জাতীয় সংসদ নির্বাচন
ছাত্র সংসদ নির্বাচনের অভিজ্ঞতা জাতীয় নির্বাচনে কাজে লাগবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্র সংসদ নির্বাচনের অভিজ্ঞতা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও নিরাপদভাবে অনুষ্ঠানে কাজে লাগবে।’
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে আয়োজিত এক সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘ইতোমধ্যে ডাকসু ও জাকসু নির্বাচন নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিগগিরই রাকসু ও চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
‘আজকের সভায় ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রক্টর ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত ছিলেন। তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা ও অভিজ্ঞতা বিনিময় হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমাদের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে, তাই এ নির্বাচনগুলো দেখে আমাদের কিছু অভিজ্ঞতা হচ্ছে। সে অভিজ্ঞতা জাতীয় নির্বাচনে কীভাবে প্রয়োগ করা যায়, সেটা শেয়ারের জন্য আজকের এ সভা হয়েছে।’
‘তাছাড়া যেহেতু ইতোমধ্যে দুইটা ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, সে দুইটা নির্বাচনের ছোটখাটো ভুলগুলো কীভাবে সমাধান করা যায়— সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আজকের সভায় নির্বাচন বিষয়ে যেসব ভালো পরামর্শ এসেছে, তা আমরা ভবিষ্যতে কাজে লাগাব। নির্বাচনের বিষয়ে যেসব পরামর্শ এসেছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো— ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা নির্ধারণ, ভোট গণনার প্রক্রিয়া নির্ধারণ, কালি কীভাবে ব্যবহার করতে হবে, ইত্যাদি। তাছাড়া নির্বাচনের ফলাফল দ্রুত ঘোষণার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ, ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের ছবি যুক্ত আইডিকার্ড, স্বচ্ছ ভোটার তালিকা প্রণয়ন ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘রাকসু ও চাকসু নির্বাচন নিয়ে প্রতিষ্ঠানদুটির কোনো উদ্বেগ নেই। দুটি নির্বাচনই সুষ্ঠু, নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণভাবে হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।’
নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হলে সব পক্ষের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে জানান উপদেষ্টা। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের অনুরোধ করেন এবং সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
ব্রিফিং অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার উপস্থিত ছিলেন।
৭৭ দিন আগে
নির্বাচন সামনে রেখে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই নতুন ডিসিদের নিয়োগ
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে খুব শিগগিরই দেশের সব জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দিতে যাচ্ছে সরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই নতুন ডিসিদের নিয়োগ চূড়ান্ত করা হবে। এরই মধ্যে নতুন ফিটলিস্ট তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
ইতিমধ্যে সিলেট জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এবার ডিসি নিয়োগে কোনো ধরনের রাজনৈতিক সুবিধাভোগী বা বিতর্কিত কর্মকর্তাকে স্থান দেওয়া হবে না। কেউ ছলচাতুরী বা তথ্য গোপন করে ডিসি পদে নিয়োগ পেলে এবং পরে তা প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইতিমধ্যে গত ১৮ আগস্ট সিলেটের নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ পেয়েছেন প্রশাসনের আলোচিত সেই ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারওয়ার আলম। উপসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা সারওয়ার আলম বর্তমানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের একান্ত সচিব (পিএস) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
ফিটলিস্ট প্রস্তুত প্রক্রিয়া
চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি থেকে নতুন ফিটলিস্ট তৈরির কাজ শুরু করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর অংশ হিসেবে ছয় ধাপে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ২৫তম ও ২৭তম ব্যাচের ২৬৯ জন উপসচিবের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। এর মধ্য থেকে অর্ধশতাধিক কর্মকর্তাকে ফিটলিস্টে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে ২৮তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের মৌখিক পরীক্ষা চলছে।
জনপ্রশাসনের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে ২৪তম ব্যাচের ২৬ জন, ২৫তম ব্যাচের ২৫ জন এবং ২৭তম ব্যাচের ১২ জন কর্মকর্তা ডিসির দায়িত্বে রয়েছেন। তবে ২৪তম ব্যাচের ২১ জন কর্মকর্তা গত ২০ মার্চ যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি পেলেও এখনও মাঠ প্রশাসন থেকে তাদের প্রত্যাহার করা সম্ভব হয়নি।
পূর্বের বিতর্ক ও বর্তমান সতর্কতা
এর আগে ২০২৩ সালের ৮ সেপ্টেম্বর ১০৮ জন কর্মকর্তার একটি ফিটলিস্ট থেকে ৬১ জেলায় ডিসি নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। সেই নিয়োগ নিয়ে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়। অনেক কর্মকর্তা নিজেদের ‘বঞ্চিত’ দাবি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন। মারামারি ও হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে, যা সরকারের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ণ করেছিল।
তাছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সুবিধা পাওয়া একাধিক কর্মকর্তা গত বছরের ৫ আগস্টের পরও ডিসি পদে নিয়োগ পেয়েছেন। এসব নিয়ে সমালোচনার পর এবার সরকার অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করছে।
প্রশাসনে অস্থিরতা ও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ নিয়ে অসন্তোষ
কেবল ডিসি নিয়োগই নয়, বর্তমানে একাধিক মন্ত্রণালয় ও বিভাগে সচিব নেই এবং ভারপ্রাপ্ত সচিব দিয়ে চলছে। কর্মকর্তাদের দাবি, প্রশাসনের শীর্ষ পদগুলোতে অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া ছিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সবচেয়ে বড় ভুল।
তাদের মতে, এক দশক বা দেড় দশক আগে অবসরে যাওয়া কর্মকর্তারা বর্তমানের ডিজিটাল প্রশাসন ব্যবস্থায় খাপ খাওয়াতে পারছেন না। তারা দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণেও সাহস পান না। এর ফলে প্রশাসনে শৃঙ্খলার অভাব দেখা দিয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে।
জনপ্রশাসনের অবস্থান
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রেষণ অনুবিভাগ) মো. এরফানুল হক ইউএনবিকে বলেন,
‘ডিসি নিয়োগের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। কবে নাগাদ নিয়োগ হবে তা জনপ্রশাসনবিষয়ক কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে। তবে আমরা আশা করছি দ্রুতই নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হবে।’
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস-উর রহমান ইউএনবিকে বলেন,‘ডিসি ফিটলিস্ট থেকেই নিয়োগ দেওয়া হবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে যোগ্য ও দক্ষ কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হবে, যাতে কোনো প্রশ্ন না ওঠে।’
বিশেষজ্ঞ মতামত
সাবেক সচিব ও প্রশাসন বিশেষজ্ঞ এ কে এম আব্দুল আউয়াল মজুমদার বলেন,‘১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এমন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়নি। বর্তমান প্রশাসনের দুর্বলতা দ্রুত সমাধান করতে হবে। একটি সৎ, দক্ষ ও পেশাজীবী আমলাতন্ত্র ছাড়া রাষ্ট্র পরিচালনা সম্ভব নয়। এখনো সময় আছে—সরকারকে গুরুত্বপূর্ণ পদে যোগ্য লোক নিয়োগ দিয়ে প্রশাসনের প্রাণ ফিরিয়ে আনতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এ আমলাতন্ত্রের ওপর ভর করে রাষ্ট্র পরিচালনা করা সত্যিই অসাধ্য। তাই এখনো সময় আছে প্রশাসনের প্রাণ ফিরে আনতে হবে। মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও ডিসি সহ প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় যোগ্য ও দক্ষ লোক নিয়োগ দিতে হবে।’
নিয়োগে কমিটি
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, যুগ্ম সচিব ও তদূর্ধ্ব পদে নিয়োগ, বদলি ও শৃঙ্খলাজনিত বিষয়ে পরামর্শ প্রদানের জন্য চারজন উপদেষ্টা, মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং জনপ্রশাসন সচিবকে নিয়ে ‘জনপ্রশাসনবিষয়ক কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিই ডিসি নিয়োগসহ অন্যান্য বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন।
