শীতকালীন সবজি
যশোরে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত হচ্ছে শীতকালীন সবজি চারা, পোঁছে যাচ্ছে সারা দেশে
যশোর শহর থেকে ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে গেলেই রাস্তার দুই পাশে চোখে পড়বে সবজির চারা উৎপাদনের এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। রাস্তার দুই পাশেই পলিথিন দিয়ে বিশেষ কায়দায় তৈরি করা হয়েছে বীজতলা ঢেকে রাখার অস্থায়ী দৃষ্টিনন্দন সাদা পলিথিনের ছাউনি। দূর থেকে প্রথম দেখাতেই মনে হবে, হয়তো কোনো বড় অনুষ্ঠানের জন্য সাদা ফুল দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছে।
বৃষ্টি ও সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে সেই পলিথিন দিয়ে বীজতলার শেডগুলো কেউ কেউ ঢেকে দিচ্ছেন। আবার কেউ নারী-পুরুষ মিলে বীজ রোপণ করছেন। কেউ মাটি ফুঁড়ে বের হওয়া চারাগুলোতে ঝাঝরি দিয়ে পানি দিচ্ছেন, আবার কেউ বীজতলা থেকে চারা তুলছেন বিপণনের জন্য।
এমনই অপরূপ দৃশ্য দেখা যায় যশোর সদর উপজেলার আব্দুলপুর ও বাগডাঙ্গা গ্রামের মাঠে। গ্রাম দুটি অনেক আগেই সবজি চারার গ্রাম হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
চারা উৎপাদনকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুই গ্রামের আড়াই থেকে তিন শতাধিক কৃষক প্রতি মৌসুমের ছয় মাসে বিভিন্ন সবজির প্রায় ২০ থেকে ২৫ কোটি চারা উৎপাদন করেন, যা বিক্রি করেন প্রায় ২০ থেকে ৩০ কোটি টাকায়। এসব চারা বিপণন করা হচ্ছে সারা দেশে।
ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রকলি, বিটকপি, শালগম, টমেটো, মরিচসহ বিভিন্ন সবজির মানসম্মত এসব চারা কিনতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে কৃষকরা আসছেন এ দুই গ্রামে।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে ডাকবাক্স হয়ে উঠছে গল্প, যোগাযোগে লেগেছে প্রযুক্তির ছোঁয়া
প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দূর-দূরান্তের জেলা থেকে কৃষকরা তাদের চাহিদা অনুযায়ী সবজি চারা নিয়ে যাচ্ছেন এখান থেকে। মানসম্মত চারা হওয়ায় এর সুনাম ছড়িয়েছে দেশের বিভিন্ন জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলেও।
চারা উৎপাদনকারী আব্দুলপুর গ্রামের রেকান মিয়া জানান, আজ থেকে ২০ বছর আগে এখানে চারা উৎপাদনের কাজ শুরু হয়। তবে গত ৮ থেকে ১০ বছর ধরে বাণিজ্যিকভাবে এখানে চারা উৎপাদন করা হচ্ছে। এ বছর অধিক বৃষ্টির কারণে কয়েকবার চারা উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। এর ফলে কৃষকদের অনেক টাকা লোকসান হয়েছে।
তাছাড়া বীজ, সার, শ্রমিকের মজুরি ও পলিথিনের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এখানকার চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সরকারি সহযোগিতা পেলে ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হতো বলে জানান তিনি।
