ব্রাজিল
বাংলাদেশ থেকে ব্রাজিলে সরাসরি তৈরি পোশাক আমদানি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য জোরদার করতে পারে: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ ও ব্রাজিলের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধির উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার(৮ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সফররত ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েরা ও তার প্রতিনিধিদলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই সম্ভাবনার কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধির প্রচুর সুযোগ রয়েছে।’
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে সরাসরি তৈরি পোশাক পণ্য আমদানি বৃদ্ধির জন্য ব্রাজিলের সুযোগের কথা তুলে ধরেন। ফলে মধ্যস্থতাকারীদের প্রয়োজনীয়তা দূর করে এবং এই প্রক্রিয়াটিকে আরও ব্যয়সাশ্রয়ী করে তোলা যায় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার এম নজরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের মধ্যে বর্তমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও গভীর করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। বর্তমান বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা ব্রাজিলের পক্ষে প্রচণ্ডভাবে ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে ব্রাজিল থেকে প্রচুর পরিমাণে চিনি, সয়াবিন তেল এবং তুলা আমদানি করে বাংলাদেশ। অন্যদিকে বিনিময়ে কেবলমাত্র ন্যূনতম পরিমাণে তৈরি পোশাক পণ্য রপ্তানি করে। ব্রাজিলের আমদানিতে বৈচিত্র্য আনার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ব্রাজিলের আমদানিতে বৈচিত্র্য আনার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে- কেবল আরও বেশি তৈরি পোশাক পণ্য নয়, বরং এতে পাট, পাটজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যও অন্তর্ভুক্ত করা যায়।
আরও পড়ুন: জুলাইয়ে ব্রাজিল সফরে যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ঐতিহাসিক যোগসূত্রের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের পরপরই ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি প্রদানকারী দক্ষিণ আমেরিকার প্রথম দেশ হিসেবে ব্রাজিলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশ ও ব্রাজিলের অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি ও অবস্থানের ওপর জোর দেন।
প্রধানমন্ত্রী ব্রাজিলের ফুটবলের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং বাংলাদেশের ফুটবলের মান উন্নয়নে সহযোগিতা কামনা করেন।
কূটনৈতিক সদিচ্ছার নিদর্শন হিসেবে ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ২০২৪ সালের জুলাই মাসে অনুষ্ঠেয় জি-২০ সম্মেলনে যোগদানের জন্য ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনসিও লুলা দা সিলভার পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানান।
২০২৪ সালের গ্রুপ অব ২০ (জি২০) শীর্ষ সম্মেলন আগামী ১২-১৪ জুলাই ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত হবে।
প্রধানমন্ত্রী সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন।
১৯টি দেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিয়ে জি-২০ গঠিত। দেশগুলো হলো- আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, জার্মানি, ফ্রান্স, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মেক্সিকো, রাশিয়ান ফেডারেশন, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৪ সালে জি-২০ এর প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবে ব্রাজিল।
আরও পড়ুন: মানুষের জন্য কাজ করুন, জনগণের আস্থা হারাবেন না: জনপ্রতিনিধিদেরকে প্রধানমন্ত্রী
