বিএসইসি
পুঁজিবাজার সংস্কারে সাহায্য ও কারগরি সুবিধা দিতে এডিবির আগ্রহ
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) টেকসই সংস্কারে সাহায্য ও বাজার উন্নয়নে কারিগরি সহযোগিতা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)।
এডিবির একটি প্রতিনধিদল বৃহস্পতিবার আগারগাঁও বিএসইসি ভবনে কমিশন চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
এডিবি প্রতিনিধি দলে ছিলেন বাংলাদেশ আবাসিক মিশনের সিনিয়র ফিন্যান্সিয়াল সেক্টর স্পেশালিস্ট মনোহরি গুনবর্ধনে ও সিনিয়র প্রোজেক্ট অফিসার (ফিন্যান্সিয়াল সেক্টর) মো. রাশেদ আল হাসান।
কমিশন চেয়ারম্যান ছাড়াও বিএসইসির পরিচালক মো. আবুল কালাম, বিএসইসির যুগ্ম পরিচালক সৈয়দ মুহাম্মদ গোলাম মাওলা ও বিএসইসির উপ পরিচালক মোহাম্মদ আসিফ ইকবাল উপস্থিত ছিলেন।
দুপক্ষের আলোচনায় দেশের পুঁজিবাজারের সার্বিক উন্নয়নের বিভিন্ন দিক উঠে আসে। দেশের পুঁজিবাজারের সংস্কার পরিকল্পনা ও সংস্কার বাস্তবায়ন, পুঁজিবাজারের আধুনিকায়ন, বিএসইসির সার্ভেইল্যান্স সিস্টেমের আধুনিকায়ন, ইআরপি সিস্টেমের উন্নয়ন ও বাস্তবায়ন, পুঁজিবাজারে স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা ও সুশাসন বৃদ্ধি, তালিকাভুক্ত কোম্পানিসমূহের স্বতন্ত্র পরিচালকদের দক্ষতা-সক্ষমতার উন্নয়ন ঘটিয়ে কোম্পানিসমূহের সুশাসন নিশ্চিতকরণ, বন্ড মার্কেটের উন্নয়ন, টেকসই অর্থায়ন, কমোডিটি এক্সচেঞ্জ ও ডেরিভেটিভ পণ্য, দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের ক্ষেত্র হিসেবে পুঁজিবাজারকে প্রতিষ্ঠা, দেশের পুঁজিবাজারের ভালো মৌল ভিত্তিসম্পন্ন দেশি-বিদেশী ও বহুজাতিক কোম্পানির তালিকাভুক্তি, দেশের পুঁজিবাজারের বিদ্যমান আইনসমূহ যুগোপযোগিকরণ মতো বিষয়ে আলোচনায় অগ্রাধিকার পায়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-এডিবি ১৩০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি, চার প্রকল্পে অর্থায়ন
বৈঠকে পুঁজিবাজারের সংস্কারের জন্য বিএসইসির গৃহীত উদ্যোগ-কার্যক্রম, গঠিত টাস্কফোর্স ও তদন্ত কমিটির রিপোর্ট এবং পুঁজিবাজারের উন্নয়নে বিএসইসির পরিকল্পনার বিষয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।
পুঁজিবাজার সংস্কারের অংশ হিসেবে টাস্কফোর্সের সুপারিশের ভিত্তিতে মার্জিন রুলস, পাবলিক ইস্যু রুলস ও মিউচুয়াল ফান্ড বিধিমালা প্রণয়নের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়াও তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী বিএসইসির এনফোর্সমেন্ট কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানান কমিশন চেয়ারম্যান।
বৈঠকে দেশের পুঁজিবাজারের টেকসই সংস্কার ও উন্নয়নে কারিগরি সহযোগিতার বিষয়ে এডিবি আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বিএসইসিও আগামীতে দেশের পুঁজিবাজার সংস্কার বাস্তবায়ন এবং বাজারের আধুনিকায়নে এডিবির সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেছে।
১১৯ দিন আগে
পুঁজিবাজারে আসছে সরকারি কোম্পানি, আলোচনায় অগ্রগতি
দেশের পুঁজিবাজারকে আরও চাঙা করতে সরাসরি সরকারি এবং যেসব বহুজাতিক কোম্পানিতে সরকারের মালিকানা আছে, এমন কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশনা অনুসারে সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির বিষয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে খাতসংশ্লিষ্টদের আলোচনা হয়।
আলোচনায় সরকারি মালিকানাধীন লাভজনক মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানিগুলোর পুঁজিবাজারে সরাসরি তালিকাভুক্তির পাশাপাশি যেসব বিদেশি বা বহুজাতিক কোম্পানিতে সরকারের মালিকানা রয়েছে, সেগুলোকে সরাসরি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে দ্রুত পুঁজিবাজারে আনার ওপর জোর দেয় বিএসইসি।
ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড, কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড, সাইনোভিয়া বাংলাদেশ লিমিটেড, নোভার্টিস বাংলাদেশ লিমিটেড, সিনজেন্টা বাংলাদেশ লিমিটেড, নেসলে বাংলাদেশ পিএলসি, পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড, নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড, বি-আর পাওয়ারজেন লিমিটেড, সিলেট গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড, বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড, জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, কর্ণফুলী গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড, সাধারণ বীমা করপোরেশন এবং জীবন বীমা করপোরেশনের মতো কোম্পানিগুলোর একটি তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে এবং তাদের দ্রুত পুঁজিবাজারে আনার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: একটি সাংবাদিক ফোরামের জন্যই ১৫ লাখ টাকা, প্রশ্নের মুখে বিএসইসি
সভায় ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, “পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির ফলে কোম্পানিগুলোর সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়বে। একই সঙ্গে কোম্পানিগুলোর ভ্যালুয়েশন তথা বাজারমূল্য নির্ধারণও সহজ হবে। এতে যেমন কোম্পানিগুলো উপকৃত হবে, তেমনি দেশের পুঁজিবাজারও শক্তিশালী হবে।”
তিনি সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা দ্রুত বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানান।
প্রসঙ্গত, ১১ মে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় পুঁজিবাজারের বাস্তব অবস্থা পর্যালোচনা এবং উন্নয়নে করণীয় ঠিক করতে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিএসইসির চেয়ারম্যান, অর্থ উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব উপস্থিত ছিলেন।
ওই বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা পুঁজিবাজার উন্নয়নে একাধিক নির্দেশনা দেন, যার মধ্যে সরকারি, দেশি-বিদেশি ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
বিএসইসি জানিয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা অনুযায়ী ইতোমধ্যে পুঁজিবাজার উন্নয়নে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে এবং নির্দেশনা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
১২৩ দিন আগে
সালমান এফ রহমান ও তার ছেলেকে পুঁজিবাজারে আজীবন অবাঞ্ছিত ঘোষণা
শেখ হাসিনা সরকারের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং তার ছেলে আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ শায়ান এফ রহমানকে পুঁজিবাজারে আজীবন অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
বুধবার (৩০ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি জানায়, বিএসইসির ৯৬৫তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কমিশন চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে এ সভায় সালমান ও তার পুত্র শায়ানকে নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি সালমানকে ১০০ কোটি টাকা এবং শায়ানকে ৫০ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
কমিশন গঠিত পুঁজিবাজার অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, আইএফআইসি ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যান সালমান ও ভাইস চেয়ারম্যান শায়ান 'আইএফআইসি আমার বন্ড' নামে বাজারে আইএফআইসি ব্যাংকের ইস্যু করা— এমন ধারণা দিয়ে যে বন্ড ছেড়েছিল তা আদৌ ব্যাংকটির ইস্যুকৃত না। আইএফআইসি ব্যাংক বন্ডটির জামিনদার ছিল কিন্তু ইস্যু করা বন্ড থেকে টাকা তুলেছে শ্রীপুর টাউনশিপ লিমিটেড নামের একটি রিয়েল স্টেট কোম্পানি।
এতে করে ব্যাংকের বন্ডের কথা বলে রীতিমতো বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। ২০২৩ সালে ৪ জুন ১০০০ কোটি টাকা ইস্যু মূল্যের অনুমোদিত এ বন্ডের পুরো প্রক্রিয়াই কমিশনের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হিসেবে তদন্তে উঠে এসেছে।
পড়ুন: ৭ দিনের রিমান্ডে সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল
সালমান এবং শায়ান ছাড়াও বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বন্ড প্রতারণার দায়ে ইস্যু করা বন্ডের অ্যাডভাইজর অ্যান্ড অ্যারেঞ্জার আইএফআইসি ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেডের সাবেক প্রধান নির্বাহী (সিইও) ইমরান আহমেদকে পাঁচ বছরের জন্য পুঁজিবাজারের সব ধরণের কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ করেছে কমিশন।
প্রশ্নবিদ্ধ এ বন্ড অনুমোদন দেওয়ায় বিএসইসির তৎকালীন চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে আজীবন নিষিদ্ধ এবং তৎকালীন কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এছাড়া আইএফআইসি ব্যাংকের তৎকালীন পরিচালক শাহ আলম সারওয়ারের বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট কার্যক্রম নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আইএফআইসি ব্যাংককে সতর্ক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
এর পাশাপাশি ব্যাংকটির সে সময়কার পরিচালক এআরএম নাজমুস সাকিব, গোলাম মোস্তফা, জাফর ইকবাল, কামরুন নাহার আহমেদ এবং সুধাংশু শেখর বিশ্বাসকে সতর্ক করবে কমিশন।
ইস্যু করা বন্ডের ক্রেডিট রেটিং প্রতিষ্ঠান হিসেবে এমার্জিং ক্রেডিট রেটিং লিমিটেডকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বন্ড প্রতারণায় জড়িত সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি।
১২৭ দিন আগে
পুঁজিবাজারে আগ্রহ বড় বিনিয়োগকারীদের, বেড়েছে বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা
টানা উত্থান ও লেনদেনে চাঙ্গাভাবের কারণে পুঁজিবাজারে বড় বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ফিরে আসছে বলে জানিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। গত বছরের তুলনায় এ বছর বেনিফিশিয়ারি অ্যাকাউন্টের (বিও) সংখ্যা বেড়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
বিএসইসির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, নানা মহলে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ও বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা কমছে বলা হলেও আসল তথ্য বলছে ভিন্ন কথা। এক বছরে বাজারে কমেছে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর সংখ্যা, বেড়েছে বৃহৎ বিনিয়োগ।
গত বছরের জুনের তুলনায় চলতি বছর একই সময়ে বাজারে ৫০ কোটি থেকে ৫০০ কোটি টাকার পোর্টফোলিওর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি ৫০ লাখ টাকার ওপরেও যেসব পোর্টফোলিও আছে তার সংখ্যা বেড়েছে বলে জানিয়েছে বিএসইসি।
বছর ব্যবধানে যাদের বিনিয়োগ ১ লাখ টাকার নিচে কেবল এমন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কমেছে। গত বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ১ লাখ টাকার নিচের পোর্টফোলিওর সংখ্যা ছিল ৯ লাখ ১৬ হাজার ১৫৭, যা এ বছর একই সময়ে কমে ৮ লাখ ৩১ হাজার ৭৪৮ তে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা-চট্টগ্রামে সূচকের উত্থান
কোটিপতি বিনিয়োগকারীর সংখ্যাবৃদ্ধি
যেসব বিনিয়োগকারীর পোর্টফোলিওর ভ্যালু ১ কোটি টাকার ওপরে গত বছর জুন মাসে তাদের সংখ্যা ছিল ১২ হাজার ৯৯৩, যা চলতি বছর বেড়ে হয়েছে ১৩ হাজার ৩১৬। ১০ কোটি টাকার ওপরে পোর্টফোলিওর সংখ্যা গত বছরের তুলনায় তিনটি কমলেও বেড়েছে ৫০ কোটি টাকার ওপরে বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা।
৫০ কোটি টাকার ওপরে গত বছর জুনে বিনিয়োগকারী ছিলেন ৬৯৬ জন, যা এ বছর বেড়ে হয়েছে ৭৩৩ জন। একইভাবে ১০০ কোটি টাকার ওপরে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেড়েছে ২২ জন এবং ৫০০ কোটি টাকার ওপরে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেড়েছে দুজন।
সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জগুলো বলছে, বড় বিনিয়োগকারীরা বাজারে টাকা ধরে রাখছেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাজার ঘুরে দাঁড়াবে বলে প্রত্যাশা করছেন তারা।
