সামরিক অভ্যুত্থান
পারভেজ মোশাররফ: জানা অজানা নানা দিক
পাকিস্তানের সামরিক শাসক জেনারেল পারভেজ মোশাররফ (৭৯) দীর্ঘ রোগভোগের পর রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। পাকিস্তানি টিভি চ্যানেল জিও নিউজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
পারভেজ মোশাররফ ১৯৯৯ সালে রক্তপাতহীন এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নওয়াজ শরিফকে ক্ষমতাচ্যুত করেন এবং ২০০৮ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন।
ফের ক্ষমতায় আসার পর নওয়াজ শরিফের সরকার মোশাররফকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত করে এবং তাকে পাকিস্তানের একটি বিশেষ আদালত মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন।
এখানে তার জীবন এবং শাসনামলের একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেয়া হলো-
শুরুর জীবন
মোশাররফ ১৯৪৩ সালের ১১ আগস্ট দিল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা সৈয়দ মোশাররফউদ্দিন (সরকারি চাকুরিজীবী ও কূটনীতিক) এবং মা বেগম জারিন মোশাররফ। তার আরও দুই ভাই রয়েছেন। তার ভাই ড. জাভেদ মোশাররফ একজন অর্থনীতিবিদ এবং ড. নাভেদ মোশাররফ একজন অ্যানেস্থেসিওলজিস্ট।
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনাবসানের পর ভারত বিভক্তির পর, তার পরিবার পাকিস্তানে চলে যায়। সরকারি কর্মচারী বাবার চাকরির সুবাদে তিনি সাত বছর তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় কাটিয়েছেন।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ মারা গেছেন
রোহিঙ্গা সঙ্কটে ফ্রান্স বাংলাদেশের পাশে থাকবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রোহিঙ্গা সঙ্কটের স্থায়ী সমাধান খুঁজতে ফ্রান্স দৃঢ়ভাবে বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন জানিয়েছেন। ফরাসি নেতাদের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন,‘আমরা দৃঢ়ভাবে আপনাদের (বাংলাদেশ) পাশে থাকব যাতে এই সঙ্কট স্থায়ী সমাধানের মাধ্যমে শেষ হয়।’
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও প্রধানমন্ত্রী জিন কাস্টেক্সসহ ফ্রান্সের ঊর্ধ্বতন নেতাদের সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক আলোচনার বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মোমেন এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ফ্রান্সের সব নেতা বিশেষ করে ফরাসি প্রেসিডেন্টের সাথে বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যুটি গুরুত্বপূর্ণ উঠে। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ফরাসি নেতাদের জানানো হয় যে দেশটি বিভিন্ন মাধ্যমে সংকটের স্থায়ী সমাধানের চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে ২০ লাখ ডোজ টিকা উপহার দেবে ফ্রান্স: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, আমরা দ্বিপক্ষীয়, ত্রিপক্ষীয় এবং বহুপাক্ষিকভাবে চেষ্টা করছি। এমনকি আমরা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতেও গিয়েছি।
তিনি উল্লেখ করেন, সমস্যাটি মিয়ানমার তৈরি করেছে এবং সমাধানও তাদের কাছেই রয়েছে।
মোমেন বলেন, আমরা তাদের (ফরাসি নেতাদের) বলেছি যে পশ্চিমা বিশ্ব এখনও মিয়ানমারের সাথে তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের ওপর চাপ তৈরি করার জন্য এটি বন্ধ করতে হবে।
মিয়ানমারে সাম্প্রতিক সামরিক অভ্যুত্থানের পর সেদেশের সামরিক শাসকদের সাথে বৈঠক সম্ভব কি না সে ব্যাপারে ফরাসি নেতারা জানতে চেয়েছেন।
আরও পড়ুন: অটিজমবান্ধব সমাজ বিনির্মাণে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি বলেন, আমরা তাদের বলেছি মিয়ানমারে ৭০ ও ৯০ এর দশকে সামরিক সরকার ছিল যখন তারা বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন করেছিল।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৯৯২ সালে প্রায় দুই লাখ ৫৩ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিল এবং তাদের মধ্যে দুই লাখ ৩৬ হাজার সংলাপ ও আলোচনার মাধ্যমে ফিরে গেছে। একই ঘটনা ১৯৭০-এর দশকে ঘটেছিল।
