রংপুর
বন্যার পলিতে উর্বর উত্তরের চরাঞ্চল, চাষাবাদের ধুম
বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উত্তরের নদ-নদীগুলোর তীর এখন ধুঁ ধুঁ মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। বালুময় জমিগুলোর ওপর বন্যার রেখে যাওয়া পলি জমে বেলে-দোআঁশে পরিণত হওয়ায় চাষাবাদের ধুম পড়েছে তিস্তা, ধরলা, সানিয়াজান ও ব্রহ্মপুত্র নদীর চরে।
কৃষি বিভাগ বলছে, উত্তরের এসব নদীতে প্রায় ৭৮৬ টি চর রয়েছে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর চরের মানুষগুলো ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে।
রংপুর কৃষি অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, এসব চরে এবার ৩৬ হাজার ৯১১ হেক্টর জমিতে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, আর বিভিন্ন প্রকার ফসলের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৬২ হাজার টন।
কৃষি বিভাগ মনে করে, চরের ফসলে ঘুরে দাঁড়াবে এই অঞ্চলের বাসিন্দারা। এক ফসলেই তাদের সারা বছর চলে যায়, বলেন এই কর্মকর্তা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উত্তরের লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও নীলফামারী জেলার তিস্তা নদীর চরে কৃষিজমিতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন স্থানীয়রা। ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থানে আলু, বেগুন, মরিচ, ছিটা পেঁয়াজ, আদা, রসুন, শিম, ধনেপাতা, গাজর, কপি, মুলা, লাউ, গম, তিল, তিশি, সরিষা, ভুট্টার আবাদ হয়েছে। সব ফসলেরই ভালো ফলন আশা করছেন চাষিরা।
রংপুরের গঙ্গাচরার ইচলির চরের হোসেন মিয়া বলেন, তিস্তার চরে ৩ বিঘা জমিতে আলু, তিন বিঘায় বেগুন ও ২০ শতক জমিতে ধনেপাতা চাষ করেছি। ফলন ভালো হলে খরচ বাদ দিয়ে এ মৌসুমে দেড় লাখ টাকা আয় হবে।
শুধু হোসেন নন ওই এলাকার কৃষক হাবিবুর, রহিম ও খায়রুল বলেন প্রায় একই কথা। তাদের দাবি, যেটুকু জমিতে আবাদ করেছি, ফলন ভালো হলে ৬০-৭০ হাজার টাকা করে লাভ হবে তো হবেই।
লক্ষ্মীটারি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, তিস্তার চরাঞ্চল এখন কৃষি জোনে পরিণত হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেক ফসল বাজারে উঠতে শুরু করেছে। অনেকে নতুন করে চাষাবাদ করছেন। চরের কৃষকের একটাই দুঃখ; উৎপাদিত পণ্য সংরক্ষণ, বাজারে সরবরাহ এবং প্রক্রিয়াজাতকরণের কোনো ব্যবস্থা নেই। সে কারণে চাষিরা কাঙ্ক্ষিত মুনাফা অর্জন থেকে বঞ্চিত হন।
তিনি আরও বলেন, তিস্তার চরাঞ্চলে যেসব ফসল উৎপাদন হয়, তাতে অন্তত ২-৩টি হিমাগার প্রয়োজন। অথচ গংগাচড়ায় আছে মাত্র একটি হিমাগার। তাছাড়া যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন থাকায় চরাঞ্চল থেকে কৃষক উৎপাদিত পণ্য সহজে বাজারে নিতে পারেন না।
কৃষি কর্মকর্তা তুষার কান্তি বলেন, তিস্তার চরাঞ্চলের মাটিতে পলি জমায় তা অনেক উর্বর। রাসায়নিক সার ছাড়াই বিভিন্ন ফসলের ফলন ভালো হচ্ছে। বিশেষ করে ভুট্টা, গম, আলু, মরিচ, পেঁয়াজ, রসুন, সরিষা, তিল, তিশিসহ শাকসবজি চাষ বেশি হচ্ছে।
চর নিয়ে কাজ করেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ। তিনি বলেন, বন্যা চলে যাওয়ার পর চরের জমিতে যে পলি থাকে, তা অত্যন্ত উর্বর। এ কারণে প্রতি বছরই বন্যার পর কৃষিতে বাম্পার ফলনের দেখা পান চরের কৃষকরা। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত না হওয়ায় ন্যায্য মূল্য পান না চাষিরা।
তিনি মনে করেন, তিস্তাসহ অন্যান্য নদী যদি খনন করা হয়, তাহলে চরের জমিগুলো জেগে উঠবে এবং উত্তরের মানুষের আর অভাব থাকবে না।
কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, উত্তরের ৮ জেলার ৭৮৬টির বেশি চরে যে ফসল উৎপাদন হবে, তাতে ২০০ কোটি টাকা আয় হওয়া সম্ভব।
ফসল উৎপাদনের জন্য কৃষকদের প্রণোদনাসহ কারিগরি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীরা। বন্যায় চরের যেসব কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের ইতোমধ্যেই সহায়তা দেওয়া হয়েছে বলে জানান রংপুর অঞ্চলের কৃষি কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম।
৩ দিন আগে
জ্বালানি তেল না থাকায় ফাঁকা রংপুরের ডিপো
চট্টগ্রাম থেকে রংপুরের তিনটি ডিপোতে নিয়মিত তেল সরবরাহ না হওয়ায় রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলায় দেখা দিয়েছে তীব্র জ্বালানি তেলের সংকট। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, রেলওয়ের ইঞ্জিন সংকটই এর প্রধান কারণ।
