ইমরান খান
ইমরান খানের পরিবর্তে পিটিআইয়ের নতুন প্রধান নির্বাচিত
কারাবন্দি পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ প্রতিষ্ঠার পর প্রথমবারের মতো নতুন প্রধান নির্বাচিত করা হয়েছে।
শনিবার (২ ডিসেম্বর) ইমরান খানের সুপারিশের ভিত্তিতে দলীয় প্রধান নির্বাচন করা হয়েছে।
১৯৯৬ সালে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এর দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন ইমরান খান।
বর্তমানে তিন বছরের কারাদণ্ড ভোগ করা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গত বুধবার তার আইনজীবী গহর খানকে দলের শীর্ষ পদে প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছেন।
দলের প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়াজুল্লাহ নিয়াজি নিশ্চিত করেছেন যে, গহর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন এবং দলের অভ্যন্তরীণ নির্বাচনে ইমরান খানের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: ইমরান খানকে উচ্চ-নিরাপত্তা সম্পন্ন কারাগারে স্থানান্তর
পিটিআইয়ের নব নির্বাচিত দলীয় প্রধান উত্তরাঞ্চলীয় শহর পেশোয়ারে সমর্থকদের বলেন, তিনি ইমরান খানের অনুগত প্রতিনিধি হিসেবে থাকবেন।
তিনি বলেন, ‘ইমরান খানের সাজা বাতিল হলে আমি পদত্যাগ করব।’
গহর খান পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী। তার ওয়েবসাইট দেওয়া তথ্যানুসারে তিনি যুক্তরাজ্যের উলভারহ্যাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক করেন এবং বর্তমানে ইমরান খানের আইনি প্রতিরক্ষা দলের অংশ।
পিটিআইয়ের এক জ্যেষ্ঠ নেতা ওমর আইয়ুব খান বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী আত্মীয়ের পরিবর্তে দলের একজন সদস্যকে তার উত্তরসূরি হিসেবে মনোনীত করে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, যা পাকিস্তানের রাজনীতিতে প্রচলিত রীতি।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের ইমরান খানের বিরুদ্ধে যথাযথ বিচারিক প্রক্রিয়া মানার আহ্বান জাতিসংঘ প্রধানের
তিনি এক্সে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, ‘তিনি অত্যন্ত উচ্চ মানদণ্ড স্থাপন করেছেন।’
গত বছর ইমরান খানকে দলীয় প্রধান হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত করার পর গত মাসে দলীয় নির্বাচন বাতিল করে পিটিআইকে নেতা নির্বাচনের জন্য ২০ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছিল পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন।
দেশটির অন্যতম জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খান অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রির দায়ে গত আগস্টে দোষী সাব্যস্ত হন এবং তার দলের নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। তিনি ২০২২ সালে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হন। সেই তখন থেকেই দুর্নীতির অভিযোগ ও রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা প্রকাশসহ অন্যান্য বিষয়ে আইনি লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েন।
ইমরান খান সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেছিলেন, তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার সঙ্গে জড়িত পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী।
আরও পড়ুন: ইমরান খানের দুর্নীতির মামলায় ৩ বছরের কারাদণ্ড স্থগিত
দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে সারাদেশে র্যাবের ১০০টি বিশেষ চেকপোস্ট
আসন্ন দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ১০০টি বিশেষ চেকপোস্ট স্থাপন করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
হিন্দুদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা ২০ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজা দিয়ে শুরু হবে এবং ২৪ অক্টোবর শুভ বিজয়ার মাধ্যমে শেষ হবে।
র্যাব সদর দপ্তর সূত্র জানায়, প্রতি বছরের মতো এবারও দুর্গাপূজা ঘিরে নিরাপত্তার জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে র্যাব।
র্যাব সদর দপ্তরের সহকারী পরিচালক (মিডিয়া উইং) এএসপি ইমরান খান বলেছেন, দুর্গা পূজায় সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উদ্যোগের অংশ হিসেবে, র্যাব বাহিনী ১৬ অক্টোবর থেকে সারাদেশে চেকপোস্ট, গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল বাড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: কেসিসি নির্বাচন: ট্রাফিকের চেকপোস্টে ৯০ লাখ টাকা জরিমানা
দুর্গাপূজা উপলক্ষে যে কোনো ধরনের নাশকতা বা অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এলিট ফোর্স ইতোমধ্যে রাজধানীর প্রবেশপথসহ সারাদেশের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চেকপোস্ট তৎপরতা জোরদার করেছে।
চেকপোস্ট স্থাপন ও টহল বাড়ানোসহ ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত নিরাপত্তা জোরদার করতে র্যাব ব্যাটালিয়নের নিজ নিজ এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক র্যাব সদস্য মোতায়েন থাকবে।
দুর্গাপূজা চলাকালে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা, পূজা মণ্ডপ ভাঙচুর বা সুবিধাবাদী, দুর্বৃত্ত ও অশুভ চক্রের যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে র্যাবের চেকপোস্ট ও তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।
