আন্দোলন
ফের আন্দোলনে চবির চারুকলার শিক্ষার্থীরা, মূলফটকে তালা
নগরীর বাদশা মিয়া সড়কে অবস্থিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউট মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নেয়ার দাবিতে আবারও মূলফটকে তালা দিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।
এক সপ্তাহ বিরতির পর ফের অনির্দিষ্টকালের আন্দোলন শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা। এর আগে ৮২ দিন আন্দোলনের পর গত ২৩ জানুয়ারি ক্লাসে ফেরেন শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী অবস্থান নিয়েছে চবি চারুকলা ইনস্টিটিউটের প্রাঙ্গণে।
আরও পড়ুন: চবির শাটলে কথা কাটাকাটি, ছাত্রলীগের ২ গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৩
২২ দফা বাতিল করে এক দফায় ফিরেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তাদের একটাই দাবি, মূল ক্যাম্পাসে ফিরে যেতে চান তারা।
চারুকলার চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী খন্দকার মাসরুল আল ফাহিম বলেন, শিক্ষামন্ত্রী আসার সাত দিন অতিবাহিত হওয়ার পরেও কোনো দৃশ্যমান ফলাফল না পাওয়ায় আমরা মঙ্গলবার আবারও মূল ফটক অবরুদ্ধ করতে বাধ্য হয়েছি।
তিনি বলেন, গত ২২ জানুয়ারি কর্তৃপক্ষ সাত দিনের সময় নেয়ার পরেও কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ না নেয়ায় আমরা ২২ দফা থেকে পুনরায় ১ দফায় ফিরে এসেছি।
চারুকলা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক সুফিয়া বেগম বলেন, গত ২৬ তারিখ শিক্ষা প্রকৌশল দপ্তর থেকে একটা প্রতিনিধি দল ইনস্টিটিউট সার্ভে করেছে।
তারা জানিয়েছেন, ভবনে সেরকম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা নেই। করোনাকালীন সময় ইনস্টিটিউট বন্ধ থাকায় সিলিংয়ের আস্তরণ খসে পড়েছে। হালকা মেরামত করলে ঠিক হয়ে যাবে।
তাছাড়া কিছু দিন আগে শিক্ষামন্ত্রী বলেই দিয়েছেন, চারুকলা ইনস্টিটিউট এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তর সম্ভব না। এর জন্য কিছু সময় দরকার। এই আন্দোলনের ফলে শিক্ষার্থীদের মূল্যবান সময়গুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ২৩ জানুয়ারি শিক্ষার্থীরা চবির মূল ক্যাম্পাসে চারুকলা ইনস্টিটিউট প্রত্যাবর্তনের আন্দোলন শিথিল করে ক্লাসে ফিরে। তবে রুম বর্জন করে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করে শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন: চবিতে বিভিন্ন ঘটনায় ১৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
চবিতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের ফের সংঘর্ষ, সহকারী প্রক্টরসহ আহত ৯
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার দ্বিতীয় সুযোগের দাবিতে আন্দোলন, আটক ২
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয় সুযোগের দাবিতে আন্দোলনরত দুই শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে।
শিক্ষার্থী দুইজন হলেন- নটরডেম কলেজের আলভী মাহমুদ ও মাইলস্টোন কলেজের মোহাম্মদ সানি।
শনিবার বিকালে আলভী ও সানিকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয় বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আন্দোলনরত কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান।
তারা জানান, বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন আলভী মাহমুদ ও মোহাম্মদ সানি। পরবর্তী কর্মসূচির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তাদের ডেকে নিয়ে গেলেও আটক করা হয়।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সামনে সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে তাদের আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: মহামারিকালীন অনলাইনে ক্লাস নেয়ায় প্রাইভেটের চেয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পিছিয়ে: প্রধানমন্ত্রী
