ফাইনাল
স্পেনকে হারিয়ে ফের নেশন্স লিগ চ্যাম্পিয়ন রোনালদোর পর্তুগাল
একে একে তিনটি করে পেনাল্টি শটে দুপক্ষই সফল হলো। তবে চতুর্থ শটে গিয়ে স্পেনের আলভারো মোরাতার শট ঠেকিয়ে দিলেন দিয়োগো কস্তা। এরপর পঞ্চম ও শেষ শটে রুবেন নেভেসের সফল স্পট কিক, আর উল্লাসে ফেটে পড়ল পর্তুগিজ শিবির। দ্বিতীয়বারের মতো উয়েফা নেশন্স লিগের শিরোপাজয়ের উৎসবে মাতল পর্তুগাল।
মিউনিখের আলিয়ান্স আরেনা স্টেডিয়ামে ১২০ মিনিটের খেলা ২-২ সমতায় শেষ হওয়ার পর টাইব্রেকারে গতবারের চ্যাম্পিয়ন স্পেনকে ৫-৩ ব্যবধানে হারিয়ে নেশন্স লিগের চতুর্থ আসরের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে প্রথম আসরের শিরোপাজয়ীরা।
গত আসরের ফাইনালও গড়িয়েছিল টাইব্রেকারে। সেখানে ক্রোয়েশিয়াকে ৫-৪ ব্যবধানে হারালেও এবার আর পারল না স্প্যানিশরা। পর্তুগিজ গোলরক্ষক কস্তার বীরত্বের পর ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো অ্যান্ড কোম্পানির কাছে হার মানতে হলো লা রোহাদের।
অথচ শুরুর গল্পটা কিন্তু এমন ছিল না। প্রথমার্ধে শুরুতেই গোল করেছিল স্পেনই। এরপর নুনো মেন্দেসের গোলে পর্তুগাল সমতায় ফিরলে ওইয়ারসাবালের গোলে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে বিরতিতে গিয়েছিল দলটি। তবে বিরতির পর স্পেনের দুর্দান্ত সেই পারফরম্যান্সে ভাঁটা পড়ে, আর রোনালদোর গোলে আবারও সমতায় ফেরে পর্তুগাল। এরপর নব্বই মিনিট, এমনকি ১২০ মিনিটের খেলায়ও দুদলের কেউ ব্যবধান গড়তে ব্যর্থ হলে শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে গড়ায় ম্যাচ। সেখানে মোরাতার শট ঠেকিয়ে জয়ের পাল্লা নিজেদের দিকে ঘুরিয়ে নেন কস্তা।
এর ফলে দুবার নেশন্স লিগের ফাইনালে উঠে দুবারই শিরোপা উঁচিয়ে ধরার গৌরব অর্জন করল পর্তুগাল। অন্যদিকে, টানা তিনবার ফাইনালে উঠেও দুবার হতাশ হতে হলো স্পেনের।
আরও পড়ুন: রোনালদোর আশা পূরণের রাতে নেশন্স লিগের ফাইনালে পর্তুগাল
পুরো ম্যাচে বলের দখল, গোলের প্রচেষ্টা, শট লক্ষ্যে রাখা—সব বিভাগেই সেরা দল ছিল স্পেন। ৬১ শতাংশ সময় পজেশন ধরে রেখে ১২০ মিনিটে মোট ৮১২ পাস দেয় দলটি, যেখানে ৫০৯ পাস দেওয়া পর্তুগালের পজেশন ছিল মাত্র ৩৯ শতাংশ।
ম্যাচজুড়ে পর্তুগাল শট নেয় মাত্র সাতটি, যার গোল হওয়া ওই দুটি শটই কেবল লক্ষ্যে রাখতে পারে; অপরদিকে ১৬টি শট নিয়ে ৬টি লক্ষ্যে রেখেও কাজের কাজ করতে ব্যর্থ হয়েছে লা রোহারা।
তবে মাঠের খেলায় ক্ষুরধার আক্রমণের অভাবে ভোগা স্পেনকে এদিন প্রথমার্ধের পর থেকেই চেনা যায়নি। অপরদিকে, উপযুক্ত সময়ে যথাযথ খেলোয়াড় বদলি করে নিজেদের সামর্থ্যের সবটুকু উজাড় করে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন পর্তুগালের কোচ রবের্তো মার্তিনেস।
এ ছাড়া ম্যাচজুড়ে স্পেনের একের পর এক আক্রমণ রুখে দেওয়া দিয়োগো কস্তা টাইব্রেকারেও কাজের কাজটি করে দিয়েছেন একেবারে সঠিক সময়ে। ফলে শেষ পর্যন্ত গত কয়েক বছর ধরে একপ্রকার অপ্রতিরোধ্য স্পেনকে মাটিতে নামিয়ে শিরোপা নিয়ে ঘরে ফিরেছে তারাই। আর ব্যর্থতার পসরা সাজানোর পর প্রতিপক্ষকে শিরোপা উঁচিয়ে ধরতে দেখে হাততালি দিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে লুইস দে লা ফুয়েন্তের শিষ্যদের।
১৭৯ দিন আগে
৯ গোলের থ্রিলারে লড়াই করেও হারল ফ্রান্স, স্পেন-পর্তুগাল ফাইনাল
সেয়ানে সেয়ানে টক্করের পরও ৪-০ গোলে পিছিয়ে পড়ল ফ্রান্স, কিন্তু তারপরও কী অসাধারণভাবে ঘুরে দাঁড়াল দলটি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত লুইস দে লা ফুয়েন্তের দুর্দান্ত স্পেনের বিপক্ষে পেরে উঠল না দিদিয়ের দেশমের শিষ্যরা। ফলে হেরে ফাইনালে ওঠার স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে ফরাসিদের, অন্যদিকে শিরোপা ধরে রাখার মিশনে টানা তৃতীয়বার ফাইনালে উঠেছে স্পেন।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রাতে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ফিরেছিল ২০২০-২১ মৌসুমের ফাইনাল। তবে সেবার স্প্যানিশদের ২-১ গোলে হারিয়ে শিরোপা উৎসব করলেও এবার আর পারল না ফ্রান্স। অপরদিকে ফরাসিদের ৫-৪ ব্যবধানে হারিয়ে সেই ক্ষতে প্রলেপ দিয়ে আরও একবার ফাইনালে উঠে গেল স্প্যানিশরা।