মতিঝিলের গ্লোবাল সিকিউরিটিজের শাখা ব্যবস্থাপক আসাদ মিয়া বলেন, ‘ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা টানা পতনের ধাক্কা সামলাতে না পারলেও বড় বিনিয়োগকারীরা টাকা ধরে রেখেছেন। কারণ দীর্ঘমেয়াদে বাজারে অর্থলগ্নি করলে লাভ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।’
ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের তুলনায় বাজার এখন বড় বিনিয়োগকারী-বান্ধব উল্লেখ করে প্রায় এক দশক ধরে পুঁজিবাজারের সঙ্গে জড়িত এক বিনিয়োগকারী তারেক হোসেন বলেন, ‘আমরা যারা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী তারা ট্রেডিং করি, আর যারা বড় বিনিয়োগকারী তারা ইনভেস্ট করেন। ট্রেডিংয়ে উদ্দেশ্য থাকে মাসের লাভ মাসে তুলে নেওয়া। অনেকে আবার প্রতি সপ্তাহেও লাভ তুলতে চান। কিন্তু বড় বিনিয়োগকারীরা ভালো কোম্পানির শেয়ারে বছরের পর বছর অর্থলগ্নি করে। এতে বাজারে সাময়িক পতন হলেও পরবর্তীতে আবার বাজার ঘুরে দাঁড়ালে তারা লাভবান হন।’
ভালো আইপিওর প্রত্যাশা
বছর পেরিয়ে গেলেও ভালো মৌলভিত্তিক কোম্পানিকে এখনো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করা যায়নি। তবে চেষ্টা চলমান রয়েছে জানিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের পুঁজিবাজার উন্নয়ন ও বিএসইসির শক্তিমত্তা বৃদ্ধি সংক্রান্ত কমিটির সভাপতি এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী জানান, বেসরকারি কোম্পানির পাশাপাশি ভালো সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানির তালিকা করে তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবে কমিটি।
ভালো কোম্পানির আনার পাশাপাশি বাজারে নজরদারি বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়ে আনিসুজ্জামান বলেন, ‘বাজার নজরদারি বাড়াতে হবে। এতে বাজারে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না। পাশাপাশি বাজার উন্নয়নে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার কোনো বিকল্প নেই।’
আরও পড়ুন: সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে
ভালো আইপিও আনার ওপর জোর দিয়ে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান আবু আহমেদ বলেন, ‘একটি ভালো কোম্পানি পুরো বাজারের চিত্র বদলে দিতে পারে। দেশীয় সরকারি-বেসরকারি কোম্পানির পাশাপাশি বহুজাতিক কোম্পানিকেও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করার ব্যাপারে ভাবতে হবে।’
ভালো মৌলভিত্তিক কোম্পানি বাজারে তালিকাভুক্ত করার ব্যাপারে বিএসইসি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান কমিশনের চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। পাশাপাশি পুঁজিবাজার উন্নয়নে কমিটির নির্দেশনা ও টাস্কফোর্সের সুপারিশ মেনে টেকসই উন্নয়নের ওপর জোর দেন তিনি।
১২৯ দিন আগে
সরকার পুঁজিবাজার উন্নয়নে আন্তরিক: বিএসইসি চেয়ারম্যান
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বলেছেন, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে পুঁজিবাজারের নানা দিক গুরুত্বসহকারে মূল্যায়ন করা হয়েছে, যা প্রমাণ করে সরকার পুঁজিবাজার উন্নয়নে অত্যন্ত ইতিবাচক ও আন্তরিক।
মঙ্গলবার (৩ জুন) বাজেট প্রসঙ্গে এক লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদের বাজেট বক্তৃতায় পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মাদ ইউনূসের পাঁচটি দিকনির্দেশনা গুরুত্বসহকারে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে বহুজাতিক কোম্পানির সরাসরি তালিকাভুক্তি, দেশীয় ভালো মৌলভিত্তিক কোম্পানির তালিকাভুক্তি, পুঁজিবাজার সংস্কারের জন্য বিদেশি পরামর্শক নিয়োগ, শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পুঁজিবাজারকে দেশের অর্থনীতির কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গড়ে তোলার নীতিমালা।আরও পড়ুন: ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট পুঁজিবাজারবান্ধব, সন্তুষ্ট ডিএসই-ডিবিএ ও সিপিডি