দুর্গাপূজার সময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে সুবিধাবাদী ও দুর্বৃত্তদের দ্বারা পূজামণ্ডপ ভাঙচুরসহ যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি র্যাব কঠোরভাবে প্রতিরোধ করবে এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
আরও পড়ুন: করোনার নতুন উপধরন বিএফ-৭ ঠেকাতে সতর্ক দর্শনা চেকপোস্ট
দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে ভারত গেল সেনাবাহিনীর সাইক্লিং দল
পাকিস্তানের ইমরান খানের বিরুদ্ধে যথাযথ বিচারিক প্রক্রিয়া মানার আহ্বান জাতিসংঘ প্রধানের
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টি (পিটিআই) -এর চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া এবং আইনের শাসনকে মেনে চলার জন্য পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
সোমবার জাতিসংঘ প্রধান এই আহ্বান জানান।
গুতেরেসের ডেপুটি মুখপাত্র ফারহান হক বলেছেন, ‘ইসলামাবাদে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের গ্রেপ্তারের পরে যে চলমান বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়েছে তার প্রতি মহাসচিব নজর রাখছেন এবং তিনি সব পক্ষকে সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।’
আরও পড়ুন: ইমরান খানকে উচ্চ-নিরাপত্তা সম্পন্ন কারাগারে স্থানান্তর
হক নিয়মিত একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘তিনি (গুতেরেস) শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারকে সম্মান করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।’ ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে উন্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আইনের শাসনকে মেনে চলার জন্য মহাসচিব কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছেন।’
শনিবার (৫ আগস্ট) স্থানীয় আদালত তাকে আর্থিক সম্পদ লুকানোর জন্য তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, যা বিক্ষোভের সূত্রপাত করেছিল।
আরও পড়ুন: কারাগারে থেকেও কলকাঠি নাড়তে পারেন ইমরান
কারাগারে থেকেও কলকাঠি নাড়তে পারেন ইমরান
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টির (পিটিআই) চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বর্তমানে পাকিস্তানের বিরোধী দলীয় নেতা। সম্প্রতি দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়ে তিন বছরের কারাদণ্ডের পর এখন উচ্চ নিরাপত্তাবিশিষ্ট কারাগারে বন্দী আছেন তিনি।
২০২২ সালের এপ্রিলে সংসদে অনাস্থা ভোটে তিনি পদচ্যুত হন। এরপর থেকে তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে ইরমানের রাজনৈতিক ও আইনি লড়াইয়ের মধ্যে এখনও পর্যন্ত এটিই সবচেয়ে নাটকীয় মোড়।
ইমরানের দল সরকারের সমালোচনা করে এই মামলাকে সাজানো বলে মন্তব্য করেছে। এর বিরুদ্ধে তারা আপিল করবে বলেও জানিয়েছে। তারা আরও বলেছে, এই মামলার লক্ষ্য হলো আসন্ন শরৎকালে অনুষ্ঠিতব্য সাধারণ নির্বাচনের আগে প্রাক্তন ক্রিকেট তারকাকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়া। সরকার ইমরানের প্রতি রাজনৈতিক নীপিড়নকে অস্বীকার করে তার দোষী সাব্যস্ত হওয়াকে বৈধ বলছে।
দোষী সাব্যস্ত হলে ৭০ বছর বয়সী ইমরান সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। পাশাপাশি ১৯৯০ সালে তার প্রতিষ্ঠা করা তেহরিক-ই- ইনসাফের (পিটিআই) নেতৃত্ব থেকেও আইনানুযায়ী সরে যেতে হবে তাকে। এদিকে জরিপগুলো পিটিআই-এর জন্য একটি শক্তিশালী নির্বাচনের ইঙ্গিত দেয় এবং খানের কারাদণ্ড তার অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে পারে।
তার বিরুদ্ধে কী মামলা ছিল
ইমরান ক্ষমতায় থাকাকালীন বিদেশি বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং রাষ্ট্রপ্রধানদের কাছ থেকে পাওয়া উপহার থেকে আয়ের প্রতিবেদন জমা দেননি বলে ইসলামাবাদের একটি আদালত শনিবার রায় দিয়েছে। পাকিস্তানে সরকারি পদ ছাড়ার পর নেতাদের এই ধরনের উপহার রাখার অনুমতি দেওয়া হয়। তবে সেসব উপহারের মূল্যের একটি অংশ প্রদান করা হয়।
আদালত বলেছে, ইমরান সেই উপহারগুলোর মধ্যে কিছু বিক্রি করেছেন এবং গত বছর পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের কাছে একটি প্রতিবেদনে সেই উপার্জনগুলো উল্লেখ করেননি। এজন্য আদালত খানকে দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে, তিন বছরের কারাদণ্ড দেয় এবং তাকে ১ লাখ রুপি বা সাড়ে ৩০০ মার্কিন ডলার জরিমানা করে।
রায়ের পরপরই, খানকে পূর্বাঞ্চলীয় শহর লাহোরে তার বাড়ি থেকে আটক করা হয় এবং রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে প্রায় এক ঘণ্টার দূরত্বে অ্যাটক শহরে একটি উচ্চ নিরাপত্তাসম্পন্ন কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
ইমরানের বিরুদ্ধে বিচারাধীন মামলাগুলো
ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর আদালত অবমাননা থেকে শুরু করে সন্ত্রাস ও সহিংসতাকে উসকে দেওয়ার অভিযোগে বিভিন্ন সরকারি সংস্থা তার বিরুদ্ধে ১৫০টিরও বেশি মামলা দায়ের করেছে।
সমালোচকরা বলছেন, আইনি লড়াইয়ের এই ঝাঁকুনি খানকে সরিয়ে দিতে শাসক জোটের একটি প্রচেষ্টার অংশ। কারণ তিনি বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে বিপুল সংখ্যক সমর্থক জড়ো করতে সক্ষম হয়েছেন।
খানকে একজন দুর্নীতিবাজ প্রতারক হিসেবে চিত্রিত করতে তাকে কারাগারের বাইরে রাখার পরিববর্তে ভেতরে রাখতে আইনি কৌশল প্রয়োগ করেছে সরকার। পাকিস্তানের শক্তিশালী সামরিক বাহিনীতে সরকারের সমর্থক রয়েছে, যারা তার ৭৫ বছরের ইতিহাসের বেশিরভাগ সময় ধরে দেশটিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে।
এই গ্রেপ্তার ভিন্ন কীভাবে?