এদিন ম্যাচের ২৩ ও ২৫তম মিনিটে নিকো উইলিয়ামস ও মিকেল মেরিনোর গোলে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় স্পেন। তবে প্রথমার্ধের পুরোটা আলো কেড়ে নেন স্পেন অধিনায়ক তথা দলটির গোলরক্ষক উনাই সিমোন। ফরাসিদের নিশ্চিত গোল হওয়ার মতো পাঁচটি শট রুখে দেন তিনি।
বিরতির পর নেমে ফের জোড়া ধাক্কা খায় ফ্রান্স। এবারের দুই গোলদাতা লামিন ইয়ামাল ও পেদ্রি।
৫৪তম মিনিটে লামিনকে ফাউল করে পেনাল্টি দিয়ে বসেন ফরাসি ডিফেন্ডার আদ্রিয়েন রাবিও, আর তা থেকে ব্যবধান ৩-০-তে উন্নীত করেন এই কাতালান প্রতিভা। পরের মিনিটে স্পেনের চকিত আক্রমণে চোখে সর্ষে ফুল দেখে ফ্রান্সের ডিফেন্ডাররা। এ সময় নিকো উইলিয়ামসের ড্রিবলের পর বাড়ানো পাস থেকে আরও নিপুণ দক্ষতায় গোল করেন পেদ্রি।
তার পাঁচ মিনিট পর অবশ্য পেনাল্টি পায় ফ্রান্সও এবং তা থেকে প্রথমবার ব্যবধান কমান এমবাপ্পে। তবে ৭৯তম মিনিটে লামিন পঞ্চম গোলটি করলে মনে হচ্ছিল ফ্রান্সের খেলা সেখানেই শেষ। কিন্তু ফুটবল বলে কথা! যেখানে শেষ বলে কিছু নেই।
৭৯তম মিনিটে বদলি হিসেবে নামা রায়ান শেরকির গোলে ব্যবধান কমে দেশমের দলের। এর তিন মিনিট পর এমবাপ্পের কাছে বল যাওয়া রুখতে গিয়ে তা জালে পাঠিয়ে আত্মঘাতী গোল করে বসেন স্পেনের বদলি হিসেবে নামা ডিফেন্ডার দানি ভিভিয়ান। ৫-৩ গোলে ব্যবধান কমে এলে পায়ের নিচে মাটি পায় ফ্রান্স; আরও জমে ওঠে খেলা।
এরপর যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে আরও একটি গোল করেন রাঁদাল কোলো মুয়ানি, কিন্তু তা সমতায় ফেরার জন্য যথেষ্ট ছিল না। ফলে খেলা অতিরিক্ত ত্রিশ মিনিটে গড়ানোর সম্ভাবনা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত ৯০+৬ মিনিটেই শেষ হয়, আর শেষ হাসি হাসে স্পেন।
১৮২ দিন আগে
রোনালদোর আশা পূরণের রাতে নেশন্স লিগের ফাইনালে পর্তুগাল
বয়স চল্লিশ পেরিয়ে একচল্লিশে পা দিলেও যেন থামার নাম নেই ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর, না আছে তার পারফরম্যান্সে ভাটার টান। এমনই আরও একটি উজ্জ্বল পারফরম্যান্সের রাতে অনন্য মাইলফলক ছুঁয়ে দেশকে আরও একবার নেশন্স লিগের ফাইনালে তুলেছেন পর্তুগিজ মহাতারকা।
মিউনিখের আলিয়ান্স আরেনায় বুধবার (৪ জুন) রাতে উয়েফা নেশন্স লিগের সেমিফাইনালে জার্মানিকে তাদের মাঠেই ২-১ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে প্রতিযোগিতাটির প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়নরা।
এই জয়ে পর্তুগালের জার্সি গায়ে প্রথমবার জার্মানিকে হারাতে পারলেন রোনালদো। আর আরাধ্য এই জয় পেতে তার লাগল ৪০ বছর ১১৯ দিন। জাতীয় দলের জার্সিতে ২২০তম ম্যাচ খেলতে নেমে এই কীর্তি গড়েন তিনি।
ক্রিকেটপাড়ায় ১৮ বছর ধরে শিরোপার প্রতীক্ষায় থাকা বিরাট কোহলির হাতে আইপিএল ট্রফি ওঠা নিয়ে যখন চারদিক থেকে প্রশংসার ধারা বইছে, তার মধ্যেই ক্রিকেট কিংবদন্তির ফুটবল জগতের আদর্শ ২৫ বছর পর দলকে এনে দিলেন বিরল এই জয়।
হ্যাঁ, সবশেষ ২০০০ সালের ২০ জুন ইউরোর গ্রুপ পর্বে ৩-০ গোলে জার্মানিকে হারিয়েছিল পর্তুগাল। এর মাঝে ২৫টি বছর কেটে গেছে। দুই দলের দেখা যে এর মধ্যে হয়নি তা নয়। তবে ওই সময়ের পর থেকে পাঁচবারের দেখায় সবকটি ম্যাচে হারের তেতো স্বাদ নিতে হয়েছে পর্তুগিজদের, আর জার্মানি জয়ের আকাঙ্ক্ষা কেবল দীর্ঘই হয়েছে রোনালদোর।
এবার সব অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে দলকে ফাইনালে তুলেছেন শ্রমকে সাফল্যের মূলমন্ত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা এই অনন্য ফুটবলার।
১৮৩ দিন আগে
আবারও হেরে আর্সেনালের বিদায়, ইন্টার-পিএসজি ফাইনাল
