চরাঞ্চল
বন্যার পলিতে উর্বর উত্তরের চরাঞ্চল, চাষাবাদের ধুম
বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উত্তরের নদ-নদীগুলোর তীর এখন ধুঁ ধুঁ মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। বালুময় জমিগুলোর ওপর বন্যার রেখে যাওয়া পলি জমে বেলে-দোআঁশে পরিণত হওয়ায় চাষাবাদের ধুম পড়েছে তিস্তা, ধরলা, সানিয়াজান ও ব্রহ্মপুত্র নদীর চরে।
কৃষি বিভাগ বলছে, উত্তরের এসব নদীতে প্রায় ৭৮৬ টি চর রয়েছে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর চরের মানুষগুলো ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে।
রংপুর কৃষি অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, এসব চরে এবার ৩৬ হাজার ৯১১ হেক্টর জমিতে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, আর বিভিন্ন প্রকার ফসলের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৬২ হাজার টন।
কৃষি বিভাগ মনে করে, চরের ফসলে ঘুরে দাঁড়াবে এই অঞ্চলের বাসিন্দারা। এক ফসলেই তাদের সারা বছর চলে যায়, বলেন এই কর্মকর্তা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উত্তরের লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও নীলফামারী জেলার তিস্তা নদীর চরে কৃষিজমিতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন স্থানীয়রা। ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থানে আলু, বেগুন, মরিচ, ছিটা পেঁয়াজ, আদা, রসুন, শিম, ধনেপাতা, গাজর, কপি, মুলা, লাউ, গম, তিল, তিশি, সরিষা, ভুট্টার আবাদ হয়েছে। সব ফসলেরই ভালো ফলন আশা করছেন চাষিরা।
রংপুরের গঙ্গাচরার ইচলির চরের হোসেন মিয়া বলেন, তিস্তার চরে ৩ বিঘা জমিতে আলু, তিন বিঘায় বেগুন ও ২০ শতক জমিতে ধনেপাতা চাষ করেছি। ফলন ভালো হলে খরচ বাদ দিয়ে এ মৌসুমে দেড় লাখ টাকা আয় হবে।
শুধু হোসেন নন ওই এলাকার কৃষক হাবিবুর, রহিম ও খায়রুল বলেন প্রায় একই কথা। তাদের দাবি, যেটুকু জমিতে আবাদ করেছি, ফলন ভালো হলে ৬০-৭০ হাজার টাকা করে লাভ হবে তো হবেই।
লক্ষ্মীটারি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, তিস্তার চরাঞ্চল এখন কৃষি জোনে পরিণত হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেক ফসল বাজারে উঠতে শুরু করেছে। অনেকে নতুন করে চাষাবাদ করছেন। চরের কৃষকের একটাই দুঃখ; উৎপাদিত পণ্য সংরক্ষণ, বাজারে সরবরাহ এবং প্রক্রিয়াজাতকরণের কোনো ব্যবস্থা নেই। সে কারণে চাষিরা কাঙ্ক্ষিত মুনাফা অর্জন থেকে বঞ্চিত হন।
তিনি আরও বলেন, তিস্তার চরাঞ্চলে যেসব ফসল উৎপাদন হয়, তাতে অন্তত ২-৩টি হিমাগার প্রয়োজন। অথচ গংগাচড়ায় আছে মাত্র একটি হিমাগার। তাছাড়া যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন থাকায় চরাঞ্চল থেকে কৃষক উৎপাদিত পণ্য সহজে বাজারে নিতে পারেন না।
কৃষি কর্মকর্তা তুষার কান্তি বলেন, তিস্তার চরাঞ্চলের মাটিতে পলি জমায় তা অনেক উর্বর। রাসায়নিক সার ছাড়াই বিভিন্ন ফসলের ফলন ভালো হচ্ছে। বিশেষ করে ভুট্টা, গম, আলু, মরিচ, পেঁয়াজ, রসুন, সরিষা, তিল, তিশিসহ শাকসবজি চাষ বেশি হচ্ছে।
চর নিয়ে কাজ করেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ। তিনি বলেন, বন্যা চলে যাওয়ার পর চরের জমিতে যে পলি থাকে, তা অত্যন্ত উর্বর। এ কারণে প্রতি বছরই বন্যার পর কৃষিতে বাম্পার ফলনের দেখা পান চরের কৃষকরা। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত না হওয়ায় ন্যায্য মূল্য পান না চাষিরা।