ইমরান খানকে অ্যাটক কারাগারে রাখা হয়েছে। এটি এমনটি একটি কারাগার, দণ্ডিত জঙ্গি ও সহিংস অপরাধীদের জন্য এর কুখ্যাতি রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেছেন, সেখানকার অবস্থার সঙ্গে পরিচিত কর্মকর্তারা বলেছেন, তার জন্য একটি ফ্যান এবং আলাদা গোসলের সুবিধাসহ তার নিজস্ব সেল রয়েছে। যা কারাগারের সাধারণ কয়েদিদের মতো কঠিন অবস্থার থেকে এক ধাপ উন্নত।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করায় পিটিআই’র বিরুদ্ধে ক্র্যাকডাউন চলছে: ইমরান খান
মে মাসে ইমরানকে আটক করার ঘটনার চেয়ে এবারের পার্থক্য চোখে পড়ার মতো। এবার দুর্নীতিবিরোধী কর্মকর্তাদের বিভিন্ন অভিযোগে আদালতের শুনানি পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেবার সুপ্রিম কোর্ট দ্রুত হস্তক্ষেপ করে সেই আটককে বেআইনি ঘোষণা করেছিল। ইমরানকে পুলিশ কম্পাউন্ডে একটি গেস্ট হাউসে থাকার অনুমতিও দেওয়া হয়েছিল। সেসময় তার আটকের বিষয়ে আইনি যুক্তি শেষ হওয়ার সময় দর্শকরা সাক্ষাৎ করতে পেরেছিল। খান অবশেষে লাহোরে ফিরেও এসেছিলেন। সমর্থকরা গাড়িতে গোলাপের পাঁপড়ি ছিটিয়ে তাকে বরণ করেছিলেন।
এরপর কী হবে
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ইমতিয়াজ গুল বিশ্বাস করেন, সুপ্রিম কোর্ট খানের দোষী সাব্যস্ত হওয়া এবং আপিলের সাজা বাতিল করতে পারে।
ইসলামাবাদ-ভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের প্রধান গুল বলেছেন, ‘ইমরান খানের বিরুদ্ধে একেবারেই কোনো শক্ত মামলা ছিল না। তবে তাকে একটি প্রযুক্তিগত ভুলের কারণে এই দোষী সাব্যস্ত হতে হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ইমরান খানের নাম নো-ফ্লাই লিস্টে যোগ করা হয়েছে: পাকিস্তানের গণমাধ্যম
তথ্যমন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব এক বিবৃতিতে দাবি করেছেন, খানের প্রতি সমর্থন কমে যাচ্ছে।
‘তিনি কিছু নিষ্পাপ, নির্বোধ সমর্থকদের প্রতারণা করতে পারেন, কিন্তু সাধারণ জনগণ এখন তার আসল চরিত্র চিনতে পেরেছে।’
তিনি লিখেছেন, ‘মুখোশ খুলে তার আসল চেহারা তুলে ধরা হয়েছে। তুচ্ছ লাভের জন্য রাষ্ট্রীয় উপহার কুক্ষিগত করেছেন।’
যদি ইমরান দোষী সাব্যস্ত হন তবে তিনি নির্বাচনে দলের নেতৃত্বও দিতে পারবেন না। কারণ অপরাধী দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে কারাগারে থেকেও তিনি উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করতে পারেন।
আরও পড়ুন: ইমরান খান আদালতে দোষী সাব্যস্ত, নিষিদ্ধ হতে পারেন রাজনীতিতে
মে মাসে তাকে আটক করার পর তার সমর্থকরা বিক্ষোভ করে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত করেছিল। খানের অনুগত কয়েক হাজার মানুষ শহরে তাণ্ডব চালায়। তাদের মধ্যে কেউ কেউ সামরিক ও সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করে। সরকার ক্র্যাক ডাউন করেছে, ৭ হাজারেরও বেশি আটক করেছে। কিছু মামলার বিচার এখনও চলছে।
সরকারের আরও কঠোর পদক্ষেপের আশঙ্কায় আগেরবারের তুলনায় এবার ইমরানের গ্রেপ্তারের প্রতিক্রিয়া অনেক বেশি নীরব ছিল। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের জন্য এবার তার আহ্বান বিপুল সংখ্যক সমর্থক জড়ো করতে ব্যর্থ হয়েছে।
রাজনৈতিক পতন কী?
