অভিবাসন
১৯ দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের আবেদন স্থগিত
চলতি বছরের শুরুর দিকে যে ১৯টি দেশের নাগরিকদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল, সেসব দেশের নাগরিকদের গ্রিন কার্ডসহ সব ধরনের অভিবাসন আবেদন গ্রহণ আপাতত স্থগিত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। সম্প্রতি দেশটির ন্যাশনাল গার্ডের দুই সদস্যকে লক্ষ্য করে গুলির ঘটনার পর অভিবাসন নীতিতে ব্যাপক পরিবর্তনের অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) অভিবাসন-সংক্রান্ত আবেদন প্রক্রিয়া ও অনুমোদনের দায়িত্বে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ও অভিবাসন পরিষেবা সংস্থা (ইউএসসিআইএস) তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত নির্দেশনায় এ তথ্য জানায়।
এসব দেশের নাগরিকদের ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এই স্থগিতাদেশের ফলে দেশগুলোতে গ্রিন কার্ডের আবেদন থেকে শুরু করে নাগরিকত্ব পাওয়ার আবেদনসহ সব ধরনের অভিবাসন-সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে।
কবে এই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হবে, তা ইউএসসিআইএসের পরিচালক জোসেফ এডলোর ওপর নির্ভর করবে বলে স্মারকে উল্লেখ করা হয়েছে।
জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা উল্লেখ করে চলতি বছরের জুন মাসে ১২ দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা দেয় ট্রাম্প প্রশাসন। সেইসঙ্গে সাতটি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়।
সে সময় আফগানিস্তান, মিয়ানমার, চাদ, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেনের নাগরিকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। আর বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান ও ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশাধিকার সীমিত করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত এসব দেশের অভিবাসীদের বিরুদ্ধে তখন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। কিন্তু ইউএসসিআইএসের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন নিজ দেশে হোক বা যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত, সব নাগরিকই বাড়তি নজরদারির আওতায় পড়বেন।
সংস্থাটি জানিয়েছে, বাইডেন প্রশাসনের সময় ওইসব দেশে থেকে যারা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছে, তাদের ‘অনুমোদিত সুবিধার সব আবেদন’ নতুন করে ব্যাপকভাবে যাচাই করা হবে।
নতুন নীতির নির্দেশিকা হিসেবে জারি করা সরকারি স্মারকে উল্লেখ করা হয়েছে, গত সপ্তাহে ওয়াশিংটন ডিসিতে ন্যাশনাল গার্ডের দুই সদস্যের ওপর হামলায় এক আফগান নাগরিককে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হামলায় এক সেনা নিহত এবং আরেকজন গুরুতরভাবে আহত হন। ওই ঘটনার পরই এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
ইউএসসিআইএস বলেছে, ‘চিহ্নিত ঝুঁকি ও যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের ওপর হুমকি বিবেচনায় ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি বা এর পরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ দেশের নাগরিকদের ব্যাপকভাবে পুনরায় যাচাই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। প্রয়োজন হলে তাদের ফের সাক্ষাৎকার, জরুরি মনে করলে একাধিক সাক্ষাৎকারও নেওয়া হতে পারে।’
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার প্রকাশিত ওই স্মারকে সংস্থাটি আরও জানায়, কাদের ব্যাপারে পুনরায় পর্যালোচনা করা হবে, সে বিষয়ে ৯০ দিনের মধ্যে তারা অগ্রাধিকারমূলক একটি তালিকা তৈরি করবে। প্রয়োজন হলে তাদের অভিবাসন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বা অন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছেও পাঠানো হবে।
গুলির ওই ঘটনার পর থেকে ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত ও দেশটিতে প্রবেশ করতে ইচ্ছুক অভিবাসীদের ওপর বাড়তি নজরদারির জন্য একাধিক সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
তবে সমালোচকেরা বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের এসব পদক্ষেপ সমষ্টিগতভাবে অভিবাসীদের ওপর শাস্তি আরোপের সামিল।
১ দিন আগে
ইতালিতে বৈধ অভিবাসন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ চলছে: ড. আসিফ নজরুল
ইতালিসহ ইউরোপীয় দেশগুলোতে বৈধ অভিবাসন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ চলছে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে পর্তুগাল ও অস্ট্রিয়াসহ ইউরোপের ৬টি দেশের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সইসহ যুগান্তকারী বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।’