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলছে ২৩ মে
'ফ্যাসিস্ট' সরকার গণতন্ত্রের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনকে বানচাল করতে চাইছে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, সরকার ও তার দালালরা বিভিন্ন 'অশুভ' কৌশল অবলম্বন করে এবং বানোয়াট গল্প তৈরি করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চলমান ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে চাইছে। বিরোধী জোটের মধ্যে ফাটল সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে থাকা বিরোধী দলগুলোর মধ্যে ঐক্য অটুট রয়েছে এবং তারা 'ফ্যাসিস্ট' সরকাকে উৎখাত করতে এগিয়ে যাচ্ছে।
ফখরুল বলেন, ‘আমাদের মধ্যে (বিরোধী জোটের) কোনো সমস্যা নেই...স্বাভাবিকভাবেই সরকার ও তার দালালরা বিরোধী দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনকে দমন ও বানচাল করতে মিডিয়াকে ব্যবহার করে নানা অশুভ কৌশল অবলম্বন করছে এবং নানা রকম গল্প তৈরি করছে।’
বিরোধী দলগুলোর ঐক্য বিনষ্ট করার জন্য সরকারের প্রচেষ্টা নিয়ে তারা কম চিন্তিত বলে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মূল ফোকাস এখন মানুষকে আরও একত্রিত করা এবং ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরাচারী শাসনকে উৎখাত করার জন্য আমাদের আন্দোলনে তাদের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করা।’
বিকাল ৪টার দিকে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শুরু হয়ে দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলে।
বৈঠকে ফখরুল বলেন, চলমান যুগপৎ আন্দোলনকে আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
আরও পড়ুন: খালেদা, তারেককে নিয়ে সময় টিভির প্রতিবেদন সম্পর্কে যা বললেন ফখরুল
‘আমাদের বৈঠকে আমরা বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের একযোগে আন্দোলনের আগের কর্মসূচি পর্যালোচনা করেছি। আমাদের আন্দোলনকে সফল করার জন্য আমরা আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়েও আলোচনা করেছি’, তিনি বলেন।
বিএনপি নেতা বলেন, গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে তারা বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলতে সম্মত হয়েছেন।
তিনি বলেন, যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য দল ও জোটের সঙ্গেও তারা একই ধরনের বৈঠক করবেন।
গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আন্দোলনকে ধীরে ধীরে বিজয়ের দিকে নিয়ে যাওয়ার কৌশল ও নীতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, তারা বিরোধী দলগুলোর মধ্যে ঐক্য জোরদার করার উপায় নিয়েও কথা বলেছেন। কেউ যেন কোনো বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে আমাদের ঐক্যে কোনো ফাটল সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য আমাদের সজাগ থাকতে হবে।
মান্না বলেন, রাজধানী ঢাকায় বিরোধী জোটের তৎপরতা কীভাবে বাড়ানো যায় সে বিষয়েও তারা কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, ঢাকায় বিএনপি স্বতন্ত্রভাবে কিছু কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। ‘আমরা মনে করি যে প্রোগ্রামগুলি কার্যকর হতে পারে। আমরাও কর্মসূচিতে আমাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। এ ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা গণঅভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা করব। আমরা আশাবাদী যে আমরা বিপুল জনসমর্থন পাচ্ছি বলে আমরা বিজয়ী হব।’
খালেদাকে নিয়ে সেলিমের মন্তব্য 'ভিত্তিহীন'
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া রাজনীতি করবেন না বলে মুচলেকা দিয়ে কারাগার থেকে মুক্ত হয়েছেন বলে সংসদে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ সেলিমের বক্তব্যের বিষয়ে মন্তব্য করতে চাইলে ফখরুল বলেন, এটা একটি বানানো গল্প।
