে রেফার করেন। এক পর্যায়ে মাহেদুল হাসানকে চট্টগ্রামের পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতালে নেওয়া হয়। কয়েকদিন চিকিৎসা নেওয়ার পর রাজধানীর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়।
সেখানে চক্ষু পর্যালোচনা শেষে ডা. নাফিস আহমেদ শাহরিয়ার বলেন, মাহেদুলের একটি চোখ পরোপুরি অকেজো হয়ে গেছে। অন্য চোখটি বাঁচাতে হলে তাকে দ্রুত অপারেশান করতে হবে। প্রয়োজনে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারত গিয়ে চিকিৎসা নিলে ভালো হতে পারে। টাকা না থাকায় প্রবাসী পিতা রেয়াজুল হক উন্নত চিকিৎসা নিতে পারছেন না বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান। এ পর্যন্ত শিক্ষক সমিতি থেকে শুরু করে উপজেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
আরও পড়ুন: শিক্ষকের বেত্রাঘাতে শিক্ষার্থীর চোখ নষ্টের শঙ্কা
আহত মাহেদুল হাসানের বাবা রেয়াজুল হক বলেন, শিক্ষক তাপস মজুমদারের বেত্রাঘাতে আমার ছেলের ডান চোখ মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত রয়েছি। আমি ওই শিক্ষকের শাস্তি চাই। চিকিৎসা খরচের জন্য দুই দফা সমঝোতা বৈঠক হলেও প্রয়োজনীয় টাকা দিতে রাজি হননি শিক্ষক তাপস মজুমদারের ভাই রাজেস মজুমদার।
বক্তব্য জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক তাপস মজুমদারকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। জানা যায়, তিনি অফিসিয়াল ছুটি নিয়ে বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক সালাউদ্দিন বিদ্যালয়ে ব্যবহৃত বেত নির্দেশক কাঠি হিসেবে ক্লাসে ব্যবহার করা হয় বলে জানান। বিদ্যালয় কমিটির পক্ষ থেকে তিনি সমঝোতার চেষ্টা করেছেন।
ফেনী সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমা আক্তার বলেন, এ ঘটনার আমাকে প্রধান করে ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া শিক্ষা কর্মকর্তাসহ একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছিল। আমরা ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। একটি প্রতিবেদন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে জমা দিয়েছি।
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জে নারীকে বেত্রাঘাত ও পাথর মারার অভিযোগ, গ্রেপ্তার ৪
ফেনী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন বলেন, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। বর্তমানে মামলা চলমান। তবে মামলা চলাকালীন কীভাবে ছুটি নিয়ে দেশের বাইরে গেলেন সে ব্যাপারে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
৪৪২ দিন আগে
করোনায় মৃত সংবাদকর্মীদের জন্য ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি বিএফইউজে-ডিইউজের
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া প্রত্যেক সংবাদকর্মীর জন্য গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে।
২০৩৫ দিন আগে