বৈশ্বিক রাজনীতি নিয়েও আলোচনা হয় বৈঠকে। ভিয়েরা গাজায় চলমান সংঘাতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থানের প্রশংসা করেন। ইসরায়েলি আগ্রাসনকে গণহত্যা হিসেবে আখ্যা দিয়েবাংলাদেশের নিন্দাকে সমর্থন জানান সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিয়েরা।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে 'তারা (ইসরায়েল) সব ধরনের আন্তর্জাতিক রীতিনীতি লঙ্ঘন করেছে, তারা হাসপাতালে বোমা হামলা চালিয়েছে, আশ্রয় শিবিরে হত্যা অব্যাহত রেখেছে- এটি যুদ্ধ নয়, এটি গণহত্যা।’
তিনি বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী শিশু, নারী ও বৃদ্ধদেরও রেহাই দিচ্ছে না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির প্রশংসা করে ভিয়েরা বাংলাদেশের উন্নয়নের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিতে ব্রাজিলের আগ্রহ প্রকাশ করেন ভিয়েরা। দারিদ্র্য ও ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দুই জনবহুল দেশের মধ্যে সাদৃশ্যের কথা উল্লেখ করেন তিনি।
ভিয়েরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ব্রাজিল জাতীয় ফুটবল দলের জার্সি উপহার দেন। যা এই সফরে বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা এবং সহযোগিতা ও অভিন্ন প্রবৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পথ খুঁজে বের করে পারস্পরিক আকাঙ্ক্ষার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং একটি শক্তিশালী ব্যবসায়িক প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিয়ে এটি ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম বাংলাদেশ সফর। এটি বাংলাদেশ ও ব্রাজিলের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।
আরও পড়ুন: বহুপক্ষীয় ফোরাম: ২৪ এপ্রিল থেকে ৬ মে থাইল্যান্ড-সৌদি আরব ও গাম্বিয়া সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী
জুলাইয়ে ব্রাজিল সফরে যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
আগামী জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্রাজিল সফরের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
রবিবার (৭ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েইরার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান এ সম্ভাবনার কথা জানান।
এর আগে দুই দেশের পক্ষে সামগ্রিক সহযোগিতা বিষয়ে 'টেকনিক্যাল কো-অপারেশন এগ্রিমেন্ট' সই করেন দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বৈঠকে ছিলেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব ড. নজরুল ইসলাম, ব্রাজিলে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুন্নেসা, বাংলাদেশে ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত পাওলো ফার্নান্ডো দিয়াস ফারসে এবং উভয় দেশের পদস্থ কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তিতে বাংলাদেশের আগ্রহকে স্বাগত জানালেন ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান বলেন, ‘এই প্রথম ব্রাজিলের কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করছেন। আমাদের মধ্যে খুব সফল আলোচনা হয়েছে। ব্রাজিল থেকে আমদানি করা তুলা দিয়ে তৈরি পোশাক ব্রাজিলে রপ্তানির ক্ষেত্রে কর মওকুফ ও অন্য পোশাক রপ্তানিতে কর হ্রাসের অনুরোধ জানিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার গেটওয়ে বাংলাদেশে স্পেশাল অর্থনৈতিক অঞ্চলে চামড়াজাত পণ্য উৎপাদনসহ নানামুখী বিনিয়োগে এবং আইটি পার্কগুলোতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে ব্রাজিলিয়ানদের বিনিয়োগের আহ্বান জানানো হয়েছে।