ঘরের মাঠে ১-০ গোলে হারের পর পিএসজির মাঠে খেলতে গিয়েছিল আর্সেনাল। এই ম্যাচে তাই শুধু জিতলেই হতো না, অন্তত দুই গোলের ব্যবধানে জিততে হতো মিকেল আর্তেতার শিষ্যদের। তবে জেতা তো দূর, উল্টো আরও একবার হেরে গিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে গানারদের। আর দুই লেগের সেমিফাইনালের দুটিই জিতে ফাইনালে উঠেছে পিএসজি।
বুধবার রাতে প্যারিসের পার্ক দে প্রান্সে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের ফিরতি লেগের ম্যাচটি ২-১ গোলে জিতেছে পিএসজি। এর ফলে সামগ্রিক লড়াইয়ে ব্যবধান দাঁড়ায় ৩-১ এ।
প্রথম লেগে একমাত্র গোলটি করা উসমান দেম্বেলেকে বেঞ্চে রেখে এদিন একাদশ সাজান পিএসজি বস লুইস এনরিকে। অন্যদিকে প্রতিপক্ষের মাঠে তাদের সমর্থকদের সামনেও স্বাগতিকদের ওপর ছড়ি ঘোরাতে থাকে আর্সেনাল। কিন্তু ২৭তম মিনিটে ডি-বক্সের সামান্য বাইরে থেকে নেওয়া জোরালো শটে পিএসজিকে এগিয়ে নেন দলটির স্প্যানিশ মিডফিল্ডার ফাবিয়ান রুইস।
দ্বিতীয়ার্ধে ৬৯তম মিনিটে একটি পেনাল্টি পেয়েছিল দলটি, তবে ভিতিনিয়ার দুর্বল শট ঠেকিয়ে দলকে লড়াইয়ে ধরে রাখেন আর্সেনাল গোলরক্ষক দাভিদ রায়া। এর তিন মিনিট পরই অবশ্য ব্যবধান আরও বাড়ান আচরাফ হাকিমি।
৭৬তম মিনিটে চকিতে আক্রমণে উঠে একটি গোল পরিশোধ করেন আর্সেনালের বুকায়ো সাকা। তার কিছুক্ষণ পর আরও একটি গোল করে দলকে সমতায় ফেরার সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন তিনি। এরপর আর কোনোপাশেই গোল হয়নি।
আরও পড়ুন: সাত গোলের থ্রিলারে বার্সেলোনাকে হারিয়ে ফাইনালে ইন্টার
ফলে সামগ্রিক লড়াইয়ে ৩-১ ব্যবধানের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে এনরিকের শিষ্যরা। এর মাধ্যমে পাঁচ বছর পর ফের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠল লে পারিসিয়েনরা। ২০২০ সালে ইতিহাসে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল খেলে পিএসজি। সেবার বায়ার্ন মিউনিখের কাছে হেরে হৃদয় ভাঙে তাদের।
পিএসজির এবারের প্রতিপক্ষ আগের রাতে বার্সেলোনাকে বিদায় করা ইন্টার মিলান। এবারের আসরের ফাইনালের ভেন্যু আবার আলিয়ান্স আরেনা। বায়ার্নের মাঠ থেকে প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জিতে পিএসজি তাদের দুঃখ ঘোচাতে পারবে কি না, তা সময় বলে দেবে।
আগামী ৩১ মে ইউরোপ-সেরার এই লড়াইয়ের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে মুখোমুখি হবে গতবারের ইতালি ও ফ্রান্স চ্যাম্পিয়নরা।
২১১ দিন আগে
সাত গোলের থ্রিলারে বার্সেলোনাকে হারিয়ে ফাইনালে ইন্টার
এ যেন ফাইনালের আগে আরেক ফাইনাল। অবিশ্বাস্য লড়াই, নাটকীয় পালাবদল আর চরম এক কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বিতা উপহার দিল ইন্টার মিলান ও বার্সেলোনা। দিনশেষে এক দল জয়োল্লাস করে ফাইনালে উঠলেও অন্য দলও তাই মাঠ ছেড়েছে মাথা উঁচু করেই।
মঙ্গলবার (৬ মে) রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে বার্সেলোনাকে ৪-৩ গোলে হারিয়ে প্রথম দল হিসেবে ফাইনালে উঠেছে সিমোনে ইনজাগির দল।
এদিন আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ, ইন্টারের শক্তিধর খেলোয়াড়দের ক্ষিপ্রগতির ফুটবল আর বার্সেলোনার মেধাবী তরুণদের পায়ের কারিকুরিতে পুরো ম্যাচজুড়েই ফুটবলের সত্যিকারের নির্যাস উপভোগ করার সুযোগ হয় দর্শকদের।
তবে বার্সেলোনার মাঠ থেকে ৩-৩ গোলে ড্র করে আসা ইন্টার নিজেদের মাঠে এদিন প্রথমার্ধে দুই গোলের ব্যবধানে এগিয়ে যায়। ম্যাচের ২১তম মিনিটে লাউতারো মার্তিনেস এবং বিরতির ঠিক আগমুহূর্তে পেনাল্টি থেকে হাকান চালানোলু দ্বিতীয় গোল করলে বেশ সুবিধাজনক অবস্থা তৈরি করেই ড্রেসিংরুমে যায় স্বাগতিকরা।
তবে বিরতির পর পরপর দুই গোল করে দারুণভাবে ম্যাচে ফিরে আসে বার্সেলোনা। ৫৪তম মিনিটে এরিক গার্সিয়ার চকিতে করা গোল এবং তার ছয় মিনিট পর আরও একটি গোল করে দলকে সমতায় ফেরান দানি অলমো।
এরপর ৬৯তম মিনিটে বার্সেলোনাকে একটি পেনাল্টি দিয়েও রিভিউ করে তা বাতিল করে দেন রেফারি। তবে নির্ধারিত সময়ের তিন মিনিট বাকি থাকতে তৃতীয় গোলটি করে দুই লেগ মিলিয়ে বার্সেলোনাকে প্রথমবারের মতো এগিয়ে নেন রাফিনিয়া।