মঙ্গলবার (৬ মে) ঢাকায় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে উপদেষ্টা বাংলাদেশ ও ইতালির মধ্যে মাইগ্রেশন ও মোবিলিটি বিষয়ক সমঝোতা স্মারক সই অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশের পক্ষে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং ইতালির পক্ষে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেদোসি সমঝোতা স্মারকে সই করেন। অবৈধ অভিবাসন বন্ধ করা ও বৈধ অভিবাসন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইতালির সঙ্গে প্রথমবারের মতো মাইগ্রেশন অ্যান্ড মবিলিটি বিষয়ক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করল বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘বৈধ পথে মাইগ্রেশন বৃদ্ধি করতেই আমাদের এই উদ্যোগ। যারা ইতালি যেতে ইচ্ছুক তারা যেন নিরাপদে যেতে পারেন, ভালো পারিশ্রমিক পান সেটাই লক্ষ্য আমাদের’। তিনি বলেন, ‘ইতালি সিজনাল ও নন সিজনাল দুইভাবে লোক নিবে। আমাদের পরিকল্পনা আমরা জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ করব। তারা বছরে একবার করে মিটিং করবে। আমাদের টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার আছে, যেখানে ইতালি যেন আমাদের কর্মীদের ইতালি ভাষা শিখতে পারে, আমরা এই বিষয়ে কাজ করছি।’
তিনি বলেন, আমাদের এম্বাসির ফাইল গুলো যেন দ্রুত কার্যকর হয়। এছাড়া ইতালিতে যারা বাংলাদেশি ছাত্র আছে, তাদের ভিসা প্রক্রিয়া যেন সহজ হয়। অভিবাসনের দিক দিয়ে আমাদের যেন ইতালির সরকারের ঝুকিপূর্ণ তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়, সেই বিষয়টিও আলোকপাত করা হয়েছে।
ইতালিতে কোন কোন সেক্টরে কি পরিমাণ লোক পাঠানো হবে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘সমঝোতা স্মারকে এত ডিটেইলস থাকে না। বর্তমানে আমাদের যে কোটা আছে, সেটা বাড়ানো হবে। কোটা বৃদ্ধির বিষয়ে ইতালি চিন্তাভাবনা করবে। আমরা আশা করছি, অবৈধ পথে যাওয়া অনেকটা বন্ধ হয়ে যাবে।’
এসময় ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেদোসি বলেন, ‘বাংলাদেশ-ইতালি সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। আমরা সবসময় শ্রমিকদের বৈধ পথে আসার জন্য অনুপ্রাণিত করি। ইতালি সরকার দীর্ঘদিন থেকে এটা নিয়ে কাজ করে আসছে। এই সমঝোতা স্মারকের উদ্দেশ্যে দুইটা দেশের বন্ধুত্ব আরও বাড়বে।’
এছাড়াও ড. আসিফ নজরুল সম্প্রতি সৌদি সফরের বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান, সৌদি আরবে অবৈধভাবে বসবাসকারী নারী কর্মীদের বৈধ করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। সৌদি আরব বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি সংখ্যক দক্ষ ও অদক্ষ কর্মী প্রেরণের বিষয়েও সৌদি সরকারের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।
তিনি জানান, ‘জর্ডানে পুরুষ কর্মী সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়েও জর্ডান সরকারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া জর্ডানে কর্মরত যে সকল নারী কর্মী নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মস্থল পরিবর্তনসহ নানা কারণে অবৈধ হয়েছেন, তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে স্বীকারোক্তির মাধ্যমে বৈধ হতে পারবেন। এর ফলে তারা জরিমানা ছাড়াই বৈধতা পাবেন।’ অন্যথায় তাদের বড় অঙ্কের জরিমানার মুখোমুখি হতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
২১২ দিন আগে
ফিলিস্তিনি অ্যাক্টিভিস্ট আটক: যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মাহমুদ খলিল নামে এক ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছেন মার্কিন অভিবাসন কর্মকর্তারা। খলিল কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্সের শিক্ষার্থী।
যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের গ্রিনকার্ড রয়েছে তার। এই ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থী ও গ্রিনকার্ডধারীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।
গত বসন্তে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে সংঘঠিত বিক্ষোভের জড়িত থাকার কারণেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও হোমল্যান্ড সিকিউরিটির কর্মকর্তারা।-খবর অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি)।
গত শনিবার (৮ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসভবন থেকে মাহমুদ খলিলকে গ্রেপ্তার করেন যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের (আইসিই) কর্মকর্তারা। বর্তমানে তাকে লুইজিয়ানার জেনায় একটি অভিবাসী আটককেন্দ্রে রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের গলফ রিসোর্টে হামলা
সেখানে তিনি পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। ধারণা করা হচ্ছে, শেষ পর্যন্ত তাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়া হতে পারে।
একজন শিক্ষার্থী ও গ্রিন কার্ডধারীর সঙ্গে এহেন কর্মকান্ডে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ফিলিস্তিনকে সমর্থন করায় তিনি সন্ত্রাসবাদীদের প্রতি সহানুভূতিশীল বলে অভিযোগ করে ফেডারেল সরকার যা করছে, তা অবৈধ ও অন্যায় বলে অভিহিত করেছেন সমালোচকরা।
গ্রিনকার্ড থাকার পরও কি যুক্তরাষ্ট্র থেকে নির্বাসিত হতে হয়?
সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসীরা গ্রিনকার্ড নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ পেয়ে থাকেন। তবে খলিলের গ্রিনকার্ড থাকার পরও তাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়ার শঙ্কা থাকায় এই বিষয়টি আলোচনায় এসেছে গ্রিনকার্ড মূলত কতটুকু সুরক্ষা দেয় অভিবাসীদের?
এ বিষয়ে কর্নেল ল স্কুলের ইমিগ্রেশন আইনের অধ্যাপক জ্যাকলিন কেলি-উইডমার বলেন, গ্রিনকার্ডধারীদের সাধারণত অনেক সুরক্ষা থাকে এবং নাগরিকত্ব ছাড়া এরা সবচেয়ে বেশি সুরক্ষিত হওয়ার যোগ্য।’
তবে এই সুরক্ষারও সীমাবদ্ধতা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। উদাহরণস্বরূপ, নির্দিষ্ট কিছু অপরাধের জন্য, ঠিকানা পরিবর্তনের তথ্য ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে না জানানো, বা জালিয়াতির মাধ্যমে বিয়ে করলে গ্রিনকার্ডধারীরাও নির্বাসিত হতে পারেন বলে জানান অধ্যাপক জ্যাকলিন।মাহমুদ খলিলের গ্রেপ্তারের বিষয়টি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইহুদিবিদ্বেষী কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধের নিবার্হী আদেশের আওতায় করা হয়েছে বলে জানিয়েছে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ।
ট্রাম্প গত ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় হোয়াইট হাউসে ফিরেই অঙ্গীকার করেছিলেন, গত বছর কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনিপন্থি প্রতিবাদী আন্দোলনে জড়িত কিছু বিদেশি শিক্ষার্থীকে তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেবেন। এই আন্দোলনকে তিনি ‘ইহুদিবিদ্বেষী’ বলে অভিহিত করেন।
ট্রাম্পের মতে, গাজার ক্ষমতায় থাকা ‘সন্ত্রাসী সংগঠন হামাসকে’ সমর্থন করে ওই শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রে থাকার অধিকার হারিয়েছেন।
তবে ট্রাম্পের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনে জড়িত শিক্ষার্থীরা। তারা জানিয়েছেন, তারা যুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন, এমনকি তাদের সঙ্গে কিছু ইহুদি শিক্ষার্থী ও তাদের কয়েকটি সংগঠনও ছিল।
অবশ্য কখনো-কখনো আন্দোলনকারীদের হামাস ও হিজবুল্লাহর নেতাদের সমর্থন করতে দেখা গিয়েছে। এই দুটি সংগঠনকেই যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে গণ্য করে থাকে।
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা, যা দেশের জন্য হুমকি হতে পারে এই অজুহাতেই খলিলকে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া করা হতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও খলিল কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত নন, তাকে এমন কোনো অভিযোগে গ্রেপ্তারও করা হয়নি।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও জাতীয়তা আইন অনুযায়ী, গ্রিনকার্ডধারীদের কোনো অপরাধে দোষী সাব্যস্ত না করেও তাদের ‘বহিষ্কারযোগ্য’ ঘোষণা করা যায় বলে জানান জ্যাকলিন।
আরও পড়ুন: কেমন কাটছে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাবাসীর জীবন?
