সার
বর্জ্য থেকে সার উৎপাদনে কর্মসূচি গ্রহণ করছে সরকার: পরিবেশমন্ত্রী
দেশের বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তরিত করতে এটি থেকে সার উৎপাদনের কর্মসূচি হাতে নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘দেশের বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তরিত করতে কাজ করছে সরকার। বর্জ্য থেকে সার উৎপাদনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হচ্ছে। এগুলো সংগ্রহ করে সরকারি ও বেসরকারিভাবে সার উৎপাদনের কাজ শুরু হবে।’
বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) সচিবালয়ে ইউএসএআইডি ও ঢাকা কলিংয়ের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে পরিবেশমন্ত্রীর বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন পরিবেশমন্ত্রী।
তিনি জানান, ২০২৫ সাল নাগাদ দেশে বিভিন্ন খাতে প্রতিদিন প্রায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য উৎপাদন হবে। ভবিষ্যতে শুধু শহর নয়, সব এলাকার বর্জ্যেরই ব্যবস্থাপনা করতে হবে। এগুলো সংগ্রহ করে সরকারি ও বেসরকারিভাবে সার উৎপাদনের কাজ শুরু হবে।
আরও পড়ুন: বনশ্রীতে বিধি লঙ্ঘন করে বাড়ি নির্মাণ করায় ১১ লাখ টাকা জরিমানা
তিনি আরও বলেন, ‘বর্জ্য থেকে মানসম্পন্ন সার পাওয়া গেলে আমরা আমদানি কেন করব? বর্জ্য থেকে সার উৎপাদন শুরু হলে সার আমদানি কমে যাবে। এতে আমাদের অনেক বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে।’
মন্ত্রী বলেন, পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের ১০০ কর্মদিবসের কর্মসূচির মধ্যে ন্যাশনাল ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক প্রণয়নের বিষয়টি অগ্রাধিকার পর্যায়ে আছে।
‘বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পুরো ইকোসিস্টেমের দিকে আমরা তাকাচ্ছি। কীভাবে সেটার উন্নয়ন ও কার্যকর করা যায় তা ভাবা হচ্ছে। আপাতত কঠিন বর্জ্য বা সলিড ওয়েস্ট নিয়ে কাজ হবে। পর্যায়ক্রমে মনুষ্য বর্জ্য, ট্যানারি বর্জ্য, ই-বর্জ্য, মেডিকেল বর্জ্য নিয়েও কাজ হবে। সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিককেও পুনর্ব্যবহারে উদ্যোগ নেওয়া হবে। ভবিষ্যতের প্রয়োজন বিবেচনায় এখন থেকেই জায়গা চিহ্নিত করে জমি অধিগ্রহণ করে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হবে।’
সাভারের ট্যানারির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, ‘সেখানকার বর্জ্য থেকে যে ক্রোমিয়াম পাওয়া যাচ্ছে তা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ঝুঁকির। শিল্প মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টির সুরাহা করতে চায় পরিবেশ মন্ত্রণালয়।’
আরও পড়ুন: সবুজ ভবিষ্যৎ নির্মাণে একসঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ ও নর্ডিক দেশগুলো: পরিবেশমন্ত্রী
এলএনজি, সার, মসুর ডাল ও ভোজ্যতেল কিনবে সরকার
অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি), সার, মসুর ডাল ও ভোজ্যতেল কিনবে সরকার।
মঙ্গলবার সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির (সিসিজিপি) প্রথম বৈঠকে বেশ কয়েকটি পাইকারি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।
নতুন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ভার্চুয়াল সভায় সভাপতিত্ব করেন।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রস্তাব অনুযায়ী, সুইজারল্যান্ডের টোটাল এনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড থেকে ৪৭০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজির এলএনজি কার্গো আমদানি করবে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পেট্রোবাংলা।
কমিটি সার আমদানির জন্য আটটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে।
আরও পড়ুন: পাঠ্যবইয়ে ‘শরীফার গল্প’ নিয়ে বিভ্রান্তি থাকলে সংশোধন হবে
এর মধ্যে চারটি কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) চারটি বিদেশি কোম্পানির কাছ থেকে মোট ১ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন বিভিন্ন ধরনের সার আমদানি করবে।
বিএডিসি সৌদি আরবের মা’দেন থেকে ২৫৯ কোটি ১৬ লাখ টাকায় প্রতি টন ৫৮৯ ডলারে ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার, মরক্কোর ওসিপি, এসএ থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার ১১২ কোটি ৩৮ লাখ টাকায় প্রতি টন ৩৮৬ ডলার মূল্যে, মরক্কোর একই কোম্পানি থেকে ২৪০ কোটি ৯০ লাখ টাকায় আরও ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার প্রতি টন ৫৪৭ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলারে এবং রাশিয়ার জেএসসি ফরেন ইকোনমিক করপোরেশন প্রোডিনটর্গ থেকে ৩০ হাজার এমওপি সার প্রতি টন ৩০২ ডলার দরে ৯৯ কোটি ৬৯ লাখ টাকায় আমদানি করবে।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের পৃথক চারটি প্রস্তাব অনুযায়ী, বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) মোট ১ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার আমদানি করবে।