মন্ত্রী জানান, মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন এবং গাজায় নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর এমনকি পশ্চিমা এইড-ওয়ার্কারদের ওপর ইসরাইলি বাহিনীর হামলা এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পাস হওয়া যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবকে ইসরাইলের তোয়াক্কা না করার সংকট নিয়েও কথা হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণে আগামী জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্রাজিল সফরের সম্ভাবনা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় একযোগে কাজ করা, এন্টার্কটিকা কাউন্সিলে বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের কাজ ও গবেষণার সুযোগ দান এবং ব্রিকসে অন্তর্ভুক্তির জন্য বাংলাদেশকে ব্রাজিলের সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েইরা তার বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে। আগামীতে বাংলাদেশের সঙ্গে ব্রাজিলের সম্পর্ক আরও বিস্তৃত হবে।
এর আগে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বৈঠকে কোরবানির ঈদ সামনে রেখে ব্রাজিল থেকে পশু আনার আগ্রহ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। এছাড়া তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে শুল্কজনিত সুবিধা দিতে ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আহ্বান জানান বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী।
যৌথ সংবাদ সম্মেলন শেষে ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সফরসঙ্গীসহ তার সম্মানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ প্রদত্ত ইফতার ও নৈশভোজে যোগ দেন।
এ দিন সকালে ঢাকায় অবতরণের পর দুপুরে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের পর মন্ত্রী ভিয়েরা গাজীপুরে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস এবং বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক পরিদর্শন ও বিকেলে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জি২০ এর বর্তমান সভাপতি হিসেবে ব্রাজিলের অগ্রাধিকার ক্ষেত্রগুলোর ওপর বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে।
সোমবার রাতে ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের সদস্যদের সম্মানে দেশের শীর্ষ বাণিজ্য সংস্থা এফবিসিসিআই আয়োজিত ইফতার ও নৈশভোজে যোগদান শেষে রাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিয়েরার ঢাকা ত্যাগের কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: ঢাকায় ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, হাছান মাহমুদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক আজ
ব্রাজিলের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৩
ব্রাজিলের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় রিও ডি জেনিরো ও এসপিরিতো সান্তোর মধ্যবর্তী স্থানে চলতি সপ্তাহের ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৩ জনে দাঁড়িয়েছে।
রবিবার (২৪ মার্চ) এসপিরিতো সান্তোসের রাজ্য সরকার জানিয়েছে, শুক্রবার রাত থেকে শুরু হওয়া ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ১৫ জন মারা গেছে এবং প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে চলে গেছে। শনিবার রিও কর্তৃপক্ষ আরও ৮ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে।
আরও পড়ুন: হাইতির ৪০ লাখ মানুষ 'তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার' শিকার : জাতিসংঘ খাদ্য সংস্থা
রাজ্যের রাজধানী ভিটোরিয়া থেকে ৭৪ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত গ্রামাঞ্চলীয় শহর মিমোসো দো সুলে এসপিরিতো সান্তোতে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
নতুন করে ভূমিধসের ঝুঁকির কারণে উভয় রাজ্যে উদ্ধারকারী দলকে শুক্রবার রাতে তাদের কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছিল। পরে শনিবার বিকাল থেকে পুনরায় উদ্ধার অভিযান শুরু করা হয়।
