শেয়ার
ফের পুঁজিবাজারে পতন, কমেছে ঢাকা-চট্টগ্রামের সবকটি সূচক
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে পতনের পর তৃতীয় দিনেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজার। দুই পুঁজিবাজারে সবকটি সূচক কমেছে ও লেনদেনে অংশ নেয়া তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম নিম্নমুখী অবস্থায় রয়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৮ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়া ভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ১০ পয়েন্ট ও বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৭ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেয়া ৩৯৯ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দামই নিম্নমুখী। ৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২৯২টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৪৬টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘জেড’– তিন ক্যাটাগরিতেই কমেছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২১৮ কোম্পানির মধ্যে ৩৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ১৫৩টি ও অপরিবর্তিত আছে ২৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ২১ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১২ কোম্পানির।২২ কোম্পানির ১৬ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। রেনেটা সর্বোচ্চ ৪ কোটি ৯৬ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
আরও পড়ুন: অর্থবছর শেষ হওয়ার আগেই সর্বোচ্চ রেমিট্যান্সের রেকর্ড
সূচকের পাশাপাশি লেনদেনও কমেছে ঢাকার বাজারে। সারাদিনে মোট ২৯৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৪৩ কোটি টাকা। ৯.৯১ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার সিটি ইনস্যুরেন্স। অন্যদিকে ৬.৭৭ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এনআরবি ব্যাংক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৭১ পয়েন্ট। লেনদেনে অংশ নেয়া ১৯৬ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৪৪, কমেছে ১২৭টির ও অপরিবর্তিত আছে ২৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ১১ কোটি ১২ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। ১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে সোনালি লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানির শেয়ার এবং ৯.৮২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে কেডিএস এক্সেসোরিস লিমিটেড।
২০৫ দিন আগে
পুঁজিবাজার: সপ্তাহজুড়ে চলল সূচক, লেনদেন ও শেয়ারের মূল্যপতন
সপ্তাহজুড়ে টানা পতনে সবদিক থেকে বড় রকমের হোঁচট খেয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামের পুঁজিবাজার। সূচক কমার পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে লেনদেন এবং বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাপ্তাহিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, চার কার্যদিবসের লেনদেনে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০৮ পয়েন্ট। ৫ হাজার ২০৫ পয়েন্ট নিয়ে সপ্তাহ শুরু করে পতনে শেষমেষ সূচক ঠেকেছে ৫ হাজার ৯৭ পয়েন্টে।
সারা সপ্তাহের লেনদেনে প্রধান সূচক ২ শতাংশের বেশি কমার পাশাপাশি বাকি সূচকের রীতিমতো ভরাডুবি হয়েছে। শরীয়াভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের সূচকও (ডিএসইএস) কমেছে ২৯ পয়েন্ট। এতে করে প্রায় আড়াই শতাংশ সূচক হারিয়েছে এই খাত।
গত সপ্তাহে ভালো কোম্পানির শেয়ারও ভালো করতে পারেনি। বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৫২ পয়েন্ট।
এক ধাক্কায় সূচক ২.৭২ শতাংশ কমে যাওয়ায় যারা ভালো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছিলেন তারাও চোখে-মুখে অন্ধকার দেখছেন।
ছোট ও মাঝারি কোম্পানির এসএমই সূচক কমেছে ৪.১৫ শতাংশ। এক সপ্তাহে ডিএসএমইএক্স সূচক হারিয়েছে ৪০ পয়েন্ট। সব মিলিয়ে সূচকের হিসাবে ঢাকার পুঁজিবাজারের বেহাল দশা।
একই অবস্থা লেনদেনেও। আগের সপ্তাহে যেখানে গড় লেনদেন ছিল ৪৮৭ কোটি টাকা, এবার সেটি কমে নেমেছে ৩৯৯ কোটি টাকায়। এক ধাক্কায় লেনদেন কমেছে ১৮.১১ শতাংশ।
বিনিয়োগকারীরা বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন, যার ছাপ পড়েছে শেয়ার হাতবদলের পরিমাণের ওপরে। এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে যেখানে ৯৮ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে, তৃতীয় সপ্তাহে এসে তা কমে হয়েছে ৫৭ কোটি।
আরও পড়ুন: পুঁজিবাজারে আবারও পতন, সূচক কমলো ১০৮ পয়েন্ট
সারা সপ্তাহে লেনদেনে অংশ নেওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ৭৭টির। বিপরীতে ২৯৯টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট হারিয়েছে দর, ২০টির দর ছিল অপরিবর্তিত।
সপ্তাহজুড়ে মাত্র দুই খাতে রিটার্ন জমা বেড়েছে। করপোরেট বন্ড আর সাধারণ বীমা খাতে রিটার্ন জমা বাড়লেও বাকি খাতগুলো রীতিমতো ধুঁকছে। বিশেষ করে মিউচুয়াল ফান্ড ও সিরামিক খাতে রিটার্ন জমা কমেছে ৬ শতাংশের বেশি।
