সামাজিক মাধ্যম
সামাজিক মাধ্যমে সাইবার অপরাধের ক্রমবর্ধমান হুমকিতে বাংলাদেশ
প্রযুক্তির দ্রুত বিকাশ প্রত্যেককে জ্ঞানের এক অভূতপূর্ব জগতে প্রবেশের সুযোগ করে দিয়েছে। তবে এটি ইতিবাচকতার পাশাপাশি নেটওয়ার্কভিত্তিক অপরাধ বা সাইবার ক্রাইম বৃদ্ধির পথকেও প্রশস্ত করেছে। আর এসব অপরাধের অনেকগুলোই ইন্টারনেটকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হচ্ছে।
বাংলাদেশে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং টেলিগ্রামের মতো সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলো তথ্য চুরি হচ্ছে। এছাড়া জালিয়াতি থেকে শুরু করে অনলাইন জুয়া এবং ব্ল্যাকমেইলের মতো অপরাধমূলক কার্যক্রমকে সহজতর করার ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমানভাবে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
পারস্পরিক যোগাযোগ এবং ব্যবসার জন্য মানুষ যত বেশি ইন্টারনেটের দিকে ঝুঁকছে, অপরাধীরা এই প্ল্যাটফর্মগুলোকে তত বেশি পরিমাণে ঘৃণ্য উদ্দেশ্যে কাজে লাগানোর সুযোগটি লুফে নিয়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে সবচেয়ে সাধারণ সাইবার অপরাধের মধ্যে রয়েছে পরিচয় হ্যাকিং, ফেক অ্যাকাউন্ট তৈরি, অনলাইনে মাল্টি লেভেল মার্কেটিং স্ক্যাম এবং জুয়া।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্ল্যাকমেইলিং
সাইবার ক্রাইমের সবচেয়ে পীড়াদায়ক ধরনগুলোর একটি হলো ব্ল্যাকমেইলিং।
২৫ বছর বয়সী শোভা (আসল নাম নয়) ফেসবুকে পরিচয় হওয়া এক ব্যক্তির সঙ্গে লং ডিসট্যান্স সম্পর্কে জড়ানোর সময় তার প্রথম অভিজ্ঞতা হয়। বন্ধুত্বপূর্ণ বিনিময় হিসাবে যা শুরু হয়েছিল তা শিগগিরই ভিডিও কলের সময় ছবি প্রকাশের জন্য অনুপযুক্ত অনুরোধে পরিণত হয়েছিল।
শোভা লোকটিকে বিশ্বাস করে মেনে নিল। কিন্তু এর পরপরই তার আচরণ খারপ দিকে মোড় নেয়। তিনি বড় অঙ্কের টাকা দাবি করতে শুরু করেন এবং যখন তিনি তা অস্বীকৃতি জানান, তখন তিনি তার ছবি এবং ভিডিও অনলাইনে প্রকাশের হুমকি দেন।
পরিস্থিতি তাকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তোলে। কিন্তু একজন সিনিয়র মেন্টর এবং বাংলাদেশের সাইবার ক্রাইম বিভাগের সহায়তায় শোভা লোকটির অ্যাকাউন্ট থেকে ছবিগুলো সরিয়ে ফেলতে সক্ষম হন। তবে ঘটনার মানসিক ক্ষত বয়ে বেড়াতে হয়েছে অনেক দিন পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: সিলেটে সাইবার অপরাধ চক্রের মূলহোতা গ্রেপ্তার: র্যাব
ফেসবুকের ভুয়া পেজের মাধ্যমে প্রতারণা
আরেকটি প্রচলিত সমস্যা হলো অনলাইনে প্রতারণা, বিশেষ করে ভুয়া ফেসবুক পেজের মাধ্যমে। উদাহরণস্বরূপ, অনিক (ছদ্মনাম) একটি আপাতদৃষ্টিতে বিশ্বাসযোগ্য ফেসবুক পেজ থেকে একজোড়া ব্র্যান্ডেড জুতা অর্ডার করেছিলেন, যা ব্যাপক পর্যালোচনা এবং একটি বড় অনুসরণকারী বৈশিষ্ট্যযুক্ত।
পেজটিতে অগ্রিম পেমেন্টের প্রয়োজন ছিল, যা অনিক সরল বিশ্বাসে করেছিলেন। কিন্তু সপ্তাহ পেরিয়ে গেল, জুতা আর পৌঁছাল না হাতে। এমন পরিস্থিতিতে বিক্রেতার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও অনিক ব্যর্থ হন এবং অগ্রিম দেওয়া অর্থ আর ফেরত পাননি।
দুর্ভাগ্যক্রমে, এটি কোনো একক ঘটনা নয়— অনেক ভুক্তভোগী প্রতিদিন একই ধরণের প্রতারণার শিকার হন।
