জাবি
জাকসু নির্বাচন স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে রিট
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছেন সহ-সভাপতি (ভিপি) পদ থেকে বাদ পড়া প্রার্থী অমর্ত্য রায় জন।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় তিনি এই রিটটি দায়ের করেন।
অমর্ত্য রায় জন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তাকে অন্যায়ভাবে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। তবে জাকসুর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, কোনো অনিয়মিত শিক্ষার্থী ভোটার হতে পারে না।
এর আগে রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) অমর্ত্য রায়ের প্রার্থিতা ফিরে পেতে জাবির ভিসি, রেজিস্ট্রার ও জাকসু নির্বাচনের প্রধান কমিশনারকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়।
দীর্ঘ ৩৩ বছর পর আগামী ১১ সেপ্টেম্বর জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনে মোট ২৫টি পদের বিপরীতে ১৭৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ১০ জন এবং সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৯ জন প্রার্থী রয়েছেন।
নির্বাচনকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতোমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ৭টি প্যানেল ঘোষণা করেছে।
আরও পড়ুন: জাকসু নির্বাচনে ছাত্রদল মনোনীত প্যানেলের ৮ দফা ইশতেহার ঘোষণা
এর মধ্যে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ সমর্থিত ‘শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম’ , বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আবদুর রশিদ জিতুর নেতৃত্বে ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন’, বামপন্থি সংগঠনগুলোর ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ এবং ছাত্রশিবির-সমর্থিত ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা।
এ ছাড়া, বামপন্থি সংগঠনগুলোর অপর অংশের ‘সংশপ্তক পর্ষদ’ নামে ৫ সদস্যের আংশিক প্যানেল ও জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের একাংশের মুখপাত্র মাহফুজ ইসলামের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের ‘স্বতন্ত্র অঙ্গীকার পরিষদ’ নামে আরেকটি আংশিক প্যানেল রয়েছে। স্বতন্ত্র হিসেবেও অনেক প্রার্থী লড়ছেন।
গত ১ সেপ্টেম্বর এক রিট আবেদনের শুনানি শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে সেদিনই হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে এ বিষয়ে শুনানির পর হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেন আপিল বিভাগ। ফলে আগামীকাল (মঙ্গলবার) পূর্বনির্ধারিত তারিখেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন।
৮৮ দিন আগে
নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে জাবিতে শ্রমিক নিহত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নির্মাণাধীন লাইব্রেরি ভবন থেকে পড়ে মো. আরিফুল ইসলাম (৪০) নামে এক নির্মাণ শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১ আগস্ট) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তবে ঘটনার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে রাত ১০টার দিকে।
নিহত আরিফুল ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার বাসিন্দা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকায় শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন লাইব্রেরি ভবনের লেকচার থিয়েটারের চতুর্থ তলা থেকে পড়ে তিনি গুরুতর আহত হন।
এরপর তাকে দ্রুত উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নেওয়া হলে চিকিৎসক অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। পরে সেখানে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক নিংতম বলেন, ‘গতকাল (শুক্রবার) বেলা ১১টার দিকে কয়েকজন শ্রমিক আরিফুলকে নিয়ে মেডিকেলে আসা হয়। তারা জানান, তিনি একটি ভবনের ওপর থেকে পড়ে গেছেন। তার মুখে আঘাত ছিল ও দাঁত পড়ে গিয়েছিল। অবস্থা গুরুতর দেখে আমি তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে করে দ্রুত এনাম মেডিকেলে পাঠিয়ে দেই।’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, লাইব্রেরির ভবনটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়নে দায়িত্ব পালন করছে অনিক ট্রেডিং করপোরেশন লিমিটেড।