অর্থ মন্ত্রণালয় এসব নির্দেশনার আলোকে পুঁজিবাজারের উন্নয়নের জন্য করপোরেট করহার ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭.৫ শতাংশ করেছে, ফলে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো কর ছাড় পাবেন। বিএসইসি চেয়ারম্যান আশা করেন, এ সিদ্ধান্ত দেশি-বিদেশি লাভজনক কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে আসতে উৎসাহিত করবে।
এছাড়া, পুঁজিবাজারে কর্মরত ব্রোকারেজ হাউসের লেনদেন কর ০.০৫ শতাংশ থেকে ০.০৩ শতাংশে হ্রাস করা হয়েছে, যা বাজারের তারল্য সংকট ও লেনদেনের স্বল্পতা দূর করতে সহায়তা করবে এবং বিনিয়োগ উৎসাহিত করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মার্চেন্ট ব্যাংকের করপোরেট করহারও ৩৭.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৭.৫ শতাংশ করা হয়েছে, যা পুঁজিবাজারের টেকসই উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তাছাড়া, গত বছরের ৪ নভেম্বর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার বিক্রি থেকে অর্জিত মূলধনী মুনাফার (ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স) করহার ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে, যা সরকারের বজারের প্রতি আন্তরিকতার পরিচায়ক বলে তিনি মন্তব্য করেন।
বিএসইসি চেয়ারম্যান আরও বলেন, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে কমিশন বার্ষিক মেইনটেন্যান্স ফি ৪৫০ টাকা থেকে কমিয়ে ১৫০ টাকা করেছে এবং গ্রাহকের হিসাব থেকে অর্জিত সুদের ২৫ শতাংশ ইনভেস্টর প্রটেকশন ফান্ডে জমা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য সহায়ক হবে।
তিনি সরকারের কাছে বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্জিত ডিভিডেন্ডের কর মওকুফ এবং এক লক্ষ টাকার উপরে অর্জিত ডিভিডেন্ডের ওপর ১৫ শতাংশ করকে চূড়ান্ত কর হিসেবে গণ্য করার জন্য বাজেটে পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানান।
১৮৪ দিন আগে
পুঁজিবাজারে আইপিও ও মিউচুয়াল ফান্ড নীতিতে বড় সংস্কারের সুপারিশ
পুঁজিবাজারে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) ও মিউচুয়াল ফান্ড ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তনের প্রস্তাব দিয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে চূড়ান্ত সুপারিশপত্র জমা দিয়েছে বাজার সংস্কারে গঠিত টাস্কফোর্স।
মঙ্গলবার (২০ মে) বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের কাছে এই সুপারিশপত্র হস্তান্তর করেছেন টাস্কফোর্স সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টারের (বিয়াক) প্রধান নির্বাহী কে এ এম মাজেদুর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন।
কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রস্তাবিত সংস্কারে আইপিওর প্রাথমিক অনুমোদনের দায়িত্ব স্টক এক্সচেঞ্জের হাতে ন্যস্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। এরপর স্টক এক্সচেঞ্জের মূল্যায়নের ভিত্তিতে চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে বিএসইসি।
এছাড়া পাবলিক ইস্যু নিরীক্ষার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের জন্য নির্ধারিত যোগ্যতা মানদণ্ড নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে টাস্কফোর্স। এতে করে আইপিও অনুমোদন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক ও দায়বদ্ধতাসম্পন্ন হবে। ফলে বিনিয়োগকারীরা নতুন কোম্পানিতে অর্থলগ্নি করতে ভরসা পাবেন বলে মনে করছে টাস্কফোর্স।
সুপারিশে আরও বলা হয়, আইপিওর শেয়ারের দাম নির্ধারণে নতুন প্রাইসিং মডেল তৈরি করা হবে, যাতে করে নতুন কোম্পানিগুলো ন্যায্য মূল্য পায়। এর মাধ্যমে বড় ও গুণগত মানসম্পন্ন কোম্পানির বাজারে আসার আগ্রহ বাড়বে।
আরও পড়ুন: পুঁজিবাজার দ্রুত সংস্কারে ড. ইউনূসের পাঁচ নির্দেশনা
আইপিও অনুমোদনে ইস্যু ম্যানেজারদের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব নির্ধারণেরও সুপারিশ এসেছে, যার ফলে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে।
এছাড়া নতুন তালিকাভুক্ত হতে চাওয়া কোম্পানিগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে টাস্কফোর্স। তাদের মতে, কোম্পানিতে সুশাসন জোরদার হলে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থও সুরক্ষিত থাকবে।
