হামাস
গাজায় নিহতের সংখ্যা ৭০ হাজার ছাড়াল
ইসরায়েলি হামলায় ফিলিস্তিনিদের নিহতের সংখ্যা ৭০ হাজার ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু।
গত ১০ অক্টোবর সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরও এই সংখ্যা বাড়ছে। ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের অভিযোগে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, আর ইতোমধ্যে ধ্বংস্তুপে পরিণত হওয়া গাজা থেকে আরও মরদেহ উদ্ধার করা হচ্ছে।
শনিবার (২৯ নভেম্বর) হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ফিলিস্তিনিদের নিহতের সংখ্যা এখন ৭০ হাজার ১০০।
এদিকে, গাজার দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলি হামলায় আরও দুই ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে নাসের হাসপাতাল।
ওই হাসপাতালের কর্মীরা জানিয়েছেন, ৮ ও ১১ বছর বয়সী দুই শিশুর মরদেহ সেখানে আনা হয়। স্থানীয় বেনি সুহাইলায় শরণার্থীদের একটি স্কুলের কাছে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় নিহত হয় ওই দুই ভাই।
তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, ইসরায়েল নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্রবেশ করে ‘সন্দেহজনক কার্যক্রম’ চালাচ্ছিল এবং সৈন্যদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল—এমন দুই ব্যক্তিকে তারা হত্যা করেছে। বিবৃতিতে শিশুদের কথা উল্লেখ করা হয়নি। এ ছাড়া দক্ষিণে পৃথক একটি ঘটনায় তারা আরও একজনকে হত্যা করেছে বলেও উল্লেখ করেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ১০ অক্টোবর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৫২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। তবে নিহত বেসামরিক নাগরিক ও যোদ্ধাদের তালিকা মন্ত্রণালয় আলাদা করে উল্লেখ করে না।
যুদ্ধবিরতি ভঙ্গকারী যোদ্ধারাই তাদের লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে বলে দাবি করে আসছে ইসরায়েল। তবে ইসরায়েল ও হামাস উভয় পক্ষই পরস্পরকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ করে আসছে। শনিবার আবারও ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ বন্ধে চাপ প্রয়োগ করতে মধ্যস্থতাকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে হামাস।
গত ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালিয়ে প্রায় ১ হাজার ২০০ বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করে এবং প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়ার পর এই সংঘাত শুরু হয়।
তবে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা এ সংঘাতের মাঝে যুদ্ধবিরতি বা অন্যান্য চুক্তির মাধ্যমে প্রায় সব জিম্মি বা তাদের মরদেহ ইসরায়েলে ফেরত গেলেও এখনো দুই জিম্মির মরদেহ (এক ইসরায়েলি ও এক থাই নাগরিক) ফেরত আসেনি। শনিবার রাতে তাদের ফিরিয়ে আনার দাবিতে আবারও তেল আবিবে বিক্ষোভ করেছে ইসরায়েলিরা।
৪ দিন আগে
গাজায় যুদ্ধবিরতির নতুন প্রস্তাবে হামাসের সম্মতি
গাজায় ৬০ দিনের নতুন যুদ্ধবিরতির সর্বশেষ প্রস্তাবে রাজি হয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির বিষয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে চুক্তি করতে আঞ্চলিক মধ্যস্থতাকারীদের প্রস্তাব মেনে নিয়েছে হামাস।
স্থানীয় সময় রবিবার (১৭ আগস্ট) কাতার ও মিসর যে প্রস্তাব উপস্থাপন করেছিল, সেটি গ্রহণ করেছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে হামাস।
হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর জ্যেষ্ঠ সদস্য বাছেম নাইম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছেন, মধ্যস্থতাকারীদের নতুন প্রস্তাব গ্রহণ করেছে হামাস। এর মধ্য দিয়ে গাজার মানুষ সহিংসতা থেকে মুক্তি পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
দ্য গার্ডিয়ান জানিয়ছে, নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব অনুযায়ী, ৬০ দিনের প্রাথমিক যুদ্ধবিরতির মধ্যে ২০ জন জীবিত জিম্মির প্রায় অর্ধেককে দুই দফায় মুক্তি দেবে হামাস, বিনিময়ে কারাবন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দেবে ইসরায়েল। একইসঙ্গে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনাও চলবে বলে জানিয়েছে মিসরের একটি সূত্র।
হামাসের সম্মতির বিষয়টি ইসরায়েলি সরকারও অবগত রয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির দুই কর্মকর্তা। তবে তারা সিএনএনকে বলেন, সব জিম্মির মুক্তি, হামাসের নিরস্ত্রীকরণ, গাজার পূর্ণ সামরিক নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার শর্তেই কোনো চুক্তি যাবে তেল আবিব।
এমন একটি সময়ে এই প্রস্তাবে হামাসের সম্মতি এল, যখন গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করে জিম্মিদের মুক্তির জন্য রোববার সবচেয়ে বড় গণবিক্ষোভের মুখে পড়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এসব বিক্ষোভ হামাসের দর কষাকষির অবস্থানকে আরও শক্ত করছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: জেলেনস্কি চাইলে মুহূর্তেই যুদ্ধ বন্ধ করতে পারেন: ট্রাম্প
কাতার ও মিসরের নতুন প্রস্তাবটি গতকাল সোমবার ইসরায়েলের কাছে উপস্থাপনের কথা ছিল। তবে ইসরায়েল আর কোনো আংশিক চুক্তিতে আগ্রহী নয় বলে জানান নেতানিয়াহু।
তিনি বলেছেন, যুদ্ধ কেবল তখনই শেষ হবে, যখন হামাস একসঙ্গে সব জিম্মিকে মুক্তি দেবে, নিরস্ত্র হবে এবং গাজার সামরিকীকরণ শেষ করতে সম্মত হবে। হামাসের সম্মতির খবর প্রকাশ হওয়ার পর এক ভিডিও বার্তায় নেতানিয়াহু বলেন, ‘হামাস তীব্র চাপে রয়েছে।’
এদিকে, সম্প্রতি সম্পূর্ণ গাজা উপত্যকায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা। গাজায় প্রায় ১০ লাখ বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে এই অভিযান শুরুর পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম।
গত বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েল পুরো গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়।
তবে দীর্ঘমেয়াদে দখলে রাখার পরিকল্পনা নেই জানিয়ে তিনি জানিয়েছেন, ‘আমরা গাজাকে নিজেদের দখলে রাখতে চাই না। আমরা সেখানে একটি নিরাপত্তা বলয় চাই।’
