ফিলিস্তিন
বাংলাদেশ ফিলিস্তিনের জনগণের পক্ষে আছে, থাকবে: পরিবেশমন্ত্রী
বাংলাদেশ ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী জনগণের পক্ষে থাকবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।
তিনি বলেন, মানবাধিকারের সর্বোচ্চ লঙ্ঘন হচ্ছে ফিলিস্তিনে। প্রধানমন্ত্রী ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের আগ্রাসনের নিন্দা করেছেন। এছাড়া ফিলিস্তিনের মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ ফিলিস্তিনের পক্ষে থাকবে।
আরও পড়ুন: চাঁদাবাজ ও ভূমিদখলকারীদের কোনো ছাড় নেই: পরিবেশমন্ত্রী
রবিবার (৭ এপ্রিল) অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন, ওআইসিভুক্ত দেশসমূহের দূতাবাস, কুয়েত সোসাইটি ফর রিলিফ-বাংলাদেশ অফিস এবং সোসাইটি ফর সোস্যাল অ্যান্ড টেকনোলজিকাল সাপোর্ট, কুয়েতের সৌজন্যে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঢাকা-৯ নির্বাচনি এলাকার মুগদা থানাধীন ৭১ ও ৭২ নম্বর ওয়ার্ডের জনগণের মাঝে ঈদ উপহার হিসেবে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, এবার আমরা ২৫ হাজার পরিবারকে সাহায্য করেছি। প্রতি পরিবারে ৪ জন সদস্য হলেও এক লাখ মানুষকে সাহায্য করেছি। তাদের আপনজন নিয়ে, প্রিয়জন নিয়ে যাতে আনন্দে ঈদ উদযাপন করতে পারে তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আসুন, আমরা সবাই সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াই।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসেফ এস ওয়াই রামাদান বলেন, আমরা বাংলাদেশি ভাই-বোনদের অবদান কখনো ভুলব না। ফিলিস্তিন স্বাধীন হলে আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করব, বাংলাদেশের ভাই-বোনেরা আমাদের পাশে ছিলেন।
এসময় বক্তব্য দেন- বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসেফ এস ওয়াই রামাদান ছাড়াও মুগদা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেন বাহার, সবুজবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চিত্তরঞ্জন দাসসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতারা।
আরও পড়ুন: বন কর্মকর্তার হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতে কাজ করছে মন্ত্রণালয়: পরিবেশমন্ত্রী
আওয়ামী লীগ সরকার সবসময় জনগণের পাশে থাকবে: পরিবেশমন্ত্রী
বড় বাধার মুখে ফিলিস্তিনের নতুন প্রধানমন্ত্রীর সংস্কারের পরিকল্পনা
ফিলিস্তিনের নতুন প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মুস্তাফা বলেছেন, তিনি একটি টেকনোক্র্যাট সরকার গঠন করবেন এবং গাজার পুনর্গঠনের জন্য একটি স্বাধীন ট্রাস্ট ফান্ড প্রতিষ্ঠা করবেন।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) হাতে বিবৃতি এসেছে। এতে সংঘাত নিরসনে মার্কিন কর্তৃপক্ষ যুদ্ধ পরবর্তী যে ধরনের ফিলিস্তিন সরকার গঠন করতে চেয়েছিল, তার জন্য বিস্তৃত পরিকল্পনা তুলে ধরেছেন তিনি।
কিন্তু উল্লেখ করার মতো আরেকটি বিষয় হলো, গাজায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কোনো ক্ষমতা নেই। ২০০৭ সালে হামাস তাদের বাহিনীকে বিতাড়িত করেছে। ইসরায়েলি অধিকৃত পশ্চিম তীরের কিছু অংশে কেবল সীমিত কর্তৃত্ব রয়েছে এই ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের গাজায় ফেরার সম্ভাবনাকে নাকচ করে দিয়েছেন এবং তার সরকার ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ঘোর বিরোধী।
আরও পড়ুন: ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে ২৯ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত: গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস গত সপ্তাহে মুস্তাফাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন। যিনি মার্কিন অর্থনীতিবিদ এবং আব্বাসের দীর্ঘদিনের উপদেষ্টা, যার কোনো রাজনৈতিক ভিত্তি নেই।
বিবৃতিতে মোস্তফা বলেন, তিনি একটি নির্দলীয়, টেকনোক্র্যাট সরকার গঠন করবেন। যা তাদের জনগণের আস্থা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন উভয়ই অর্জন করতে পারবে। তিনি পিএ প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপক সংস্কার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