শেষ মুহূর্তে রাফিনিয়ার ওই গোলে বার্সেলোনা যখন জয়ের সুবাস পাচ্ছে, তার মধ্যেই যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে ফ্রান্সেসকো আচেরবির গোলে নাটকীয়ভাবে সমতায় ফেরে ইন্টার। ফলে অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় খেলা।
অতিরিক্ত সময়ে প্রথমার্ধেই ৯৯তম মিনিটে আরও একটি গোল করে স্বাগতিকদের ফের লিড এনে দেন দাভিদে ফ্রাত্তেসি। এরপর থেকে ১২০ মিনিট পর্যন্ত দলটির ওপর আক্রমণের বুলডুজার চালায় বার্সেলোনা। বেশ কয়েকটি অসাধারণ সুযোগও তৈরি করে তারা। কিন্তু ভাগ্যের ফেরে তার কয়েকটি গোলপোস্টে লেগে ফিরে আসে ও অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় এবং অসাধারণ নৈপুণ্যে আরও কয়েকটি ঠেকিয়ে দেন ইন্টার গোলরক্ষক ইয়ান জমার। ফলে আক্রমণের পর আক্রমণ চালিয়েও শেষ পর্যন্ত হার মেনে মাঠ ছাড়তে হয় হান্সি ফ্লিকের শিষ্যদের।
এর ফলে ছয় বছর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে উঠেও বিদায় নিতে হলো কাতালান জায়ান্টদের। এর সঙ্গে দলটির কোয়াড্রাপল জয়ের স্বপ্নও ধূলিস্যাৎ হয়ে গেল।
বুধবার অপর সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে পিএসজির মাঠে খেলতে নামবে আর্সেনাল। ঘরের মাঠে দলটির বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরেছিল মিকেল আর্তেতার দল। ফলে ফাইনালের টিকিট কাটতে প্রতিপক্ষের মাঠে বিশেষ কিছু করে দেখাতে হবে দলটির।
২১২ দিন আগে
অগ্নিঝরা ফাইনাল জিতে কোপা দেল রের শিরোপা পুনরুদ্ধার করল বার্সেলোনা
চার মৌসুম ধরে কোপা দেল রের শিরোপা খুঁজে চলা বার্সেলোনা মাঠে নামার আগেই রেফারিকাণ্ডে বিতর্ক ওঠে চরমে। তারপর খেলতে নেমে একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত, নাটকীয় পালাবদলের মধ্যে দিয়ে ম্যাচ যখন টাইব্রেকারের দিকে গড়াচ্ছে, তখনই কোথা হতে উড়ে এসে গোল করে বসলেন জুল কুন্দে, আর তাতেই দীর্ঘ দিনের অধরা শিরোপা নিয়ে উদযাপনে মাতল কাতালান জায়ান্টরা।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাতে সেভিলের লা কার্তুহা স্টেডিয়ামে রিয়াল মাদ্রিদকে ৩-২ গোলে হারিয়ে কোপা দেল রে শিরোপা পুনরুদ্ধার করেছে বার্সেলোনা। এর ফলে কোপার ৩২তম ট্রফি জয়ের উল্লাসে মেতেছে এই টুর্নামেন্টের রাজারা।
এদিন ম্যাচের শুরু থেকে নিজেদের খুঁজে চলা রিয়ালের ওপর ছড়ি ঘুরিয়ে ২৭তম মিনিটে দুর্দান্ত এক বুলেট শটে বার্সাকে লিড এনে দেন পেদ্রি। গোলটির কারিগর ছিলেন বার্সার ১৭ বছর বয়সী তারকা উইঙ্গার লামিন ইয়ামাল।
গোল খেয়ে ম্যাচের আধঘণ্টা পার হওয়ার পর থেকে ঘুরে দাঁড়াতে থাকে রিয়াল মাদ্রিদ। বিরতির সময় রদ্রিগোকে বসিয়ে কিলিয়ান এমবাপ্পেকে মাঠে নামিয়ে দিলে দলটির আক্রমণে ধার আরও বাড়ে। তারপর ৫৫তম মিনিটে লুকা মদ্রিচ ও আর্দা গুলের দলে ভারসাম্য এনে দেয়। এর ফলস্বরূপ ৭০ ও ৭৭তম মিনিটে এমবাপ্পে ও অরেলিয়েঁ চুয়ামেনি দুই গোল করে রিয়ালকে এগিয়ে নেন।
তবে বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি সেই লিড। ৮৪তম মিনিটে লামিন ইয়ামালের আরও একটি অ্যাসিস্ট থেকে অসাধারণ এক গোল করে বার্সাকে ম্যাচে ফেরান ফেররান তোরেস।
এরপর ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে গড়ালে দুই দলই জয়সূচক গোলটির সন্ধানে জোর চেষ্টা চালায়, কিন্তু ১১৬তম মিনিটে মদ্রিচের দুর্বল পাস আর ব্রাহিম দিয়াসের গড়িমসির সুযোগ নেন কুন্দে। ছুটে গিয়ে বল লুফে নিয়ে খানিকটা এগিয়ে গিয়েই রিয়ালের ডি-বক্সের বাইরে থেকে নেন চমৎকার একটি শট, আর তা ঝাঁপিয়ে পড়া থিবো কোর্তোয়াকে পরাস্ত করে জালে আছড়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে উল্লাস ছড়িয়ে যায় বার্সার ডাগআউট থেকে শুরু করে গ্যালারির অর্ধেক অংশে।
ওই গোলেই ম্যাচটি জিতে নেয় বার্সেলোনা। আর চরম হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড়দের। অবশ্য ম্যাচের শেষদিকে বেঞ্চে থাকা আন্টোনিও রুয়েডিগার ও লুকাস ভাসকেসের পাওয়া দুটি লাল কার্ড সঙ্গী হয় তাদের।