‘তিনি (সেলিম) হঠাৎ করেই এই গল্পটা তৈরি করলেন। এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং বানোয়াট মন্তব্য’, বিএনপি নেতা যোগ করেন।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে ২৮ জানুয়ারি থেকে ৪ দিনব্যাপী পদযাত্রা কর্মসূচির ঘোষণা বিএনপির
বিএনপির সরকারবিরোধী আন্দোলন অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার ফখরুলের
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কারাভোগ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই করে আন্দোলন সফল করতে তারা বদ্ধপরিকর।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর রমনায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির ১০ দফা দাবি পূরণের অঙ্গীকারও করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই এই সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করতে হবে এবং অবশ্যই আমরা সংসদ ভেঙে দিয়ে এবং নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে একটি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে জাতীয় নির্বাচন করতে বাধ্য করব।’
সেজন্য সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তাঁর অসাধারণ সাহস, তাঁর প্রজ্ঞা, তাঁর দূরদর্শিতা নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’
বিদেশে বাংলাদেশিদের সম্পদের বিষয়ে ফখরুল বলেন, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নতুন নেতারা জনগণের সম্পদ লুট করে বিদেশে এসব সম্পত্তি ক্রয় করছে।
তিনি বলেন, ‘বেশিরভাগ বাংলাদেশি বিদেশে, বিশেষ করে লন্ডনে বাড়ি কিনেছেন। তারাই নব্য আওয়ামী লীগার যারা দেশের সম্পদ লুট করে এসব বাড়ি কিনছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, সারাদেশের মানুষ জানে আপনারা (আ.লীগ) সম্পদ লুটপাট করছেন।
আরও পড়ুন: ঢাকা সফরে ডোনাল্ড লুর বক্তব্য নিয়ে সরকার মিথ্যাচার করছে: ফখরুল
সব মোবাইল ফোনে বিজয় কীবোর্ড বাধ্যতামূলক করার সরকারের পদক্ষেপেরও নিন্দা করেন বিএনপি নেতা। তিনি বলেন, এই ‘বিজয় কীবোর্ড’-এর মালিক মোস্তাফা জব্বার, যিনি ডাক, টেলিযোগাযোগ তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী। একজন মন্ত্রী কখনই তার কোম্পানিকে সরকারের কোনো লাভজনক কাজে সম্পৃক্ত করতে পারবেন না এটাই নিয়ম। এক্ষেত্রে তারা সরকারি ঘোষণা দিয়ে প্রকাশ্যে এমন কাজ করছে।
এর আগে শেরেবাংলা নগরে জিয়ার কবরে শ্রদ্ধা জানান বিএনপির সাধারণ সম্পাদকসহ নেতাকর্মীরা।
জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ১৭ জানুয়ারি থেকে ১০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি।
আরও পড়ুন: জিয়ার জন্মবার্ষিকী: গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন সফল করার অঙ্গীকার বিএনপির
'আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন সরকারকে পতনে বাধ্য করবে': ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দৃঢ় বিশ্বাস ব্যক্ত করে বলেছেন, সরকার টিকে থাকার জন্য যতই দমন-পীড়ন করুক না কেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে পতন ঘটানো হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা একটি খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি যখন একটি বর্বর ও দানবীয় শক্তি আমাদের সকল অর্জনকে ধ্বংস করে দিচ্ছে... আমাদের প্রায় ৪০ লাখ মানুষকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে, ছয় হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে এবং কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে জেলে আটকে রাখা হয়েছে।’
শনিবার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে সাম্প্রতিক আন্দোলনে নিহত কয়েকজন বিএনপি নেতার পরিবারকে সহায়তা প্রদানের জন্য এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: সরকার বিরোধী দলকে দমন করতে মরিয়া: ফখরুল