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি বা অ্যাটর্নি জেনারেলের যদি যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকে যে তারা সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত ছিলেন বা ভবিষ্যতে জড়িত হতে পারেন, তাহলে তাদের নির্বাসন দেওয়া যেতে পারে বলে ব্যাখ্যা করেন তিনি।
তবে গত বছরের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনে মামলা হওয়ার মতো কোনো ঘটনা তার চোখে পড়েনি বলে মত দেন জ্যাকলিন। একটি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় কিভাবে খলিলকে সন্ত্রাসমূলক কার্যক্রমে অভিযুক্ত করা যায় এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেন তিনি।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস। এর জবাবে গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ইসরায়েলকে হামলায় সমর্থন দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এরই জেরে গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ফিলিস্তিনিপন্থি ও ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে। কয়েক মাস ধরে চলে এই বিক্ষোভ।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় ফিলিস্তিনিপন্থি শিক্ষার্থী বিক্ষোভকারীদের পক্ষের প্রধান আলোচকদের একজন ছিলেন মাহমুদ খলিল। এই ভূমিকার জন্য বেশ পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। এ কারণেই তাকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়েই ইহুদীবিদ্বেষী কর্মকাণ্ড প্রতিহত করতে ট্রাম্পের নিবার্হী আদেশের কার্যকারিতা শুরু হয়েছে বলে মনে করেন সমালোচকরা।
এ ঘটনার পর রবিবার (৯ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, ‘আমেরিকায় হামাস সমর্থকদের ভিসা ও গ্রিনকার্ড বাতিল করবে প্রশাসন, যাতে তাদের নির্বাসন দেওয়া যায়।’
এদিকে, খলিলের আইনজীবীরাও তার আটকের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই শুরু করেছেন। আদালত মামলাটি বিবেচনা করা পর্যন্ত খলিলকে নির্বাসন না দেওয়ার জন্য আদেশ দিয়েছেন নিউ ইয়র্ক সিটির একজন ফেডারেল জজ। আগামী বুধবার (১২ মার্চ) এই মামলার শুনানির দিন নির্ধারিত হয়েছে।
২৬৮ দিন আগে
বাংলাদেশিসহ ১০ অভিবাসীকে গুয়ান্তানামো বে পাঠানোর সিদ্ধান্ত, মামলা
যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর অভিবাসন নীতির আওতায় বাংলাদেশিসহ ১০ অভিবাসীকে কিউবার কুখ্যাত গুয়ান্তানামো বে কারাগারে স্থানান্তরের সিদ্ধান্তের ঘটনায় মার্কিন প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
স্থানীয় সময় শনিবার (১ মার্চ) ওয়াশিংটন ডিসির ফেডারেল আদালতে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। নাগরিক অধিকার নিয়ে কাজ করা আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (এসিএলইউ) এই মামলা করেছে।
সংগঠনটির ভাষ্যে, টেক্সাস, অ্যারিজোনা ও ভার্জিনিয়া থেকে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও ভেনেজুয়েলার যে নাগরিকদের আটক করা হয়েছে, তারা কোনো গ্যাং সদস্য বা ঝুঁকিপূর্ণ অপরাধীও নন। অভিবাসন আইন লঙ্ঘন করে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে গুয়ান্তানামো বে স্থানান্তরের এই পরিকল্পনার পেছনে বৈধ কোনো যুক্তি নেই বলে অভিমত দেয় এসিএলইউ।
আরও পড়ুন: অভিবাসন নীতিতে কঠোর ট্রাম্প, তবে ধনী হলে অন্য কথা
এছাড়া ভীতি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এসিএলইউ জানায়, মামলার ১০ জন আটক ব্যক্তির সবাইকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চূড়ান্তভাবে নির্বাসিত করার আদেশ রয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে ইতোমধ্যে গুয়ান্তানামো বেতে স্থানান্তরের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের মুখপাত্র ট্রিশিয়া ম্যাকলাফলিন শনিবার এসিএলিউয়ের এই আইনি চ্যালেঞ্জকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, আদালতে ওই এজেন্সির দায়ের করা মামলার বৈধতা নিয়ে লড়বে ট্রাম্প প্রশাসন।
দ্বিতীয় মেয়াদে মসনদে বসেই অবৈধ অভিসাসীদের বিরুদ্ধে খড়গহস্ত হন ট্রাম্প। অভিবাসীদের আটক করে পাঠাতে শুরু করেন নিজ নিজ দেশে।
সূত্র: পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন
২৭৬ দিন আগে
আটলান্টিক উপকূল থেকে ৯১ অভিবাসীকে উদ্ধার করেছে মরক্কো
আটলান্টিক মহাসাগর উপকূল থেকে সাব-সাহারান দেশগুলোর ৯১ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করেছে মরক্কোর নৌবাহিনী।