বড় পরিবর্তনের সুপারিশ মিউচুয়াল ফান্ডে
আইপিওর পাশাপাশি মিউচুয়াল ফান্ড পুনর্গঠনেও বিএসইসির কাছে চূড়ান্ত সুপারিশ জমা দিয়েছে টাস্কফোর্স।
প্রতিবেদনে সকল মেয়াদি (ক্লোজ-এন্ড) ফান্ডকে অবশ্যই ট্রাস্ট ডিডে নির্ধারিত প্রাথমিক মেয়াদ শেষে অবসায়ন (রিডিম) করার সুপারিশ করা হয়েছে। তবে কোনো বিশেষ সাধারণ সভায় (ইজিএম) উপস্থিত ইউনিট-হোল্ডারদের তিন-চতুর্থাংশ ভোটে কোনো ফান্ড ওপেন-এন্ডে রূপান্তরিত হতে পারবে।
যেসব ফান্ডের মেয়াদ ইতোমধ্যে বাড়ানো হয়েছে, সেগুলোর জন্য সংশোধিত বিধিমালা কার্যকর হওয়ার তারিখ থেকে ছয় মাসের মধ্যে একটি ইজিএম ডাকার সুপারিশ করা হয়েছে। সেখানে ৭৫ শতাংশ ইউনিট-হোল্ডার রূপান্তরের পক্ষে ভোট দিলে তা রূপান্তর হবে; অন্যথায় তিন মাসের মধ্যে ফান্ডের মেয়াদ শেষ বিবেচনা করতে সুপারিশ করা হয়েছে।
এছাড়া গ্রোথ, ব্যালান্সড, শরিয়াহ-অনুবর্তী, ফিক্সড ইনকাম ও মানি মার্কেট ফান্ডের জন্য আলাদা আলাদা বাধ্যতামূলক সম্পদ বরাদ্দ নীতিমালা প্রণয়নের প্রস্তাব এসেছে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে।
আরও পড়ুন: পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে বিশেষ তহবিলের মেয়াদ বৃদ্ধি
মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ সীমা বাড়ানোর প্রস্তাবও দিয়েছে টাস্কফোর্স। এ ক্ষেত্রে একক শেয়ারে বিনিয়োগের সীমা ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ এবং একক শিল্প খাতে বিনিয়োগের সীমা ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশে উন্নীতের সুপারিশ করা হয়েছে।
এ ছাড়াও বাজারে তালিকাভুক্ত নয়—এমন ইক্যুইটি সিকিউরিটিতে বিনিয়োগ নিষিদ্ধ করতে নীতিমালা প্রণয়নের পরামর্শ দিয়েছে টাস্কফোর্স। শুধু মেইন বোর্ডে তালিকাভুক্ত ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানির ইস্যুকৃত বন্ড বা প্রেফারেন্স শেয়ারেই বিনিয়োগের অনুমতি থাকবে।
মিউচুয়াল ফান্ডে বার্ষিক ব্যয় অনুপাতের সীমা সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে ফিক্সড ইনকাম ও মানি মার্কেট ফান্ডের জন্য এই হার হবে ২ শতাংশ।
পাশাপাশি মেয়াদি ফান্ডের ক্ষেত্রে বছরে অর্জিত লাভের কমপক্ষে ৭০ শতাংশ ইউনিট-হোল্ডারদের লভ্যাংশ হিসেবে বিতরণের প্রস্তাব এসেছে। ওপেন-এন্ড ফান্ডের ক্ষেত্রে প্রতি ইউনিটে ন্যূনতম লভ্যাংশ হবে ঐ বছরের অর্জিত লাভ এবং ভার আরোপিত গড় আয় (ওয়েট এভারেজ আর্নিং পার ইউনিট)—এই দুটির মধ্যে যেটি কম, তার অন্তত ৩০ শতাংশ।
সুপারিশের বিষয়ে বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম বলেন, ‘টাস্কফোর্সের সুপারিশ বাস্তবায়নে কমিশন দ্রুত আইনি সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু করবে। এসব সুপারিশ কার্যকর হলে পুঁজিবাজারে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
১৯৮ দিন আগে
বিএসইসির ২১ কর্মকর্তা বরখাস্ত, ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান চেয়ারম্যানের
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ২১ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। পরবর্তীতে কমিশনের সবাইকে নিয়ে সভা করে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন কমিশন চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ।
কমিশন সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) জরুরি সভা করে বিএসইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সভায় গত ৫ মার্চ বিএসইসিতে যারা চেয়ারম্যান, কমিশনার এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আটকে রেখে বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছে তাদের তালিকা ধরে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিএসইসি এক অফিস আদেশে এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। বরখাস্তরা জানান, আগে পিছে এ নিয়ে তাদের কিছু জানানো হয়নি। অফিসে এসে খবর পেয়েছেন তারা।