১০৬ দিন আগে
আগামী নির্বাচনে তরুণ ভোটারদের জন্য আলাদা বুথ থাকবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তরুণ ভোটারদের জন্য আলাদা বুথ থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
সোমবার (১১ আগস্ট) সকালে ঢাকা-৩ সংসদীয় আসনের অন্তর্ভুক্ত দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের তেঘরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় (৩ নং) ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ কথা জানান তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, এবারের নির্বাচন যাতে উৎসবমুখর ও সুশৃঙ্খল পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়, সেজন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তরুণ ভোটারদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি ও তাদের আকৃষ্ট করার জন্য প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে তরুণ ভোটারদের জন্য আলাদা বুথ থাকবে। এছাড়া ছেলে ও মেয়েদের জন্য আলাদা বুথ থাকবে। নারী ও পুরুষের জন্য আলাদা বুথ তো থাকছেই।
আরও পড়ুন: দ্রুতই সাংবাদিক তুহিন হত্যার চার্জশিট: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নির্বাচনী প্রস্তুতি অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ইতোমধ্যে নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে বডি-অর্ন ক্যামেরা থাকবে, যাতে নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে কিনা তা জেলা ও কেন্দ্রীয়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা যায়। বর্তমানে পুলিশ, বিজিবি ও কারারক্ষীদের কাছে কিছু বডি-অর্ন ক্যামেরা রয়েছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য নতুন করে আরও ৪০ হাজার বডি-অর্ন ক্যামেরা কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
একটি বিশেষ দল বাসস্ট্যান্ড ও টেম্পুস্ট্যান্ড দখল করে রাখছে—সাংবাদিকদের এমন অভিযোগের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, কোনো ধরনের চাঁদাবাজিকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। ইতোমধ্যে অনেক চাঁদাবাজকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। ভবিষ্যতেও কোনো চাঁদাবাজকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না—সে যে দলেরই হোক না কেন।
এর আগে উপদেষ্টা র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১০ এর সদর দপ্তর ও কেরাণীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শন করেন। কারাগার পরিদর্শনকালে তিনি বন্দিদের খাবার, স্বাস্থ্য ও জীবনযাত্রার মান পর্যবেক্ষণ করেন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন। পরে তিনি কেরাণীগঞ্জ মডেল থানা পরিদর্শন করেন।
১১৬ দিন আগে
জাতীয় নির্বাচনে ৪৭ হাজার কেন্দ্রে থাকছে বডি-ওর্ন ক্যামেরা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে এবং সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত রাখতে দেশের ৪৭ হাজার ভোটকেন্দ্রে একটি করে বডি-ওর্ন ক্যামেরা সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) বিকালে বাংলাদেশ সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে আয়োজিত এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচনকালীন সময়ের জন্য সারা দেশের আনুমানিক আট লাখ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে। এ বাহিনীর মধ্যে পুলিশ, আনসার, বিজিবি, কোস্ট গার্ড এবং সশস্ত্র বাহিনী অন্তর্ভুক্ত থাকবে। সব বাহিনীকেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রিজাইডিং অফিসাররা যেন কারো বাসায় না থেকে নির্বাচনী কেন্দ্রে থাকতে পারেন, সে ব্যবস্থা করা হবে। তাদের সঙ্গে আনসার এবং পুলিশ সবাই থাকবে।
কারা বডি-ওর্ন ক্যামেরা পাবেন— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের ৪৭ হাজার ভোট কেন্দ্রের প্রতি কেন্দ্রেই একটি করে বডি-ওর্ন ক্যামেরা দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। পুলিশের মধ্যে যিনি সিনিয়র পদধারী থাকবেন, তার কাছে বডি-ওর্ন ক্যামেরা থাকবে৷’