এর মধ্যে কাতারের মুনতাজাত থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন দানাদার ইউরিয়া ১০৩ কোটি ৪২ লাখ টাকায় এবং প্রতি মেট্রিক টন ৩১৩ দশমিক ৪২ মার্কিন ডলারে ইউরিয়া আমদানি করা হবে। কাফকো থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগযুক্ত দানাদার ইউরিয়া ১০৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকায় প্রতি মেট্রিক টন ৩১৬ দশমিক ৬২ ডলারে আমদানি করা হবে। সৌদি আরবের সাবিক এগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ১০৩ কোটি ৪২ লাখ টাকায় ৩০ হাজার বাল্ক গ্রানুলার ইউরিয়া প্রতি মেট্রিক টন ৩১৩ দশমিক ৪২ ডলার এবং একই সৌদি কোম্পানি থেকে ১০২ কোটি ৪২ লাখ ডলার দরে আরও ৩০ হাজার মেট্রিক টন দানাদার ইউরিয়া আমদানি করা হবে।
কমিটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তাৎক্ষণিক উত্থাপিত তিনটি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদন করেছে।
প্রস্তাব অনুযায়ী, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ভারতের উমা এক্সপো প্রাইভেট লিমিটেড থেকে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ১০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল সংগ্রহ করবে। প্রতি কেজি ১০১ টাকা ১৩ পয়সায় ৯৬ কোটি ১৪ লাখ টাকায়এসব ডাল কেনা হবে। এ ছাড়া আরও ১০ হাজার মেট্রিক টন বগুড়ার রায় এগ্রো ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড ও ঢাকার নাবিল নাবা ফুডস লিমিটেড থেকে প্রতি কেজি ১০৫ দশমিক ৪৫ টাকা দরে ১০৫ দশমিক ৪৫ কোটি টাকায় কেনা হবে। মজুমদার প্রোডাক্টস লিমিটেড থেকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) ১ কোটি ২০ লাখ লিটার রাইস ব্র্যান অয়েল; (২) মজুমদার ব্র্যান অয়েল মিলস লিমিটেড ও আলী ন্যাচারাল অয়েল মিলস অ্যান্ড এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ১৮৯ কোটি ৬০ লাখ টাকায় প্রতি লিটার মূল্য ১৫৮ টাকা দরে কেনা হবে।
টিসিবি খোলাবাজারে বিক্রয়ের মাধ্যমে ১ কোটি কার্ডধারী পরিবারের মধ্যে পণ্য বিক্রি করবে।
আরও পড়ুন: ঈশা খাঁ'র জঙ্গলবাড়ি দুর্গ ভ্রমণ গাইড, আনুষঙ্গিক খরচ
১ লাখ ১৫ হাজার টন সার আমদানি করা হবে
এক লাখ ১৫ হাজার টন সার আমদানিসহ বেশ কয়েকটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি (সিসিজিপি)।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল সভায় এ অনুমোদন জানানো হয়।
আরও পড়ুন: আজ মুস্তফা কামালের প্রথম বাজেট
শিল্প মন্ত্রণালয়ের দেওয়া প্রস্তাব অনুযায়ী, এর অধীনস্থ সংস্থা বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) ৬০ হাজার টন সার কিনবে।
অন্যদিকে, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় সৌদি আরবভিত্তিক এসএবিআইসি এগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ৩ লাখ টন বাল্ক গ্রানুলার ইউরিয়া সার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক ফার্টিগ্লোব ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড থেকে আরও ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্রানুলার ইউরিয়া আমদানি করা হবে।
কৃষিমন্ত্রীর প্রস্তাব অনুযায়ী, এর অধীনস্থ সংস্থা বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) তিউনিসিয়ার জিসিটি থেকে ২৫ হাজার টন এবং রাশিয়ার জেএসসি ফরেন ইকোনমিক কর্পোরেশন (প্রোডিন্টর্গ) থেকে ৩০ হাজার টন এমওপি সার আমদানি করবে।
আরও পড়ুন: জাতীয় বাজেট উপস্থাপন ৯ জুন: মুস্তফা কামাল
বৈদেশিক ঋণ প্রাপ্তিতে নিরাপদ অবস্থানে বাংলাদেশ: অর্থমন্ত্রী
ভোজ্যতেল, মসুর ডাল ও সার কেনার প্রস্তাবে মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন
ভোজ্যতেল, মসুর ডাল ও সার সংগ্রহসহ বেশ কয়েকটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি (সিসিজিপি)।
বুধবার(২০ সেপ্টেম্বর) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়।
অনুমোদিত প্রস্তাব অনুযায়ী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রাষ্ট্রীয় বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) স্থানীয় উন্মুক্ত টেন্ডার পদ্ধতির মাধ্যমে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জন্য ১২৮ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে সিটি এডিবল অয়েল লিমিটেড থেকে ৮০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কিনবে। এতে প্রতি লিটার তেলের দাম পড়বে ১৬০ দশমিক ৩০ টাকা।
টিসিবি দুটি পৃথক লটে দুটি স্থানীয় কোম্পানির কাছ থেকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতির (ডিপিএম) মাধ্যমে ১০৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬৫ লাখ লিটার রাইস ব্র্যান অয়েল কিনবে। এতে প্রতি লিটারের দাম পড়বে ১৫৯ টাকা। আর এই তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান দু’টি হলো- মজুমদার প্রোডাক্টস লিমিটেড এবং এমআরটি এগ্রো প্রোডাক্টস লিমিটেড।
আরও পড়ুন: বিইআরসি ছাড়াই জ্বালানির মূল্য নির্ধারণ করবে সরকার, মন্ত্রিসভায় সংশোধনী অনুমোদন
বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড ও ফুডকো এগ্রো সিটি লিমিটেডের কাছ থেকে ৬৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে টিসিবি সরাসরি ৬ হাজার টন (এমটি) মসুর ডাল কিনবে। এতে প্রতি কিলোগ্রাম (কেজি) দাম পড়বে ১১১ টাকা।
এ ছাড়া টিসিবি দরপত্র ছাড়াই আরও ২১ হাজার টন মসুর ডাল সরাসরি নাবিল নাবা ফুড, বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, ফুডকো এগ্রো সিটি এবং জেআই ট্রেডার্সের কাছ থেকে ২৬০ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে কিনবে। যার প্রতি কেটির মূল্য পড়বে ৯৯ টাকা।
বৈঠকে সার আমদানির চারটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা।
আরও পড়ুন: এলএনজি, সার ও মসুর ডাল আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন মন্ত্রিসভায়
এর মধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) ১২০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সৌদি আরবের সাবিক এগ্রি-নিউট্রিয়েন্ট কোম্পানি থেকে ৩০ হাজার টন বাল্ক দানাদার ইউরিয়া সার আমদানি করবে। এতে প্রতি টনে খরচ হবে ৩৬৫ মার্কিন ডলার।
কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) থেকে ১১৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩০ হাজার টন ব্যাগযুক্ত দানাদার ইউরিয়া সার কিনবে বিসিআইসি। প্রতি টনে খরচ হবে ৩৬০ দশমিক ১২৫ মার্কিন ডলার।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ১৩০ কোটি ২ লাখ ব্যয়ে মরক্কো থেকে ৩০ হাজার টন টিএসপি, ওসিপি, এস.এ আমদানি করবে। এতে প্রতি টনে খরচ হবে ৩৯৪ মার্কিন ডলার।
কানাডিয়ান কমার্শিয়াল করপোরেশন (সিসিসি) থেকে ১৮০ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের চুক্তির অধীনে ৫০ হাজার টন মিউরিয়েট-অব-পটাশ (এমওপি) সার কিনবে বিএডিসি। প্রতি টনে খরচ হবে ৩২৭ দশমিক ৭৫ মার্কিন ডলার।
এটি একই সিসিসি থেকে ১৮০ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে আরও ৫০ হাজার টন মিউরিয়েট-অব-পটাশ (এমওপি) সার আমদানি করবে। প্রতি টনে খরচ হবে ৩২৭ দশমিক ৭৫ মার্কিন ডলার।আরও পড়ুন: এলএনজি, রাইস ব্রান অয়েল ও সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি
রাশিয়া থেকে এলএনজি, গম, সার সরবরাহের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা চলছে: ল্যাভরভ
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন,বাংলাদেশে এলএনজি সরবরাহের সম্ভাবনা নিয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো আলোচনা করছে।
তিনি বলেন, ‘তারা গম এবং সার সরবরাহের সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা করছে।’
বৃহস্পতিবার রাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠকের পর ল্যাভরভ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এই সত্যটির প্রশংসা করি যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা বাংলাদেশের উপর চাপ প্রয়োগ করা সত্ত্বেও আমাদের বাংলাদেশি বন্ধুরা তাদের জাতীয় স্বার্থে একচেটিয়াভাবে পরিচালিত হচ্ছে।’
এক ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকের পর আরও এক ঘণ্টার নৈশভোজে দুই পক্ষ রোহিঙ্গা ও ইউক্রেন সংকটসহ সব দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘রাশিয়া বাংলাদেশকে খাদ্যশস্য, জ্বালানি সরবরাহ অব্যাহত রাখবে। বাংলাদেশি রপ্তানি শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারের জন্য আমরা একটি রোড ম্যাপেও সম্মত হয়েছি।’
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা কাজের পদ্ধতি পরিবর্তনের বিষয়টি বিবেচনা করবেন। যেমন প্রতি বছর বাণিজ্য নিয়ে আলোচনার পরিবর্তে দুই দেশ এটিকে পরিচালনার একটি স্থায়ী উপায়ে পরিণত করবে।
ল্যাভরভ রোহিঙ্গা সংকটের কথা বলেন এবং বলেন যে তারা মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের চলমান কথোপকথনকে সমর্থন করে।
তিনি বলেন, তারা সমাধানের জন্য বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে অব্যাহত আলোচনাকে সমর্থন করে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে তিনটি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ল্যাভরভ বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি যে বাইরের নেতাদের কেবল পারস্পরিকভাবে গ্রহণযোগ্য সমাধানের জন্য অনুকূল পরিস্থিতি তৈরিতে নিজেদের সীমাবদ্ধ করা উচিত। রাশিয়ান ফেডারেশন মিয়ানমারের সঙ্গে তার প্রেক্ষাপটে ঠিক এটিই করছে এবং তা চালিয়ে যাবে।’
তবে, রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, কোনো একটি পক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে বাইরের কিছু নেতা এই বিষয়গুলো ব্যবহার করে এবং দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে।
ল্যাভরফ আরও বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে এটি উভয়ই বিপরীতমুখী এবং অগ্রহণযোগ্য।’
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক বাড়াতে ও জোরদার করতে সম্মত হয়েছেন।
বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ায় একটি ভালো ও দীর্ঘস্থায়ী অংশীদার উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগ জোরদার করছে।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প- রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিষয়েও কথা বলেন এবং এর ধারাবাহিকভাবে বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফরে আসায় আমরা খুবই আনন্দিত। রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
তিনি বলেন, তারা রোহিঙ্গা ইস্যু, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং রাশিয়ায় বৃহত্তর বাজারে প্রবেশাধিকার নিয়ে আলোচনা করেছেন।
মোমেন বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ চাই না। আমরা চাই আলোচনা ও আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান হোক।’
বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের প্রক্রিয়াকালীন রাশিয়া যে ভূমিকা পালন করেছিল তা উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন। যেমন- ১৯৭১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন কর্তৃক জনপ্রিয় সংগ্রামে সহায়তা এবং নবগঠিত রাষ্ট্রকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা করেছিল।
রাশিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারপর থেকে আমাদের সম্পর্ক ধারাবাহিকভাবে সমতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং একে অপরের স্বার্থ বিবেচনার নীতির উপর ভিত্তি করে।’
ল্যাভরভ বলেন, ‘আমি ইতিবাচক যে আমাদের আলোচনা এই প্রবণতাকে পুনঃনিশ্চিত করবে এবং এটিকে আরও শক্তিশালী করবে।’
তিনি বলেছিলেন যে তারা এই অঞ্চলে তাদের অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করবে যাতে স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠার কোনও প্রচেষ্টা রোধ করা যায়।
প্রবণতা এবং বিনিয়োগ
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দ্বিপাক্ষীয় বাণিজ্য ধারাবাহিকভাবে দুই বিলিয়ন ছাড়িয়েছে। প্রধান রাশিয়ান রপ্তানির মধ্যে রয়েছে শিল্প সরঞ্জাম, ধাতু, খনিজ সার এবং গম।
রাশিয়ায় প্রাথমিক আমদানি মূলত পোশাক এবং সামুদ্রিক খাবার। ২০২২ সালে প্রতিকূল আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির কারণে আমাদের বাণিজ্য ২১ দশমিক ৪ শতাংশ কমে ২ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন হয়েছে।
এই নেতিবাচক প্রবণতা কাটিয়ে ওঠার ব্যবস্থা নিয়ে আন্তঃসরকারি রাশিয়ান-বাংলাদেশ কমিশন অন ট্রেড, ইকোনমিক এবং সায়েন্টিফিক-টেকনিক্যাল কোঅপারেশন নিয়ে আলোচনা করবে।
কমিশনের প্রথম সভা মস্কোতে ২০১৮ সালের ২৪ অক্টোবর, দ্বিতীয়টি ঢাকায় ২০১৯ সালের ১৪ নভেম্বর এবং তৃতীয় ও চতুর্থটি যথাক্রমে ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর এবং ২০২৩ সালের ১৫ মার্চ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র রূপপুর নির্মাণ দ্বিপক্ষীয় অংশীদারিত্বের প্রধান প্রকল্প।
আরও পড়ুন: ঢাকা-মস্কো দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরদার করতে আগ্রহী
রাশিয়ান পক্ষ বলেছে, ২০২৪-২০২৫ সালে এর কমিশনিং বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে একটি যুগান্তকারী হিসাবে আসবে।
একই সময়ে, এর নির্মাণে রাশিয়ার সম্পৃক্ততা রাশিয়ার ১০০ টিরও বেশি শিল্প কোম্পানির জন্য দীর্ঘমেয়াদী কাজ নিশ্চিত করে।
বাংলাদেশে প্রথাগত জ্বালানিতে রাশিয়ার দক্ষতার খুব বেশি চাহিদা রয়েছে।
গ্যাজপ্রম ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড নামে একটি গ্যাজপ্রম সাবসিডিয়ারি সে দেশে সফলভাবে কাজ করছে।
২০১২ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত এটি টার্নকি ভিত্তিতে বাংলাদেশে ২০টি গ্যাসক্ষেত্র কূপ খনন ও সম্পন্ন করেছে।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী দু’দিনের সফরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকায় এসেছেন যা পরিবর্তিত বৈশ্বিক পরিস্থিতির মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
স্বাধীনতার পর রাশিয়ার কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এটাই প্রথম বাংলাদেশ সফর।
শুক্রবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এদিন যাত্রার আগে তিনি ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করবেন।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর শেষ করে ৯ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনে যোগ দেবেন।
গত বছলের২৪ নভেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত ২২তম আইওআরএ মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে যোগদানের জন্য ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশ সফরের কথা ছিল ল্যাভরভের। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সেই সফর স্থগিত করা হয়।
আরও পড়ুন: ঢাকা-মস্কো দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরদার করতে আগ্রহী
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে বাংলাদেশে সারের দাম ১০৫ শতাংশ বেড়েছে: সমীক্ষা
আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থা একশনএইড এর পরিচালিত একটি নতুন সমীক্ষা অনুসারে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের ফলে বিশ্বের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে খাদ্য, জ্বালানি এবং সারের দাম অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এর ফলে খাদ্য ও জ্বালানি সংকট দেয়া দিয়েছে।
সমীক্ষায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে জীবনযাত্রার ব্যয় অনেকগুলো প্যারামিটারে বেড়েছে, যা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে সারের দাম বেড়েছে ১০৫ শতাংশ, চিনির দাম ৬০ শতাংশ, পেট্রোলের দাম ৪৭ শতাংশ এবং স্যানিটারি প্যাডের দাম ২৩ শতাংশ।
ফলস্বরূপ, দেশের জনগণ একাধিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। বিশেষ করে নারী, মেয়ে ও শিশুরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে তাদের শিক্ষা, পুষ্টি এবং স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ে আপোস করতে হচ্ছে।
এশিয়া, আফ্রিকা এবং ক্যারিবিয়ান জুড়ে মোট ১৪ টি দেশে এক হাজারের বেশি মানুষের ওপর পরিচালিত এই সমীক্ষায় দেখা গেছে যে নিরীক্ষণের সময় সারের দাম ১১৫ শতাংশ এর বেশি বেড়েছে, পেট্রোল ও স্যানিটারি প্যাডের দাম ৮০ শতাংশ বা তার বেশি বেড়েছে।
একই সঙ্গে বাল্যবিবাহের হার বৃদ্ধি, নারী স্বাস্থ্যের অবনতি এবং মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটেছে।
একশনএইড-এর গ্লোবাল পলিসি অ্যানালিস্ট আলবার্টা গুয়েরা বলেন, ‘এই সমীক্ষা থেকে দেখায় যে ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে, বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে প্রান্তিক মানুষরা আকাশ ছোঁয়া খাদ্য, জ্বালানি ও সারের দামের কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। বিশেষ করে নারী ও কন্যাশিশুরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তারা এই সময়ে নানান সংকট দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে যা তাদের খাদ্যগ্রহণ, শিক্ষা, বাল্যবিবাহ থেকে মুক্ত থাকার অধিকার এবং তাদের মানসিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতাকে প্রভাবিত করেছে।’
আরও পড়ুন: রাশিয়া থেকে ১.৮০ লাখ টন সার আমদানির চুক্তি সই
বাংলাদেশসহ ১৪ টি দেশের মধ্যে ১০ টি দেশে মেয়ে ও ছেলে উভয়ের ক্ষেত্রে বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়ার হার বেড়েছে। মূল্যবৃদ্ধির ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক চাপও বাল্যবিবাহের হার বাড়িয়ে দিয়েছে।
এবিষয়ে বাংলাদেশের সুনামগঞ্জ জেলার একজন বলেন, ‘বেঁচে থাকার জন্য খাদ্যের নিরাপত্তার চেয়ে শিক্ষা অনেক কম গুরুত্বপূর্ণ। ছেলেদেরকে বাংলাদেশে পাথর কোয়ারিতে বা যাদুকাটা নদীতে প্রতিদিন ৩০০ টাকায় বালু উত্তোলনের কাজ করতে হয়। এ কারণে তারা স্কুলে যেতে পারে না।’
সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয় যে বাংলাদেশ জলবায়ু বিপর্যয়, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, কোভিড-১৯, ঋণের চাপ এবং মুদ্রার অবমূল্যায়ন থেকে শুরু করে একাধিক সংকটে রয়েছে। এই কারণগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল জলবায়ু বিপর্যয়, কোভিড-১৯ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ।
একশনএইড বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, ‘জ্বালানির দামের অস্থিরতা সব ক্ষেত্রেই সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলেছে। বিশেষ করে খাদ্যের ওপর, যা নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে বেশি মাত্রায় প্রভাবিত করে। আমাদের জাতীয় প্রতিবেদন (বাংলাদেশ ব্যাংক) নির্দেশ করে যে আমাদের মূল্যস্ফীতি ৯.৫ শতাংশ। যদি আমরা বাস্তব দৃষ্টিতে দেখি, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে এখন চাল ও ডিমের মতো প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রীর জন্য আগের দামের প্রায় দ্বিগুণ মূল্য দিতে হচ্ছে।
যার ফলে খাদ্যগ্রহণে মারাত্মক হ্রাস ঘটেছে, যা মানুষের পুষ্টির ভারসাম্যকে প্রভাবিত করেছে। অন্যদিকে, আমাদের এনার্জি খাত অত্যন্ত জ্বালানি-নির্ভর এবং তাই জ্বালানির অতিরিক্ত দাম আমাদের বৈদেশিক রিজার্ভ এবং জাতীয় ব্যয়ের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে’।
আরও পড়ুন: সারের দাম কেজিতে ৫ টাকা বাড়ল
তিনি বলেন, ‘একশনএইড একটি সমন্বিত ব্যবস্থা এবং পর্যাপ্ত তহবিলের পক্ষে জোর দাবি জানাচ্ছে যা জলবায়ু পরিবর্তন, ঋণের চাপ এবং ইউক্রেনে রাশিয়ান আগ্রাসনের গভীর প্রতিক্রিয়াসহ মূল্য সংকটকে বাড়িয়ে তোলা সমস্ত আন্তঃসংযুক্ত সংকট মোকাবিলা করতে সক্ষম’।
ফারাহ্ কবির আরও বলেন, ‘পরিবর্তিত বাস্তবতা এবং মানুষের বর্তমান চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য করার জন্য সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থাগুলোকে জরুরিভাবে সামঞ্জস্য করা দরকার। শিশুসহ পরিবারগুলোকে তাদের শিক্ষা চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করতে হবে। চাষাবাদে অধিক বিনিয়োগের মাধ্যমে খাদ্য আমদানির ওপর নির্ভরশীলতা কাটিয়ে উঠতে হবে। নবায়নযোগ্য শক্তি এবং জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় এগ্রোইকোলোজিক্যাল চাষ পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনয়ন এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি প্রয়োজন’।