শ্রমিক নিহতের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান প্রকৌশলী মোমিনুল করিম বলেন, ‘আপাতত সেখানে আমাদের কাজ বন্ধ আছে। আর আমি বর্তমানে ঢাকায় আছি। তবে কিছু শ্রমিক সেখানে অবস্থান করছিলেন বলে জেনেছি। আজকে আমাকে ফোন করে জানানো হয়, একজন শ্রমিক পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। এর বাইরে আমি বিস্তারিত কিছু জানি না।’
আরও পড়ুন: প্রভোস্টবিহীন জাবির কাজী নজরুল হল, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা
বিষয়টি বিস্তারিত জেনে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে এমন একটি ঘটনা ঘটেছে; এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এত বড় ঘটনা ঘটেছে, অথচ আমাকে কেউ জানায়নি। সকালে যেটি ঘটেছে, সেটি আমি রাতে জানতে পারলাম।’
তিনি বলেন, ‘শনিবার সকাল ১০টায় জরুরি প্রশাসনিক মিটিং ডেকেছি। ভুক্তভোগীর জন্য শুধু ক্ষতিপূরণই নয়, বরং এর সঙ্গে জড়িতদের যেন বিচারের আওতায় আনা হয়— সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।’
১২৪ দিন আগে
প্রভোস্টবিহীন জাবির কাজী নজরুল হল, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলে প্রভোস্ট না থাকায় সার্টিফিকেটসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহে বিলম্ব এবং অভ্যন্তরীণ নানা অব্যবস্থাপনায় ভোগান্তিতে পড়েছেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, গত ১৪ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মামুন হোসেন কাজী নজরুল হলের প্রভোস্টের দায়িত্ব গ্রহন করেন। কিন্তু দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে তিনি হলে আসেন না বলে অভিযোগ করেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রভোস্ট নিয়োগের ক্ষেত্রে কিছু শর্ত আরোপ থাকলেও তা উপেক্ষা করা হয়েছে। নিয়মিত হলে থাকার শর্তে প্রভোস্ট নিয়োগ করা হয়। কিন্তু অধ্যাপক মামুন নিয়মিত ঢাকা থেকে যাতায়াত করার পরেও তিনি প্রভোস্ট হিসেবে দায়িত্ব পান।
হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হলে প্রভোস্ট না থাকায় হলের অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলোও প্রকট আকার ধারণ করছে। হলের লিফট মাঝে মধ্যেই বন্ধ থাকা, লোকবল সংকট, নিয়মিত বাথরুম পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন না করা, রিডিং রুমে অব্যবস্থাপনা, রিডিং রুম, গেস্টরুমের টেবিল চেয়ার শিক্ষার্থীদের রুমে নিয়ে যাওয়াসহ আরও নানান সমস্যার কথা জানান তারা।
হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের হলে প্রভোস্ট স্যার নেই। সার্টিফিকেট উত্তোলনসহ অন্যান্য যেকোনো কাজে স্যারকে পাওয়া যায় না। দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হয়। স্যার হলে আসেন না।’
আরও পড়ুন: বাসের ধাক্কায় জাবি শিক্ষার্থীর বাবা নিহত, ক্ষতিপূরণ দাবিতে ১০ বাস আটক
তিনি আরও বলেন, আমাদের হলে অনেক সমস্যা। মাঝে মধ্যেই লিফট বন্ধ হয়ে যায়, প্রয়োজনের সময়ে সিঁড়ি ব্যবহার করতে হয়। হলের ক্যান্টিনে খাবারের দাম তুলনামূলক বেশি, খাবারের মানও অতোটা ভালো নয়। হলের ওয়াশরুমগুলো সময়মতো পরিচ্ছন্ন করা হয় না। টেবিল ল্যাম্প দেওয়ার কথা থাকলেও এখনো পায়নি।’
আরেক আবাসিক শিক্ষার্থী নীরব মিয়া বলেন, ‘আমাদের হলে গ্যাস সংযোগ না থাকায় এখানে ক্যান্টিনে খাবারের দাম বেশি। খাবারের মানও তেমন ভালো নয়। তাই আমাদের খাওয়ার জন্য ভাসানী বা কামাল উদ্দিন হলে যেতে হয়, যা অনেকটাই কষ্টকর এবং সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।’
তিনি আরও বলেন, ‘মনিটরিং না করায় অনেকেই লিফটে সিগারেট খায় এবং অবশিষ্টাংশ লিফটেই ফেলে রাখে, এটা আমাদের জন্য অনেক বিপদজনক। হলে প্রভোস্ট না থাকায় এই সমস্যাগুলো হচ্ছে বলে জানান তিনি।’