সাময়িক বরখাস্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম, পরিচালক আবু রায়হান, মো. মোহতাছিন বিল্লা, অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম, যুগ্ম পরিচালক রাশেদুল ইসলাম, উপপরিচালক বনী ইয়ামিন, আল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম ও তৌহিদুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক জনি হোসেন, রায়হান কবীর, সাজ্জাদ হোসেন ও আবদুল বাতেন, লাইব্রেরিয়ান মো. সেলিম রেজা বাপ্পী, ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আবু ইউসুফ।
এর বাইরে রয়েছেন পরিচালক আবুল হাসান ও ফখরুল ইসলাম মজুমদার, অতিরিক্ত পরিচালক মিরাজ উস সুন্নাহ, উপপরিচালক নান্নু ভূঁইয়া, সরকারি পরিচালক আমিনুর রহমান খান, তরিকুল ইসলাম ও সমির ঘোষ।
আরও পড়ুন: রূপপুর ‘দুর্নীতি’: প্রচ্ছায়ার ৮ কর্মকর্তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ৫ মার্চ সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চার দফা দাবিতে চেয়ারম্যান ও তিন কমিশনারকে প্রায় চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন।
এ ঘটনায় পরদিন রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় সংস্থাটির ১৬ কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করে মামলা করে বিএসইসির চেয়ারম্যানের গানম্যান আশিকুর রহমান। যারা বরখাস্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে ১৪ জন এ মামলায় অভিযুক্ত।
এদিকে বরখাস্তের ঘোষণার পর কমিশনের সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে জরুরি সভা করেছেন রাশেদ মাকসুদ। সভায় তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
বলেন, চলমান যে-সব বিষয় নিয়ে বিবাদ আছে তা শিগগিরই সুরাহা করা হবে। দেশের পুঁজিবাজারকে সচল রাখতে নতুন উদ্যোমে কাজ করার নির্দেশনা দেন তিনি।
২১৮ দিন আগে
বিএসইসির কর্মকর্তাদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি এবং লাঞ্ছনার অভিযোগ
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রকসংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি এবং লাঞ্ছনার অভিযোগ উঠেছে খোদ প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে ওএসডি এবং পরবর্তীতে অবসরে পাঠানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে প্রতিষ্ঠানটির একদল কর্মকর্তা সকাল থেকে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান, কমিশনার এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের দুপুর পর্যন্ত অবরুদ্ধ করে রাখে। তারা কমিশনের চেয়ারম্যান রাশেদ মাকসুদের পদত্যাগের পাশাপাশি সাইফুর রহমানকে স্বপদে বহালের দাবি জানান।
পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহয়তায় কর্মকর্তাদের বের করে আনা হয়। বুধবার সন্ধ্যায় (৫ মার্চ) বিএসইসি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২৫ বছর চাকরি সমাপ্ত করায় বিধি মোতাবেক সাইফুর রহমানকে মঙ্গলবার (৪ মার্চ) অবসর প্রদান করা হয়। এই সিদ্ধান্ত মেনে না নিয়ে কিছু উশৃঙ্খল কর্মকর্তা বিএসইসির চেয়ারম্যান এবং কমিশনারদের বোর্ড রুমে চলমান সভায় জোরপূর্বক প্রবেশ করে তাদের অবরূদ্ধ করে। তারা কমিশন মূল ফটকে তালা দেয়, সিসি ক্যামেরা বন্ধ করে এবং বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে অরাজক এবং ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।
বিজ্ঞপ্তিতে বিএসইসির পক্ষ থেকে বলা হয়, আন্দোলনকারীরা অবরুদ্ধ কর্মকর্তাদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে ও পেশি শক্তি প্রদর্শন করে। এছাড়া তারা চেয়ারম্যানের সদ্য যোগ দেয়া ব্যক্তিগত সচিবকে লাঞ্ছিত করে। চার ঘন্টা অবরুদ্ধ থাকার পর প্রথমে পুলিশ এবং পরে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
আরও পড়ুন: বিনিয়োগকারীদের বাজার বিমুখের ব্যাখ্যা দিল বিএসইসি