তিনি মনে করেন, তিস্তাসহ অন্যান্য নদী যদি খনন করা হয়, তাহলে চরের জমিগুলো জেগে উঠবে এবং উত্তরের মানুষের আর অভাব থাকবে না।
কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, উত্তরের ৮ জেলার ৭৮৬টির বেশি চরে যে ফসল উৎপাদন হবে, তাতে ২০০ কোটি টাকা আয় হওয়া সম্ভব।
ফসল উৎপাদনের জন্য কৃষকদের প্রণোদনাসহ কারিগরি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীরা। বন্যায় চরের যেসব কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের ইতোমধ্যেই সহায়তা দেওয়া হয়েছে বলে জানান রংপুর অঞ্চলের কৃষি কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম।
৩ দিন আগে
কুড়িগ্রামের বন্যাকবলিত চরাঞ্চলে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ‘গুচ্ছ বসতভিটা’
কুড়িগ্রামের বন্যাপ্রবণ নদ-নদীবিধৌত চরাঞ্চলে টিকে থাকার লড়াইয়ে নতুন করে আশার আলো জাগিয়েছে ‘গুচ্ছ বসতভিটা’। বন্যা মোকাবিলায় ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর তীরবর্তী চরবাসীর যৌথ উদ্যোগে গড়ে উঠছে এসব উঁচু বসতভিটা। প্রতিটি বসতভিটায় ৫ থেকে ১০টি পরিবার একসঙ্গে বসবাস করে যা বন্যার সময় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।
সমতল থেকে ৮-১০ ফুট উঁচুতে গড়ে তোলা হচ্ছে এসব বসতভিটা। ১৫ থেকে ২৫ শতক জমিজুড়ে নির্মিত একেককটি গুচ্ছ বসতভিটা নির্মাণে খরচ পড়ে প্রায় ৪০ থেকে ৬০ হাজার টাকা।
কুড়িগ্রামে বর্তমানে চরের সংখ্যা প্রায় ৪৬৯টি। এসব চরের অনেক জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে গুচ্ছ বসতভিটার এই অভিনব মডেল।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রাম–চিলমারী রেলপথ আধুনিকায়ন প্রকল্পে অগ্রগতি নেই
এ বিষয়ে চিলমারী উপজেলার চর মনতলার মিজানুর রহমান (৫৫) বলেন, ‘গত বছর আমরা দশটি পরিবার মিলে ২৫ শতক জমিতে গুচ্ছ বসতভিটা তৈরি করি। এতে খরচ হয়েছিল ৬০ হাজার টাকা। বন্যার সময় যখন চারপাশ ডুবে যায়, তখন আমাদের ভিটা নিরাপদ থাকে। আশেপাশের অনেক পরিবারও এসে তখন আশ্রয় নেয়।’
১১৭ দিন আগে
প্রাথমিক শিক্ষায় পিছিয়ে পড়ছে নৃগোষ্ঠী ও চরাঞ্চলের শিশুরা
প্রান্তিক নৃগোষ্ঠী ও চরাঞ্চলের শিশুরা গুণগত প্রাথমিক শিক্ষালাভের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং গুণগত প্রাথমিক শিক্ষায় পিছিয়ে পড়ছে বা ঝরে পড়ছে। দরিদ্র প্রান্তিক অঞ্চলে গুণগত প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নে আরও বিশেষ সহায়তা থাকার কথা থাকলেও সেটি হচ্ছে না।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশের (ইরাব) সদস্যদের নিয়ে আয়োজিত জাতীয় পর্যায়ের অ্যাডভোকেসি কর্মশালায় এসব তথ্য উঠে আসে।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে নৃগোষ্ঠীর নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ১
এতে বলা হয়, তাই প্রাথমিক শিক্ষায় সরকারি-বেসরকারি সংস্থা ও পলিসি বাস্তবায়নকারীদের প্রান্তিক নৃগোষ্ঠী ও দুর্গম চর এলাকার শিশুদের গুণগত শিক্ষা বিষয়ে দ্রুত দৃষ্টি দেওয়া ও বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
কর্মশালায় শাপলা নীড় বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর তোমোকো উচিয়ামা, ইরাব সভাপতি শরীফুল আলম সুমন ও সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসাইন উপস্থিত ছিলেন।