তবে এই পরিকল্পনা দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। তাছাড়া, ইসরায়েলের অবরোধের কারণে গাজায় খাদ্য সংকট ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে। অনাহারে একের পর এক মৃত্যু ঘটে চলেছে। এ পরিস্থিতি যুদ্ধবিরতির জন্য আন্তর্জাতিক চাপ জোরালো হচ্ছে।
আরও পড়ুন: চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধবিরতি আরও ৯০ দিন বাড়ালেন ট্রাম্প
গত জুলাই মাসে যুদ্ধবিরতির আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পর নতুন করে আলোচনা শুরু করতে নতুন এই প্রস্তাব এনেছে কাতার ও মিসর।
সিএনএন বলছে, মিসর ও কাতারের পক্ষ থেকে দেওয়া প্রস্তাবটি গত জুনে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের দেওয়া দুই পর্যায়ের কর্মপরিকল্পনার ভিত্তিতেই তৈরি হয়েছে। তার প্রস্তাবের ৯৮ শতাংশই সর্বশেষ প্রস্তাবে বজায় রাখা হয়েছে। ইসরায়েল ওই প্রস্তাবে আগেই সম্মতি দিয়েছিল। মধ্যস্থতাকারীরা হামাসকে প্রস্তাবটি গ্রহণ করতে চাপ দিয়েছেন।
হামাসের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সিএনএনকে জানিয়েছেন, প্রস্তাবে ১০ জন জীবিত জিম্মি এবং ১৮ জনের মরদেহ হস্তান্তরের কথা বলা হয়েছে। এর বিনিময়ে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ১৪০ জন ফিলিস্তিনি বন্দি এবং ১৫ বছরের বেশি সাজাপ্রাপ্ত ৬০ জন বন্দিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল। এ ছাড়া সব অপ্রাপ্তবয়স্ক ও নারী বন্দিকেও মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে বলে ওই কর্মকর্তা জানান।
আলোচনা সংশ্লিষ্ট এক কূটনীতিক বলেছেন, পরিস্থিতির উন্নয়ন বিবেচনায় উইটকফকে কায়রোয় আসার আমন্ত্রণ জানাবে মধ্যস্থতাকারীরা।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরায়েল গাজায় অভিযান শুরু করার পর থেকে এখন পর্যন্ত দুই দফা যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি-মুক্তির চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে।
১০৭ দিন আগে
শাসক পরিবর্তনে গাজার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে চায় ইসরায়েল: নেতানিয়াহু
ইসরায়েল পুরো গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়, তবে দীর্ঘমেয়াদে ধরে রাখতে চায় না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। হামাসকে সরিয়ে গাজার শাসনভার আরব বাহিনীর হাতে তুলে দিতে চান তিনি।
তবে এমন পদক্ষেপের বাস্তবায়ন ফিলিস্তিনিদের প্রাণহানি, বাস্তুচ্যুতি ও গাজায় এখন পর্যন্ত আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের জীবনের ঝুঁকি বাড়াবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব বলেন তিনি।
গাজা পুরোপুরি দখলে নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে নেতানিয়াহু বলেন, ‘নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত, হামাসকে সরানো এবং গাজার মানুষকে মুক্ত করে সমগ্র উপত্যকাকে বেসামরিক শাসনের আওতায় আনতেই আমরা গাজার নিয়ন্ত্রণ নিতে ইচ্ছুক।’
‘আমরা গাজাকে নিজেদের দখলে রাখতে চাই না। আমরা সেখানে একটি নিরাপত্তা বলয় চাই।’
নেতানিয়াহু জানান, তিনি গাজার শাসনভার আরব বাহিনীর হাতে তুলে দিতে চান যারা ইসরায়েলের জন্য হুমকি হবে না। গাজাবাসীকে এই ব্যবস্থা ভালো জীবন দেবে বলে মনে করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার বৈঠকে নেতানিয়াহু পুরো গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার অনুমোদন পাওয়ার আশা করছিলেন বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলো। তবে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার যেকোনো প্রস্তাবে পূর্ণ মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেতে হবে। তবে রবিবারের আগে তেল আবিববের পূর্ণ মন্ত্রিসভার বৈঠক হবার সম্ভাবনা কম।
আরও পড়ুন: স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত অস্ত্র ত্যাগ করবে না হামাস
এদিকে, গত ২২ মাসের ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজা কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এর মধ্যে নেতানিয়াহুর নতুন এই পরিকল্পনার খবর আসার পর গাজায় বাস্তুচ্যুতদের একটি শিবিরে থাকা মাইসা আল-হেইলা নামে এক ফিলিস্তিনি বলেন, ‘দখল করার মতো কিছুই আর বাকি নেই। গাজা বলে কিছু আর অবশিষ্ট নেই।’
ইসরায়েলি গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, গাজায় দুই ধাপের একটি অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে সেখানকার প্রায় ১০ লাখ বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। মধ্য গাজায় বেসামরিক অবকাঠামো স্থাপনের জন্য সাময়িক ব্যবস্থা হিসেবে এই পরিকল্পনা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা।
ইসরায়েলের চ্যানেল ১২–এর তথ্য অনুযায়ী, দীর্ঘমেয়াদি দখল নিয়ে আশঙ্কায় থাকা সামরিক শীর্ষ কর্মকর্তাদের সন্তুষ্ট করতে এই প্রস্তাবকে পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের বদলে সীমিত অভিযান হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আবার কিছু ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মতে, এই পরিকল্পনার উদ্দেশ্য হামাসকে আলোচনায় ফেরাতে চাপ সৃষ্টি করা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেন, ‘আমরা খোলা চোখে ভিয়েতনাম মডেলের দিকে এগোচ্ছি।’
এদিকে, ইসরায়েলের এই পরিকল্পনাকে যুদ্ধবিরতি আলোচনার বিরুদ্ধে ‘প্রকাশ্য অভ্যুত্থান’ বলে অভিহিত করেছে হামাস।
হামাস কর্মকর্তা ওসামা হামদান আল জাজিরাকে বলেছেন, গাজা শাসনের জন্য গঠিত যেকোনো বাহিনীকে তারা ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত ‘দখলদার বাহিনী’ হিসেবেই গণ্য করবে।
এই পরিকল্পনার বিষয়ে জর্ডানের এক সরকারি সূত্র জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনিরা যা চাইবে, আরব দেশগুলো তাতেই সম্মতি দেবে। তাছাড়া গাজার নিরাপত্তা ‘বৈধ ফিলিস্তিনি প্রতিষ্ঠানের’ দ্বারাই পরিচালিত হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
আরও পড়ুন: আমরা ধীরে ধীরে মরে যাচ্ছি: ক্ষুধার্ত গাজাবাসীর আর্তনাদ
নেতানিয়াহু এমন এক সময়ে এই পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন, যখন গাজা যুদ্ধ থামাতে এবং সেখানে আরও মানবিক সহায়তা প্রবেশের সুযোগ দিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে ইসরায়েলের ওপর চাপ বাড়ছে।