১৪ টি দেশের মোট ১০১০ জন মানুষের মধ্যে ১লা মার্চ থেকে ২৩শে এপ্রিলের মধ্যে এই সমীক্ষা পরিচালিত হয়। উত্তরদাতাদের ৬৩ শতাংশ ছিলেন নারী। অংশগ্রহণকারীদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে সমীক্ষার দিনে গমের পণ্য, রান্নার তেল, পেট্রোল, রান্নার জন্য গ্যাস, সার ও স্যানিটারি প্যাডের দাম কত ছিল এবং এই পণ্যগুলো মূল্য ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের আগের মূল্যের সাথে তুলনা করা হয়েছিল (যখন রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করেছিল)।
অংশগ্রহণকারীদের তাদের জীবন জীবিকার ওপর এই মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব সম্পর্কেও প্রশ্ন করা হয়েছিল এবং সম্ভাব্য উত্তরগুলোর একটি সিরিজ থেকে কমপক্ষে একটি প্রতিক্রিয়া নির্বাচন করতে উৎসাহিত করা হয়।
জরিপে অংশ নেওয়া ১৪টি দেশ হলো- আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র (ডিআরসি), ইথিওপিয়া, হাইতি, কেনিয়া, মালাউই, মিয়ানমার, নেপাল, নাইজেরিয়া, সিয়েরা লিওন, সোমালিল্যান্ড, জাম্বিয়া ও জিম্বাবুয়ে।
আরও পড়ুন: আগামী বছরগুলোতে দেশে সারের দাম বাড়বে না: কৃষিমন্ত্রী
এলএনজি, রাইস ব্রান অয়েল ও সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি
সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির (সিসিজিপি) বৈঠকে আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেট থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) দুটি কার্গো, ৫০ হাজার মেট্রিক টন রাইস ব্রান অয়েল এবং ৯৫ হাজার মেট্রিক টন সার আমদানিসহ মোট ৩৪টি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে।
বৃহস্পতিবার সিসিজিপি’র ভার্চুয়াল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
সিসিজিপি-এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পেট্রোবাংলা সিঙ্গাপুরের গানভোর সিঙ্গাপুর পিটিই লিমিটেড থেকে দুই কার্গো এলএনজি আমদানি করবে, যার প্রতিটির পরিমাণ ৩৩ দশমিক ৬০ লাখ এমএমবিটিইউ।
প্রথম এলএনজি কার্গোর প্রতি এমএমবিটিইউ মূল্য ১২ দশমিক ৯৮ ডলার, যার মোট মূল্য ৫৫৭ দশমিক ৭৩ কোটি টাকা এবং দ্বিতীয় এলএনজি কার্গোর প্রতি এমএমবিটিইউ ১৩ দশমিক ৮৫ ডলার, যার মোট মূল্য ৫৯৫ দশমিক ১০ কোটি টাকা।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) কোনো টেন্ডার ছাড়াই সরাসরি ক্রয় পদ্ধতির মাধ্যমে ৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থানীয় একটি কোম্পানির দুটি আউটলেট থেকে মোট ৫০ মিলিয়ন লিটার রাইস ব্র্যান অয়েল আমদানি করবে।
এর মধ্যে ২ দশমিক ৫ মিলিয়ন লিটার মজুমদার ব্র্যান অয়েল মিলস লিমিটেড, যশোর থেকে কেনা হবে এবং বাকি ২ দশমিক ৫ মিলিয়ন লিটার মজুমদার প্রোডাক্টস লিমিটেড, ঢাকা থেকে কেনা হবে।
বাংলাদেশ এগ্রিকালচার ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন (বিএডিসি) রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের চুক্তির অধীনে তিউনিসিয়ার জিসিটি থেকে ৯১ দশমিক ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫ হাজার মেট্রিক টন (এমটি) টিএসপি সার আমদানি করবে এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির অধীনে ১১০ দশমিক ৯৬ কোটি টাকা ব্যয়ে মরক্কোর ওসিপি, এস.এ থেকে ৩০ হাজার মেট্রিকটন টিএসপি সার আমদানি করা হবে।
বিএডিসি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের চুক্তির অধীনে ২০৬ দশমিক ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মরক্কোর ওসিপি, এস.এ থেকে ৪০ হাজার মেট্রিকটন ডিএপি সার আমদানি করবে।
দুর্নীতিবাজদের সহ্য করা হবে না: হাইকোর্ট
৫৮২ কোটি টাকার সার আত্মসাতের বিষয়ে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘কারা এ কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত, কারা এই সার আত্মসাৎ করেছে- সুনির্দিষ্ট করে তাদের নাম দিন। দুর্নীতিবাজদের সহ্য করা হবে না।
আদালত আরও বলেন, ‘দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান কঠোর। এক্ষেত্রে কোনো ধরনের নমনীয়তা দেখানো হবে না। কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে কোর্ট থেকে ধরে সরাসরি জেলে পাঠিয়ে দেব।’
বিসিআইসির পক্ষে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়ে শুনানিকালে বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন। আদালত পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৯ জুলাই দিন নির্ধারণ করেন।
আদালতে বিসিআইসি’র পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোল্লা কিসমত হাবিব। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান।