বাগডাঙ্গা গ্রামের সাদ্দাম হোসেন জানান, এখানকার উৎপাদিত চারা বাংলাদেশের প্রায় ৬৪ জেলাতেই বিক্রি হয়ে থাকে। অনলাইনে ও অফলাইনে এসব চারা বিক্রি হয়। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে চাষি ও ব্যবসায়ীরা এখান থেকে চারা কিনে নিয়ে যান।
এছাড়া সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি বাজারে চারার হাট বসে। সেখানেও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা এসে চারা কিনে নিয়ে যান।
মামুন হোসেন বলেন, বর্তমানে বাজারে ভালো মানের প্রতি হাজার ফুলকপির চারা এক হাজার থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা এবং বাঁধাকপির চারা মানভেদে ৮০০ থেকে এক হাজার ১০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
ফুলকপি, বাঁধাকপি, মরিচ, ব্রকলি, শালগম, বেগুন, টমেটোসহ শীতের সব ধরনের সবজির চারা এখানে উৎপাদন হয়ে থাকে। বাণিজ্যিকভাবে চারা উৎপাদনের কারণে এলাকার অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। সরকারি সহযোগিতা পেলে এ খাতে আরও বিপ্লব ঘটানো সম্ভব বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: মিরসরাই ইকোনমিক জোনসহ সব অর্থনৈতিক অঞ্চলে ট্রেন যোগাযোগ স্থাপনের উদ্যোগ
চারা উৎপাদন কর্মী সোহানা খাতুন জানান, তার মতো অনেক নারীই বছরের ছয় মাস বীজ বপন ও চারা উত্তোলনের কাজ করে থাকেন। জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ থেকে বিভিন্ন সবজির বীজ বপন শুরু হয়। প্রায় দেড় মাস পর চারা বিক্রির উপযোগী হয়। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলে চারা বিক্রি। এই সময়টা তাদের যথেষ্ট কাজের চাহিদা থাকে।
তিনি আরও জানান, এক পাতা বীজ বপনের জন্য তারা ৩৫ টাকা করে পান। সেই অনুযায়ী ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা কাজ করলে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা আয় করতে পারেন। আর চারা উত্তোলনের জন্য হাজিরা হিসেবে একজন নারী কর্মী সাড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করে পান।
যশোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. মোশারফ হোসেন বলেন, সারা দেশেই এই অঞ্চলের সবজি চারার সুনাম রয়েছে। আব্দুলপুর ও বাগডাঙ্গায় মৌসুমের ছয় মাসে প্রায় ২০ থেকে ৩০ কোটি সবজি চারা উৎপাদন হয়। এ খাত থেকে ছয় মাসে প্রায় ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকায় কৃষকদের আয় হয়।
তবে চারা উৎপাদনকারী কৃষকদের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, চারা উৎপাদনে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা এবং বাজার সংযোগে (মার্কেট লিংকেজ) তারা সর্বাত্মক সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।
৪৮ দিন আগে
শীতকালীন সবজির সরবরাহ বাড়লেও কমেনি দাম
চাঁদপুর শহরের কাঁচাবাজারগুলোতে শীতকালীন শাক-সবজির সরবরাহ বেড়েছে। কিন্তু দাম কমেনি।
উপরন্তু পুরোনো আলুর দাম কেজিপ্রতি ৭০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০ টাকা হয়েছে।