রংপুরে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা ডিপো থেকে রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও নীলফামারীতে তেল সরবরাহ হয়ে থাকে। গত আগস্ট মাসে মাসিক চাহিদা আড়াই কোটি লিটার থাকলেও সরবরাহ হয়েছে প্রায় ৩০ লাখ লিটার। গত ছয় মাস ধরেই চলছে এমন পরিস্থিতি। ফলে তিন ডিপোর অধীনে থাকা পেট্রলপাম্প মালিক ও এজেন্টদের চাহিদামতো তেল সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না।
পেট্রোলিয়াম ডিলার্স ডিস্ট্রিবিউটরস এজেন্ট অ্যান্ড পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা জানান, রেলওয়ের পর্যাপ্ত ইঞ্জিন না থাকায় চট্টগ্রাম থেকে তেলবাহী ওয়াগন সময়মতো ছাড়তে পারছে না। এ কারণে রংপুর ডিপোগুলো প্রায় ফাঁকা পড়ে আছে।
রংপুর জেলা পেট্রোলিয়াম ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আজিজুর ইসলাম মিন্টু বলেন, ‘পাঁচ মাস ধরে রংপুরের ডিপোতে চাহিদার তুলনায় অনেক কম তেল আসছে। রংপুর থেকে আমরা তেল পাচ্ছি না। আমরা চাই, আগের মতো নিয়মিত এখানে তেল সরবরাহ হোক। এভাবে তেল আসা বন্ধ থাকলে কৃষি, কলকারখানা থেকে শুরু করে সব খাতে মারাত্মক প্রভাব পড়বে।’
রংপুর নগরীর ফিলিং স্টেশনের মালিক মঞ্জুর আজাদ বলেন, রংপুর ডিপোতে তেল না থাকায় পার্বতীপুর ও বাঘাবাড়ী থেকে তেল আনতে হচ্ছে। এতে পরিবহন খরচ দ্বিগুণ হচ্ছে এবং সিরিয়াল মেনে তেল সংগ্রহ করতে দু–তিন দিন সময় লাগছে। এতে শুধু ব্যবসায়ী নয়; কৃষি ও পরিবহন খাতও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
নগরীর চারতলা মোড় এলাকার মিজান ফিলিং স্টেশনের মালিক মিজানুর রহমান বলেন, ‘রংপুরের ডিপো থেকে তেল পাওয়া যাচ্ছে না। ট্রেনের ওয়াগনে করে তেল না আসায় তেলের সংকট রয়েছে। আমরা চট্টগ্রাম, পার্বতীপুরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে তেল নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। এতে করে আমাদের খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। রংপুর ডিপো থেকে তেল পেলে খরচ অনেক কম হতো।’
আরও পড়ুন: নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বাংলাদেশের যথাযথ স্থানান্তরের আহ্বান জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের
এদিকে, জ্বালানি তেল পর্যাপ্ত না আসায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন এই খাতের শ্রমিকেরা। এ প্রসঙ্গে রংপুর ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আলাউল মিয়া লাল্লু বলেন, ‘ডিপোতে তেল না থাকায় ছয় শতাধিক শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছে। তাদের জীবন এখন সংকটে। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার চিঠি দিয়েছি। কোনো কাজ হয়নি। দ্রুত নিয়মিত সরবরাহ না হলে আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।’
রংপুরে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি তেল সরবরাহের জন্য পেট্রোলিয়াম ডিলার্স ডিস্ট্রিবিউটরস এজেন্ট অ্যান্ড পেট্রলপাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন রংপুর জেলার পক্ষ থেকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর এবং রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে এতেও কোনো কাজ হয়নি।
মেঘনা পেট্রোলিয়াম ডিপোর ইনচার্জ জাকির হোসেন পাটোয়ারী বলেন, ‘চট্টগ্রামে আমাদের পর্যাপ্ত তেল রয়েছে। সেখান থেকে তেল পাঠাতে কোনো সমস্যা নেই। সমস্যা হচ্ছে, লোকোমোটিভ ইঞ্জিনের কারণে তেল পাঠাতে পারছে না। আমাদের মাসে ২৫ লাখ লিটার চাহিদা থাকলেও আমরা পাচ্ছি ৫ লাখ লিটার। এ সংকট নিরসনের জন্য হেড অফিস থেকে ডিজিএম, জিএম স্যাররা রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। রেল থেকে ইঞ্জিন সংকটের কথাই বলা হচ্ছে।’
পদ্মার পেট্রোলিয়াম ডিপোর ইনচার্জ আমিনুর রহমান বলেন, ‘আমাদের দুটি ইঞ্জিন ছিল। আগে মাসে ৮ থেকে ১০ বার তেল আসত। দুটি থেকে একটি করল, তাতেও ৪ থেকে ৫ বার তেল আসত। কিন্তু সেই ইঞ্জিনও কেটে নিয়ে গেছে; যার কারণে এই গ্যাপ হয়েছে। রংপুরে তিন ডিপো মিলে প্রায় আড়াই কোটি লিটার তেলের চাহিদা। কিন্তু আমরা পাচ্ছি ৩০ লাখ লিটারের মতো।’
জ্বালানি তেল সংকটের কথা স্বীকার করে রংপুরের জেলা প্রশাসক রবিউল ফয়সাল বলেন, ইঞ্জিন সংকটের কারণে চট্টগ্রাম থেকে তেল সরবরাহ বিঘ্ন হচ্ছে। এক সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
৮৮ দিন আগে
আগস্টে উত্তরের জেলাগুলোতে কম বৃষ্টিপাত, প্রকৃতি ও জনজীবনে প্রভাব
উত্তরের আট জেলা— রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, পঞ্চগড়, নীলফামারী, দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁওয়ে আবহাওয়ার ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করতে হচ্ছে এই অঞ্চলের মানুষকে। আর এর প্রভাব পড়ছে কৃষি সহ সব জায়গাতেই। ধীরে ধীরে রুক্ষ হয়ে উঠছে এই অঞ্চলের আবহাওয়া। তীব্র গরমে মানুষ হাঁসফাঁস করছে।