মন্ত্রী বলেন,আমরা তাদের (ফ্রান্স) জানিয়েছি যে গত চার বছরে রাখাইন রাজ্যে কোনো সংঘর্ষ বা সহিংসতা নেই। সুতরাং, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য এটাই সঠিক সময়।
প্রতিবেশিদের সাথে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক রয়েছে বলেও বৈঠকে ফরাসি শীর্ষ নেতাদের অবহিত করা হয়।
মোমেন বলেন, মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়েছিল। তারা বলেছিল নিশ্চিত সুরক্ষা ও নিরাপত্তা দেবে। তারা তাদের মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতেও সম্মত হয়েছিল। কিন্তু তারা কিছুই বাস্তবায়ন করছে না।
আরও পড়ুন: প্রত্যাবাসন ঠেকাতেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হত্যাকাণ্ড: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ফরাসি নেতারা রোহিঙ্গা ইস্যুটি অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনসকে (আসিয়ান) অবহিত করা হয়েছে কি না জানতে চেয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘হ্যাঁ, আমরা আসিয়ানকে জানিয়েছি। ফ্রান্স আসিয়ানের সাথে কথা বলে শক্ত পদক্ষেপ নিতে বলেছে।
মোমেন বলেন, বাংলাদেশ ফরাসি নেতাদের বিষয়টি নিরাপত্তা পরিষদে নিতে আসতে বলেছে।
ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর কমপক্ষে ১৩৮ বিক্ষোভকারী নিহত: জাতিসংঘ
মিয়ানমারে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে সামরিক অভ্যুত্থানের পর এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১৩৮ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ৩৮ জন খুন, ইয়াঙ্গুনে সামরিক আইন জারি
সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলাকালীন সময়ে রবিবার মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী কমপক্ষে ৩৮ জনকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে একটি অধিকার গোষ্ঠী। এছাড়া দেশটির বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনের বেশ কয়েকটি স্থানে সামরিক আইন ঘোষণা করা হয়েছে।
মিয়ানমারে সু চির বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ দায়ের
মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চির বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে মঙ্গলবার তার আইনজীবী জানিয়েছেন। এদিকে, দেশটিতে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতার দখল নেয়া সামরিক বাহিনী বিরোধীদের বিরুদ্ধে তাদের তৎপরতা আরও বৃদ্ধি করেছে।
সু চিকে আটক রাখার মেয়াদ বাড়ল
মিয়ানমারের সামরিক নেতারা ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চির আটকের মেয়াদ বাড়িয়েছে। তার রিমান্ডের সময় সোমবার শেষ হওয়ার কথা ছিল। চলতি মাসের সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে লোকজনের যে বিক্ষোভ চলছে তার অন্যতম দাবি হলো সু চির মুক্তি।
সামরিক অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের বিরুদ্ধে বাইডেনের নিষেধাজ্ঞা
মিয়ানমারে সম্প্রতি সামরিক অভ্যুত্থান এবং স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চিসহ অন্যান্য প্রবীণ রাজনীতিবিদদের গ্রেপ্তারের ঘটনায় দেশটির সামরিক জান্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে বুধবার নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সমুন্নত রাখার আহ্বান মোদি-বাইডেনের
মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের এক সপ্তাহ পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশটিতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। ভারত ও বাংলাদেশ উভয়েরই মিয়ানমারের সাথে সীমান্ত সম্পর্ক রয়েছে।
‘মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান ব্যর্থ করতে বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করবে জাতিসংঘ’
জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ করতে এবং মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান ব্যর্থ করে দেয়ার জন্য পরিস্থিতি তৈরি করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করবে বলে শুক্রবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সংস্থাটির মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।