তিনি বলেন, তিনি অঞ্চলগুলোকে পুনরায় একত্রিত করতে চাইবেন এবং গাজার পুনরুদ্ধার ও পুনর্গঠনের জন্য একটি ‘স্বাধীন, দক্ষ ও স্বচ্ছ সংস্থা এবং প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহ, পরিচালনা ও বিতরণের জন্য একটি আন্তর্জাতিকভাবে পরিচালিত ট্রাস্ট ফান্ড গঠনের চেষ্টা করবেন।’
ভিশন বিবৃতিতে হামাসের কথা উল্লেখ করা হয়নি, যারা ২০০৬ সালে শেষবার ফিলিস্তিনিদের জাতীয় নির্বাচনে বিপুল বিজয় অর্জন করেছিল এবং কোনো কোনো জরিপ ইঙ্গিত দেয় যে এখনও উল্লেখযোগ্য সমর্থন রয়েছে।
আরও পড়ুন: ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৭০
পিএ'র সার্বিক নিয়ন্ত্রণে থাকা ৮৮ বছর বয়সী আব্বাস ২০০৯ সালে তার নিজের ম্যান্ডেটের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে ক্ষমতায় রয়েছেন এবং ইসরায়েলি বিধিনিষেধের কথা উল্লেখ করে নির্বাচন করতে অস্বীকার করেছেন।
জনমত জরিপে দেখা গেছে, ফিলিস্তিনিদের একটি বড় অংশ চায় তিনি পদত্যাগ করুন।
মুস্তাফা বলেন, পিএ প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু তিনি কোনো সময়সূচি ঘোষণা করে বলেন, এটি গাজা, পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমের 'বাস্তবতা'র ওপর নির্ভর করবে। ১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে ইসরায়েল দখল করা অঞ্চলগুলোর ওপর ফিলিস্তিনিরা তাদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র চায়।
২০২১ সালে, আব্বাস নির্বাচন অনির্দিষ্টকালের জন্য বিলম্বিত করার সিদ্ধান্তের জন্য অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমে ইসরায়েলি বিধিনিষেধকে দায়ী করেন, যেখানে তার ধর্মনিরপেক্ষ ফাতাহ পার্টি বড় ক্ষতির সম্মুখীন হবে বলে ধারণা করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: উত্তর গাজায় সাহায্যের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের হত্যার নিন্দা জাতিসংঘ প্রধানের
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসেফ রামাদান।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর দপ্তরে সাক্ষাৎকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফিলিস্তিনের প্রতি বাংলাদেশের দৃঢ় সমর্থনের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের আগ্রাসন ও হত্যাযজ্ঞের আইনি পরিণতি সম্পর্কে গত ফেব্রুয়ারি মাসে আন্তুর্জাতিক বিচার আদালতে বাংলাদেশের দেওয়া জোরালো বিবৃতির কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী হাছান বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের এ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও সব পক্ষের সংকল্পের কোনো বিকল্প নেই।
রাষ্ট্রদূত ইউসেফ রামাদান ফিলিস্তিনের প্রতি বাংলাদেশের অব্যাহত দৃঢ় সমর্থন, আন্তরিক সহযোগিতা ও গাজাবাসীদের সাহায্য করতে পণ্যসামগ্রী পাঠানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
চলতি সংকট মুহূর্তে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আরও সহযোগিতা কামনা করলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সে বিষয়ে রাষ্ট্রদূতকে আশ্বস্ত করেন।
জিম্মিদের ওপর যৌন সহিংসতা ইসরায়েলের হামলার বৈধতা দেয় না: জাতিসংঘ দূত
সংঘাতের সময় যৌন সহিংসতার বিষয় তুলে ধরে জাতিসংঘের দূত ইসরায়েলকে সতর্ক করে বলেছেন, ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের হামলার সময় অপহৃত হওয়া জিম্মিরা যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছিলেন এমন ‘স্পষ্ট ও বিশ্বাসযোগ্য তথ্য’ পাওয়া গেলেও পরবর্তীকালে চালিয়ে যাওয়া হামলাকে এটি বৈধতা দেয় না।
সোমবার প্রমিলা প্যাটেন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বলেন, গাজার ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের অকথ্য দুর্ভোগের অবসান ঘটাতে এবং সমস্ত জিম্মিদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির জন্য একটি মানবিক যুদ্ধবিরতি নৈতিকভাবে অপরিহার্য।