উত্তরের জেলাগুলোতে এ বছর আগস্ট মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। মাসজুড়ে ২৫ দিন বৃষ্টি হলেও প্রকৃতিতে ছিল খরতাপ ও রুক্ষভাব। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৮ থেকে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
রংপুর বিভাগীয় আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, আগস্ট মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা প্রায় ১ হাজার ৩৫০ মিলিমিটার। সেখানে গত মাসে বৃষ্টিপাত হয়েছে মাত্র ৭১৭ মিলিমিটার। মাসের প্রথম দিনে ১১ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টির মাধ্যমে শুরু হয় বর্ষণ। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে ৮ আগস্ট, ৭৮ দশমিক ৪ মিলিমিটার। এরপর ১৪ আগস্টে ৫৬ মিলিমিটার, ৯ আগস্টে ২৭ দশমিক ২ মিলিমিটার এবং ১৯ আগস্টে ২১ দশমিক ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।
আরও পড়ুন: তীব্র দাবদাহে পুড়ছে সিলেট, বিপাকে খেটে খাওয়া মানুষ
এপ্রিল ও মে মাসেও স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম বৃষ্টি হয়েছিল, যদিও জুন মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছিল। আগস্টে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি না হওয়ায় পুরো বিভাগের কৃষিখাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। আগস্টে উত্তরের জেলাগুলোতে কম বৃষ্টিপাত, প্রকৃতি ও জনজীবনে প্রভাব যাওয়া ও গরম-ঠান্ডার মিশ্র আবহাওয়ার কারণে রোগবালাইও বেড়েছে। এ সময় ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি-কাশি, হিটস্ট্রোক, চর্মরোগ, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।
৯১ দিন আগে
বোরকা পরে পালানোর চেষ্টা করেও ধরা পড়লেন ভুয়া চিকিৎসক
রংপুরে দিন দিন ভুয়া চিকিৎসকের দৌরাত্ম্য বাড়ছে। সিভিল সার্জনের অভিযানে বেরিয়ে আসছে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে রংপুর মহানগরীর ধাপ এলাকায় ইউনাইটেড নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ঘটেছে এমনই এক চ্যাঞ্চল্যকর ঘটনা।
সরেজমিনে ওই হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, অপারেশন থিয়েটারে এক প্রসূতির সিজারিয়ান অপারেশন চলছে। ঠিক সেই সময়ে হাসপাতালে হাজির হয় ভ্রাম্যমাণ আদালত।
অপারেশন থিয়েটারে গিয়ে দেখা মিলল এক যুবকের। রোগীকে সেলাই দিতে ব্যস্ত ওই যুবক প্রথমে নিজেকে চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দেন। পরে জানা গেল, তিনি ডাক্তার তো দূরে থাক, অষ্টম শ্রেণির গণ্ডি পেরিয়েছেন মাত্র।
অভিযানে যাওয়া সিভিল সার্জনের উপস্থিতি টের পেয়ে বোরকা পরে হাসপাতাল থেকে পালানোর চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা পাননি প্রশান্ত নামের ওই ভুয়া চিকিৎসক।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে ভুয়া চিকিৎসকের জরিমানা, অবৈধ ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা
অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালটির পাঁচ বছর ধরে লাইসেন্স নবায়ন নেই। পরিবেশ ছাড়পত্রসহ নেই বৈধ কোনো কাগজপত্র। তবুও ওই হাসপাতালে জটিল ও কঠিন রোগের চিকিৎসা চলছে সমান তালে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল (বুধবার) রাতে সেখানে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত।
অভিযানের সময় অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে অষ্টম শ্রেণি পাস প্রশান্তকে হাতেনাতে ধরেন রংপুর সিভিল সার্জন শাহীন সুলতানা। এ সময় নানা অজুহাত দেখিয়ে বাইরে বেরিয়ে সটকে পড়ার চেষ্টা করেন ওই যুবক। পরে দুই ঘণ্টা টয়লেটে বোরকা পরে লুকিয়ে থাকার পর পালানোর চেষ্টা করেন তিনি। তারপরও শেষ রক্ষা পাননি। ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে আটক করে তিন মাসের কারাদণ্ড দেন।
এ ঘটনায় হাসপাতালের মালিক সামসুদ তিবরীজকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও তিন দিনের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশরাত জাহান মিশু। তাৎক্ষণিক হাসপাতাল মালিক জরিমানার টাকা পরিশোধ করে জেল খাটার হাত থেকে রক্ষা পান।
জানা গেছে, গাইবান্ধা পলাশবাড়ী উপজেলার পশ্চিম গোপীনাথপুর গ্রামের ময়না বেগমের (২৬) সন্তান প্রসব বেদনা উঠলে বুধবার বিকেলে ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর রাতে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে তার সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়।
এদিকে, অভিযান প্রসঙ্গে সিভিল সার্জন শাহীন সুলতানা বলেন, ‘অভিযানে ওই বেসরকারি হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে গিয়ে এক প্রসূতি নারীকে পাওয়া যায়। তখন সিজার করে তার সন্তান বের করা হয়েছিল; সেলাই দিচ্ছিলেন এক যুবক।’
‘তিনি প্রথমে নিজেকে ডাক্তার দাবি করেন। পরে বলেন, আমি ডাক্তার নই, এইট পাস করেছি মাত্র। এরপর তিনি বোরকা পরে হাসপাতাল থেকে পালানোর চেষ্টা করেন।’
তিনি বলেন, ‘হাসপাতালটির মালিক দাবি করছিলেন, ওই নারীর সিজার করিয়েছেন রংপুর ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির চিকিৎসক রিফাত আরা। তবে রিফাতকে ওই সময়ে পাওয়া যায়নি।’
এক প্রশ্নের জবাবে সিভিল সার্জন বলেন, ‘ওই বেসরকারি হাসপাতালের বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই। লাইসেন্সের মেয়াদও পাঁচ বছর আগে শেষ হয়েছে। নবায়নের জন্য আর আবেদনও করেনি। এ ধরনের হাসপাতাল ও ক্লিনিকের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে কাজ করা হচ্ছে।’
সিভিল সার্জনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রংপুরে প্রায় ৫০টিরও বেশি ক্লিনিকের লাইসেন্স নেই। থাকলেও তা নবায়ন করা হয়নি। কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই এসব ক্লিনিকে চালানো হচ্ছে অপারেশন। আর এজন্যই সিভিল সার্জনের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে , যা অব্যাহত থাকবে।
৯১ দিন আগে
রংপুরে বিরল রোগে আক্রান্ত দুই শতাধিক মানুষ, দেখা দিয়েছে আতঙ্ক
রংপুরের পীরগাছায় বিরল রোগে আক্রান্ত হয়েছে দুই শতাধিক মানুষ। এতে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। তবে এমন বিরূপ পরিস্থিতিতেও স্বাস্থ্য বিভাগকে পাশে পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। এতে বড় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ওই উপজেলার হাজারো মানুষ। স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীরা বলছেন, অ্যানথ্রাক্স রোগের উপসর্গের সঙ্গে এই সংক্রমণের হুবহু মিল রয়েছে।
এমন অবস্থায় সির্ভিল সার্জন ডা: শাহিন সুলতানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
ডা: শাহিন সুলতানা বলেন, যদি এমন কিছু ঘটে থাকে তাহলে প্রাণী সম্পদ বিভাগ ব্যবস্থা নিবে। পাশাপাশি স্বাস্থ্য বিভাগের মাঠকর্মীরা প্রতিবেদন দিলে মেডিকেল টিম গঠন করা হবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলার পীরগাছায় গবাদি পশু থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হচ্ছে বিরল প্রজাতির মারাত্মক এক রোগ। শরীরে প্রথমে ফুসকুড়ি হয়, পরে তা ঘা-তে পরিণত হয়, এরপর তা থেকে তৈরি হয় গভীর ক্ষত।
এমন উপসর্গ নিয়ে দিনের পর দিন মানুষ আক্রান্ত হলেও এখন পর্যন্ত স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রাণিসম্পদ দপ্তর কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় সমস্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীরা বলছেন, অ্যানথ্রাক্স রোগের উপসর্গের সঙ্গে এই সংক্রমণের হুবহু মিল রয়েছে। তবে এখনো প্রাণিসম্পদ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তাই আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয়রা।
এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পীরগাছার সদর, তাম্বুলপুর, ছাওলা, পারুল, ইটাকুমারী ইউনিয়নসহ প্রায় পুরো উপজেলায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে এই রোগ। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত সদর, ছাওলা ও তাম্বুলপুর ইউনিয়ন।
পীরগাছা উপজেলা সদরের অনন্তরাম বড়বাড়ি এলাকার বাসিন্দা সাবিনা আক্তার জানান, গৃহস্থালি কাজের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি গরু ও ছাগল লালনপালন করতেন তিনি। সপ্তাহ দেড়েক আগে হঠাৎ তীব্র জ্বরে অসুস্থ হয়ে মারা যায় একের পর এক পশু। অসুস্থ গবাদি পশুর সেবা করতে গিয়ে তিনিও আক্রান্ত হন অজানা রোগে।
তিনি বলেন, তিনদিনের মধ্যে তিনটি গরু ও চারটি ছাগল মারা যায়। পরে হঠাৎ দেখি আমার হাতে ফুসকুড়ির মতো কী যেন উঠতেছে। দুই দিন যেতেই সেই ফুসকুড়ি বড় ঘায়ে পরিণত হয়। এখন প্রচণ্ড যন্ত্রণা করে, চুলকায়। স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের পরামর্শ চিকিৎসা চলছে।’
সাবিনার মতো পুরো পীরগাছায় এ অজানা রোগে আক্রান্ত হয়েছেন দুই শতাধিক মানুষ। যাদের সবাই অসুস্থ পশুর সংস্পর্শে ছিলেন অথবা অসুস্থ পশু জবাই করার পর মাংস স্পর্শ করেছেন।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে লাম্পি স্কিন রোগে ৭২ গরুর মৃত্যু
স্থানীয়রা জানান, গত দেড় মাস ধরেই এমন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই। এমনকি অসুস্থ হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মারা যাচ্ছে আক্রান্ত গবাদি পশুও।
বিরল রোগে আক্রান্ত পঞ্চাশোর্ধ্ব জাহেদা বেগম বলেন, ‘১০ থেকে ১২ দিন আগে হঠাৎ ডান হাতের একটি আঙ্গুলে চুলকানি শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে ফুসকুড়ি ঘা-তে পরিণত হয়েছে। এরপর ওই জায়গার মাংস পচে গিয়ে কালো হয়ে গেছে। ভিতরে প্রচণ্ড জ্বালাপোড়া করে। নতুন করে আরও একটি আঙ্গুলে একইভাবে চুলকানি শুরু হয়েছে।’
ছাওলা ইউনিয়নের কৃষক আজিজুল হক বলেন, ‘পশু অসুস্থ হলে তার পরিচর্যা করতে হয়। বেশি অসুস্থ হলে অনেকে জবাই করে বিক্রি করেন। সেই মাংস কিনে খাওয়ায় অনেকে এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। খাওয়ার দু-চার দিন পর শরীরে বড় বড় ঘা হয়।’
পীরগাছা সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা আবুল কাশেম বলেন, ‘মাস দেড়েক আগে একটি ছাগলের প্রচণ্ড জ্বর আসে। অনেক চেষ্টার পরেও বাঁচার কোনো সম্ভাবনা না থাকায় ছাগলটাকে জবাই করি। ওই মাংস কাটাকাটি করার পরের দিন থেকে হাতে ছোট ছোট ফুসকুড়ি ওঠা শুরু হয়। পরে তা বড় ঘায়ে পরিণত হয়ে শেষের দিকে পচে যায়। অনেক ওষুধ খাওয়ার পর এখন একটু সুস্থ। স্থানীয় চিকিৎসক বলেছেন এটা নাকি অ্যানথ্রাক্স রোগ।’
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার আঁখি সরকার বলেন, প্রায় প্রতিদিনই এমন রোগে আক্রান্ত ৫ থেকে ৭ জন রোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসছেন। অনেক সময় একই পরিবারের সব সদস্য আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাও ঘটছে। এখন পর্যন্ত পরীক্ষা করা না হলেও অ্যানথ্রাক্স রোগের উপসর্গের সঙ্গে এই সংক্রমণের হুবহু মিল রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এ দিকে পুরো উপজেলায় এই রোগে সাধারণ মানুষ আক্রান্তের পাশাপাশি কয়েকশ’ গবাদি পশু আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেও নির্বিকার উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর।
স্থানীয়রা জানান, খামারিদের কাছে যাওয়া তো দূরের কথা এমন সমস্যা নিয়ে প্রাণিসম্পদ দপ্তরে গেলে বেশিরভাগ সময়ই কোনো কর্মকর্তাকে পাওয়া যায় না। ফলে সঠিক চিকিৎসা না মেলায় মারা যাচ্ছে আক্রান্ত পশুগুলো।
অন্যদিকে আক্রান্ত হলেই তড়িঘড়ি করে ওই পশুকে কম দামে হলেও বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন খামারিরা। এতে খামারিরা যেমন আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তেমনি আক্রান্ত পশুর মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে এই রোগ।
রংপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আবু ছাঈদ বলেন, “এটা একটা ‘জেনেটিক ডিজিজ’। এখানে মূল সমস্যা করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। একজন মেডিকেল অফিসার অথবা প্যারামেডিক জানে এটা কি হতে পারে। এই রোগ নিয়ে যখন সাধারণ মানুষ চিকিৎসা নিতে গেছে সঙ্গে সঙ্গে তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো উচিত ছিল। তাহলে শুরু থেকেই এই সমস্যা প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিলে সুবিধা হত। এখন সবার আগে আমাদের কাজ হলো এই রোগ শনাক্ত করা।”
এ দিকে এই রোগ শনাক্তের পাশাপাশি প্রতিরোধে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া না গেলে মহামারিতে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।
আরও পড়ুন: ফরিদগঞ্জে চিকিৎসকের অবহেলায় রোগীর মৃত্যু, হাসপাতাল ভাঙচুর
জনস্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলনের সভাপতি বেলাল হোসেন বলেন, ‘এমন উপসর্গ নিয়ে দিনের পর দিন মানুষ আক্রান্ত হলেও এখন পর্যন্ত স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রাণীসম্পদ দফতর কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় সমস্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। তাই যা ধারণা করা হচ্ছে, দ্রুত শনাক্তের মাধ্যমে যদি তা নিশ্চিত হওয়া যায় তাহলে এই সমস্যা সমাধান দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে এই সমস্যা মহামারি আকার ধারণ করে পুরো দেশে ছড়িয়ে পারবে।’
বিষয়টি নিয়ে রংপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) রবিউল ফয়সালের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ওই এলাকা থেকে আমাকে ফোনে জানানো হয়েছে। আমি স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে কথা বলেন দ্রুত ব্যবস্থা নিব। আপাতত উপজেলা নিবার্হী অফিসার কে বিষয়টি তদারকি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।
৯৭ দিন আগে
কাজ শেষ হওয়ার আগেই রংপুরে নদী তীর রক্ষা বাঁধে ধস
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই আখিরা শাখা নদীর তীর রক্ষা বাঁধের একাংশ ধসে পড়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করা হয়েছে বলে বাঁধের এই দশা হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।
শনিবার (২৩ আগস্ট) পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বাপাউবো) তত্ত্বাবধানে পরিচালিত আখিরা শাখা নদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধের প্রায় ১০০ মিটার অংশ ধসে পড়ে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বৃষ্টির মধ্যে তড়িঘড়ি করে কাজ করায় এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। কোটি কোটি টাকা খরচ হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে নদীর তীর সংরক্ষণের মূল উদ্দেশ্যই ভেস্তে যেতে বসেছে।
তবে ব্লক ধসে যাওয়ার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করলেও নিম্নমানের কাজের অভিযোগ অস্বীকার করে মাটির সমস্যার কথা জানিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
পাউবো সূত্রে জানা গেছে, নদী তীর সংরক্ষণ, খালবিল পুনর্খনন ও জলাবদ্ধতা নিরসন (১ সংশোধিত) প্রকল্পের আওতায় রংপুরের পীরগঞ্জের চতরা ইউনিয়নে ৮০০ মিটার নদী তীর সংরক্ষণ বাঁধের কাজ চলছে। ৫ কোটি ৩৮ লাখ ৩৪ হাজার ৭৪৭ টাকার কাজটি করছেন রংপুরের ঠিকাদার ভরত প্রসাদ। দুই বছর মেয়াদি কাজটি শুরু হয় ২০২৪ সালের জুলাই মাসে। ২০২৬ সালের ৩০ জুন কাজটি শেষ হওয়ার কথা।
শনিবার দুপুরে সরেজমিনে সংশ্লিষ্ট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, প্রকল্পের অধিকাংশ কাজই প্রায় শেষ। বসানো হচ্ছে ব্লক। তবে, ব্লক বসানো শেষ হওয়ার আগেই অনেক অংশের ব্লক খসে পড়েছে। ওয়াকওয়ের টাইলস উঠে যাচ্ছে। পাশে কোনো সাইনবোর্ডও নেই।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় শতবর্ষী ভবনের ছাদ ধসে গুরুতর আহত মা-ছেলে
স্থানীয়রা বলেন, কাজের মান এতই নিম্নমানের যে বন্যা হলে তীর সংরক্ষণ বাঁধ রক্ষা করাই সম্ভব হবে না। তাদের অভিযোগ, মাটি ফেলে তা সঠিকভাবে ডাম্পিং করা হয়নি। মাটি নরম থাকায় ব্লক ঠিকমতো থাকছে না।
কাজের তদারকিতে থাকা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক শ্যামল চন্দ্র রায় বলেন, কাজের মেয়াদ এখনও শেষ হয়নি। যেখানে যেখান সমস্যা হচ্ছে বা হবে, সেখানে মেরামত করা হচ্ছে।
তবে স্থানীয়দের দাবি, দায় সারা কাজ করার কারণে বাঁধ বেশিদিন টিকবে না। সরকারের কোটি কোটি টাকা পানিতে ভেসে যাবে। নদীর পাড় রক্ষায় সরকার কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে কাজ করছে যাতে স্থানীয়দের উপকার হয়। কিন্তু যে কাজ করছে তা শুরু হতে না হতেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। এই কাজে আমাদের বসতবাড়ি ও আবাদি জমি রক্ষা পাবে না। বন্যা হলে আবারও নদীর পাড় ভাঙতে পারে।
স্থানীয় এক ইউপি সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ঠিকাদারের লোকজন তড়িঘড়ি করে ব্লক নির্মাণ করে পাড়ে সারিবদ্ধভাবে বসিয়ে দেন। সে কারণেই এই অবস্থা। সেখানে ব্লক নির্মাণেও ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের সামগ্রী। এসব দেখেও না দেখার ভান করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের তদারক কর্মকর্তারা।
এ ব্যাপারে ঠিকাদার ভরত প্রসাদ বলেন, দুই পাশে ৪৮০ মিটার কাজ প্রায় শেষ করেছি। ১৩০ মিটার কাজ ঠিক আছে। তবে কোথাও কোথাও মাটির লেয়ারে সমস্যা থাকায় ধসে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘একবার ঠিক (মেরামত) করেছি, আবারও সমস্যা হয়েছে। এই মৌসুমে ঠিক করা যাবে না। মাটির লেয়ারে সমস্যা ছিল। পরিস্থিতি ভালো হলে আবার কাজটি ঠিক করা হবে।’
প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী টিএম ইসরাফিল হক বলেন, ‘কোনো অনিয়ম হয়নি। প্রকল্পটি ছিল সৌন্দর্যবর্ধনের। চুক্তিতে ডাম্পিং ছিল না। অতিরিক্ত পানির চাপের কারণে কিছু অংশ ধসে গেছে। আমরা ঠিকাদারকে চিঠি দিয়ে সেটি মেরামত করতে বলেছি।’
আরও পড়ুন: রংপুরে তিস্তা বাঁধে ধস, শঙ্কায় হাজারো পরিবার
স্থানীয়দের অনিয়মের অভিযোগ প্রসঙ্গে সহকারী প্রকৌশলী বলেন, ‘অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই। ব্লক তৈরিতে বুয়েট থেকে টেস্ট করিয়েছি। শুরুতে কিছু সমস্যা ধরা পড়লে সেগুলো বাতিল করা হয়। এক বছরে এই ব্লকে কোনো সমস্যা হলে ঠিকাদার তা মেরামত করবেন—তার সঙ্গে আমাদের এই চুক্তি রয়েছে।’
পাউবো রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘কাজটিতে তাড়াহুড়োর কারণে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। ওই খাল লিজ দেওয়া ছিল। এপ্রিল পর্যন্ত তাতে পানি ছিল, আবার মে মাসে নতুন করে পানি হয়েছে। মূলত পানি ও মাটির সমস্যার কারণে এই ধস।’
‘তিনি বলেন, ‘কাজের কোনো সমস্যা হলে ঠিকাদার এক বছর মেরামত করে দেবেন। সেই হিসেবে তারা কাজ করছে।’
১০২ দিন আগে