জেলা শহরের ব্যস্ততম বাজার বিপনীবাগের ব্যবসায়ী– জাহাঙ্গীর খান, ইকবাল বেপারি, আবুল কালাম গাজী, টিটু মিয়ার সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তবে তারা কেউই এ ব্যাপারে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
শহরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নতুন আলু ১২০ টাকা কেজি। প্রতিটি ফুল কপি ৫০ টাকা, বাঁধাকপিও ৬০ টাকা পিস। এছাড়া করলা ৮০ টাকা, শিম ৭০ টাকা, গাজর ১৭০ টাকা, টমেটো ১৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১২০ টাকা কেজি এবং ধনে পাতা ১২০ টাকা কেজি। কাঁচা কলা ৪০ টাকা হালি।
পটল ৬০ টাকা, কালো বেগুন ৭০ টাকা, গোল বেগুন ৮০টাকা কেজি, মূলা ৬০ টাকা কেজি, ছড়া কচু ৬০ টাকা কেজি, ধুন্দুল ৬০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। কুমড়া ৬০ টাকা এবং মাঝারি আকারের লাউ ৬০-৭০ টাকা প্রতিটির দাম।
শহরের পাল বাজারের পাইকারি বাজারে গিয়ে দেখা গেছে , শাক-সবজির সরবরাহের কোনো ঘাটতি নেই। প্রতিদিন সকালে-বিকেলে সদরের মেঘনার পশ্চিম পাড়ের চর ও প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে নৌকা বা ট্রলার যোগে শহরের ১০ নম্বর ঘাটে প্রচুর শাক-সবজি আসে। এখান থেকে প্রায় ১০০টি ভ্যানে করে এসব শাক সবজি শহরের বিভিন্ন প্রান্তে /পাড়া মহল্লায় বিক্রি করা হয়। শহরের সবজি বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীরা এখান থেকেই শাক-সবজি কিনে। এসব ভ্রাম্যমাণ খুচরা বিক্রেতারা বলেন, আড়তে দাম বেশি, তাই তাদের বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।
ওদিকে ব্রয়লার মুরগি ২০০ টাকা কেজি। গরু ৬৫০-৭০০ টাকা কেজি। খাসির মাংস ১০০০ টাকা কেজি।
এছাড়া চিনা হাঁস ১০০০ টাকা (দেড় কেজি ওজনের), ২ কেজি বা তার বেশি ওজনের চিনা হাঁস ১৬০০ টাকা-১৮০০ টাকা প্রতিটি।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে ঘূর্ণিঝড়ে ধানসহ সবজি খেত ক্ষতিগ্রস্ত
৩৭১ দিন আগে
খুলনার বাজারে শীতকালীন সবজি আসলেও দামে নাগাল পাচ্ছে না ক্রেতারা
শীত আসি আসি করছে। এরইমধ্যে খুলনা মহানগরীসহ উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে আসতে শুরু করেছে শীতকালীন নানা সবজি। শীতের সবজি বাজারে এলেও দাম এখনও সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে আসেনি।
মাঝে মধ্যে শীতের সবজির দাম কিছুটা কমলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঊর্ধ্বমূল্যে বিক্রি হচ্ছে। আর অতিরিক্ত মূল্য নিম্নআয়ের মানুষকে ফেলেছে বেকায়দায়। তাই চড়া বাজারে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন অনেকেই।
আরও পড়ুন: যশোরে ৪৩২৩ হেক্টর জমিতে আগাম শীতকালীন সবজি চাষ
এদিকে পাইকগাছা উপজেলা সদর চাঁদখালী বাঁকা কপিলমুনিসহ বেশ কয়েকটি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে দোকানির ওপরে ক্ষোভ ঝাড়ছেন ক্রেতারা। এছাড়া শীতের শুরুতেই বাজারে সকল ধরনের সবজির দাম আকাশ ছোয়া। যা নাগালের বাইরে।