হানি ট্রাপে তরুণরা
সম্ভবত সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সামনে আসা সবচেয়ে উদ্বেগজনক সাইবার অপরাধগুলোর মধ্যে একটি হলো ‘হানি ট্র্যাপ।’
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার অপরাধ বিভাগের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, এই ফাঁদ বা প্রতারণা সাধারণত ফেসবুক থেকে শুরু হয়। তারপর হোয়াটসঅ্যাপে স্থানান্তরিত হয়, যেখানে ভিডিও কল করা হয়।
প্রতারক একজন নারী সেজে ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথোপকথনে জড়াবে এবং শেষ পর্যন্ত তাদের পুরোপুরি নগ্নভাবে ভিডিও কল করতে বলবে।
এরপর ভুক্তভোগীর আপত্তিকর ভিডিও প্রকাশের হুমকি দিয়ে অর্থ আদায় করাই এই কেলেঙ্কারির চূড়ান্ত লক্ষ্য।
অপরাধীরা প্রায়শই বাংলাদেশের বাইরে থেকে এসব কাজ করে। এসবের বেশিরভাগই ভারত থেকে করা হয়।
ভুক্তভোগীদের মানসিক ও আবেগীয় প্রভাব ভয়াবহ হয়। কেউ কেউ অবিরাম প্রতারণার কারণে আত্মহত্যাসহ চরম পদক্ষেপ নিতে এগিয়ে যায়।
বাড়ছে অনলাইন জুয়া
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, অনলাইন জুয়া একটি বিপজ্জনক আসক্তি হয়ে উঠেছে, বিশেষ করে বাংলাদেশের যুবকদের মধ্যে।
দ্রুত উপার্জনের লোভ, স্মার্টফোনের মাধ্যমে জুয়া প্ল্যাটফর্মগুলোর সহজে ব্যবহারের সুযোগ একটি গুরুতর সমস্যা তৈরি করেছে।
ডিএমপির সাইবার ক্রাইম বিভাগের উপকমিশনার শাহজাহান হোসেন বলেন, প্রকাশ্যে জুয়া প্রতিরোধে আইন থাকলেও এর প্রয়োগ এখনো দুর্বল।
তিনি বলেন, সাইবার জুয়া নিয়ে সুনির্দিষ্ট আইন আমাদের নেই। তবে সরকারের নতুন উদ্যোগে এসব সমস্যা মোকাবিলা করা অগ্রাধিকার পাচ্ছে।
অনলাইন জুয়াখেলার বিপজ্জনক প্রলোভন নিয়ন্ত্রণ না থাকার কারণে এসব আরও বেড়েছে, যা তরুণদের মধ্যে ব্যাপক আসক্তি এবং আর্থিক ক্ষতিতে ফেলছে।
ইনস্টাগ্রাম: হয়রানির জন্য একটি কেন্দ্রস্থল
ইনস্টাগ্রামের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোও সাইবার অপরাধের উৎস হয়ে উঠেছে।
নাজমুল ইসলাম ব্যাখ্যা করেছেন, ইনস্টাগ্রামে সবচেয়ে সাধারণ অপরাধগুলোর মধ্যে একটি হলো সাইবার স্টকিং। অপরাধীরা নাগরিকদের হয়রানির জন্য প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করে। কখনও কখনও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রোফাইলে পাওয়া ব্যক্তিগত তথ্য কাজে লাগিয়ে বাস্তব জীবনে তাদের শনাক্ত করে এবং ভয় দেখায়।
ইনস্টাগ্রামে আরেকটি প্রচলিত অপরাধ হলো জালিয়াতি। অপরাধীরা নকল পণ্য বা পরিষেবাদির বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করে। এই প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপনগুলো প্রায়শই সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য উল্লেখযোগ্য আর্থিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
সাইবার অপরাধের উদ্দেশ্য
এই সাইবার অপরাধগুলো বেশিরভাগের পিছনে প্রধান উদ্দেশ্য হলো অর্থ উপার্জন বা চাঁদাবাজির ইচ্ছা। অপহরণ, জালিয়াতি বা অনলাইন জুয়ার মাধ্যমেই হোক না কেন, অপরাধীরা আর্থিক লাভের কারণে এসবে অনুপ্রাণিত হয়, প্রায়শই নির্দোষ ব্যক্তিদের ক্ষতি করে।
কঠোর আইন প্রণয়নের আহ্বান
