মাদক
কুষ্টিয়ায় ‘টর্চার সেলের’ সন্ধান, অস্ত্র-মাদকসহ ৫ ‘সন্ত্রাসী’ আটক
কুষ্টিয়ার একটি বাড়ি থেকে পাঁচ ব্যক্তিকে আটক করেছে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর একটি দল। তারা সবাই সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী চক্রের সদস্য বলে দাবি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) দিবাগত গভীর রাতে সদর উপজেলার আইলচারা বাজার-সংলগ্ন একটি তিনতলা বাড়িতে অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি, বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও ফেনসিডিল জব্দ করে দলটি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, আটকরা দীর্ঘদিন ধরে ওই ভবনটি অপরাধের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলেন। তারা বাড়িটিকে একটি টর্চার সেল বা নির্যাতনকেন্দ্রে রূপান্তর করেছিল। সেখানে অপহরণ করে ধরে আনা ব্যক্তিদের ওপর নির্যাতন চালানো হতো। এরপর অপহৃতদের পরিবার থেকে আদায় করা হতো মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ।
আটকরা হলেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বাগডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা ইমরান খান মানিক, বড় আইলচারা এলাকার বাসিন্দা রনি, মিরপুর থানার পোড়াদহ ইউনিয়নের দক্ষিণ কাটদহ এলাকার বাসিন্দা সজীব এবং একই ইউনিয়নের চিথলিয়া গ্রামের রাব্বি ও শাকিল।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে যৌথ বাহিনীর অভিযানে ‘সন্ত্রাসী’ তূর্য গ্রেপ্তার
স্থানীয়দের দাবি, মানিকের নেতৃত্বে এই চক্রটি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ভয় ও ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে রেখেছিল। চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা ও সন্ত্রাস ছিল তাদের নিত্যদিনের কাজ।
তবে যৌথ অভিযানের খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে এবং অনেকে বাইরে এসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও অপহরণ সংক্রান্ত ধারায় একাধিক মামলার প্রস্তুতি চলছে। এই চক্রের অন্যান্য সদস্যদেরও শনাক্ত করে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে।’
১৬৩ দিন আগে
ফেনীতে ছাত্রদল নেতার ঘর থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ও মাদক উদ্ধার
ফেনীর দাগনভূঞায় মো. আশরাফুল হাসান জাবেদ নামের এক ছাত্রদল নেতার বাড়ি থেকে দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্রসহ ককটেল তৈরির ও মাদক সেবনের সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার (২২ মার্চ) দুপুরে বাড়ির নিজ শয়ন কক্ষ থেকে এসব সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা এই অভিযান চালান।
বিষয়টি যৌথবাহিনীর পক্ষ থেকে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে।
মো. আশরাফুল হাসান জাবেদ ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক।
যৌথ বাহিনী ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর জানায়, শনিবার সকালে ওই যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। এ সময় তার শয়নকক্ষের খাটের পাটাতনের নিচ থেকে এসব সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে আগুন, পানির উৎসের অভাবে নিয়ন্ত্রণে জটিলতা
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ফেনীর উপপরিচালক সৌমেন মণ্ডল বলেন, ‘ওই ঘরে মাদক রয়েছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর সহায়তায় অভিযান চালাই। এ সময় আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি এবং মাদক ও ককটেল তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এর আগেই বিষয়টি টের ঘর ছেড়ে পেয়ে পালিয়ে যায় অপকর্মের হোতা মো. আশরাফুল হাসান জাবেদ। পরে তাকে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।’
২৫৭ দিন আগে
জামালপুরে ২৯ লাখ টাকার মাদকসহ তিনজন আটক
জামালপুরে বিপুল পরিমাণ মাদকসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) পৌরসভাধীন মনিরাজপুর ছোটগড় এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
এ সময় তাদের কাছ থেকে মাদক পরিবহনের ব্যবহৃত তিনটি গাড়ি, ১৪৩৪ ফেন্সিডিল ও ২৪ বোতল মদ জব্দ করা হয়। যার আনুমানিক মূল্য ২৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
আটকরা হলেন—জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলার চর বাগবাড়ি গ্রামের মালেক খোকন (৪৭), একই উপজেলার ভাবকী গ্রামের মো. আজিজুর রহমান বাবু (২৪) ও পার্শ্ববর্তী পাঠনিপাড়া গ্রামের মো. হাফিজুর রহমান (৪০)।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে ৫৬ কেজি গাঁজাসহ ২ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার
জামালপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আনোয়ার বলেন, ‘মনিরাজপুর ছোটগড় এলাকার হাফিজুর রহমান আকন্দের জমিতে একটি ড্রাম ট্রাক থেকে অন্য ২টি গাড়িতে স্থানান্তরের সময় ৯টি সাদা প্ল্যাস্টিকের বস্তায় ১৪৩৪ ভারতীয় ফেন্সিডিল পাওয়া যায়, যার আনুমানিক মূল্য ২৮ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। এছাড়া একটি চটের বস্তার ভেতর থেকে ২৪ বোতল আইকনিক ভারতীয় মদ পাওয়া গিয়েছে, যার আনুমানিক মূল্য ৭২ হাজার টাকা। এ সময় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সাল মো. আতিক বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে জামালপুর সদর থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।’
২৫৯ দিন আগে
মাদকের বিরুদ্ধে সংবাদ: সাংবাদিককে ‘নিমক-হারাম’ বললেন ইউএনও
চুয়াডাঙ্গায় জীবননগরে মাদক নিয়ে সংবাদ প্রচার করার জেরে এক সাংবাদিককে ডেকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আল-আমীনের বিরুদ্ধে। এক পর্যায়ে তিনি ওই সাংবাদিককে ‘নিমক-হারাম’ বলেও অভিহিত করেন। বুধবার (১২ মার্চ) এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়।
এর আগে মঙ্গলবার (১১ মার্চ) ‘উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) বাসভবনের পিছনে মাদকের আখড়া’ শিরোনামে স্থানীয় দৈনিক সময়ের সমীকরণ পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।
ওই সংবাদের জেরেই পত্রিকাটির জীবননগর প্রতিনিধি মিঠুন মাহমুদকে ডেকে অসৌজন্যমূলক আচরণ করার অভিযোগ উঠেছে ইউএনও আল-আমীনের বিরুদ্ধে।
এরপর বুধবার ইউএনও অফিসে ডেকে ওই সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। ওই সময়ের কথোপকথনের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। অডিওতে সাংবাদিকের সঙ্গে রূঢ় ভাষায় কথা বলতে শোনা যায় ইউএনওকে।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক মাহমুদুর রহমানকে হত্যাচেষ্টা মামলায় ইনু কারাগারে
অডিওতে শোনা যায়, মিঠুন মাহমুদ হলুদ সাংবাদিকতা করেন বলে অভিযোগ করেন ইউএনও। যেদিন এই সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, একই দিনে তিনি ওই পত্রিকায় একটি বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন ইউএনও। তা সত্ত্বেও ওই পত্রিকায় তার বিরুদ্ধে সংবাদ করায় তিনি ‘নিমক-হারাম’ বলে অভিহিত করেন সাংবাদিককে। অডিওতে আরও শোনা যায়, মাদক সম্পর্কিত যে সংবাদ প্রচারিত হয়েছে, তাতে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেন ইউএনও। অন্যায়ভাবে তার বিরুদ্ধে সংবাদ করা হয়েছে উল্লেখ করে সাংবাদিককে অফিস থেকে বের হয়ে যেতে বলেন তিনি। অডিওতে মিঠুনকে কোনো কথা বলার সুযোগ না-দিয়েই একটানা ইউএনওকে কথা বলতে শোনা গেছে।
এ বিষয়ে মিঠুন মাহমুদ বলেন, ‘গত মঙ্গলবার সময়ের সমীকরণ পত্রিকার প্রথম পেজে জীবননগর আম বাজারে মাদক বিক্রি হচ্ছে, এমন একটি বিষয়ে নিউজ হয়েছিল। সেই নিউজকে কেন্দ্র করে ইউএনও সাহেব আমাকে ফোন করে ডাকেন।’
আরও পড়ুন: সাংবাদিকদের জন্য একটি নিরাপদ ও স্বাধীন পরিবেশ জরুরি: কাদের গনি চৌধুরী
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের রুমে গেলেই ইউএনও তার সঙ্গে খারাপ আচরণ শুরু করেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। মিঠুন মাহমুদ বলেন, ‘তার বাজে ও অশালীন আচরণের মাত্রা আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে তিনি আমাকে অফিস থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।’
মিঠুন মাহমুদ আরও বলেন, ‘আমি ইউএনও মহোদয়কে বলেছিলাম, এই সংবাদ আমি করিনি। তবুও তিনি আমাকেই দোষারোপ করেন।’
সংবাদটির বিষয়ে কিছুই জানেন না উল্লেখ করে মিঠুন মাহমুদ বলেন, তিনি কেবল সমীকরণ পত্রিকার উপজেলার সহকারী ব্যুরো প্রধান হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন।
মিঠুন মাহমুদ অভিযোগ করেন, এ বিষয়ে ইউএনও মহোদয় তার পত্রিকার প্রধান সম্পাদক বা সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধান করতে পারতেন। কিন্তু তা না করে, উল্টো তাকে লাঞ্ছিত করেছেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আল-আমীনের মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে তিনি কল রিসিভ না করে কেটে দেন। পরবর্তীতে তিনি কলও করেননি। যার কারণে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
তবে এই বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘তিনি ঘটনাটি শুনেছেন। তবে বিস্তারিত জানেন না। তিনি রেকর্ডটি শুনে ইউএনওর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবেন বলে জানান।
২৬৭ দিন আগে
টাঙ্গাইলে মাদক মামলায় যুবকের ৫ বছর কারাদণ্ড
টাঙ্গাইলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় কবির হোসেন নামে এক যুবককে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানাসহ অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (৫ মার্চ) দুপুরে টাঙ্গাইলের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক আতিকুল ইসলাম আসামির উপস্থিতিতেই এই আদেশ দেন।
পরে আসামিকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
দণ্ডপ্রাপ্ত কবির হোসেন (২০) টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার ধুবলিয়া গ্রামের তোমছের আলীর ছেলে।
যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের এপিপি এম এ মালেক আদনান বলেন, ‘২০২২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ভূঞাপুরের ধুবলিয়া গ্রামে জনৈক লাল মিয়ার বাড়ির পাশে পাকা রাস্তার ওপর হেরোইন বিক্রির সময় কবিরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: ফারুক হত্যাকাণ্ড: ২ জনের যাবজ্জীবন, খান পরিবারের সবাই খালাস
এ সময় তার দেহ তল্লাশি করে ১০ প্যাকেট হেরোইন উদ্ধার করা হয়। পরে টাঙ্গাইল ডিবি (উত্তর) পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান বাদী হয়ে ভূঞাপুর থানায় মামলা করেন।
বিচার শেষে আদালত তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড, পাঁচ হাজার টাকা জরিমানাসহ অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন।’
২৭৪ দিন আগে
‘মাদক নিয়ে বিবাদে’ বগুড়ায় বন্ধুর হাতে যুবক নিহত
বগুড়ার ফুলবাড়িতে বন্ধুর হতে বন্ধু খুন হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মধ্যপাড়ায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহত হৃদয় আকন্দ (২১) ওই এলাকার বাবু মিয়া আকন্দের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, আজ (মঙ্গলবার) সকালে হৃদয়সহ কয়েক বন্ধু মিলে আড্ডা দিচ্ছিলেন। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হলে হৃদয়কে ছুরিকাঘাত করা হয়। গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
আরও পড়ুন: নরসিংদীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে নিহত ৩
বগুড়া ফুলবাড়ী ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমাস আলী সরকার বলেন, ধারণা করছি, মাদক-সংক্রান্ত ঘটনার জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
নিহত হৃদয় চুরি, ছিনতাই ও মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
৩১০ দিন আগে
অবৈধ মাদকের হটস্পট কারওয়ান বাজার রেলওয়ে
মাদক ও ইয়াবার হটস্পট হিসেবে পরিচিত রাজধানীর কারওয়ান বাজারের রেলওয়ে এলাকা। এখানে ইয়াবা ও মাদক ব্যবসায়ীরা রাস্তায় অপরাধীদের দৃষ্টি আকর্ষণে নানা কৌশল প্রয়োগ করে চালাচ্ছেন মাদকের ব্যবসা। এর একটি হলো— ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণে তারা বলে থাকেন 'তামাক-বাবা' লাগবে কি?
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) শিথিল মনোভাবের কারণে এলাকাটিতে প্রকাশ্যে ও অবাধে চলছে অবৈধ মাদকদ্রব্য বিক্রি।
সম্প্রতি কারওয়ান বাজার রেলওয়ে এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, মাদক বিক্রির জন্য ক্রেতাদের অপেক্ষা করছেন মাদককারবারীরা। আরও ক্রেতারাও প্রকাশ্যে তাদের কাছে কিনছেন মাদক। যেন জমে উঠা একটি হাট-বাজার!
পঞ্চাশোর্ধ্ব এক মাদক ব্যবসায়ী ঝর্ণা পরিচয় দিয়ে আমাদের সংবাদদাতার কাছে এসে জানতে চান, 'তামাক-বাবা' লাগবে কিনা।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে মাদকসহ ছাত্রনেতা আটক, শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ
ইউএনবির এই সংবাদদাতা কী বোঝাতে চেয়েছেন— তা বুঝতে পারছেন না বলে জবাব দিলে ঝর্ণা ব্যাখ্যা করেন, তামাক মানে গাঁজা। যা গাঁজা বা হেম নামেও পরিচিত এবং বাবা অর্থ নিষিদ্ধ ইয়াবা বড়ি।
ইউএনবির এই প্রতিবেদক দাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটি ছোট প্যাকেট গাঁজা ১০০ টাকা এবং একটি ইয়াবা বড়ির দাম ৩০০ টাকা।
এরই মধ্যে আনুমানিক ৬০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি ঘটনাস্থলে এসে আমাদের প্রতিবেদকের কাছে জানতে চান, তার হেরোইন লাগবে কিনা? যার দাম পড়বে ৩০০ টাকা পড়বে বলে জানান তিনি।
তাদের কাছ থেকে এলাকায় অবৈধ মাদক ব্যবসার বিষয়ে কিছু তথ্য পেতে ইউএনবির এই প্রতিবেদক ওই নারীর কাছ থেকে এক পুরিয়া গাঁজা কেনেন।
ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে ঝর্ণা বলেন, এই অঞ্চলে বেশ কিছু নারী ও যুবক অবৈধ মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত এবং তাদের নিয়ন্ত্রণকারী বেশ কয়েকজন লাইনম্যানও আছেন।
সেখানে পুলিশ, র্যাব বা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকজন নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা ততটা সক্রিয় নয়। কিন্তু যখন তারা তা করে, বেশিরভাগ সময় তারা কোনো না কোনোভাবে আগাম সতর্কতা পায়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, বছরের পর বছর মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অসংখ্য অভিযান সত্ত্বেও ঢাকা মহানগরীর কারওয়ান বাজার রেলওয়ে এলাকা অবৈধ মাদক বিক্রির প্রধান হটস্পট হিসেবেই রয়ে গেছে। মাদক ব্যবসায়ীরা দায়মুক্তি নিয়ে কাজ করায় তারা ক্রমেই হতাশ হয়ে পড়ছেন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, রেললাইনের ধারে, বিশেষ করে পাইকারি মাছের বাজার এলাকায় শিশু ও নারী মাদক ব্যবসায়ীরা গোপনে অবৈধ মাদক বিক্রি করেন।
এছাড়া তেজগাঁও রেলক্রসিং পর্যন্ত রেললাইনের বিভিন্ন অংশ একাধিক অপরাধী চক্র নিয়ন্ত্রণ করছে বলে জানা গেছে। এমন অভিযোগও রয়েছে যে এই গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে কয়েকটি স্থানীয় ডিএনসি কর্মকর্তাসহ কিছু আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের সুরক্ষা বা মৌন সম্মতি পান, যা এই অবৈধ ব্যবসাকে বন্ধ করার প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করে তুলেছে।
সমস্যাটি নিয়ন্ত্রণে বড় আকারের অভিযানসহ নানা প্রচেষ্টা সত্ত্বেও এলাকায় মাদক ব্যবসা অব্যাহত রয়েছে।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৮ সালের মে মাসে এলাকায় মাদক ব্যবসা গুঁড়িয়ে দিতে প্রায় এক হাজার সদস্যের একটি বড় দল নিয়ে অভিযান চালায় পুলিশ। তবে, গোপনীয়তার অভাবের জন্য এই অভিযানটি ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েঠিল। কারণ কর্তৃপক্ষ প্রকাশ্যে আগাম অভিযানের ঘোষণা দেওয়ায় মাদক ব্যবসায়ীদের পালানোর জন্য পর্যাপ্ত সময় পেয়েছিল।
যদিও ৪৭ জনকে আটক করা হয়েছে, তবে অনেকে দিনমজুর বা রাস্তার বিক্রেতা বলে জানা গেছে। যাদের অবৈধ মাদক ব্যবসার সঙ্গে কোন স্পষ্ট সংযোগ নেই। এতে করে নিরপরাধ ব্যক্তিদের অকারণে ক্ষতিগ্রস্ত করার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
পরে ২০২৪ সালের শুরুর দিকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) আরেকটি অভিযান চালালেও তাতেও সীমিত ফল পাওয়া যায়। আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তারা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ইয়াবা এবং গাঁজা জব্দ করেছে। তবে সমালোচকদের দাবি, এই অভিযানগুলোতে মাদক ব্যবসায়ীদের নেটওয়ার্কগুলো ভেঙে ফেলার জন্য ধারাবাহিক পদক্ষেপ বা দীর্ঘমেয়াদি কৌশলের ঘাটতি রয়েছে। মাঝেমধ্যে শীর্ষ ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার এবং জব্দ হওয়া সত্ত্বেও এই অঞ্চলে মাদক ব্যবসা ফুলেফেঁপে উঠছে।
চলমান মাদক ব্যবসার সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা। প্রকাশ্যে মাদক বিক্রয় এই অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তাহীনতায় বাড়াচ্ছে। এর ফলে কিছু ব্যবসা তাড়াতাড়ি বন্ধ হয়ে যায় বা স্থানান্তরিত হয়। আশেপাশের পিতামাতারাও শিশু এবং তরুণদের উপর প্রভাব সম্পর্কে উদ্বিগ্ন, যারা প্রায়শই এই ব্যবসার সংস্পর্শে আসে।
কারওয়ান বাজার এলাকার ব্যবসায়ী সালামত উল্লাহ বলেন, অবৈধ বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রচেষ্টা সত্ত্বেও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে অবৈধ বাণিজ্য অব্যাহত রয়েছে।
তিনি বলেন, অবৈধ মাদক ব্যবসা বন্ধে এবং কারওয়ান বাজার রেলওয়ে এলাকায় শৃঙ্খলা ফেরাতে বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মধ্যে আরও ভাল সমন্বয়, গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ এবং কমিউনিটির সম্পৃক্ততাসহ ব্যাপক সংস্কার আবশ্যক।
আরও পড়ুন: 'মাদক সম্রাট' সেলিম গ্রেপ্তার
এ বিষয়ে র্যাব-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি খলিদুল হক হাওলাদার কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
কারওয়ান বাজার রেললাইন এলাকায় প্রকাশ্যে অবৈধ মাদক বিক্রির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ডিএনসির মহাপরিচালক খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মাদক ব্যবসা রোধে ডিএনসির অপারেশনাল টিম ওই এলাকায় ধারাবাহিকভাবে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, শুধু অভিযান চালিয়ে অবৈধ মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়, বরং চাহিদা কমানো প্রয়োজন। চাহিদা বাড়লে সরবরাহ বাড়বে। চাহিদা কমাতে তারা সারাদেশের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নানা মোটিভেশনাল ক্যাম্পেইন পরিচালনা করছে।
ডিএনসি মহাপরিচালক বলেন, অভিভাবকদের পারিবারিক পর্যায়ে তাদের সন্তানদের সম্পর্কে সচেতন হতে হবে, যাতে তারা (শিশুরা) মাদকাসক্তিতে জড়িয়ে না পড়ে।
কারওয়ান বাজারের অবৈধ মাদকের হটস্পট সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোবারক হোসেন ইউএনবিকে বলেন, গত ৩ থেকে ৪ মাসে তারা অন্তত ৫০ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছেন।
এছাড়া ডিএমপির গোয়েন্দা শাখাও (ডিবি)মাঝে মাঝে অভিযান চালায়। এতো কিছুর পরও অবৈধ মাদকের ব্যবসা ফুলেফেঁপে উঠছে।
ওসি বলেন, মাদকের অবৈধ ব্যবসা রোধে বড় ধরনের অভিযান চালানোর পাশাপাশি সার্বক্ষণিক ভ্রাম্যমাণ দল প্রস্তুত রাখার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারের বেপরোয়া মাদক সাম্রাজ্য বিপদ বাড়াচ্ছে বাংলাদেশের
৩১৪ দিন আগে
মিরপুরের ঝিলপাড় বস্তিতে চলছে মাদক ও অস্ত্রের রমরমা ব্যবসা
প্রশাসনের নাকের ডগায় থেকেও মিরপুরের পল্লবী আলোকদি ঝিলপাড় বস্তিতে চলছে মাদক ও অস্ত্রের রমরমা ব্যবসা। সাংবাদিকদের আবাসনের জন্য জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের বরাদ্দকৃত জায়গা দখল করে অবৈধ বস্তি গড়ে তুলে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) ইলিয়াস মোল্লার নিয়ন্ত্রণে চলছে এ অবৈধ ব্যবসা।
মাদক ও অস্ত্রের অবাধ কারবারের কারণে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে এই বস্তি। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসবে বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে।
সূ্ত্র জানায়, ২০০৬ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে প্রায় ৩০০ সাংবাদিক পরিবারের জন্য আবাসন গড়ে তুলতে ঢাকা সাংবাদিক সমবায় সমিতিকে রাজধানীর পল্লবীর ঝিলপাড় মসজিদের পাশে ৭ একর জমি বরাদ্দ দেয় জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ।
এরপর ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার সঙ্গে সঙ্গে এই বিশাল জমি দখলে নেন ঢাকা-১৬ আসনের এমপি ইলিয়াস মোল্লা। জমির একাংশে তিনি বস্তি বানিয়ে ভাড়া দেন এবং অন্য অংশে গড়ে তোলেন গরুর খামার। বস্তি, দোকান ও অস্থায়ী মার্কেট করার পর সেখানে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও ওয়াসার পানি সংযোগেরও ব্যবস্থা করেন ইলিয়াস। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে আত্মগোপনে থাকলেও নিজস্ব বাহিনীর মাধ্যমে প্রতি মাসে ভাড়া তুলে চলেছেন তিনি।
সরকার পতনের পর দেশে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা গা ঢাকা দিলেও এই বস্তিতে তার নিয়ন্ত্রণ অটুট রয়েছে। আত্মীয় ও দলীয় লোকের মাধ্যমে অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন ইলিয়াস মোল্লা।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে
৩৪৩ দিন আগে
পল্লবীতে 'মাদক সংক্রান্ত বন্দুকযুদ্ধে' নারী নিহত
রাজধানীর পল্লবীতে মাদক ব্যবসায়ী দুই গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলিতে আয়েশা আক্তার (২৬) নামে এক নারী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন।
পল্লবী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আদিল জানান, বুধবার (৩০ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে মিরপুর-১১ নম্বরের লালমাটি টেম্পো স্ট্যান্ডের কাছে এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
কাছের একটি ভবনের ভেতরে থাকা আয়েশা সিঁড়ির জানালা দিয়ে বাইরে তাকালে মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। এতে তার তাৎক্ষণিক মৃত্যু হয়।
পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য স্থানীয় হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।
আরও পড়ুন: গাজীপুর কারাগারে বিদ্রোহের চেষ্টা, গোলাগুলিতে ২২ বন্দি আহত
৪০০ দিন আগে
সাতক্ষীরায় ৭ কোটি টাকার মাদক উদ্ধার
সাতক্ষীরার তলুইগাছায় চোরাকারবারিদের ফেলে যাওয়া প্রায় সাত কোটি টাকার মাদক উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবি ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশরাফুল হক।
আরও পড়ুন: মাদকের গডফাদারদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
উদ্ধার করা মাদকদ্রব্যের মধ্যে রয়েছে- ১ কেজি ভারতীয় ক্রিস্টাল মেথ (আইস), ২ বোতল এলএসডি ও ৫ বোতল বিদেশি মদ।
আশরাফুল বলেন, তলুইগাছা বিওপির কেড়াগাছি সীমান্ত পিলার ১৩/৩-এস এর অভ্যন্তরে মজুমদার খাল নামক স্থানে চোরাকারবারিরা মাদকদ্রব্যগুলো ফেলে পালালে বিজিবি তা উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নিতে সাতক্ষীরা জেলার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার কথা জানান তিনি।
আরও পড়ুন: তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী শাহজাহান রাজধানীতে গ্রেপ্তার
৪৩৫ দিন আগে