ইন্দোনেশিয়া
রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসনে ইন্দোনেশিয়া ও আইওএমের সহযোগিতার আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের তাদের স্বদেশে দ্রুত প্রত্যাবাসনে ইন্দোনেশিয়া ও আইওএমের প্রতি সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত হেরু হারতান্তো সুবোলো ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মিশন প্রধান আব্দুসাত্তর ইসোয়েভ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে পৃথক সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
বৈঠকে ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশের পারস্পরিক স্বার্থের বিষয়গুলো উঠে আসে। দুই ভ্রাতৃপ্রতিম দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার অঙ্গীকার করেন ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে আরব আমিরাতকে বিনিয়োগের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়া উভয় দেশের সাম্প্রতিক জাতীয় নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইন্দোনেশিয়ায় জাতীয় নির্বাচন সফলভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ায় আনন্দ প্রকাশ করেন এবং দেশটির নেতৃত্বকে শুভেচ্ছা জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের উচ্চ সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশে পাম অয়েল শোধনাগার এবং পণ্যের বাজার প্রতিষ্ঠায় ইন্দোনেশিয়ার বিনিয়োগকে স্বাগত জানান। দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এছাড়াও বৈঠকে হাছান মাহমুদ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের মিয়ানমারে তাদের স্বদেশে দ্রুত প্রত্যাবাসনের সুবিধার্থে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালনের জন্য ইন্দোনেশিয়া ও আসিয়ানের প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: আয়ারল্যান্ডের মন্ত্রীকে ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার অনুরোধ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
এদিকে পৃথক এক সাক্ষাতে বাংলাদেশের সঙ্গে আইওএমের কার্যক্রমের বৃত্তান্ত সংক্ষেপে তুলে ধরেন সংস্থার মিশন প্রধান আব্দুসাত্তর ইসোয়েভ।
এ সময় মন্ত্রী আইওএমকে ধন্যবাদ জানান এবং বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের মিয়ানমারে তাদের স্বদেশে দ্রুত প্রত্যাবাসনই একমাত্র সমাধান বলে বর্ণনা করেন।
পাশাপাশি ক্লাইমেট মাইগ্রান্টস বা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে স্থানচ্যুতদের বিষয়ে আইওএমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
এসব বিষয়ে জোর তৎপরতা অব্যাহত থাকবে বলে আশ্বাস দেন আইওএম মিশন প্রধান।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীদের ফেরত পাঠাতে কাজ করছে সরকার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ইন্দোনেশিয়ায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত তারিকুলের
রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন ইন্দোনেশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. তারিকুল ইসলাম।
রবিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন জানান সাক্ষাৎকালে নতুন রাষ্ট্রদূত দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্রপতির দিক নির্দেশনা প্রত্যাশা করেন।
রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন বলেন, ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।
এ সময় রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক, ওষুধ, সিরামিকসহ বিভিন্ন পণ্যের ইন্দোনেশিয়ায় রপ্তানি বৃদ্ধিসহ দু'দেশের মধ্যে বিদ্যমান বাণিজ্য বিনিয়োগ সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগাতে নতুন রাষ্ট্রদূতকে কাজ করার নির্দেশ দেন।
বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে ব্যবসায়ীদের পারস্পরিক সফর বিনিময়ের উপর জোর দেন রাষ্ট্রপতি।
এ সময় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম এবং সচিব সংযুক্ত মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ইন্দোনেশিয়ার মতো দুর্দশাগ্রস্ত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা করুন: জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ
বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরের অবস্থার অবনতি ও খাদ্য সহায়তা উল্লেখযোগ্যভাবে কমানোর কারণে নৌকার ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত রোহিঙ্গা শরণার্থী নিয়ে ইন্দোনেশিয়ায় আসা অব্যাহত রয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার(২৩ নভেম্বর) জাতিসংঘের একজন বিশেষজ্ঞ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য একটি আঞ্চলিক জরুরি প্রতিক্রিয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রুজ সতর্ক করে দিয়ে বলেন, 'সংকটের মূল কারণ হলো মিয়ানমারের অবৈধ সামরিক জান্তা- এর সমাধান না করলে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে।’
গত সপ্তাহে ইন্দোনেশিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় আচেহ প্রদেশে নৌকায় করে ১ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী পৌঁছেছে।
অ্যান্ড্রুজ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপত্তা, আশ্রয় ও সহায়তা প্রদানের জন্য ইন্দোনেশিয়া সরকারের প্রশংসা করেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু, যাদের জরুরি ভিত্তিতে পুষ্টি ও চিকিৎসা সহায়তা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: আমরা রোহিঙ্গাদের স্থায়ী প্রত্যাবাসনে মনোনিবেশ করছি: আফরিন আখতার
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদে তাদের উপকূলে নৌকা থেকে নামিয়ে নেওয়ার ইন্দোনেশিয়ার কর্তৃপক্ষের উদাহরণ অনুসরণ করার জন্য এই অঞ্চলের দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি। কারণ, আরও রোহিঙ্গা শরণার্থী নৌকায় করে তাদের উপকূলে আসতে পারে।
ইন্দোনেশিয়ায় বিশেষ দূত বলেন, রোহিঙ্গাদের অধিকার সমুন্নত রাখা এবং অভ্যন্তরীণ আইন অনুযায়ী প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করায় ইন্দোনেশিয়া সরকারকে অভিনন্দন জানানো উচিত। কিন্তু তারা একা এটা করতে পারে না। এটি একটি জরুরি অবস্থা, এবং একটি জরুরি প্রতিক্রিয়া প্রয়োজন। তাদের জীবন বাঁচাতে একটি সমন্বিত অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান প্রয়োজন রয়েছে যারা সমুদ্রে চলাচলের অনুপযোগী জনাকীর্ণ নৌকায় সমুদ্রে আটকা পড়ে থাকতে পারে।’
অ্যান্ড্রুজ সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, সংকটের মূল কারণটি চূড়ান্তভাবে সমাধান না করা পর্যন্ত সংকট আরও জটিল হতে থাকবে।
তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটের সমাধান ততক্ষণ সম্ভব নয়, যতক্ষণ না জান্তা রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার ও নাগরিকত্বের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সরকার গঠনে বাধা দেয়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই মিয়ানমারের জনগণের ওপর নিপীড়ন চালিয়ে যাওয়ার জন্য জান্তাকে অস্ত্র, অর্থ ও বৈধতা না দিয়ে সংকটের মূল কারণগুলো সমাধান করতে হবে।’
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সংকটে ‘নিজেদের সমর্থন অব্যাহত রাখছে’ ইইউ: রাষ্ট্রদূত হোয়াইটলি
জাতিসংঘের দূত বলেন, যতক্ষণ না রোহিঙ্গারা নিরাপত্তা, মর্যাদা ও অধিকার নিশ্চিত করে স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে ফিরে যেতে সক্ষম হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে অবশ্যই পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা তহবিল প্রদান করতে হবে এবং পুনর্বাসনসহ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য টেকসই সমাধান নিয়ে ভাবতে হবে।
অ্যান্ড্রুজ এ বছরের শুরুতে আচেহ ইন্দোনেশিয়ায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন, এর মধ্যে পিডির একটি শরণার্থী শিবিরও ছিল। যেখানে তাকে বলা হয়েছিল যে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বিপজ্জনক যাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বিশেষজ্ঞ বলেন, 'আমি ইন্দোনেশিয়ার কর্তৃপক্ষকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের চাহিদা মেটাতে মানবিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করছি। এর মধ্যে সম্প্রতি আগমনকারীদের জন্য আশ্রয়শিবির নির্মাণও রয়েছে। এছাড়া নারী ও শিশুসহ শোষণ ও মানব পাচারের সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের জন্য সেবা প্রদান করা উচিত।’
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের দীর্ঘায়িত উপস্থিতির কোনো সুযোগ নেই: জাতিসংঘে বাংলাদেশ
অ্যান্ড্রুজ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এই আগমন বাংলাদেশে খারাপ পরিস্থিতি থেকে পালিয়ে আসা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রোহিঙ্গার আগমনের ইঙ্গিত দেয়।