উত্তরে হারিয়ে যাচ্ছে শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী বাঁশ শিল্প
উত্তরের বিভিন্ন গ্রামে একসময় বাঁশ শিল্পের জমজমাট ব্যবসা ছিল। কিন্তু কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে সেই শিল্প। ডিজিটাল প্রযুক্তি প্রবেশ করায় গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী বাঁশ শিল্প এখন মুখ থুবড়ে পড়েছে।
রংপুর বিভাগীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প অধিদপ্তর জানায়, উত্তরের ৮ জেলার ১১৪টি গ্রামের মানুষ বাঁশ শিল্পে কর্মরত থেকে পরিবার-পরিজন পরিচালনা করত। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় দেশ ডিজিটাল এবং আধুনিকায়নের যুগে প্রবেশ করায় ঐতিহ্যবাহী এই শিল্প এখন হারিয়ে যেতে বসেছে।
রংপুরের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আবু জাফর জানান, একসময় বাঁশ শিল্পে এই অঞ্চলের ৭০ হাজার পরিবার তাদের জীবিকা নির্বাহ করত। কিন্তু বর্তমানে এই শিল্পে কর্মরত রয়েছে মাত্র ১২ হাজার পরিবার। প্রতিদিনই কমছে এই শিল্পের ব্যবহার। তাই এই শিল্পের শিল্পীরা এখন পেশা বদল করতে বাধ্য হচ্ছেন।
এই চিত্র শুধু রংপুরেই নয়, উত্তরের ৮ জেলা লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়েও। আধুনিকতার কারণে এসব জেলা থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে বাঁশ শিল্প।
তবে বিসিকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শিল্পটি ধরে রাখতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, একসময় বাঁশ কাটার শব্দে মুখর থাকত রংপুরের গঙ্গাচড়ার বড়বিল ইউনিয়নের মনিরাম গ্রাম। গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে ছিল বাঁশের তৈরি হস্তশিল্প— ডালি, কুলা, ঝুড়ি, চাটাই, হাঁস-মুরগির টোপা, মাছ ধরার ফাঁদ, হাতপাখা থেকে শুরু করে নানা প্রয়োজনীয় ও নকশাদার সামগ্রী। এই শিল্পই ছিল গ্রামের অনেক পরিবারের একমাত্র জীবিকা। তবে আধুনিকতার স্রোতে হারিয়ে যেতে বসেছে শত বছরের এই ঐতিহ্য। এখন বাঁশের কাজ করা মানুষগুলো টিকে থাকার লড়াইয়ে হেরে যাচ্ছেন।
মনিরামের প্রবীণ বাঁশশিল্পী আবদুল ওয়াহেদ (৮৫) বলেন, ‘আমার বাবার হাত ধরে এই কাজ শিখেছি। আগে অনেক অভাব-অনটন ছিল, এই কাজ করেই আমাদের ১৪ ভাই-বোনের সংসার চালাতেন বাবা। কখনোই হিমশিম খেতে হয়নি তাকে। বাবার আমল থেকে বাঁশের কাজ করছি। কিন্তু আগে যেমন বেচাবিক্রি হত, এখন আর সে রকম হয় না।’
নগরায়নের দৌঁড়ে পাল্লা দিয়ে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগছে বাংলাদেশের গ্রামগুলোতেও। ফলে গড়ে উঠছে নতুন নতুন জনবসতি। কমে যাচ্ছে কৃষি জমি ও বনাঞ্চল। গ্রামাঞ্চলে এখন বাঁশবন উজাড় করা হচ্ছে। তাই একদিকে বাড়ছে বাঁশের দাম, অন্যদিকে কমছে এর সহজলভ্যতা। ফলে এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে বাঁশশিল্পীদের কর্মসংস্থানে।
মনিরামের বাঁশশিল্পী কেনজুল বলেন, ‘আগে বাঁশ শিল্পের সোনালী অতীত ছিল, এখন সেগুলো কেবলই গল্প। আগে বাঁশ পাওয়া যেত ৫০ থেকে ১০০ টাকায়। আর এখন কিনতে হয় ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়। একটা বাঁশ দিয়ে পাশ থেকে ছয়টি মুরগির টোপা তোলা সম্ভব। একটা টোপা আমরা পাইকারদের কাছে বিক্রি করি ১০০ টাকায়। তাহলে সারা দিন পরিশ্রম করেও আমাদের লাভ তেমন থাকে না।’
১০৩ দিন আগে
রংপুরে অটোরিকশার ধাক্কায় শ্যালিকা-দুলাভাইয়ের মৃত্যু
রংপুরে মোটরসাইকেল নিয়ে রোড ডিভাইডার পারাপারের সময় অটোরিকশার ধাক্কায় দুলাইভাই ও শ্যালিকার মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) বিকাল সাড়ে ৬টার দিকে রংপুর নগরীর তাজহাট থানার সামনে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
নিহতরা হলেন- তানিমা আক্তার পান্না ও আসাদুল ইসলাম আসাদ (৪০)।
নিহত শ্যালিকা পান্না নগরীর বিনোদপুর এলাকার তরিকুল ইসলাম পাপ্পুর মেয়ে এবং দুলাভাই আসাদুল ইসলাম আসাদ নগরীর বালাপাড়া এলাকার মুক্তিযোদ্ধা আনছার আলীর ছেলে।
পড়ুন: নড়াইলে সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুলছাত্র নিহত, আহত ৬
এ ঘটনায় চালক সাদ্দাম হোসেনকে (২৫) আটক করা হয়েছে। আটক সাদ্দাম পঞ্চগড় জেলার দেবিগঞ্জ উপজেলার ইকরা ভাষা প্রধান পাড়ার অলিয়ার রহমানের ছেলে।
রংপুর মেট্রোপলিটনের তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাজান আলী বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, লাশগুলো রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। এ ঘটনায় চালক সাদ্দাম হোসেনকে (২৫) আটক করা হয়েছে। পরবর্তীতে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
১০৭ দিন আগে
রংপুরে হত্যাচেষ্টা মামলায় মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেপ্তার