গত ৪ জানুয়ারি ৫৮২ কোটি টাকার সার আত্মসাতের বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরের দিন প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
আরও পড়ুন: থ্যালাসেমিয়া রোগের বিস্তার বন্ধে হাইকোর্টে রিট
প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারিভাবে আমদানি করা ৭২ হাজার টন রাসায়নিক সার বন্দর থেকে খালাসের পর গুদামে পৌঁছে না দিয়ে আত্মসাৎ করেছে পরিবহনের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স পোটন ট্রেডার্স। এতে সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ৫৮২ কোটি টাকা। মেসার্স পোটন ট্রেডার্স সাবেক সংসদ সদস্য কামরুল আশরাফ খানের (পোটন) মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান।
কামরুল আশরাফ খান সার ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএ) সভাপতি।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দাবি, তিনিই মূলত দেশে সারের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন। পোটন ট্রেডার্স যে সার আত্মসাৎ করেছে, তা উঠে এসেছে সারের আমদানিকারক শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি প্রতিষ্ঠান রসায়ন শিল্প সংস্থার (বিসিআইসি) দুটি তদন্তে। সারগুলো খালাস হয়েছিল ২০২১ সালের নভেম্বর থেকে ২০২২ সালের ১৫ মের মধ্যে। সার সরবরাহ না করার পর সাত মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি বিসিআইসি। সর্বশেষ গত ২০ ডিসেম্বর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে বিসিআইসির পক্ষ থেকে শিল্প মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়।
হাইকোর্ট প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত অভিযোগ অনুসন্ধান করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) চার মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: বাফুফে’র দুর্নীতি, অর্থ পাচারের বিষয়ে রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোনো মতামত প্রকাশ নয়: হাইকোর্ট
পাশাপাশি ওই অভিযোগ অনুসন্ধান করে শিল্পসচিব ও বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) চেয়ারম্যানকে চার মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল বিষয়টি শুনানির জন্য ওঠে।
আদালতে বিসিআইসির পক্ষে আইনজীবী মোল্লা কিসমত হাবিব, দুদকের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান এবং রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ শুনানিতে ছিলেন।
শুনানিতে বিসিআইসির আইনজীবী মোল্লা কিসমত হাবিব বলেন, প্রতিবেদন এসেছে, তবে হলফনামা করতে পারেনি।
আদালতের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে অভিযোগ উঠেছে, তা প্রতিবেদনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। বিসিআইসির আইনজীবীর উদ্দেশে আদালত বলেন, ওই ঘটনায় কারা জড়িত? নাম–ঠিকানা পাওয়া যায়নি? মানুষ আত্মসাৎ করেনি? তাহলে বাতাস খেয়ে ফেলেছে? তদন্ত প্রতিবেদনে নাম উল্লেখ না থাকলে এর কী দাম আছে? এ সময় বিসিআইসির আইনজীবী বলেন, আত্মসাৎ হয়েছে। আদালত বলেন, সুনির্দিষ্ট করে বলেন। তখন বিসিআইসির আইনজীবী বলেন, মেসার্স পোটন ট্রেডার্সের পোটন নিজে জড়িত। আদালত বলেন, কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না, সে যে–ই হোক।
শুনানিতে অগ্রগতি জানাতে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান এক দিনের সময়ের আরজি জানান। এই পর্যায়ে আদালত আগামী রোববার শুনানির দিন রাখার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। তখন বিসিআইসির আইনজীবী মোল্লা কিসমত হাবিব বলেন, অনুসন্ধান প্রতিবেদনটি অনেক পৃষ্ঠার, হলফনামা করে আগামী রোববার দাখিল করা প্রায় অসম্ভব। অবকাশ শেষে দিন রাখার আরজি জানান তিনি। পরে আদালত আগামী ৯ জুলাই শুনানির পরবর্তী দিন রাখেন।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে টিপু-প্রীতি খুন: ২ আসামিকে জামিন দেননি হাইকোর্ট
সারের দাম কেজিতে ৫ টাকা বাড়ল
ইউরিয়া, টিএসপি, ডিএপি ও এমওপি সারের দাম প্রতি কেজিতে পাঁচ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
কৃষক পর্যায়ে প্রতি কেজি ইউরিয়ার বর্তমান দাম ২২ টাকার পরিবর্তে ২৭ টাকা, ডিএপি ১৬ টাকার পরিবর্তে ২১ টাকা, টিএসপি ২২ টাকার পরিবর্তে ২৭ টাকা এবং এমওপি ১৫ টাকার পরিবর্তে ২০ টাকা পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে।
একইভাবে, ডিলার পর্যায়েও প্রতি কেজি ইউরিয়ার বর্তমান দাম ২০ টাকার পরিবর্তে ২৫ টাকা, ডিএপি ১৪ টাকার পরিবর্তে ১৯ টাকা, টিএসপি ২০ টাকার পরিবর্তে ২৫ টাকা এবং এমওপি ১৩ টাকার পরিবর্তে ১৮ টাকা পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে।
সোমবার (১০ এপ্রিল) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের ১০ এপ্রিলের এক চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে কৃষি মন্ত্রণালয় সারের মূল্য বৃদ্ধির এই আদেশ জারি করেছে।
আরও পড়ুন: তাপপ্রবাহ থেকে ফসল রক্ষায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নির্দেশিকা