আরও পড়ুন: নির্বাচনের আগে এসপি-ওসিদের বদলি হবে লটারির মাধ্যমে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের দায়িত্বে নিয়োজিত সব বাহিনীর জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এছাড়া নির্বাচন কমিশন পোলিং অফিসার এবং প্রিজাইডিং অফিসারদের প্রশিক্ষণ দিবে।’
তিনি বলেন, ‘বাহিনীগুলোর প্রশিক্ষণের পর তাদের মহড়া দেওয়ার ব্যবস্থাও করা হবে। নির্বাচনটা যাতে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও ভালোভাবে হতে পারে— সে অনুশীলন করা হবে।’
পুলিশের ডিআইজি, অতিরিক্ত ডিআইজি ও পুলিশ সুপার পদমর্যাদার ৭৬ কর্মকর্তাকে সংযুক্তিতে বদলি করার বিষয় উপদেষ্টা বলেন, এটা রুটিন বিষয়৷ এটা সবসময় চলমান থাকবে।
ব্রিফিংকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
১২০ দিন আগে
নির্বাচনের আগে এসপি-ওসিদের বদলি হবে লটারির মাধ্যমে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
নির্বাচনের আগে সব জেলার এসপি ও ওসিদের লটারির মাধ্যমে বদলি করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল অব জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)।
বুধবার (৬ আগস্ট) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্যে আয়োজিত এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, 'লটারি অনুযায়ী নির্বাচনের আগে বিশেষভাবে এসপি ও ওসিদের পোস্টিং দেওয়া হবে। এখন তো সব কর্মকর্তা যেখানেই থাকুন না কেন, নির্বাচনের আগে তাঁদের লটারির মাধ্যমে বদলি করা হবে।'
আরও পড়ুন: নির্বাচন পর্যন্ত চলবে বিশেষ অভিযান: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
তিনি আরও বলেন, 'গতকাল প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে ভাষণে বলেছেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ আমরা আলোচনা করেছি।'
উপদেষ্টা বলেন, 'এই মিটিংয়ে নির্বাচনের সময় যেসব লজিস্টিক সহায়তা প্রয়োজন হবে, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আপনারা জানেন, ডিসি, এসপি, ইউএনও ও ওসি—নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। নির্বাচনের সময় দেখা যায়, প্রার্থীরা তাঁদের আসনে পছন্দের ডিসি, এসপি কিংবা ওসিকে চান। কিন্তু এবার আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, গণমাধ্যমকে ডেকে সবার সামনে লটারি করব।'
১২০ দিন আগে
আগামী নির্বাচনের সময় জানাতে শিগগিরই চিঠি দেবে সরকার: সিইসি
আগামী ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির গোড়ার দিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে নির্ধারিত সময়সূচি জানিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচন কমিশনকে শিগগিরই চিঠি পাঠাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।
বুধবার (৬ আগস্ট) রাজধানীর নির্বাচন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা আমাদের জানিয়েছেন, তিনি নির্বাচন ফেব্রুয়ারির শুরুতেই আয়োজন করতে চিঠি পাঠাবেন। রমজানের আগে নির্বাচন হবে। আমি আশা করি, আমরা খুব শিগগিরই সেই চিঠি পাব।’
এর আগে মঙ্গলবার ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষে নির্বাচন আয়োজনের জন্য ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি পাঠানোর ঘোষণা দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আরও পড়ুন: ভোটারদের আস্থা ফেরানো ও নারী ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই বড় চ্যালেঞ্জ: সিইসি
সিইসি বলেন, নির্বাচন আয়োজনে কমিশন আগেভাগেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।
তিনি বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনের নানা চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও আমরা আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। প্রস্তুতির কোনো ঘাটতি থাকবে না। ইনশাআল্লাহ, আমরা একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ‘আমরা নির্বাচনকে আয়নার মতো স্বচ্ছ করতে চাই। জনগণ এবং বিশ্ব আমাদের আন্তরিকতা ও প্রচেষ্টা প্রত্যক্ষ করুক—এটাই আমাদের লক্ষ্য। গোপন রাখার কিছু নেই।’
আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতির অগ্রগতির বিষয়ে সিইসি জানান, হালনাগাদ ভোটার তালিকা ৩১ আগস্টের মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে এবং নির্বাচনের নির্ধারিত সময়ের আগ পর্যন্ত যাঁরা ভোটার হওয়ার যোগ্য হবেন, তাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
তিনি আরও আশা প্রকাশ করেন, নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সব কেনাকাটা সেপ্টেম্বরের মধ্যেই শেষ হবে।
১২০ দিন আগে
নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে ঘোষণায় বিএনপির বিজয় হয়েছে: মঈন খান
জাতির উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া ভাষণে নির্দিষ্ট করে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণাকে ‘বিএনপির বিজয়’ বলে অভিহিত করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান
তিনি বলেন, তারেক রহমানের নেতৃত্বে গতকাল মঙ্গলবার রাতে আমাদের বিজয় হয়েছে। তবে শুধু সময় নয়, আমরা চাই একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন।
বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুরে সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির উদ্যোগে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নির্বাচনের জন্য বিএনপি প্রস্তুত জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে এবং বিজয়ী হবে। সেজন্য দলীয় নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি নিতে দিকনির্দেশনাও দেন তিনি।
সমাবেশ শেষে রেজিস্ট্রারি মাঠ থেকে শুরু হয় বিজয় র্যালি। এতে অংশ নেন সংগঠনটির জেলা ও মহানগরের নেতাকর্মীরা। বৃষ্টির কারণে র্যালিটি সংক্ষিপ্ত করে কোর্ট পয়েন্টে গিয়ে শেষ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ১৬ বছর জুলুমের পুঞ্জীভুত ক্ষোভের বহির্প্রকাশ ৫ আগস্ট: মঈন খান
সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরীসহ জেলা ও মহানগর বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণাকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে অভিহিত করে একে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি। বুধবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় এই প্রতিক্রিয়া জানান।
তিনি বলেন, বিএনপি মনে করে, এই ঐতিহাসিক ঘোষণায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক অচলাবস্থা কেটে যাবে, গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সুগম করবে।
১২০ দিন আগে
ভোটারদের আস্থা ফেরানো ও নারী ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই বড় চ্যালেঞ্জ: সিইসি
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটারদের আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং তাদের ভোটকেন্দ্রে ফিরিয়ে আনা বড় চ্যালেঞ্জ হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন। বিশেষ করে নারী ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাকেই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে নির্বাচন কমিশন।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে খুলনার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
সিইসি বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন করার চ্যালেঞ্জ তো বহুবিধ। নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ আমাদের সামনে দেখা দিচ্ছে। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, মানুষের আস্থা ফেরানো। নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে, নির্বাচন ব্যবস্থা সম্পর্কে মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনা জরুরি।’
‘দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, ভোটারদের কেন্দ্রমুখী করা। ভোট দিতে না পেরে মানুষ আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। তাই নির্বাচনের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা এখন আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা চাই, সবাই ভোটাধিকার প্রয়োগ করুক এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে কেন্দ্রে আসুক। বিশেষ করে নারী ভোটারদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আমরা বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছি।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নির্বাচন নিয়ে ভুল তথ্য প্রচার হচ্ছে উল্লেখ করে নাসির উদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচনের আগে যথাসম্ভব সংস্কারের কাজ করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে প্রযুক্তির অপব্যবহার। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ফ্রিস্টাইলে যাচাই-বাছাই না করে ভুল তথ্য প্রচার করা হচ্ছে।’