ব্রাজিলের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের মেয়র ও গভর্নররা বৃহস্পতিবার থেকে সপ্তাহান্তে সম্ভাব্য সমস্যার বিষয়ে বাসিন্দাদের সতর্ক করে দিয়েছে। এসপিরিতো সান্তো রাজ্যে ভারী বৃষ্টিপাতের জন্য সরকারের সতর্কতা স্থানীয় সময় মধ্যরাত পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
আরও পড়ুন: ব্রাজিলে ভারী বর্ষণে ৭ জনের মৃত্যু, ১৬ ঘণ্টা পর কাদা থেকে ৪ বছরের শিশু জীবিত উদ্ধার
ব্রাজিলে বাংলাদেশ দূতাবাসে পালিত হয়েছে জাতীয় প্রবাসী দিবস
ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়াতে অবস্থিত দক্ষিণ আমেরিকায় বাংলাদেশের একমাত্র দূতাবাসে অত্যন্ত আনন্দমুখর পরিবেশে এবং যথাযথ গুরুত্ব সহকারে জাতীয় প্রবাসী দিবস-২০২৩ পালিত হয়েছে।
‘প্রবাসীর কল্যাণ মর্যাদা আমাদের অঙ্গীকার, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ায় তারাও সমান অংশীদার’ স্লোগানকে উপজীব্য করে স্বাধীনতার পর এবারই প্রথম জাতীয় প্রবাসী দিবস পালন করছে সরকার।
দূতাবাসে বাঙালি জাতির গৌরবের মাসে শুক্রবার (ডিসেম্বর ২৯) সন্ধ্যায় মহান বিজয় দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস-২০২৩ উপলক্ষ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সৌজন্যে অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যেখানে ব্রাসিলিয়াতে বসবাসরত প্রায় সকল বাংলাদেশি উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সকল শহীদ সদস্যবৃন্দ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ বুদ্ধিজীবী ও ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
জাতীয় প্রবাসী দিবস ২০২৩ উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করেন রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুননেসা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করেন দূতালয় প্রধান ফুয়াদ হাসান পরাগ।
দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কর্তৃক পাঠানো একটি বিশেষ ভিডিওচিত্র প্রদর্শিত হয়।
রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুননেসা তার বক্তব্যে স্বাধীনতার স্থপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম শেখ ফজিলাতুন নেছাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।
তিনি ৩০ লাখ শহীদ, ২ লাখেরও বেশি নির্যাতিত মা-বোনদের আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন।
রাষ্ট্রদূত ফয়জুননেসা দেশ গঠনে প্রবাসীদের অসামান্য অবদানকে স্বীকৃতি দিয়ে ৩০ ডিসেম্বর তারিখকে জাতীয় প্রবাসী দিবস হিসেবে ঘোষণা করায় সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান এবং ১৭০টি দেশে বসবাসরত প্রায় ১ দশমিক ৫ কোটি প্রবাসীদের প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
রাষ্ট্রদূত ভূমি ব্যবস্থাপনার ডিজিটালাইজেশন, সর্বজনীন পেনশন স্কিম, দ্বৈত নাগরিকত্ব ইত্যাদি ছাড়াও সকল প্রকার ডিজিটালাইজড কন্স্যুলার সেবা সম্পর্কে ধারণা দেন এবং এ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রবাসীদের মাঝে লিফলেট বিতরণ করা হয়।
রাষ্ট্রদূত এ সময় প্রবাসী বাংলাদেশিদের স্বার্থ সংরক্ষণে সরকারি বিভিন্ন উদ্যোগ বিশেষ করে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন উদ্যোগ সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেন।
দক্ষিণ আমেরিকাতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের আরও অধিক কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত উপস্থিত প্রবাসীদের তাদের স্ব স্ব অবস্থান থেকে আরও বেশি সক্রিয় ভূমিকা পালন এবং ব্যবসা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, পর্তুগীজ ও স্প্যানিশ ভাষা শিক্ষালাভের মাধ্যমে দক্ষিণ আমেরিকাতে কর্মসংস্থানের যথেষ্ঠ সম্ভাবনা রয়েছে।