সভায় প্রান্তিক এলাকার প্রাথমিক শিক্ষাবিষয়ক বিভিন্ন ইস্যু, বিশেষ করে চরাঞ্চলের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট ও প্রান্তিক নৃগোষ্ঠীর শিশুদের মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিকার বাস্তবায়িত না হওয়া ও নিজস্ব কমিউনিটির শিক্ষক না থাকার বিষয়গুলো বিভিন্ন পরিসংখ্যান ও তথ্যভিত্তিক উপস্হাপনার মাধ্যমে আলোকপাত করা হয়।
আরও পড়ুন: বান্দরবানের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী পরিবারের কাছে সরকারি ত্রাণ পৌঁছে দিল সেনাবাহিনী
কর্মশালায় পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে প্রান্তিক নৃগোষ্ঠী বিশেষ করে সাঁওতাল, তুরি, মুশোহর নৃ-গোষ্ঠী এবং নরসিংদীর প্রান্তিক চরাঞ্চলের প্রাথমিক শিক্ষার তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরা হয়।
কর্মশালায় বলা হয়, নিয়মিত ক্লাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ২ হাজার ৫৯৩ জন শিশু। আবার এসব এলাকার বাবা-মায়ের সচেতনতার অভাবে অনেক বাচ্চা ড্রপ আউট হয়ে যাচ্ছে বা পড়াশোনাই করছে না। করোনাও একটি বড় ক্ষতি করেছে।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে ছুরিকাঘাতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্য হত্যা, আটক ৩
৬৬৮ দিন আগে
শীতে কাবু কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলের মানুষ
কুড়িগ্রামে এক সপ্তাহ ধরে তাপমাত্রা উঠানামা করছে। রবিবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকালে সূর্যের দেখা মিললেও শীতের দাপটে ব্যাহত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
ঠান্ডায় বিপাকে পড়েছেন চরাঞ্চলের শ্রমজীবী, ছিন্নমূল ও অতি দরিদ্র মানুষজন। ঠান্ডায় সময়মতো কাজে যেতে না পারায় দুর্ভোগ বেড়েছে তাদের।
আরও পড়ুন: শীতের পোশাক পেল পথশিশুরা, সঙ্গে দেয়া হলো চাইনিজ খাবার
দিনের অধিকাংশ সময মেঘে ঢাকা থাকছে সূর্য। গত এক সপ্তাহ ধরে এ অঞ্চলের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি থেকে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করছে।
শীত নিবারণের জন্য গরম কাপড়ের অভাবে দুর্ভোগে পড়েছে নদ-নদী তীরবর্তী এলাকার দরিদ্র মানুষ।
এদিকে শীতার্ত মানুষের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে ইতোমধ্যেই ৪৫ হাজার কম্বল সংশ্লিষ্ট উপজেলায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু করেছে।
উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. বাবলু মিয়া বলেন, আমার ইউনিয়নটি নদীবেষ্টিত। এখানে প্রচুর শীত ও কুয়াশা। এখানকার মানুষ শীতে কাবু হয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত সরকারি ভাবে শীতবস্ত্র পাইনি।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, আগামী ২০ তারিখের পরে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামার সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বেড়েছে শীতের তীব্রতা
চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত
৭১৮ দিন আগে
কুড়িগ্রামে চরাঞ্চলে ভ্রাম্যমাণ সোলার পাম্প, কৃষকের মনে স্বস্তি
কুড়িগ্রামের নদীবিধৌত চরাঞ্চলে ভ্রাম্যমাণ সোলার পাম্পের মাধ্যমে সেচ ব্যবস্থা চালু করে কৃষকের ভাগ্য বদলের চেষ্টা করছে পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (আরডিএ)।
সরকারি অর্থায়ণে ভ্রাম্যমাণ সোলার পাম্পের সেচে কম খরচে ফসল ঘরে তুলতে পেরে কৃষকের মনে স্বস্তি ফিরেছে।
আরও পড়ুন: যশোরে ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে সরকারি সোলার!