দেশটির রয়্যাল আর্মড ফোর্সের এক বিবৃতিতে বুধবার (১৯ জুন) বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দাখলার ১৮৯ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অভিযান চলাকালে একটি অভিবাসীবাহী নৌকা আটক করে মরক্কোর নৌবাহিনীর একটি ইউনিট। নৌকাটি উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকা উপকূল থেকে স্পেনের ক্যানারি আইল্যান্ডের দিকে যাচ্ছিল।
আরও পড়ুন: ভূমধ্যসাগরে দুটি নৌকা ডুবে ১১ জন নিহত, নিখোঁজ ৬৪
তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর দেশটির যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়।
উল্লেখ্য, অবৈধভাবে ইউরোপে পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে পশ্চিম আফ্রিকার অভিবাসনপ্রত্যাশীদের কাছে একটি ট্রানজিট হাব হয়ে উঠেছে মরক্কো।
৫৩২ দিন আগে
জনঘনত্ব ও ঢাকামুখী অভিবাসন রোধ করলে সুফল পাওয়া যাবে: ডিএসসিসি মেয়র
জনঘনত্ব ও ঢাকামুখী অভিবাসন রোধ করা গেলে তবেই পরিকল্পনার সুফল পাওয়া যাবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
বুধবার সিরডাপ মিলনায়তনে নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত ‘নিরাপদ নগর দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও বেস্ট আরবান রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড-২০২৪’ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: ডিএসসিসির কর্মচারীদের আবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে: ডিএসসিসি মেয়র
তাপস বলেন, এখানে যিনি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন, তিনি দেখিয়েছেন- ঢাকার জনঘনত্ব পৃথিবীর মধ্যে সব শহরের চেয়ে বেশি। আমাদের মূল সমস্যা হলো, আমরা পরিকল্পনা করি বর্তমান অবস্থান ও তথ্য নিয়ে। আজকে যদি বর্তমান জনঘনত্ব বিবেচনায় পরিকল্পনা করা হয় তাহলে ১০ বছর পর দেখা যাবে এই ঘনত্ব আর থাকছে না। বেড়ে যাচ্ছে। কারণ একদিকে জনসংখ্যা বৃদ্ধির চাপ, অন্যদিকে ঢাকামুখী অভিবাসনের চাপ। এছাড়াও আমরা যে পরিকল্পনা করি তা বাস্তবায়ন করতেও ৩-৪ বছর লাগে। তাই, জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে জনঘনত্ব বৃদ্ধি ও ঢাকামুখী অভিবাসনের যে স্রোত, তা থামাতে না পারলে উন্নয়নের সুফল পাওয়া যাবে না। জনঘনত্ব ও ঢাকামুখী অভিবাসন রোধ করা গেলে তবেই পরিকল্পনার সুফল পাওয়া যাবে।
ঢাকাকে নিরাপদ ও বাসযোগ্য করতে তিনটি কাজ আবশ্যক জানিয়ে মেয়র বলেন, ঢাকাকে বাসযোগ্য করতে আজকের প্রবন্ধ উপস্থাপনায় ১৯টি সূচকের কথা বলা হয়েছে। আমি মনে করি ৩টি কাজ করতে পারলেই বাকি সূচকও পূরণ হয়ে যাবে। প্রথমত, আমাদের জাতিগতভাবে চেতনায় দুর্নীতি মুক্ত হতে হবে। দ্বিতীয়ত, আইনের কঠোর প্রয়োগ করতে হবে। আর তৃতীয়ত, আইন বাস্তবায়নের জন্য বিচারালয়কে আরও শক্তিশালী করতে হবে। তাহলেই আমাদের কাজের মাধ্যমে শহরের বাসযোগ্যতা আরও বৃদ্ধি পাবে।
অনুষ্ঠানে দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক মো. সাইফুল আলম বলেন, নগরের সংকট সমাধানে সরকারের পাশাপাশি নাগরিকদেরও দায়িত্ব নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, গ্রাম হবে শহর, শহর হবে বাসযোগ্য- এই স্লোগানে যেতে হবে।
আরও পড়ুন: নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের পরিকল্পিত উন্নয়নে প্রকল্পের অনুমোদন: ডিএনসিসি মেয়র
বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ঢাকা শহরে প্রতিদিন কোথাও না কোথাও আগুন লাগে। এই শহর কতটা নিরাপদ? তা আমাদের প্রশ্নেই ঘাটতি ফুটে উঠে। পৃথিবীর মেগাসিটির তালিকায় ঢাকা আয়তনের দিক থেকে ৪০তম, অথচ জনসংখ্যার ঘনত্বে প্রথম। এই শহরে পাঁচ লাখ গাড়ি চলার ব্যবস্থা আছে, অথচ চলে ১৬ লাখ গাড়ি। ঢাকায় রাস্তা, গাছ, জলাশয় অনেক কমলেও বাড়ছে শুধু মানুষ।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্লান্যার্সের সাধারণ সম্পাদক শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন- বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের নগরায়ন ও পরিবেশ সম্পাদক স্থপতি সুজাউল ইসলাম খান, সাংবাদিক অমিতোষ পাল, বেস্ট আরবান রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড-২০২৪ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক হেলিমুল আলম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি মতিন আব্দুল্লাহ।
সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল খান।
অনুষ্ঠানে ৫টি ক্যাটাগরিতে ৬ জন সাংবাদিককে নগর সাংবাদিকতার জন্য 'বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড-২০২৪' দেওয়া হয়। নিউ এইজের রাশেদ আহমেদ, বণিক বার্তার আল ফাতাহ মামুন, সমকালের যৌথভাবে অমিতোষ পাল ও লতিফুল ইসলাম, সারাবাংলা.নেটের রাজনীন ফারজানা এবং ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের নাজমুল সাঈদকে 'বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড-২০২৪' দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে ঢাকার সবুজায়ন আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে পৌঁছাবে: মেয়র তাপস
৫৬১ দিন আগে
সুষ্ঠু অভিবাসন বাস্তবায়নে উপজেলা কমিটি করা হচ্ছে: প্রবাসীকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী
সুষ্ঠু অভিবাসন কার্যক্রম বাস্তবায়নে উপজেলা পর্যায়ে ‘উপজেলা মাইগ্রেশন কো-অর্ডিনেশন কমিটি’ গঠন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী।
মঙ্গলবার (১৪ মে) মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি ও রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধিবিষয়ক পর্যালোচনা সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়ে আয়োজিত এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রবাসীকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জানান, অভিবাসন প্রত্যাশীদের সঙ্গে রিক্রুটিং এজেন্সির মেলবন্ধন হিসেবে স্থানীয় পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সমন্বয়ে উপজেলা পর্যায়ে এই কমিটি গঠন করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি শ্রমিকদের ভিসা সহজ করার আহ্বান প্রবাসী প্রতিমন্ত্রীর
উপজেলা মাইগ্রেশন কো-অর্ডিনেশন কমিটি অভিবাসনবিষয়ক সচেতনতা বাড়ানো ও সক্ষমতা উন্নয়নের পদক্ষেপ গ্রহণ, প্রতারিত কর্মীদের সহযোগিতা করা, প্রত্যাগত কর্মীদের পুনঃ একত্রীকরণ, অভিবাসন সংক্রান্ত সেবা বিষয়ে সেবা গ্রহীতা ও সেবা প্রদানকারী মধ্যে বিদ্যমান গ্যাপ চিহ্নিত করে সেসব উত্তরণে পরামর্শ দেওয়া, স্থানীয় প্রতিষ্ঠান, সেবা দানকারী সংস্থা, উপকারভোগীদের তথ্য প্রাপ্তিতে প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করা করবে।
সভায় আরও ছিলেন- প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রুহুল আমিন, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) মহাপরিচালক সালেহ আহমদ মোজাফফর, বাংলাদেশ ওভারসিস এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের (বোয়েসেল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক মো. হামিদুর রহমান, প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মজিবুর রহমানসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: বিদেশে কর্মী পাঠাতে রিক্রুটিং এজেন্সিকে মানবিক হতে হবে: প্রবাসীকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী
৫৬৯ দিন আগে
জলবায়ু অভিবাসন মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান
জলবায়ুকেন্দ্রিক অভিবাসন মোকাবিলায় সমন্বিত পদক্ষেপ না নিলে বাংলাদেশ এবং বিশ্বের লাখ লাখ মানুষের ওপর তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা।
সোমবার (২৫ জুলাই) ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জলবায়ু পরিবর্তন ও অভিবাসন বিষয়ক নীতি সংলাপে এসব আশঙ্কা প্রকাশ করেন দেশী বিদেশী আলোচকরা। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) যৌথভাবে এই সংলাপের আয়োজন করে।
সংলাপে সরকার, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বেসরকারি সংস্থা, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিসহ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও অভিবাসন নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিরা অংশ নেন।