তিনি বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে কি, কে তাদের দোষ দিতে পারে? বাবা-মায়েরা ভঙ্গুর পর্যায়ে পৌঁছেছেন, কারণ তাদের সন্তানরা ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে ভুগছে এবং শিবিরে ক্রমবর্ধমান সহিংসতার হুমকির মুখোমুখি হচ্ছে।’
‘এই পরিবারগুলো অনিচ্ছা সত্ত্বেও ভিড়যুক্ত নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে চড়ছে, কারণ তারা বিপদগ্রস্ত এবং কোনও বিকল্প দেখছে না।’
তিনি বলেন, 'অতীতে কেউ কেউ যেমন করেছে- কোনো রাষ্ট্রই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নামতে বাধা দেবে না। নৌকাগুলোকে সমুদ্রে ঠেলে দেবে না।’আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন শুরুর প্রস্তুতি অব্যাহত থাকবে: পররাষ্ট্র সচিব
২০২৩ সালে বাংলাদেশ-ইন্দোনেশিয়ার অংশীদারিত্ব আরও শক্তিশালী হয়েছে: রাষ্ট্রদূত হেরু
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত হেরু হার্তান্তো সুবোলো বলেছেন, ৫১ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্কে অগ্রগতি ও উন্নয়নে স্থিতিশীলতা ও দৃঢ়তা দেখিয়েছে বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়া।
তিনি বলেন, ‘২০২৩ সালে দুই দেশ একটি শক্তিশালী অংশীদারিত্ব অর্জন করেছে।’
রবিবার (১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ঢাকায় ইন্দোনেশিয়া প্রজাতন্ত্রের দূতাবাস তার ৭৮তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের সময় রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন।
গত মাসে জাকার্তায় সে দেশের প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো ও বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের সময়, উভয় নেতা দুই দেশের মধ্যে একটি সুনির্দিষ্ট সহযোগিতার বিষয়ে সম্মত হন।
সেসসময় দুই দেশের মধ্যে স্বাস্থ্য, জ্বালানি ও কৃষিক্ষেত্রে সহযোগিতা বিষয়ক তিনটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
তিনি আশা করেন, ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে অংশীদারিত্ব বন্ধুত্বের চেতনায় ভাস্বর হবে এবং ভবিষ্যতে তা আরও শক্তিশালী হবে।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। ইন্দোনেশিয়ার ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র গং বাজিয়ে তাকে সংবর্ধনা জানানো হয়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী তার বক্তৃতায় বলেন, বাংলাদেশে হাসপাতাল স্থাপন, ভ্যাকসিন তৈরির শিল্প এবং সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য খাতে ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে সহযোগিতার উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বিশ্বাস করেন, বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে। কারণ উভয় দেশের সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও অন্যান্য অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে।
তিনি বর্ণিল কূটনৈতিক সংবর্ধনা আয়োজনের জন্য ইন্দোনেশিয়ার দূতাবাসকে অভিনন্দন জানান।
আরও পড়ুন: জনগণের মধ্যে সংযোগের অভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক: ভারতীয় বিশেষজ্ঞ
কৃষি ও স্বাস্থ্য খাতে একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়া
বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে স্বাক্ষরিত দ্বিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী জ্বালানি, কৃষি ও স্বাস্থ্য খাতে যৌথভাবে কাজ করতে আগ্রহী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর মধ্যে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
বুধবার জাকার্তা কনভেনশন সেন্টারের (জেসিসি) কাকাতুয়া কক্ষে অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনসের (আসিয়ান) ৪৩তম শীর্ষ সম্মেলন এবং ১৮তম 'পূর্ব এশিয়া শীর্ষ সম্মেলন' এর এক ফাঁকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে জ্বালানি ও স্বাস্থ্য খাতে দু'দেশের মধ্যে ৩টি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে উল্লেখ করে উভয় দেশের জনগণের কল্যাণে যৌথভাবে কাজ করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে বলে বৈঠকে বলা হয়।
আরও পড়ুন: জাকার্তায় রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে আইওআরএ সেক্রেটারি জেনারেলের সৌজন্য সাক্ষাৎ