বেগুন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, ধুন্দুল ৬০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, করলা ৯০ টাকা, শসা ৮০ টাকা, শিম ৮০ টাকা, কচুর মুখি ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৬০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, মুলা ৬০ টাকা, ছোট ফুলকপি প্রতি পিস ১২০ টাকা, কাঁকরোল প্রতি কেজি ৯০ টাকা এবং কাঁচামরিচ ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কাটেঙ্গা বাজারে বাজার করতে আসা শাহিন মোল্লা বলেন, ‘সবজির দাম নাগালের বাইরে। কেনার সাধ্য নেই। আগে যে টাকায় সকল কিছু হয়ে যেত এখন আর সেই টাকা দিয়ে খাওয়াটাই হচ্ছে না। তাহলে কেমনে বাঁচব।’
এছাড়া সকল জায়গায় ভোগান্তি, তবুও বাজার মনিটরিংয়ের কোনো উদ্যোগ কখনোই দেখলাম না বলে জানান বাজার করতে আসা শাহিন মোল্লা।
আরও পড়ুন: ঢাকার বাতাসের মান উন্নত করতে পারেনি শীতকালীন বৃষ্টি
দামের বিষয়ে চাঁদখালী বাজারের সবজি বিক্রেতা সাজ্জাদুল বলেন, ‘গেল কয়েকদিন ধরে সবজির দামটা অনেক বেশি। কারণ উৎপাদন কম হওয়ায় আমরা শীতকালীন শাকসবজি বাজারে পাচ্ছি না। যা পাচ্ছি বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। যার কারণে আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’
বাজারের ৭ থেকে ৮ ধরনের সবজির দাম ১০০ টাকা ছুঁই ছুঁই এবং বাকি সকল সবজির দাম ৬০ থেকে ৭০ টাকার ঘরে হবে বলে জানান তিনি।
সচেতন মহলের লোকজন বলছেন, বাজারে সবজির দাম বেড়ে চলেছে। এই সময় বেশিরভাগ নতুন সবজি বাজারে আসে। কিন্তু বাজারের দাম চড়া।
তবে আমরা মনে করি বাজার যদি ঠিক মতো তদারকি করা হয় তবে দামটা অনেকটাই কমবে। তবে পুরোপুরি শীত চলে আসলে নতুন সব সবজি বাজারে উঠবে, তখন সবজির দাম অনেক কমে যাবে। বাজারে সবজির সরবরাহ তুলনামূলক কম, সে কারণেই দাম কিছুটা বাড়তি যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: রাজগঞ্জে শীতকালীন পেঁয়াজের চাষে ব্যস্ত কৃষক
৩৮৪ দিন আগে
বিশ্বনাথে মাঠে মাঠে শীতকালীন সবজি
সিলেটের বিশ্বনাথে মাঠে মাঠে এখন শীতকালীন সবজির ঘ্রাণ। এই মৌসুমের সবজি চাষে ব্যস্ত হয়ে উঠছেন স্থানীয় কৃষকরা। উপজেলায় এবার শীতের আগাম সবজি চাষের ধুম পড়েছিল। কেউ কেউ আরও আগেই সবজি চাষে নেমেছিলেন।
এরই মধ্যে মুলা, শিম, বাঁধাকপি, আলু, লাল শাক, ফুলকপি, টমেটো, শসা, গাজরসহ নানা ধরনের সবজি বাজারে উঠতে শুরু করেছে।দাম একটু চড়া তারপরও লোকজন নতুন সবজি ক্রয় করছেন। আগাম সবজি বাজারে তুলতে পারলে বেশি টাকা আয় করা সম্ভব সেই চিন্তা মাথায় রেখে চারা তৈরি ও সবজি চাষে ব্যস্ত চাষিরা।