রাষ্ট্রদূত ফয়জুননেসা তার বক্তব্যে প্রবাসে বসবাসরত সকল প্রবাসী বাংলাদেশি অভিভাবকদের তাদের সন্তানদের আত্মপ্রত্যয়ী হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বিশ্বায়নের এই যুগে আজকের বর্তমান প্রজন্মের সন্তানরা শুধু নিজ দেশের নয়, বরং সমগ্র বিশ্বের ভবিষ্যৎ কর্ণধার, তাই তাদেরকে জ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার দায়িত্ব সকলের।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন-২০৪১ অর্জনে আজকের প্রজন্মকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে পরবর্তী প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রদূত অভিভাবকদের বিশেষভাবে অনুরোধ জানান।
আমন্ত্রিত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে সমবেতভাবে জাতীয় সংগীত গাওয়ার মাধ্যমে দূতাবাস কর্তৃক আয়োজন সমাপ্ত হয়।
আমন্ত্রিত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে সমবেতভাবে জাতীয় সংগীত গাওয়ার মাধ্যমে দূতাবাস কর্তৃক আয়োজন সমাপ্ত হয়।
দূতাবাস আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি প্রবাসীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার সৃষ্টি করে। অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশি ভাইবোনদের নৈশ ভোজের মাধ্যমে আপ্যায়িত করা হয়।
ব্রাজিলের আমাজনে পানির তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় শতাধিক ডলফিনের মৃত্যু
পানির তাপমাত্রা অত্যাধিক বেড়ে যাওয়ায় ব্রাজিলের আমাজন রেইন ফরেস্টে গত সপ্তাহে ১০০ টিরও বেশি ডলফিন মারা গেছে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছে, পানির তাপমাত্রা এই পর্যায়ে থাকলে শিগগিরই আরও অনেক ডলফিন মারা যেতে পারে।
ব্রাজিলের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন মন্ত্রণালয়ের একটি গবেষণা দল মামিরুয়া ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, তেফে হ্রদের আশেপাশের অঞ্চলে সোমবার আরও দুটি মৃত ডলফিন পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন: হাওয়াইয়ের স্পিনার ডলফিনের সাথে সাঁতার কাটা নিষিদ্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র
ইনস্টিটিউটের দেওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, শকুনেরা সৈকতে ডলফিনের মৃতদেহ তুলে নিচ্ছে। হাজার হাজার মাছও মারা গেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, হ্রদগুলোর পানির উচ্চ তাপমাত্রা এই অঞ্চলের সবচেয়ে বেশি প্রাণির মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণ।
গত সপ্তাহ থেকে টেফে লেক অঞ্চলে তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইট) অতিক্রম করেছে।
ব্রাজিল সরকারের চিকো মেন্ডেস ইনস্টিটিউট ফর বায়োডাইভার্সিটি কনজারভেশন গত সপ্তাহে জানিয়েছে, তারা পশুচিকিত্সক ও জলজ স্তন্যপায়ী বিশেষজ্ঞদের একটি দল পাঠিয়েছে।
মামিরাউয়া ইন্সটিটিউটের গবেষক মরিয়ম মারমন্টেল বলেন, টেফে লেকে প্রায় ১ হাজার ৪০০ ডলফিন ছিল।
মারমন্টেল বলেন, ইতোমধ্যে এক সপ্তাহে আমরা ১২০টি প্রাণী হারিয়েছি, যা মোট সংখ্যার ৫-১০ শতাংশ।
খরার কারণে শুক্রবার আমাজোনাসের গভর্নর উইলসন লিমা জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন।
নিকসন মারেইরা ৬০ হাজার বাসিন্দার শহর টেফের মেয়র।
তিনি বলেন, নদীশুষ্ক হওয়ায় তার সরকার কিছু বিচ্ছিন্ন সম্প্রদায়ের কাছে সরাসরি খাদ্য সরবরাহ করতে পারছে না।
মামিরুয়া ইনস্টিটিউটের জিওস্প্যাটিয়াল কোঅর্ডিনেটর আয়ান ফ্লিশম্যান বলেন, আমাজন অঞ্চলের নদীতীরবর্তী জনগোষ্ঠীর ওপর খরার বড় প্রভাব পড়েছে।
তিনি বলেন, অনেক সম্প্রদায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে, ভালো মানের পানি পাচ্ছে না, নদীতে নৌকা চালাতে পারছে না। অথচ তাদের যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম নদী।
ফ্লিশম্যান বলেন, পানির তাপমাত্রা শুক্রবার ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৮৯ ফারেনহাইট) থেকে বেড়ে রবিবার প্রায় ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০০ ফারেনহাইট) হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তারা এখনও ডলফিনের মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করছেন। তবে পানির উচ্চ তাপমাত্রা প্রধান কারণ বলেই তাদের সন্দেহ।