এ সময় অধিবেশনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীও উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: গাজা ও সুদানে রমজান মাসে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
প্রমিলা আরও বলেন, ‘হামলা চালিয়ে যাওয়া, কোনোভাবেই, তাদের রক্ষা করতে পারে না। এটি যৌন সহিংসতাসহ আরও বিভিন্ন ধরনের সহিংসতার ঝুঁকির পথ তৈরি করে দেয়।’
ইসরায়েলের আহ্বানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের ডাকা এক কাউন্সিলের বৈঠকে প্যাটেন তার সাম্প্রতিক প্রতিবেদন তুলে ধরেন। যেখানে জানা যায়, ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলাকালে হামাস ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন এবং নারীদের বিরুদ্ধে অন্যান্য নিষ্ঠুর ও অমানবিক কাজ করেছে এমন প্রমাণ মিলেছে। এ সময় প্রায় ১২০০ মানুষ নিহত ও ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয়।
এখনও ১৩৪ জিম্মি বন্দি এবং গাজার ২ মিলিয়নেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক অসহায় অবস্থায় রয়েছে। তাদের স্বার্থে এখনই যুদ্ধবিরতি হওয়া উচিত।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের চলমান আক্রমণে ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই নারী ও শিশু।
আরও পড়ুন: যুদ্ধবিরতি আলোচনা থমকে যাওয়ায় গাজায় ত্রাণের জন্য আলোচনায় সমুদ্রপথ
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেছেন, ইসরায়েলি সমাজকে প্রতিরোধ ও ভয় দেখানোর জন্য হামাসের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে যতটা সম্ভব উচ্চস্বরে প্রতিবাদ জানাতে তিনি পরিষদে এসেছিলেন।
হামাসের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাতে ৭ অক্টোবর থেকে ৪০টিরও বেশি বৈঠকে নিরাপত্তা পরিষদের ব্যর্থতার কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের সবচেয়ে শক্তিশালী সংস্থার উচিত চরমপন্থী গোষ্ঠীটিকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করা এবং অবিলম্বে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া।’
সোমবার মুসলমানদের পবিত্র রমজান মাস শুরু হয়েছে উল্লেখ করে কাটজ রমজানের শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, ‘আমাকে আমাদের মুসলিম ভাইদের শুভেচ্ছা জানাতে সুযোগ দিন।’
কাটজ বলেন, হামাস মুসলিম বিশ্বের পক্ষে কথা বলছে না। মুসলিম ধর্মের নামে যে যৌন সহিংস অপরাধ তারা করেছে এর নিন্দা জানানো উচিত।
কাউন্সিলে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মনসুর বলেন, ‘সারা বিশ্বের মুসলমানরা রমজান পালন করছে কিন্তু গাজার সর্বত্র মৃত্যু ও দুর্ভোগ। খাদ্য ও আশা কোথাও পাওয়া যাবে না।’
তিনি কাউন্সিলকে বলেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতি চান না কারণ তার ‘রাজনৈতিকভাবে বেঁচে থাকার জন্য আক্রমণ চালিয়ে যেতে হবে।’
তিনি বলেন, গাজাকে বসবাসের অযোগ্য করে দিয়ে আমাদের জনগণকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করে রাখা ইসরায়েলের উদ্দেশ্য।
আরও পড়ুন: কয়েক মাস ধরে দুর্ভিক্ষের সতর্কতার পর গাজায় বাড়তে শুরু করেছে শিশুদের মৃত্যু
প্যাটেনের প্রতিবেদনে এক সপ্তাহের মধ্যে সভা ডেকে নিরাপত্তা পরিষদ যে ‘নজিরবিহীন’ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, ফিলিস্তিনি নারী-পুরুষদের ওপর যৌন নিপীড়নের প্রতিবেদনেও সমানভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
প্যাটেনের মূল সুপারিশ হলো হামাসের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান এবং স্বাধীন আন্তর্জাতিক কমিশনকে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে প্রবেশাধিকার দিতে ইসরায়েলকে উৎসাহিত করা।
ফিলিস্তিনিরা এই তদন্তকে স্বাগত জানাবে উল্লেখ করে মনসুর ইসরাইলকেও তদন্তে স্বাগত জানানোর আহ্বান জানান। ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা নিজ চোখে প্রত্যক্ষ করতে প্যাটেনকে গাজা পরিদর্শন করতে আমন্ত্রণ জানান তিনি।