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় হামলা ও হত্যাচেষ্টার দুই মামলায় রংপুর মহানগর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি আতাউর জামান বাবুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটিরও সদস্য।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সকালে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আরপিএমপি কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান।
এর আগে গতকাল (বুধবার) দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে নগরীর ইঞ্জিনিয়ার পাড়ার এক আত্মীয়ের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে মহানগর কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
আরও পড়ুন: রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলা আ.লীগের সভাপতিসহ গ্রেপ্তার ৭
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ৫ আগস্টের পর থেকে আতাউর জামান আত্মগোপনে ছিলেন। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন উসকানিমূলক পোস্ট দিয়ে আসছিলেন। তার বিরুদ্ধে রংপুর মহানগরীতে স্বেচ্ছাসেবক লীগকে সংগঠিত করার অভিযোগ রয়েছে।
ওসি আতাউর রহমান জানান, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আতাউর জামান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিতে আহত জয়নাল আবেদীন হত্যাচেষ্টা মামলার এক নম্বর এবং শহিদুল ইসলাম সাগর হত্যাচেষ্টা মামলার পাঁচ নম্বর আসামি। গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে তার অবস্থান শনাক্ত করার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ তাকে আদালতে তোলা হবে।
ওসি আরও জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার রিমান্ড চাওয়া হতে পারে।
১১২ দিন আগে
চোর সন্দেহে দুজনকে পিটিয়ে হত্যা: ৮ পুলিশ সদস্য বরখাস্ত
রংপুরের তারাগঞ্জে চোর সন্দেহে দুই ব্যক্তিকে সংঘবদ্ধ পিটুনি দিয়ে হত্যার ঘটনায় দুই উপপরিদর্শকসহ (এসআই) মোট আট পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে বুধবার (১৩ আগস্ট) রাতে রংপুর পুলিশ সুপারের নির্দেশে তাদের বরখাস্ত করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন— তারাগঞ্জ থানার এসআই আবু জোবায়ের, এসআই সফিকুল ইসলাম, কনস্টেবল ফারিকুদ আখতার জামান, ধীরাজ কুমার রায়, হাসান আলী, ফিরোজ কবির, মোক্তার হোসেন ও বাবুল চন্দ্র রায়।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে ওই আটজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ওই দিন ঘটনার সময়ে তারা তারাগঞ্জ থানায় মোবাইল টিমের দায়িত্বে ছিলেন।
সেই সঙ্গে ওই হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবু জোবায়েরকে তদন্ত কার্যক্রম থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। মামলার নতুন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে তারাগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলামকে।
আরও পড়ুন: রংপুরে জামাই-শ্বশুর হত্যায় ৭০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা, মহাসড়কে লাশ রেখে বিক্ষোভ
গতকাল (বুধবার) রাত পৌনে ৮টার দিকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুরের পুলিশ সুপার আবু সাইম।
গত শনিবার (৯ আগস্ট) রাত সাড়ে ৯টার দিকে তারাগঞ্জ-কাজীরহাট সড়কের বটতলা এলাকায় চোর সন্দেহে রূপলাল দাস ও প্রদীপ দাস নামের দুজনকে আটক করে পিটিয়ে হত্যা করে এলাকার উচ্ছৃঙ্খল জনতা।
স্থানীয়রা জানান, রূপলাল দাসের বড় মেয়ে নূপুর দাসের বিয়ের কথাবার্তা চলছিল মিঠাপুকুরের শ্যামপুর এলাকার লাল চাঁদ দাসের ছেলে ডিপজল দাসের সঙ্গে। গত রোববার তার বিয়ের দিন-তারিখ ঠিক করার কথা ছিল। এ জন্য মিঠাপুকুর থেকে নিজের ভ্যান চালিয়ে রূপলাল দাসের ভাগনি-জামাই প্রদীপ দাস শনিবার রূপলাল দাসের বাড়ির দিকে রওনা হন। কিন্তু তারাগঞ্জে এসে গ্রামের ভেতর দিয়ে রাস্তা না চেনায় প্রদীপ দাস সয়ার ইউনিয়নের কাজীরহাট এলাকায় পৌঁছে রূপলাল দাসকে ফোন করেন। সেখানে রূপলাল গিয়ে দুজনে রিকশাভ্যানে চড়ে ঘনিরামপুর গ্রামের দিকে রওনা দেন।
রাত ৯টার দিকে তারাগঞ্জ-কাজীরহাট সড়কের বটতলা এলাকায় পৌঁছালে ভ্যানচোর সন্দেহে তাদের এলাকার কয়েকজন আটক করেন। এরপর সেখানে লোকজড়ো হতে থাকেন। একপর্যায়ে প্রদীপ দাসের ভ্যানে থাকা বস্তা থেকে চারটি প্লাস্টিকের ছোট বোতল বের করেন স্থানীয় লোকজন। এর একটি বোতল খুললে ভেতরে থাকা তরলের ঘ্রাণে অসুস্থ হয়ে পড়েন পাশারিপাড়া গ্রামের ভ্যানচালক আলমগীর হোসেন ও বুড়িরহাটের মেহেদী হাসান। এতে লোকজনের সন্দেহ বেড়ে যায়। পরে ভ্যান চুরি সন্দেহে তাদের সেখানেই পিটিয়ে হত্যা করে উচ্ছৃঙ্খল জনতা।
১১৩ দিন আগে