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ আগামী সপ্তাহে সংসদ ভেঙে দিতে পারেন। সম্ভবত নভেম্বরের মাঝামাঝি নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেবেন। সাম্প্রতিক আদমশুমারির ফলাফলের ভিত্তিতে নির্বাচনী এলাকা পুনর্নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিলে সরকার কয়েক মাস ভোট পিছিয়ে দিতে পারে।
খানের কারাবরণ তাকে এবং তার দলের বৃহত্তর নির্বাচনী সমর্থন আদায় করতে পারে। ক্ষমতা হারানোর পর তিনি যে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তৈরি করেছিলেন। এটি আরও যোগ করবে যে পাকিস্তানের সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য নির্ভীক কর্মী তিনি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক আজিম চৌধুরী বলেছেন, ‘ইমরান খানের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়াই পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। তবে জেল থেকেও তার প্রার্থীদের জন্য কার্যকরভাবে প্রচারণা চালানোর সম্ভাবনা রয়েছে।’
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গ্রেপ্তার
ইমরান খানকে উচ্চ-নিরাপত্তা সম্পন্ন কারাগারে স্থানান্তর
পাকিস্তানের একটি আদালত দুর্নীতির দায়ে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়ায় শনিবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় তার ভবিষ্যৎ রাজনীতির শেষ হতে পারে বলে অনেকেই ধারণা করছেন।
আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের এপ্রিলে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হলেও দেশের শীর্ষস্থানীয় বিরোধী নেতা হিসেবে ইমরান খান রয়ে যান এবং রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রি করার পর সম্পদ গোপন করেন।
জ্যৈষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা আলী নাসির রিজভী বলেন, সাবেক এই ক্রিকেট তারকাকে পূর্বাঞ্চলীয় শহর লাহোরে তার বাড়ি থেকে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে নিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। পরে শনিবার তাকে কঠোর অবস্থার জন্য একটি উচ্চ-নিরাপত্তা সম্পন্ন কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গ্রেপ্তার
সমালোচকরা বলছেন, এই রাজনীতিবিদকে কারাগারে পাঠানোর প্রচেষ্টা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং এ বছরের শেষের দিকে অনুষ্ঠিতব্য সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে এ ঘটনায় বিভাজন তীব্রতর হয়েছে।
এ বছর দ্বিতীয়বারের মতো ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইমরান খান ২০২২ সালের এপ্রিলে সংসদে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে তার বিরুদ্ধে ১৫০টিরও বেশি আইনি মামলা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- বেশ কয়েকটি দুর্নীতি, সন্ত্রাসবাদ এবং মে মাসে মারাত্মক বিক্ষোভে জনগণকে সহিংসতার জন্য প্ররোচিত করার অভিযোগ। সে সময় তার অনুসারীরা সারাদেশে সরকারি ও সামরিক সম্পত্তিতে হামলা চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে।
এই কারাদণ্ডের কারণে নির্বাচনের আগে ইমরান খানকে রাজনীতি থেকে বিরত রাখতে পারে। যেহেতু আইন অনুযায়ী, ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিরা সরকারি পদে থাকতে পারবেন না বা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না।
তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) বলেছে, তারা এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানাবে।
আরও পড়ুন: ইমরান খান আদালতে দোষী সাব্যস্ত, নিষিদ্ধ হতে পারেন রাজনীতিতে
জিন্নাহ হাউস হামলা মামলা: ইমরানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পার্টির চেয়ারম্যান ইমরান খানকে ৯ মে লাহোর কর্পস কমান্ডার হাউসে (জিন্নাহ হাউস) হামলার বিষয়ে একটি জয়েন্ট ইনভেস্টিগেশন টিম (জেআইটি) তলব করেছে।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, পাঞ্জাব সরকারের গঠিত জেআইটি খানকে মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় কিল্লা গুজ্জার পুলিশ সদর দপ্তরে তাদের সামনে হাজির হওয়ার জন্য ডেকেছে।
সারোয়ার রোড থানায় ওই হামলার বিরুদ্ধে দায়ের করা একটি মামলার জেরে এই সমন জারি করা হয়েছে।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে কারাগারে থাকাকালীন জিন্নাহ হাউসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগকারী হামলাকারীদের সহায়তা করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
লাহোর ডিআইজি (তদন্ত) কামরান আদিলের জারি করা সমন নোটিশটিতে বলা হয়েছে, ‘জেটিআই’র কাছে হস্তান্তর করা তদন্তে অংশ নেওয়ার জন্য ইমরান খানকে ডিআইজি তদন্তের অফিসে উপস্থিত হতে হবে।’
লাহোরের পুলিশ প্রধান বিলাল সিদ্দিক কামিয়ানা ইমরান খানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
হামলায় তার সম্পৃক্ততা সম্পর্কে জানতে ইমরান খানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এছাড়া এফআইআর-এ আরও বেশ কয়েকজন পিটিআই নেতাকর্মীর নামও রয়েছে।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করায় পিটিআই’র বিরুদ্ধে ক্র্যাকডাউন চলছে: ইমরান খান
লাহোরের এসএসপি (তদন্ত) ড. আনুশ মাসুদ চৌধুরী কোট লাখপত কারাগার পরিদর্শন করার পরে ইমরান খানকে তলব করা হয়েছে। যেখানে (কোট লাখপত কারাগারে) পিটিআই নেতা ড. ইয়াসমিন রশিদ এবং হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার ফ্যাশন ডিজাইনার খাদিজা শাহ রয়েছেন।