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আমন্ত্রণ জানানোয় ও সফরের সময় বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের চমৎকার আতিথেয়তার জন্য ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
বাংলাদেশের বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক ও স্বাস্থ্য খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট স্বাস্থ্য খাতে বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রণীত বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হওয়া 'কমিউনিটি ক্লিনিক' ধারণার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশ থেকে আন্তর্জাতিক মানের ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য, সিরামিক ও তৈরি পোশাক আমদানির আহ্বান জানিয়ে ইন্দোনেশিয়ার বিনিয়োগকারীদের এখানে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। কারণ, গত এক দশকে দেশে বিনিয়োগ-বান্ধব পরিবেশ বিরাজ করছে।
রাষ্ট্রপতিকে উদ্ধৃত করে ড. মোমেন বলেন, ‘দু'দেশের উন্নতির জন্য উভয় দেশের চিকিৎসকদের সনদকে স্বীকৃতি দেওয়ার পারস্পরিক সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করার উদ্যোগ এখনও চলছে।’
বাংলাদেশ সারা দেশে ৫১টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) এবং ৩৯টি হাই-টেক পার্ক ও অন্যান্য বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘ইন্দোনেশিয়া আগ্রহী হলে বাংলাদেশ তাদের জন্য নির্দিষ্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল মনোনীত করতে পেরে খুশি হবে।’
এ দশকের শেষ নাগাদ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সংযোগস্থলে অবস্থিত একটি উৎপাদন কেন্দ্রে পরিণত হতে চায় উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বিনিয়োগের সুযোগ কাজে লাগাতে দুই দেশের বেসরকারি খাতের মধ্যে বৃহত্তর সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
আরও পড়ুন: জাকার্তায় আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন আশা প্রকাশ করেন, শিগগিরই ঢাকা ও জাকার্তা বা বালির মধ্যে সরাসরি বিমান যোগাযোগ স্থাপন করা হবে এবং দুই দেশের সমুদ্র বন্দরের মধ্যে উপকূলীয় জাহাজ চলাচলের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে রাষ্ট্রপতি এ সংকট নিরসনে ইন্দোনেশিয়ার সরকার ও জনগণের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করে বলেন, ‘মানবিক কারণে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ।’
ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুটি আসিয়ান বৈঠকে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছে এবং এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন আসিয়ান সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনারের সদস্যপদ নিশ্চিত করতে আসিয়ান চেয়ারম্যান এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের আরও সহযোগিতা কামনা করেন।
বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে বিদ্যমান ক্রমবর্ধমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করে মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবদ্দশায় বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানকারী প্রথম মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম হিসেবে ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে এর সম্পর্ককে অত্যন্ত মূল্য দেয় বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: ৪৩তম আসিয়ান সম্মেলনে যোগ দিতে জাকার্তার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন রাষ্ট্রপতি
ইন্দোনেশিয়ার বালি সাগর অঞ্চলে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প
ইন্দোনেশিয়ার বালি সাগর অঞ্চলে মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) ভূমিকম্প হয়েছে।
ইউরোপিয়ান-মেডিটারেনিয়ান সিসমোলজিক্যাল সেন্টার (ইএমএসসি) জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ৭ রেকর্ড করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় ৫ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত
ইএমএসসি জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল ইন্দোনেশিয়ার মাতারাম থেকে ২০১ কিলোমিটার উত্তরে এবং পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে ৫১৮ কিলোমিটার গভীরে।
ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) ভূমিকম্পটির মাত্রা ৭ দশমিক ১ রেকর্ড করে।
ভারতীয় গণমাধ্যম এএনআই জানিয়েছে, ভূমিকম্পটি ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম নুসা টেঙ্গারার বাংসালের কাছে ৫২৫ কিলোমিটার গভীরে আঘাত হানে।
এদিকে, মার্কিন সুনামি সতর্কীকরণ ব্যবস্থা বলেছে, সমুদ্রের গভীরে আঘাত হানা ভূমিকম্পের ফলে সুনামির কোনো আশঙ্কা নেই।
আরও পড়ুন: সিলেটে ৩.৫ মাত্রার ভূমিকম্প
ঢাকাসহ সারা দেশে ৫.৫ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত
ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি দ্বীপে নৌকাডুবিতে নিহত ১৫, নিখোঁজ ১৯
ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি দ্বীপে নৌকা ডুবে অন্তত ১৫ জন নিহত ও ১৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন। সোমবার উদ্ধার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিরা বিষয়টি জানিয়েছেন।
স্থানীয় অনুসন্ধান ও উদ্ধার সংস্থার প্রধান মুহাম্মদ আরাফাহ বলেন যে দক্ষিণ-পূর্ব সুলাওয়েসি প্রদেশের বুটন সেন্ট্রাল রিজেন্সির লান্টো গ্রাম থেকে নিকটবর্তী লাগিলি গ্রামে যাওয়ার সময় সোমবার মধ্যরাতে নৌযানটি ডুবে যায়।
মোটামুটি ২০ জন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন কাঠের নৌকাটি ৪০ জন যাত্রী বহন করছিল।
আরাফাহ বলেন, উদ্ধারকারীরা সোমবার উত্তাল সমুদ্রে নিখোঁজ ১৯ জনকে খুঁজছিল। ১৫টি লাশ এবং ৬ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন যে নিখোঁজদের সন্ধানে তিনটি ইনফ্ল্যাটেবল নৌকা, দু’টি মাছ ধরার নৌকা এবং ছয়জন ডুবুরি মোতায়েন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ায় স্পিডবোট ডুবে ১১ জন নিহত, নিখোঁজ ১
রবিবার রিজেন্সির নবম বার্ষিকী উদযাপনের জন্য হাজার হাজার বাসিন্দা তাদের গ্রামে ভ্রমণ করেছিলেন এবং এজন্য অনেক মানুষ মাছ ধরা বা যাত্রীবাহী নৌকা ব্যবহার করেছিলেন।
টেলিভিশনের খবরে দেখা গেছে, মাছ ধরার নৌকায় করে লোকজন রাতের অন্ধকারে লাশ উদ্ধার করছে এবং শোকাহত স্বজনরা বন্দর ও স্থানীয় একটি হাসপাতালে তথ্যের জন্য অপেক্ষা করছে।
ইন্দোনেশিয়া ১৭ হাজারেরও বেশি দ্বীপ নিয়ে একটি গঠিত এবং এখানে নৌকা বা ফেরির ব্যবহার খুব সাধারণ একটি বিষয়। নিরাপত্তার মানে ঘটতি এবং ধারণ ক্ষমতার বেশি যাত্রী পরিবহনে প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২১
ইন্দোনেশিয়ায় জ্বালানি ডিপোতে আগুনে নিহত ১৯, নিখোঁজ ৩
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ৬ দিনের সফরে যাচ্ছেন ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ড
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন পৃথক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ১২-১৭ জুলাই ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা ও থাইল্যান্ডের ব্যাংকক যাবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানিয়েছেন, আব্দুল মোমেন মঙ্গলবার (১১ জুলাই) রাতে জাকার্তার উদ্দেশে রওনা হবেন।
আরও পড়ুন: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে মোমেনের ফলপ্রসূ বৈঠক
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাকার্তায় আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরামে যোগ দেবেন। এরপর তিনি ১৭ জুলাই ব্যাংককে আঞ্চলিক ইস্যুতে মতবিনিময়ের জন্য বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন (বিমসটেক) আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। ২৫ বছরের পুরোনো সংস্থাটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার উপায় হিসেবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে।
চলতি বছরের শেষের দিকে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠেয় বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে বাংলাদেশ আঞ্চলিক গ্রুপিংয়ের সভাপতিত্ব করবে।
আগামী ১৮ জুলাই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী অভিযোজন প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন
জলবায়ু পরিবর্তন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী অভিযোজন প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন
ইন্দোনেশিয়ায় স্পিডবোট ডুবে ১১ জন নিহত, নিখোঁজ ১
পশ্চিম ইন্দোনেশিয়ায় উত্তাল সাগরে ৭৪ জন মানুষ বহনকারী একটি স্পিডবোট ডুবে কমপক্ষে ১১ জন নিহত এবং একজন নিখোঁজ হয়েছেন। শুক্রবার দেশটির কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।