ফলে সুপার কাপের পর কোপা দেল রের ফাইনালেও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদকে বঞ্চিত করে টানা দুই শিরোপা ঘরে তুলল হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা। সেইসঙ্গে চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে তিন বারের দেখায় তিনটি ম্যাচই বার্সেলোনার কাছে হেরে গেল আনচেলত্তির শিষ্যরা।
আর কোয়াড্রাপল মিশনে সুপার কাপের পর কোপা দেল রে জয় করে অর্ধেক পথ পাড়ি দিয়ে ফেলল কাতালান জায়ান্টরা। এখন তাদের সামনে কেবল লা লিগা ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ।
লা লিগাতেও অবশ্য রিয়াল মাদ্রিদ ফাঁড়া কাটাতে হবে ফ্লিকের দলকে, তবে সেখানে চ্যালেঞ্জ অত কঠিন নয়। শুধু হার এড়িয়ে বাকি চারটি ম্যাচে আট পয়েন্ট সংগ্রহ করলেই চলবে। আর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে ওঠায় দীর্ঘদিন ধরে অধরা এলিট ওই ট্রফিটি জিততে তাদের প্রয়োজন তিনটি ম্যাচ ভালোভাবে উৎরে যাওয়া।
মৌসুমের শেষভাগে এসে ক্লান্ত-বিধ্বস্ত দল নিয়ে তার কতটা পূরণ করতে পারবেন হান্সি ফ্লিক, তা এখন অজানা। তবে ওসব হিসাব আজ করছে বার্সেলোনা; কোপা দেল রে জিতে আজ কেবলই তাদের উদযাপনের সময়।
আরও পড়ুন: ফিরে আসা কাকে বলে, দেখিয়ে দিল বার্সেলোনা
ধ্রুপদী ফুটবলের রাতে গৌরবময় সময়ে ফেরার ইঙ্গিত বার্সেলোনার
রিয়ালকে ৫ গোল দিয়ে সুপার কাপ জিতল ১০ জনের বার্সেলোনা
২২২ দিন আগে
মৌসুম শেষ কামাভিঙ্গার, ফাইনালে আলাবাকে নিয়ে সংশয়ে রিয়াল
গেতাফের বিপক্ষে কোনোরকমে জিতে লা লিগার শিরোপার দৌড়ে টিকে থাকলেও কোপা দেল রের ফাইনালের আগে দুঃসংবাদ দিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। চোটের কারণে মৌসুম শেষ হয়ে গেছে মিডফিল্ডার এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গার। এছাড়া ফাইনালে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছেন ডিফেন্ডার দাভিদ আলাবাও।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাতে আরদা গুলেরের গোলে গেতাফেকে ১-০ ব্যবধানে হারায় রিয়াল মাদ্রিদ। আলাবা শুরুর একাদশে থেকে ম্যাচ শুরু করলেও দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নামেন কামাভিঙ্গা। তবে দুজনকেই মাঠ ছাড়তে হয় অস্বস্তি নিয়ে।
ম্যাচশেষে আনচেলত্তি জানান, কামাভিঙ্গা ও আলাবা পেশিতে টান পেয়েছেন। ফলে বার্সেলোনার বিপক্ষে ফাইনালে তাদের পাওয়ার আশা করছেন না তিনি।
কোচের সেই আশঙ্কা সত্যি করে আজ (বৃহস্পতিবার) এক বিবৃতিতে রিয়াল মাদ্রিদ জানিয়েছে, কামাভিঙ্গার বাঁ পায়ের অ্যাডাক্টর টেন্ডন সম্পূর্ণ ছিঁড়ে গেছে। ফলে অন্তত তিন মাস মাঠের বাইরে থাকতে হবে এই মিডফিল্ডারকে।
এর ফলে মৌসুমই শেষ হয়ে গেছে এই ফরাসি মিডফিল্ডারের। এমনকি আসন্ন ক্লাব বিশ্বকাপও খেলতে পারবেন না তিনি।
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম কোপের রিয়াল মাদ্রিদ বিটের সাংবাদিক আরানচা রদ্রিগেস জানিয়েছেন, তিন মাস মাঠের বাইরে থাকতে হবে কামাভিঙ্গাকে। আগস্টের মাঝামাঝি লা লিগার পরবর্তী মৌসুম শুরুর হওয়ার সময় দলে ফিরবেন এই মিডফিল্ডার।
আরও পড়ুন: একাধিক সুযোগ নষ্ট করে গেতাফের হার, লড়াইয়ে টিকে রইল রিয়াল
কামাভিঙ্গাকে স্থায়ীভাবে হারালেও আলাবাকে নিয়ে যে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন আনচেলত্তি, সে বিষয়ে অবশ্য কিছুটা স্বস্তির খবর মিলেছে।
আরানচা জানিয়েছেন, আলাবার চোট ততটা গুরুতর নয়। আগামীকাল (শুক্রবার) তিনি যদি খুব বেশি অসুস্থ বোধ না করেন, তাহলে দলের সঙ্গে সেভিলে যেতে পারেন।
সেভিলের লা কার্তুহা স্টেডিয়ামে শনিবার কোপা দেল রের ফাইনালে মাঠে নামবে রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা। এই ম্যাচের আগে কামাভিঙ্গার ছিটকে যাওয়া ও আলাবাকে নিয়ে সংশয় থাকায় রিয়ালের লেফট ব্যাক পজিশনে এখন একমাত্র নাম ফ্রান গার্সিয়া। তবে চলতি মৌসুমে তার পারফরম্যান্স খুব বেশি আশা জাগানিয়া নয়। ফলে ১৭ বছর বয়সেই ফুটবল বিশ্বের আলো কেড়ে নেওয়া লামিন ইয়ামালকে আটকাতে কী কৌশল অবলম্বন করবেন আনচেলত্তি, তার ওপর দলের সাফল্য অনেকাংশে নির্ভর করছে।