সামগ্রিক হিসাবে ব্যাংক খাতে শেয়ারের দাম বাড়লেও পৃথক প্রাতিষ্ঠানিক হিসাবে ভালো সময় যাচ্ছে না পুঁজিবাজারের গুরুত্বপূর্ণ এ খাতে। লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬টি ব্যাংকের মধ্যে ২৪টিরই শেয়ারের দাম কমেছে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে শেয়ারের দাম কমেছে ৪১ শতাংশ এবং লেনদেন কমেছে ৩১ শতাংশ। ২৩টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পুরো সপ্তাহে দাম বেড়েছে মাত্র একটির, কমেছে ১৭টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সাধারণ বীমা খাতে ৮৫ শতাংশ দাম বাড়লেও জীবন বীমা খাতে দাম কমেছে ৫০ শতাংশের ওপরে। টেলিকম খাতে শেয়ারের দাম কমেছে ৩২ শতাংশ এবং আইটি খাতে কমেছে ৩৮ শতাংশ। ভালো করতে পারেনি প্রকৌশল খাতও, ১৬ শতাংশ দর হারিয়েছে এই খাত।
পতনের মধ্যেও ব্লক মার্কেটে সবচেয়ে বেশি শেয়ার বিক্রি করেছে ম্যারিকো, বিচ হ্যাচারি ও এসিআই লিমিটেড। ম্যারিকো ২৫ কোটি ২০ লাখ, বিচ হ্যাচারি ২৫ কোটি ১০ লাখ ও এসিআই ২০ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সপ্তাহের শীর্ষ শেয়ারে জায়গা করে নিয়েছে দেশ জেনারেল ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। ‘বি’ ক্যাটাগরির এই কোম্পানিটি চার কার্যদিবসে ২৪ শতাংশের ওপরে রিটার্ন দিয়েছে। গত সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ২৫ টাকা যা এ সপ্তাহে বেড়ে হয়েছে ৩১ টাকা।
অন্যদিকে, ১৫ শতাংশের ওপর রিটার্ন হারিয়ে তলানিতে বাংলাদেশ ফাইন্যান্স। ‘এ’ ক্যাটাগরির এই কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ার ১২ টাকা থেকে কমে ১০ টাকায় নেমে এসেছে।
আরও পড়ুন: পতন যেন থামছেই না পুঁজিবাজারে
পর্যদুস্ত চট্টগ্রামও
ঢাকার মতো বেহাল দশা চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সাপ্তাহিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এক সপ্তাহে সেখানকার সার্বিক সূচক কমেছে ২৫০ পয়েন্ট।
লভ্যাংশ না দেওয়া কোম্পানি ‘জেড’ ক্যাটাগরি বাদ দিয়ে চট্টগ্রামের সিলেক্টিভ ইনডেক্স সিএসসিএক্সেও পতন হয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। সপ্তাহজুড়ে ‘এ’, ‘বি’, ‘জি’ ও ‘এন’ ক্যাটাগরির শেয়ারের সূচক কমেছে ১৪৯ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামের বেঞ্চমার্ক সূচক সিএসই-৫০ কমেছে ১৭ পয়েন্ট এবং শরীয়াভিত্তিক সূচক সিএসআই কমেছে ২১ পয়েন্ট। এছাড়া সিএসই তালিকাভুক্ত ক্ষুদ্র ও মাঝারি কোম্পানির এসএমই সূচক কমেছে ৪.৫৭ শতাংশ।
সারা সপ্তাহে ৩০১টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে, যার মধ্যে দাম বেড়েছে ৬৫টির, কমেছে ২১৮টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ১৮টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে সাপ্তাহিক লেনদেনে শীর্ষে আছে আনোয়ার গ্যালভানাইজিং লিমিটেড। চার কার্যদিবসে ‘এ’ ক্যাটাগরির এই কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৮ টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের বাজার মূল্য ৮৭ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬৮ টাকা।
এদিকে, পুরো সপ্তাহে শেয়ারপ্রতি ২০ টাকা দর হারিয়ে তলানিতে আছে শমরিতা হাসপাতাল। সিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার। চার দিনে কোম্পানিটির ৭ কোটি ৬০ লাখ টাকার শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে।
আরও পড়ুন: দোদুল্যমান সূচকে লেনদেন চলছে পুঁজিবাজারে
হতাশ বিনিয়োগকারীরা
টানা দরপতনে বাজারের ওপর হতাশ হয়ে পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা। অনেকেই তল্পিতল্পা গুটিয়ে বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) অ্যাকাউন্ট শূন্য করে বাজার ছাড়ছেন।
সেন্ট্রাল ডিপোজেটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) বিও অ্যাকাউন্টের হিসাব বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ঈদের ছুটির আগে শূন্য ব্যালেন্সের বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২১০, যা সর্বশেষ কার্যদিবসে বেড়ে হয়েছে ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৩৬৭। অর্থাৎ এই কদিনে ৪ হাজার ১৫৭ জন বিনিয়োগকারী নিজেদের বিও অ্যাকাউন্ট থেকে সব টাকা তুলে নিয়েছেন।
পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারী তারেক হোসেন জানান, ‘বাজার সংস্কারে এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। যাদের জরিমানা করা হয়েছে এবং কারসাজির জন্য আটক করা হয়েছে, তাদের বিচারেরও কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। সব মিলিয়ে বাজার থেকে বিনিয়োগকারীরা ধীরে ধীরে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।’
আরেক বিনিয়োগকারী হাবিবুর রহমান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বিনিয়োগকারীদের কোনো দাবি মেনে নেওয়া হয়নি। খারাপ কোম্পানি থেকে বেরিয়ে আসতে বাই-ব্যাক আইন চালু কথা বারবার বলা হলেও কমিশন সেদিকে ভ্রূক্ষেপ করছে না। আবার যারা মার্জিন ঋণ নিয়ে সর্বহারা হয়েছেন তাদের ব্যাপারেও কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।’
মার্জিন ঋণ প্রসঙ্গে বিনিয়োগকারী ফরিদুর রহমান বলেন, “এই ঋণের কারণে খারাপ কোম্পানির শেয়ারে ধস নামলে বাধ্য হয়ে ভালো কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করে দিতে হয়। এতে করে ‘জেড’ ক্যাটাগরির অনেক কোম্পানির জন্য ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানির দাম কমে। সব মিলিয়ে বাজারে সৃষ্টি হয় পতনের ধারা।”
আরও পড়ুন: পতনে পর্যদুস্ত পুঁজিবাজার
আইপিও কেন আসছে না?