আরও পড়ুন: পুষ্টিগুণ অটুট রেখে শীতকালীন সবজি খাওয়ার সঠিক উপায়উপজেলার খাজাঞ্চি ও অলঙ্কারী ইউনিয়নে শীতকালিন সবজি বেশি চাষাবাদ হয়। ফলে এসব ইউনিয়নে সবজি চাষিরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে সিলেটের বাজারেও বিশ্বনাথের সবজি বিক্রি হয়। কিন্তু দাম বেড়েছে দিগুণ -তিনগুণ।বেশি দামের আশায় প্রতিবছরের মত এবারও অনেক চাষি বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে আগাম জাতের টমেটো, বেগুন, বাধাঁকপি, ফুলকপির বীজ বপন করেছিলেন। তবে বৃষ্টিপাত কম হওয়ার কারণে বীজতলা নষ্ট হয়নি।উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বনাথে এ বছর ১৭০০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ করার লক্ষমাত্রা থাকলেও এ পর্যন্ত মাত্র ৬৩০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। তবে আবাদ চলমান রয়েছে। যেটা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি।
আরও পড়ুন: ধোঁয়া-ওঠা গরম গরম পিঠা খাওয়ার ধুম পড়েছে খুলনায়
উপজেলার কর্মকলাপতি, মাধবপুর, রহিমপুর, হরিপুর গ্রামের কয়েকজন কৃষক জানান, শীতকালীন সবজি চাষ শুরু হয়েছে কয়েকদিন আগেই। যারা পিছিয়ে পড়েছেন তারা এখন চাষে তোড়জোড় শুরু করেছেন।
চাষিরা জানান, সবজি চাষে এখন খরচ বাড়ছে। কীটনাশক, সার, শ্রমিক, সেচ খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা চাষাবাদে কিছুটা হিমশিম খাচ্ছেন।উপজেলার হরিপুর গ্রামের সবজি চাষি উস্তার আলী জানান, শীতের আমেজ শুরু হয়েছে সে কারণে শীতকালীন শাকসবজি চাষাবাদ করছি।তেলিকোনা গ্রামের সবজি চাষি নুরুল হক বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে আমাদের সবজি চারা কিছুটা নষ্ট হলেও ফলন ভালো হয়েছে। লাল শাকঁ, আগাম জাতের চিচিঙ্গা, ঝিঁঙ্গার আবাদ করেছি। আশা করি লাভবান হবো।’খাজাঞ্চি ইউপি চেয়ারম্যান তালুকদার গিয়াস উদ্দিন বলেন, আমাদের ইউনিয়নে সব চেয়ে বেশি সবজি চাষাবাদ হয়। এখানে আগাম জাতের সবজি চাষ হয়েছে। বর্তমানে এলাকার সবজি চাষিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় ৮০০ কোটি টাকার তরমুজ বাণিজ্যের সম্ভাবনাউপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কনক চন্দ্র রায় বলেন, সিলেটের অন্যান্য উপজেলার তুলনায় বিশ্বনাথে টমেটোর চাষ বেশি হয়। প্রতি হেক্টরে ২০ টনেরও বেশি ফলন হয়েছে এ অঞ্চলে।
তিনি বলেন, অতি বৃষ্টির কারণে আগাম চাষ হয়নি। তবে শীতকালীন সবজি চাষে কোন প্রভাব পড়বে না। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে চাষিদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যাহত আছে।
কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ‘সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে চাষিদের মাঝে প্রশিক্ষণ, প্রদর্শনী ক্ষেত, বিনামূল্যে সবজির বীজ ও সার দেয়া হয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে দেয়া হবে।’
১৪৭২ দিন আগে
পুষ্টিগুণ অটুট রেখে শীতকালীন সবজি খাওয়ার সঠিক উপায়