এতে বলা হয়েছে, চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় সারের আমদানি যৌক্তিক পর্যায়ে রাখা এবং সারের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সারের মূল্য পুনঃনির্ধারণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। পুনঃনির্ধারিত এ মূল্য সোমবার ১০ এপ্রিল হতে কার্যকর হয়েছে।
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি কেজি ইউরিয়া সারের বর্তমান দাম ৪৮ টাকা, ডিএপি ৭০ টাকা, টিএসপি ৫০ টাকা এবং এমওপি ৬০ টাকা। এর ফলে পাঁচ টাকা দাম বৃদ্ধির পরও সরকারকে প্রতি কেজি ইউরিয়াতে ২১ টাকা, ডিএপিতে ৪৯ টাকা, টিএসপিতে ২৩ টাকা এবং এমওপিতে ৪০ টাকা ভর্তুকি প্রদান করতে হবে।
প্রসঙ্গত, বিগত তিন বছর ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম প্রায় তিন থেকে চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে দেশে সারে প্রদত্ত সরকারের ভর্তুকিও বেড়েছে প্রায় চার গুণ।
২০২০-২১ অর্থবছরে যেখানে ভর্তুকিতে লেগেছিল সাত হাজার ৪২০ কোটি টাকা; সেখানে ২০২১-২২ অর্থবছরে লেগেছে ২৮ হাজার কোটি টাকা, আর চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রয়োজন হবে প্রায় ৪৬ হাজার কোটি টাকা।
সারে ২০০৮-০৯ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছরের এখন পর্যন্ত সর্বমোট এক লাখ ১৯ হাজার ৮৩৭ কোটি টাকা ভর্তুকি প্রদান করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: আগামী বছরগুলোতে দেশে সারের দাম বাড়বে না: কৃষিমন্ত্রী
আগামী বছরগুলোতে দেশে সারের দাম বাড়বে না: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, অতীতের মতো আগামী বছরগুলোতে দেশে সারের দাম বাড়বে না।
সোমবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সারবিষয়ক জাতীয় সমন্বয় ও পরামর্শক কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা জানান।
এসময় তিনি জানিয়েছেন, কৃষক যাতে পর্যাপ্ত সার পায়, সেজন্য আমরা চাহিদা নির্ধারণ করেছি। মার্চে ইউরিয়া সারের চাহিদা বেশি ছিল, তবুও আমরা একটু কমিয়ে চাহিদা নির্ধারণ করেছি।
এছাড়া, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ইউরিয়া সারের চাহিদা ২৭ লাখ টন। ডিএপি লাগে পাঁচ থেকে ছয় লাখ টন।
এটির দাম কমানোর জন্য চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ লাখ টন। টিএসপি সাড়ে সাত লাখ টন ও এমওপির চাহিদা ধরা হয়েছে ৯ লাখ টন।
আরও পড়ুন: জাপানে আম রপ্তানি শুরু হবে শিগগিরই: কৃষিমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, যে কোনো পরিস্থিতিতে খাদ্য উৎপাদন অব্যাহত রাখতে সার নিয়ে কোনো সংকট সৃষ্টি হতে দেব না। সার নিয়ে যাতে কৃষকদের ভোগান্তি পোহাতে না হয় তা দেখা হবে। কারণ সার নিয়ে কৃষকদের ভোগান্তি হলে আমাদের উৎপাদন কমে যাবে।
সারের মজুতের পরিমাণের বিষয়ে নিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, চার লাখ টন ইউরিয়া সার মজুত রয়েছে। এছাড়া টিএসপি সার রয়েছে দুই লাখ টন, ডিএপি সার আড়াই লাখ টন এবং এমওপি সার সোয়া দুই লাখ টন। গত বছরের তুলনায় সব সারের পরিমাণই কিছুটা কম রয়েছে।
করোনা মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে বিশ্ববাজারে সার পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা আগে প্রতি টন পটাশিয়াম সার ২৫০ ডলারে কিনতাম। সেই সার আমরা এক হাজার ২০০ ডলারেও কিনেছি। এখনও তা ৭০০ ডলার থেকে ৮০০ ডলারে কিনতে হয়। এছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম কমে আসছে। কিন্তু যেভাবে কমছে, তাতে আগের অবস্থায় সারের দাম যাচ্ছে না।
গ্যাস সরবরাহ অব্যাহত থাকলে খুবই কম পরিমাণ সার বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে মন্তব্য করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, শাহজালাল সার কারখানা হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) সক্ষমতা অনেক বেড়েছে।
আপনারা জানেন, গত দু-তিন বছরে ঠিকমতো গ্যাসের সরবরাহ হচ্ছে না। যার কারণে মাঝে মাঝে সার কারখানাগুলো বন্ধ রাখতে হয়।
তিনি বলেন, একটি সার কারখানা বন্ধ করে আবার নতুন করে চালু করতে গেলে যে প্রেসার উৎপাদন করতে হয়, তাতে পাঁচ থেকে সাত কোটি টাকা খরচ হয়ে যায়। বেশিদিন বন্ধ থাকলে কারখানা অচল হয়ে যায়।
এই পরিস্থিতি মাথায় রেখে বিসিআইসি উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে। যদিও প্রয়োজনীয় সার উৎপাদন সম্ভব হয়নি।
তবে যতটা সম্ভব স্থানীয়ভাবে ইউরিয়া সার উৎপাদন করতে উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করার কথা জানিয়ে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, জ্বালানি মন্ত্রণালয়কে আমরা অনুরোধ করবো, তারা যাতে সার কারখানাগুলো সচল রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণ গ্যাস সরবরাহ রাখে।
এছাড়া গ্যাসের দাম বাংলাদেশে কম হওয়াতে স্থানীয়ভাবে সার উৎপাদন খরচও বেশি না। তা সত্ত্বেও যদি একেবারে আন্তর্জাতিক দামে যদি বিসিআইসি মন্ত্রণালয়কে দেয়, তাতেও দাম আমাদের অনেক কম পড়বে।
আরও পড়ুন: বিএনপির চতুর্থ বিপর্যয়ের সময় এসে গেছে: কৃষিমন্ত্রী
জেল দিয়ে কী কোনদিন কারো রাজনীতি বন্ধ করা যাবে: প্রশ্ন কৃষিমন্ত্রীর