ফাইনাল ম্যাচে দলটির বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় খেলতে পারবেন না। এদের মধ্যে দানি কারভাহাল ও এদের মিলিতাও চোট পেয়ে বেশ আগেই এই মৌসুমের জন্য দলের বাইরে চলে গেছেন। সেই তালিকায় এবার যুক্ত হলেন কামাভিঙ্গা। তাছাড়া দাভিদ আলাবা ও ফেরলঁ মঁদির খেলা নিয়েও রয়েছে সংশয়। পাশাপাশি চোটের কারণে কিলিয়ান এমবাপ্পে শনিবারের ফাইনালে খেলতে পারবেন কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়।
অন্যদিকে, এই ম্যাচের আগে বার্সেলোনা যে খুব ভালো অবস্থায় আছে, তা নয়। চোটের কারণে কাতালান দলটিও আছে বিপদে।
আরও পড়ুন: কষ্টের জয়ে এগিয়ে যাওয়ার রাতে বার্সেলোনা শিবিরে দুঃসংবাদ
লেগানেসের বিপক্ষে চলতি মাসের ১২ তারিখের ম্যাচে হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়ে তিন সপ্তাহের জন্য মাঠের বাইরে চলে যান দলটির নিয়মিত একাদশের লেফট ব্যাক আলেহান্দ্রো বালদে। এরপর সেল্তা ভিগোর বিপক্ষে শনিবার (১৯ এপ্রিল) হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে পড়েন চলতি মৌসুমে বার্সার সর্বোচ্চ গোলদাতা রবের্ট লেভানডোভস্কিও। শুধু কোপার ফাইনালই নয়, ইন্টার মিলানের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের দুই লেগেও তাকে না পাওয়া শঙ্কায় আছেন হান্সি ফ্লিক।
এছাড়া, পেশির চোটে অনেক আগেই মৌসুম শেষ হয়ে গেছে দলটির মাঝমাঠের দুই খেলোয়াড় মার্ক বের্নাল ও মার্ক কাসাদোর। ডিফেন্ডার আন্দ্রেয়াস ক্রিস্টেনসেন ও গোলরক্ষক মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগেন অনুশীলনে ফিরলেও পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্যেই আছেন তারা। মাঠে ফিরতে তাদের আরও কিছুটা দেরি আছে।
তাছাড়া বার্সেলোনার লা লিগা, কোপা দেল রে ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টানা ম্যাচ খেলার ধকল থাকলেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে যাওয়ায় কিছুটা হলেও বেশি বিশ্রামের সুযোগ মিলবে রিয়াল মাদ্রিদের। সব মিলিয়ে দলের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের ছাড়াই কোপার ফাইনালে শনিবার রাতে মাঠে নামতে হচ্ছে দুই দলকে। ফলে দুই কোচের কৌশল ও ম্যাচ ব্যবস্থাপনার ওপর নির্ভর করছে কাদের হাতে উঠতে চলেছে এবারের কোপা দেল রে।
আরও পড়ুন: গুরুত্বপূর্ণ সময়ে লেভানডোভস্কির চোট, বিপদে বার্সেলোনা
২২৪ দিন আগে
একাধিক সুযোগ নষ্ট করে গেতাফের হার, লড়াইয়ে টিকে রইল রিয়াল
৩৬ শতাংশ পজেশন রেখেও ২০টি শট নিয়ে তার ছয়টি লক্ষ্যে রাখল গেতাফে। ম্যাচজুড়ে গোল করার চারটি পরিষ্কার সুযোগও তৈরি করল তারা। তবে গোল আর করা হয়ে উঠল না। বিপরীতে ১৪টি শটের সাতটি লক্ষ্যে রেখে দুটি পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করে তা থেকেই ঠিকানা খুঁজে নিল রিয়াল মাদ্রিদ। আর তাতেই কোনোমতে ম্যাচ জিতে নিয়ে শিরোপার লড়াই আরও এক ধাপ এগিয়ে নিল কার্লো আনচেলত্তির দল।
বুধবার রাতে গেতাফের কলিসেউম স্টেডিয়ামে লা লিগার ৩৩তম রাউন্ডের ম্যাচটি ১-০ গোলে জিতেছে রিয়াল মাদ্রিদ।
আগের রাতে মায়োর্কাকে একই ব্যবধানে হারানোয় রিয়ালের সঙ্গে বার্সেলোনার পয়েন্ট ব্যবধান বেড়ে হয় সাত। তাই নিজেদের ম্যাচটি হারা তো দূর, ড্র করলেও লিগ শিরোপার লড়াই থেকে একপ্রকার ছিটকে যেত আনচেলত্তির দল। তবে জিতে সেই ব্যবধান ফের চারে নামিয়ে তা হতে দেয়নি গতবারের চ্যাম্পিয়নরা।
৩৩ ম্যাচে ২৪ জয় ও চার ড্রয়ে বার্সেলোনার পয়েন্ট ৭৬। সমান সংখ্যক ম্যাচে ২২ জয় ও ৬ ড্রয়ে নিজেদের পয়েন্ট ৭২-এ উত্তীর্ণ করেছে রিয়াল।
আরও পড়ুন: মায়োর্কার ওপর ছড়ি ঘুরিয়ে ফাইনালের প্রস্তুতি সারল বার্সেলোনা
শনিবারের কোপা দেল রের ফাইনালে দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের ফিট রাখতে বার্সার মতোই বেশ কয়েকজনকে বিশ্রামে রেখে একাদশ সাজান আনচেলত্তি।
চোটের কারণে এই ম্যাচে কিলিয়ান এমবাপ্পের না খেলার কথা জানা গিয়েছিল আগেই। এছাড়া আন্টোনিও রুয়েডিগার, জুড বেলিংহ্যাম, এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা, লুকা মদ্রিচ ও রদ্রিগোকে এদিন বেঞ্চে রাখেন রিয়াল বস। এর ফলে ভিনিসিয়ুসের সঙ্গে আক্রমণভাগে খেলার সুযোগ পান ব্রাহিম দিয়াস ও এন্দ্রিক। মাঝমাঠে খেলতে নামেন আরদা গুলেরও।
একাদশে অদল-বদল হলেও প্রথমার্ধে অসাধারণ পারফর্ম করে রিয়াল মাদ্রিদ। অবশ্য তাদের সমানে জবাব দিয়ে যাচ্ছিল গেতাফেও।
তবে ২১তম মিনিটে গুলেরের চমৎকার এক গোলে এগিয়ে যায় রিয়াল। এ সময় ব্রাহিমের শট গোলরক্ষক ফিরিয়ে দিলে পরমুহূর্তে বক্সের বাইরে বল পেয়ে যান গুলের। জায়গা বানিয়ে নিয়েই ২০ গজ দূর থেকে জোরালো শট নেন এই তরুণ তুর্কি, গোলরক্ষক দাভিদ সরিয়া ঝাঁপিয়ে তাতে হাত ছোঁয়ালেও আটকাতে ব্যর্থ হন।
৩২তম মিনিটে দ্বিতীয় গোলটিও পেয়েই গিয়েছিল রিয়াল। এন্দ্রিকের শট সরিয়া প্রতিহত করলেও তা গোলের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। তবে শেষ মুহূর্তে গোললাইন থেকে বল ক্লিয়ার করেন গেতাফের এক ডিফেন্ডার।
২২৫ দিন আগে
মায়োর্কার ওপর ছড়ি ঘুরিয়ে ফাইনালের প্রস্তুতি সারল বার্সেলোনা
পুরো ম্যাচজুড়ে শট নিল চল্লিশটি, অথচ গোল পেল মাত্র একটি। হ্যাঁ, আপনি ঠিকই পড়ছেন। এমনটিই ঘটেছে মায়োর্কার বিপক্ষে বার্সেলোনার ম্যাচে। ফিনিশিংয়ে ব্যর্থতার এমনই এক রাতে অবশ্য জিতেই মাঠ ছেড়েছে কাতালানরা।
মঙ্গলবার রাতে লা লিগার ৩৩তম রাউন্ডের ম্যাচে ঘরের মাঠে মায়োর্কাকে ১-০ গোলে হারিয়েছে বার্সেলোনা। ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন দানি অলমো।
গত ১৫ বছরে লা লিগার কোনো দল এক ম্যাচে এত বেশি (৪০) শট নিতে পারেনি। ফ্লিকের বার্সেলোনার সৌজন্যে সেই বিরল ঘটনার সাক্ষী হলো ফুটবল বিশ্ব।
চোটে খেলোয়াড়দের অনুপস্থিতি এবং আসন্ন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলোর কথা মাথায় রেখে টানা ম্যাচ খেলা একাদশের নিয়মিত খেলোয়াড়দের ছয়জনকে বদল করে নতুন একাদশ সাজিয়ে এদিন শিষ্যদের মাঠে নামান হান্সি ফ্লিক। তবে তাতে তার দলের পারফরম্যান্সে ভাটা পড়েনি।
অপরদিকে, গত কয়েক মৌসুম ধরে কোনোরকমে অবনমন এড়ানো মায়োর্কা চলতি মৌসুমে দারুণ পারফর্ম করে চলেছে। লিগ টেবিলের সাতে থাকা এই দলটির পারফরম্যান্স ছিল একেবারেই হতাশাজনক। ফলে তাদের ওপর পুরো ম্যাচজুড়ে ছড়ি ঘুরিয়েছে বার্সেলোনা।
৭৮ শতাংশ পজেশন ধরে রেখে ম্যাচজুড়ে মোট ৪০টি শট নেয় দলটি, যার ১৩টি ছিল লক্ষ্যে। অপরদিকে, মাত্র চারটি শট নিলেও একটিও লক্ষ্যে রাখতে পারেনি মায়োর্কা।
এর ফলে এক গোলের ব্যবধানে ম্যাচ জিতলেও আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থেকে আগামী শনিবার অনুষ্ঠিত হতে চলা কোপা দেল রের ফাইনালের প্রস্তুতি সেরেছে কাতালান জায়ান্টরা। সেই সঙ্গে অনিয়মিত খেলোয়াড়দেরও ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন ফ্লিক।
চোটে ছিটকে যাওয়া লেভানডোভস্কি এবং রাফিনিয়াকে বিশ্রামে রাখায় এদিন কপাল খোলে আনসু ফাতির। তাকে বাঁ পাশে রেখে ফেররান তোরেস ও লামিন ইয়ামালকে নিয়ে আক্রমণ ত্রয়ী সাজান ফ্লিক।
আরও পড়ুন: গুরুত্বপূর্ণ সময়ে লেভানডোভস্কির চোট, বিপদে বার্সেলোনা
মাঠে নেমে প্রথম মিনিটেই গোলের উদ্দেশ্যে শট নেন ফাতি, তবে শটটি মায়োর্কার রক্ষণে আটকে যায়। এরপর সপ্তম থেকে নবম মিনিটের মধ্যে লামিনের দুটি ও ফেররানের একটি শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। দ্বাদশ মিনিটে ফেররান ও লামিনের জোড়া শট প্রতিহত করেন মায়োর্কা গোলরক্ষক লেও রোমান। সতীর্থের বাড়ানো থ্রু বল ধরে এগিয়ে গিয়ে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সের সামনে থেকে জোরালো শট নেন ফেররান, গোলরক্ষক বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে তা ফিরিয়ে দিলে বল চলে আসে ডানপাশে থাকা লামিনের পায়ে। তিনি সেখান থেকে শট নিলেও বল লুফে নেন রোমান।