এতদিন এ অঞ্চলের বন্যা, খরা ও প্রকৃতির সঙ্গে সংগ্রাম করে বাঁচা কৃষকেরা শ্যালো মেশিনের সেচ পাম্পের উপর নির্ভরশীল ছিল।
এখন আর শ্যালো মেশিনের জ্বালানি ডিজেলের দামবৃদ্ধি এবং যান্ত্রিক ভোগান্তি না থাকায় কম খরচে ফসল ঘরে তুলতে পেরে খুশি চরাঞ্চলের কৃষকরা।
জানা গেছে, জেলার চিলমারীর সদর ইউনিয়নের বজরাদিয়ার খাতা গ্রামে কৃষকের খেতে পানি দিতে ছুটে বেড়াচ্ছে ভ্রাম্যমাণ সোলার সেচ পাম্প।
ওই এলাকার প্রায় ১ হাজার ৫০০ কৃষকের ধান ও ফসলের খেতে সেচের জন্য নির্ভরযোগ্য হয়ে উঠেছে ভ্রাম্যমাণ সোলার পাম্পটি।
লোহার এঙ্গেলের উপর বিশেষ কায়দায় স্থাপন করা হয়েছে আটটি সোলার প্যানেল। ব্যাটারিবিহীন একটি কনভার্টার সাহায্যে বৈদ্যুতিক মটর সেট করে প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে নদী-নালা, খাল-বিল থেকে সহজে পানি পাচ্ছেন কৃষকেরা।
পরিবহনের ঝামেলা এড়াতে চাকা লাগিয়ে বানানো এই ভ্রাম্যমাণ সোলার প্যানেলের সেচ পাম্প যাচ্ছে কৃষকের খেতের কাছে। খুব সহজে হাতের কাছে এমন সেচ ব্যবস্থা পেয়ে আশার আলো বুনছেন কৃষকেরা।
কথা হয় বজরাদিয়ার খাতা গ্রামের মো. হারুন রশীদ নামের এক কৃষকের সঙ্গে।
আরও পড়ুন: সোলার প্যানেল ব্যবহার করে ২০ শতাংশের বেশি বিদ্যুৎ বিল বাঁচানো সম্ভব: নসরুল হামিদ
তিনি বলেন, সোলার সেচ পাম্পের সাহায্যে কম খরচে ফসল ঘরে তুলতে পেরে আমরা অনেক খুশি। কেননা শ্যালো ইঞ্জিন সেচ পাম্পে এক বিঘা ধানের জমিতে প্রায় ৮-৯ হাজার টাকা খরচ হতো। সেখানে ৫ হাজার ৫০০ টাকায় আমরা ফসলে পানির কাজ শেষ করতে পারছি। আবাদে পানি নিয়ে আমাদের আর কোনো চিন্তা নাই।
আরেক কৃষক মো. আবু বক্কর বলেন, খেতে পানি নিয়ে আমাদের এলাকার মানুষের আর দৌড়াদৌড়ি নাই। ঘুম থেকে উঠে কে আগে জমিতে পানি নেবে সেই দিন শেষ। আমরা সোলার পাম্পের সঙ্গে চুক্তি করি, ওরা এসে আমাদের ধান বা অন্যান্য ফসলের খেতে পানির ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। এমন নিরাপদ নির্ভেজাল সেচ ব্যবস্থা পেয়ে আমরা খুবই খুশি।
৮২৯ দিন আগে
তিস্তার পানি কমলেও দেখা দিয়েছে ভাঙন
তিস্তার চরাঞ্চল ও তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের ঘরবাড়ি থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। তবে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে তিস্তার দুই তীরে দেখা দিয়েছে ভাঙন।
মঙ্গলবার (২০ জুন) দুপুর ২টার দিকে পানি তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে বিপদ সীমার ৪০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। এ সময় তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫১ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার, যা বিপদ সীমার শূন্য দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার কম।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসাফাউদ্দৌলা বিপদ সীমার শূন্য দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে সোমবার (১৯ জুন) সকাল সন্ধায় তিস্তার ব্যারেজ পয়েন্টে বিপদ সীমার ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে তিস্তা ব্যারেজের ভাটি এলাকার চর অঞ্চল গুলোতে পানি প্রবেশ করে পানিবন্দি হয়ে পড়ে মানুষ।