তিনি আরও বলেন, ব্যাপকভাবে মামলা ও দমনমূলক কর্মকাণ্ড সত্ত্বেও তাদের দলের চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলন অব্যাহত রাখতে নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত এবং নৈতিকভাবে শক্তিশালী রয়েছে।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘যেকোনো ধরনের দমন-পীড়নকে উপেক্ষা করে আমরা এই ভয়ঙ্কর দানবকে (সরকারকে) শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে পরাজিত করব। আমরা এখানে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করব। আমরা যে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি তাতে আমরা অবশ্যই জয়ী হব।’
ফখরুল নিহত বিএনপি নেতাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, তাদের দল সব সময় তাদের পাশে থাকবে।
তিনি বলেন, যারা জীবন উৎসর্গ করেছেন তারা একটি আদর্শের জন্য এবং একটি লক্ষ্য অর্জনের জন্য এটি করেছেন: ‘সেই আদর্শ ও লক্ষ্য হলো আমাদের দেশকে দুঃশাসন থেকে মুক্ত করা এবং বাংলাদেশকে একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য সকল মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।’
তিনি দাবি করেন, গত বছরের ২২ আগস্ট থেকে চলতি আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে বা আওয়ামী লীগের ‘ক্যাডারদের’ নির্যাতনে এ পর্যন্ত বিএনপির ১৫ নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি প্রত্যাহার করুন নতুবা রাজপথে নামবে জনগণ: সরকারকে বিএনপি
ফখরুল ভবিষ্যদ্বাণী করে বলেন, ‘তারা (নিহত বিরোধী নেতাকর্মীরা) শহীদ হয়েছেন কিন্তু বীরের মতো। পালানোর সময় তাদের কেউ মারা যায়নি, কারণ তারা সামনে দাঁড়িয়ে বুলেট নেয়ার জন্য বুক পেতে দিয়েছিল। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ তাদের আত্মত্যাগ এদেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।’
বিএনপি নেতৃত্বাধীন চলমান গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনে প্রাণ হারানো বাগেরহাটের নুর আলম তনু, ঢাকার মকবুল হোসেন এবং পঞ্চগড়ের আবদুর রশিদ আরেফিনের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদানে এই অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভিডিও কলে অনুষ্ঠানে যোগ দেন এবং নিহতদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।
আরও পড়ুন: বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি সরকারের ‘জনবিরোধী’ সিদ্ধান্ত: ফখরুল
বিএনপির আন্দোলন নিয়ে সতর্ক থাকবে আ.লীগ: কাদের
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির আন্দোলন নিয়ে আমরা সতর্ক থাকব। তারা যাতে সহিংস পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে, সে ব্যাপারে আমরা নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করিনি। আমরা রাজপথে আছি। রাজপথ আমরা ছাড়ব না। জনগণের জানমাল রক্ষার দায়িত্ব পালন করব।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ের মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, গতকাল বিএনপির বৈঠক অনেক বড় হয়েছে। আমাদের আলোচনা সভাও বড় সমাবেশে রূপ নেয়।
বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, পরের নির্বাচনে আমাদের নেতৃত্ব দেবেন শেখ হাসিনা। কিন্তু তাদের নেতা কে? গত নির্বাচনে তারা কামাল হোসেনের নেতৃত্বে নির্বাচন করেছে।
তিনি বলেন, গতকাল কোনো সহিংস পরিস্থিতি কোথাও হয়নি। ফরিদপুরে তাদের মিটিং থেকে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছুড়েছে। তবে তা বেশিদূর গড়ায়নি।
তারা শোভাযাত্রা করলে আমরা শান্তি সমাবেশ করব বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।
জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধ করা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা আদালতের বিষয়। এ বিষয়ে আমরা সক্রিয় হওয়ার সিদ্ধান্ত নিইনি। আদালতের বিষয়ে দলীয় ভূমিকা যুক্তিসঙ্গত হবে না।