ইমরান খানের তত্ত্বাবধায়ক পাঞ্জাব সরকারের বিরুদ্ধে পিটিআই-এর কারাবন্দী নারী সমর্থকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগের পর এই সফর করা হয়।
পিটিআই নারী রাজনৈতিক বন্দীদের ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছিলেন ইমরান খান।
তিনি বলেন, ‘আমি পিটিআই নারী রাজনৈতিক বন্দীদের ধর্ষণের কথা শুনেছি।’
আরও পড়ুন: ইমরান খানের নাম নো-ফ্লাই লিস্টে যোগ করা হয়েছে: পাকিস্তানের গণমাধ্যম
কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে ইমরান খান
ইমরান খানের নাম নো-ফ্লাই লিস্টে যোগ করা হয়েছে: পাকিস্তানের গণমাধ্যম
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রধান এবং পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানেন নাম নো-ফ্লাই লিস্টে যোগ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের একটি গণমাধ্যমের বরাতে ভারতের গণমাধ্যম এএনআই এ তথ্য জানিয়েছে।
সূত্রের বরাত দিয়ে পাকিস্তান ডেইলি টুইট জানিয়েছে, ‘আইকে (ইমরান খান) নো ফ্লাই লিস্টে যোগ করা হয়েছে।’
পাকিস্তান ডেইলি দেশটির একটি ডিজিটাল নিউজ পোর্টাল, যা প্রধানত পাকিস্তানের রাজনৈতিক আপডেট সম্পর্কে রিপোর্ট করে।
আরও পড়ুন: ইমরান খানকে মুক্তির নির্দেশ পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের
তবে ইমরান খানকে নো-ফ্লাই তালিকায় যুক্ত করার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা পাওয়া যায়নি।
ডন জানিয়েছে, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছেন যে সরকার ৯মে সংঘটিত ঘটনার জন্য পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা ভাবছে।
ইসলামাবাদে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় খাজা আসিফ বলেন, ‘এখনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি, তবে অবশ্যই পর্যালোচনা চলছে।’
ডন জানায়, তিনি (খাজা আসিফ) ৯মে পাকিস্তানজুড়ে সামরিক স্থাপনায় ভাঙচুরকে পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খানের করা পরিকল্পনা অনুযায়ী ‘সমন্বিত হামলা’ বলে অভিহিত করেছেন।
এর আগে, ডন জানিয়েছে যে পুলিশ বিভাগ প্রাদেশিক অ্যাসেম্বলির তিনজন প্রাক্তন সদস্যসহ ২৪৫ জন পিটিআই কর্মীর নাম ফেডারেল সরকারের কাছে প্রভিশনাল ন্যাশনাল আইডেন্টিফিকেশন লিস্টে (পিএনআইএল) অন্তর্ভুক্ত করার জন্য পাঠিয়েছে, যাতে তারা দেশ ছেড়ে যেতে না পারে।
ডন বৃহস্পতিবার লিখেছে, রাওয়ালপিন্ডি জেলা পুলিশ তাদের ওয়ান্টেড তালিকায় প্রায় ৩১৯ জনের নাম দিয়েছে এবং ফেডারেল তদন্ত সংস্থার (এফআইএ) হেফাজতে থাকা ২৪৫ জন পিটিআই কর্মীর নাম পাঠিয়েছে। বাকি ৭৪ জনকে এখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি।
ডন পাকিস্তানের অন্যতম প্রধান মিডিয়া হাউস, যা পাকিস্তান সম্পর্কিত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়গুলো রিপোর্ট করে।
ডন জানিয়েছে, মঙ্গলবার লাহোর পুলিশ ৭৪৬ পিটিআই নেতার বিদেশ ভ্রমণে এক মাসের নিষেধাজ্ঞা আরোপের লক্ষ্যে নো-ফ্লাই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে চেয়েছিল। রাওয়ালপিন্ডি পুলিশের অনুরোধের পরে, তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারে এমন পিটিআই কর্মীদের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৯১।
আরও পড়ুন: ইমরান খানকে ২ সপ্তাহের জামিন দিয়েছেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট
ডন একজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে লিখেছে, পিএনআইএল-এর অধীনে পুলিশের ওয়ান্টেড তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের ৩০ দিনের জন্য দেশের বাইরে যেতে বাধা দেওয়া হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের মামলা পর্যালোচনা করে পুলিশ ৯ মে সহিংসতার সময় ও পরে আটক ২৪৫ জনের নাম চূড়ান্ত করেছে। বিমান, স্থল বা সমুদ্রপথে তাদের ভ্রমণ সীমিত করার জন্য এই নামগুলো এফআইএ-তে পাঠানো হয়েছিল।
ডনের প্রতিবেদন অনুসারে, যাদেরকে পুলিশ এখনও খুঁজছে, কিন্তু এখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি তাদের মধ্যে রয়েছেন- পিটিআই-এর সাবেক এমপি রশিদ হাফিজ, শেখ রশিদের ভাগ্নে; ফাইয়াজুল হাসান চোহান, যিনি আগে গ্রেপ্তার হয়ে পরে মুক্তি পেয়েছিলেন এবং উমর তানভীর বাট।
ডন জানিয়েছে, ফেডারেল সরকারকে দেওয়া তথ্যানুসারে জানানো হয়েছে যে জিএইচকিউতে হামলার সঙ্গে জড়িত ৩১ জন সন্দেহভাজনকে আরএ বাজার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে, পুলিশের তালিকায় ২৭ জন ওয়ান্টেড রয়েছে।
ভিডিও ক্লিপ, সিসিটিভি ফুটেজ, গোয়েন্দা তথ্য এবং জিও-ফেন্সিংয়ের মাধ্যমে সহিংস বিক্ষোভে জড়িত পিটিআই সমর্থকদের চিহ্নিত করার পরে পুলিশ অস্থায়ী ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব করেছিল।
নগর পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (সিপিও) সৈয়দ খালিদ হামদানীর তত্ত্বাবধানে পুলিশের তদন্ত দল জিএইচকিউ হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ১০৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে এবং ২৩ জনের শনাক্তকরণ প্যারেড সম্পন্ন হয়েছে।
ডন জানিয়েছে, ৯ মে সহিংসতার ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই বিষয়ে, পুলিশ সন্ত্রাসবিরোধী আইনের (এটিএ) ধারা ৭ এর অধীনে নথিভুক্ত সন্ত্রাস-সম্পর্কিত মামলাগুলোর তদন্ত করার জন্য একটি যৌথ তদন্ত দল (জেআইটি) গঠন করার জন্য পাঞ্জাব স্বরাষ্ট্র বিভাগকেও অনুরোধ করেছে।