‘এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) পদ্ধতি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে হুবহু নকল করা হচ্ছে একজনের বক্তব্য। এজন্য দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ দল কাজ করছে। আধুনিক যুগে এটি অস্ত্রের চেয়েও ভয়াবহ। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে এটি একটি বড় সমস্যা।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের আগে সন্ত্রাস দমন এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান চলবে। আমরা চাই স্বচ্ছ নির্বাচন। রাতের আঁধারে কোনো কার্যক্রম নয়, দিনের আলোতেই সব কিছু করতে চাই যাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা যায়। আমরা জাতিকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে চাই।’
সব অপপ্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য মিডিয়াকর্মীদের সার্বিক সহযোগিতা চেয়ে সিইসি বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমরা ওয়াদাবদ্ধ। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না হলে দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যাবে। একটি নির্বাচনে বহুবিধ চ্যালেঞ্জ রয়েছে। নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং ভোটারদের ফিরিয়ে আনার জন্যই আমরা কাজ করছি।’
মতবিনিময় সভায় খুলনা বিভাগের অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, বিভিন্ন জেলার জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
১৩২ দিন আগে
নির্বাচন যখনই হোক, ইসিকে প্রস্তুত থাকতে হবে: সিইসি
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যখনই অনুষ্ঠিত হোক না কেন; নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) প্রস্তুত থাকতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম মো. নাসির উদ্দিন।
রবিবার (১৫ জুন) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব বলেন।
সিইসি বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কি না, এ বিষয়ে এখনও সরকারের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি। আমি এই মুহূর্তে আমাদের প্রস্তুতির দিকেই পুরো মনোযোগ দিচ্ছি।’
‘সরকার যদি আলোচনা করে, তাহলে আমরা আরও স্পষ্ট ধারণা পাব এবং সে অনুযায়ী সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারব,’ যোগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে সরকারের কোনো টানাপোড়েন ছিল না: পরিবেশ উপদেষ্টা
সরকার থেকে কোনো ইঙ্গিত পেলেই কমিশন কাজ শুরু করতে প্রস্তুত বলেও জানান নাসির উদ্দিন।
সিইসি আরও জানান, নির্বাচনের সময়সূচি চূড়ান্ত করার আগে সরকারের সঙ্গে আলোচনা হবে এবং ভোটের প্রায় দুই মাস আগে নির্বাচনসূচি ঘোষণা করা হবে।
এ সময় কর্মকর্তাদের রাজনীতিতে জড়িত না হওয়ারও অনুরোধ জানান তিনি। সিইসি বলেন, ‘আমি কর্মকর্তাদের রাজনৈতিকভাবে সচেতন থাকতে বলেছি, কিন্তু রাজনীতিতে জড়াতে না বলেছি। আমরা নির্বাচনে নিরপেক্ষ রেফারি।’
১৭২ দিন আগে
সিলেট বিভাগে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন ৪ প্রার্থী
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে টানা কয়েকদিন ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েও ভোটের মাত্র চারদিন আগে সিলেট বিভাগের একে একে ৪জন প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন এমন প্রার্থীদের অভিযোগ, ভোটে সুষ্ঠু পরিবেশের অভাব, ক্ষমতাসীনদের পেশিশক্তির প্রভাব, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীও প্রচারণায়, বিভিন্ন চাপ, হুমকি, দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সহযোগিতা না পাওয়া, টাকা দিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার ঘটনা ঘটছে ইত্যাদি।
তবে নির্বাচন কমিশন সবসময় আশ্বস্ত করছেন সুষ্ঠু নির্বাচনের। সেই লক্ষে ভোটগ্রহণের আগে ও পরের কয়েকিদন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে গত ২৯ ডিসেম্বর থেকে মাঠে রয়েছে বিজিবি। এ ছাড়া ৩ জানুয়ারি থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত মাঠে থাকছে সশস্ত্র বাহিনী। কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য বিভিন্ন প্রার্থীদেরকে শাস্তির মুখেও পড়তে হচ্ছে।