বিগত দিনের পুঁজিবাজাররের বিভিন্ন অনিয়ম অনুসন্ধানে বিএসইসি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ১২ টি লিস্টেড কোম্পানির বিভিন্ন অনিয়ম তদন্ত করে। এ পর্যন্ত তদন্ত কমিটি ৭টি তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছে। এর ভিত্তিতে অভিযোগ গঠনের প্রক্রিয়া চলমান, যার আওতায় রয়েছে পুঁজিবাজারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং বিএসইসির কিছু কর্মকর্তা। এদের ইন্ধনেই এমন ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে বলে বিএসইসির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।
বর্তমান কমিশন পুঁজিবাজারের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়ায় বিএসইসির কিছু উশৃঙ্খল কর্মকর্তা এবং কর্মচারী এ অপ্রীতিকর ঘটনার সৃষ্টি করেছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
২৭৪ দিন আগে
বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী গ্রেপ্তার
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ধানমন্ডির আবাসিক এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার রেজাউল করিম এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গেল বছরের ৮ আগস্ট বিএসইসির চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরে দাঁড়ান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষক শিবলী। এর পাঁচদিন আগে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে চলে যান।
২০২০ সালে প্রথম বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরবর্তীতে তার মেয়াদ আরও চার বছর বাড়ানো হয়।
গত সপ্তাহে পাঁচজনের পাসপোর্ট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার, তাদের মধ্যে শিবলীও রয়েছেন। সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে ঢাবির এই শিক্ষকসহ বিএসইসির বর্তমান ও সাবেক আট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে এক হাজার কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তদন্ত শুরু করে দুদক।
৩০৩ দিন আগে
বাজার থেকে বিনিয়োগ সংগ্রহের অনুমতি হারাল দুয়ার সার্ভিস
আইটি কোম্পানি দুয়ার সার্ভিস পিএলসিকে বাজার থেকে পাঁচ কোটি টাকার বিনিয়োগ সংগ্রহের অনুমতি ও তারিখ ধার্য করে দেয়া হলেও সবশেষ সভায় সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বিএসইসির ৯৩৯তম সভায় কোম্পানিটির বিনিয়োগকারীদের থেকে বাজারে শেয়ার ছেড়ে অর্থ সংগ্রহের কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর অফার সাবস্ক্রিপশন বাতিল করা হয়।
এ প্রসঙ্গে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দুয়ার সার্ভিসকে নিয়ে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ৫ ডিসেম্বর কোম্পানিটিকে পুঁজি সংগ্রহের জন্য বাজারে শেয়ার ছাড়ার সম্মতি পত্র দেয়া হলেও আপাতত এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে কমিশন। কোম্পানিটি ঘিরে যেসব অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে তা যাচাইয়ে বিএসইসি ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কর্মকর্তাদের নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
গেল বছর এপ্রিলে কোম্পানিটি বাজার থেকে বিনিয়োগের অনুমতি চেয়ে কমিশনে আবেদন করে। পরবর্তীতে তৎকালীন শিবলি কমিশন শর্তসাপেক্ষে কোম্পানিটির নামে অভিপ্রায় পত্র (লেটার অব ইনটেন্ট) ইস্যু করার সিদ্ধান্ত নেয়।
পরবর্তীতে ১৯ জানুয়ারি কোম্পানিটি বাজারে ৫০ লাখ সাধারণ শেয়ার ইস্যু করার সিদ্ধান্ত নেয়। কমিশনকে কোম্পানিটি জানায়, উত্তোলিত অর্থ কোম্পানিটির দুয়ার স্কুল ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার, ডি-কুরিয়ার, কল সেন্টার ও ট্র্যাকিং সিস্টেম ও এআই সফটওয়্যার- এমন সব পণ্যের সেবা মান উন্নয়নে ব্যয় করা হবে।
কিন্তু সম্প্রতি কোম্পানিটির সঙ্গে বিভিন্ন গ্রাহকের সেবা প্রদান সংক্রান্ত চুক্তি, কোম্পানির আয় ও মুনাফা সংক্রান্ত বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ কমিশনের দৃষ্টিগোচর হয়। সেই প্রেক্ষিতেই কমিশন সার্বিক বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়।
৩২৪ দিন আগে