আরও পড়ুন: পানি বাড়ায় তিস্তা ব্যারেজের সবগুলো গেট খুলে দেওয়া হয়েছে
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিস্তার পানি কমলেও বাড়ছে ধরলা নদী ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি। লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলায় তিস্তার তীরবর্তী চরাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি একদিন থাকার পর রাত থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। পানির কমলেও দেখা দিয়েছে দুর্ভোগ। পানিতে রাস্তাঘাট ভেঙে যাওয়ায় মানুষের চলাচলের দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। গত দুইদিন পানিবন্দি পরিবারগুলোর কাছে এখনও কোনো সরকারি সহযোগিতা পৌঁছায়নি।
এদিকে, লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, সিংগীমারী, সিন্দুর্ণা, ডাউয়াবাড়ী, পাটিকাপাড়া, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ও লালমনিরহাট সদরের খুনিয়াগাছ, কালমাটি এলাকায় পানি কমলেও দেখা দিয়েছে তিস্তার ভয়াবহ ভাঙন।
আরও পড়ুন: ভয়াবহ ভাঙনের মুখে উলিপুরের তিস্তা পাড়ের মানুষ
হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্ণা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, গত দুইদিন ধরে পানিবন্দি থাকার পর পানি নেমে গেলেও সরকারি সহযোগিতা এখনও পরিবারগুলো পায়নি।
আদিতমারী উপজেলা প্রকল্প ও বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মফিজুল ইসলাম বলেন, তালিকা প্রস্তুত হয়েছে। নির্দেশ পেলেই পানিবন্দি পরিবারের গুলোর মাঝে ত্রাণ সামগ্রী দেওয়া হবে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ বলেন, বন্যার্ত পরিবারের তালিকার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খুব দ্রুত সহযোগিতা করা হবে।
আরও পড়ুন: তিস্তাপাড়ে ভাঙনে মানুষের মানবেতর জীবন
৮৯৮ দিন আগে
চরাঞ্চলে এক হাজার প্রাইমারি স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হবে: প্রতিমন্ত্রী
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, চরাঞ্চলে নতুন করে এক হাজার সরকারি প্রাইমারি স্কুল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করেছে সরকার।
তিনি বলেন, এই অর্থবছরে ২০টি চরে নতুন করে বিদ্যালয় স্থাপনের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার কুড়িগ্রামের ঐতিহ্যবাহী ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজের ৫০বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই কলেজের ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে আসতে পেরে আমি খুশি। এই কলেজের আয়োজক কমিটি, কলেজের শিক্ষক, অভিভাবক, প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের শুভকামনা জানাচ্ছি। আমরা যে যেখানেই থাকি শেকড়কে যেন ভুলে না যাই।’