অষ্টাদশ মিনিটের শুরুতে দুর্দান্ত এক পাল্টা আক্রমণে উঠে গোল করার দারুণ এক সুযোগ তৈরি করে মায়োর্কা। তবে গোলমুখে বাড়ানো নিচু ক্রসে পা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হওয়ায় এগিয়ে যাওয়ার সুযোগবঞ্চিত দলটি।
২৬তম মিনিটে গোল পেয়েই গিয়েছিলেন অলমো, কিন্তু তার অসাধারণ টোকায় গোলের উদ্দেশে বাড়ানো বলের দিক পরিবর্তন করে দেন রোমান। ২৯তম মিনিটে আত্মঘাতী গোল খাওয়া থেকে দলকে রক্ষা করেন তিনি। পরের মুহূর্তেই গাভির নেওয়া জোরালো শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। তার কয়েক মুহূর্ত পর গোলমুখে বল পেয়েও বাইরে মারেন আরাউহো।
এই সময় থেকে মোটামুটি পাঁচ মিনিট মায়োর্কার খেলোয়াড়দের ওপর বুলডোজার চালাতে থাকে বার্সার খেলোয়াড়রা। একের পর এক আক্রমণ, শটে গোল আদায়ের জোরালো প্রচেষ্টা চালাতে থাকে দলটি। কিন্তু কোনোমতে বার্সার আক্রমণগুলো প্রতিহত করে ম্যাচে নিজেদের ধরে রাখে মায়োর্কা।
চল্লিশতম মিনিটে আরও একবার দুর্দান্ত আক্রমণ শানিয়ে তিন তিনবার গোলে শট নেন বার্সেলোনার খেলোয়াড়রা, তবে এবারও মায়োর্কার ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন রোমান। ৪৪তম মিনিটে বাঁ পাশ থেকে বক্সে ঢুকে নেওয়া ফাতির শট পোস্টঘেঁষে বেরিয়ে যায়।
ফিরতি বল থেকেই আক্রমণে উঠে বার্সার রক্ষণ ভেঙে এগিয়ে গিয়ে গোল করেন আন্তোনিও সানচেস, তবে শেষ পর্যন্ত তা অফসাইডে কাটা পড়ে।
আরও পড়ুন: হারের শঙ্কা জাগিয়েও সাত গোলের থ্রিলার জিতল বার্সেলোনা
এর কিছুক্ষণ পর বিরতিতে যায় দুদল। বিরতির আগে প্রতিপক্ষকে চোখ রাঙিয়ে অসংখ্য সুযোগ তৈরি করলেও গোল আদায় করতে ব্যর্থ হয় স্বাগতিকরা। ৭৮ শতাংশ সময় পজেশন রেখে প্রথমার্ধে মোট ২৪টি শট নেয় বার্সেলোনা, যার ৬টি লক্ষ্যে ছিল। প্রথমার্ধে তিনিট ‘বিগ চান্স’ তৈরি করে দলটি, কিন্তু স্কোরবোর্ডে কিছুই যোগ করতে পারে না। অপরদিকে, নিজেদের ঘর সামলাতে ব্যস্ত থাকা মায়োর্কার আক্রমণের খাতা ছিল একেবারে শূন্য।
২২৬ দিন আগে
কষ্টের জয়ে এগিয়ে যাওয়ার রাতে বার্সেলোনা শিবিরে দুঃসংবাদ
বলের দখলে আধিপত্য বিস্তার করলেও ধারহীন আক্রমণেরে কারণে ম্যাচজুড়ে ভুগতে হলো বার্সেলোনাকে। তবে ভাগ্যের ছোঁয়ায় প্রতিপক্ষের দেওয়া আত্মঘাতী গোল ও তাদের বেশ কয়েকটি আক্রমণ থেকে বেঁচে যাওয়ায় তিন পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছেড়েছে কাতালানরা।
মাদ্রিদের বুতার্কে স্টেডিয়ামে শনিবার (১২ এপ্রিল) রাতে লা লিগার ৩১তম রাউন্ডের ম্যাচটি ১-০ গোলে জিতেছে বার্সেলোনা।
এতে করে ২২ জয় ও চার ড্রয়ে ৭০ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকা রিয়াল মাদ্রিদের চেয়ে সাত পয়েন্টে এগিয়ে গেছে হান্সি ফ্লিকের দল। এক ম্যাচ কম খেলে ৬৩ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে রয়েছে গতবারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ।
লিগে প্রথম দেখায় ঘরের মাঠে লেগানেসের বিপক্ষে একই ব্যবধানে হারে বার্সেলোনা। ফিরতি লেগে এসে তার প্রতিশোধ নিল তারা।
অবশ্য ঠিক প্রতিশোধ বলা চলে না। কারণ মাঠে প্রতিপক্ষের ওপর ছড়ি ঘোরালেও তেমনভাবে সুযোগ তৈরি করতে পারেনি দলটি। অন্যদিকে বেশ কয়েকটি দারুণ আক্রমণ শানিয়েছিল লেগানেস, তা থেকে গোলও আদায় করতে পারত দলটি। মাঝে একবার বল জালেও জড়িয়েছিল তারা, কিন্তু অফসাইডে গোলটি বাতিল হয়ে যায়। শেষের দিকে সময়ক্ষেপণ করে ওই এক গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ার জন্য শিষ্যদের ইঙ্গিত করতে দেখা যায় ফ্লিককে। শেষ পর্যন্ত হয়েছেও তাই।
হারলেও ম্যাচ শেষে তাই কিছুটা তৃপ্তি ঝরেছে লেগানেস কোচ বোর্হা হিমেনেসের কণ্ঠেও, ‘আজ আমরা বার্সেলোনার মতো একটি দলকে সময় নষ্ট করতে এবং শেষের বাঁশি চাইতে বাধ্য করেছি।’
এই জয়ে শীর্ষস্থান মজবুত করে লিগ শিরোপা জয়ের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল কাতালান জায়ান্টরা।
তবে পূর্ণ তিন পয়েন্ট অর্জনের রাতের স্বস্তিতে নেই দলটি। চোট পেয়ে প্রথমার্ধে বিরতির আগে মাঠ ছাড়তে হয় বার্সার তরুণ ফুলব্যাক আলেহান্দ্রো বালদেকে।
২৩৬ দিন আগে