আরও পড়ুন: হালদা নদীতে দুইদিনে আরও ২টি ডলফিনের মৃত্যু
বরগুনায় সৈকতে ভেসে এলো মৃত ডলফিন
জলবায়ু সংরক্ষণ নীতি পুনরুদ্ধারের ঘোষণা ব্রাজিলের
২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তি (কপ২১) অনুযায়ী ক্ষতিকর গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানোর প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে ব্রাজিল। যদিও দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট জেইর বলসোনারোর শাসনামলে এই প্রতিশ্রুতি দুর্বল হয়ে পড়েছিল।
বৃহস্পতিবার দেশটির ১৮টি সরকারি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে গঠিত একটি যৌথ সংস্থা ‘জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত কমিটি’- এই ঘোষণা দিয়েছে।
ব্রাসিলিয়ায় কমিটির বৈঠকে ভাইস প্রেসিডেন্ট জেরাল্ডো অ্যালকমিন বলেন, ‘এই চ্যালেঞ্জিং মুহুর্তে পৃথিবীকে সাহায্য করার ক্ষেত্রে ব্রাজিল একটি প্রধান ক্রীড়ানক।’
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত জাতিসংঘের ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনে আমাদের পরিবর্তিত সিদ্ধান্তটি আনুষ্ঠানিকভাবে পাঠানো হবে। এটি একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা যা জলবায়ু পরিবর্তনের উপর বৈশ্বিক পদক্ষেপকে এগিয়ে নিতে কাজ করে।
এটি প্যারিস চুক্তি অনুসারে প্রতিটি দেশের জাতীয়ভাবে নির্ধারিত দায় বা জাতীয় নির্গমন হ্রাস করার প্রতিশ্রুতির ব্যাপারে নজরদারি করে।
উগ্র ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট বোলসোনারোর আমলে ব্রাজিল দেশ হিসেবে তার গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের লক্ষ্যমাত্রা থেকে দুবার পিছিয়ে পড়ে।
অনেকগুলো পরিবেশ ও সামাজিক গোষ্ঠীর একটি নেটওয়ার্ক ক্লাইমেট অবজারভেটরি’র অনুমান অনুসারে, সাম্প্রতিক সবচেয়ে বড় বিপর্যয় ঘটেছে ২০২১ সালে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ব্রাজিল তার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭৩ মিলিয়ন মেট্রিক টন বেশি কার্বন নিঃসরণ নির্গমন। প্যারিস চুক্তির অধীনে ব্রাজিলের কার্বন নিঃসরণের লক্ষ্যমাত্রা হলো ১ দশমিক ২ বিলিয়ন মেট্রিক টন।
একটি জলবায়ু নীতি-কেন্দ্রিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক তালানোয়া ইনস্টিটিউট শুক্রবার তার নিজস্ব বিশ্লেষণ প্রকাশ করে বলেছেন, পুনরুদ্ধারকে নিছক একটি প্রাথমিক পদক্ষেপ বলে দেখা হচ্ছে। এরজন্য আরও সাহসী প্রতিশ্রুতি প্রয়োজন।
ইনস্টিটিউট বলেছে, চিরাচরিত নিয়মে বদ্ধ ঘরে বসে সিদ্ধান্ত না নিয়ে নির্গমন টার্গেট প্রক্রিয়াটি পুরো সমাজের সামনে উন্মুক্ত করা উচিত। এটি শুধুমাত্র ব্রাজিলের ২০১৫ সালের নেওয়া প্রতিশ্রুতি পুনর্বহাল করবে না, আরও উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নির্ধারণ করতেও সক্ষম করবে।
ওয়ার্ল্ড রিসোর্সেস ইনস্টিটিউটের পরিচালিত একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ক্লাইমেট ওয়াচ অনুসারে, ব্রাজিল বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনকারী, যা বিশ্বব্যাপী নির্গমনের প্রায় ৩ শতাংশের জন্য দায়ী।
এই নির্গমনের প্রায় অর্ধেক আমাজন রেইনফরেস্টের গাছ ধ্বংসের কারণে ঘটে, যা বলসোনারোর প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ১৫ বছরে সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছেছিল।
সাবেক এই প্রেসিডেন্ট কৃষি ও ব্যবসা সম্প্রসারণের পক্ষে ছিলেন। তিনি আমাজন রেইনফরেস্ট সংরক্ষণের প্রচেষ্টাকে উপেক্ষা করেন এবং ব্রাজিলের পরিবেশ সংস্থাগুলোকে ভেঙে দিয়েছিলেন।
বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা সাবেক প্রেসিডেন্ট বোলসোনারোর সম্পূর্ণ উল্টো পথে হাঁটছেন।