উল্লেখ্য, ১৯৭৩ সালের ২৭ এপ্রিল কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ৫০বছর পূর্তি ও সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। এসময় বক্তব্য রাখেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. মশিউর রহমান, কুড়িগ্রাম-২আসনের সংসদ সদস্য পনির উদ্দিন আহমেদ,জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ, পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জাফর আলী, সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, পূর্তি অনুষ্ঠানের আহবায়ক ও ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম রিজু, সদস্য সচিব ও জসিমিয়া মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবেদ আলী প্রমুখ।
সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে কলেজ প্রাঙ্গণকে আলোকসজ্জ্বায় রঙিন করে তোলা হয়েছে। দু’দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানে থাকছে র্যালি, আলোচনাসভা, কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা, ডকুমেন্টরি প্রদর্শন, র্যাফেল ড্র এবং ঢাকাস্থ শিল্পী গোষ্ঠীর পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
আরও পড়ুন: ২৬ এপ্রিল থেকে ২৩ মে কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে: শিক্ষামন্ত্রী
বাংলাদেশের সাক্ষরতার হার বেড়ে ৭৪ শতাংশে, দারিদ্র্য কমে ৫.৬ শতাংশ: জরিপ
দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে একক ভর্তি পরীক্ষা হবে: শিক্ষামন্ত্রী
৯৫২ দিন আগে
চরাঞ্চলের মানুষের গল্প নিয়ে সোহেলের ‘নয়া মানুষ’
চরাঞ্চলের মানুষের গল্প ও গতানুগতির ধারার বাইরে ঢাকাই সিনেমায় প্রায় উঠে এসেছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিভিন্ন গল্প। ‘নয়া মানুষ’ সেই সারির নির্মিতব্য একটি সিনেমা। এটি আ. মা. ম. হাসানুজ্জামানের বেদনার বালুচর গল্প অবলম্বনে মাসুম রেজার চিত্রনাট্যে নির্মিত হচ্ছে। পরিচালনায় রয়েছেন সোহেল রানা।
‘নয়া মানুষ’-এর প্রধান দুটি চরিত্রে অভিনয় করছেন রওনক হাসান এবং মৌসুমী হামিদ। এছাড়াও রয়েছেন আশিষ খন্দকার, বদরুদ্দোজা, সরন সাহা, আ.মা.ম হাসানুজ্জামান, নিলুফার ওয়াহিদ পাপড়ি, সানজানা, পারভিন পারু, মাহিন রহমান, এ্যাঞ্জেলা, শিশু শিল্পী উষশীসহ চরের প্রায় ২০০ বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: প্রথমবার বাবার পরিচালনায় ভাবনা
১১২১ দিন আগে
ঈদের আনন্দ নেই গাইবান্ধার চরাঞ্চলের
ঈদুল-ফিতর মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব, আর উৎসব মানে আনন্দ: এই দিনটিকে নতুন পোশাক কিনে বিশেষ খাবারের সঙ্গে উপভোগ করা হয়। কিন্তু গাইবান্ধার ১৬৫টি চর এলাকার তিন লাখের বেশি পরিবারের জন্য তা নয়। খুবই দারিদ্রতার কারণে নতুন জামা-কাপড় কেনা ও উৎসবের জন্য বিশেষ খাবার তৈরি করতে পারে না তারা।
এ বছরও কোনো আনন্দ হবে না কারণ চরের মানুষ তিন বেলা খাবারেরই ব্যবস্থা করতে পারে না।
বাংলাদেশে মঙ্গলবার ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। কিন্তু ঈদ মানেই তাদের জন্য বিশেষ কোনো দিন নয় কারণ চর এলাকার অধিকাংশ মানুষ বেকার ও ভূমিহীন। ঈদ উপলক্ষে ভালো খাবার ও নতুন পোশাকের ব্যবস্থা করা তাদের জন্য কঠিন। তাদের নিজস্ব কোন জমি নেই তাই তারা বিভিন্ন জেলায় দিনমজুর হিসেবে কাজ করে।