এরআগে, বৃহস্পতিবার বিকালে রিয়াউ প্রদেশের ইন্দ্রগিরি হিলির রিজেন্সির টেম্বিলহান শহর ছেড়ে যাওয়ার প্রায় তিন ঘণ্টা পর নৌকাটি ডুবে যায়।
পেকানবারু সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ এজেন্সির প্রধান নিওমান সিদাকার্য বলেন, নিহতদের মধ্যে অনেকেই নারী ও শিশু।
তিনি বলেন, ৬২ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে কয়েকজন অজ্ঞান অবস্থায় ছিল। উদ্ধারকৃতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং তাদের অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।
সিদাকার্য বলেছেন, ইভলিন ক্যালিস্টা ০১ নামক স্পিডবোটটি ৬৮ জন যাত্রী বহন করছিল, যাদের বেশিরভাগ লোকেরা তাদের পরিবারের সঙ্গে ঈদুল ফিতরের ছুটি উদযাপন করতে নিজ শহরে ভ্রমণ করে ফিরেছিল। স্পিডবোটে ছয়জন ক্রু ছিল।
স্থানীয় পুলিশ প্রধান নরহায়াত বলেছেন, ডুবে যাওয়ার কারণ এখনও তদন্ত করা হচ্ছে। তবে বেঁচে যাওয়া জীবিত ব্যক্তিরা কর্তৃপক্ষকে বলেছে যে প্রবল বাতাসে নৌকাটি দুলছিল এবং একটি বড় ঢেউয়ের ধাক্কায় স্পিডবোটটি ডুবে যায়।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ার সৈকতে আরও ১৮৩ রোহিঙ্গার অবতরণ
নরহায়াত বলেন, দুর্ঘটনার পরে রাতের অন্ধকারে প্রবল ঢেউয়ের মধ্যেও দুটি টাগবোট এবং দুটি বড় নৌকা বেঁচে থাকাদের জন্য অনুসন্ধান চালায়।
তিনি বলেন, একটি টাগবোট ডুবে যাওয়া নৌকাটিকে তীরে টেনে নিয়ে যায়, যাতে অনুসন্ধানের প্রচেষ্টা সহজ হয়।
১৭ হাজারেরও বেশি দ্বীপ নিয়ে গঠিত দ্বীপরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়ায় নৌযান দুঘটনার বিষয়টি খুবই নৈমিত্তিক। প্রায়ই সুরক্ষা বিধি উপেক্ষা করে এখানকার নৌযানগুলো চলাচল করে।
২০১৮ সালে উত্তর সুমাত্রা প্রদেশে একটি গভীর আগ্নেয়গিরির গর্তের হ্রদে প্রায় ২০০ জন লোককে বহনকারী একটি যাত্রীভর্তি ফেরি ডুবে কমপক্ষে ১৬৭জন নিহত হয়।
দেশটির সবচেয়ে খারাপ নথিভুক্ত দুর্যোগগুলোর মধ্যে একটি হয় ১৯৯৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে। ৩৩২ জন যাত্রী নিয়ে একটি জাহাজডুবে ৩১২ জন প্রাণ হারান।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্পে নিহত ৭, আহত ৮৫
ইন্দোনেশিয়ায় নাইটক্লাবে সংঘর্ষের পর আগুন, নিহত ১৯
ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২১
ইন্দোনেশিয়ার দুর্গম নাতুনা দ্বীপপুঞ্জের একটি পাহাড়ি গ্রামে ভূমিধসের ঘটনায় কয়েক টন মাটির নিচে চাপা পড়া আরও লাশ উদ্ধার হওয়ায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ জনে।
বৃহস্পতিবার ন্যাশনাল সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ এজেন্সি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সোমবার প্রবল বর্ষণের ফলে সৃষ্ট ভূমিধসে আশপাশের পাহাড় ধসে পড়ে এবং দক্ষিণ চীন সাগরের প্রান্তে নাতুনা দ্বীপপুঞ্জের একটি ছোট্ট দ্বীপের জেন্টিং গ্রামে ৩০টি বাড়ি চাপা পড়ে।
এতে আরও বলা হয়, কর্তৃপক্ষ অনুসন্ধান ও উদ্ধার সংস্থা, পুলিশ এবং সামরিক বাহিনীর ২০০ জনেরও বেশি উদ্ধারকর্মীকে এখনও নিখোঁজ ৩৩ জনের সন্ধানে মোতায়েন করেছে। যারা ভূমিধসের কারণে প্রায় ৪ মিটার গভীরে আটকা পড়ে।
আরও পড়ুন: পেরুতে প্রবল বর্ষণে ভূমিধসে ৩৬ জনের মৃত্যু
ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির প্রধান সুহারিয়ান্তো বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, আটজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সোমবার গভীর রাতে তাদের জেন্টিং থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে বোর্নিও দ্বীপের পন্টিয়ানাক শহরের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
দুর্যোগস্থলের আশেপাশে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হয়। সুহারিয়ান্তো বলেন, আবহাওয়ার কারণে বেশ কয়েকবার অনুসন্ধান কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বাধ্য হতে হয় এবং যোগাযোগ লাইন ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় অভিযান বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
সোমবারের ভূমিধসে প্রায় এক হাজার ৩০০ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং তাদের চারটি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুহারিয়ান্তো।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ায় ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৪, নিখোঁজ ৯