পুঁজিবাজারের মুখ থুবড়ে পড়ার বড় আরেকটি কারণ হিসাবে দেখা হচ্ছে ভালো কোম্পানির আগ্রহ না থাকা। চলতি বছর ভালো কিছু কোম্পানি বাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার কথা থাকলেও শেষপর্যন্ত ওই সিদ্ধান্ত আর আলোর মুখ দেখেনি।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের নির্বাহী পরিচালক পদের এক কর্মকর্তা জানান, ‘চলতি বছর নতুন আর কোনো আইপিও আসার সম্ভাবনা নেই। ভালো ভালো কোম্পানিগুলো বাজারে বিনিয়োগে ভরসা পাচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘সুপারিশ অনুযায়ী কোম্পানি তালিকাভুক্তির নিয়মনীতি ঢেলে সাজাচ্ছে বিএসইসি। গেজেট আকারে নতুন আইপিও আইন আসতে আসতে সেপ্টেম্বর মাস হয়ে যাবে। নতুন আইনের আওতায় নতুন কোম্পানি আসতে আরও পাঁচ-ছয় মাস। এতে করে ২০২৬ সালের মার্চ-এপ্রিলের আগে নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্ত করা বড় চ্যালেঞ্জ।’
গত বছর আগস্টে দায়িত্ব নেওয়া নতুন কমিশন এতদিনে কেন ভালো কোনো কোম্পানি তালিকাভুক্ত করতে পারল না, এ প্রশ্নের জবাবে এই কর্মকর্তা জানান, ‘যেসব কোম্পানি ভালো মুনাফা করছিল, দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে তাদের প্রশাসনিক ও ব্যবস্থাপনা পর্ষদে পরিবর্তন এসেছে। নতুন পর্ষদের অধীনে অনেক কোম্পানি এখনও গুছিয়ে উঠতে পারেনি। এদিকে ব্যাংক ঋণের সুদহার আগের তুলনায় অনেক বেশি হওয়ায় এর প্রভাব সরাসরি পড়েছে কোম্পানির মুনাফার ওপরে। সব মিলিয়ে কোম্পানিগুলো ভালো করতে শুরু করলে তারা নিজ থেকেই পুঁজিবাজারের দিকে ঝুঁকবে।’
আরও পড়ুন: সপ্তাহের শুরুতেই সূচকের বড় পতন দেখল পুঁজিবাজার
ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্ত করতে চাইলে তাদের বড় অঙ্কের কর ছাড়ের ব্যবস্থা করা জরুরি বলে মনে করেন এ কর্মকর্তা। দেশের বড় বড় কোম্পানিকে নানা ধরনের সুবিধা দিয়ে বাজারে আনতে পারলে বাজার চাঙ্গা হবে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি।
২৩০ দিন আগে
সপ্তাহজুড়ে পতনে ডিএসই হারিয়েছে সবকটি সূচক
সপ্তাহ ভালো কাটেনি ঢাকার পুঁজিবাজারে, টানা পতনে কমেছে সবকটি সূচক। সূচকের পতনের পাশাপাশি সারা সপ্তাহে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল নিম্নমুখী।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাপ্তাহিক লেনদেন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, পাঁচ কার্যদিবসে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
৫২২৫ পয়েন্ট নিয়ে শুরু হওয়া লেনদেন সপ্তাহ শেষে এসে ঠেকেছে ৫২০১ পয়েন্টে।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়া ভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে১৩ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৭ পয়েন্ট।
বেহাল দশা ছোট এবং মাঝারি আকারের কোম্পানিতেই। ডিএসই'র এসএমই সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। এক সপ্তাহের লেনদেনে এ খাত ১.৬৩% সূচক হারিয়েছে।
সপ্তাহজুড়ে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল নিম্নমুখী। সারা সপ্তাহে ১৪৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৭ কোম্পানির। দর অপরিবর্তিত ছিল ৩৮ কোম্পানির এবং ১৮ কোম্পানি অংশ নেয়নি লেনদেনে।
সপ্তাহের শুরু থেকে বেশিরভাগ কোম্পানির দাম কমতে থাকলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শেয়ার বিক্রির ধুম লেগে যায়। এতে করে আদতে লেনদেন বাড়লেও বাড়েনি শেয়ারের সামগ্রিক দাম।
আরও পড়ুন: ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচক বাড়লেও কমেছে লেনদেন
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে পাঁচ কার্যদিবসের গড় লেনদেন ছিল ৪৭৮ কোটি টাকা, যা গত সপ্তাহের তুলনায় প্রায় ২২ শতাংশ বেশি।
তবে গড় লেনদেন বাড়লেও বাজার থেকে কমেছে মোট মূলধনের পরিমাণ। ব্রোকারেজ হাউজগুলোর দেয়া তথ্য অনুসারে, অনেক বিনিয়োগকারীই তলি তল্পা গুটিয়ে বাজার ছেড়েছেন। বাজারে বিনিয়োগকারীদের আত্মবিশ্বাস গিয়ে ঠেকেছে তলানিতে।
ডিএসই'র সাপ্তাহিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ৩৩৩ মিলিয়ন ডলার।
সপ্তাহজুড়ে ব্যাংক, আইটি, লাইফ ইনস্যুরেন্স, টেক্সটাইল, সাধারণ বীমা, ট্যানারি, টেলিকম এবং পাটখাতে রিটার্ন কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে।
অন্যদিকে মিউচুয়াল ফান্ড, সিরামিক, রিয়েল স্টেট, কাগজশিল্প, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, করপোরেট বন্ড, প্রকৌশল, জ্বালানি এবং ঔষধশিল্পে ভালো রিটার্ন এসেছে। এদের মধ্যে মিউচুয়াল ফান্ডে সর্বোচ্চ ৫ দশমিক ১৪ শতাংশ রিটার্ন এসেছে।
সপ্তাহজুড়ে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে শাইনপুকুর সিরামিকসের। পাঁচ কার্যদিবসে কোম্পানিটির মোট ১৬ কোটি ১৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে দ্বিতীয়ে আছে স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালস পিএলসি। সাপ্তাহিক হিসাবে কোম্পানিটির মোট ১৪ কোটি ৫০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