তার মতে, জামায়াত ছাড়া বিএনপি শক্তিহীন। বিএনপি-জামায়াত একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। জামায়াত ছাড়া তাদের চলা অচল। বেশি লোক আনতে হলে তাদের জামায়াত ছাড়া চলবে না।
আরও পড়ুন: বিএনপি ক্ষমতায় এলে একাত্তরের চেতনা বিলুপ্ত হয়ে যাবে: ওবায়দুল কাদের
ভারতের সঙ্গে বৈরি সম্পর্ক রেখে উন্নয়ন সম্ভব নয়: কাদের
দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের সমুচিত জবাব দিতে প্রস্তুত আ.লীগ: কাদের
ঢাকাসহ অন্যান্য বিভাগে বুধবার অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো
বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিএনপিসহ অন্যান্য সমমনা বিরোধী দল, জোট ও সংগঠনগুলো ঢাকাসহ জেলার অন্যান্য বিভাগে গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করবে।
নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবি আদায়ে বিরোধী দল ও সংগঠনগুলো বুধবার (১১ জানুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত পৃথকভাবে চার ঘণ্টার কর্মসূচি পালন করবে।
৩০ ডিসেম্বর ৩৩টি বিরোধী দলের গণমিছিলের পর এটি হবে যুগপৎ আন্দোলনের দ্বিতীয় কর্মসূচি।
বিএনপির নীতিনির্ধারকরা বলেছেন, ২০০৭ সালের ১/১১ এর কথা মাথায় রেখে ১১ জানুয়ারি এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
এদিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন এবং দলের আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের সঙ্গে দেখা করেন।
সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটের দিকে ডিএমপি কার্যালয় থেকে বেরিয়ে ডা. জাহিদ জানান, সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত তাদের দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের অনুমতি পেয়েছেন তারা।
ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, তারা বিএনপিকে যান চলাচল স্বাভাবিক রেখে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটলে এর দায় তাদের (বিএনপি) নিতে হবে।
আরও পড়ুন: সরকারবিরোধী আন্দোলন জোরদার করার নতুন শপথ নিলেন ফখরুল
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও মির্জা আব্বাসসহ সিনিয়র নেতারা।
এছাড়া জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চ, বিজয় নগর পানির ট্যাঙ্কে ১২ দলীয় জোট, পুরানা পল্টনে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এফডিসি ক্রসিংয়ে এলডিপি, জাতীয় প্রেসক্লাবের পূর্ব পাশে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য এবং আরামবাগে গণফোরাম (মন্টু) কর্মসূচি পালন করবে।
যদিও বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী ৩০ ডিসেম্বর বিএনপি এবং অন্যান্য দলগুলোর সঙ্গে গণমিছিল কর্মসূচিতে যোগ দেয়।
দলের একজন সিনিয়র নেতা জানিয়েছেন, কৌশলগত অবস্থানের কারণে জামায়াত অবস্থান কর্মসূচি পালন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অবস্থানের পর বিরোধী দল ও জোটগুলো যুগপৎ আন্দোলন জোরদার করতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারে।
এছাড়া বিভিন্ন বিভাগে গণঅবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেবেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা।
বিএনপির পরিকল্পনা অনুযায়ী সিলেট বিভাগে কর্মসূচির নেতৃত্ব দেবেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, রাজশাহীতে ড. আব্দুল মঈন খান, ময়মনসিংহে নজরুল ইসলাম খান, চট্টগ্রামে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বরিশালে সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান, রংপুরে মাহমুদ টুকু, কুমিল্লায় ভাইস-চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, খুলনায় শামসুজ্জামান দুদু ও ফরিদপুরে অ্যাডভোকেট আহমদ আজম খান।