এই সাইবার অপরাধ বাড়তে থাকায় বিশেষজ্ঞরা আরও শক্তিশালী আইন এবং এর আরও কঠোর প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সরকার নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে সাইবার অপরাধ মোকাবিলায় পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু এই অপরাধের জটিলতা এবং ক্রমবর্ধমান প্রকৃতি এটিকে একটি অবিরত চ্যালেঞ্জ পরিণত করেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সাইবার ক্রাইমের শিকড় প্রযুক্তির মধ্যে থাকতে পারে। তবে এর প্রভাব খুব বাস্তব। ভুক্তভোগীদের মানসিক, আর্থিক এবং শারীরিকভাবে প্রভাবিত করে।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, যেহেতু সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো দৈনন্দিন জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। তাই আধুনিক যুগে এই অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জনসাধারণ এবং কর্তৃপক্ষ উভয়েরই সতর্ক ও সক্রিয় হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ায় সাইবার অপরাধে জড়িত সন্দেহে ১০৩ তাইওয়ানি আটক
৩১১ দিন আগে
সামাজিক মাধ্যমে বিএনপি-জামায়াতের অপকর্মের কথা তুলে ধরুন: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের (বিসিএল) নেতাকর্মীদের সোশ্যাল মিডিয়ায় সরকারবিরোধী অপপ্রচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে এবং বিএনপি ও জামায়াতের অপকর্ম তুলে ধরতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমরা ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ তৈরি করেছি। কিন্তু আজ সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে ভেসে যাচ্ছে। আমি আমাদের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের এসবের উপযুক্ত জবাব দিতে বলতে চাই।’
আরও পড়ুন: অর্থনৈতিক অঞ্চলে নারী উদ্যোক্তারা বিশেষ সুযোগ পেতে পারেন: প্রধানমন্ত্রী
মঙ্গলবার ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় কাউন্সিলের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘তারা যখন আমাদের বিরুদ্ধে কিছু লেখে, তখন আপনাকে উত্তর দেয়ার দরকার নেই। যদি শুধুমাত্র তাদের অপকর্মের কথা মন্তব্যে উল্লেখ করা যায় (সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রোপাগান্ডা পোস্টের মধ্যে) তারা থামবে।’
সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কাউন্সিলের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
এ সময় বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয়। বিসিএলের সর্বশেষ জাতীয় কাউন্সিল ২০১৮ সালের মে মাসে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
আরও পড়ুন: জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চল উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর: দেড় বিলিয়ন বিনিয়োগ ও লক্ষাধিক কর্মসংস্থানের প্রত্যাশা
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর
১০৯৫ দিন আগে
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল ভবনে হামলা: সামাজিক মাধ্যমে দেয়া বিভিন্ন পোস্ট দেখে শাস্তি দেয়া হচ্ছে