শীতকালে বিভিন্ন ধরনের সবজি খাবারে স্বাদের ভিন্নতা আনার পাশাপাশি অনেক পুষ্টি যোগায়। কিন্তু বাজার থেকে ঘরে আনার পর রান্না করা সেই সবজিতে সম্পূর্ণ পুষ্টি আর পাওয়া যায় না। বিভিন্ন মশলার সংযোজনে হয়ত রান্নাটা বেশ সুস্বাদু হয়ে উঠছে, কিন্তু তাতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পুষ্টিগুণ হারিয়ে যাবার ফলে শীতের সবজি দিয়ে শরীর গঠনের কাজটা পুরোপুরি ব্যাহত হচ্ছে। এমতাবস্থায় বাইরে থেকে আনার পর সবজিগুলো পরিষ্কার করার পর সঠিক উপায়ে সেগুলো রান্না করা আবশ্যক। তাই চলুন জেনে নিই, পুষ্টিগুণ অটুট রেখে শীতকালীন সবজি খাওয়ার জন্য প্রস্তুত করার সেরা কয়েকটি উপায়।
শাকসবজি বেশি ছোট করে না কাটা
সবজি ছোট ছোট টুকরো করে কাটলে রান্নার সময় অতিরিক্ত অক্সিজেনের সংস্পর্শে এসে তাদের শুধু পুষ্টিই ধ্বংস হয় না, অল্প রান্নাতেই বেশি পুড়ে যাওয়া থেকে শুরু করে স্বাদও নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
আরও পড়ুন: বিভিন্ন পুষ্টিগুণে ভরা শীতের সবজি
সবজি বেশিক্ষণ ভিজিয়ে না রাখা
অনেকেই শাকসবজি ঘণ্টার পর ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখেন। সবজি কেটে রাখার পর বেশিক্ষণ পানিতে ভিজিয়ে রাখা উচিত নয়। শাকসবজিকে দীর্ঘক্ষণ পানিতে ভিজিয়ে রাখলে প্রায় ৪০ শতাংশ দ্রবণীয় ভিটামিন ও মিনারেল নষ্ট হয়ে যায়। তাই অল্প সময়ের জন্য ভিজিয়ে রাখা যেতে পারে। অবশিষ্ট পানি উদ্ভিজ্জ স্টক হিসাবে অথবা স্যুপ তৈরিতে ব্যবহার করা যায়।
শিকড় জাতীয় সবজি খোসা ছাড়ানোর আগে সিদ্ধ করে নেয়া
আলুর ক্ষেত্রে সিদ্ধ করার পরে খোসা ছাড়িয়ে নিলে, এগুলোর ত্বকে উপস্থিত পুষ্টিগুলো নষ্ট হবে না। এর ফলে অন্য খাবারের সাথে গ্রহণের সময় সহজেই সমস্ত পুষ্টি শোষণ করা সম্ভব হবে।
যেগুলোর ক্ষেত্রে খোসা না ছাড়িয়ে উপায় নেই সেগুলো খুব পাতলা করে খোসা ছাড়ানো যেতে পারে। খেয়াল রাখা দরকার যে সব শাকসবজিরই পুষ্টিগুণ ত্বকের ঠিক নিচে থাকে। শুধু তাই নয়, সিদ্ধ করার আগে শাকসবজির খোসা ছাড়ালে তা থেকে ভিটামিন সি, ফলিক অ্যাসিড এবং অন্যান্য ভিটামিন আলাদা হয়ে যায়। গাজর, মুলা, লাউ এবং আদার সম্পূর্ণ খোসা ছাড়ার পরিবর্তে ওপরের আবরণ থেকে হাল্কাভাবে চেঁছে ফেলা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: হার্ট অ্যাটাক: করণীয় এবং প্রতিরোধে যে সকল পদক্ষেপ নিতে হবে
আর্দ্র-তাপে রান্না যেমন সিদ্ধ করা স্বাস্থ্যকর রান্নার পদ্ধতি
সিদ্ধ করা বা শুধু আর্দ্র-তাপে গরম করা সবজি প্রস্তুত করার সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর উপায় কারণ এতে তুলনামুলক কম তাপমাত্রা ব্যবহৃত হয়।
ডুবো তেলে ভাজা খাবার এড়িয়ে চলুন কারণ এটি খাবারের স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ বাড়ায়। এছাড়াও এটি ওজন বৃদ্ধি ও কোলেস্টেরল বৃদ্ধির প্রধান কারণ।
রান্নার সময়ে সাইট্রাস ব্যবহার
অভ্যন্তরীণ পুষ্টিগুণ অব্যাহত রেখে রান্নার মাধ্যমে সবজিকে খাবার জন্য উপযোগী নরম করা দরকার। এর জন্য সাইট্রাস ব্যবহার করে সবজির তন্তুযুক্ত টিস্যুকে নরম করা যায়। লেবুর রস বা চালের ভিনেগারের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে সাইট্রাস থাকে।
আরও পড়ুন: লাল চাল: কেন খাবেন এবং কারা এড়িয়ে চলবেন?