এর আগে গত ৩০ ডিসেম্বর বিএনপিসহ ৩২টি সমমনা বিরোধী দল যুগপৎ আন্দোলনের প্রথম কর্মসূচি হিসেবে রাজধানী ও রংপুর মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে গণমিছিল কর্মসূচি পালন করে।
বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনসহ তাদের ১০ দফা দাবিতে চাপ দেয়ার জন্য তারা তাদের পরবর্তী পদক্ষেপ হিসাবে ১১ জানুয়ারি সারাদেশে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করে।
এর আগে ২৪ ডিসেম্বর সব বিভাগীয় শহর ও জেলা সদরে গণমিছিল কর্মসূচি পালন করে বিএনপি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল কর্মসূচি ও রংপুর সিটি নির্বাচনের কারণে বিএনপি ঢাকা ও রংপুরে এই কর্মসূচির দিন ৩০ ডিসেম্বর পুনঃনির্ধারণ করে।
আরও পড়ুন: বিএনপি দমন কমিশনে পরিণত হয়েছে দুদক: মোশাররফ
বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের 'পূর্বশর্ত' প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ: গয়েশ্বর
সরকারবিরোধী আন্দোলন জোরদার করার নতুন শপথ নিলেন ফখরুল
কারাগার থেকে বের হওয়ার পরপরই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকার পতন এবং গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে চলমান আন্দোলন জোরদার করার নতুন শপথ নিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘তারা আমাদের যতই দমন করবে, ততই মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়বে এবং আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের পরাজিত করবে।’
সোমবার নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, তাদের দলের আন্দোলন থেকে পিছিয়ে যাওয়ার কোনো বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, ‘আমরা কেবল আমাদের আন্দোলন নিয়ে এগিয়ে যাব এবং আমাদের গ্রেপ্তার হওয়া সকল নেতাকর্মীকে মুক্ত করব। এই শাসনকে পরাজিত করার জন্য আমাদের আন্দোলনকে আরও জোরদার করতে হবে এবং আমাদের আন্দোলন সফল হবে।’
ফখরুল বলেন, তারা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করতে চান। ‘আসুন আমরা বাংলাদেশকে ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরাচারী শাসন থেকে মুক্ত করতে এবং গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার করতে এগিয়ে আসি। জেল থেকে বের হওয়ার পর আমরা নতুন করে শপথ নিচ্ছি যে আমরা সফল না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতা সৃষ্টির পরিকল্পনা সরকারের ছিল, কিন্তু তারা তা এড়িয়ে যায়।
তিনি বলেন, ‘তারা (সরকার) ভেবেছিল আমরা নয়াপল্টনে আমাদের ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ করব এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হব এবং তারা সহিংসতার জন্য আমাদের ওপর দোষ চাপিয়ে রাজনৈতিক খেলা করবে।’
এই বিএনপি নেতা আরও বলেন, ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে সরকারকে সহিংসতার সুযোগ না দেয়ায় আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর আগে সন্ধ্যা ৬টার দিকে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হন ফখরুল ও আব্বাস।
বিএনপির কয়েক শতাধিক নেতাকর্মী এবং দুই দলের শীর্ষ নেতাদের স্বজনরা কারাগারের ফটকে দুজনকে বরণ করে নেন।
কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে ফখরুল সরাসরি বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসেন।
আরও পড়ুন: এক মাস পর কারামুক্ত ফখরুল–আব্বাস
এর আগে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে দলের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ফখরুল ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্বাসের জামিনের হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ হাইকোর্টের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন নিষ্পত্তি করে এ আদেশ দেন।
গত ৪ জানুয়ারি আপিল বিভাগের চেম্বার জজ বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আবেদনের শুনানির জন্য রবিবার দিন ধার্য করেন।