প্রার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে নির্বাচনের কর্মকর্তারা বলছেন, যেহেতু প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় শেষ হয়ে গেছে। নির্বাচনী বিধিমালায় তারা প্রার্থী হিসেবেই গণ্য হবেন। তাছাড়া প্রার্থীরা লিখিত বা মৌখিকভাবে কোনো অভিযোগও দিচ্ছেন না; তাই প্রার্থীদের এ ধরনের ঘোষণা ব্যক্তিগত।
তবে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা বলছেন, যারা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন তাদের দেওয়া বিভিন্ন অভিযোগ ভিত্তিহীন। জনপ্রিয়তা না থাকায় তারা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে নানান অজুহাত খুঁজছেন ও অভিযোগ দিচ্ছেন।
জানা যায়, মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা পর্ন্ত সিলেট বিভাগের ৪ জন প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) বিকালে নিজের বাসায় প্রেস ব্রিফিং করে ভোট থেকে সরে দাড়ানোর ঘোষণা দেন সুনামগঞ্জ-৪ আসনের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম)- প্রার্থী দেওয়ান শামছুল আবেদীন ও সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে সুনামগঞ্জ-১ আসনের জাতীয় পার্টির (তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা, মধ্যনগর) আবদুল মান্নান তালুকদার ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।
এর মাত্র একদিন আগে হবিগঞ্জ-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য গাজী মোহাম্মদ শাহেদ ও হবিগঞ্জ-২ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী শংকর পালও নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।
বর্জনের কারণ হিসেবে প্রার্থীরা যা বলছেন-
নির্বাচনকে পাতানো ফাঁদ উল্লেখ করে শেষ মুহূর্তে এসে ভোট বর্জনের ঘোষণার কারণ হিসেবে সুনামগঞ্জ-৪ আসনের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম)- প্রার্থী শামছুল আবেদীন বলেন, ‘ভোটের অধিকার রক্ষার্থে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলাম। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই।’
‘সরকারদলীয় প্রার্থীর পক্ষে অনেক জনপ্রতিনিধি প্রকাশ্যে কাজ করছেন। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীও প্রচারণায় রয়েছেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী টাকা দিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করছেন। কেউই নির্বাচনী আচরণবিধি মানছেন না। এটি একটি পাতানো ফাঁদ। তাই এই ফাঁদ থেকে আমি সরে দাঁড়ালাম।’
হবিগঞ্জ-১ আসনের স্বতন্ত্রপ্রার্থী গাজী মোহাম্মদ শাহেদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ থেকে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পার্টির মুনিব বাবুকে সমর্থন করায় তার সমর্থনে সরে দাঁড়িয়েছেন।’
কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছ থেকে সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগ করে সুনামগঞ্জ-১ আসনের জাতীয় পার্টির আবদুল মান্নান তালুকদার বলেন, ‘আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছি, এটা আসন ভাগাভাগি ও প্রহসনের নির্বাচন।’
হবিগঞ্জ-২ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী শংকর পাল অভিযোগ করে বলেন, ‘নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশের অভাব রয়েছে। আছে ক্ষমতাসীনদের পেশীশক্তির প্রভাব।’
জাতীয় পার্টির প্রার্থীর অভিযোগের বিষয়ে জানতে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও নির্বাচনের রিটানিং কর্মকর্তা মোছাম্মাৎ জিলুফা সুলতানাকে একাধিকবার কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি।
অপরদিকে, সুনামগঞ্জ-৪ আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম)- প্রার্থী দেওয়ান শামছুল আবেদীন যেসব অভিযোগের বিষয়ে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, ‘ওই প্রার্থী যেসব অভিযোগ করছেন এসব বিষয়ে আমরা কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। তিনি যা বলছেন ওই প্রার্থীর উচিত ছিল একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া। তাহলে আমরা তদন্ত করে দেখতাম কিংবা অ্যাকশন নিতাম। ওই প্রার্থী মৌখিকভাবে কোনো অভিযোগ করে নাই। ওনি যা বলেছেন ওনার ব্যক্তিগত মতামত। আমি ওনার বক্তব্যের সঙ্গে একমত নই।’
৭০২ দিন আগে