তিনি জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত সময়ের মধ্যে বন উজাড় ৪৮ শতাংশ হ্রাস করেছেন।
ব্রাজিলের আমাজন রেইন ফরেস্টে ছোট উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত, ১৪ আরোহীর সবাই নিহত
ব্রাজিলের আমাজন রেইন ফরেস্টে শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) একটি ছোট যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে ১৪ আরোহীর সবাই নিহত হয়েছেন। আমাজোনাস রাজ্যের গভর্নর উইলসন লিমা বিষয়টি সম্পর্কে জানিয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (পূর্বে টুইটার) লিমা বলেন, ‘শনিবার বার্সেলোসে উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের শিকার ১২ জন যাত্রী ও ২ ক্রু সদস্যের মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে দুঃখপ্রকাশ করছি।’
স্থানীয় গণমাধ্যমে বলা হয়, এমব্রায়ার পিটি-এসওজি উড়োজাহাজটি আমাজোনাস রাজ্যের রাজধানী এবং আমাজনের বৃহত্তম শহর মানাউস থেকে উড্ডয়ন করেছিল এবং ভারী বৃষ্টির মধ্যে অবতরণের চেষ্টা করার সময় এটি বিধ্বস্ত হয়।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ায় উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত, ৯ জনের লাশ উদ্ধার
এতে আরও বলা হয়, যাত্রীরা ব্রাজিলের পর্যটক ছিলেন, যারা মাছ ধরতে যাচ্ছিলেন।
গ্লোবো টেলিভিশন নেটওয়ার্কের পোস্ট করা ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, বিমানটি কাদা ময়লার ওপর পড়ে আছে এবং বিমানের সামনের অংশ সবুজ পাতায় ঢেকে আছে। কয়েক ডজন লোককে ছাতা হাতে পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
বিমান বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়, ব্রাজিলের বিমান বাহিনী তথ্য সংগ্রহ এবং দুর্ঘটনার তদন্তের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে এমন কোনো প্রমাণ সংরক্ষণের জন্য মানাউস থেকে একটি দল প্রেরণ করেছে।
আরও পড়ুন: পোখরায় যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত: ৭২ জন যাত্রীর মধ্যে নিহত ৬৮
ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলে ভয়াবহ ঝড়ে নিহত ২১
ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলে ভয়াবহ ঝড়ের কারণে বেশ কয়েকটি শহরে বন্যায় অন্তত ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার রিও গ্র্যান্ডে দো সুল গভর্নর এডুয়ার্ডো লেইট বলেন, জলবায়ু জনিত কারণে মৃতের এই সংখ্যা রাজ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ।
তিনি বলেন, প্রায় ৬০টি শহর ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যাকে এক্সট্রাট্রপিক্যাল সাইক্লোন (অতিমাত্রায় ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়) হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
লেইট বলেন, প্রায় ৫০ হাজার বাসিন্দার শহর মুকুমের একটি বাড়িতেই ১৫ জনের মৃত্যু হয়।
রিও গ্র্যান্ডে দো সুল রাজ্য সরকার বলেছে, এই ঝড়ের কারণে সোমবার রাত থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৬৫০ জন গৃহহীন হয়েছেন।
টিভি ফুটেজে দেখা গেছে, পরিবারগুলো তাদের ঘরের ছাদ থেকে সাহায্যের জন্য অনুরোধ করছে। কারণ নদীগুলোর পানি উপচে প্রবাহিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোয় আঘাত হানতে যাচ্ছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিলারি
বাসিন্দাদের পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার জন্য তাদের চাহিদা মেটাতে সরবরাহ ব্যবস্থা করতে মুকুমের সিটি হল সুপারিশ করেছে।
গভর্নর বলেন, নিহতদের মধ্যে একজন নারী ছিলেন, যিনি উদ্ধার প্রচেষ্টার সময় ভেসে যান।
লেইট তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেন, ‘টাকুয়ারি নদীতে উদ্ধার প্রচেষ্টায় একজন নারীর মৃত্যুর জন্য আমি দুঃখিত। তার ছিঁড়ে যাওয়ায় ওই নারী ও একজন উদ্ধারকারী পড়ে যান। দুর্ভাগ্যবশত নারীটি বাঁচতে পারেননি এবং উদ্ধারকারী গুরুতর আহত হয়েছেন।’