ওই মামলায় বিএনপির দুই নেতাকে জামিন দিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে একই দিন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়।
এ মামলায় গত ৩ জানুয়ারি ফখরুল ও আব্বাসকে ছয় মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট।
রাজধানীর বহুল আলোচিত সমাবেশের একদিন আগে ৯ ডিসেম্বর পুলিশের গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল পৃথক অভিযান চালিয়ে ফখরুল ও আব্বাসকে তাদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়।
পরে গত ৭ ডিসেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনে সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে দলের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় একটি মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ঢাকার একটি আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান।
বিএনপি অবশ্য ফখরুল ও আব্বাসের অনুপস্থিতিতে সমাবেশের আয়োজন করে এবং বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ ১০ দফা দাবি জানায়।
আরও পড়ুন: বিএনপি দমন কমিশনে পরিণত হয়েছে দুদক: মোশাররফ
সরকার বিরোধী আন্দোলন দমনে ব্যর্থ হবে: নজরুল ইসলাম খান
বিএনপির ২৭ দফা সরকারবিরোধী আন্দোলনের অংশ: আমীর খসরু
বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য তাদের দলের ২৭ দফা আওয়ামী লীগ সরকারের পতনে ‘চলমান আন্দোলনের অংশ’।
তিনি বলেন, ‘আমি বারবার বলে আসছি যে এই ২৭ দফা চলমান আন্দোলনের অংশ। এটা আলাদা নয়।’
রবিবার এক আলোচনায় বক্তব্য দেয়ার সময় এই বিএনপি নেতা আরও বলেন, ২৭ দফার পেছনের দর্শন হলো জনগণকে বোঝানো যে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ কেমন হবে এবং বর্তমান আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে তাদের উৎসাহিত করা।
২৭ দফার তাৎপর্য সম্পর্কে তিনি বলেন, এসব দফা বাস্তবায়ন ছাড়া ভবিষ্যতে দেশ পরিচালনা সম্ভব হবে না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘দেশকে সংস্কার করতে না পারলে ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই দেশের স্বার্থে আমাদের এই ২৭ দফা বাস্তবায়ন করতে হবে।’
আরও পড়ুন: বিএনপি দমন কমিশনে পরিণত হয়েছে দুদক: মোশাররফ
জাতীয় প্রেসক্লাবে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এর ঢাকা উত্তর মহানগর শাখা এবং বিএনপি মিডিয়া সেল যৌথভাবে ‘রাষ্ট্রীয় কাঠামো মেরামত কাঠামোর ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খসরু বলেন, অনেকেই বলছেন বিএনপি যখন সরকার উৎখাতের আন্দোলন করছে, এর মধ্যে আবার কেন ২৭ দফা নিয়ে আলোচনা করছে।
২৭ দফার আলোচনার মাধ্যমে তিনি বলেন, বর্তমান ‘ফ্যাসিবাদী, দুর্নীতিবাজ ও দখলদার’ সরকার ক্ষমতা থেকে সরে গেলে তারা (জনগণ) কী লাভ করবে সে সম্পর্কে তাদেরকে ধারণা দেয়ার চেষ্টা করছে।
যারা আন্দোলন এবং এর ইতিবাচক ফলাফল নিয়ে এখনও বিভ্রান্ত, তাদেরকে ২৭ দফা পর্যালোচনা করে রাজপথে নামার আহ্বান জানান বিএনপি নেতা।
১৯ ডিসেম্বর বিএনপি ‘রাষ্ট্রের কাঠামোগত সংস্কার’-এর একটি ২৭-দফা রূপরেখা উন্মোচন করেছে।
যাতে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদের নির্বাহী ক্ষমতার ভারসাম্য এবং আইনসভার উচ্চকক্ষ প্রবর্তনসহ রাষ্ট্র ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছে।
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ১৯ দফা এবং বিএনপির ‘ভিশন-২০৩০’-এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ‘রাষ্ট্রের কাঠামোগত সংস্কার’-এর রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের 'পূর্বশর্ত' প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ: গয়েশ্বর
সরকার বিরোধী আন্দোলন দমনে ব্যর্থ হবে: নজরুল ইসলাম খান
বৈধ সরকারের পতন ঘটাতে পারবে না বিএনপি: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, বিএনপি আগুন সন্ত্রাস, আন্দোলন, হরতাল, অবরোধ, গণসমাবেশ করে বৈধ সরকারের পতন ঘটাতে পারবে না। আগামী ১১ তারিখ না, আগামী ডিসেম্বরের ১১ তারিখের মধ্যেও সরকারের পতন ঘটাতে পারবে না বিএনপি।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মার সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, আগামী ১১ তারিখ বিএনপি আন্দোলনের নামে যাতে অরাজকতা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য আওয়ামী লীগ তৎপর থাকবে। দলের নেতাকর্মীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী ও সরকারকে সহযোগিতা করবে।
আরও পড়ুন: চালের উৎপাদন বাড়াতে গবেষণায় আরও জোর দিতে হবে: কৃষিমন্ত্রী
দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের হস্তক্ষেপের প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বিদেশি বা রাষ্ট্রদূতদের হস্তক্ষেপমূলক তৎপরতা অনেক কমে এসেছে। এক সময় হ্যারিকে, টমাসের মতো অনেক রাষ্ট্রদূতেরা এদেশে নিজেদের কিং বা রাজা মনে করতো, এখন এই পরিস্থিতি নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সর্বক্ষেত্রে উন্নয়ন ও আর্থিক অগ্রগতির ফলে বাংলাদেশ আজ অনেক মর্যাদাশীল জাতি।
মন্ত্রী বলেন, দেশের রাজনীতি নিয়ে বিদেশিদের কাছে বিএনপির হাত পাতা জাতির জন্য মর্যাদার নয় এবং এটিকে সহজভাবে মেনে নেয়া যায় না।
এর আগে কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎকালে দু’দেশের কৃষি, কৃষিযন্ত্রপাতি, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, জলবায়ুসহনশীল কৃষি, বায়োটেকনোলজি, ন্যানোটেকনোলজি প্রভৃতি বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়। এসময় কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার, অতিরিক্ত সচিব রুহুল আমিন তালুকদার উপস্থিত ছিলেন।
এসময় কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের কৃষি যান্ত্রিকীকরণের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। সরকার কৃষিযন্ত্রে ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ ভর্তুকি দিচ্ছে। আগামীতে বাংলাদেশে প্রচুর কৃষিযন্ত্রপাতির প্রয়োজন হবে। এক্ষেত্রে ভারতের কৃষিযন্ত্রপাতি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর বাংলাদেশে বিনিয়োগের অনেক সুযোগ রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে তাদের ফ্যক্টরি স্থাপন করে স্থানীয়ভাবে কৃষিযন্ত্রপাতি তৈরি ও অ্যাসেম্বল এবং খুচরা যন্ত্রপাতি তৈরি করতে পারে।
ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত প্রণয় ভার্মা জানান, ভারতের মাহিন্দ্রসহ অন্যান্য কৃষিযন্ত্রপাতি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে বাংলাদেশে তাদের ফ্যাক্টরি স্থাপন করে স্থানীয়ভাবে কৃষিযন্ত্রপাতি তৈরি ও অ্যাসেম্বল এবং খুচরা যন্ত্রপাতি তৈরিতে বিনিয়োগ করে সে বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে ।
এছাড়া, তিনি দু’দেশের কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য সমঝোতা স্মারকের আগ্রহ ব্যক্ত করেন।
এসময় কৃষিমন্ত্রী গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের বীজ ও পাটবীজের জন্য ভারতের সহযোগিতা কামনা করেন।
তিনি বলেন, এবছর ভারতের মহারাষ্ট্র থেকে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের বীজ এনে দেশে চাষ করে ভাল ফলন পাওয়া গেছে।
এছাড়াও, কৃষিমন্ত্রী বিজ্ঞানীদের প্রশিক্ষণ, বীজ প্রযুক্তি, কাজুবাদাম, কফিসহ উন্নত জাত ও চারা সরবরাহ, এগ্রো প্রসেসিং, ন্যানোটেকনোলজি, বায়োটেকনোলজি এবং সন্ত্রাস-সাম্প্রদায়িকতা মোকাবিলা, মাদক ও মানব পাচার রোধ প্রভৃতি ক্ষেত্রে ভারতের সহযোগিতা কামনা করেন বলেও কৃষিমন্ত্রী জানান।
আরও পড়ুন: কৃষি উৎপাদনের কারণেই দেশ অনেকটা স্বস্তিতে: কৃষিমন্ত্রী
বিএনপির চাওয়ায় নির্বাচন হবে না, দেশও চলবে না: কৃষিমন্ত্রী