গাজার মানবিক পরিস্থিতি ইতোমধ্যে ভয়াবহ অবস্থায় পৌঁছেছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ ও বিভিন্ন ত্রাণ সংস্থা।
এমন পরিস্থিতিতে গাজা উপত্যকা নিয়ে নেতানিয়াহুর নতুন এই পরিকল্পনা কীভাবে বাস্তবায়িত হবে এবং এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক মহলে কি ধরনের প্রতিক্রিয়া তৈরি হবে, তা-ই এখন দেখার বিষয়।
১১৯ দিন আগে
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত অস্ত্র ত্যাগ করবে না হামাস
একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত অস্ত্র ত্যাগ না করার ঘোষণা দিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এ ঘোষণার মাধ্যমে গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে চলমান আলোচনায় ইসরায়েলের একটি প্রধান দাবি প্রত্যাখ্যান করল সংগঠনটি।
স্থানীয় সময় শনিবার (২ আগস্ট) এ ঘোষণা দেয় হামাস। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফের এক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় হামাস এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
এর আগে উইটকফ বলেছিলেন, হামাস অস্ত্র ত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। তবে তা সত্য নয় বলে দাবি হামাসের।
এদিকে, ঘোষণাটি এমন এক সময়ে এসেছে যখন গাজা যুদ্ধ বন্ধ ও ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির লক্ষ্যে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা স্থবির হয়ে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় চলমান ওই আলোচনায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির কথা ছিল।
বিবিসি বলেছে, হামাস অস্ত্রত্যাগ না করলে কোনো চুক্তিতে আসতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ইসরায়েল। অন্যদিকে হামাস বলছে, জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন, পুরোপুরি সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত সশস্ত্র প্রতিরোধের অধিকার ত্যাগ করা হবে না।
গত কয়েকদিনে বেশ কিছু আরব সরকারও হামাসকে নিরস্ত্র হয়ে গাজার নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দিতে আহ্বান জানিয়েছে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়ায়াল জামির সতর্ক করে বলেন, দ্রুত জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে আলোচনা ব্যর্থ হলে গাজায় যুদ্ধের কোনো বিরতি থাকবে না।
আরও পড়ুন: যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ‘ইতিবাচক’ সাড়া দেওয়ার দাবি হামাসের
এদিকে, ফ্রান্স ও কানাডাসহ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ আগামী সেপ্টেম্বরে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, ইসরায়েল সেপ্টেম্বরের মধ্যে যদি নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ না করে, তবে তারাও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে।
বর্তমানে গাজায় চলমান দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি নিয়ে ব্যাপক চাপের মুখে রয়েছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এ পর্যন্ত গাজায় অনাহারে অন্তত ১৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে ৯৩টি শিশু।
এমন পরিস্থিতিতে তেল আবিব সফরে রয়েছেন উইটকফ। হামাসের হাতে জিম্মিদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন তিনি।
উইটকফ বলেন, সংঘাতের অবসান ও সব জিম্মিকে বাড়ি ফিরিয়ে আনাকে কেন্দ্র করেই শান্তি প্রচেষ্টা হওয়া উচিত।
সফরের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার তিনি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেন এবং শুক্রবার গাজার দক্ষিণাঞ্চলে এক বহুল সমালোচিত ত্রাণ বিতরণকেন্দ্র পরিদর্শন করেন।
আরও পড়ুন: অগ্রগতি ছাড়াই শেষ ইসরায়েল-হামাসের যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের আলোচনা
জাতিসংঘের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মে মাসের থেকে এ পর্যন্ত খাবার নিতে গিয়ে অন্তত ১ হাজার ৩৭৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
নিহতদের অধিকাংশই ইসরায়েলি ও যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) বিতরণকেন্দ্রের আশপাশে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন বলে দাবি তাদের।
তবে ইসরায়েলে দাবি, এসব বিতরণকেন্দ্রের আশেপাশে বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে হামাস। ইসরায়েলি সেনারা ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক মানুষকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় না।
১২৩ দিন আগে
খাবার নিতে আসা শিশুদের ওপর ইসরায়েলের ‘অমার্জনীয়’ হামলা
চলমান যুদ্ধবিরতি আলোচনা ও রাফায় ফিলিস্তিনিদের বিতর্কিত পুনর্বাসন পরিকল্পনার মধ্যেই ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ৮২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এদিন শিশুদের খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়ে প্রাণ গেছে ৯টি শিশুর।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) ভোর থেকে চালানো হামলায় এসব হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে কাতার ভিত্তিক মার্কিন সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্রীয় গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকায় শিশুদের জন্য পুষ্টি সহায়তা সংগ্রহ করতে আসা ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো বিমান হামলায় ১৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৯টি শিশু ও ৪ জন নারী রয়েছেন। এ ঘটনায় আরও অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৯টিই শিশু।
জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল হামলাটিকে ‘অমার্জনীয়’ বলে অভিহিত করে বলেন, ‘সাহায্যের অপেক্ষায় থাকা পরিবারগুলোর ওপর এমন হামলা অত্যন্ত নির্মম ঘটনা। এটি গাজায় চলমান ভয়াবহতার বাস্তব প্রতিচ্ছবি।’
তিনি বলেন, ‘অপর্যাপ্ত সহায়তার কারণে গাজায় শিশুদের না খেয়ে থাকার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এবং বর্তমানে সেখানে দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি বাড়ছে। জরুরি সহায়তা ও সেবা পূর্ণমাত্রায় চালু না হলে অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের সংখ্যা বাড়তেই থাকবে।’
আরও পড়ুন: গাজায় সেনা রাখতে অনড় ইসরায়েল, ব্যর্থ হওয়ার শঙ্কায় যুদ্ধবিরতি
ইউনিসেফের এই নির্বাহী পরিচালক ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মেনে চলার আহ্বান জানান এবং এই ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান।
ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস এই হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছে, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর ‘গণহত্যা অভিযান’ চলছে। এক বিবৃতি গোষ্ঠীটি জানায়, ‘ইসরায়েল বেসামরিক নাগরিকদের ওপর পরিকল্পিতভাবে একের পর এক গণহত্যা চালাচ্ছে। তারা স্কুল, রাস্তা, উদ্বাস্তু ক্যাম্প ও চিকিৎসাকেন্দ্র—সব জায়গায় হামলা চালাচ্ছে, যা সারা বিশ্বের চোখের সামনেই সংঘটিত হওয়া জাতিগত নিধনের সুস্পষ্ট প্রমাণ।’
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১২০০ জন নিহত এবং ২৫১ জন জিম্মি হয়। এরপরই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েল।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এরপর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৭ হাজার ৭৬২ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ১ লাখ ৩৭ হাজার ৬৫৬ জন আহত হয়েছেন।
এদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইসরায়েলের সঙ্গে নতুন একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে। এর আওতায় খাদ্য ও জ্বালানিসহ জরুরি ত্রাণ সহায়তা গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
১৪৭ দিন আগে
গাজায় সেনা রাখতে অনড় ইসরায়েল, ব্যর্থ হওয়ার শঙ্কায় যুদ্ধবিরতি
হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি আলোচনায় অগ্রগতির মধ্যেই গাজা উপত্যকার দক্ষিণ করিডরে সৈন্য রাখার শর্ত দিয়েছে ইসরায়েল। এই প্রস্তাব যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌছানোর পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৮ জুলাই) মার্কিন, ইসরায়েলি ও কাতারি শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যকার যুদ্ধবিরতি আলোচনায় এই সেনা মোতায়েনের প্রসঙ্গটি উঠে আসে।
সম্প্রতি প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় ৬০ দিন যুদ্ধ স্থগিত রাখার কথা রয়েছে। এই সময়ে কিছু জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং গাজায় আরও ত্রাণ প্রবেশ করবে।
তবে এরই মধ্যে ইসরায়েল নতুন শর্ত জুড়ে দেওয়ায় এই চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আলোচনা-সংশ্লিষ্ট এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) জানিয়েছেন, ৬০ দিনের সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতির সময় ইসরায়েল তাদের সেনা মোতায়েন রাখবে। বিশেষত ইসরায়েলের কাছে ‘মোরাগ করিডর’ হিসেবে পরিচিত পূর্ব-পশ্চিম করিডরে সেনা মোতায়েনের কথা জানিয়েছেন তিনি।
মূলত, মোরাগ করিডরে উপস্থিতি বজায় রাখার মাধ্যমে কয়েক লাখ ফিলিস্তিনিকে গাজার দক্ষিণে সীমান্তঘেঁষা একটি সংকীর্ণ এলাকায় ঠেলে নিয়ে যেতে চায় ইসরায়েল, যেটিকে তারা ‘মানবিক শহর’ হিসেবে অভিহিত করেছে। তাছাড়া অনেকে মনে করছেন, এই পদক্ষেপ আসলে গাজার প্রায় ২০ লাখ মানুষকে জোরপূর্বক সরিয়ে নেওয়ার পূর্বাভাস, যেটি এই ভূখণ্ডে ইসরায়েলের দীর্ঘমেয়াদি নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনারই অংশ।
বুধবার (৯ জুলাই) রাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে হামাস জানিয়েছে, গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এখনও আলোচনার প্রধান অন্তরায়। তবে তারা মোরাগ করিডরের কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেনি। অবশ্য গাজা থেকে পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহার না করলে কোনো চুক্তি না করার কথা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে হামাস।
আরও পড়ুন: অগ্রগতি ছাড়াই শেষ ইসরায়েল-হামাসের যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের আলোচনা
এর আগেও ইসরায়েল ভিন্ন আরেকটি করিডরে সৈন্য রাখার শর্ত দেওয়ায় কয়েক মাস ধরে যুদ্ধবিরতির অগ্রগতি আটকে ছিল। তবে মোরাগ করিডরের ভূমিকা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয়।
চলতি সপ্তাহে ওয়াশিংটন সফরে যান নেতানিয়াহু। সেখানে যুদ্ধবিরতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। হামাস ও ইসরায়েল উভয় পক্ষকে গাজায় যুদ্ধ থামাতে চাপ দিয়ে আসছেন ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, মঙ্গলবার মার্কিন, ইসরায়েলি ও কাতারি শীর্ষ কর্মকর্তাদের আলোচনার অন্যতম প্রধান বিষয় ছিল গাজায় সেনা রাখা।
পরে বুধবার এই আলোচনা-সংশ্লিষ্ট এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা শান্তি চাই। আমরা জিম্মিদের ফিরে পেতে চাই। আর আমার মনে হচ্ছে, আমরা সেই লক্ষ্য থেকে খুব একটা দূরে নেই।’
গাজা ভাগ করা তিন করিডরের একটি মোরাগ
চলমান আগ্রাসনে গাজার বেশিরভাগ ভূমি দখলে নিয়েছে ইসরায়েল। এর মধ্যে রয়েছে তিনটি পূর্ব-পশ্চিম করিডর, যেগুলো গাজা উপত্যকাকে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে মোরাগ করিডরের দখল নেয় ইসরায়েল। ২০০৫ সালে গাজা ছেড়ে যাওয়ার সময়কার বসতি ‘মোরাগের’ নামে এটির নামকরণ করা হয়েছে।
গাজার দক্ষিণে রাফাহ শহর ও দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খান ইউনিসের মাঝখানে অবস্থিত এই করিডরটি প্রায় ১২ কিলোমিটার বা ৭ মাইল দীর্ঘ, যা ইসরায়েল সীমান্ত থেকে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত এবং প্রস্থে প্রায় ১ কিলোমিটার বা অর্ধ মাইল।
নেতানিয়াহু মোরাগ করিডরকে ‘দ্বিতীয় ফিলাডেলফি’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। ফিলাডেলফি গাজার সঙ্গে মিসরের সীমান্ত বরাবর আরেকটি করিডর।
আরও পড়ুন: যুদ্ধবিরতি আলোচনার মধ্যেও গাজায় ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
ইসরায়েল বহুদিন ধরেই দাবি করে আসছে, সীমান্তপারের অস্ত্র চোরাচালান ঠেকাতে ফিলাডেলফি করিডরে তাদের নিয়ন্ত্রণ থাকা দরকার। কিন্তু তাদের সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র গাজায় প্রবেশ করার বিষয়টি বরাবর অস্বীকার করেছে মিসর।
গত মার্চে প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি ভেঙে পড়ার পর ইসরায়েল ফের নেতজারিম করিডরের নিয়ন্ত্রণ নেয়। গাজার উত্তরের এক-তৃতীয়াংশ এলাকাকে বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে ওই করিডরটি। এই স্থান দিয়ে এর আগেও উত্তর গাজায় ফিলিস্তিনিদের ফিরে যাওয়া ঠেকিয়েছিল ইসরায়েল।
তবে নেতজারিম ও ফিলাডেলফি করিডরে ইসরায়েলি সেনা উপস্থিতির বিষয়টি বর্তমানে চলমান যুদ্ধবিরতি আলোচনায় কতটা প্রভাব ফেলছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার হয়নি।
রাফাহকে ‘মানবিক শহর’ বানানোর পরিকল্পনা
মোরাগ করিডরে ইসরায়েলি সেনারা অবস্থান নেওয়ার ফলে রাফাহ শহর গাজার বাকি অংশ থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
এদিকে, ইসরায়েলের আগ্রাসনে কয়েক হাজার মানুষের শহর রাফাহ এখন প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত। শহরটি এরই মধ্যে ইসরায়েলি উচ্ছেদ আদেশে জনশূন্য হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতির মধ্যেই রাফাহকে হামাসমুক্ত ‘নিরাপদ অঞ্চল’ বা ‘নিরস্ত্র এলাকা’ বানানোর দাবি তুলেছে ইসরায়েলে। সেখানে তারা লাখ লাখ ফিলিস্তিনিকে সরিয়ে নিতে চায়, যার নাম দিয়েছে মানবিক শহর।
গাজার বেশিরভাগ মানুষ যুদ্ধের সময় বারবার নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। ছোট ছোট এলাকায় ঠাসাঠাসি করে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ, দক্ষিণে সরানোর এই নতুন পরিকল্পনা মূলত জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতিরই আরেকটি ধাপ।
ইসরায়েলের নিরাপত্তা–সম্পর্কিত দুটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ গবেষক কোবি মাইকেল জানান, মোরাগ করিডরটিকে ব্যবহার করা হবে এক ধরনের ‘পরীক্ষা-নিরীক্ষার এলাকা’ হিসেবে। যাদের দক্ষিণে সরানো হবে, তাদের মধ্যে হামাস যোদ্ধারা আছে কি না—তা শনাক্তের জন্য এটি ব্যবহার করা হবে। এতে ইসরায়েলি বাহিনী আরও উত্তরে অভিযানে সুবিধা পাবে এবং ফিলিস্তিনি বেসামরিক মানুষদের সেখানে সংঘর্ষের মুখে পড়তে হবে না বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: খাবারের অভাবে হাড্ডি-চর্মসার হয়ে গেছে গাজার শিশুরা: চিকিৎসক
মাইকেল আরও বলেন, ‘এই পরিকল্পনার মাধ্যমে ইসরায়েল হামাসের ওপর চাপ আরও বাড়াতে পারবে এবং সম্ভব হলে উত্তর গাজায় হামাসকে পরাজিতও করতে পারবে, যেখানে গেরিলা যুদ্ধ এখনও ইসরায়েলি সেনাদের ভোগাচ্ছে।’
এর মাধ্যমে যুদ্ধ শেষের পথ তৈরি হতে পারে বলেও মনে করেন তিনি। যদিও ইসরায়েল বলছে, হামাস ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ থামবে না।
তবে ফিলিস্তিনিদের দক্ষিণে সরানোর এই পরিকল্পনা আসলে গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বের করে দেওয়ার পথ প্রশস্ত করছে বলে মনে করেছেন এই প্রস্তাবের সমালোচকরা। তাদের আশঙ্কা, এর মাধ্যমে গাজায় ইসরায়েলের দীর্ঘমেয়াদি দখল প্রতিষ্ঠার সুযোগ তৈরি হবে—যেটি নেতানিয়াহুর ডানপন্থী জোটের প্রধান এজেন্ডাগুলোর একটি।
অবশ্য এই স্থানান্তর জোরপূর্বক হবে না বলে দাবি করেছেন নেতিনিয়াহু। তবে যে এলাকায় যুদ্ধের ভয়াবহতা চরমে, সেখানে এত মানুষকে জড়ো করলে অবকাঠামোহীন দুর্বিষহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে বলে আশঙ্কা করছেন ফিলিস্তিনিরা ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো। তাছাড়া, এতে ফিলিস্তিনিরা গাজা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হবেন বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
ইসরায়েলের ফিলিস্তিন-বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ও সাবেক সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা মাইকেল মিলস্টেইন মোরাগ করিডর ব্যবহার করে দক্ষিণে ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরের পরিকল্পনাকে একটি ‘উদ্ভট কল্পনা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘এই ইসরায়েলি শর্তে বর্তমান আলোচনাও ভেঙে পড়তে পারে। কারণ এতে হামাস নিশ্চিত হবে যে, যুদ্ধবিরতি শেষ হলেও ইসরায়েল সেনা সরাবে না, যা হামাস কোনোভাবেই মেনে নেবে না।’
তিনি বলেন, ‘হামাসের জন্য এটি একেবারেই অসম্ভব শর্ত। যদি এটাই শর্ত হয়, তাহলে আমি হামাসের পক্ষ থেকে সম্মতি দেখতে পাচ্ছি না।’
১৪৭ দিন আগে
অগ্রগতি ছাড়াই শেষ ইসরায়েল-হামাসের যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের আলোচনা
কোনো অগ্রগতি ছাড়াই ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার সর্বশেষ পরোক্ষ যুদ্ধবিরতি আলোচনা শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন আলোচনা সংশ্লিষ্ট এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা। স্থানীয় সময় রবিবার (৬ জুলাই) কাতারের দোহায় দুটি আলাদা ভবনে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ওই কর্মকর্তা জানান, আলোচনা প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে চলে। কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে দুপক্ষের মধ্যে বার্তা ও ব্যাখ্যা বিনিময় হয়, তবে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, আলোচনার পরবর্তী ধাপ সোমবার (৭ জুলাই) আবার শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। দুপক্ষের মধ্যকার বাধাগুলো দূর করে সমঝোতার পথ খুঁজতে মধ্যস্থতাকারীরা উভয়পক্ষের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক করবেন।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে দুই ফিলিস্তিনি কর্মকর্তার বক্তব্য জানিয়েছে বিবিসি। এতে বলা হয়, ওই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন—হামাসের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য ইসরায়েলি প্রতিনিধি দল ‘যথেষ্ট ক্ষমতাসম্পন্ন’ ছিল না, কারণ তাদের কাছে ‘বাস্তবিক কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা’ ছিল না।
এমন এক সময় এ আলোচনা চলছে, যখন ওয়াশিংটনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
আরও পড়ুন: যুদ্ধবিরতি আলোচনার মধ্যেও গাজায় ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার বৈঠকটি যুদ্ধবিরতি ও গাজায় আটক অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে অগ্রগতির ক্ষেত্রে সহায়ক হবে বলে তিনি আশা করেন। তিনি আরও জানান, যুদ্ধবিরতি চুক্তি অর্জনের জন্য তিনি তার আলোচকদের ‘পরিষ্কার নির্দেশনা’ দিয়েছেন, যা ইসরায়েলের পক্ষে গ্রহণযোগ্য।
এদিকে, সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ‘ইতিবাচক মনোভাব’ দেখানোর দাবি করেছে হামাস। তবে এখনও দুপক্ষের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে, যা দূর না হলে চুক্তি সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে তারা।
যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য হামাসের অন্যতম প্রধান শর্ত হলো—যেকোনো সমঝোতার শেষে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের নিশ্চয়তা। এ অবস্থানে তারা এখনও অনড়।
তবে নেতানিয়াহুর সরকার এর আগেও এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।
এখনও ইসরায়েলি অবস্থানে উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না। যুক্তরাষ্ট্রে রওনা হওয়ার আগে নেতানিয়াহু বলেন, তিনি এখনো তিনটি লক্ষ্যেই অটল—‘সব জিম্মি, জীবিত ও মৃতদের মুক্তি ও প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করা; হামাসের সামরিক সক্ষমতা ধ্বংস করে গাজা থেকে উৎখাত করা; এবং গাজা যেন আর কখনোই ইসরায়েলের জন্য হুমকি না হয়, তা নিশ্চিত করা।’
কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতাকারীদের জন্য এই পরোক্ষ আলোচনা সহজ হবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। গত মার্চের আগের যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর থেকে এ ধরনের নানা উদ্যোগ একই জায়গায় এসে আটকে গেছে।
সেই সময় থেকে ইসরায়েল হামাসের বিরুদ্ধে তীব্র সামরিক অভিযান শুরু করেছে। পাশাপাশি গাজায় ত্রাণ প্রবেশের ওপর ১১ সপ্তাহের অবরোধও আরোপ করে, যা কয়েক সপ্তাহ আগে আংশিকভাবে শিথিল করা হয়।
ইসরায়েলি সরকার বলছে, এসব পদক্ষেপ হামাসকে আরও দুর্বল করা এবং তাদেরকে আলোচনায় বসতে ও জিম্মিদের মুক্তি দিতে বাধ্য করতেই নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ‘ইতিবাচক’ সাড়া দেওয়ার দাবি হামাসের
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় তারা হামাসের ১৩০টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে এবং বেশ কয়েকজন হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে।
তবে গাজায় বেসামরিক প্রাণহানির সংখ্যা দ্রুতই বাড়ছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইসরায়েলি হামলায় রবিবার অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন।
এখন প্রশ্ন হলো— কাতারে চলমান এই আলোচনা কি সত্যিই দুপক্ষের জন্য গ্রহণযোগ্য কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারবে? আর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কি নেতানিয়াহুকে রাজি করাতে পারবেন যে, এই যুদ্ধের ইতি টানতে হবে?
ইসরায়েলের অনেকেই মনে করছেন, অবশিষ্ট জিম্মিদের বাঁচাতে যুদ্ধ বন্ধের মূল্য দেওয়ার এখনই সময়।
শনিবার রাতেও তারা জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে রাস্তায় নেমে এসেছিল। এ সময় দ্রুত চুক্তি করে জিম্মিদের মুক্ত করার জন্য নেতানিয়াহুর প্রতি আহ্বান জানান তারা।
১৫০ দিন আগে
যুদ্ধবিরতি আলোচনার মধ্যেও গাজায় ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি আলোচনার মধ্যেও গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন চলমান রয়েছে। শুক্রবার (৬ জুলাই) গাজার স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে অন্তত ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
যুদ্ধবিরতি চুক্তি বিষয়ে আলোচনা করতে শিগগিরই হোয়াইট হাউসে যাচ্ছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এই পরিস্থিতিতে এসব হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।
গাজার শিফা হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ আবু সেলমিয়া জানান, শহরের দুটি বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ২০ জন নিহত ও ২৫ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, গাজার দক্ষিণাঞ্চলের মুওয়াসি এলাকায় বিমান হামলায় আরও ১৮ জন নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এসব নির্দিষ্ট হামলা নিয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় তারা গাজাজুড়ে মোট ১৩০টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে।
তাদের দাবি, হামাসের নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র, অস্ত্র ভাণ্ডার, রকেট লাঞ্চার ও অন্যান্য সামরিক স্থাপনা লক্ষ্যবস্তু করে এসব হামলা চালানো হয়েছে। এতে বেশ কয়েকজন হামাস যোদ্ধা নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ইসরায়েল।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত গাজায় ৫৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত করেছে, যাদের অর্ধেকই নারী ও শিশু বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুন: টেক্সাসে বন্যায় নিহত বেড়ে অর্ধশত, ২৭ কিশোরীসহ নিখোঁজ বহু
যুদ্ধবিরতি আলোচনায় অগ্রগতি
গাজায় ক্রমবর্ধমান হতাহতের মধ্যে যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা জোরালো হচ্ছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, রবিবার (৭ জুলাই) কাতারে প্রতিনিধিদল পাঠাবে তারা। সেখানে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি নিয়ে পরোক্ষ আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
তবে, এর মধ্যেই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, চুক্তিতে হামাসের পরিবর্তনের প্রস্তাবগুলো মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।
কাতারে আলোচনা শুরুর আগেই সোমবার ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন নেতানিয়াহু। এর আগেই কোনো চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে কি না, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এদিকে, হামাস জানিয়েছে, প্রাথমিক যুদ্ধবিরতির পর পুরোপুরি যুদ্ধ বন্ধ ও গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা সরে যাওয়ার নিশ্চয়তা ছাড়া চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে না।
আরও পড়ুন: সংঘাতের পর প্রথমবার প্রকাশ্যে খামেনি
এর আগের আলোচনাগুলো যুদ্ধের সমাপ্তি নিয়ে হামাস ও ইসরায়েলের মতবিরোধে ভেস্তে গেয়েছিল। নেতানিয়াহু যুদ্ধের প্রথম থেকেই বলে আসছে, ‘হামাসকে সম্পূর্ণ ধ্বংস না করে যুদ্ধ থামানো হবে না।’
১৫১ দিন আগে
যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ‘ইতিবাচক’ সাড়া দেওয়ার দাবি হামাসের
ইসরায়েলের সঙ্গে সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দেওয়ার কথা জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। তবে, যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়নে আরও আলোচনার প্রয়োজন বলে দাবি করেছে তারা। শুক্রবার (৪ জুলাই) এক বিবৃতিতে হামাস এ তথ্য জানিয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনায় সম্মতি দিয়েছে কি না, হামাসের সর্বশেষ বিবৃতি থেকে তা স্পষ্ট নয়। যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিশ্চিত করতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ট্রাম্প। এ বিষয়ে আলোচনা করতে আগামী সপ্তাহে হোয়াইট হাউসে যাচ্ছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
তবে, হামাস বেশ কিছুদিন ধরে বলে আসছে, ২১ মাস ধরে চলা গাজা যুদ্ধ পুরোপুরি বন্ধের নিশ্চয়তা ছাড়া সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে যেতে রাজি নয় তারা।
আরও পড়ুন: গাজার জনাকীর্ণ ক্যাফেতে ইসরায়েলের ৫০০ পাউন্ডের বোমা হামলা
যুদ্ধ বন্ধে চেষ্টা চলছে
গত মঙ্গলবার (১ জুলাই) এক বিবৃতিতে ট্রাম্প দাবি করেন, ‘ইসরায়েল ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি দিয়েছে। এই সময়ের মধ্যে যুদ্ধ পুরোপুরি বন্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্র সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাবে।’
তিনি হামাসকে দ্রুত সমঝোতায় আসার আহ্বান জানান। অন্যথায়, পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হবে বলে হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের। এরপর, গতকাল (শুক্রবার) রাতে হামাস এক বিবৃতি দেয়, তারা মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি আলোচনায় ‘ইতিবাচক সাড়া’ দিয়েছে।
গোষ্ঠিটি আরও জানায়, যুদ্ধবিরতির বাস্তবায়নের কাঠামো নিয়ে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত তারা। তবে, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়নি।
এ বিষয়ে হামাসের এক কর্মকর্তা বলেছেন, আলোচনা সফল হলে আগামী সপ্তাহের মধ্যেই যুদ্ধবিরতি শুরু হতে পারে। তবে কতজন ফিলিস্তিনি বন্দির বিনিময়ে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্ত করা হবে এবং যুদ্ধবিরতির সময় গাজায় কী পরিমাণ ত্রাণ প্রবেশ করবে, তা ঠিক করতে আলোচনা দরকার।
তিনি বলেন, হামাস জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে গাজায় ত্রাণের পরিমাণ বাড়ানোর দাবি করেছে।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, যুদ্ধবিরতি শুরু হলে একই সঙ্গে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের ব্যাপারে আলোচনাও শুরু হবে। এ জন্য যুদ্ধবিরতির সময়সীমার ‘বেশি সময়’ প্রয়োজন হলেও ট্রাম্প তা বাড়ানোর নিশ্চয়তা দিয়েছেন।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এর আগের আলোচনাগুলো যুদ্ধের সমাপ্তি নিয়ে হামাস ও ইসরায়েলের মতবিরোধে ভেস্তে গেয়েছিল। নেতানিয়াহু যুদ্ধের প্রথম থেকেই বলে আসছে, ‘হামাসকে সম্পূর্ণ ধ্বংস না করে যুদ্ধ থামানো হবে না।’
আরও পড়ুন: গাজায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে রাজি ইসরায়েল: দাবি ট্রাম্পের
এদিকে, বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) রাতে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বহনকারী এয়ারফোর্স ওয়ান বিমানে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে হামাস ইতিবাচক মনোভাব’ দেখিয়েছে, এটি খুবই ভালো বিষয়। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব স্পষ্ট হয়ে যাবে।
তিনি জানান, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে একটি চুক্তি হতে পারে।
১৮ ফিলিস্তিনি নিহত
যুদ্ধবিরতি আলোচনার মধ্যেও ইসরায়েলি আগ্রাসন থামেনি। দোহাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার তথ্যমতে, শুক্রবার মধ্যরাত থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
এর আগে, শুক্রবার সকালে ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজায় অন্তত ১৫ ফিলিস্তিনি নিহত হন। এদিকে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘ক্ষুধাস্ত্র’ ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
ত্রাণকেন্দ্রগুলোতে অপেক্ষারত ক্ষুধার্ত ও যুদ্ধপীড়িত বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। স্থানীয় হাসপাতালগুলোর বরাতে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) জানিয়েছে, শুক্রবার সারাদিনে ত্রাণ নিতে গিয়ে অন্তত ২০ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।
জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে, গত এক মাসে গাজায় ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে অন্তত ৬১৩ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। তাদের বেশিরভাগ নিহত হয়েছেন ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোর আশেপাশে।
আন্তর্জাতিক চাপের মুখে গত ২৬ মে থেকে ইসরায়েলের সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচটি) নামে নতুন ত্রাণ বিতরণ কাঠামো চালু হয়েছে।
আরও পড়ুন: নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচন: মুসলমানদের মধ্যে আশা জাগাচ্ছেন মামদানি
বিতর্কিত এই ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের সাবেক এক নিরাপত্তা কর্মী বিবিসিকে বলেছেন, ‘আমি দেখেছি যে আমার সহকর্মীরা একাধিকবার নিরস্ত্র ও ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালিয়েছে। এমনকি মেশিনগানের ব্যবহারও করতে দেখেছি। অথচ, তারা কোনো ধরনের হুমকি ছিলেন না।’
তিনি জানান, ‘একবার একটি নিরাপত্তা টাওয়ার থেকে একজন নিরাপত্তাকর্মী কয়েকজন নারী, শিশু ও বৃদ্ধ মানুষের ওপর মেশিনগান দিয়ে গুলি চালায়। যার কারণ তারা কেন্দ্র থেকে ফেরার সময় ধীরগতিতে হাঁটছিলেন!’
১৫২ দিন আগে
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৯৪ ফিলিস্তিনি নিহত
গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলি ও বিমান হামলায় অন্তত ৯৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে অন্তত ৪৫ জন জরুরি মানবিক সহায়তা পাওয়ার আশায় অপেক্ষমাণ ছিলেন।
নিহতের এই সংখ্যা বুধবার রাত ও বৃহস্পতিবার মিলিয়ে গণনা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
রাতের বেলা দক্ষিণ গাজায় একটি তাঁবু শিবিরে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুতদের ওপর হামলা চালানো হলে বহু পরিবারের সদস্য নিহত হয়। এতে একটি পরিবারেরই ১৩ জন নিহত হওয়ার খবর জানা গেছে, যাদের মধ্যে ১২ বছরের কম বয়সী ছয় শিশুও ছিল।
ওই ঘটনার পর সরেজমিনে নিহত সন্তান ও নাতি-নাতনিদের লাশের পাশে বসে বিলাপ করতে দেখা যায় ইন্তেসার আবু আসসি নামের এক নারীকে। বিলাপ করতে করতে তিনি বলছিলেন, ‘আমার সন্তান, আমার সন্তান... আমার প্রিয়জন।’
খান ইউনিস শহরের নাসের হাসপাতালের মর্গের মেঝেতে চাদরে মোড়ানো এক শিশুকন্যার কপালে চুমু খেতে দেখা যায় আরেক নারীকে।
গাজা মধ্যাঞ্চলে আল-আকসা শহিদ হাসপাতালের মর্গে ছয় বছর বয়সী বোনের লাশের পাশে বসে ছিল তার ছোট ভাই। স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধ্যায় একটি খাবারের দোকানের পাশে হামলায় তার পরিবারের আরও একজনসহ মোট আটজন নিহত হন।
অন্যদিকে, গাজা সিটিতে বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয় দেওয়া একটি স্কুলে চালানো আরেকটি হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হন।
এই সব হামলার পাশাপাশি প্রায় প্রতিদিনই সহায়তা নিতে গিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে আরও বহু ফিলিস্তিনি নিহত হচ্ছেন।
গাজা মানবাধিকার সংস্থা (জিএইচএফ) পরিচালিত খাদ্য বিতরণকেন্দ্রে যাওয়ার সময় পথে গুলিতে পাঁচজন নিহত হন।
বার্তা অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) সাংবাদিকদের তথ্য অনুসারে, এই সংস্থাটি (জিএইচএফ) একটি নতুন ও গোপনীয় মার্কিন সংস্থা, যারা ইসরায়েলের সমর্থনে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য সরবরাহ করছে।
আরও পড়ুন: গাজায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে রাজি ইসরায়েল: দাবি ট্রাম্পের
এ ছাড়াও জাতিসংঘের ত্রাণ বহনকারী ট্রাকের জন্য অপেক্ষারত অবস্থায় গাজাজুড়ে বিভিন্ন স্থানে আরও ৪০ জন নিহত হন বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্মকর্তারা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে এপি জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনারা প্রায়ই ত্রাণ নিতে জড়ো হওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। সেনা নিয়ন্ত্রিত এলাকায় জাতিসংঘের ট্রাক আসার অপেক্ষায় থাকা লোকদের দিকেও গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
গত মে মাসে বিতরণকেন্দ্র খোলার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং শত শত মানুষ আহত হয়েছেন।
বিতরণকেন্দ্রগুলোর দিকে যাওয়ার পথে মোতায়েন থাকা ইসরায়েলি সেনাদের দাবি, তারা কেবল ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য সতর্কতামূলক গুলি ছোড়ে অথবা যারা তাদের খুব কাছাকাছি আসে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এসব কেন্দ্রের নিরাপত্তায় সশস্ত্র মার্কিন ঠিকাদাররাও নিয়োজিত রয়েছে জানিয়েছে তারা।
ক্ষুধাকে ‘যুদ্ধের অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করছে ইসরায়েল!
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে বলেছে, গাজার সাধারণ নাগরিকদের অনাহারে রাখাকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে ইসরায়েল, যা চলমান গণহত্যারই অংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জিএইচএফের বিতরণব্যবস্থা আন্তর্জাতিক উদ্বেগ কমানোর চেষ্টা মাত্র। কারণ নিজেদের নিয়ন্ত্রিত ওই ত্রাণ বিতরণব্যবস্থা ছাড়া জাতিসংঘের পাঠানো ত্রাণ খুবই সীমিত পরিমাণে গাজায় ঢুকতে দিচ্ছে ইসরায়েল।
বিবৃতি অনুসারে, ‘প্রাণঘাতী, অমানবিক ও ব্যর্থ একটি সামরিক সহায়তা কাঠামো বজায় রেখে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ খাদ্যান্বেষণে থাকা নিঃস্ব ফিলিস্তিনিদের মৃত্যু-ফাঁদে ফেলছে।’
অবশ্য অ্যামনেস্টির প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এই সংস্থাটি হামাসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাদের সব ধরনের অপপ্রচার অনুসরণ করছে।
ইসরায়েল চায়, জাতিসংঘের বিদ্যমান মানবিক সহায়তা নেটওয়ার্কের পরিবর্তে জিএইচএফ-ই হোক ফিলিস্তিনিদের জন্য প্রধান ত্রাণ বিতরণকারী সংস্থা।
তাদের দাবি, জাতিসংঘের সহায়তার বড় অংশ হামাস ছিনিয়ে নেয়, যদিও ইসরায়েলের এই অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে জাতিসংঘ ও বিভিন্ন সহায়তা সংস্থা।
জিএইচএফ-কে প্রত্যাখ্যান করে সংস্থাগুলো বলছে, এই সংস্থাটি ফিলিস্তিনিদের প্রয়োজনীয় সহায়তা সরবরাহে ব্যর্থ। এটি ফিলিস্তিনিদের বিপন্ন করে ইসরায়েলের লক্ষ্য বাস্তবায়নের হাতিয়ার মাত্র।
আরও পড়ুন: ত্রাণ সহায়তা নিতে গিয়ে হামলার শিকার হচ্ছে গাজাবাসী
চলতি বছর ইসরায়েল আড়াই মাসের বেশি সময় গাজায় খাদ্যসহ সব ধরনের ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ রেখেছিল। আগে থেকেই ভুগতে থাকা গাজাবাসীকে আরও বেশি অনাহারের দিকে ঠেলে দিয়েছে এই কর্মকাণ্ড। ইসরায়েলের দাবি, এতে হামাসকে চাপ দিয়ে বন্দিমুক্তির আলোচনায় ছাড় দিতে বাধ্য করা সহজ হবে।
মার্চে অবরোধ কিছুটা শিথিল করে ইসরায়েল। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও গাজায় ত্রাণ সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকা প্রতিরক্ষা সংস্থা সিওজিএটি বুধবার জানায়, ১৯ মে থেকে এখন পর্যন্ত ৩ হাজারের বেশি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেছে।
এই হিসাব অনুযায়ী, দিনে গড়ে মাত্র ২৮টি ট্রাক সেখানে পাঠানো হয়েছে, যেখানে সহায়তাকর্মীরা দিনে কয়েকশ’ ট্রাক প্রয়োজন বলে দাবি করে আসছেন।
তবে নিজেদের কার্যক্রমের সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করে জিএইচএফ বলেছে, তারা ৫ কোটি ২০ লাখের বেশি খাবারের সমতুল্য সহায়তা দিয়েছে। প্রতিটি খাবারের প্যাকেটে ডাল, চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস থাকে, যা একজনের ৫০ বেলার খাবারের সমান।
তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এসব কেন্দ্রে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। লোকজন হুড়োহুড়ি করে খাবারের বক্স ছিনিয়ে নেয়। কেউ একাধিক নেয়, আবার অনেককেই ফিরতে হয় খালি হাতে। পরে এসব বক্স বাজারেও মেলে। সেখানে থেকে কিনতে গেলে হাঁকা হয় আকাশছোঁয়া দাম।
১৫৩ দিন আগে