এসব ঘটনায় জড়িত সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।
এদিকে, কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে পুলিশের দুটি পৃথক দল, প্রতিটি পুলিশ সুপারের তত্ত্বাবধানে, পাঞ্জাব এবং কেপি থেকে পিটিআই নেতা ও কর্মীদের গ্রেপ্তারের জন্য গঠন করা হয়েছে।
ক্যাপিটাল পুলিশ পিটিআই নেতাদের নাম পিএনআইএল এবং এক্সিট কন্ট্রোল লিস্টে (ইসিএল) রাখার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছেও অনুরোধ করেছে, যারা ২০২২ ও ২০২৩ সালের মে মাসে সহিংসতার জন্য তাদের বিরুদ্ধে নথিভুক্ত করা মামলার সঙ্গে জড়িত।
আরও পড়ুন: কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে ইমরান খান
ইমরান খানকে ২ সপ্তাহের জামিন দিয়েছেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট
পাকিস্তানের ইসলামাবাদের একটি হাইকোর্ট শুক্রবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার থেকে দুই সপ্তাহের জন্য অব্যাহতি দিয়ে জামিন দিয়েছেন।
খানের আইনজীবী বাবর আওয়ান বলেছেন, সুপ্রিম কোর্ট রায় দেওয়ার একদিন পর শুক্রবার আদালত এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তিনি বলেন, খান এখন ‘মুক্ত মানুষ’ এবং আদালতের এ রায় ন্যায়সঙ্গত।
খানকে আদালতে উপস্থিত করার পর তাকে ফের পুলিশ হেফাজতে ফিরিয়ে নেওয়া হবে, নাকি তাকে জামিন দেওয়া হবে তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়।
আদালতের এই রায়ের পর কয়েকদিন ধরে সরকার এবং খান সমর্থকদের মধ্যে চলা সহিংস সংঘর্ষ প্রশমিত হয়।
৭০ বছর বয়সী খান দেশটির একজন জনপ্রিয় বিরোধী নেতা, গত মঙ্গলবার একই আদালতে তিনি হাজির হন; যেখান থেকে তাকে টেনে নিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
তাকে গ্রেপ্তারের ফলে দেশব্যাপী বিক্ষোভ শুরু হয় এবং তার সমর্থকরা সামরিক স্থাপনায় হামলা চালায়, যানবাহন ও অ্যাম্বুলেন্স পুড়িয়ে দেয় এবং দেশের বিভিন্ন স্থানের ডিপার্টমেন্টাল স্টোর লুট করে। এর প্রতিক্রিয়ায় সরকার প্রায় তিন হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করে।
শুক্রবারের আদালতের অধিবেশন জটিল আইনি কৌশলের একটি সিরিজের অংশ।
এর আগে বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট ঘোষণা করেন, খানের গ্রেপ্তার বেআইনি ছিল, কিন্তু তারপরেও ইসলামাবাদ হাইকোর্ট একটি নিম্ন আদালতকে গ্রেপ্তার বহাল রাখার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে বলেছিলেন।
সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন, শুক্রবার ইসলামাবাদের আদালত যা রায় দেবে তা তারা মেনে নেবেন।
সরকার বলেছে, ইসলামাবাদ হাইকোর্ট তার আগের আদেশ বহাল রাখলে তারা ফের দ্রুত খানকে গ্রেপ্তার করবে।
শুক্রবার ইসলামাবাদ আদালতের একটি প্রাথমিক সংক্ষিপ্ত অধিবেশনে, বিচারকরা দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার থেকে সুরক্ষা চেয়ে খানের একটি অনুরোধের শুনানি করেন। আদালত কক্ষে খানের সমর্থকরা স্লোগান দেওয়ায় বিচারক অধিবেশন দুই ঘণ্টার জন্য স্থগিত করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, খানকে দুর্নীতির মামলায় জামিন দেওয়া হলেও অন্যান্য অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেন তিনি।
সরকারের দাবি, খানের মুক্তি জনতার সহিংসতাকে উৎসাহিত করবে।
শুক্রবার আদালতে খানের প্রধান আইনজীবী বাবর আওয়ান সাংবাদিকদের বলেন, সরকার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করতে অনড় বলে মনে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে ইমরান খান
কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে ইমরান খান
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই) পার্টির চেয়ারম্যান ইমরান খানকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে হিাজির করা হয়েছে।
শুক্রবার পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এআরওয়াই-এর বরাতে ভারতীয় গণমাধ্যম এএনআই এ তথ্য জানায়।
এএনআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আদালত প্রাঙ্গণ থেকে গ্রেপ্তার ‘অবৈধ ও বেআইনি’ ঘোষণার একদিন পর হাজিরা দিতে এলেন খান। আদালত তার গ্রেপ্তারকে দেশজুড়ে মারাত্মক সংঘর্ষের জন্য দায়ী বলে মনে করছেন।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর অস্থিরতা থামাতে সেনা মোতায়েন
এদিকে, ইমরান খানের আবেদনটি বিচারপতি মিয়াঙ্গুল হাসান আওরঙ্গজেব এবং সামান ইমতিয়াজের সমন্বয়ে গঠিত দুই ব্যক্তির বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চ শুনবেন।
ইমরান খানের হাইকোর্টে হাজিরা দিতে আসায় রাজধানীতে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কড়া নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে ইমরান খান আদালতে পৌঁছান। আদালত চত্বরের বাইরে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও আধা-সামরিক বাহিনী রেঞ্জার্স মোতায়েন করা হয়েছে।
এআরওয়াই নিউজের মতে, শ্রীনগর হাইওয়েতে পুলিশ লাইনের কাছে কনটেইনার স্থাপন করা হয়েছে এবং পাকিস্তানের ফৈজাবাদ সেতু, শ্রীনগর হাইওয়ে ও পুলিশ লাইনের নিচে পুলিশ ও রেঞ্জার্স কর্মকর্তাদের একটি ভারি দল মোতায়েন করা হয়েছে। কারণ খানের সমর্থকরা সেখানে জড়ো হয়েছে।
এদিকে, খানের সমর্থকদের ইসলামাবাদ হাইকোর্টের কাছে জড়ো হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে পিটিআই।