পাঁচ কার্যদিবসে ব্লক মার্কেটে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে মারিকোর শেয়ার। মারিকোর পরেই শেয়ার বিক্রিতে এগিয়ে আছে এক্সপ্রেস ইনস্যুরেন্স লিমিটেড, ব্যাংক এশিয়া, বিচ হ্যাচারি এবং খান ব্রাদার্স।
সারা সপ্তাহে লেনদেনে দরবৃদ্ধির তালিকায় শীর্ষে আছে প্রোগ্রেসিভ লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড। জেড ক্যাটাগরির এ কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৩০ শতাংশের বেশি। ৪৭ টাকায় লেনদেন শুরু হওয়া কোম্পানিটির শেয়ারের দাম সপ্তাহ শেষে হয়েছে ৬২ টাকা।
অন্যদিকে সাপ্তাহিক লেনদেনে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। কোম্পানিটির শেয়ারের দাম কমেছে ১৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ। ৬৫ টাকায় শেয়ারপ্রতি লেনদেনে সপ্তাহ শেষে কমে হয়েছে ৫৬ টাকা।
পুঁজিবাজারে বেহাল দশা কাটিয়ে উঠতে গত সপ্তাহে সোমবার (১৭ মার্চ) পুঁজিবাজার উন্নয়নে চার সদস্যের কমিটি গঠন করেছে সরকার। কমিটি গঠনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়, দেশের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিকে অধিকতর শক্তিশালীকরণ এবং সর্বোপরি দেশের পুঁজিবাজার উন্নয়নের জন্য কমিটি কাজ করবে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, টাস্কফোর্স এবং কমিটি উভয়কেই কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। আর নইলে সভা করে বাজারে চলমান সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হবে না।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) বজায় ছিল সূচকের পতনের ধারা। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ১৭ পয়েন্ট। ১৪৫৭৬ পয়েন্ট নিয়ে লেনদেন শুরু হলেও সপ্তাহান্তে সূচক দাঁড়িয়েছে ১৪৫৫৯ পয়েন্টে।
সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ৩০২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫৪, কমেছে ১২৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পাঁচ কার্যদিবসে সিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের শেয়ার। এছাড়া লেনদেনে শীর্ষ তালিকায় আছে উত্তরা ব্যাংক, ফাইন ফুডস, রবি, ফু-ওয়ান সিরামিক এবং শাইনপুকুরের শেয়ার।
আরও পড়ুন: আবারও সূচক কমলো ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, বেড়েছে লেনদেন
সিএসইতে দরবৃদ্ধিতে শীর্ষে উঠে এসেছে প্যারামাউন্ট ইনস্যুরেন্স কোম্পানি। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি দাম বেড়েছে ১০ টাকা করে।
এছাড়া ভালো অবস্থানে আছে শাইনপুকুর সিরামিকস, ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচুয়াল, সেমি লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট এবং এস আলম কোল্ড রোলড স্টিলস।
অন্যদিকে দরপতনে শীর্ষে উঠে এসেছে সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। সপ্তাহ ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম কমেছে ১৫ টাকা। ডিএসই'র মতো সিএসইতেও ধস নেমেছে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজে। পাঁচ কার্যদিবসের লেনদেনে আলিফের শেয়ারপ্রতি দাম কমেছে ১৪ টাকা।
২৫৮ দিন আগে
বন্ধ কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজি থামাতে উদ্যোগ নেওয়া হবে কবে
খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেড (কেপিপিএল); প্রায় ৩ বছর ধরে কোম্পানিটির কারখানা ও প্রধান কার্যালয় বন্ধ থাকালেও পুঁজিবাজারে এই কোম্পানির শেয়ারের রমরমা লেনদেন হচ্ছে, যা রীতিমতো বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্টদের মনে সন্দেহ সৃষ্টি করেছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) হিসাব বলছে, গত এক বছরে কোনো ধরনের উৎপাদন না হওয়ার পরও মাত্র ৭ টাকায় থাকা কেপিপিএলের শেয়ারের দাম বেড়ে সর্বোচ্চ ৫৯ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। বর্তমানে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ার লেনদেন হচ্ছে ৩০ টাকার ওপরে।
ডিএসসির ওয়েবসাইট ঘেটে দেখা যায়, কোম্পানিটির নিজস্ব নামের কোনো ওয়েবসাইট নেই। লকপুর গ্রুপ নামে যে ওয়েবসাইটের ঠিকানা দেওয়া আছে সেটিও বর্তমানে অকার্যকর। এছাড়া কোম্পানিটিতে যোগাযোগের যেসব নম্বর দেওয়া হয়েছে তার সবকটিই বন্ধ, নেই কোনো কোম্পানি প্রতিনিধির নাম কিংবা মোবাইল নম্বরও।
সরেজমিনে বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার লকপুরে অবস্থিত প্রধান কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বহুদিন ধরে লকপুরের আওতাধীন বেশিরভাগ কোম্পানি বন্ধ আছে।
কোম্পানিটির চেয়ারম্যান এস এম আমজাদ হোসেন লকপুরের পাশাপাশি ছিলেন সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। ২০১৩-২১ সাল পর্যন্ত ব্যাংকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনকালে তার বিরুদ্ধে বন্ড জালিয়াতি ও অর্থপাচারসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ আনে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পরবর্তীতে ২০২১ সালে সেপ্টেম্বরে পদত্যাগে বাধ্য হন তিনি।
২০২১ সালের মার্চে আমজাদ হোসেন ও তার স্ত্রী-কন্যার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এতে লকপুর গ্রুপের আওতাধীন ধুঁকতে থাকা এ কোম্পানিটি ২০২১ সালেই কার্যত বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়।
কেপিপিএলে হিমায়িত মাছ ও খাবারের মোড়কজাত করা হতো বলে জানান কোম্পানিটির সাবেক কর্মীরা। শুধু কেপিপিএল নয়, লকপুর গ্রুপের আরেক প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পলি প্রিন্টিং ইন্টারন্যাশনালও বন্ধ হয়ে গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দায়িত্বশীল কাউকে না পাওয়া গেলেও লকপুর গ্রুপের সাবেক কর্মী হাবিবুর রহমান জানান, খুলনা ও বাগেরহাট জেলায় লকপুরের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আছে। তবে বর্তমানে এই গ্রুপের কোনো প্রতিষ্ঠানেই কোনো ধরনের উৎপাদন হচ্ছে না। শুরুতে আড়াইশ থেকে তিনশর মতো কর্মী ছিল কেপিপিএলে, তবে বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি একেবারেই বন্ধ।
২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ডিএসইর প্রতিনিধিদল খুলনার রূপসায় কেপিপিএলের কারখানা পরিদর্শন শেষে জানায়, প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন বন্ধ আছে। অথচ, উৎপাদন বন্ধ থাকার পরও প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার হয়ে ওঠে কারসাজিকারকদের প্রিয় মাধ্যম। গত এক মাসের হিসাবে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৩৫০ শতাংশের বেশি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মতিঝিল এলাকার এক ব্রোকারেজ হাউজের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘এবারই প্রথম নয়, এর আগেও কেপিপিএলের শেয়ার নিয়ে কারসাজিকারকরা বড় রকমের মুনাফা তুলে নিয়েছে। বর্তমানে ডিএসইর সফটওয়্যারের দুর্বলতাকে কাজে লাগাচ্ছে একটি চক্র। কিন্তু এক্ষেত্রে ডিএসই শুধু চিঠি কিংবা সতর্কবার্তা দিয়েই চুপ থাকছে।’
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সর্বশেষ মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) কেপিপিএলের অস্বাভাবিক শেয়াদরের কারণ তদন্তের নির্দেশ দিয়ে ডিএসইকে চিঠি দিয়েছে।
একই দিনে ডিএসই জানায়, গত ২ ফেব্রুয়ারি কোম্পানিটির শেয়ারের অস্বাভাবিক লেনদেনের কারণ জানতে চেয়ে কেপিপিএলকে চিঠি দেওয়া হলেও কোনো জবাব আসেনি।
এত কিছুর পরও কেন বিএসইসি শক্ত পদক্ষেপ নিচ্ছে না—এমন প্রশ্নে কমিশনের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, ‘কোম্পানির ব্যাপারে কমিশন সরাসরি নির্দেশনা দিতে পারলেও ডিএসইর উচিত নিজেদের মতো করে পুরো ব্যাপারটি খতিয়ে দেখা। এ ব্যাপারে এক্সচেঞ্জের সহায়তা লাগলে বিএসইসি প্রস্তুত আছে।’
আরও পড়ুন: উত্থানের ধারা অব্যাহত পুঁজিবাজারে
বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে যারা বিনিয়োগ করছেন তারা প্রায় সবাই জানেন যে, কোম্পানিটির উৎপাদন বন্ধ এবং এর শেয়ার কেনাবেচা ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু বাজারে তারল্য সংকট থাকায় এবং এতদিনের লোকসানের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে জেনেশুনেই ঝুঁকি নিচ্ছেন তারা।
তারেক হোসেন নামে এক বিনিয়োগকারী বলেন, ‘শেয়ার ভালো নাকি খারাপ, সেটি বিনিয়োগকারীরা জানলেও সিদ্ধান্ত নিতে অনেক সময় ভুল করেন। কিন্তু কমিশন বা এক্সচেঞ্জ হাউজ জেনেশুনে কেন সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে না, কেন খারাপ কোম্পানি তালিকা থেকে বের করে দেয় না—সেটিই বড় প্রশ্ন।’
উৎপাদনে থাকার সময়ও কেপিপিএল লোকসানি কোম্পানি ছিল। কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০১৯ সালে কোম্পানিটি ৭ কোটি ৯২ লাখ টাকা লোকসান করে। পরে ২০২০ সালে ৬ কোটি টাকা লাভ হলেও, ২০২১ সালে লোকসান বেড়ে দাঁড়ায় ৩৩ কোটি টাকায়। কোম্পানিটির দেওয়া সর্বশেষ ২০২২ সালের হিসাব অনুযায়ী, মোট লোকসানের পরিমাণ ছিল ২ কোটি ৩১ লাখ টাকা।
২০১৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটি ২০২০ সালে বিনিয়োগকারীদের সর্বশেষ লভ্যাংশ দেয় শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ।
এত বছর লভ্যাংশ না দেওয়া একটি কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রাখার যৌক্তিকতার প্রশ্ন তুলে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘একটি কোম্পানি ৬ মাসের বেশি উৎপাদনে না থাকলে তাকে তালিকাভুক্ত রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই। অথচ বছরের পর বছর ধরে কেপিপিএলের উৎপাদন বন্ধ, অন্যদিকে এই কোম্পানির শেয়ার নিয়ে বাজারে চলছে কারসাজি। এখানে ডিএসইর উচিত, সরেজমিনে তদন্ত করে কোম্পানিটিকে পুঁজিবাজার থেকে বের করে দেওয়া। কেপিপিএলের মতো কোম্পানি বাজারে রাখা মানে কারসাজিকারকদের প্রশ্রয় দেওয়া।’
কেন কেপিপিএলকে পুঁজিবাজার থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে না?—জবাবে কমিশনের প্রসঙ্গ টেনে ডিএসইর এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেন, ‘এর আগে বেশ কয়েকবার কোম্পানিটি ডিলিস্টিং (নিবন্ধন বাতিল) করার পরও কমিশনের চাপে পুনরায় লিস্টিং (তালিকাভুক্ত) করতে হয়েছে। সে সময়ে ডিলিস্টিং নিয়মতান্ত্রিক হয়নি—এমন যুক্তিতে ক্ষতিকারক এসব কোম্পানিকে আবারও বাজারে জায়গা দেওয়া হয়। এরপর থেকে এক্সচেঞ্জ হাউজ এসব ব্যাপারে সরাসরি হস্তক্ষেপ কমিয়ে দিয়েছে।’
আরও পড়ুন: উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে দুই পুঁজিবাজারে
বাজারে বাজে কোম্পানির প্রাদুর্ভাব নিয়ে ডিএসই পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, ‘গত এক দশকে বাজারে ভালো কোনো আইপিও আসেনি। ফলে বাজে কোম্পানির প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। এসব কোম্পানিকে পুঁজি করেই কারসাজিকারকরা নিজেদের ফায়দা লুটছে।’
তিনি বলেন, ‘চাইলেই স্কয়ার, এসিআই কিংবা ভালো কোনো কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজি করা সম্ভব নয়। কিন্তু কেপিপিলের মতো ভুঁইফোড় এসব কোম্পানি বাজার অস্থিতিশীল করছে, বিপদে ফেলছে বিনিয়োগকারীদের।’
কোম্পানিটির ২০২২ সালের নথি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, কেপিপিএলের মূল শেয়ারের প্রায় ৬০ শতাংশই আছে বিনিয়োগকারীদের হাতে। বাকি ৩৯ শতাংশ কোম্পানির পরিচালক এবং ১ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার। এ অবস্থায় পুঁজিবাজার থেকে কেপিপিএলের মতো কোম্পানির ক্ষেত্রে বাইব্যাক আইন চালু করার দাবি জানিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
ডিএসই জানিয়েছে, এক্সচেঞ্জ হাউজের রেগুলেটরি বিভাগ গুরুত্বসহকারে ব্যাপারটি পর্যবেক্ষণ করছে। টানা কারসাজি আর ভরাডুবির পর নতুন কোনো অনিয়ম প্রশ্রয় দেওয়ার সুযোগ নেই।
আরও পড়ুন: পুঁজিবাজারে সূচক বেড়েছে সামান্য, দাম কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির
৩০২ দিন আগে
উত্থানের ধারা অব্যাহত পুঁজিবাজারে
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে টানা উত্থানের ধারা বজায় আছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে। সূচক বাড়ার পাশাপাশি দুই বাজারেই বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সারাদিনের লেনদেন শেষে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ২২ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৭ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ ডিএস-৩০ বেড়েছে ৩ পয়েন্ট।
সূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে গতদিনের তুলনায় ২৭ কোটি টাকা। একদিনের শেয়ার এবং ইউনিট ক্রয়-বিক্রয়ে মোট ৪৭১ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ৩৫ পয়েন্ট। সূচক বাড়ার পাশাপাশি লেনদেনেও ঊর্ধ্বগতি। একদিনে সিএসইতে মোট ৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে; যা গতদিন ছিল ৪ কোটি ২৩ লাখ।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৪০১ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২০৭, কমেছে ১২৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দরবৃদ্ধির হিসাবে তিন ক্যাটাগরির বেশিরভাগ কোম্পানিরই দাম বেড়েছে। ‘এ’ ক্যাটাগরিতে ৯৯ কোম্পানির দাম বেড়েছে, কমেছে ৮০, অপরিবর্তিত আছে ৪০ কোম্পানির শেয়ারের দাম। ‘বি’ ক্যাটাগরিতে ৫৭ কোম্পানির দাম বেড়েছে, কমেছে ২২ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম। ‘জেডে’ ৫০ কোম্পানির দাম বেড়েছে, কমেছে ২৭ এবং দাম অপরিবর্তিত আছে ১৭ কোম্পানির।
আরও পড়ুন: উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে দুই পুঁজিবাজারে
লেনদেন হওয়া মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে বেশিরভাগেরই দাম অপরিবর্তিত ছিল। ১৭ কোম্পানির দামে আসেনি কোনো পরিবর্তন, দাম বেড়েছে ১৩ কোম্পানির এবং কমেছে ৭ কোম্পানির।
ব্লক মার্কেটে মোট ২৮ কোম্পানির ৪১ লাখ শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে। এর মধ্যে বিচ হ্যাচারি লিমিটেড একাই ৭ লাখ শেয়ার ৭ কোটি টাকায় বিক্রি করেছে।
ডিএসইতে লেনদেনে শীর্ষে উঠে এসেছে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের নাম। একদিনের ব্যবধানে ব্যাংকটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ১০ শতাংশ। অন্যদিকে ৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে আছে শিকদার ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ার।
ডিএসই'র মতো সিএসইতেও ১০ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক। অন্যদিকে ৯ দশমিক ৯ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে আছে লাভেলো আইসক্রিম পিএলসি।
৩০৩ দিন আগে
ডিএসইতে ৯৮ পয়েন্ট বেড়েছে, লেনদেন হয়েছে ৩৭৬ কোটি ৬০ লাখ টাকার শেয়ার
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্রড ইনডেক্সে (ডিএসই) ৯৮ পয়েন্ট বেড়ে বুধবার লেনদেন হয়েছে ৩৭৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
ডিএসই ব্রড ইনডেক্স ৯৮ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৪২২ পয়েন্টে এবং ডিএসই শরিয়াহ সূচক (ডিএসইএস) ১৮ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২০৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। শীর্ষ ৩০ কোম্পানিগুলোর ওপর নজর রাখা ডিএসই-৩০ ইনডেক্স ৪৫ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৯৮ পয়েন্টে বন্ধ হয়েছে।
লেনদেন হওয়া ৩৯৬টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩২৭টির শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে ৩৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩২টির।
ডিএসইতে দৈনিক লেনদেন হয়েছে ৩৭৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা, যা আগের কার্যদিবসের ৩৫৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার চেয়ে ২১ কোটি ২৩ লাখ টাকা বেশি।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সিএএসপিআই সূচক ১৭৩ পয়েন্ট বেড়ে ১৫ হাজার ১৩৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এদিন মোট ২০৪টি কোম্পানি লেনদেন করে। যার মধ্যে দাম বেড়েছে ১২৫টির, কমেছে ৫৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৬টির শেয়ার।
সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ১১ কোটি ৩২ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন: ক্রান্তিকাল পেরিয়ে সম্ভাবনার পথে শেয়ারবাজার: ডিএসইর চেয়ারম্যান
৪২২ দিন আগে
ইভ্যালি: রাসেল-শামীমার শেয়ারের ৫০ শতাংশ হস্তান্তরে হাইকোর্টের অনুমতি
আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির সাবেক এমডি মো. রাসেল তার স্ত্রী সাবেক চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের নামে থাকা কোম্পানির শেয়ারের ৫০ শতাংশ রাসেলের শ্বশুর-শাশুড়ি ও ভায়রা মামুনুর রশীদের বরাবর হস্তান্তরের অনুমতি দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার ইভ্যালির শেয়ার নিতে ওই তিনজনের আবেদনের শুনানি নিয়ে সম্পত্তি হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞার আগের আদেশ সংশোধন করে বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
তবে শেয়ার হস্তান্তর হলে এই তিনজন আদালতের অনুমতি ছাড়া সে শেয়ার আর হস্তান্তর করতে পারবে না। সেই সঙ্গে তারা এই শেয়ারের বিষয়ে ইভ্যালি নিয়ে হাইকোর্টের গঠিত বোর্ডের কাছে দায়বদ্ধ থাকবেন। এছাড়া রাসেল ও শামীমা নাসরিন কারাগারে থাকায় তাদের থেকে শেয়ার হস্তান্তরের ক্ষেত্রে আইজি প্রিজনকে সহযোগীতা করতে করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এছাড়া ইভ্যালির ভবন মালিক শেখ সালাউদ্দিনকে আগামি ২৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে হাজির হতে বলেছেন। তবে তিনি হজির না হলে তাকে গ্রেপ্তার করে হাইকোর্টে নিয়ে আসতে পুলিশের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: স্বজনসহ ইভ্যালির রাসেলের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ
বৃহস্পতিবার আদালতে রাসেলের শ্বশুর-শাশুড়ি ও ভায়রার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী শামীম আহমেদ মেহেদী। কোম্পানিটি অবসায়নের আবেদনকারী গ্রাহকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসেন। আর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষে ছিলেন তাপস কান্তি বল।
পরে ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসাইন বলেন, ইভ্যালির ম্যানেজিং ডিরেক্টরের শ্বশুর-শাশুড়ি, ভাই-বোন আজ আদালতে সশরীরে হাজির হন। তারা আদালতকে জানান, ইভ্যালি পুনর্গঠনের জন্য তারা কাজ করছেন। যারা ইভ্যালির কাছে টাকা-পয়সা ও পণ্য পাবেন সেগুলো ফেরত দেয়ার বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে চান তারা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট একটা ডিরেকশন দেন, যাতে ইভ্যালির ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও চেয়ারম্যানের যে শেয়ারগুলো আছে সেগুলোর মধ্যে কিছু সংখ্যক শেয়ার যেন তাদের আত্মীয়-স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করতে পারেন।
তিনি বলেন, ইভ্যালির ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও চেয়ারম্যান জেলখানায় অবস্থান করছেন। এ অবস্থায় পুরো হস্তান্তর প্রক্রিয়া তাদের জেলখানায় থাকা অবস্থাতে হবে। রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়াও জেল কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে হবে। ওনাদের শেয়ারগুলো তাদের আত্মীয়-স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হবে। তখন তারা ইভ্যালি পুনর্গঠনের পাশাপাশি পরিচালনা বোর্ডকে সহযোগিতা করবেন।
