অসংক্রামক রোগ
অসংক্রামক রোগের চিকিৎসায় বিপুল অর্থ বিদেশ চলে যায়: ড. ইউনূস
অসংক্রামক রোগ হলে বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নিতে গিয়ে বিপুল অঙ্কের অর্থ দেশের বাইরে চলে যায় বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, এসব রোগ যাতে না হয় কিংবা কম হয়, সে জন্য আমাদের সচেতন হতে হবে।
বুধবার (২০ আগস্ট) বেলা ১১টায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে অসংক্রামক রোগ (এনসিডি) প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে ৩৫টি মন্ত্রণালয়ের একটি যৌথ ঘোষণাপত্র সই অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘অসংক্রামক রোগ হলে মানুষ উচ্চ চিকিৎসা ব্যয়ের মুখোমুখি হতে বাধ্য হয়। কোনো ব্যক্তির ক্যান্সার হলে তার পরিবারকে আর্থিক সামর্থ্যের সর্বোচ্চ প্রয়োগ করতে হয় এবং প্রায় ক্ষেত্রেই সহায়হীন-সম্বলহীন হয়ে পড়ে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিদেশ থেকে অতি উচ্চ মূল্যে চিকিৎসা নেওয়ারও প্রয়োজন হয়। আমাদের বিপুল অঙ্কের টাকা চলে যায় বিদেশে এসব রোগের চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে।’
‘তাই অসংক্রামক রোগের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা যেমন উন্নত হওয়া জরুরি, তেমনি রোগগুলো যেন কম হয় অথবা না হয়, সে জন্য উপযুক্ত জনসচেতনতা এবং প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা করে তোলা দরকার।’
তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের একার পক্ষে এটা সম্ভব নয়। এজন্য সব মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা দরকার। খাদ্য, কৃষি, শিক্ষা, ক্রীড়া, স্থানীয় সরকার, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত—এমন প্রত্যেকটি খাতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।’
‘প্রত্যেক খাত থেকে দরকার সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা ও নিবিড় উদ্যোগ। তাই এসব মন্ত্রণালয় চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তাদের করণীয় নির্ধারণ করা হয়েছে। তবুও আমি যৌথ ঘোষণা বাস্তবায়নে কয়েকটি বিষয়ের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করতে চাই।’
আরও পড়ুন: পরিবেশবান্ধব চাষাবাদে মৎস্যখাতকে সমৃদ্ধ করা সম্ভব: ড. ইউনূস
ড. ইউনূস আরও বলেন, ‘যৌথ ঘোষণা বাস্তবায়নে সরকারের পাশাপাশি দরকার বেসরকারি উদ্যোগ। দরকার আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক কারিগরি সহযোগিতা। আমি বিশ্বাস করি, পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ মডেল প্রয়োগ করে এ সংক্রান্ত উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে যৌথ ঘোষণা বাস্তবায়ন সহজ হবে।’
‘আশা করছি, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করবে। স্বাক্ষরকারী মন্ত্রণালয়গুলো সহযোগিতা করবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেবে।’
১০৭ দিন আগে
দেশে ৭১ শতাংশ মৃত্যুর জন্য দায়ী অসংক্রামক রোগ
বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর প্রায় ৭১ শতাংশের জন্য উচ্চ রক্তচাপসহ নানা অসংক্রামক রোগ দায়ী বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর পরামর্শ দেন তারা।
৯ এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস-২০২৫ উপলক্ষে অ্যাডভোকেসি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) আয়োজিত ‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: বাংলাদেশ প্রেক্ষিত’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
এ আয়োজনের সহযোগী হিসেবে ছিল গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই)।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, বাংলাদেশে বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের অন্যতম কারণ হলো উচ্চ রক্তচাপ। তবে উচ্চ রক্তচাপসহ অন্যান্য অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে অর্থ বরাদ্দের পরিমাণ মোট স্বাস্থ্য বাজেটের মাত্র ৪ দশমিক ২ শতাংশ, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম বলে মত দেন তারা।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২০ জন হাসপাতালে ভর্তি
এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ বাড়ানোসহ উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে টেকসই অর্থায়ন অপরিহার্য বলেও মত দেন বক্তারা।
উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে আনতে দেশের সব কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওষুধ নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে বিশেষজ্ঞরা বলেন, উদ্বেগজনক এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ সঠিক সময়ে সরবরাহ করা জরুরি। সে কারণে টেকসই অর্থায়ন প্রয়োজন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ারের (সিবিএইচসি) লাইন ডিরেক্টর ডা. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, 'সরকার উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্স এবং কমিউনিটি ক্লিনিকে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে। এই মুহূর্তে ওষুধের কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। তবে আমরা দ্রুতই তা কাটিয়ে উঠতে পারব।'
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ডা. আবু জামিল ফয়সাল বলেন, উচ্চ রক্তচাপের প্রকোপ যেন না বাড়ে, সে জন্য খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনতে হবে। সেই সঙ্গে বাজেট বৃদ্ধির বিষয়ে বিশেষভাবে জোর দেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
২৩৯ দিন আগে
মানহীন ক্লিনিকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
মানহীন ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, আইন অনুযায়ী তাদের বিরদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা কাউকে হেনস্থা করতে চাচ্ছি না। যারা ভালো করছেন তাদের সহযোগিতা করব। কিন্তু যারা অন্যায় করবেন আমরা তাদের সঙ্গে নেই। আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
বুধবার (১ জুন) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত জাতীয় স্বাস্থ্য ও দিবস-২০২২ উপলক্ষে 'কোভিড-১৯ চ্যালেঞ্জ অতিক্রমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধম্য যাত্রা' শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
জাহিদ মালেক বলেন, বাংলাদেশে স্বাস্থ্য সেবায় ১১ হাজার ডায়াগনস্টিক সেন্টার কাজ করছে। এর মাঝে অনেক ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এদের কারণে যাতে সাধারণ মানুষ প্রতারিত না হয় সে দিকে আমরা নজর দিচ্ছি।
দেশে অসংক্রামক রোগের হার উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, করোনার সময়ে অসংক্রামক রোগ নিয়ে কাজ করতে পারিনি, তাই এই সুযোগে অনেকটাই বেড়েছে। এখন আমরা অসংক্রামক রোগ নিয়ে কাজ করছি।
পড়ুন: জুনে ৫-১২ বছরের শিশুদের টিকা: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
জাহিদ মালেক বলেন, দেশে অসংক্রামক রোগে ৬৭ ভাগের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়, তাই এটাতে গুরুত্ব দিতে হবে। অ্যান্টিবায়োটিকের অযাচিত ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। স্বাস্থ্যসেবা শুধুমাত্র সরকারিতেই থাকে না, প্রায় অর্ধেক হয় বেসরকারিতে। কোভিডে বেসরকারি হাসপাতালগুলোও অনেক ভূমিকা রেখেছে।
তিনি আরও বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণ ও ভ্যাকসিনেশনের মাধ্যমে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের মর্যাদা বেড়েছে। দেশের প্রায় ৭৫ ভাগ মানুষকে টিকা দেয়া গেছে। এখনো ৮ থেকে ১০ কোটি মানুষ বুস্টার ডোজের বাইরে। আগামী ৪ জুন থেকে বুস্টার ডোজের ক্যাম্পেইন শুরু হবে। বুস্টার নিয়ে আমরা আরও সুরক্ষিত থাকব।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার শুরুতে হাতে গোনা কয়েকটি মেডিকেল কলেজ ছিল। বর্তমানে ২০টির মতো ইনস্টিটিউট আছে। তখন কত শয্যা ছিল, বর্তমানে ৬০ হাজার শয্যা। প্রাথমিত স্বাস্থ্যসেবায় কমিউনিটি ক্লিনিক, পরিবার পরিকল্পনা ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভূমিকা অনেক বেশি। প্রতিটি উপজেলা এখন ৫০টি শয্যা রয়েছে।
বর্তমানে আমাদের জনবল অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আরও জনবল বৃদ্ধি করে আমরা সেবার দিকে গুরুত্ব দিচ্ছি। বর্তমানে ৫টি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, আগে যেখানে একটিও ছিল না। অনেক হাসপাতাল এখন ডিজিটাল পদ্ধতির আওতায় এসেছে। আগামীতে সব হাসপাতালকেই এর আওতায় আনতে হবে। সফলতার সাথে করোনা মোকাবিলা করেছি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে সক্ষমতায় বিশ্বে করোনা মোকাবিলায় আমরা পঞ্চম ও দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম হয়েছি। পড়ুন: বিশ্বে সবচেয়ে কম দামে টিকা দিয়েছে বাংলাদেশ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
১২৮২ দিন আগে