হল কর্তৃপক্ষের বরাতে জানা যায়, সম্প্রতি হলের একটি কক্ষে ছাত্রীর প্রবেশ এবং সেখানে কয়েকজন ছাত্রের অবস্থান নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল, যার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠনের কথা থাকলেও প্রভোস্ট না থাকায় আজও সেই কমিটি গঠন হয়নি।
এছাড়াও কিছুদিন আগে হলে একজন ভুয়া শিক্ষার্থীকে আটক করার ঘটনা ঘটেছে, যিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্র ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক নারী শিক্ষার্থীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন।
এই ঘটনাগুলো থেকে কাজী নজরুল ইসলাম হলের অব্যবস্থাপনার চিত্র স্পষ্ট হয়। হলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা এবং কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাব এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তির সুযোগ তৈরি করে বলে আশঙ্কা করেন সংশ্লিষ্টরা।
আরও পড়ুন: জাবিতে চালু হয়েছে ইলেকট্রনিক কার্ট, ভোগান্তি কমেনি শিক্ষার্থীদের
এ বিষয়ে হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ওয়ার্ডেন সহযোগী অধ্যাপক উজ্জ্বল কুমার মন্ডল বলেন, ‘আমাদের হলে প্রভোস্ট স্যার না থাকায় এই সমস্যাগুলো হচ্ছে। আমরা কতৃপক্ষকে জানিয়েছি বিষয়টি। কিন্তু কতৃপক্ষ থেকে সাড়া পাওয়া যায়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘হলের রুমগুলোতে টেবিল ল্যাম্প বসানোসহ আরও কিছু পরিকল্পনা আছে আমাদের। হলে নতুন প্রভোস্ট নিয়োগ হলে সকল সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।’
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ ইউএনবিকে বলেন, ‘প্রভোস্ট নিয়োগের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা হয়, নিয়মিত হলে অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু এই নীতিটা অনুসরণ হচ্ছে না। কেউ যদি হলে অবস্থান নিশ্চিত করতে না পারে তাহলে তার প্রভোস্ট হওয়ার সুযোগ নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের উপাচার্য স্যারকে সমন্বয় করতে হয়। সিন্ডিকেটে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। নতুন করে প্রভোস্ট নিয়োগের বিষয়টি উপাচার্য স্যার ভালো বলতে পারবেন। প্রভোস্ট নিয়োগের বিষয়টি উপাচার্য দেখেন বলে জানান তিনি।’
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের রুটিন দায়িত্বে থাকা উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান ইউএনবিকে জানান, ‘এই হলে সমস্যা চলতেছে বিষয়টি আমরা অবগত আছি। ভিসি স্যার যুক্তরাষ্ট্রে থাকায় আমি রুটিন দায়িত্ব পালন করছি। আমার এখানে কিছু করার সুযোগ নেই। সামনে ফিস্টসহ আরও কিছু প্রোগ্রাম আছে সেজন্য হলে প্রভোস্ট থাকা জরুরি।’
তিনি আরও বলেন, ‘নতুন প্রভোস্ট নিয়োগের বিষয়ে কথা চলছে। উপাচার্য স্যার দেশে আসলে নিয়োগটা নিশ্চিত হবে বলে জানান তিনি।’
১৩৩ দিন আগে
জাবি ছাত্র ইউনিয়নের নতুন সভাপতি অংকুর, সম্পাদক ফাইজান
‘যৌবন তুমি মিলিয়ো না তাল রাষ্ট্রীয় কোনো নাচে, রাষ্ট্র তোমার মজ্জা-মগজ-রক্ত খেয়ে বাঁচে’ এই স্লোগানকে ধারণ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) সংসদ ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে সভাপতি হিসেবে নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের অদ্রি অংকুর এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মার্কেটিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ফাইজান আহমেদ অর্ক দায়িত্ব পেয়েছেন।
বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার চত্বরে সংগঠনটির ৩৩তম সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়।
কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসাবে মাইশা মনি, সহ-সভাপতি হিসাবে সাবেরীন নওশাদ, সাদিয়া ইসলাম মুন, সহকারী সাধারণ সম্পাদক হিসাবে সীমান্ত বর্ধন, জারিন তাসনিম প্রমি, কোষাধ্যক্ষ হিসাবে ইসফার সাদী, দপ্তর সম্পাদক হিসাবে মো. রেদওয়ান সিকদার, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক হিসাবে ইমরান হাসান শুভ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক হিসাবে রিফাত রাফি, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হিসাবে আনিকা তাবাসসুম ফারাবী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক হিসাবে নুশরিকা অদ্রি, সমাজকল্যাণ ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক হিসাবে জানিব হাসান মাটিয়া, ক্রীড়া সম্পাদক হিসাবে ইশতিয়াক বিন ইকবাল নির্বাচিত হয়েছেন।
এ ছাড়াও কমিটিতে সদস্য হিসাবে ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলি, অমর্ত্য রায়, আনিকা ইবনাত আঁচল, আয়েশা নাজ তানহা, নাহিদুল ইসলাম নাঈম, সাজিদ রহমান, আদৃতা রায় ও সিয়াম মাহমুদ নির্বাচিত হয়েছেন।
উদ্বোধনী সভায় সদ্যসাবেক সভাপতি অমর্ত্য রায়ের সভাপতিত্বে স্বৈরাচার আমলে আয়নাঘরে নির্যাতিত আদিবাসী নেতা মাইকেল চাকমা সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন এবং বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক শিমুল কুম্ভকার।
উদ্বোধনী সভা শেষে কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার শিক্ষক লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত হয় কাউন্সিল অধিবেশন। কাউন্সিলে আগামী এক বছর দায়িত্ব পালনের জন্য সর্বসম্মতিক্রমে ২৫ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে ২৩ জন সদস্যের নাম ঘোষণা করা হয় এবং ২টি সদস্যপদ ফাঁকা রাখা হয়, যা পরবর্তীতে কাজের ভিত্তিতে কো-অপ্ট করা হবে বলে জানা যায়।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) রাতে সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে, ক্যাম্পাসের সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উদযাপন ও ফ্যাসিবাদবিরোধী কনসার্টে নতুন কমিটি আত্মপ্রকাশ করে।
১৩৯ দিন আগে
বাসের ধাক্কায় জাবি শিক্ষার্থীর বাবা নিহত, ক্ষতিপূরণ দাবিতে ১০ বাস আটক
ঢাকার বকশীবাজারে মৌমিতা পরিবহনের বাসের ঢাক্কায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক শিক্ষার্থীর বাবা নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিতে ওই পরিবহনের ১০টি বাস আটকে রেখেছেন একদল শিক্ষার্থী।
বুধবার (৯ জুলাই) দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক-সংলগ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক (ডেইরি গেইট) থেকে বাসগুলো আটক করে ক্যাম্পাসে নিয়ে আসা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, নিহত জহুরুল হক সেলিম (৫২) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রিফাতের বাবা। তিনি পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার বাসিন্দা ছিলেন।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ৯টার দিকে মৌমিতা পরিবহনের দুটি বাসের মাঝে চাপা পড়ে গুরুতর আহত হন রিফাতের বাবা। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
জাবি শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, মৌমিতা পরিবহনের দুটি বাস যাত্রী তুলতে গিয়ে প্রতিযোগিতা করার সময় দুই বাসের মাঝে পিষ্ট হয় ভুক্তভোগী।
আরও পড়ুন: চকবাজারে দুই বাসের চাপায় পথচারী নিহত
রিফাতের সহপাঠীরা জানান, তিনি পরিবারের বড় ছেলে। তার ক্যান্সারে আক্রান্ত একটা ছোট ভাই আছে, যার বয়স ১৩। রিফাতের বাবাই ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তিনি তার ছোট ছেলে জুবায়েরের চিকিৎসা ও টাকা সংগ্রহের জন্য ঢাকায় এসেছিলেন।
এর আগে, জুবায়েরের চিকিৎসার জন্য জাবিতে কয়েক দফায় টাকা সংগ্রহের কথাও জানান শিক্ষার্থীরা।
রিফাতের সহপাঠী হাসিবুল হাসান ইউএনবিকে বলেন, ‘আমরা পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ রিফাতের বাবার অকালমৃত্যুতে মর্মাহত। রাষ্ট্রের কাছে এই হত্যাকাণ্ডের উপযুক্ত বিচার দাবি করছি। রিফাতের ছোট ভাই ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত, তার চিকিৎসা নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এজন্য ঘাতক মৌমিতা পরিবহনের বাস মালিকপক্ষের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ দাবি করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘দুর্ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও বাস সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। এতে বিভাগের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা মৌমিতা পরিবহনের ১০টি বাস আটক করেছে। দ্রুত সমাধান না হলে আমরা আরও কঠোর কর্মসুচিতে যাব।’