হিমায়িত সবজি রান্না করা
টাটকা সবজি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন হলেও গ্রাম থেকে শহরে আসতে অথবা দোকানে অনেক পড়ে থাকার দরুন পুষ্টিহীন হয়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে বাইরে থেকে সবজি ঘরে এনে ফ্রিজে রেখে দেয়া যায় যেটা এখন সবাই করে থাকেন। হিমায়িত শাকসবজিতে থাকে ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস, ভিটামিন এবং খনিজ-এর মত গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি। হিমায়িত সবজি রান্নার ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকতে হবে।
চুলার উপর পাত্রে মাত্র দুই বা তিন ইঞ্চি পানি রেখে তা ফুটিয়ে নিতে হবে। তারপর ফুটন্ত পানির ঠিক উপরে একটি চালনি রাখতে হবে। প্রয়োজনে পাত্র থেকে কিছু পানি ঝরিয়ে নেয়া যেতে পারে।
চালনী বসানোর পর তাতে হিমায়িত সবজি দিয়ে পুরো পাত্রটি একটি ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। পুরো রান্না শেষ হওয়ার সময়টি নির্ভর করে কি ধরনের সবজি রান্না হচ্ছে তার উপর। তাই যাতে পুড়ে না যায় সেজন্য সতর্ক খেয়াল রাখতে হবে।
আরও পড়ুন: লবঙ্গের স্বাস্থ্যগত উপকারিতা ও ঝুঁকি
শেষাংশ
উপরোল্লিখিত পদ্ধতিগুলো শীতকালীন সবজি রান্নায় পুষ্টিগুণ বজায় রাখার পাশাপাশি খাবারের স্বাদও উন্নত করবে। শীতকাল শরীরচর্চার জন্যও অনেকের কাছে বেশ আরামপ্রদ একটা সময়। তাদের জন্যও এই পুষ্টি ধরে রাখা সবজি খাওয়ার উপায়গুলো বেশ উপযুক্ত হবে। সর্বপরি, সুস্থতাকে দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য খাবারের তথা রান্নার ক্ষেত্রে যত্নশীল হওয়া বাঞ্ছনীয়।
১৪৮১ দিন আগে
যশোরের বাঁধাকপি যাচ্ছে সিঙ্গাপুরে
যশোর সদরের বারীনগর পাইকারি সবজির মোকামে এখন প্রতিটি বাঁধাকপি পাঁচ থেকে সাত টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শীতকালীন সবজির মৌসুম শেষ দিকে হওয়ায় বাঁধাকপির দাম কমে যাচ্ছে।
১৭৯১ দিন আগে
বেড়িবাঁধে ফাটল: খুলনায় ১০ হাজার বিঘা জমির ফসল নষ্টের আশঙ্কা
খুলনার দাকোপ উপজেলার ঢাকী ও শিবসা নদীর বেড়িবাঁধে ফাটল দেখা দেয়ায় ১০ হাজার বিঘা জমির আমন ও শীতকালীন সবজি বিনষ্টের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
১৮৩৮ দিন আগে
বেগুন খেলে কমে ওজন, ঝলমল করে ত্বক
বেগুন এখন সারা বছর পাওয়া গেলেও বেগুনকে শীতকালীন সবজি বলা হয়। আমাদের দেশে বিভিন্ন জাতের বেগুন পাওয়া যায়। বেগুন ভাজা, বেগুনের ভর্তা, বেগুন পোড়া তো আছেই।
১৮৪৯ দিন আগে
বগুড়ায় আগাম সবজি চাষে ব্যস্ত চাষিরা
ধুনট উপজেলায় আগাম শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। রবি মৌসুমের সবজি চাষাবাদের জন্য এখন চলছে বীজতলায় চারা তৈরি, পরিচর্যা, জমি প্রস্তুত ও চারা রোপন।
১৯১০ দিন আগে