আরও পড়ুন: ঈদকে সামনে রেখে কক্সবাজারে ৫০ শতাংশ হোটেল আগাম বুকিং
চরের মানুষ শিক্ষা, কাজ, খাদ্য, স্বাস্থ্য ও বাসস্থান সহ তাদের মৌলিক চাহিদা মেটাতে পারে না। এসব এলাকার বাসিন্দারা চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করছে। এছাড়া বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে সাথে লড়াই করে তাদের বেঁচে থাকার হয়। এমনকি সরকারি কর্মসূচির আওতায় ত্রাণ পাওয়া থেকেও তারা বঞ্চিত।
জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কাপাসিয়া, বেলকা, শ্রীপুর ও হরিপুর তিস্তা নদীর তীরে চারটি চর রয়েছে
সম্প্রতি গাইবান্ধা জেলা শহরের উত্তর-পূর্ব কাপাসিয়ার চর পরিদর্শনে গিয়ে কয়েকজন পরিবারের সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের।
লালচামার গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, তারা কোনো ত্রাণসামগ্রী পাননি। ফলে ধান কাটার মৌসুমে দিনমজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহের জন্য পুরুষদের বিভিন্ন জেলায় যেতে হয়।
আরও পড়ুন: ঈদে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় ঘরমুখো যাত্রীদের ভোগান্তির শঙ্কা
ওই গ্রামের নারী ময়না বেগম জানান, তার স্বামী ময়নুল মিয়া কাজে বের হয়ে এখনও ফেরেননি। তবে স্বামী ফোন করে বলেছেন তিনি আসার সময় তার জন্য শাড়ি আনবেন । আর গাইবান্ধা থেকে সন্তানদের জন্য যা লাগে কিনে দিবেন।
১৩১২ দিন আগে
কোমর পানিতে বোরো ধান কাটছে চরাঞ্চলের চাষিরা
কুড়িগ্রামের ধরলা, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রসহ ১৬টি নদ নদীর বুকে জেগে ওঠা বালু চরে বোরো ধানের আবাদ করেছে এখানকার কৃষকরা।
কিন্তু কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির ফলে বোরো আবাদ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষতির আশঙ্কায় করছেন চাষিররা। গত কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টি কারণে নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আধা পাকা ধান কাটছে তারা।
শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, ধরলা, তিস্তা ও বৃহ্মপুত্র নদের অববাহিকার কৃষকরা হাঁটু পানি কোথাও কোমর পর্যন্ত পানিতে নেমে কাঁচা ধান কাটছে। বোরো ধানের আশানুরূপ ফসল ঘরে তোলার স্বপ্ন দেখলেও ভারি বৃষ্টি হওয়ায় সেই স্বপ্ন ভেসেঁ যাচ্ছে বলে জানান অনেক বোরো চাষি।
চাষিরা জানান, হঠাৎ নদীর পানি বৃদ্ধি হওয়ায় ধানের খড় নিয়েও দুশ্চিন্তায় আছেন তারা। খড় ও ধান পাওয়ার আশায় তাড়াহুড়া করে পানিতে নেমে বোরো ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছে বোরো চাষিরা।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, নদ নদীর বালুময় চরে ১ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। তবে আর কয়েকদিনের মধ্যে কৃষকরা এসব ধান ঘরে তুলতে পারবেন।
আরও পড়ুন: হাওরে পানি বাড়ছে, আতঙ্কে কাঁচা ধান কাটছে কৃষক
১৩৩৬ দিন আগে