জানুয়ারির ৬ তারিখ যেসব দাঙ্গাকারী যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল ভবনে হামলা করেছে কিংবা হামলার আগে-পরে বিভিন্ন উসকানিমূলক তথ্য বা ছবি শেয়ার করেছে, এখন তাদের সেসব পোস্ট তাদের সাজা দেয়ার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
চলতি মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের জেলা জজ অ্যামি জ্যাকসন রাসেল পিটারসন নামের এক দাঙ্গাকারীর সাজা ঘোষণার আগে রাসেলের দেয়া একটি ফেসবুক পোস্ট পড়ে শোনান। পোস্টে লেখা ছিল, ‘সবমিলিয়ে আমার খুব মজা লেগেছে, লল।’
পোস্টটি পড়ে শোনানোর পরে জজ জ্যাকসন বলেন, এই পোস্ট পড়ার পর রাসেলকে মুক্তি দেয়া খুব কষ্টকর। কেননা ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটলে যা কিছু হয়েছে,তাতে মজা পাওয়ার কিছু ছিল না। দাঙ্গাকারীদের ভয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বন্ধ ঘরে আইন প্রণয়নকারীদের আটকে থাকা কিংবা টেবিলের নিচে আত্মগোপনে থাকাটা কোনোভাবেই হাসি-মজার ব্যাপার না।
এভাবেই দাঙ্গাকারীদের সামাজিক মাধ্যম তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবহার করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের কেনটাকিতে টর্নেডোর তাণ্ডবে শতাধিক মৃত্যুর শঙ্কা
এফবিআই সামাজিক বিভিন্ন মাধ্যমে দেয়া কয়েকশ’ পোস্ট থেকে কয়েকশ’ দাঙ্গাকারীকে শনাক্ত করেছে। আইনজীবীরা সেসব পোস্ট মামলার প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করছেন।
এমনকি বিচারকেরা ব্যবহারকারীদের ব্যবহৃত শব্দ বা বাক্যের গুরুত্বের ওপর ভিত্তি করে বেশি বা কম সাজা দিচ্ছেন।
সম্প্রতি আদালতের দেয়া রায় পর্যালোচনা করে অ্যাসোসিয়েট প্রেস (এপি) দেখেছে শুক্রবারও ওই দাঙ্গার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ৫০ জন ব্যক্তিকে সাজা দিয়েছেন আদালত। এরমধ্যে অন্তত ২৮টি মামলায় আইনজীবীরা প্রমাণ হিসাবে দাঙ্গাকারীদের ফেসবুকে দেয়া বিভিন্ন পোস্টকে ব্যবহার করেছেন।
সেসময় অনেক দাঙ্গাকারী সামাজিক মাধ্যমে দাঙ্গা উপলক্ষে আগ্রাসী বিভিন্ন কথা লিখেছে বা বিভিন্ন ঘৃণাসূচক মন্তব্য করেছে। অনেকে আবার এই দাঙ্গাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন গুজব ছড়িয়েছে কিংবা না জেনেই এর সঙ্গে সম্পৃক্ত করে বিভিন্ন তত্ত্ব আলোচনা করেছে। তাদেরকেও শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: প্রাপ্তবয়স্কদের বুস্টার ডোজ দেয়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র
সেসময় দেয়া বিভিন্ন ফেসবুক পোস্ট বা প্রমাণ ডিলিট করার জন্যও আদালত অনেক জনকে সাজা দিয়েছে। এই পর্যন্ত ক্যাপিটল দাঙ্গার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ৭০০ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, এরমধ্যে অন্তত ১৫০ জন নিজেদের দোষ স্বীকার করেছে।
উল্লেখ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভা কংগ্রেসের ভবন ক্যাপিটলে গত ৬ জানুয়ারি সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকেরা হামলা ও ভাঙচুর চালায়। ৩ নভেম্বর হওয়া দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের জয়ের স্বীকৃতি দেয়ার সংসদীয় প্রক্রিয়ার মধ্যেই সেখানে তাণ্ডব চালায় উগ্রবাদীরা। এতে এক পুলিশসহ অন্তত পাঁচজন নিহত হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সব ব্যবসার প্রতি ন্যায়সঙ্গত আচরণ চায় যুক্তরাষ্ট্র
১৪৫৪ দিন আগে
বাংলাদেশের ছেলে বেলারুশের মেয়ে: সামাজিক মাধ্যমে জনপ্রিয় দম্পতি হাবিব-নাতালিয়া
বেলারুশিয়ান-বাংলাদেশি দম্পতির সাংসারিক জীবনের খুনসুটি ভরা মজার মজার ভিডিও হাস্যরসে ভরিয়ে তুলেছে সামাজিক মাধ্যম। মেয়ে বেলারুশের, নাম নাতালিয়া। আর ছেলে বাংলাদেশি, নাম হাবিব। ঘোরাঘুরি, কেনাকাটা, রান্নাবান্না, খেলাধুলাসহ জীবনের প্রতিটি কর্মকাণ্ডে ছড়িয়ে থাকা হাসির উপাদানগুলো দর্শকদের উপহার দিচ্ছে এই দম্পতি। এছাড়া বাংলাদেশের সমসাময়িক ঘটনার সাথে হাস্যরস মিশিয়ে নির্মল আনন্দের খোরাক যোগাচ্ছে তাদের ইউটিউব চ্যানেলটি। পাশাপাশি তাদের ফুটফুটে ছোট্ট মেয়েটিও ভিডিওগুলোর মধ্যমণি হয়ে থাকছে। চলুন, ভাইরাল হওয়া এই দ্বিজাতি দম্পতির ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নিই।
হাবিব-নাতালিয়ার সম্পর্কের শুরুটা
বিশ্ববিখ্যাত ফুটবল ক্লাব জার্মানির বায়ার্ন মিউনিখের অফিসিয়াল স্টেডিয়াম আলিয়াঞ্জ অ্যারিনায় ঘটনাক্রমে একসাথে কাজ করতে হয়েছিল হাবিব ও নাতালিয়াকে। সময়টা ছিল ২০১২ সাল এবং সে সময় জার্মানির এক বিখ্যাত উৎসব অক্টোবর ফেস্ট চলছিল। আর সেই মেলাতেই খুব সুন্দর কিছু মুহূর্ত কাটানোর মাধ্যমে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে হাবিব ও নাতালিয়ার মধ্যে। এই বন্ধুত্ব ধীরে ধীরে পরিণত হয় পরিণয়ে। অবশেষে ২০১৭ সালের ৯ জুলাই জার্মানির খেম্নিজে তাদের বিয়ে হয়।
আরও পড়ুন: চরকিতে রায়হান রাফির প্রথম অনলাইন সিনেমা ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি’
হাবিব ও নাতালিয়ার ব্যক্তি জীবন
হাবিব লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের ছেলে। আত্মীয়-স্বজনরা সবাই ঢাকায় থাকে। বাবার কাজের কারণে হাবিবের সময় কেটেছে সিলেট, চট্টগ্রাম ও ঢাকায়। পড়াশোনা করেছেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগে।
২০১২ সালে জার্মানি চলে যান উচ্চশিক্ষার জন্য। সেখানে মিউনিখ শহরের টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব মিউনিখ থেকে মাস্টার্স করেন। পড়াশোনা শেষে এখন একটি জার্মান ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সাল্টিং ফার্মে ইন্টার্ন্যাশনাল প্রজেক্ট ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছেন।
অপরদিকে নাতালিয়ার জন্মস্থান চেক-এর রাজধানী প্রাগে। তার আত্মীয়রা থাকেন বেলারুশের রাজধানী মিনাস্কের নিকটস্থ বাবরুস্ক শহরে। ২০১০ সালে উচ্চ শিক্ষার জন্য জার্মানির মিউনিখে চলে যান। সেখানে লুডভিগ ম্যাক্সিমিলিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মাসিতে ভর্তি হন। পড়াশোনা সম্পূর্ণ শেষ হওয়ার আগেই ফার্মাসিস্ট হিসেবে একটি কোম্পানিতে ইন্টার্ন হিসেবে নিয়োগ পেয়ে যান। এখন পর্যন্ত সে কোম্পানিতেই স্থায়ীভাবে কাজ করছেন নাতালিয়া।বর্তমানে মেয়ে নাদিয়াসহ হাবিব-নাতালিয়া জার্মানির স্থায়ী বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: আপন ঠিকানা : হারানো স্বজনদের খুঁজে পেতে আরজে কিবরিয়ার মহৎ উদ্যোগ
১৫০২ দিন আগে