রিও গ্র্যান্ডে দো সুলে গত জুনে আরেকটি ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে, যার ফলে ১৬ জন নিহত হয় এবং ৪০টি শহরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মোখায় ক্ষতিগ্রস্ত মিয়ানমারে বাংলাদেশের পাঠানো ত্রাণসামগ্রী হস্তান্তর
প্রবল ঘূর্ণিঝড় 'মোখা' ঘনীভূত হয়ে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে: আবহাওয়া অধিদপ্তর
ব্রাজিলে কারাগারে দাঙ্গায় নিহত ৫
ব্রাজিলের একর রাজ্যের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা কারাগারে দাঙ্গায় পাঁচ বন্দি নিহত এবং দুজন আহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) কারা সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বুধবার সকালে রিও ব্রাঙ্কো শহরের অ্যান্টোনিও আমারো আলভেস কারাগারে এই দাঙ্গা বাধে।
একর স্টেট সেক্রেটারিয়েট অব জাস্টিস অ্যান্ড পাবলিক সিকিউরিটির তথ্য অনুসারে, ১৩ জন বন্দি পালানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্তু কারাগারের বাইরে রক্ষীদের হাতে ধরা পড়ে যায় তারা। এরপরই দাঙ্গা শুরু হয়।
পালানোর চেষ্টাকারীরা তখন দুই রক্ষীকে জিম্মি করে। একজন রক্ষী পালাতে সক্ষম হয়, অন্যজনকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত বন্দিরা আটকে রাখে।
আরও পড়ুন: ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারোর বাড়িতে পুলিশের অভিযান
বেসামরিক পুলিশ নিহতদের লাশ শনাক্ত করেছে, তবে তাদের পরিচয় এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
পুলিশ কারাগারের ভেতর থেকে ১৫টি অস্ত্র উদ্ধার করেছে এবং অস্ত্রগুলো কীভাবে কারাগারের ভেতর পাচার করা হয়েছিল তা তদন্ত করছে।
১৫ বছর আগে নির্মিত আন্তোনিও আমারো আলভেস কারাগারটি ওই রাজ্যের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা কারাগার হিসেবে পরিচিত। সেখানে প্রায় ৯৯ জন বন্দি ছিল, তারা সবাই অপরাধী সংগঠনের নেতা।
আরও পড়ুন: ব্রাজিলে ডে কেয়ার সেন্টারে ৪ শিশুকে হত্যা, আহত ৩
ব্রাজিলে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ৪ জন নিহত
ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারোর বাড়িতে পুলিশের অভিযান
ব্রাজিলের ফেডারেল পুলিশ বুধবার দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে এবং কোভিড-১৯ টিকার রেকর্ডের মিথ্যা তথ্যের তদন্তের অংশ হিসেবে তার সেল ফোন বাজেয়াপ্ত করেছে।
অপারেশন চলাকালীন অফিসারেরা বলসোনারোর সহকারী লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাউরো সিড এবং তার দুই নিরাপত্তা রক্ষীকেও গ্রেপ্তার করে।
বলসোনারো সাংবাদিকদের কাছে ব্রাসিলিয়ায় তার বাড়িতে অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এবং নথি জাল করার অভিযোগে সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
আরও পড়ুন: ব্রাজিলে নির্বাচন: বলসোনারোকে হারিয়ে লুলা ফের প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন
তিনি আরও বলেছেন যে তিনি কখনও কোভিড ভ্যাকসিন নেননি।
ফেডারেল পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ফেডারেল পুলিশ ব্রাসিলিয়া ও রিও ডি জেনিরোতে মোট ১৬টি অনুসন্ধান ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এবং পাশাপাশি ছয়টি প্রতিরোধমূলক আটকাদেশ দিয়েছে।
তারা বলেছে, ২০২১ সালের নভেম্বর থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ডাটাবেসে মিথ্যা ভ্যাকসিনেশন তথ্য অন্তর্ভুক্ত করাকে নিয়ে তদন্ত করছে।
ফেডারেল সুপ্রিম কোর্ট অভিযোগের তদন্তের তত্ত্বাবধান করছে, যার মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করা এবং অপরাধমূলক সংস্থায় অংশগ্রহণ করা।
আরও পড়ুন: তৃতীয় পরীক্ষাতেও করোনা পজেটিভ ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট