মন্দির ভাঙচুর
বাংলাদেশে সব ধর্মীয় উপাসনালয়ের নিরাপত্তার আশ্বাস পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের
রাজধানীর খিলক্ষেতে দুর্গা মন্দির ভাঙচুর নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো থেকে সবাইকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
একই সঙ্গে সরকার জানিয়েছে, বাংলাদেশে সব ধর্মীয় উপাসনালয় ও সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতে তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার (২৭ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বাংলাদেশের উদার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে প্রত্যেক নাগরিক— যার যেই ধর্ম বা বিশ্বাসই থাকুক না কেন— স্বাধীনভাবে বাস করে এবং উন্নতি করতে পারে।মন্ত্রণালয় বলেছে, গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে খিলক্ষেত এলাকায় দূর্গা মন্দির ভাঙচুরের যে অভিযোগ উঠেছে, তা পুরো ঘটনা উপেক্ষা করে প্রচারিত হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ২০২৪ সালের দুর্গাপূজার সময় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকানাধীন একটি জমিতে পূর্ব অনুমতি ছাড়া অস্থায়ী পূজা মণ্ডপ স্থাপন করে।
পরবর্তীতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ শর্তসাপেক্ষে পূজা আয়োজনের অনুমতি দেয়। শর্ত ছিল পূজা শেষে ওই মণ্ডপ সরিয়ে নিতে হবে।কিন্তু পূজা শেষে মণ্ডপ সরানোর কথা থাকলেও আয়োজকরা তা না করে সেখানে ‘মহাকালী’ প্রতিমা স্থাপন করেন এবং পরবর্তীতে মণ্ডপটিকে স্থায়ী রূপ দেওয়ার উদ্যোগ নেন। যা ছিল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের নিজস্ব সমঝোতার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা করে এবং এলাকায় থাকা অবৈধ দোকান, রাজনৈতিক কার্যালয়সহ সব অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য নোটিশ দেয়।রেলওয়ে বলেছে, ঢাকা-টঙ্গী তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েল গেজ লাইন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় পূর্বদিকে ২০০ ফুট পর্যন্ত জমি তাদের প্রয়োজন। অথচ ওই জমিতে শত শত অবৈধ স্থাপনা নির্মিত হয়েছে। কয়েক মাস ধরে বারবার সতর্ক করার পরও অবৈধ দখলদাররা জমি ছাড়েনি।
আরও পড়ুন: গ্লানি মুছে গড়তে হবে সুন্দর পৃথিবী: অধ্যাপক ইউনূস
অবশেষে ২৪ ও ২৫ জুন রেলওয়ে আবারও সকলকে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে বলে।২৬ জুন যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ খিলক্ষেত এলাকায় অস্থায়ী মণ্ডপসহ সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে নামে।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উচ্ছেদ চলাকালে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণে পূর্ণ মর্যাদায় মণ্ডপের প্রতিমা বালু নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, দেশের প্রচলিত আইনের আওতায় নির্মিত সব ধর্মীয় উপাসনালয়ের নিরাপত্তা সরকার নিশ্চিত করে। তবে কোনো ধর্মীয় স্থাপনা যদি অবৈধভাবে সরকারি জমি দখল করে তৈরি হয়, তা গ্রহণযোগ্য নয়।
এ ঘটনায় আয়োজকরা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের আস্থা ও সদিচ্ছার অপব্যবহার করেছেন বলে মন্তব্য করেছে মন্ত্রণালয়।সরকার সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, বিভ্রান্তিকর তথ্য না ছড়িয়ে বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে শান্ত থাকতে।
১৬০ দিন আগে
সরকারের ব্যর্থতায় মন্দিরে ভাঙচুর : ডা. জাফরুল্লাহ
ভাসানী অনুসারী পরিষদের চেয়ারম্যান ও গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ‘সরকার নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই এখানে মানুষ মরেছে, মন্দির ভাঙচুর হয়েছে। প্রত্যেকটা ভাঙা মন্দিরে কাল থেকে সরকারের ক্ষতিপূরণ দেয়া দরকার।’
রবিবার দুপুরে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে জনগণ ও সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। গত বুধবার রাতে হাজীগঞ্জ বাজারে মন্দিরে হামলার ঘটনায় পুলিশের গুলিতে নিহত হৃদয়ের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন ও তার কবর জিয়ারত এবং ভাঙচুরের শিকার দুটি পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করেন ডা. জাফরুল্লাহ।
এ সময় তিনি বলেন, ‘মন্দিরের নিরাপত্তা নিয়ে দেশের গোয়েন্দা সংস্থা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ভুল তথ্য দিয়েছে। মিসলিড করা হয়েছে। আমাদের দেশে একজন ভালো মন্ত্রী হচ্ছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। কিন্তু তাঁকে গোয়েন্দা সংস্থা বোকা বানিয়েছে। তিনি বলেছিলেন, দেশের মন্দিরের নিরাপত্তা দেয়া আছে। কিন্তু কিছু মৌলভী ও ধর্মান্ধ ব্যক্তি সেদিন ইয়ং ছেলেদের বিপদে ফেলেছে। আমরা ভিকটিম পরিবারের কাছে ক্ষমা চাইতে এসেছি। কারণ আমরা ব্যর্থ হয়েছি।' তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, 'সরকার হিন্দু-মুসলিম সবার নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এর কারণ দেশে গণতন্ত্র নাই।’
আরও পড়ুন: এক আঙিনায় মসজিদ-মন্দির, সম্প্রীতির উজ্জ্বল নিদর্শন
ডা. জাফরুল্লাহ আরও বলেন, ‘আমরা পরিবারের কাছে ক্ষমা চাইতে এসেছি। কারণ আমরা ব্যর্থ হয়েছি।’
হাজীগঞ্জের পুলিশ ও সাংবাদিককে ধন্যবাদ দিয়ে তিনি বলেন, ‘এখানকার পুলিশ ও সাংবাদিকরা একত্রিত হয়ে সংঘর্ষের ব্যাপরটি ট্যাকেল দিয়েছে। তারা বিষয়টি ভিন্নভাবে নেয়নি।’
তার এই সফরে সঙ্গী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, প্রেসিডিয়াম সদস্য মুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীর, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, ৬৯’ এর শহীদ আসাদের ছোট ভাই ডা. নুরুজ্জামান ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য ব্যারিস্টার সাদিয়া আরমান প্রমুখ।
আরও পড়ুন: ঢাকায় সংঘর্ষ: ৩ মামলায় আসামি ৪ হাজারের বেশি
ফেনীতে সংঘর্ষে ওসিসহ আহত ৩০
১৫০৯ দিন আগে