ইভ্যালির অবসায়ন চেয়ে এক গ্রাহকের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির সব ধরনের সম্পদ বিক্রি এবং হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। ওইদিন আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসেন জানিয়েছিলেন, আবেদনকারী ইভ্যালি অনলাইন শপিংমলে মে মাসে একটি ইলেকট্রনিকস পণ্যের অর্ডার করেন। অর্ডারের সময় তিনি মোবাইলফোনভিত্তিক ডিজিটাল আর্থিক সেবার মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করেছেন। এরপর কোম্পানিটি অনলাইনে তাকে একটি পণ্য কেনার রশিদও দিয়েছেন। কিন্তু এত দিনেও তারা পণ্যটি বুঝিয়ে দেয়নি। আবেদনকারী যোগাযোগ করার পর তাকে আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু পণ্যটি দেয়নি কিংবা টাকাও ফেরত দেয়নি ইভ্যালি। যোগাযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি আবেদনকারী। তাই তিনি উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন। আবেদনে কোম্পানিটির অবসায়ন চাওয়া হয়েছে। তার আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত আবেদনটি শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। এছাড়া আদেশে ইভ্যালির যত সম্পদ রয়েছে, সেটা যেন বিক্রি অথবা হস্তান্তর না করা যায়। আদালত একটি নোটিশ ইস্যু করেন, কেন ইভ্যালিকে অবসায়ন করা হবে না।
এরপর গত বছরের ১৮ অক্টোবর ইভ্যালির ব্যবস্থাপনায় আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে (চেয়ারম্যান) একটি বোর্ড গঠন করেন হাইকোর্ট। বোর্ডের সদস্য করা হয়েছে, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত সচিব মো. রেজাউল আহসান, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ফখরুদ্দিন আহমেদ ও আইনজীবী খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ। আর সরকারি বেতনে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর।
আরও পড়ুন: ইভ্যালির ৭ গাড়ি নিলামে ২ কোটি ৯০ লাখ টাকায় বিক্রি
ইভ্যালির সম্পত্তি যে কোন স্বনামধন্য ফার্ম দিয়ে অডিট করতে নির্দেশ
১৩৮৭ দিন আগে
বন্ধুর সাথে আনন্দময় মুহূর্ত শেয়ার করে জিতে নিন অপো এফ১৯ প্রো
গ্লোবাল স্মার্ট ডিভাইস ব্র্যান্ড অপো তাদের স্মার্টফোন ব্যবহারকারী ও ফ্যানদের জন্য নিয়ে এসেছে একটি অনন্য ক্যাম্পেইন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আয়োজিত এই ক্যাম্পেইনটি তিনটি প্রতিপাদ্যের (থিম) ওপর ভিত্তি করে আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে বিজয়ী হলেই জিতে নেয়ার সুযোগ রয়েছে অপো’র সর্বাধুনিক হ্যান্ডসেট অপো এফ১৯ প্রোসহ নানা উপহার।
এই আয়োজনের মাধ্যমে ফ্যানরা এফ১৯ প্রো'র ডুয়াল-ভিউ ভিডিও ফিচারের মাধ্যমে আনন্দময় মুহূর্তগুলোর ভিডিও ধারণ করে বন্ধু ও পরিবারদের সাথে শেয়ার করতে পারবে। এর জন্য তাদের ভিডিও কিংবা ভিডিও'র লিংকটি কমেন্ট সেকশনে #ShareYourFunMoments হ্যাশট্যাগ দিয়ে পোস্ট করতে হবে।
আরও পড়ুন: অপো’র নতুন স্মার্টফোন রেনো৪ শিগগিরই দেশের বাজারে
এই আয়োজনে অংশ নিয়ে অপো ফ্যানরা এফ১৯ প্রো, অপো ব্যান্ড স্টাইল এবং অপো এনকো ডব্লিউ১১ হেডফোন এর মতো বিভিন্ন ধরনের আকর্ষণীয় পুরস্কার জিতে নেয়ারও সুযোগ পাবেন।
তিনটি থিম বা প্রতিপাদ্যের ওপর ভিত্তি করে আগ্রহীরা এই মজাদার কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারবেন।
আরও পড়ুন: দেশের বাজারে শিগগিরই আসছে অপো এফ১৭
থিমগুলো হলো: বন্ধুদের সাথে মজাদার মুহূর্ত ভাগাভাগি করে নেয়া, বন্ধু এবং পরিবারের সাথে উপভোগ্য মুহূর্ত এবং পরিবারের সাথে মজাদার মুহূর্ত শেয়ার করা 'বেস্ট ফ্রেন্ড ডে'-কে কেন্দ্র করে আয়োজিত এই ক্যাম্পেইন ৮ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত।
এছাড়াও ১৫ জুন থেকে শুরু হয়ে ১৯ জুন পর্যন্ত চলবে ক্যাম্পেইনের দ্বিতীয় থিম যেখানে অপো ফ্যানরা তাদের ডুয়াল-ভিউ ভিডিও ফিচার দিয়ে অংশগ্রহণকারীরা তাদের বন্ধু ও পরিবারের আনন্দময় মুহূর্তগুলো শেয়ার করতে পারবেন।
তৃতীয় থিমটি হলো পরিবারের জন্য। এর আওতায় ব্যবহারকারীরা তাদের পরিবারের সাথে মজাদার মুহূর্তগুলো শেয়ার করতে পারবেন। এই আয়োজনটি চলবে জুন ২০ থেকে ২৭ তারিখ পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: অপো এফ১৯: স্লিম ডিজাইনের এক বহুমুখী মিডরেঞ্জার
উল্লেখ্য, বাজার মাতানো অপো এফ১৯ প্রো ডিভাইসটিতে রয়েছে ডুয়াল-ভিউ ভিডিও এবং এআই কালার পোর্ট্রেট ভিডিও, রেনো গ্লো ইফেক্টসহ (ক্রিস্টাল সিলভার রঙে এই ইফেক্টটি রয়েছে) নতুন ক্রিস্টাল সিলভার ডিজাইন, ৩০ ওয়াট ভুক ফ্ল্যাশ চার্জ ৪.০ এবং গেম ফোকাস মোড রয়েছে। যা গেমারদেরকে গেম খেলার দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা প্রদান করবে। হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের দুর্দান্ত সমন্বয় থাকায় এফ১৯ প্রো ডিভাইসটি দিয়ে কোন বাধা ছাড়াই অসাধারণ গেমিং অভিজ্ঞতা লাভ করা যাবে। এছাড়াও এর ৩০ ওয়াট ভুক ফ্ল্যাশ চার্জ থাকায় মাত্র ৫ মিনিট চার্জেই ব্যবহারকারীরা কথা বলতে পারবেন ৩.২ ঘন্টার বেশি সময়।তাই এটি হতে পারে প্রিয়জনকে দেয়ার মত একটি অনন্য উপহার।
১৬৩৬ দিন আগে