বৈঠকে প্যাটেন কাউন্সিলকে বলেন, পশ্চিম তীরে তিনি ধর্ষণের কোনো তথ্য না পেলেও ফিলিস্তিনি নারী-পুরুষ আটকের সময় যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছিলেন বলে জানতে পেরেছেন।
প্রতিবেদনগুলো ইসরায়েলের কর্তৃপক্ষের কাছে উত্থাপন করেছেন জানিয়ে প্যাটেন বলেন, এসব কাজ প্রতিরোধের জন্য যারা তথ্য দিয়েছিলেন তারা অন্যান্য অভিযোগ লঙ্ঘনের তদন্ত করতেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।
তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, কিছু ‘রাজনৈতিক অভিনেতা’র দেয়া প্রতিবেদনের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সেসব অভিযোগগুলোর তদন্তের অনুমতি ছিল না বরং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে সরাসরি প্রত্যাখান জানিয়েছিলেন তারা।
আরও পড়ুন: উত্তর গাজায় সাহায্যের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের হত্যার নিন্দা জাতিসংঘ প্রধানের
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসন নিয়ে ওআইসি বৈঠকে যোগ দিতে জেদ্দায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের অব্যাহত আগ্রাসন নিয়ে আলোচনার জন্য অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) পররাষ্ট্রমন্ত্রী পরিষদের এক বিশেষ বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ।
মঙ্গলবার সৌদি আরবের জেদ্দায় ওআইসির জেনারেল সেক্রেটারিয়েটের সদর দপ্তরে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে।
বৈঠকে যোগ দিতে তুরস্ক থেকে জেদ্দায় যান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান।
এর আগে সোমবার এই অধিবেশনের জন্য প্রস্তুতিমূলক সিনিয়র অফিসিয়ালস মিটিং (এসওএম) অনুষ্ঠিত হয়।
জেনারেল সেক্রেটারিয়েটের বক্তৃতায় ফিলিস্তিন ও আল-কুদস বিষয়ক সহকারী মহাসচিব রাষ্ট্রদূত সামির বকর বলেন, ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে ইসরায়েলি বাহিনী ভয়ংকর গণহত্যা চালায়। যেখানে খাদ্য সহায়তা পাওয়ার অপেক্ষায় ছিল শত শত মানুষ, সেখানে তাদের জীবন হারাতে হয়।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলি আগ্রাসন বিষয়ক ওআইসির বৈঠকে যোগ দেবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বকর বলেন, এই গণহত্যা ইসরাইলি দখলদার সেনাবাহিনীর যুদ্ধাপরাধের উদাহরণ ও সাক্ষী। এর জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ও আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে আইনি প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করা প্রয়োজন। ইসরায়েলি দখলদারিত্বের জবাবদিহি নেওয়ার জন্য বৈধ ও কার্যকর স্থান এই দুই আদালত।
বকর আরও বলেন, ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েল যেভাবে নৃশংস অপরাধ ও গণহত্যা চালাচ্ছে, এর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরও কার্যকর আন্দোলনের প্রয়োজন রয়েছে। এই নৃশংস ইসরায়েলি আগ্রাসন মোকাবিলা করতে ২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর সৌদি আরবের রিয়াদে যৌথ আরব ও ইসলামিক শীর্ষ সম্মেলনে গৃহীত রেজুলেশন বাস্তবায়নে রাজনৈতিক, আইনি ও গণমাধ্যমসহ সম্ভাব্য সব বৈধ উপায়ে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
আজ (মঙ্গলবার) ওআইসির সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বৈঠকে খসড়া নীতিমালা জমা দেবে এসওএম।
ওআইসি মহাসচিব হিসেন ব্রাহিম তাহা ওআইসি বৈঠকের উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণ দেবেন।
আরও পড়ুন: গাজায় মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ বন্ধে ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
গত বছরের নভেম্বরে সৌদি আরব রিয়াদে আরব ও ইসলামিক শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করে যৌথভাবে ওআইসি ও আরব রাষ্ট্রগুলোর লীগ।
এ সম্মেলনে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ করার জন্য বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এর মধ্যে রয়েছে সদস্য রাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের নিয়ে গঠিত কমিটির রাজধানীগুলোতে ও আন্তর্জাতিক সংস্থায় সফর।
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ফিলিস্তিনে নৃশংস ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ করার অব্যাহত প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে, ১৮ অক্টোবর ওআইসির সদর দপ্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের একটি কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়।
গত ১-৩ মার্চ তুরস্কে আয়োজিত আনতালিয়া কূটনীতি ফোরামে অংশ নিয়ে এই অনুষ্ঠানকে আন্তর্জাতিক সংলাপের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
ফোরামে হাসান মানবতা ও জাতিগত নিধনের বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটনের জন্য ইসরায়েলকে দায়বদ্ধ করে গাজায় চলমান গণহত্যা বন্ধে সম্মিলিত প্রচেষ্টার ওপর জোর দেন।
টিআরটি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে, গাজায় সহিংসতা ও নৃশংসতা বন্ধে পর্যাপ্ত বৈশ্বিক পদক্ষেপের অভাব তুলে ধরেন হাসান।
সংঘর্ষে ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ, বিশেষ করে নারী ও শিশুর মতো বেসামরিক লোকদের মৃত্যুর কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘গাজায় যা ঘটছে তা কেবল মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। শুধু মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ নয়, জাতিগত নিধনও চলছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই ‘যুদ্ধ ও গণহত্যা’ বন্ধ করার জন্য যথেষ্ট প্রচেষ্টা দেখা যাচ্ছে না বরং ইসরায়েল যুদ্ধের সমস্ত নিয়ম লঙ্ঘন করছে।
আরও পড়ুন: তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদানের সঙ্গে হাছান মাহমুদের বৈঠক
তুরস্কের ফোরামে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে এই নৃশংসতা মোকাবিলায় সমবেত বিশ্ব সম্প্রদায়কে অগ্রণী ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান হাসান।
ভিডিও সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি গাজায় এই নৃশংসতা, জাতিগত নিধন এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ বন্ধ করতে এবং ইসরায়েলকে থামাতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ আওয়াজ তুলতে পারি।’
তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের পৃষ্ঠপোষকতায় ফোরামটি ৩ মার্চ শেষ হয়।
‘অ্যাডভোকেসিং ডিপ্লোম্যাসি ইন টাইমস অফ টারময়েল’ প্রতিপাদ্যে এবারের ফোরামে রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারি কর্মকর্তা, কূটনীতিক, ব্যবসায়ী নেতা, শিক্ষাবিদ ও বিভিন্ন সেক্টরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়।
আরও পড়ুন: ন্যাম সম্মেলন: ফিলিস্তিনিদের সমর্থন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
উত্তর গাজায় সাহায্যের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের হত্যার নিন্দা জাতিসংঘ প্রধানের
উত্তর গাজায় সাহায্যের অপেক্ষায় থাকা ১০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এ কথা জানান জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক।
উত্তর গাজায় হামলার নিন্দা জানিয়ে দুজারিক বলেন, ‘গাজার উত্তরাঞ্চলের হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন মহাসচিব, যেখানে জীবন রক্ষা করার জন্য সাহায্য চাইতে গিয়ে ১০০ জনেরও বেশি লোক নিহত বা আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। গাজার আহত বেসামরিক নাগরিকদের জরুরি সহায়তা প্রয়োজন, যার মধ্যে অবরুদ্ধ উত্তরাঞ্চলের লোকজনও রয়েছে। সেখানে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ত্রাণ সরবরাহ করতে পারেনি জাতিসংঘ।’
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা জানান, বৃহস্পতিবার গাজা উপত্যকার পশ্চিমে সাহায্যের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলিবর্ষণ করে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে ১০৪ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়। আহত হয় ৭৬০ জনেরও বেশি।
আরও পড়ুন: উপহার-অনুগ্রহ নয়, রাষ্ট্রকে একটি আন্তর্জাতিক আইনি অধিকার মনে করে ফিলিস্তিনিরা
ইসরায়েলি বাহিনীর এক মুখপাত্র দাবি করেন, ভোরে গাজা উপত্যকায় প্রবেশের অপেক্ষায় থাকা ট্রাকগুলোতে আক্রমণ করে লুটপাট চালায় গাজাবাসীরা। এ সময় আত্মরক্ষা করতে গুলি চালায় ইসরায়েলি বাহিনী।
জাতিসংঘের কেউ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না জানিয়ে দুজারিক বলেন, ঘটনার তদন্ত করে জবাবদিহির ব্যবস্থা করা হবে।
জাতিসংঘের মহাসচিব অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতি এবং সমস্ত জিম্মিদের নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন জানিয়ে মুখপাত্র বলেন, গুতেরেস আবারও জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন যাতে গুরুত্বপূর্ণ মানবিক সহায়তা গাজায় সবার কাছে পৌঁছাতে পারে।
গাজা সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৩০ হাজারেরও বেশি মৃত্যু এবং ৭০ হাজারেরও বেশি আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। মৃত্যুর এই মর্মান্তিক সংখ্যা দেখে গুতেরেস আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বলে জানান দুজারিক। এছাড়াও ধ্বংসস্তূপের নিচেও অনেকে আটকে আছেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৭০
ফিলিস্তিন সরকারের পদত্যাগের ফলে সংস্কারের দ্বার উন্মোচনের সম্ভাবনা
ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শাতায়েহ বলেছেন, তার সরকার পদত্যাগ করছে, যা মার্কিন সমর্থিত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সংস্কারের দ্বার উন্মুক্ত করতে পারে।
আরও পড়ুন: রমজানে গাজা সংঘাত সম্প্রসারণের বিষয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জর্ডানের বাদশাহ আব্দুল্লাহ
সোমবার জমা দেওয়া ওই পদত্যাগপত্রের বিষয়ে প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তিনি শাতায়েহ ও তার সরকারের পদত্যাগ গ্রহণ করবেন কি না। কিন্তু এই পদক্ষেপ পশ্চিমা সমর্থিত ফিলিস্তিনি নেতৃত্বের নড়েচড়ে বসেছে এবং এটা মেনে নিতে ইঙ্গিত দিচ্ছে। এটি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে পুনরুজ্জীবিত করতে প্রয়োজনীয় সংস্কারের সূচনা করতে পারে।
যুদ্ধ শেষ হলে গাজা শাসনের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি সংস্কার করা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। চায় কিন্তু সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে এখনও অনেক বাধা রয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরুর পর ৩১ হাজার ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছে: জেলেনস্কি
'আর গণহত্যায় জড়িত থাকব না' বলে নিজের গায়ে আগুন দিলেন মার্কিন সেনা
গাজায় গণহত্যা বন্ধ করুন: বিশ্ব নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
ফিলিস্তিনের গাজা শহরে গণহত্যা বন্ধে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার মিউনিখ সুরক্ষা সম্মেলন-২০২৪-এর ফাঁকে তুরস্কের রাষ্ট্র পরিচালিত আনাদোলু এজেন্সিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সব সময় গণহত্যার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। আমি মনে করি গাজায় যা ঘটছে, তা গণহত্যা। সুতরাং, আমরা কখনই এটি সমর্থন করি না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফিলিস্তিনি জনগণের বাঁচার অধিকার রয়েছে এবং তাদের নিজস্ব রাষ্ট্র রয়েছে। ‘গাজার জনগণের বাঁচার অধিকার রয়েছে। সুতরাং আমাদের উচিত তাদের সহায়তা করা এবং এই আক্রমণ ও যুদ্ধ বন্ধ করা।’
আরও পড়ুন: মিউনিখে জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
নির্যাতিত ফিলিস্তিনি শিশু, নারী ও জনগণের প্রতি সমর্থন ও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ ইতোমধ্যে তাদের জন্য কিছু সহায়তা পাঠিয়েছে বলেও জানান তিনি।
গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফায় ইসরাইলের পরিকল্পিত অভিযানের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ কখনই এ ধরনের আক্রমণ সমর্থন করে না। তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনি জনগণের নিজস্ব রাষ্ট্রে থাকার অধিকার পাওয়া উচিত, এটা পরিষ্কার।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৬৭ সালের জাতিসংঘ প্রস্তাবে দুই-রাষ্ট্র (টু-স্টেট) তত্ত্ব রয়েছে। এটা বাস্তবায়ন করতে হবে।'
আরও পড়ুন: মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে মনোযোগের প্রধান কেন্দ্রবিন্দুতে প্রধানমন্ত্রী: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ১৩ জনের মৃত্যু; রাফাহ অভিযান নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে
গাজা উপত্যকার দক্ষিণ সীমান্তের রাফাহ শহরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে দুজন নারী ও ৫ জন শিশু বলে জানিয়েছে গাজার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার কয়েক ঘণ্টা পরেই রাতভর বিমান হামলা শুরু হয় এবং রাফাহতে এই হামলা আরও বাড়বে বলেও জানান নেতানিয়াহু।
অন্যদিকে দুই ঘনিষ্ঠ মিত্রের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার ইসরায়েল ত্যাগ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
অব্যাহত সামরিক অভিযানের মাধ্যমে ইসরায়েল গাজার ২৩ লাখ জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি মিশর সীমান্তের দিকে স্থানান্তর করেছে। ফিলিস্তিনের ভূখণ্ড ত্যাগ করতে না পেরে অনেকে অস্থায়ী তাবু গেড়ে বা জাতিসংঘের শরণার্থী শিবিরগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে।
আরও পড়ুন: গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে গাজায় যুদ্ধবিরতি চান অ্যানি লেনক্স
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ২৭ হাজার ৮৪০ জন ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়াও গাজার অধিবাসীদের প্রায় এক-চতুর্থাংশ মানুষ অনাহারে জীবনযাপন করছেন।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলায় এই যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। এই হামলায় ১২০০ ইসরায়েলির মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই বেসামরিক ছিল। আর ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয়। হামাস এখনও ১৩০ জনেরও বেশি ইসরায়েলিকে জিম্মি করে রেখেছে যাদের মধ্যে প্রায় ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ইয়েমেনে মার্কিন-ব্রিটিশ বিমান হামলার নিন্দা হামাসের
গাজায় ২৪ ঘণ্টায় ১৫০ জন নিহত: স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ওই অঞ্চলে ১৫০ জন নিহত হয়েছে এবং আরও ৩১৩ জন আহত হয়েছে। কারণ ইসরায়েলি বাহিনী সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রেখেছে, এমনকি ভূখণ্ডের উত্তর অংশেও।
অক্টোবরের শেষের দিকে ইসরায়েলের স্থল অভিযানের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল উত্তরাঞ্চল।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বুধবার জানিয়েছে, তাদের বাহিনী গত একদিনে গাজার উত্তরাঞ্চলে ১৫ জনেরও বেশি হামাস জঙ্গিকে হত্যা করেছে এবং একটি স্কুলে জঙ্গি অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।
হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সর্বশেষ হামলাসহ ইসরায়েলি অভিযানে ফিলিস্তিনি নিহতের সংখ্যা ২৬ হাজার ৯০০ জনে দাঁড়িয়েছে। বেসামরিক ও যোদ্ধা নিহতের মধ্যে পার্থক্য না করলেও নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের মতে, ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের হামলায় ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত হয়, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক এবং প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয়।
আরও পড়ুন: গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ২০ হাজার ছুঁইছুঁই
গাজায় মানবিক যুদ্ধ বিরতির জাতিসংঘের প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো