পাউবো
দুই দফতরের দ্বন্দ্বে গোমতী সেতু প্রকল্পে অচলাবস্থা, দুর্ভোগে এলাকাবাসী
কুমিল্লার মুরাদনগরে গোমতী নদীর ওপর বহুল প্রতীক্ষিত সেতু নির্মাণ প্রকল্প এখন অনিশ্চয়তার মুখে। সেতুটি কতটা উঁচু হবে, তা নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে দুটি সরকারি সংস্থা। যার ফলে মুরাদনগর–দাউদকান্দি সড়কের উন্নয়ন প্রকল্পের তৃতীয় প্যাকেজের কাজ পুরোপুরি থেমে গেছে, দুর্ভোগে পড়েছেন হাজারো এলাকাবাসী।
জানা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) আপত্তির কারণেই স্থগিত হয়ে আছে প্রায় ৮৪ কোটি ৫০ লাখ টাকার ওই বরাদ্দ। পাউবো দাবি করছে, নতুন সেতুটি বর্তমান বেইলি সেতুর চেয়ে অন্তত ২০ ফুট উঁচুতে নির্মাণ করতে হবে, যাতে নদীর পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত না হয়।
অন্যদিকে, সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ বলছে, গোমতীর অন্যান্য স্থানে স্থাপিত সেতুগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে ৩ থেকে ৪ ফুট উঁচু করলেই যথেষ্ট হবে।
এই মতবিরোধের জেরে সেতুর নকশা ও ডিজাইন চূড়ান্ত করা সম্ভব হচ্ছে না, ফলে দরপত্র আহ্বানও বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে দুই সংস্থার টানাপোড়েনে গুরুত্বপূর্ণ এই অবকাঠামো প্রকল্পটি ঝুলে আছে।
বর্তমানে গোমতী নদীর ওপর রয়েছে ১৯৮৮ সালে নির্মিত একটি বেইলি সেতু, যা এখন নড়বড়ে ও জীর্ণ অবস্থায়। প্রতিদিন শত শত যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে এই সেতু পার হচ্ছে। ভারী যান উঠলেই সেতু কেঁপে ওঠে, ফলে যে কোনো মুহূর্তে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
তাদের অভিযোগ, একদিকে যানজট, অন্যদিকে ঝুঁকিপূর্ণ চলাচল—এই দুইয়ের ফাঁদে প্রতিদিন ভোগান্তিতে পড়ছেন হাজারো মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রায় ৪০ বছর ধরে একই বেইলি সেতু দিয়ে চলতে হচ্ছে। সরকার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে, কিন্তু দুই অফিসের ঝগড়ায় কাজ শুরুই হচ্ছে না। আমাদের স্বপ্ন এখন হতাশা।’
২০২৩ সালের ৯ নভেম্বর ৩৪৮ কোটি ২৬ লাখ টাকার এই প্রকল্পে অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এর আওতায় ৩৫ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণ ও বাঁক সরলীকরণ, ৮টি পুরনো বেইলি ব্রিজের বদলে ৫টি নতুন আরসিসি গার্ডার সেতু এবং ৩টি আরসিসি কালভার্ট নির্মাণের কথা ছিল।
প্রকল্পটি তিনটি প্যাকেজে ভাগ করা হয়, যার মধ্যে প্রথম দুটি প্যাকেজে কাজ চলমান থাকলেও তৃতীয় প্যাকেজের কাজ পাউবোর অনুমোদন না মেলায় স্থবির হয়ে পড়েছে। এতে বরাদ্দ অর্থ ফেরত যাওয়ার আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবদুর রহমান বলেন, গোমতী নদীর ওপর একটি টেকসই সেতু নির্মাণ সময়ের দাবি। এটি না হলে জনদুর্ভোগ লাঘব হবে না। আমরা দ্রুত সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।
সওজ বিভাগের কুমিল্লা নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা বলেন, পাউবো যে উচ্চতা নির্ধারণ করেছে, তা বাস্তবসম্মত নয়। সে পরিমাণ উচ্চতায় ডিজাইন করা সম্ভব নয়। ফলে দরপত্র আহ্বান করা যাচ্ছে না। তবে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।
অন্যদিকে, পাউবো কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাশেদ শাহরিয়ার জানান, আমি এখানে এক বছর ধরে আছি, বিষয়টি আমার জানা নেই।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সরকার উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ দিলেও দায়িত্বপ্রাপ্ত দফতরগুলোর গাফিলতি, টালবাহানা ও সমন্বয়ের অভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন আটকে যাচ্ছে। তাদের দাবি, দ্রুত সমস্যার সমাধান করে সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু না হলে বরাদ্দ অর্থ ফেরত যাবে, যা মুরাদনগরবাসীর জন্য বড় ক্ষতি হবে।
৪২ দিন আগে
বিপৎসীমা ছুঁইছুঁই করছে তিস্তার পানি, উত্তরাঞ্চলে ফের বন্যার আশঙ্কা
উত্তরাঞ্চলের পাঁচটি জেলা— রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও গাইবান্ধায় আবারও বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
শনিবার (৩০ আগস্ট) সকালে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার কাছ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যেকোনো মুহূর্তে এটি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
আজ (শনিবার) সকাল ৯টার দিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি আগামী ২৪ ঘণ্টায় আরও বাড়তে পারে। বিশেষত, তিস্তা নদী লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলায় সতর্কসীমায় প্রবাহিত হতে পারে। ফলে নদী-সংলগ্ন নিম্নাঞ্চল সাময়িকভাবে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে পরবর্তী দুই থেকে তিন দিন নদীর পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: তিস্তার পানি ফের বিপৎসীমার ওপরে, লালমনিরহাট ও নীলফামারীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
রংপুর আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মুস্তাফিজুর রহমান জানান, আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে উত্তরের পাঁচ জেলায় বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। জেলাগুলোতে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনাও রয়েছে। এর ফলে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।
দুই সপ্তাহ আগে উজানের পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিপাতে তিস্তা নদী বিপৎসীমার উপরে প্রবাহিত হয়েছিল। এর ফলে লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার ৩৪টি গ্রামের ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছিল। একইভাবে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও নীলফামারীর কিছু এলাকা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রংপুরের গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলার চরাঞ্চলও প্লাবিত হয়েছিল।
তিস্তার নদীর নিম্নাঞ্চলে রোপা আমন ও সবজি খেত পানিতে ডুবে যায়। মৎস্যচাষিদের পুকুর থেকে মাছ ভেসে গিয়েছিল। এ ছাড়াও, নদীর পানি বাড়ায় গঙ্গাচড়া সেতু রক্ষা বাঁধের প্রায় ৬০ মিটার অংশের ব্লক ধসে যায়। এতে করে ভাঙনের হুমকিতে পড়েছিল সেতু ও রংপুর-লালমনিরহাট মহাসড়ক।
বর্তমানে নদীর তীরবর্তী এলাকায় আমন আবাদের ভরা মৌসুম চলছে। আবার বন্যা হলে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন: রংপুরে তিস্তা বাঁধে ধস, শঙ্কায় হাজারো পরিবার
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীসমূহের পানি আগামী তিন দিন পর্যন্ত স্থিতিশীল থাকতে পারে ও পরবর্তী দুই দিনে তা বাড়তে পারে। এ ছাড়া গঙ্গা নদীর পানি আগামী পাঁচদিন বৃদ্ধি পেতে পারে। অপরদিকে পদ্মা নদীর পানি আগামী তিন দিন স্থিতিশীল থেকে পরের দুই দিন বৃদ্ধি পেতে পারে।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, আজ সকাল ৬টায় তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে পানির প্রবাহের উচ্চতা ছিল ৫২ সেন্টিমিটার। ওই পয়েন্টে বিপৎসীমার ধরা হয় ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার। ফলে পানি বিপৎসীমার মাত্র ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই সঙ্গে কাউনিয়া পয়েন্টে পানির প্রবাহের উচ্চতা ছিল ২৮ দশমিক ৬৩ সেন্টিমিটার। ওই পয়েন্টে বিপৎসীমা ধরা হয় ২৯ দশমিক ৩১ সেন্টিমিটার।
৯৭ দিন আগে
সাতক্ষীরায় বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তর এলাকা প্লাবিত, দুর্যোগ মোকাবিলায় সেনাবাহিনী
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়নের বিছট গ্রামের বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ প্লাবিত হয়েছে। সোমবার (৩১ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে হঠাৎ করে বেড়িবাঁধের অন্তত ১৫০ ফুট জায়গা খোলপেটুয়া নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে ভাঙনের স্থানে একটি বিকল্প রিং বাঁধ নির্মাণের চেষ্টা করলেও জোয়ারের পানির চাপ বাড়ায় তা সম্ভব হয়নি। পরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় বাঁধ মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
এ বিষয়ে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সকালে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক, ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের অন্তর্ভুক্ত সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি আর্মি ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পাউবো প্রতিনিধি ভেঙে যাওয়া বাঁধ ও প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করেন। সংকট নিরসনের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন তারা। বর্তমানে আশাশুনি ক্যাম্প থেকে দুটি পেট্রোল টিম এলাকাটিতে অবস্থান করে স্থানীয় লোকজন ও প্রশাসনকে বাঁধ মেরামতের কাজে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছেন।
এ ছাড়াও, ৫৫ পদাতিক ডিভিশন থেকে ইঞ্জিনিয়ার্স ব্যাটালিয়নের একটি দল বাঁধ মেরামতের জন্য ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে আইএসপিআর।
আরও পড়ুন: অসৎ গোষ্ঠীর উসকানিতে কক্সবাজার বিমান ঘাঁটিতে হামলা: আইএসপিআর
২৪৬ দিন আগে
ভারী বর্ষণে পানি বাড়ায় খুলে দেওয়া হয়েছে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪ গেট
তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাটের সবগুলো খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকালে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে ৫১ দশমিক ৮৩ সেন্টিমিটার পানি প্রবাহ রেকর্ড করেছে পাউবো।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকালে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। এদিকে তিস্তায় পানি বৃদ্ধিতে দেখা দিয়েছে নদ-নদীর ভাঙন।
এছাড়াও গত দু’দিন ধরে প্রচুর বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে উত্তরের জেলা লালমনিরহাটে। কখনো হালকা, কখনো মাঝারি আবার কখনো ভারী বৃষ্টি। এতে জনসাধারণের মাঝে যেমন স্বস্তি ফিরে এসেছে। তেমনি খেটে খাওয়া ছিন্নমূল মানুষ কাজে যেতে না পারায় পড়েছেন চরম বিপাকে।
আরও পড়ুন: ভারী বর্ষণে ভেসে গেছে বিল ডাকাতিয়ার ৮২৫০টি মাছের ঘের, ১০০ কোটি টাকার ক্ষতি
গত ২৪ ঘণ্টায় শুধু রংপুরে ১৩০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
ভারী বর্ষণের কারণে নদ-নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি সমানতালে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
চর গড্ডিমারী এলাকার হোসেন আলী বলেন, ‘পানি বৃদ্ধিতে আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছি। কিছু এলাকায় পানি প্রবেশ করে রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে।’
পাউবো ডালিয়া শাখার উপপ্রকৌশলী মোহাম্মদ রাশেদীন বলেন, ‘তিস্তার পানি বিপৎসীমার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা ব্যারাজের ৪৪ গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে।’
হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) জিয়াউল হক জিয়া বলেন, ‘দুদিন ধরে টানা বর্ষণের তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ওইসব ইউনিয়নের কিছু কিছু এলাকার রাস্তাঘাটে পানি উঠে চলাচলে দুর্ভোগে পড়েছে মানুষ।’
এদিকে তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হাক্কানি বলেন, ‘অসময়ের বন্যা ও ভাঙনে প্রতি বছর এক লাখ কোটি টাকার সম্পদ তিস্তার গর্ভে চলে যায়। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য নদী খনন, সংরক্ষণ ও তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন করা ছাড়া বিকল্প নেই।’
আরও পড়ুন: খুলনায় ভারী বর্ষণে মৎস্য খাতে ক্ষতি ৬০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে
৪৩৩ দিন আগে
হবিগঞ্জে গত ২৪ ঘণ্টায় নদীর পানি কয়েক সেন্টিমিটার কমেছে
হবিগঞ্জে গত ২৪ ঘণ্টায় নদ-নদীর পানি কয়েক সেন্টিমিটার কমেছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। প্রতি ঘণ্টায় ২ সেন্টিমিটার করে পানি কমছে।
শনিবার (২৪ আগস্ট) পাউবো কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গেছে, খোয়াই নদীর বাল্লা পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৪ সেন্টিমিটারের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও অপর দুটি পয়েন্ট শায়েস্তাগঞ্জ ও মাছুলিয়ায় নীচে নেমে গেছে।
জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ অফিস সূত্র জানায়, জেলার একটি উপজেলা ও ৭টি ইউনিয়ন নতুনভাবে প্লাবিত হয়েছে। এ নিয়ে জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে ৬টি উপজেলার ২৯টি ইউনিয়ন বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি রয়েছে ১৬ হাজার ৪৪০টি পরিবার।
আরও পড়ুন: বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে 'দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সহায়তা সমন্বয় সেল' গঠন
এতে ৬৫ হাজার ৫৬০ জন লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ১৫২টি আশ্রয়কেন্দ্রের মধ্যে ৭টি চালু রয়েছে। এতে আশ্রয় নিয়েছেন ১ হাজার ৯০ জন মানুষ।
দুর্গতদের জন্য ত্রাণ হিসেবে ৩৪১ টন চাল, ১ হাজার ৬৯০প্যাকেট শুকনো খাবার এবং নগদ ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বন্যায় জেলার ৩৭৩ হেক্টর রোপা আমন বীজতলা, ৬ হাজার ৭২৬ হেক্টর রোপা আমন, ১ হাজার ৯৪৫ হেক্টর আউশ ও ৪৬৮ হেক্টর শাকসবজির খেত নষ্ট হয়েছে।
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত, সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ
৪৬৮ দিন আগে
বন্যাকবলিত জেলাগুলোতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল
সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতিতে বন্যাকবলিত জেলাগুলোতে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
বুধবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘দেশের উজানে ভারী বৃষ্টির কারণে সুরমা-কুশিয়ারা, ধলাই, মনু, খোয়াই, গোমতী, মুহুরী এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ফেনী ও হালদা নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
এছাড়া বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
যেকোনো জরুরি অবস্থার ক্ষেত্রে যোগাযোগ করতে হবে যেসব নাম্বারে- ০১৩১৮২৩৪৯৬২, ০১৭৬৫৪০৫৫৭৬, ০১৫৫৯৭২৮১৫৮, ০১৬৭৪৩৫৬২০৮।
যোগাযোগ করতে পারেন এই ইমেইল ঠিকানাগুলোতেও- [email protected] ও [email protected]।
এছাড়াও বন্যা সংক্রান্ত তথ্য দিতে নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হানকে (যোগাযোগের নম্বর: ০১৫৫২৩৫৩৪৩৩) ফোকাল পয়েন্ট অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
৪৭০ দিন আগে
সিলেটে বাড়ছে নদ-নদীর পানি, তৃতীয় দফা বন্যার আশঙ্কা
ভারত থেকে নেমে আসা উজানের ঢল ও রবিবার থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে সিলেটে আবারও বাড়ছে বিভিন্ন নদ-নদীর পানি। পানি বাড়তে থাকায় নতুন করে বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে সিলেট অঞ্চলে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) দেওয়া তথ্যমতে, সুরমা ও কুশিয়ারা, সারি, সারি গোয়াইন, ডাউকিসহ সব নদ-নদীর পানি রবিবার (৩০ জুন) সন্ধ্যার পর থেকে বাড়ছে।
পাউবোর সিলেট কার্যালয় জানায়, সোমবার (১ জুলাই) সকাল ৯টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এসময় পানি ছিল বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপরে। কিন্তু রবিবার পর্যন্ত পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার নিচে ছিল। এছাড়া কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি রয়েছে বিপৎসীমার ৮১ সেন্টিমিটার উপরে।
আরও পড়ুন: সিলেট ও সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চলে ফের বন্যার আশঙ্কা
কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলার একাধিক বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উজানে বৃষ্টির কারণে নদ-নদীর পানি ক্রমশ বাড়ছে। বিশেষ করে লোভা ও ডাউকি নদীতে ব্যাপক স্রোত বয়ে যাচ্ছে ও পানি বাড়ছে। নতুন করে সিলেটে ও চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি হতে থাকলে সিলেটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
এতে আবারও দুর্ভোগে পড়তে হবে সিলেটবাসীকে।
গোয়াইনঘাটের জাফলং মামার বাজারের ব্যবসায়ী আকবুল মিয়া জানান, ‘গতকাল জাফলংয়ের ডাউকি নদীর পানি অনেক কম ছিল। উপর থেকে প্রবল বেগে পানি আসছে দেশে। আজ সকালে অনেক পানি দেখা যাচ্ছে।’
এদিকে সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজীব হোসাইন জানান, সিলেটে গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৩৯.৬ মিলিমিটার। সোমবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ৬৫ মিলিমিটার। এদিকে চেরাপুঞ্জিতেও গতকাল প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। চেরাপুঞ্জিতে গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৩১৩ মিলিমিটার।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিলেটের বর্তমান বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছিল। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে সিলেট ও ভারতে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ভারতের পাহাড়ি ঢলও আসছে। যে কারণে রবিবার সকাল থেকে বাড়তে শুরু করেছে জেলার সব নদ-নদীর পানি।
আরও পড়ুন: সিলেট-সুনামগঞ্জে আবারও বন্যার আশঙ্কা
৫২২ দিন আগে
সিলেট-সুনামগঞ্জে আবারও বন্যার আশঙ্কা
গত কয়েক দিন বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদনদীর পানি কমে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়। তবে জুলাইয়ের শুরুর দিকে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার নদীগুলো পানি ফের বেড়ে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বন্যার মধ্যমেয়াদি পূর্বাভাস সম্পর্কিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও উন্নতি
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মৌসুমি বায়ু দেশের ওপর সক্রিয় ও উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। ফলে, দেশের ভেতরে পদ্মা-মেঘনা-যমুনা অববাহিকার উজানের কিছু স্থানে বিভিন্ন সময়ে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে মাঝারি থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।
সুনামগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, ‘আগামী দুই দিন মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। এতে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করবে।’
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জের ছাতকে বন্যায় সড়কের ক্ষতি ২২০ কোটি টাকা
৫২৪ দিন আগে
সিলেটে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদ সীমার উপরে
সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। অব্যাহত বৃষ্টি এবং উজানের ঢলে দ্রুত পানি বাড়ায় নদীর শেওলা পয়েন্টে পানি ইতোমধ্যে বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও সিলেট আবহাওয়া অফিস থেকে পাঠানো পৃথক বার্তায় বলা হয়েছে, কুশিয়ারা নদীতে পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। অনেক গ্রামীণ এলাকার নিচু সড়কে পানি ওঠে গেছে।
বার্তায় আরও জানা যায়, কুশিয়ারা নদীর শেওলা পয়েন্টে পানি বেড়েছে। মঙ্গলবার ভোর ৬টায় কুশিয়ারা নদীর শেওলা পয়েন্টে ১১ দশমিক ৯৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। তিন ঘণ্টার ব্যবধানে এখানে পানি বেড়েছে ২ সেন্টিমিটার।
আরও পড়ুন: কুশিয়ারা নদীতে ধরা পড়ল ১৬০ কেজি ওজনের বাগাড়
বিয়ানীবাজার উপজেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ শাখার কর্মকর্তা (পিআইও) মুশফিকুর রহমান সাকিব বলেন, আমাদের কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ রয়েছে। আমরা সতর্ক দৃষ্টি রাখছি। উপজেলার জনপ্রতিনিধিদের জরুরি বার্তা দেওয়া হয়েছে।
পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সবধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: আগামী বর্ষার আগেই সুরমা ও কুশিয়ারা নদী খনন করতে হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জলাভূমি, গাছ এবং নদী রক্ষা করুন: এসসিআরএফ
৮৯৮ দিন আগে
বাঁচার তাগিদে স্বেচ্ছাশ্রমে রিংবাঁধ নির্মাণ
‘একদিন আয় না করলে সংসার চলে না, তবুও বাঁচার তাগিদে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করতে হয়। সব ভেসে গেছে, জিনিসের দাম বেড়েছে। সংসার চালানো নিয়ে চিন্তিত।’ খুলনার কয়রায় স্বেচ্ছাসেবায় রিংবাঁধ নির্মাণ করতে আসা এক উপকূলযোদ্ধা গোপাল সরকার আক্ষেপের সাথে এমনটি জানালেন। তিনি দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের হলুদবুনিয়ায় বসবাস করেন।
দক্ষিণ বেদকাশী গ্রামের চা বিক্রেতা ওবায়দুল হোসেন বলেন, দিন শেষে যে আয় হয় সেটা দিয়ে কোন রকমে তিন সদস্যের পরিবার নিয়ে কষ্টে দিনতিপাত করি। পানি ওঠায় কয়েক দিন দোকান বন্ধ, প্রতিদিন বাঁধে যেয়ে ফ্রি কাজ করেছি। বাজার করতে পারিনি, খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছি। তবে বাঁধ মেরামত করতে পেরে তিনি খুঁশি।
এমন আক্ষেপ শুধু ওবায়দুল কিংবা গোপালের নয়, অবহেলিত কয়রার লাখো মানুষের। ওই এলাকার অধিকাংশ মানুষই নিম্নবিত্ত। কোথাও বাঁধ ভেঙে গেলে টিকে থাকতে স্বেচ্ছাশ্রম নিজেদেরই ঝাপিয়ে পড়তে হয় পানি আটকানোর জন্য।
পাউবো সূত্রে জানা গেছে, ১৪/১ নম্বর পোল্ডারে কয়রা উপজেলার শাকবাড়িয়া, মেদেরচর, ঘড়িলাল বাজার ও চরামুখা এলাকার বাঁধ মেরামতে ৩ কোটি ১২ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়। কাজটিতে অর্থায়ন করেছে জাপান আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা (জাইকা)। দরপত্রের মাধ্যমে ‘অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা’ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওই কাজটির দায়িত্ব পায়।
প্রতিষ্ঠানটির ঠিকাদার জাকির মোহান্দি। তিনি তার পূর্ব পরিচিত শ্রমিক সর্দার সাতক্ষীরার আক্কাস আলীর কাছে লিখিত চুক্তির মাধ্যমে লাইসেন্স ভাড়া দিয়েছেন। বিষয়টি শ্রমিক আক্কাস আলী স্বীকার করেছেন। বর্তমানে ওই কাজটি তিনিই করছেন। আর স্থানীয়ভাবে কাজ দেখাশুনা করছেন ওই মোজাফ্ফার মেম্বার।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বড় কাজের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ, সরঞ্জাম ও লোকবল নেই ওই শ্রমিক সর্দারের। কাজের মান ভালো না হওয়ায় চলমান কাজের চরামুখা এলাকার বাঁধ গত ১৭ জুলাই ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দাপ্তরিকভাবে ওই কাজের তদারকির দায়িত্বে আছেন পাউবো’র উপ-সহকারি প্রকৌশলী মশিউল আবেদীন। তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন।
সরঞ্জাম বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা অফিস থেকেই সব দিয়েছি। যে কোন দোকান থেকে সব আনতে বলি, পরে যে ঠিকাদার কাজ পাবেন তিনি সব পরিশোধ করেন। পরে মোজাফ্ফার মেম্বারের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, তিনি ওখানের কাজের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, এজন্য উনাকে দিয়ে করাচ্ছি।
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহনেওয়াজ তালুকদার বলেন, কয়রার দক্ষিণ বেদকাশী এলাকার স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় প্রাথমিকভাবে পানি প্রবেশ রোধ করা গেছে। পাউবো’র পক্ষ থেকে বেড়িবাঁধ মেরামতের জন্য বাঁশ ও জিও ব্যাগ দেয়া হয়েছিল। এবার পাউবো বাঁধ শক্তিশালী করার কাজ করবে।
গত ১৩ আগস্ট জোয়ারের পানির চাপে কপোতাক্ষ নদের চরামূখা নামক স্থানের রিংবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় বিস্তীর্ণ এলাকা। ওই দিন থেকে টানা পাঁচ দিন স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে বুধবার (১৭ আগস্ট) নির্মাণ সম্ভব হয়েছে। টানা ৪ দিন বাঁধ মেরামতের চেষ্টা করে ব্যর্থ হলেও পঞ্চমদিনে প্রায় ৩ হাজার মানুষের স্বেচ্ছাশ্রমের প্রচেষ্টায় ফের রিংবাঁধ দিয়ে কপোতাক্ষের নোনা পানি আটকাতে সক্ষম হয়েছে। তবে শুধু এবার নয়, প্রতি দুর্যোগের পর এভাবেই ভাঙা বাঁধ মেরামতে স্থানীয় মানুষকেই দায়িত্ব নিতে হয় বলে জানালেন তারা। এবার বাঁশ- সিনথেটিক ব্যাগ চাহিদা মত না পাওয়ায় কাজে চরম ভোগ পেতে হয় বলে অভিযোগ তাদের।
পড়ুন: কয়রায় স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণে সহস্রাধিক মানুষ
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ জুলাই ভোরে চরামুখার এই বাঁধের প্রায় ৩০০ মিটারের মতো ধসে যায়। সেসময় ভাঙা স্থানে রিংবাঁধ দিয়ে পানি আটকানো সম্ভব হয়। এরপর ১৩ আগস্ট দুপুরে উচ্চ জোয়ারে ওই রিং বাঁধটি পুনরায় ভেঙে যায়। এই ভাঙনে কপোতাক্ষের নোনা পানিতে ডুবে যায় ১০টির বেশি গ্রাম। পানিবন্দি হয়ে পড়ে ১৫ হাজারের বেশি মানুষ। অভ্যন্তরিণ যোগাযোগ ব্যবস্থা, মৎস্য ঘের, আমনের বীজতলা, বসতবাড়িসহ পরিবেশের চরম ক্ষতি হয়েছে।
বাঁধ মেরামতে আসা লোকজন অভিযোগ করেন, চরামুখার বাঁধটি সংস্কারের জন্য কর্তৃপক্ষকে বারবার তাগিদ দেয়া হলেও তারা এড়িয়ে গেছে। এলাকার জনপ্রতিনিধিদের জানালে এ কাজ তাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না বলে জানিয়ে দেন। উপজেলা প্রশাসনও একই কথা জানায়। অথচ বাঁধ ভাঙলে বারবার ভুক্তভোগী মানুষকেই তা রক্ষায় এগিয়ে আসতে হয়।
দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা নাজমুল জানান, বাঁধ নির্মাণে কাজ করেছি। চাহিদা অনুযায়ী সরঞ্জামাদি দেয়া হয়নি। মোজাফ্ফার মেম্বার ও এক পাউবো কর্মকর্তার সখ্যতা রয়েছে।
কয়রা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ উদ্দিন বলেন, আমরা দেখেছি বিগত ১০ বছরে জরুরি কাজের নামে কয়রার বেড়িবাঁধ সংস্কার ও নির্মাণ বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে ১শ’ ৪২ কোটি ৫৮ লাখ ৮ হাজার টাকারও বেশি। বরাদ্দ অনুযায়ী কাজ হয় না। সেখানে রয়েছে অর্থ লুটপাটের অসাধু চক্র। টেন্ডারে কাজ পেয়ে মূল ঠিকাদার নিজের লাভটা রেখে কাজটা বিক্রি করে দেন আরেকজনের কাছে। এভাবে হাতবদল হলে কাজের মান খারাপ হতে বাধ্য- এটাই দেখে এসেছি এতদিন।
এদিকে বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে চরামুখা গ্রামের খালের গোড়া নামক স্থানে কপোতাক্ষ নদের ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধের রিংবাঁধ মেরামত কাজ পরিদর্শন করেছেন খুলনা-৬ আসনের (কয়রা-পাইকগাছা) আসনের সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু।
এসময় তিনি বলেন, সরকার টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার প্রকল্প দিয়েছেন যেটা একনেকে পাশ হয়েছে, এটার টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন। এছাড়া জাইকার অর্থায়ানে ৩৫০ কোটি ব্যয়ে বেঁড়িবাধের কাজ চলমান আছে। এছাড়াও বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানসমূহ জরুরি ভিত্তিতে সংস্কারের জন্য মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।
পড়ুন: কয়রায় বেড়িবাঁধ ভেঙে ৪ গ্রাম প্লাবিত
১২০৪ দিন আগে