জব্দ হওয়া একটি বাসের চালক আব্দুল কাদের ইউএনবিকে বলেন, ‘ডেইরি গেইটে যখন আমাদের বাসগুলো আটকাচ্ছিল তার আগ পর্যন্ত কিছুই জানতাম না। পরে জানতে পারলাম, এক ছাত্রের বাবা মারা গেছেন আমাদের একটি বাসের চাপায়, তাই আটকাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথমে শিক্ষার্থীরা আমাদের মোবাইল ফোন ও চাবি নিয়েছিল, কিন্তু বিকেল ৫টার দিকে ফোনগুলো ফিরিয়ে দিয়েছে। তারা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেনি আর এখন পর্যন্ত টাকাও দাবি করেনি। এগুলো আমাদের বিষয় না। মালিকের সঙ্গে কথা বলে তারা সমস্যা সমাধান করুক।’
মৌমিতা পরিবহনের সাভার অঞ্চলের লাইনম্যান সুমন মিয়া ইউএনবিকে জানান, তাদের মালিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যাটি সমাধান করবেন। সবাইকে ধৈর্য ধরার অনুরোধও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: মানিকগঞ্জে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম রশিদুল আলম বলেন, ‘এটি অত্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনা যে, আমাদের একজন শিক্ষার্থীর বাবা ঢাকায় বাসচাপায় নিহত হয়েছেন। ঘটনাটি ক্যাম্পাসের বাইরে ঘটলেও শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানিয়ে এখানে বাস আটক করেছে। বাসমালিকদের সঙ্গে এখনও আমাদের যোগাযোগ হয়নি। কীভাবে বিষয়টি মীমাংসা করা যায় তা ভাবা হচ্ছে।’
বাস মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ হলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে কার্যকরী একটা সমাধানে যাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
১৪৮ দিন আগে
ফের পেছাল জাকসু নির্বাচন, নতুন তারিখ ঘোষণা
ফের পিছিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচন। এ নিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো পেছাল নির্বাচনের তারিখ। সেইসঙ্গে ১১ সেপ্টেম্বর নির্বাচনের সম্ভাব্য নতুন তারিখ হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত টানা ১০ ঘণ্টার জাকসু নির্বাচন সংক্রান্ত পরিবেশ পরিষদের মিটিং শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান এসব জানান।
এ সময় শিক্ষার্থী ও ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে জাকসু নির্বাচন ও বিচারকার্য সম্পন্ন করার নতুন রোডম্যাপ ঘোষণা করেন উপাচার্য।
নতুন রোডম্যাপ অনুযায়ী, আগামী ৪ আগস্টের মধ্যে জুলাই হামলায় জড়িত ছাত্রলীগের সাময়িক বহিষ্কৃতদের চূড়ান্ত বিচার নিশ্চিত করা হবে, একই দিনে জাকসুর তফসিল ঘোষিত হবে। এ ছাড়া, ৩১ আগস্ট হামলায় মদদদাতা শিক্ষকদের চূড়ান্ত বিচার নিশ্চিত হবে এবং আগামী ১১ সেপ্টেম্বর জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান উপাচার্য।
আরও পড়ুন: জাকসুর তফসিল: নিরাপত্তা জোরদারে জাবিতে বহিরাগতদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
এদিকে, নতুন করে তারিখ ঘোষণায় অকার্যকর হয়েছে আগের নির্বাচন কমিশন। এখন নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে পুনরায় তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বার বার জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হামলাকারীদের বিচার আর জাকসু নির্বাচন মুখোমুখি করার চেষ্টা করেছে। এর আগেও একই ইস্যুতে কয়েক দফা জাকসু নির্বাচন পেছানো হয়েছে, আবারও পেছাল।’
তিনি আরও বলেন, ‘শেষবারের মতো গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এই প্রশাসনের উপর আমরা আস্থা রাখতে চাই। আমরা মনে করি, এই প্রশাসন বিগত স্বৈরাচারী সরকারের মদদপুষ্ট প্রশাসনের মতো শিক্ষার্থীদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করবে না।’
এর আগে গত ২১ মে এবং ৩১ জুলাই জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা থাকলেও টানা দ্বিতীয়বারের মতো তারিখ পরিবর্তন করা হলো।
বার বার উদ্দেশ্যমূলকভাবে জাকসু নির্বাচন পেছানোর জন্য প্রশাসনকে দায়ী করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়াও বিচার কাজ শেষ না করার জন্যও প্রশাসনকে দায়ী করেন তারা।
১৬০ দিন আগে
শিক্ষার্থীর মৃত্যু, দেরিতে অ্যাম্বুল্যান্স পাঠানোর অভিযোগে জাবির চিকিৎসাকেন্দ্র ঘেরাও
সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলা ও দেরিতে অ্যাম্বুল্যান্স পাঠানোর অভিযোগ তুলে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্র ঘেরাও করেছেন ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (২২ জুন) রাত সোয়া ৯টায় চিকিৎসাকেন্দ্রের প্রধান ফটক আটকে শিক্ষার্থীরা এই ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেন।
নিহত জোবায়ের হোসাইন জাবির নৃবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। রবিবার সকালে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
এর আগে, শনিবার (২১ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে তার জন্য দেরিতে অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো হয়েছে এবং বারবার যোগাযোগ করার পরও কার্যকর সাড়া পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
তারা জানান, জোবায়ের দীর্ঘদিন ধরে হিমোফিলিয়া রোগে আক্রান্ত ছিলেন। হঠাৎ করে অসুস্থ হওয়ায় শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান তিনি। কিছুটা সুস্থ হলে ক্যাম্পাসে ফেরার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে যোগাযোগ করেন জোবায়ের।
সেখান থেকে জানানো হয়, অ্যাম্বুলেন্স নষ্ট, ঢাকায় পাঠানো যাবে না। এর চার ঘণ্টা পর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সেই তিনি ক্যাম্পাসে ফেরেন।
এদিকে, রবিবার আবারও তার পেটে ব্যথা শুরু হলে তাকে সাভারের এনাম মেডিকেলে নেওয়া হয়। সেখানে একপর্যায়ে মৃত্যু হয় তার।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ইতিহাস বিভাগের শাকিল আহমেদ বলেন, ‘জোবায়েরের সঙ্গে আমার অনেক ভালো সম্পর্ক ছিল। অসুস্থতা নিয়ে তার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হতো। শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঢামেক হাসপাতাল থেকে কল দিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে জোবায়ের। সে সময় বুকে প্রচণ্ড ব্যথা করছে বলে জানায় সে এবং ক্যাম্পাসে ফিরতে চায়। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্সের জন্য অনেকবার কল দিয়েও লাভ হচ্ছে না বলে জানায় সে।’
ওই শিক্ষার্থী আরও বলেন, ‘দায়িত্বরত চিকিৎসা কর্মকর্তা জোবায়েরকে নাকি বলেছিলেন, অ্যাম্বুলেন্স নষ্ট, ঢাকায় পাঠানো যাবে না। অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভারকে কল দিলে তিনিও নানা অজুহাত দেখান। এভাবে তাকে চার ঘণ্টা অপেক্ষা করিয়েছে বলে জানায় সে।’
সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী জিয়া উদ্দিন আয়ান বলেন, ‘আমরা দেখেছি, দেশের এত বড় একটি বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার পরও জাবিতে পর্যাপ্ত চিকিৎসাসামগ্রী নেই। ক্যাম্পাসে অনেক শিক্ষার্থী সময় মতো চিকিৎসা না পেয়ে অকালে মারা গেছে। মেডিকেলে পর্যাপ্ত জনবল নেই। বছরের পর বছর মেডিকেল সেন্টার সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন চললেও তাতে কোনো ফল আসে না।’
এ কারণে অতি দ্রুত মেডিকেল সেন্টারের কার্যকর সংস্কার নিশ্চিত করার দাবি জানান তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চিকিৎসাকেন্দ্রের প্রধান কর্মকর্তা ডা. মো. শামসুর রহমান বলেন, ‘জোবায়েরের অসুস্থতার কথা মেডিকেলের সবাই জানে। যখনই সে অ্যাম্বুলেন্স চেয়েছেন, তখনই পেয়েছে। তবে শনিবার যখন সে অ্যাম্বুলেন্স চায়, তখনই দেওয়া সম্ভব হয়নি। তিনি দেরিতে অ্যাম্বুলেন্স পেয়েছেন, এটা সত্য।’
তিনি দাবি করেন, ‘জোবায়েরের অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়ার কারণ অ্যাম্বুলেন্স–স্বল্পতা। বর্তমানে তিনটি অ্যাম্বুলেন্স সচল রয়েছে। গতকাল সচল অ্যাম্বুলেন্সগুলো বাইরে ছিল, অ্যাম্বুলেন্স পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তার জন্য পাঠানো হয়েছিল।’
উপাচার্যের শোক
এদিকে, জোবায়েরের মৃত্যুর ঘটনায় শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ কামরুল আহসান।
গতকাল (রবিবার) দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক শোকবার্তায় তিনি বলেন, ‘জোবায়ের হোসাইনের অকালমৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয় একজন মেধাবী শিক্ষার্থীকে হারাল। তার পরিবারের জন্য এ ক্ষতি অপূরণীয়।’
তিনি জোবায়ের হোসাইনের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। এর পাশাপাশি তিনি তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান এবং সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান।
১৬৪ দিন আগে
আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবি: জাবিতে বিক্ষোভ, মহাসড়ক অবরোধ
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গণহত্যার দায়ে অনতিবিলম্বে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। এ সময় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) দিবাগত রাত ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। এরপর মিছিলটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে মেইন গেইট (ডেইরি গেইট) সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নেয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা প্রায় ৩০মিনিট সময় ধরে মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে মহাসড়কের দুই লেনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শেষে রাত দুইটা নাগাদ তারা মিছিলটি সরিয়ে নিলে আবারও যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বাদ জুমা বড় জমায়েতের ডাক
বিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ১৭ বছরের আওয়ামী দুঃশাসনে বাংলাদেশকে একটি কারাগারে রুপান্তর করা হয়েছিল। পরিশেষে গত বছরের জুলাই আন্দোলনে দুই হাজার ছাত্র জনতার রক্তের ওপর হোলি খেলেছে পতিত আওয়ামী লীগ সরকার। অনতিবিলম্বে এই সন্ত্রাসী সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করতে হবে। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় অবস্থান কর্মসূচি থেকে।
মিছিলে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের ‘আওয়ামী লীগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ কর, করতে হবে করতে হবে’, ‘অমার ভাই কবরে, খুনি কেনো বাহিরে’, ‘আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘আওয়ামী লীগের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘আওয়ামী লীগের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে শোনা যায়।
২১০ দিন আগে
জাকসুর তফসিল: নিরাপত্তা জোরদারে জাবিতে বহিরাগতদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
আসন্ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) এবং আবাসিক হল সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শনিবার (৩ মে) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শুক্রবার (২ মে) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ইতোমধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) এবং আবাসিক হল সংসদ সমূহের নির্বাচনের তারিখ ও তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা পরিস্থিতি এই সময়ে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনার বিষয়। সেই আলোকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আগামীকাল ৩ মে (শনিবার) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বহিরাগতদের প্রবেশে নিষেধ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বহিরাগত চিহ্নিতকরণে সুবিধার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অংশীজনকে স্ব স্ব পরিচয়পত্র বহন করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: জুলাই হামলা: জাবিতে ২৫৯ ছাত্রলীগকর্মী ও ৯ শিক্ষক বরখাস্ত
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক দপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, জাবিতে জাকসুর তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচন আগামী ৩১ জুলাই। কিন্তু এই নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য দুষ্কৃতকারীরা ষড়যন্ত্র চালাতে পারে। তাই ক্যাম্পাসে যেকোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এবং নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বিভাগের কর্মকর্তারা এবং নিরাপত্তাকর্মীরাও সর্বদা প্রস্তুত আছে।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘ ৩২ বছর পর জাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণায় তাদের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ ও উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। তারা আশা করছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল সকল ছাত্র সংগঠনের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাকসু নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
২১৫ দিন আগে
কুয়েট ভিসি মাসুদের পদত্যাগ দাবিতে জাবিতেও অনশন
কুয়েট শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে এবং অবিলম্বে কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক মাসুদের পদত্যাগের দাবিতে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখার ব্যানারে আমরণ অনশনে বসেছেন এক নারীসহ মোট আট শিক্ষার্থী।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) বেলা ১২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন মহুয়া মঞ্চে এই আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন তারা।
আরও পড়ুন: পারভেজ হত্যার প্রতিবাদে জাবি ছাত্রদলের মানববন্ধন
অনশনরত শিক্ষার্থীরা হলেন, আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল, তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম, জিয়া উদ্দিন আয়ান, নাজমুল ইসলাম, জান্নাতুল ফেরদৌস আনজুম, কাজী মেহেরাব তূর্য, নাহিদ হাসিন ইমন ও সাজ্জাদ হোসেন।
অনতিবিলম্বে কুয়েটের ভিসিকে পদত্যাগের আহবান জানিয়ে অনশনকারীরা বলেন, আজ দুপুর তিনটার মধ্যে কুয়েটের উপাচার্যকে অপসারণ করতে হবে। অন্যথায় স্থান পরিবর্তন করে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে আমরণ অনশন চালিয়ে যাবেন বলে হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন তারা।
এসময় অনশনরত শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার আহবায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি যৌক্তিক দাবিতে গত ৪৮ ঘণ্টা থেকে অনশন করে কুয়েটে আমার ভাইয়েরা মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে। তবুও নির্লজ্জ ভিসির পদত্যাগের কোন ইচ্ছা নাই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আজকে একজন উপদেষ্টা পাঠালেও এখন পর্যন্ত কোন সুরাহা করতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, প্রশাসন কার কাছে জিম্মি হয়ে এই ভিসিকে এখনো চেয়ারে বসিয়ে রাখার ধৃষ্টতা দেখাচ্ছে আমরা তা জানতে চাই। দুপুর তিনটার মধ্যে কুয়েটের ভিসি পদত্যাগ না করলে স্থান পরিবর্তন করে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন তিনি।
আরও পড়ুন: কুয়েট ভিসির পদত্যাগ দাবিতে জাবিতে মানববন্ধন
এছাড়া গনতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব জিয়াউদ্দিন আয়ান বলেন, আমরা কুয়েটের শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনের সাথে সংহতি জানিয়ে এখানে অনশনে বসেছি। কুয়েটের ভিসি মাসুদ পদত্যাগ না করা পর্যন্ত এই অনশন চালিয়ে যাব।
তিনি আরও বলেন, আজকে তিনটার মধ্যেই দাবি আদায় না হলে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করবো সেইসাথে সারাদেশ ব্লকেড কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।
২২৫ দিন আগে