সংলাপের উদ্দেশ্য ছিল, জলবায়ু পরিবর্তন-অভিবাসন সংক্রান্ত বৈশ্বিক এজেন্ডাকে আরও গতিশীল করা। এছাড়া মিশরের শারম-এল-শেখ শহরে আসন্ন জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনে অভিবাসন, পরিবেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে যাতে বাংলাদেশ নেতৃত্বে দিতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা করা।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ.কে আব্দুল মোমেন বলেন, জলবায়ু অভিবাসী ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের গাফিলতি থাকা ঠিক না। তিনি আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের গতিধারা বজায় রাখার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য একটি শালীন জীবনযাত্রার অবস্থা গড়তে সরকার যে চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হচ্ছে, তা তুলে ধরেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের নিরলস কূটনৈতিক প্রচেষ্টার কারণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ধীরে ধীরে জলবায়ু-সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি ও প্রয়োজনীয় অর্থায়নের ব্যবস্থা তৈরির মত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে মুখ খুলছে।
নীতি সংলাপের সূচনা বক্তব্যে পররাষ্ট্র সচিব রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন জলবায়ু পরিবর্তের কারণে সৃষ্ট অভিবাসন সমস্যা বিশ্বব্যাপী উত্থাপনে বাংলাদেশের গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন।
পররাষ্ট্র সচিব জোর দিয়ে বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের মতো দুর্বল দেশগুলোর পর্যাপ্ত অর্থ ও প্রযুক্তি প্রয়োজন।’
প্যারিস চুক্তির আলোকে এই শতাব্দীর শেষ নাগাদ বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে ২° সে. সেলসিয়াস-এর নিচে সীমিত করার লক্ষ্য পূরণের জন্য শক্তিশালী বৈশ্বিক পদক্ষেপের প্রয়োজন। সেই সাথে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং নীতিগুলিতে জলবায়ু অভিবাসনকে একীভূত করা দরাকার।
পড়ুন: জলবায়ু অভিবাসীদের ব্যাপারে অপর্যাপ্ত পদক্ষেপ বৈশ্বিক নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণ হতে পারে: ঢাকা
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমন ও অভিযোজনে সমন্বিত পদক্ষেপ, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন নীতি ও পরিকল্পনা জলবায়ু অভিবাসন মোকাবিলায় সাহায্য করতে পারে৷ আজকে নেয়া নীতিগত সিদ্ধান্তগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, অভিবাসী এবং তাদের পরিবারের জন্য কতটা সহায়ক তা নির্ধারণ করবে।’
সংলাপে আইওএম-এর মাইগ্রেশন অ্যান্ড ক্লাইমেট অ্যাকশনের বিশেষ দূত মিস ক্যারোলিন ডুমাস 'গ্লোবাল অ্যান্ড রিজিওনাল কনসালটেটিভ প্রসেস অ্যান্ড পলিসি ফ্রেমওয়ার্কস'-এর উপর একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এছাড়া ক্লাইমেট ব্রিজ ফান্ড সচিবালয়ের প্রধান গোলাম রব্বানী বাংলাদেশে ’জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূল প্রভাবের প্রেক্ষাপটে মানব গতিশীলতা' বিষয়ে আরেকটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-এর ডেপুটি মহাপরিচালক উগোচি ডেনিয়েলস বলেন, ‘আইওএম অভিবাসন নীতিমালা এবং প্রায়গিক জ্ঞান সহায়তা প্রদানে বিশেষায়িত একটি প্রতিষ্ঠান। অভিবাসন, পরিবেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত প্রাতিষ্ঠানিক কৌশল ২০২১-২০৩০ এর প্রতিফলন হিসেবে জলবায়ু অভিবাসন নিয়ে আইওএম আহ্বায়ক সংস্থা হিসেবে কাজ করবে। জলবায়ু পরিবর্তনে যারা ইতোমধ্যে অভিবাসন করেছেন, করতে আগ্রহী এবং যারা অভিবাসন করেননি, সকলের জন্য সমাধান আনয়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আইওএম।
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইস বলেছেন, ‘জলবায়ু অভিবাসন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় বাংলাদেশে জাতিসংঘ টেকসই উন্নয়ন সহায়ক অবকাঠামো (ইউএনএসডিসিএফ) ২০২২-২০২৬-এ অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে আলোচিত হয়েছে। জাতিসংঘ পরিবার জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূলতা মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা প্রদানে অঙ্গীকারবদ্ধ।’
এছাড়াও, বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, আন্তর্জাতিক জলবায়ু পরিবর্তন এবং উন্নয়ন কেন্দ্রের পরিচালক সালিমুল হক, দুর্যোগ অভিবাসন প্লাটফর্ম সচিবালয়ের প্রধান এটেল সোলবার্গ এবং ইউএন উইমেন-এর প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট দিলরুবা হায়দার সংলাপে কথা বলেন।
পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় নতুন বৈশ্বিক উদ্যোগ চায় ঢাকা
১২২৮ দিন আগে
খায়রুজ্জামানকে হস্তান্তরে মালেশিয়ার হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ
সাবেক হাইকমিশনার এম খায়রুজ্জামানকে বাংলাদেশে হস্তান্তরের আদেশ স্থগিত করেছে মালেশিয়া। দেশটির অভিবাসন বিভাগের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তীকালীন এই আদেশ দিয়েছেন দেশটির হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার খায়রুজ্জামানের রিট (হেবিয়াস কর্পাস) আবেদনের মামলা পরিচালনার সময় বিচারক মোহাম্মদ জাইনি মাজলান এই আদেশ দিয়েছেন। দেশটির নিউজ পোর্টাল ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
খায়রুজ্জামানকে (৬৫) গত ১০ ফেব্রুয়ারি মালয়েশিয়ার আমপাং এলাকার বাসা থেকে দেশটির অভিবাসন কর্তৃপক্ষ গ্রেপ্তার করেছিল।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত খায়রুজ্জামান আটক
তার স্ত্রী রিতা রহমানের দাবি, বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
সাবেক এই কূটনীতিকের আইনজীবিরা দাবি করেছেন, তিনি জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) কার্ডসহ একজন রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী ছিলেন। তাছাড়া তিনি কোনও অভিবাসন আইন লঙ্ঘন করেননি এবং তাই তাকে গ্রেপ্তার করা বেআইনি ছিল।
স্থগিতাদেশের জন্য খায়রুজ্জামানের আবেদন মঞ্জুর করে বিচারক জাইনি বলেছেন, ‘ আমি আদালতে যে আদেশ দিয়েছি তার বিরুদ্ধে তাকে নির্বাসিত করা হয়েছে এমনটা আমি শুনতে চাই না।’
খায়রুজ্জামানের রিট আবেদনের শুনানির জন্য আদালত ২০ মে দিন ধার্য করেছেন।
আরও পড়ুন: খায়রুজ্জামানকে শিগগিরই দেশে ফিরিয়ে আনা হবে: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
উল্লেখ্য, সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর এম খায়রুজ্জামান ১৯৭৫ সালের জেল হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন এবং ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে যোগ দেয়ার আগে তাকে খালাস দেয়া হয়।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাকে ঢাকায় আসার আহ্বান জানানো হয়। কিন্তু খায়রুজ্জামান দেশে ফিরে না এসে কুয়ালালামপুরে জাতিসংঘের শরণার্থী কার্ড নিয়ে সেখানেই থেকে যান বলে দ্য স্টারের খবরে বলা হয়েছে।
১৩৮৮ দিন আগে
করোনার মন্দার পর বৈদেশিক কর্মসংস্থানে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ
বৈশ্বিক শ্রমবাজারে বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য স্বাভাবিকতা ফিরে আসার ইতিবাচক লক্ষণ হিসাবে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) থেকে এক মাসে অভিবাসন ছাড়পত্র প্রাপ্ত কর্মীদের সংখ্যা গত এক মাসে (নভেম্বর) এক লাখ ছাড়িয়েছে।
বিএমইটি মহাপরিচালক শহীদুল আলম ইউএনবিকে জানান, ২০২১ সালে নভেম্বর মাসে এক লাখ দুই হাজার ৮৬৩ জন কর্মীকে বিদেশে যাওয়ার জন্য ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। যেটা কিনা করোনা শুরু হওয়ার পর এক মাসে সর্বোচ্চ।
মহাপরিচালক জানান, ২০১৭ সালের মার্চ মাসে ১ লাখের বেশি কর্মী বিদেশে গিয়েছিলেন। আর ওই বছর মোট বিদেশে গিয়েছিলেন ১০ লাখ ৮ হাজার ৫২৫ জন, যা বাংলাদেশের এযাবৎকালের রেকর্ড। অবশ্য তখন করোনা মহামারি ছিল না। সেই হিসাবে নভেম্বর মাসের এক লাখ কর্মীর বিদেশে যাওয়ার ঘটনা রেকর্ড বলে জানা যায়।
আরও পড়ুন: মধ্যপ্রাচ্যের বাইরেও শ্রমবাজার খোঁজার তাগিদ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
বিএমইটি থেকে জানা যায়, স্বাধীনতার পরপর বছরে মাত্র হাজার পাঁচেক মানুষের বৈদেশিক কর্মসংস্থানের মধ্য দিয়ে বৈশ্বিক শ্রমবাজারে প্রবেশ করে বাংলাদেশ। ১৯৮৯ সালে প্রথমবারের মতো বছরে এক লাখ কর্মীর বিদেশে কর্মসংস্থান ঘটে। এরপর সেটি ২-৩ লাখ হয়ে ২০০৭ সালে ৮ লাখে পৌঁছে যায়। এরপর ২০০৮ সালে বাংলাদেশ থেকে ৮ লাখ ৭৫ হাজার বাংলাদেশির বিদেশে কর্মসংস্থান হয়। এরপর টানা কয়েক বছর গড়ে ৫-৬ লাখ শ্রমিক বিদেশে গিয়েছেন। ২০১৭ সালে বছরে ১০ লাখ কর্মী পাঠানোর রেকর্ড করা হয়। তবে পরের বছর ২০১৮ সালে ৭ লাখ ৩৪ হাজার এবং ২০১৯ সালে ৭ লাখ কর্মী বিদেশে যান।
বিএমইটি জানায়, ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে ৩৫ হাজার ৭৩২, ফেব্রুয়ারি মাসে ৪৯ হাজার ৫১০ এবং মার্চ মাসে ৬১ হাজার ৬৫৩ জন কর্মী বিদেশে গেছেন। তবে দেশে দ্বিতীয় দফায় করোনা মহামারির প্রকোপ বৃদ্ধি পেলে এপ্রিলে আবার লকডাউনের কারণে কর্মী যাওয়া কমে যায়। এই মাসে ৩৪ হাজার ১৪৫, মে মাসে ১৪ হাজার ২০০, জুনে ৪৫ হাজার ৫৬৭, জুলাই মাসে আবার ১২ হাজার ৩৮০ ও আগস্টে ১৯ হাজার ৬০৪ জন কর্মী বিদেশে যান।
১৪২৩ দিন আগে