পিটিআই জানিয়েছে, ইমরান আদালতে উপস্থিত হওয়ার পরে সমর্থকদের উদ্দেশে একটি ভাষণ দেবেন।
তবে পিটিআই নেতাদের ওপর পুলিশের ধরপাকড় কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
কারণ শুক্রবার লাহোরে গ্রেপ্তার করা হয় আরেক সিনিয়র নারী পিটিআই নেতা এবং পাকিস্তানের পাঞ্জাবের প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়াসমিন রশিদকে।
এর আগে পার্টির সিনিয়র সহ-সভাপতি ড. শিরীন মাজারিকে তার বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করে ইসলামাবাদ পুলিশ।
কর্মকর্তাদের মতে, ইসলামাবাদ পুলিশ শিরিন মাজারির বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে।
ইমরান খান, সেনেটর এজাজ চৌধুরী, আসাদ উমর, ফাওয়াদ চৌধুরী, শাহ মেহমুদ কুরেশি এবং আলী মোহাম্মদ খান সহ সিনিয়র পিটিআই নেতাদের গ্রেপ্তারের পর তাকেও হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খানের গ্রেপ্তারকে ১১ মে সুপ্রিম কোর্ট ‘অবৈধ’ বলে ঘোষণা করেছিল এবং কর্তৃপক্ষকে তাকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।
সিদ্ধান্তের পরে, সুপ্রিম কোর্ট পিটিআই প্রধানকে পুলিশ লাইন গেস্ট হাউসে পাঠিয়েছেন এবং তাকে তার পরিবারের সঙ্গে রাত কাটানোর অনুমতি দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার ইমরান খান যখন দুইটি মামলায় হাজিরা দিতে আদালতে উপস্থিত হন তখন ইসলামাবাদ হাইকোর্টের প্রাঙ্গণ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর থেকেই পাকিস্তানে নিরাপপত্তা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে।
পিটিআই তার সমর্থকদের ইমরান খানের সমর্থনে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানানোয় দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন: ইমরান খান গ্রেপ্তার: বিক্ষোভকারী-পুলিশ সংঘর্ষে নিহত ১০
ইমরান খানের গ্রেপ্তার: পাকিস্তানজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে সহিংসতা
ইমরান খানকে মুক্তির নির্দেশ পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের
পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট বৃহস্পতিবার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আদালত জানিয়েছেন, খানকে গ্রেপ্তারের পর থেকে গত দুই দিনে দেশজুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। তাই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি উমর আতা বন্দিয়াল ইমরান খানকে তার সমর্থকদের শান্তিপূর্ণ থাকার আহ্বান জানাতে বলেছেন।
এদিন তার মুক্তি উদযাপন করতে আদালত ভবনের কাছে খানের সমর্থকদের নাচতে দেখা গেছে।
আইন প্রণেতাদের অনাস্থা ভোটে ক্ষমতা থেকে অপসারিত হওয়ার পর, খান পাকিস্তানি আদালতে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগের সম্মুখীন হন।
পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে হেফাজতে নেওয়ার পর থেকেই সহিংসতা শুরু হয়। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তার সমর্থকদের সংঘর্ষে বহু মানুষ আহত হয় এবং রাতারাতি অভিযানে কয়েকশ’ মানুষকে আটক করা হয়।
সামরিক দখল, রাজনৈতিক সঙ্কট ও সহিংসতায় অভ্যস্ত এই জাতির জন্য এই ধরনের সহিংসতার ঘটনা নজিরবিহীন। এটি রাওয়ালপিন্ডির গ্যারিসন সিটিতে একটি নির্বাচনী সমাবেশে ২০০৭ সালে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোকে হত্যার পরে সৃষ্ট পরিস্থিতির কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। সে সময় তার সমর্থকরা, তার হত্যাকাণ্ডে বিক্ষুব্ধ হয়ে সারা পাকিস্তানে কয়েকদিন ধরে তাণ্ডব চালিয়েছিল।
মঙ্গলবার খানের নাটকীয় গ্রেপ্তারের পর থেকে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে তার অন্তত ১০ জন সমর্থক নিহত এবং কয়েক ডজন আহত হয়েছে। পাশাপাশি ২০০ জনেরও বেশি পুলিশ আহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইমরান খান গ্রেপ্তার: বিক্ষোভকারী-পুলিশ সংঘর্ষে নিহত ১০
বুধবার রাতে রাজধানী ইসলামাবাদের উপকণ্ঠে একটি রেলস্টেশন পুড়িয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। বৃহস্পতিবার, তারা পাকিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর লাহোরের আশেপাশের এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে, একটি পুলিশের গাড়িতে আগুন দেয় এবং একটি ট্রেন অবরোধ করে।
পুলিশ বৃহস্পতিবার বলেছে যে ইমরান খানের প্রায় এক হাজার ৬০০ সমর্থককে সারাদেশে রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি এবং সামরিক স্থাপনায় হামলার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ফলে মঙ্গলবার থেকে আটককৃতদের সংখ্যা বেড়ে দুই হাজার ৩০০ জনে পৌঁছেছে।
বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় ট্রাক, গাড়ি ও পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে এবং মহাসড়ক অবরোধ করে সরকারি ও সামরিক ভবনে হামলার পর তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
খানের গ্রেপ্তারের কয়েক ঘন্টা পরে মঙ্গলবার লাহোরে একজন শীর্ষ সেনা কমান্ডারের বাসভবনে উত্তেজিত জনতা আগুন ধরিয়ে দেয়।
সার্বিক দিক বিবেচনায় দেশটির সরকার সহিংস এলাকাগুলোতে বুধবার থেকে সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে।
খানকে ইসলামাবাদের একটি আদালত কক্ষ থেকে টেনে নিয়ে যাওয়া হয় যেখানে তিনি মঙ্গলবার দুর্নীতির অভিযোগের মুখোমুখি হন।
তাকে এখন ইসলামাবাদের একটি পুলিশ কম্পাউন্ডে রাখা হয়েছে। যেখানে একটি অস্থায়ী আদালতে বুধবার একজন বিচারক ৭০ বছর বয়সী খানকে কমপক্ষে আরও আট দিনের জন্য আটক রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
খানের আইনজীবীর কাছ থেকে একটি আবেদনের সংক্ষিপ্ত শুনানির পর, বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট খানকে যেভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তাতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে এবং কর্তৃপক্ষকে তাকে এক ঘন্টার মধ্যে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছে। এতে ধারণা করা হয় এবার খানকে মুক্তি দেওয়া হবে।
খানের গ্রেপ্তারকে বেআইনি বলে যুক্তি দিয়ে তার আইনজীবীরা তার মুক্তি চেয়েছিলেন।
পুলিশ বৃহস্পতিবার খানকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে গেলে, সরকার তাকে হেফাজতে রাখার দাবি জানায়।
শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতিকে উদ্দেশ্য করে তথ্যমন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আপনারা যদি তাকে কোনো ছাড় দেন তাহলে এটা অন্যায় হবে।’
তিনি খানের অনুসারীদের করা সহিংসতার দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে মুক্তি দিলে আদালত ‘সবাইকে হত্যা করার লাইসেন্স’ দেবে।
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার পুলিশ জনতাকে সহিংসতায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে খান এবং তার পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ দলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে নতুন করে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ দায়ের করেছে।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর অস্থিরতা থামাতে সেনা মোতায়েন
বুধবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ বলেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর অনুসারীদের অস্থিরতা ‘সংবেদনশীল সরকারি ও ব্যক্তিগত সম্পত্তির ক্ষতি করেছে।’
মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর শরীফ বলেন, ‘এ ধরনের দৃশ্য পাকিস্তানের জনগণ কখনো দেখেনি। এমনকি রোগীদের অ্যাম্বুলেন্স থেকে বের করে এনে অ্যাম্বুলেন্সে আগুন দেওয়া হয়েছে।’
শরীফ হামলাকে ‘শাস্তিযোগ্য’ বলে অভিহিত করেছেন এবং সতর্ক করেছেন যে সহিংসতায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, খানকে দুর্নীতিতে জড়িত থাকার কারণে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এবং এই অভিযোগগুলোর স্বপক্ষে প্রমাণ রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি বৃহস্পতিবার খানের অনুসারীদের সহিংসতা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তবে তিনি বলেছেন, তাদের (খানের সমর্থকদের) শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করার অধিকার আছে।
তিনি আরও বলেন, ‘যা হয়েছে, হয়েছে। নিজের জন্য বিষয়গুলোকে আরও কঠিন করবেন না।’
সহিংসতার পরে সরকার পাঞ্জাব এবং উত্তর-পশ্চিম খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেয়। কেননা সেখানে খানের ব্যাপক সমর্থক রয়েছে এবং সেখানেই বেশিরভাগ সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে।
এ পর্যন্ত অন্তত সাতজন বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে খাইবার পাখতুনখোয়ায় এবং দুইজন পাঞ্জাবের রাজধানী লাহোরে এবং একজন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর কোয়েটায়।
সরকার দেশের বিভিন্ন স্থানে ইন্টারনেট পরিষেবা স্থগিত করেছে।
পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মহসন নকভি বলেছেন, ‘যারা আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করেছে আমরা তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করব।’
কর্মকর্তারা বলছেন যে খানের সমর্থকরা বিশেষ করে সামরিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে, কারণ তিনি তার ২০২২ সালের ক্ষমতাচ্যুতির জন্য সামরিক বাহিনীকে দোষারোপ করেছেন।
আরও পড়ুন: ৮ দিনের রিমান্ডে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান
পাশাপাশি খান দাবি করেছেন যে এটি ওয়াশিংটন এবং শরীফের সরকারের একটি ষড়যন্ত্র ছিল।
তবে এ অভিযোগগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং শরীফ উভয়ই অস্বীকার করেছেন।
সামরিক বাহিনীও বলেছে যে তারা খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার ক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা পালন করেনি।
সহিংসতার মধ্যে খানের সমর্থকরা রাওয়ালপিন্ডিতে সামরিক সদর দপ্তর এবং উত্তর-পশ্চিমে নিরাপত্তা চৌকিতে হামলা চালিয়েছে, আফগানিস্তানের সীমান্তে নিরাপত্তা চাকদারা দুর্গে আগুন দিয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে লাহোরে, বিক্ষোভকারীরা আঞ্চলিক কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল সালমান ফাইয়াজ গনির বাসভবন ভাঙচুর করে ও পুড়িয়ে দেয়।
বুধবার সেনাবাহিনী পূর্ণ শক্তি দিয়ে বিক্ষোভকারীদের আক্রমণের জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার করে।
তারা বলেছে, তাদের স্থাপনাগুলোতে আক্রমণগুলো একটি সাজানো পরিকল্পনা অনুসারে করা হয়েছে এবং এই সহিংসতা দেশের ইতিহাসে একটি ‘কালো অধ্যায়’।
ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে দেশটি স্বাধীনতা লাভের পর থেকে সামরিক বাহিনী ৭৫ বছরের অর্ধেকেরও বেশি সময় ধরে সরাসরি পাকিস্তান শাসন করেছে এবং বেসামরিক সরকারগুলোর ওপর প্রভাব বিস্তার করে রাখে।