স্বর্ণ চোরাচালান
বাংলাদেশে প্রতিদিন ২০০ কোটি টাকার স্বর্ণ চোরাচালানের মাধ্যমে আসে: বাজুস
বাংলাদেশে বছরে প্রায় ২০০ কোটি টাকার স্বর্ণ অবৈধভাবে চোরাচালানের মাধ্যমে আসছে। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) সঙ্গে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) এক বৈঠকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এছাড়া স্বর্ণ চোরাচালান ও অর্থপাচার বন্ধে একসঙ্গে একটি যৌথ উদ্যোগ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে বাজুস।
বিএফআইইউ'র প্রধান কর্মকর্তা মো. মাসুদ বিশ্বাস বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বাজুস প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীরের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল এতে অংশ নেয়। এ ছাড়া সভায় বিএফআইইউ'র উপপ্রধান ও ইউনিটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: স্বর্ণ চোরাচালানে বছরে ৭৩ হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে: বাজুস
বাজুস নেতারা বৈঠকে জানান, বাজুস প্রতিনিধি দলের তথ্য ও প্রস্তাবের জবাবে মাসুদ বাংলাদেশকে স্বর্ণ চোরাকারবারিদের হাত থেকে রক্ষা এবং দেশে স্বর্ণ চোরাচালানের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করার আশ্বাস দেন।
তারা আরও জানান, আকাশ, সড়ক ও নৌপথকে ব্যবহার করে স্বর্ণ চোরাচালান করা হয়, এর ফলে বছরে ৭৩ হাজার কোটি টাকার চোরাচালানকৃত স্বর্ণ বাংলাদেশে আসে এবং এর বেশিরভাগই দেশের বাইরে পাচার হয়ে যায়। সোনা চোরাচালান বন্ধে বাজুস নেতারা সাতটি সুপারিশ পেশ করেন বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: ই-অরেঞ্জের অস্বাভাবিক লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছে বিএফআইইউ
১০ দেশের সঙ্গে চুক্তি করতে বিএফআইইউকে তিন মাসের সময় হাইকোর্টের
স্বর্ণ চোরাচালান মামলা: চট্টগ্রামে চীনা নাগরিকের ৭ বছর কারাদণ্ড
চট্টগ্রামে স্বর্ণ চোরাচালান মামলায় এক চীনা নাগরিককে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
নগরীর পতেঙ্গা থানার একটি মামলায় রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুননেছা বেগমের আদালত এ রায় দেন।
কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ফ্যান রংগুই চীনের জিং ওয়েস্ট আরডি বিয়াং জেলার ফ্যান উই ঝাংয়ের ছেলে। তার পাসপোর্ট নম্বর ইএ ১৭২৪৩৪৮।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন লাইনচ্যূত,ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী বলেন, চীনা নাগরিক ফ্যান রংগুইয়েরর বিরুদ্ধে স্বর্ণ চোরাচালান মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে পারায় কারাদণ্ডের এই রায় দিয়েছেন। রায়ের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ৮ মে বিজি-১৪৮ দুবাই থেকে চট্টগ্রামের হজরত শাহ আমানত (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সকাল সোয়া ৭টার দিকে অবতরণ করে। এ সময় চীনা নাগরিক ফ্যান রংগুই এর পণ্যসামগ্রী স্ক্যানিংয়ের সময় চার্জার লাইটে নিষিদ্ধ ধাতব পদার্থ থাকার বিষয়ে সন্দেহ হয় কাস্টমসের কর্মকর্তাদের। এরপর তাকে চ্যালেঞ্জ করা হয়। একপর্যায়ে লাইট ভেঙে ২৪ পিস স্বর্ণের বার পাওয়া যায়। ওজন প্রায় ২৪০ তোলা বা ২ কেজি ৮০০ গ্রাম। যার আনুমানিক বাজার মূল্য এক কোটি ২০ লাখ টাকা।
এ ঘটনায় একইদিন শাহ আমানত (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কাস্টম হাউসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শাহারিয়ার হোসেন বাদী হয়ে পতেঙ্গা থানায় মামলা করেন। এ মামলায় ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ফ্যান রংগুইকে একমাত্র আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পতেঙ্গা থানা পুলিশ। ২০২১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলায় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ৯ জনের সাক্ষ্য উপস্থাপন করা হয়।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে সড়কের পাশ থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার
টেকনাফে ট্রাকচাপায় মা-ছেলে নিহত
স্বর্ণ চোরাচালানে বছরে ৭৩ হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে: বাজুস
স্বর্ণ চোরাচালানের মাধ্যমে প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)
বাংলাদেশ থেকে স্বর্ণ চোরাচালান বন্ধে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ এবং গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা কামনা করেছেন সংগঠনটি।
শনিবার রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি কমপ্লেক্সে সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাজুস নেতারা এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বাজুসের স্ট্যান্ডিং কমিটি অন অ্যান্টি স্মাগলিং অ্যান্ড ল’ এনফোর্সমেন্টের চেয়ারম্যান এনামুল হক খান বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ভাইস চেয়ারম্যান বিধান মালাকার, সদস্য ইকবাল উদ্দিন, স্বপন চন্দ্র কর্মকার, বিকাশ ঘোষ, বাবুল রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংগঠনটির দাবি, প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশে স্বর্ণ চোরাচালানের ট্রানজিট হিসেবে বাংলাদেশকে ব্যবহার করা হয়, যা বন্ধ করা উচিত।
বাংলাদেশ বিমান, সড়ক ও নৌপথে গড়ে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২০০ কোটি টাকার সোনা পাচার হয় বলে জানান বাজুস নেতারা।
স্বর্ণ চোরাচালান সংক্রান্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্য ও সংবাদপত্রের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে স্বর্ণ চোরাচালান ও মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে জুয়েলার্স সমিতির নেতারা জানান।
এক প্রশ্নের জবাবে বাজুস নেতা বলেন, বাংলাদেশে ভ্রমণকারীদের ব্যাগেজের মাধ্যমে ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার ভরি স্বর্ণ আমদানি করা হচ্ছে যা বৈধ।
পড়ুন: চট্টগ্রামে স্বর্ণের বারসহ রোহিঙ্গা মা-ছেলে আটক
ওসমানী বিমানবন্দরে আবর্জনার ট্রলি থেকে ১০টি স্বর্ণবার উদ্ধার
স্বর্ণ পাচারের নতুন রুট চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত
দেশি ও আন্তর্জাতিক চোরাচালানকারী চক্র অরক্ষিত সীমান্ত ও বিট খাটাল থাকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তকে স্বর্ণ পাচারের নতুন নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার শুরু করেছে।